নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোর মশাল

মীর সাখওয়াত হোসেন

বিজ্ঞানপ্রেমী মানুষ

মীর সাখওয়াত হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

হযরত মুসা (আঃ) কে, মহান আল্লাহ কেন খিজির (আঃ) এর নিকট পাঠিয়েছিলেন?

১৩ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৫৩

পবিত্র কুরআনে হযরত মুসা (আঃ) ও খিজির (আঃ) এর একটি সুন্দর ঘটনা বর্নিত হয়েছে। একজন অলীর মর্যাদা কতখানি তা ঐ ঘটনা থেকেই সুস্পষ্ট হয়ে উঠে

প্রত্যেক যুগেই আবদাল শ্রেনীর ৭ জন অলী-আল্লাহ এই পৃথিবীতে বিদ্যমান থাকেন। তারা জলে ও স্থলে আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়ন করে দেশরক্ষার দ্বায়িত্ব পালন করে থাকেন। খিজির (আঃ) ছিলেন হযরত মুসা (আঃ) এর জামানায় ৭ জন আবদাল শ্রেনীর অলী-আল্লাহর মধ্যে ১ জন। এবং হযরত মুসা (আঃ) ছিলেন উক্ত যামানায় মহান আল্লাহর প্রেরিত নবী ও রাসুল

হযরত মুসা (আঃ) নবী হওয়া সত্ত্বেও মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে রহস্য জগতের জ্ঞান তথা তাসাউফ শিক্ষার জন্য খিজির (আঃ) এর কাছে প্রেরন করেছিলেন। বোখারী শরীফেে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর উদ্ধৃতি দিয়ে হযরত মুসা (আঃ) ও খিজির (আঃ) এর সাক্ষাতের ঘটনাটি বর্ননা করা হয়েছে।

পবিত্র হাদিস শরিফে বর্নিত হয়েছে, হযরত রাসুল (সাঃ) ফরমান, একদিন হযরত মুসা (আঃ) বনি ইস্রাইলদের উদেশ্য ওয়াজ করছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি তাঁকে জিজ্ঞেস করলো – এ জামানায় সর্বশ্রেষ্ঠ আলেম কে? হযরত মুসা (আঃ) জবাব দিলেন, আল্লাহ তায়ালা আমাকেই সর্বাপেক্ষা এলেম দান করেছেন। আল্লাহ তায়ালা তার এ কথা পছন্দ করলেন না। তৎক্ষনাৎ তার উপর প্রত্যাদেশ আসে যে তুমি এ প্রশ্নের উত্তর আল্লাহর জ্ঞানের উপর সোপর্দ করে দিয়ে বলতে আল্লাহই অধিক অবগত আছেন ” অতঃপর ওহী নাজেল করলেন, দুই সাগরের সংযোগ স্থলে আমার এক বান্দা রয়েছে তিনি কোন কোন বিষয়ে তোমার চেয়ে অধিক জ্ঞানী।

হযরত মুসা (আঃ) আরজ করলেন, হে পরওয়ারদিগার আপনার সেই বান্দার কাছে কোন পথে যেতে হবে? মহান আল্লাহ তায়ালা বললেন, ভাঁজি করা মাছকে নিজের থলির মধ্যে রেখে নাও। অতঃপর যে স্থানে সেই মাছটি হারিয়ে যাবে সেই স্থানেই আমার সেই বান্দাকে দেখতে পাবে।

হযরত মুসা (আঃ) ভাঁজি করা মাছ থলির মধ্যে রেখে নিজের খলিফা ইউশা ইবনে নুনকে সাথে নিয়ে সেই ব্যক্তির সন্ধানে যাত্রা শুরু করলেন। চলতে চলতে এক জায়গায় পৌঁছে তারা উভয়ে একটি প্রস্তর খন্ডের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। ঐ সময় থলের মাছটিতে প্রান সঞ্চার হলো এবং তা থলে হতে বের হয়ে সমুদ্রের মধ্যে চলে গেল। হযরত ইউশা ইবনে নুন হযরত মুসা (আঃ) এর আগেই ঘুম থেকে জাগ্রত হয়েছিলেন এবং ঘটনাটি দেখেছিলেন। কিন্তু মুসা (আঃ) জাগ্রত হলে তার নিকট বিষয়টি বলতে ভুলে গেলেন।

অতঃপর তারা উভয়ে আবার চলতে শুরু করলেন, দ্বিতীয় দিন সকালে হযরত মুসা (আঃ) বললেন এখন খুব ক্লান্তি অনুভব করছি, সেই মাছটি নাও তা দিয়ে ক্ষুধা মিটায়। তখন হযরত ইউশা মুসা (আঃ( কে মাছটির এ বিস্ময়কর ঘটনার কথা খুলে বললেন। সব শুনে মুসা (আঃ) বললেন যে স্থানটি আমরা তালাশ করছি ওটাই সে জায়গা। এই বলে তারা উভয়ে পুনরায় সেই শিলাখন্ডের নিকট ফিরে এসে দেখলেন যে,উত্তম পোষাক পরিহিত একজন লোক সেখানে উপবিষ্ট রয়েছেন।

