নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্ধকারের কাছ থেকে আলোকে ছিনিয়ে আনার চেষ্টায় প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছি। জানিনা এ চেষ্টা কতদিন চালিয়ে যেতে পারবো। স্রষ্টার এই অপরূপ পৃথিবীর সৌন্দর্য অবলোকন করার জন্য কোনো কিছুরই প্রয়োজন নেই, শুধু মানুষ হওয়া প্রয়োজন।

মিজানুর রহমান মিরান

দেয়ার মত কোন পরিচয় নেই। হোক তারপর নাহয়।

মিজানুর রহমান মিরান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় আছি...

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:১৬

প্রায় অনেক আগে লেখক আনিসুল হকের
একটা লেখা পড়েছিলাম। কানাডার মানুষ
আর আমার সরি আমাদের বঙ্গদেশের মানুষের
আচরনগত বৈশিষ্ট্যই ছিলো লেখাটার মূল
বিষয়। ওনার কথা মতে কানাডার মানুষগুলো
অনেক ভদ্র, সভ্য। আর আমরা এখনো আচরন
শিখিনি.. মানে অসভ্য জাতি! স্যার,
লেখাটিতে আপনি খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে
তুলেছেন কানাডার মানুষের সুন্দর আচরনগুলো
আর আমাদের বর্বর নিদর্শন গুলোও।
ছোটবেলায় স্কুলে পড়েছিলাম "অর্থই
অনর্থের মূল" আর "শিক্ষায় জাতির মেরুদণ্ড"। এ
দুটি কথা বিশাল অর্থ বহন করে, যা আমরা ভাব
সম্প্রসারণ করেছিলাম। ঐদিকে আর না যায়।
স্যার আপনার টাকা আছে, তাই আপনি
কানাডা গিয়ে তাদের আচরন দেখেছেন,
কিন্তু আমার এলাকার করিম চাচার সে
সৌভাগ্য হয়ে উঠেনি, তাই এখনো তিনি
সারাদিন চায়ের কাপে টুংটাং এবং
পানে চুন লাগাতে লাগাতে রাস্তা
দিয়ে হেটে যাওয়া কোনো উর্বশীর বুকে
কামাতুর দৃষ্টি দেয়। আবার সেই করিম চাচাই
কোনো অভুক্ত ভিক্ষুক দোকানে আসলে
তাকে ফ্রিতে চা নাস্তা খাইয়ে বাড়তি
দুটো টাকাও দেয়, আর নিজে আত্মতৃপ্তির এক
নিঃশ্বাষ ফেলে! থাক... করিম চাচার
কানাডা থেকে আচরন শেখার প্রয়োজন
নেই। শিক্ষা... আহ! শিক্ষা" স্যার আপনি
জানেন? এদেশে শিক্ষা এখন এপ্লাস আর
দামী কাগজের সার্টিফিকেটে বন্দী,
শিক্ষাটা এখন আর আচরণগত কাজে লাগে না,
লাগে অহংকার আর গৎবাধা কিছু জীবন
ধারনের উপাত্ত হিসেবে। তাহলে কি
আমাদের আচরন শেখার কোনো উপায় নেই?!
১৯৭১ এ এদেশের কতজন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন
করেছিলো আমার জানা নেই। আর এ মুহূর্তে
গুগুলকেও কষ্ট দিতে মন চাইছে না, কারন আমি
অলস তো তাই! কিন্তু Hi Hlwর শিক্ষা না
থাকলেও তৎকালীন মানুষগুলো নিজে জীবন
দিয়ে আমাদের একটি ভূখণ্ড উপহার দেয়, যখন
তারা অস্ত্র হাতে তুলে নেয় তখন তারা
এটাও বিশ্বাস করতো যে হয়তো এদেশের
বিশুদ্ধ বাতাসের ঘ্রান নেয়া আর নাও হতে
পারে...... তবুও! স্যার কখনো কি দেখেছেন?
এদেশের ইটে মুড়ানো ডাস্টবিনে বেজন্মা
উপাধি পাওয়া পথশিশুটি আর রাস্তার অবাধ
