নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। আমি স্বপ্ন দেখি একটি মুক্ত পৃথিবীর।

মোহাম্মদ শফিউল্লাহ

আমি এক যাযাবর।

মোহাম্মদ শফিউল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা কি বিজ্ঞান সম্মত?

১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৫


হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতির আবিষ্কারক জার্মান চিকিৎসক স্যামুয়েল হ্যানিম্যান (১৭৯৬) একদিন বিদেশি মেডিকেল বই জার্মান ভাষায় অনুবাদ করার সময় জানলেন যে, সিনকোনা গাছের বাকলের রস ম্যালেরিয়া রোগ নিরাময় করে। এই রসের নিরাময় গুনের কারণ হিসাবে ব্যাখ্যায় লেখাছিল এর তিক্ত ও কষা স্বাদ এর কথা। তিনি বুজতে পারলেন যে এটা অযৌক্তিক কারণ অন্য অনেক ঔষধ আছে যেগুলোর স্বাদ একই রকম, কিন্তু তা ম্যালেরিয়া নিরাময় করতে অক্ষম। তিনি নিজেকে প্রশ্ন করলেন, কেন সিনকোনা গাছের বাকলের রস ম্যালেরিয়া রোগ নিরাময় করতে পারে, অথচ অন্য গাছ পারে না?
তিনি নিজের উপর সিনকোনা গাছের বাকলের রসের পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিলেন। এতে করে তার কম্প দিয়ে জ্বর এলো। যা অনেকটা ম্যালেরিয়া রোগের উপসর্গের মত। তিনি ভাবলেন যে, ম্যালেরিয়া রোগের নিরাময় গুনের কারণ সিনকোনার তিক্ত ও কষা স্বাদ নয়, এর কারণ হল এটা সুস্থ মানুষের শরীরে ম্যালেরিয়া রোগের উপসর্গ তৈরি করে। তিনি হাইপোথিসিস দিলেন, কোন লোকের ওপর একটি ওষুধ বেশি মাত্রায় প্রয়োগ করলে যেসব প্রতিক্রিয়া ঘটায়, কম মাত্রার ওই ওষুধ প্রয়োগে সেগুলি দূরীভূত হয়। এই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। এই তত্ত্ব বৈজ্ঞানিক ভাবে কখনই প্রমাণ করা যায়নি।
সে সময় মূলধারার চিকিৎসা খুব খারাপ ছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা লাভের চেয়ে ক্ষতিই করত বেশী। তাই তার প্রবর্তিত হোমিওপ্যাথি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। বর্তমানে মূলধারার চিকিৎসা ব্যবস্থা হানিম্যানের সময়ের চেয়ে অনেক উন্নতি লাভ করেছে।
হোমিওপ্যাথিক ওষুধ তৈরি করার জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রাথমিক দ্রব্যকে ক্রমাগত লঘূকরণ করা হয় অ্যালকোহল অথবা পাতিত পানিতে দ্রবীভূত করে এবং নির্দিষ্ট নিয়মে ঝাঁকিয়ে। ঔষধ যত লঘু, তত তার শক্তি বেশি। বিজ্ঞান এই ধারণা সমর্থন করে না। এই লঘূকরণ এতবার করা হয়ে থাকে যে শেষপর্যন্ত এই মিশ্রণে প্রাথমিক দ্রব্যের অণু পরিমাণও অবশিষ্ট থাকে না।