হযরত মুসা (আঃ) তাকে সালাম দিয়ে বললেন আমার নাম মুসা, খিজির (আঃ) বললেন বনিঈস্রাইল বংশের মুসা? হযরত মুসা (আঃ) বললেন, হ্যা আমি আপনার কাছ থেকে সেই রহস্য জগতের জ্ঞান অর্জন করতে এসেছি যা আল্লাহ আপনাকে দান করেছেন। খিজির (আঃ) বললেন, আপনি আমার সঙ্গে থেকে সে সমুস্ত বিষয়ে ধৈর্য্য ধারন করতে পারবেন না, হে মুসা আল্লাহ তায়ালা আমাকে সৃষ্টি জগতের যে এলেম দান করেছেন, তা আপনাকে দান করা হয়নি।

হযরত মুসা (আঃ) বললেন, ই ইনশাআল্লাহ আপনি আমাকে ধৈর্য্যশীল পাবেন, আর আমি আপনার নির্দেশ কখনও অমান্য করবোনা। খিজির (আঃ) বললেন তবে শর্ত এই যে, আপনি যতক্ষণ আমার সাথে থাকবেন ততক্ষণ পর্যন্ত কোন ব্যাপারেই আমাকে কোন প্রশ্ন করবেন না যা আপনার চক্ষুদ্বয় দর্শন করবে। পরে আমি নিজেই ঐ সমুস্ত রহস্য আপনাকে বলে দেব।

হযরত মুসা (আঃ) এই শর্ত মেনে নিলেন এবং উভয়ে এক সাগরের দিকে চললেন। চলতে চলতে একখানা নৌকা দেখতে পেলেন, হযরত খিজির (আঃ) নৌকার মাঝিদের ভাড়া কত জিজ্ঞেস করলেন। তারা খিজির (আঃ) কে চিনতো কাজেই ভাড়া নিতে রাজি হলোনা বরং খুব সমাদর করে তাদের উভয়কে নৌকায় তুলে নিল। নৌকায় যাত্রা করে কিছুদূর যাবার পর হঠাৎ খিজির (আঃ) নৌকার সম্মুখের একটা তক্তা খুলে ফেলে নৌকাটি ফুটো করে দিল। হযরত মুসা (আঃ) ধৈর্য্য রক্ষা করতে না পেরে হযরত খিজির (আঃ) কে বললেন, নৌকাওয়ালা এত সমাদরে আপনাকে ও আমাকে বিনা ভাড়ায় তার নৌকায় আহরণ করিয়ে নিল আর আপনি এর বিনিময়ে নৌকাটি ফুটো করে দিলেন। এটা তো খুব অসংগত কাজ হলো।

খিজির (আঃ) বললেন, আমি তো পুর্বই বলেছিলাম যে আপনি আমার কার্যকলাপের উপর ধৈর্য্য ধারন করতে পারবেন না, অবশেষে তাই হলো। হযরত মুসা (আঃ) বললেন, আমি ভুলে গিয়েছিলাম সুতরাং আপনি আমার ভুলের জন্য আমাকে পাকড়াও করবেন না।

নৌকা তীরে পৌছানোর পর তারা উভয়ে একদিকে যাত্রা শুরু করলেন। কিছুটা অগ্রসর হতেই দেখলেন একটি মাঠে কতক শিশু খেলা করছে। হযরত খিজির (আঃ) গিয়ে তাদের মধ্যে হতে একটি শিশুকে হত্যা করে ফেললো। হযরত মুসা (আঃ) আবারও ধৈর্য্য হারা হয়ে পড়লেন এবং বললেন, অন্যায়ভাবে আপনি একটা নিঃপাপ শিশুকে হত্যা করে ফেললেন? এটা তো খুবই অন্যায় কাজ হলো। হযরত খিজির (আঃ) বললেন, আমি তো প্রথমেই আপনাকে বলেছিলাম, আমার সঙ্গে থেকে আপনি ধৈর্য্য ও সহনশীলতা রক্ষা করতে পারবেন না।

হযরত মুসা (আঃ) বললেন, আচ্ছা, এবারের মত ক্ষমা করুন। এর পরে যদি ধৈর্য্য রক্ষা করতে সক্ষম না হয় তাহলে আপনি আমা হতে পৃথক হয়ে যাবেন।

পুনরায় তারা উভয়ে যাত্রা শুরু করলেন এবং চলতে চলতে একটি লোকালয়ে এসে পৌছিলেন যার অধিবাসীরা স্বচ্ছল ও আতিথিয়েতা করার সর্বপ্রকার উপযুক্ত ছিল। অথচ তাদের মুসাফির সুলভ আবেদন সত্বেও সেখানকার অধিবাসীরা তাদেরকে মেহমান হিসেবে বরন করতে অস্বীকার করলো। তারা উভয়ে বস্তির ভিতর দিয়ে চলতে ছিলেন হঠাৎ হযরত খিজির (আঃ) একটি ঘরের দিকে অগ্রসর, যার দেয়াল অনেকটাই ঝুকে পড়েছিল এবং তা ধ্বসে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছিল।

খিজির (আঃ) হাতের ধাক্কা দিয়ে তা সোজা করে দিলেন। হযরত মুসা (আঃ) পুনরায় খিজির (আঃ) কে প্রশ্ন করে বললেন, এখানকার অধিবাসীরা আমাদের মেহমানদারীও করলো না রাত্রীবাসের জন্য একটু জায়গাও দিলোনা অথচ আপনি বিনা পারিশ্রমিকে দেয়ালটি কেন সোজা করে দিলেন?