ঘুরাফেরা করা নেড়ি কুকুরটির একসাথে
খাবার খুঁজে খাওয়ার দৃশ্য? শিশুটি কি সুন্দর
জায়গা করে সুযোগ করে দেয় কুকুরটিকে!
প্রতিবেশী ভাবীটির জ্বরে গা পুরে
যাচ্ছে, রহিমা কি এই অবস্থায় আগামীকাল
কাজে বের হতে পারবে! এসব চিন্তা না
করেই সারাদিন গার্মেন্টসে কঠোর পরিশ্রম
করা রহিমা প্রতিবেশী ভাবীর সেবা করে
যায় সারারাত এবং পরের দিনও। একদিনের
বেতন নাহয় কাটা গেলো, একদিন নাহয় কিছু
বকাঝকা শুনলো। ভাবীটা তো সুস্থ হয়েছে।
রিকশা চালক সোলেমান চাচার মেয়ের
বিয়ের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষুকের
মতো চাঁদা তুলে মেয়েটিকে উক্তক্ত্বকারী
বখাটে যুবক গুলোই। সারাদিনের পরিশ্রমে
ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফেরার জন্য লোকাল
বাসে যখন কোনো মতে একটা সিট পেয়ে
গা-টা এলিয়ে দেয় যুবক টি, তখনই অন্য একটি
বৃদ্ধ বা মহিলাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে
পরম শ্রদ্ধার সাথে সিট টা ছেড়ে দেয় যুবকটি
বা এদেশের যুবকগুলো। আবার অন্যতম
বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই মেয়েটি, যে কিনা
বছরের জমানো সব টাকা দিয়ে সাধ্যমতো
পোশাক কিনে দেয় অবহেলিত পথশিশুকে,
আর নিজে একটি সিম্পল কমদামী পোশাক
কিনে ঈদ উদযাপন করে তাদের সাথে। সেই
যুবকটি, যে তার পরিবার এর জন্য সকল সুখ
বিসর্জন দেয়, বিসর্জন দেয় তার
প্রিয়তমাকেও সকল কষ্ট হাসিমুখে চাঁপা
দিয়ে। ঐযে সালাম সাহেব... যে কিনা
কয়েকটি ইন্ড্রাস্টির মালিক, জুম্মার দিনে
তিনিও করিম চাচার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে
স্রষ্টার উদ্দেশ্যে সিজদারত হয়। আমি কয়টি
উদাহরণ দিবো! এমন হাজার না, লক্ষ লক্ষ
উদাহরণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এদেশে, যা
আমি জানি, জানেন আপনিও। এরা সভ্য
কিনা আমি জানিনা, তবে এটা জানি এরা
সবাই ভালো মানুষ। এদের জন্যই আমরা সুন্দর
একটা দেশের স্বপ্ন দেখতেই পারি। যে
দেশে, কখনো তনুরা আর ধর্ষিত হবে না,
জোহা রা হবেনা আর নিরুদ্দেশ। প্রেমে
ব্যর্থ রসু খা রা আর করবে না ধর্ষন হত্যা। যে
দেশে রাজনদের চিৎকারে বাতাসে
কান্নার সুর বাজবে না, যে দেশে তুচ্ছ ঘটনার
কারনে নিরীহ যানবাহনগুলো ধ্বংসের
শিকার হবে না, যে দেশে ক্ষিধের জ্বালা
সহ্য করতে না পারে আর কোনো পথশিশু
ফুটপাতে ঘুমিয়ে পরবে না, যে দেশে
বাচ্চার খাবারের জন্য মর্জিনারা রাতের
অন্ধকারে আর জৈবিক সুখ বিনিময় করবে না।
আমি এমন একটা দেশের স্বপ্ন দেখি যে
দেশে প্রত্যাখ্যাত প্রেমিক আর এসিডের
আশ্রয় নিবে না, যৌতুকের কারনে হবে না
আর কোনো আত্মাহুতি। আমি এমন একটা
দেশের স্বপ্ন দেখতেই পারি, যেখানে
