নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোথা থেকে এলাম?

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:১১


হিন্দু পুরাণের বিভিন্ন গ্রন্থে সৃষ্টি সম্পর্কে বিভিন্ন রকম তথ্য রয়েছে। ঋগ্বেদে বলা হয়ছে সৃষ্টির প্রকাশ হয়েছিল হিরণ্যগর্ভ নামক এক মহাজাগতিক অন্তকোষ থেকে। পুরুষসূক্তের মতে- দেবতাদের দ্বারা পরাজিত পুরুষ নামক এক অলৌকিক মানবের ছিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে নানা বস্তুর সৃষ্টি। শতপথ ব্রাহ্মণ অনুযায়ী- সৃষ্টিকর্তা প্রজাপতি সৃষ্টির আদিতে সম্পূর্ণ একা ছিলেন। তাই তনি নিজেকে পুরুষ ও স্ত্রী-রূপী দুটি খণ্ডে বিভক্ত করেন। স্ত্রী ও পুরুষ ক্রমে ক্রমে প্রত্যেকটি প্রাণির দুই ভিন্ন প্রজাতি তৈরি করলেন। এই প্রজাপতিকেই পুরাণে ব্রহ্মা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। কোথাও পাবেন ব্রহ্মার মুখ থেকে সৃষ্টি হয় ব্রাহ্মণ, হাত থেকে ক্ষত্রিয়, উরু থেকে বৈশ্য আর পায়ের ময়লা থেকে শুদ্র।

বৌদ্ধ ধর্ম মতে সৃষ্টি, পরিচালন এবং ধ্বংস এই ত্রিকাজ কোন ঈশ্বর করেন না, স্বংক্রিয়ভাবে সংগঠিত হয়। একেক প্রাণি একেক লোকভূমির উপর বাস করে। মৃত্যুর পরে কর্মফল অনুযায়ী একেক লোকভূমিতে সে চলে যায় এবং জন্ম নেয়। নির্বাণ লাভ হলেই পরম মুক্তি ঘটে। বৌদ্ধ ধর্মের লক্ষ্যই হল দুঃখ নিরসন। আজ যে মানুষ সে মন্দ কর্মফলে মৃত্যুর পরে কুকুর হযে জন্মাতে পারে আবার একটি শিয়ালও ফিরে পেতে পারে মানব জীবন। এটা এক অনন্তকালের প্রক্রিয়া।

ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের বিশ্বাস মতে, আদম/এডাম ছিলেন প্রথম সৃষ্ট মানুষ। ইসলামের দৃষ্টিতে, তিনি প্রথম নবী ও আদি মুসলমান। পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধির সূচনা সত্তা। আর ইহুদি ও খ্রিস্ট ধর্ম মতে, তিনি পরমেশ্বরের মনোনীত সেবক। হাওয়া (আ.) কে তারা ‘হবা’ বলে থাকেন। আর হিন্দু ধর্ম মতে, প্রথম মানব-মানবী হলোÑ ‘মনু’ আর ‘অদিতি’। মনুর সন্তান বলে আমরা মানুষ। মাটি দ্বারা সৃষ্টির পর আদম ও হাওয়া (আ.) এর অবস্থান ছিল জান্নাতে। তারা সেখানে নিষিদ্ধ ফল খেয়ে তিরস্কৃত হয়ে মাটির পৃথিবীতে এসে পড়েন দুজন ভিন্ন ভিন্ন স্থানে। আদম (আ.) সরণদ্বীপ পর্বতে (বর্তমান শ্রীলঙ্কা ধরা হয়) আর হাওয়া (আ.) আরব উপত্যকায়। দীর্ঘদিন পর আরাফাত প্রান্তরে তাদের পুনর্মিলন হয়।