হোমিওপ্যাথি এটা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে এই বলে যে, পানির স্মরণশক্তি নামক একটি গুন আছে এবং প্রাথমিক দ্রব্যকে যখন লঘূকরণ করা হয়, তখন পানি এর সংস্পর্শে এসে প্রভাবিত হয় এবং ওই দ্রব্যের ওষধি গুন অর্জন করে। মিশ্রণে যখন প্রাথমিক দ্রব্যের অণু পরিমাণও অবশিষ্ট থাকে না, তখনও পানি তার স্মরণশক্তি দ্বারা ওষধি গুন বজায় রাখে । এটা রসায়ন বিদ্যা সমর্থন করে না।
হোমিওপ্যাথির এই ব্যাখ্যা যদি মেনেও নিই, তাহলেও অনেক সমস্যা আছে। পানি যেকোনো উৎস থেকেই হোক না কেন, আপনি যদি চিন্তা করে দেখেন, দেখবেন যে, ঐ পানির পিছনে অনেক ইতিহাস আছে। আপনার হাতের গ্লাসের পানির কোন অণু হয়ত এক সময় সমুদ্রের অংশ ছিল। সেই অণুটি লক্ষ লক্ষ ধরনের ভিন্ন ভিন্ন রাসায়নিক অণুর সংস্পর্শে এসেছে। কখনো কোন প্রাণী হয়ত এই অণু পানির অংশ হিসাবে পান করেছে। এছাড়াও আপনার সেই গ্লাসের পানিতে রয়েছে হাজারো রকমের ইমপিওরিটি। বাতাসে ভাসমান বাষ্পের অণুর(পানি) ক্ষেত্রেও এই একই কথা প্রযোজ্য।
তাহলে এটা বলা যায় যে, সব জায়গার বাতাস ও পানিতেই সকল প্রকার হোমিওপ্যাথিক ওষুধ বিদ্যমান। সব জায়গায় যদি সব রকমের হোমিওপ্যাথিক ঔষধ বিদ্যমান থাকে, তাহলে আলাদা করে সেই ঔষধ খাওয়ার অর্থ কি? তাত্ত্বিকভাবে এটা পরিষ্কার যে, হোমিওপ্যাথিক ঔষধের আসলে কোন ঔষধিগুণ নেই। কোন রোগী যদি ঔষধ মনে করে কোন ঔষধিগুণ বিহীন কোন কিছু খায় তাহলে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় রোগী কিছু উপকার পায়। এটাকে প্লাসিবো ইফেক্ট বলে।আজ পর্যন্ত কোন গবেষণায় পাওয়া যায়নি যে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্লাসিবোর চেয়ে বেশি ইফেক্টিভ।
অনেক আগে জার্মানি সহ পশ্চিমা দেশগুলিতে হোমিওপ্যাথি অনেক জনপ্রিয় ছিল। বর্তমানে সেসব দেশে এটা আর জনপ্রিয় না। শুধুমাত্র ভারতীয় উপমহাদেশেই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যাপক ভাবে বজায় আছে।
এটা সত্য যে হোমিওপ্যাথিক ঔষধের কোন পার্শ্বপতিক্রিয়া নেই কারণ এটাতে সত্যিকার ঔষধের কোন কিছুই অবস্থিত থাকে না। সব চেয়ে বড় সমস্যা হল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কখনো কখনো কোন কঠিন রোগে আক্রান্ত রোগী যার দ্রুত সঠিক চিকিৎসার প্রয়োজন এমন রোগীর কার্যকর চিকিৎসা নিতে দেরি করাতে পারে এবং জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাড়াতে পারে। এজন্য মানুষকে সতর্ক হতে হবে হোমিওপ্যাথিক ঔষধের কার্যকরহীনতা সম্পর্কে।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আপনার বক্তব্য সায়েন্টিফিক। কিন্তু হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় দুরারোগ্য ব্যাধি সেরে যেতে আমি দেখেছি। কারণ জানি না।