আপনার খাবারের টেবিলে পোলাও মাংসেরর পাশাপাশি
প্রতিবেশী বস্তির কুদ্দুস চাচার খাবারের
তালিকায় অন্তত ডাল সবজি থাকবে।
দেখতেই পারি এমন একটা দেশের স্বপ্ন
যেখানে আস্তিকতা নাস্তিকতার উদ্ধে
স্থান পাবে মনুষ্যত্ব। যে দেশে খুলশীতে
থাকি বললে এক চোখে আবার চকবাজারে
থাকি বললে অন্য চোখে তাকাবে না আর
কেউ। যে দেশে ব্র্যান্ডের পোশাক পড়লে
যে মর্যাদা পাবো আবার ফুটপাত থেকে
কেনা পোশাক পড়লেও একি মর্যাদা পাবো।
যে দেশে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে নিজেদের
কে আমরা মানুষ বলে পরিচয় দিতে পারবো।
আমাদের প্রত্যেকের মুখে থাকবে পাওয়া
না পাওয়ার হিসেবকে দূরে ঠেলে
আত্মতৃপ্তির সরল হাসি। স্যার, বলা হয়ে থাকে
স্বর্নের খনিতে অনেক মাটি খুড়াখুড়ির পর
এক টুকরো স্বর্ন পাওয়া যায়, ঐখানে
স্বর্নপিণ্ডটাই কিন্তু সযত্নে নেয়া হয় আর
মাটি গুলো দূরে ঠেলে ফেলা হয়। তদ্রূপ
মানুষের যদি কোনো খারাপ খুঁজেন তাহলে
মাটির মতোই বেশি খারাপ বের হবে,
স্বর্নের মতো তার থেকে সামান্য
ভালোটাই খুঁজে বের করুন আর
খারাপগুলোকে দূরে ঠেলে সরিয়ে দিন।
আমি বিশ্বাস করি পৃথিবীতে কোনো মানুষই
খারাপ নয়, প্রত্যেক মানুষের ভিতরে ঐ
স্বর্নের মতো ভালো কিছু লুকিয়ে আছে,
সমস্যা হলো আমরা মাটির মতো ঐ
খারাপটাই দেখি। স্যার... দামী এয়ার
কন্ডিশন গাড়ি আর এসি রুমে খবরের পাতা
উল্টিয়ে তনুদের করুন নিউজ পড়তে পড়তে
দেশটা রসাতলে গেলো বললেই কি শুধু হবে?
আমি চাইই দেশ রসাতলে যাক! তবে রসটা
যাতে মিষ্টি হয়। টিভির টক শোতে
রাজনৈতিক অস্থিরতা, সমকালিন অপরাধ
প্রবনতা, নিয়ে গুরুগম্ভীর কথাবার্তা বললেই
হয় না। অন্য অনেক কিছুই করার আছে যা
বাস্তবিকই কাজে লাগবে। কি করা লাগবে
সেটা আপনারা যেমন জানেন ঠিক আমিও
জানি। কিন্তু সমস্যা হলো আমার অক্সফোর্ড
বিশ্ববিদ্যালয় টাইপ কোনো ডিগ্রি নেই,
তাই আমার বলা বা করারও কোনো সুযোগ
নেই। নই কোনো আমি সেলেব্রেটিও! আমিও
পাড়ার বখাটে বক্কর এর মতো এক সাধারণ
মানুষ, তবুও.....। পর্দা সেতুর আগে সামান্য
বৃষ্টিতেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পরা
এলাকার চিপাগলিটার আগে উন্নতি করা
দরকার, এতে শিউলি মেয়েটা অন্তত
নির্বিঘ্নে স্কুলে যেতে পারবে।
বিশ্বায়নের এ যুগে শুধু একশ্রেণীর মানুষই কেন
প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে! করিম
চাচাদেরকেও সুযোগ করে দেয়ার কর্তব্য নয়
কি আমাদের?! আমি জানি টাকার অভাবে
কর্মসংস্থান এর সুযোগ না পাওয়া শিক্ষিত
যুবকটিও ধারালো অস্ত্র নিয়ে রাতের
অন্ধকারে ঔৎপেতে থাকে শিকার এর জন্য..
টাকা যে তার বড্ড প্রয়োজন তা জানি
আমি। কিন্তু পদ্মা সেতুর নামে জনগনের অর্থ
লোপাট করা সেই লাগব বোয়াল গুলো আর কত
