নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুদ্ধিজীবী ও লেখকদের দৈন্যদশা

২২ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:০১


এ সময়ের প্রধান কবি নির্মলেন্দু গুণ, কোন সংকটে কি বললেন তার জন্য দেশবাসী তাকিয়ে থাকে না। জন মানুষের কাছে তার বক্তব্য গুরুত্ব বহন করে না। কেন এমন দৈন্যদশা তাঁর। দেশের প্রধান কবিকে কেন জনগণ একটুকুও গুরুত্ব দিতে চায় না? তার কারণ তিনি নিজেকে হালকা করতে করতে ওজনহীন করে ফেলেছেন। কোন কবি পুরস্কারের প্রত্যাশা করতেই পারেন কিন্তু পুরস্কার পাওয়ার জন্য এতোটা হাপিত্তেশ করতে পারেন না। হাজারোভাবে আনুগত্য প্রকাশ করার পরেও ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তাকে পুরস্কার আদায় করে নিতে হয়। ব্যক্তিত্ব গঠন করতে দেশের সকল কবিই ব্যর্থ হয়েছেন। দেশে প্রভাববিস্তারকারী কোন ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক বা বুদ্ধিজীবীও নেই। গ্রীসের দার্শনিকদের প্রভাব দেখেছি। সক্রেটিসকে মৃত্যুদণ্ড দিতে গিয়ে কী বিপুল আয়োজনই না করতে হয়েছিল। সেই রেশ আজও রয়েছে। ইউরোপের লেখক ও দার্শনিকদের প্রভাব দেখেছি। লিওনার্দো দা ভিঞ্চি, মাইকেলেঞ্জেলো, হেনরিক ইবসেন, জ্য পল সাত্র, সিমন দ্য বোভোয়ার, বার্রা।রন্ড রাসেল, আলবেয়ার কাম্যু, দার্শনিক জন লক, ফ্রান্সিস বেকন, জাঁ জাক রুশো, ভলতেয়ার, ইমানুয়েল কান্ট, কার্ল মার্ক্স, ফ্রেডরিক হেগেল, ফ্রেডরিক নিৎশে, সিগমুণ্ড ফ্রয়েড এবং আরো শত শত লেখক-দার্শনিক, বিজ্ঞানী বিপুল শ্রদ্ধা অর্জন করেছিলেন। তাদের বিপুল প্রভাবেই ইউরোপ বদলে গিয়েছিল।

জ্যঁ পল সার্ত্রের কথাই বলি। একজন দার্শনিক ও লেখক হিসেবে কেমন প্রভাব বিস্তার করতেন সমাজে? প্রতিটি অন্যায়ের বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়াতেন, প্রয়োজনে নিজ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও। রাষ্ট্রদ্রোহী আখ্যা পেয়েছেন কিন্তু আপোষ করেন নি। আলজেরিয়ার সাথে অন্যায় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে সার্ত্রসহ ১২১ জন বুদ্ধিজীবী ফ্রান্সের যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়ে আলজেরিয়ার স্বাধীনতার জন্য সমর্থন দিয়েছিলেন। তারা গ্রেফতারও হয়েছিলেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জোয়ারে প্রতাপশালী প্রেসিডেন্ড জেনারেল দ্য গল, সার্ত্রকে সম্মানের সাথে চিঠি লিখতে বাধ্য হয়েছিল। তাকে এক নজর দেখার জন্য বা তাঁর পাশে একটু হাঁটার জন্য মানুষ চেষ্টা চালিয়ে যেতো। তার বাসস্থান থেকে সকালে পত্রিকা কেনার জন্য বের হলে সাধারণ মানুষের সাথে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অনেক বুদ্ধিজীবীও তার সঙ্গ পাওয়ার জন্য, একটু কথা বলার জন্য তার চারপাশে ভীর জমাতো। সার্ত্রের পাশে হাঁটাও অনেক গর্বের মনে করতেন তারা। সার্ত্র কোন এনভেলপের উপর কমল রেখেছিলন সেটা দখলের জন্যও কাড়াকাড়ি পড়ে যেতো। সিগারেটের পরিত্যক্ত পাছা নিয়ে একটি ঘটনা রয়েছে। কেউ একটি সিগারেট খেয়ে তা জ্বলন্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দিয়েছিল। সার্ত্র তা জুতো দিয়ে মাড়িয়ে নিভিয়ে দিয়েছিলেন। সাথে সাথেই একজন ভাস্কর তা নিয়ে নেন এবং একটি ভাস্কর্যে তা ব্যবহার করেন। ফ্রান্স ভ্রমণের সময় এক সন্ধ্যায় সোভিয়েত রাষ্ট্রনেতা ব্রেজনেভ এর দাওয়াত ছিল ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হাউজে। একই সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের পলাতক বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার ছিল সার্ত্রের। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেন ফ্রান্সের বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ। সারা বিশ্বের শতাধীক রেডিও ও টিভি ক্যামেরা প্রচার করে সেই অনুষ্ঠান। প্রেসিডেন্ট হাউজের অনুষ্ঠান মিডিয়ার কাছে গুরুত্ব হারিয়েছিল। সার্ত্রের লোভ ছিল না। তিনি ফ্রান্সের গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত নোবেল পুরস্কারও প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি প্রতিষ্ঠান বিরোধী ছিলেন এবং মনে করতেন এতে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাঁর আনুগত্য প্রকাশিত হবে। তিনি মারা গেলে সুবিশাল শোকমিছিলে হেঁটেছিল লক্ষ লক্ষ মানুষ। অথচ তিনি ছিলেন নাস্তিক, বিয়ে না করেই থাকতেন লেখিকা সিমন দ্য বোভোয়ারের সাথে। ফ্রান্সের মানুষের উপর এতোটাই প্রভাব বিস্তার করতে সার্ত্রে। এমন প্রভাব আমরা আরো অনেক লেখক/দার্শনিক এর মধ্যেও দেখি।