২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩২

মোহাম্মদ শফিউল্লাহ বলেছেন: অনেক ক্ষেত্রে অনেক দুরারোগ্য ব্যাধির পেছনে মানসিক কারন জড়িত থাকে। প্লাসিবো এফেক্ট এর কারনে ভুয়া চিকিৎসায়ও অনেক সময় এগুলো সেরে যায়।

২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:০০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
প্রবাদ শুনতাম আগে
মশাও একটা পাখি
হোমিওপ্যাথিও চিকিৎসা।

তবে গরীব রোগীদের ভরসা !!

৩| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:২৯

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সরকারী অনেক হাসপাতালে নাকি হোমিও ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হয়েছে?

২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৩৩

মোহাম্মদ শফিউল্লাহ বলেছেন: হা, আপনি ঠিকই শুনেছেন। বেশ অনেক বছর ধরে এটা হচ্ছে।

৪| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:২৮

সুপারডুপার বলেছেন: হোমিওপ্যাথি ঔষুধ অবশ্যই কিছু ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে কাজ করে। যেমনঃ আমার লালাগ্রন্থিতে পাথর (salivary stone) হয়েছিল। এলোপ্যাথি ডাক্তার বলেছিলো, অপারেশন করে সরাতে। হোমিওপ্যাথি ডাক্তার বললো হোমিওপ্যাথি ঔষুধ আছে কিন্তু ধীরে ধীরে কাজ করবে। আমি হোমিওপ্যাথি ঔষুধ খাওয়া শুরু করলাম ও "পাথর কি আছে /ছোট হচ্ছে ?" এই চেক করার জন্য নিয়মত আল্ট্রাসনিক-3D টেস্ট করাতাম। দীর্ঘ ছয় মাস হোমিওপ্যাথি ঔষুধ খাওয়ার পরে দেখলাম, পাথরটি আর নাই। আমার আর অপারেশন করে পাথরটিও সরাতে হলো না।

ইউরোপের কিছু দেশে হোমিওপ্যাথি -এলোপ্যাথি ডাক্তার সমন্বয় ভাবে কাজ করে। কিছু ডাক্তার হোমিওপ্যাথি -এলোপ্যাথি -২-টাতেই ট্রেনিং নেন। যে অসুখের জন্য যে ঔষুধ ভালো, সেই ঔষুধ-ই লিখে দেন।

২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৭

মোহাম্মদ শফিউল্লাহ বলেছেন: কিছু কিছু অসুখ আছে যা আপনা আপনি ভাল হয়ে যেতে পারে একটা সময় পরে। আপনি হোমিওপ্যাথি ঔষুধ খাওয়া ছাড়াও জীবনাচারের কিছু কি পরিবর্তন করেছিলেন, যেমন বেশি করে পানি খাওয়া, লেবু জাতীয় ফল চুছে চুছে খাওয়া ঈত্যাদি?

৫| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: হোমিও প্যাথি থেকে দূরে থাকাই ভালো।

৬| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:১০

শার্লক_ বলেছেন: বুঝলাম, কিন্তু সুপারডুপার যেটা বললো সেটার ব্যাখ্যা কি? আমার আম্মার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল।

৭| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৯

নতুন বলেছেন: অনেক মানুষ বলবে তার হোমিও খেয়ে উপকার হয়েছে, এবং অনেক মানুষ আপনি পাবেন যাদের হোমিও খেয়ে কোন উপকার হয় নাই।

মানুষের কথা আর বিজ্ঞান ভিক্তিক প্রমান সম্পূন` আলাদা কথা।

প‌্যারাসিটামলে সারা দুনিয়ার মানুষেরই মাথা ব্যাথা সারাবে, এটাতে ব্যাথা কমে তার প্রমান আছে,

কিন্তু হোমিও কাজ করে এমন কোন প্রমান এখন পযন্ত পাওয়া যায় নাই।

মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং নিজেকে সারিয়ে তোলার ক্ষমতা সব সময়ই শরীরের রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে শরীরকে সারিয়ে তুলতে চেস্টা করে।

যখন কোন রোগ ধরা পরে এবং যদি সেই রোগ যাতে না বাড়ে সেই রকমের নিয়ম মেনে চলে তবে শরিরই নিজেই অনেক রোগের বিরুদ্ধে জয়ী হয়।

আর এই রকমের পাথর অনেক সময় নিজেই চলে যায়।
Click This Link
Symptoms
Salivary stones do not usually cause symptoms when they are forming, and they can sometimes disappear on their own.

৮| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫২

নতুন বলেছেন: আমার খালা শাশুড়ী, এবং মামা শশুর হোমিও প্রাকটিস করেন।

তারা নিজের জন্যেও এলোপ‌্যাথি খান, তাদের বাচ্চাদের জন্যেও এলোপ‌্যাথি ডাক্তারের পরামশ` নেন।

আপনার পরিচিত হোমিও ডাক্তারের কাছা খোজ নিয়েন যে তারা কতটুকু এলোপ‌্যাথির ডাক্তারের পরামশে` ওষুধ সেবন করেন?

কেন করেন?

৯| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:০২

সুপারডুপার বলেছেন:



লেখক বলেছেন: কিছু কিছু অসুখ আছে যা আপনা আপনি ভাল হয়ে যেতে পারে একটা সময় পরে। আপনি হোমিওপ্যাথি ঔষুধ খাওয়া ছাড়াও জীবনাচারের কিছু কি পরিবর্তন করেছিলেন, যেমন বেশি করে পানি খাওয়া, লেবু জাতীয় ফল চুছে চুছে খাওয়া ঈত্যাদি?
..............................................................
- না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.