পদ্মা সেতু নিজেদের পকেটে পুরবে আমার
জানা নেই। আর কত টাকা হলে তারা
আমাদের শান্তি দিবে তাও জানা নেই।
তবে এটা জানি, এখনো অনেক ভালো
পরিপূর্ণ ভালো মানুষ আছে যারা একদিন
ঠিকিই বদলে দিবে এ সমাজ এদেশ। একদিন
ঠিকই সব পবিত্র আত্মা দখল করে নিবে সব
অপবিত্র আত্মার স্থান। হয়তো সেই সময় টাই
আমি থাকবো না, আপনি থাকবেন না,
থাকবো না আমরা কেউই.... কিন্তু থাকবে
আমাদের সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। আমাদের
সকল কষ্ট বিসর্জনই হোক অন্যের মুখে হাসি
ফোটাবার জন্য, অন্যের ভালো লাগার জন্য।
"ত্যাগেই প্রকৃত সুখ" কথাটা কতটুকু সত্য তা
আপনারা নিশ্চয়ই জানেন?? ত্যাগেই যদি
প্রকৃত সুখ না হতো, তবে কোনো মা নিজে
অভুক্ত থেকে সন্তানকে মুখে খাবার তুলে
দিত না, কোনো বোন তার জমানো টাকা
দিয়ে ছোট ভায়ের জন্য কাঙ্খিত কোনো
জিনিস কিনে দিতে না, ভাই তার
টিউশনির টাকা দিয়ে ছোট বোনের জন্য
কিনতো না কোনো উপহার। বাবা তার
ক্ষয়ে যাওয়া স্যান্ডেল এর দিকে তাকিয়ে
ছেলের জন্য নতুন স্যান্ডেল কিনতো না।
ত্যাগেই যদি প্রকৃত সুখ না হতো তাহলে
প্রবাসীরা তাদের পরিবারের সুখের জন্য
অসহ্য পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাতো
না, বন্ধু তার অপর বন্ধুর প্রয়োজনে
পকেটমানিটা খরচ করতো না। দেশের
সাফল্যে কেউ কখনো উল্লাস করতো না,
দেশের করুন অবস্থা দেখে কেউ করতো না
কোনো আফসোস। আত্মকেন্দ্রিকতায় কোনো
সুখ নেই, মেকি সুখের অভিনয় করা যায় শুধু।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৬:৩৮

বিজন রয় বলেছেন: স্বপ্ন সফল হোক।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৮

মিজানুর রহমান মিরান বলেছেন: আশা রাখতেই পারি।

২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:৫১

নীলপরি বলেছেন: আশাবাদী লেখা ।ভালো লাগলো পড়তে । ++

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৯

মিজানুর রহমান মিরান বলেছেন: জেনে খুশি হলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:২৭

প্রামানিক বলেছেন: লেখা ভাল লাগল। ধন্যবাদ

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:২১

মিজানুর রহমান মিরান বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকেও।

৪| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:২৯

কালনী নদী বলেছেন: ভাল একটা দিছেন, আনিসুর হক স্যারকে, এটা উনার প্রাপ্য ছিল!
ধন্যবাদ ভাই মনের কথাই আপনি তুলে দড়েছেন্

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৪৪

মিজানুর রহমান মিরান বলেছেন: সহমতের জন্য, ধন্যবাদ কালনী নদী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.