হযরত খিজির (আঃ) বললেন, হে মুসা, এখন আপনার ও আমার মধ্যে বিচ্ছেদের সময় এসে গেছে তখন হযরত মুসা (আঃ) হযরত খিজির (আঃ) কে উক্ত তিনটি ঘটনার রহস্য সম্পর্কে জানতে চাইলেন।

তখন হযরত খিজির (আঃ) বললেন, এ সমুদয়ই আল্লাহ তায়ালার তরফ হতে এমন বিষয় ছিল, যা দেখে আপনি ধৈর্য্য রক্ষা করতে পারননি। ঘটনাটি বর্ননা করার সময় রাসুল (সসঃ) বলেন,যদি মুসা (আঃ) আরও কিছু সময় ধৈর্য্য ধারন করতেন তাহলে আমার আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টি জগতের আরও গুঢরহস্য অবগত হতে পারতাম।

উক্ত ঘটনা গুলোর নিগুঢ় রহস্য জানাতে হযরত খিজির (আঃ) বললেন, সর্বপ্রথম নৌকার ব্যাপারটি হলো, তা কয়েকজন মিসকিনের সম্পদ ছিল, যারা এর দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করতো। নৌকাটি যেদিকে অগ্রসর হচ্ছিল সেখানে এক যালিম বাদশাহ রয়েছে। সে যারই কোন নিখুঁত নৌকা পায়, বলপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। তাই আমি তাদের নৌকার মধ্যে কিছু ত্রুটি সৃষ্টি করে দিই যেন ত্রুটিযুক্ত মনে করে বাদশাহ তা ছেড়ে দেই

অতঃপর শিশুটির বযাপার এমন ছিল যে, তার পিতা-মাতা ঈমানদার ব্যক্তি, আমি শিশুটিকে দেখে আশংকা করলাম ঐ শিশুটি বড় হলে অবাধ্যতা ও কুফুর অবলম্বন করে তার পিতা-মাতাকে কষ্ট দিবে। তাই আমি ঐ শিশুটিকে হত্যা করে ফেলি পরে মহান আল্লাহ তাদেরকে উত্তম সন্তান দান করবেন।

আর যে দেয়ালটি সোজা করেছি, তা শহরের দুটি এতিম বালকের। উক্ত দেয়ালের নীচে তাদের জন্য ধনভাণ্ডার পোতা আছে। তাদের পিতা একজন নেক্কার বান্দা ছিলেন অতএব আমার পরওয়ারদিগার চেয়েছেন যে,বালক দুটি বড় হয়ে যেন সেগুলো পায়। আর স্বরন রাখবেন আমি যা কিছু করেছি নিজের ইচ্ছায় করিনি বরং আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে করেছি।

হাদিস টি বর্নিত হয়েছে বোখারী শরীফ ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৬৮৮ হতে ৬৯০

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৫৯

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- এইটা কি কপি-পেস্ট পোস্ট?

২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৩৭

আরইউ বলেছেন:



মীর,
আপনার লেখাটি "মোহাম্মদী ইসলাম" https://mohammodiislam.com/ নামের একটি অনলাইন সোর্স থেকে হুবুহু কপি-পেস্ট।
https://mohammodiislam.com/হযরত-মুসা-আঃ-কে-মহান-আল্লা/

৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:৩৮

আরইউ বলেছেন:




লিংকটা ঠিকমত আসেনি। এখানে দেখুন shorturl.at/fxFK3

৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৪৯

রানার ব্লগ বলেছেন: ধর্ম বা ইসলামের ইতিহাস বা ইসলাম ভুত্তিক কোন লেখাই আজ পর্যন্ত পেলাম না যা গঠনমুলক বা গবেষণা ধর্মী সেই একই চর্বিত চর্বন। যদি নাই পারেন তাহলে এই সব গল্পমার্কা কাহিনী দিয়া তাও কপি পেস্ট কি মজা পান। আপনার কি ধারনা এখানে সবাই নাস্তিক আপনি সবাই কে আস্তিক বানানোর ব্রত নিয়েছেন। যত্তসব।

৫| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:১৯

নতুন বলেছেন: বর্তমানে নবী রাসুল আসলে তাদের ট্রেইনিংএর জন্য দেওয়ানবাগী বাবার কাছে পাঠাতেন আল্লাহ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.