আসুন আমরা এবার তুলনা করি আমাদের লোভী ও নতমস্তকে অনুগত থাকা লেখক/বুদ্ধিজীবীদের সাথে। আমাদের ইনারা জনমানুষের কথা বলেন না, জনমানুষও তাদের কাছে নিজেদের আগামীকে উপলব্ধি করে না। ইনারা মানুষের মতপ্রকাশ ও বাকস্বাধীনতার কথাও বলেন না। ইনারা ভাবেন নিজে কি কি সুবিধা পেলেন না আর অমুকে অতিরিক্ত কি কি সুবিধা পেল। কে কে সরকারী অনুদানের টাকা আত্মসাৎ করতে সক্ষম হলেন তারা খুশি আর যারা পারলেন না তা অসুখি বোধ করেন। জনগণ ইনাদের কেন সম্মানের আসনে বসিয়ে মাথার তাজ করে রাখবেন তা আর খুঁজে পান না।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:২২

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: একমাত্র রাসেল ছাড়া জিবদ্দশায় খুবএকটা প্রভাব কারো তেমন ছিল না।রাসেল নোবেল পেয়েছেন সাহিত্যে,তাই সকল মহলেই তিনি গ্রহনযোগ্য ছিলেন।দার্শনিক ও বিজ্ঞানিদের জনগনের সাথে খুব একটা যোগাযোগ থাকে না,তাই সমাজে তাদের প্রভাব থাকে না।এটা তাদের কাম্যও না।তারা সমাজে পূজনীয় হন অনেক পরে।

বর্তমান বিশ্ব ভোগবাদী,তারাও ভোগবাদী বিশ্বের বাইরের কেউ না।দুই একজন যারা আছেন তারা টিম টিম করে জ্বলছেন।এদের মধ্যে অন্যতম অধ্যাপক,সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম।

২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৫৫

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
রাসেল প্রভাব বিস্তার করতেন সমাজের উপর। তাদের প্রভাব সমাজ বদলাতে ভূমিকা রেখেছে। সাত্র্রের কথা বলেছি। ইবসেনের দ্য ডলস হাউজকে বলা হয় নারীদের ঘর থেকে বের হওয়ার মন্ত্র। আরো অনেকের জন্যই এটা প্রযোজ্য। ইউরোপ বদলে তাদের ভূমিকা রয়েছে। তাদের গ্রহণযোগ্যতা ছিল।

২| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংলাদেশের শিক্ষিতরা সরকারকে সাহায্যও করছে না, সরকারের ভুলের প্রতিবাদও করছে না।

