নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হামিদের ব্লগ

হামিদ আহসান

ভবের এই খেলাঘরে খেলে সব পুতুল খেলা জানি না এমন খেলা ভাঙে কখন কে জানে ...

হামিদ আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

দি ওল্ড ম্যান এন্ড দি সী - আর্নেস্ট হেমিংওয়ে - ১৯

১২ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:০৮

বাংলা রূপান্তর © হামিদ



হেটটা মাথায় ভাল করে সেঁটে নিয়েছিল বুড়ো। হেটের ঘষায় কপালটা মনে হচ্ছে ছিলে যাবে। ওদিকে তেষ্টাও পেয়েছে অনেক। কিন্তু দড়িটা খুব সাবধানে ধরে রাখতে হচ্ছে। যেন কোনোভাবেই সন্দেহ না করে মাছটি। দড়িতে যেন কোনো কাঁপন না লাগে এমনভাবে খুব সাবধানে একটু সামনে এগিয়ে হাঁটু গেড়ে বসল সে। তারপর সামান্য নিচু হয়ে একটি হাত সামনে বাড়িয়ে পানির বোতলটি তুলে নিল। বোতলের ছিপি খুলে সমান্য পানি খেয়ে নিল। তারপর কিছুটা সময় বিশ্রামের জন্য নৌকার গলুইয়ে হেলান দিয়ে বসল।



দুশ্চিন্তাগুলো মাথা থেকে ঝেরে ফেলে নৌকার গলুইয়ের উপর রাখা গোটানো পাল আর হেলান দিয়ে রাখা মাস্তুলের উপর বসে কিছুটা সময় বিশ্রাম নিয়ে নিজেকে যেন প্রস্তুত করল বুড়ো। সামনের সবকিছুই অনিশ্চত। চকিতে পেছন ফিরে দেখল সে। না, কোনো কুল কিনারা দেখা যাচ্ছে না।



'তাতে কী ? হাভানা বন্দরের আলো দেখে আমি ঠিকই ফিরে যেতে পারব। সূর্যাস্তের এখনও প্রায় দু'ঘন্টা বাকি আছে। মাছটা তো তার আগেও ভেসে উঠতে পারে। তা নাহলে সন্ধ্যায় চাঁদ উঠার সময় ভেসে উঠতে পারে। যদি তাও না হয় তবে সূর্যোদয়ের সময় নিশ্চয়ই ভাসবে মাছটি। আর আমি এমন অথর্ব বুড়ো নই যে, হাতে-পায়ে খিল ধরে গেছে। এখনও আমি যথেষ্ট শক্ত-সমর্থ পুরুষ। মাছের মুখে যখন বড়শি তখন তাকে ক্লান্ত হয়ে ভাসতেই হবে। একটু আগে আর পরে এই যা। কিন্তু আমি ভেবে পাচ্ছি না যে এটা কেমন মাছ ! এতোক্ষণ ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে আমাকে। ক্লান্তিহীন একটানা ছুটে চলা। মনে হয় বড়শিটা খুব শক্ত করে কামড়ে ধরেছে। ইশ, যদি দেখতে পেতাম মাছটা ! এক মুহূর্তের জন্যও যদি দেখতে পেতাম তাহলেও বুঝতে পারতাম কতো শক্ত প্রতিপক্ষের সাথে লড়ছি আমি' - আপন মনে এসব কথা বলছিল বুড়ো।



আকাশের তারা পর্যবেক্ষণ করে বুড়ো বুঝতে পারল যে, মাছটি এই রাত পর্যন্ত একটিবারও চলার গতিপথ কিংবা দিক পরিবর্তন করে নি। এদিকে সূর্য ডুবে যাওয়ার পর বেশ ঠান্ডা পড়েছে সমুদ্রে। সেই ঠান্ডায় বুড়ো দিনের গরমে তার হাত, পিঠ ও বৃদ্ধ পা দু'টোতে জমা ঘাম শুকিয়ে নিয়েছে। টোপ ঢাকার চটটা দিনের রোদে শুকিয়ে নিয়েছিল। সূর্য ডোবার পর সেটাকে এমনভাবে গলার সাথে পেঁচিয়ে নিল যাতে ওটি পিঠের ওপর ঝুলে থাকে। কাঁধের উপর থাকা বড়শির দড়ির নিচ দিয়ে পার করে দিল চটটাকে। ফলে ওটা এখন বড়শির দড়ি আর পিঠের মাঝখানে কুশনের মতো কাজ দিচ্ছে। এর ফলে বুড়ো গলুইয়ে হেলান দিয়ে একটু আরাম করে বসার সুযোগ পেল। ব্যাপারটা এখন আগের চেয়ে কম কষ্টদায়ক। এই কম কষ্টদায়ক ব্যাপরটিই এখন তার কাছে মনে হচ্ছে আরামদায়ক।



চলবে .............................

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:৩০

আরজু মুন জারিন বলেছেন: ভাল লাগছে হামিদ ভাই আপনার অনুবাদ সবসময়। অনেক অনেক শুভেচ্ছা আপনার জন্য। ভাল থাকুন।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৫০

হামিদ আহসান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.