২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৫৭

মুজিব রহমান বলেছেন: সৈয়দ আবুক মকসুদ এর প্রথম আলোয় প্রকাশিত কলাম পড়লাম। শেষ পর্যন্ত তিনি বলতে চেয়েছেন ভোটার উপস্থিতি ৫-১০% হওয়ার দায় বিরোধী দলের উপরও সমান বর্তায়। বুদ্ধিজীবীরা প্রকাশ্যেই দালালি করছেন।

৩| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:১৭

কল্পদ্রুম বলেছেন: আপনি সত্যই লিখেছেন।আমাদের প্রভাবশালী বুদ্ধিজীবী বলতে কেউ নেই এখন। দুই একজন নাম শুনেছি যাদের লেখা ফেসবুকে অনেক মানুষ পড়ে।কিন্তু তাদের লেখার ক্ষেত্রেও আপনার ঐ শেষের কথাগুলো প্রযোজ্য বলে মনে হয়।সাত্রের মত ব্যক্তিত্বের অভাব বোধহয় আমাদের দেশে সবসময়ই ছিলো।

২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৫৯

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
নজরুল যৌবনে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন কবিতা দিয়ে। কিন্তু তার দোদল্যমানতা ছিল, নিজস্ব দর্শন ছিল না। রবীন্দ্রনাথেরও প্রভাব তৈরি হয়েছিল নোবেল প্রাপ্তির পরে। তবে বাস্তবিক আমাদের বর্তমান সময়টা অন্ধকার যুগের মতোই।

৪| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:১৮

রেজাউল করিম সাগর বলেছেন: তারা বুদ্ধিজীবী নাতো, বুদ্ধিবেশ্যা।

২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:০০

মুজিব রহমান বলেছেন: কেনা বেচার মধ্যে থাকা বুদ্ধিজীবীদের এমনটা বলাই যায়।

৫| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: গুন দা সম্ভবত কিছুটা লোভী। অথবা উনি দাবী করেন।
আমাদের দেশে সত্যিকারের লেখক খুব কম।

২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:০১

মুজিব রহমান বলেছেন: গুণদা ইতিহাস তৈরি করেছেন ভিক্ষাবৃত্তির।

৬| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:২৫

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: বিরোধী দলটা কোথায় পেলেন?দুই একটার নাম করেন।

২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২০

মুজিব রহমান বলেছেন: এখন কি আর দেখতে পাবেন?

৭| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৮

শাহ আজিজ বলেছেন: এই প্রথা আমাদের সময়ে শামসুর রাহমান শুরু করেছেন । তিনি নিজেকে প্রধান কবি মনে করতেন এবং জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠন করেছিলেন । এটা এরশাদ কে কাউনটার দেবার জন্য বালকসুলভ আচরন ছিল কারন এরশাদ কবিতা লিখতেন । এরশাদের কবিতার মুল লেখক পিকিঙ্গে দুতাবাসে চাকুরি নিয়ে গেলেন । আমার পাশের ফ্লাটে থাকতেন বলে তার সাথে সখ্যতা । তিনি বলে দিলেন কবে কোন কবিতা আর ভাষণ লিখে দিয়েছেন । তখন তিনি জাফর ভাইয়ের সংসদীয় ভাষণ তৈরি করছেন । আমায় ড্রাফ্‌ট দেখালেন । একজন কবি লেখক নিজেকে নষ্ট করেন রাজনীতি নামের গলিজ বিষয়ে মাথা পেতে দিয়ে । গুন'দা তাই করেছেন লোভের বশে শামসুর রাহমানের পথ ধরে ।

২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২৩

মুজিব রহমান বলেছেন: আর আল মাহমুদ?
শামসুর রাহমানকে প্রধান কবি অভিধা দিয়েছিলেন হুমায়ুন আজাদ। পরে এটা প্রত্যাহার করে নিলেও জনগণ কিন্তু গ্রহণই করেছিল।

৮| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৬

রাকু হাসান বলেছেন:
ভাল বিষয়ে লিখছেন।এ বিষয়ে লেখার চেষ্টা করছিলাম... সময় ও পণ্ডশ্রম না হলে দেখে আমন্ত্রণ। click

২৩ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩৫

মুজিব রহমান বলেছেন: বুদ্ধিজীবীদের প্রতি এমনিতেই আশাহত ছিলাম। আপনার পোস্টটি পড়ে আরো বেদনা জাগলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.