পৃথিবী থেকে লক্ষ লক্ষ ধর্ম বিলুপ্ত হয়েছে। এখনো টিকে থাকা ধর্মের সংখ্যা প্রায় ৪৩০০টি। মানুষ সৃষ্টি অন্তত ৪৩০০টি মত রয়েছে। কোন মতই বিজ্ঞান সমর্থন করে না। বিজ্ঞান প্রমাণ করেই বলতে চায় কোনটি সত্য ও সঠিক। এজন্য তারা তথ্য অনুসন্ধান করে। সে অনুসন্ধানও নতুন নয়। গ্রীক দার্শনিকদের মধ্যেই প্রথম অলৌকিকতার পরিবর্তে বস্তুজগৎ থেকে প্রাণের বিকাশের ধারণা জন্ম নেয়। দার্শনিক থেলিস বলেন, ‘পানি থেকেই প্রাণের উৎপত্তি’। ভারতীয় দর্শন এর পরে পঞ্চভূতের কথা বলেছিল। ভারতীয় দর্শনের বৈশিষ্ট্য ছিল প্রধানত জাগতিক। জীবন ও বস্তু জগতের মূলে কি আছে, এ প্রশ্নের জবাবে প্রাচীন ভারতীয় দর্শনের লোকায়ত শাখা এরূপ মনে করত যে, জীবন ও জগৎ হচ্ছে- মৌলিক উপাদান- ক্ষিতি (মাটি), অপ (পানি), তেজ (অগ্নি), মরুৎ (বায়ু) ও ব্যোম (আকাশ) এর সম্মিলন। এগুলোও কোন বিজ্ঞানভিত্তিক কথা নয়, এমনকি মৌলিক উপাদানও নয়। প্লেটো ও এরিস্টটলও বিশ্বাস করতেন এই বিশ্বের সমস্ত কিছুই ঈশ্বরের পরিকল্পনার ফসল- মানুষ বা পশুপাখিতো অবশ্যই।

এক প্রজাতির প্রাণি এমনকি মানুষও যে অন্য কোনও প্রজাতির প্রাণি থেকেই উদ্ভুত- এ ধারণাও প্রথম আসে গ্রীক দর্শনেই। অ্যানাক্সিমান্দার অফ মিলেটাস (খৃস্টপূর্ব ৬১০-৫৪৬) প্রস্তাব করেছিলেন- পৃথিবী ছিল জলমগ্ন আর স্থলবাসী মানবজাতির পূর্বপুরুষের উদ্ভব ঘটে জলেই। মানুষ নিশ্চয়ই অন্য কোন প্রজাতির সন্তান সম্ভবত মাছের। এমন ভাবনাগুলোকে স্তব্ধ করে দেয়া হয় প্রথমত প্লেটো-এরিস্টটলের প্রভাবে, তাতে বিবর্তনবাদের চিন্তার ব্যাঘাত ঘটে। এরপর খৃস্ট ধর্মের প্রসারে সমস্ত চিন্তার জগৎ স্তব্ধ হয়ে যায়- থাকে শুধু অন্ধকার মানে শুরু হয় অন্ধকার যুগ। দীর্ঘ অন্ধকার যুগ পেরিয়ে রেনেসাঁ শুরু হলে আবারো খুলে যায় মুক্তচিন্তার পথ।

১৯৫৮ সালে চার্লস ডারউইন এক নতুন বিবর্তনের তত্তেব্র প্রস্তাবনা করেন। বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলে। শুরুতে বিবর্তনবাদ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠতো। অনেক তথ্য (মিসিং লিংক) না থাকায় এর বিরুদ্ধে সৃষ্টিবাদীরা বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপন করতো। ধীরে ধীরে মিসিং লিংকগুলো পাওয়া যেতে থাকে মূলত ফসিল থেকে। এছাড়া আরো বহুদিক দিয়ে প্রমাণিত হতে থাকে বিবর্তনবাদের। তাতে বিবর্তনবাদ বিজ্ঞানীমহলে একটি স্বীকৃত বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। মানুষ একটি বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য পায়- তারা কোথা থেকে এসেছে! এক প্রাণির সাথে আরেক প্রাণির মধ্যে থাকা মিলগুলোর কারণ বুঝতে পারে। বুঝতে পারে- এক প্রজাতি কিভাবে বিবর্তিত হয়ে পরিণত হয় আরেক প্রজাতিতে, কিভাবে এককোষি প্রাণি হয়েছিল বহুকোষি প্রাণি, কিভাবে কোন এপজাতীয় প্রাইমেট থেকে বিবর্তিত হয়ে হয়েছে মানুষ। এমন বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণগুলো মানুষকে সত্যানুসন্ধানের এক চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়েছে। নিজের সৃষ্টির একটি বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ দেখে শেষ পর্যন্ত জয় হয়েছে মানুষেরই। মানুষই একমাত্র প্রাণি যারা জানে কিভাবে তারা এসেছে, এমনকি জানে অন্য প্রাণিও কিভাবে এসেছে।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি বলেছেন যে, প্লেটো বিশ্বাস করতেন যে, পৃথিবী ঈশ্বরের পরিকল্পনার ফসল।

প্লেটো কি তা বিশ্বাস করতেন?

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৩৬

মুজিব রহমান বলেছেন: অবশ্যই। সক্রেটিসও বিশ্বাসী ছিলেন।

২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৪৮

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সুন্দর বিশ্লেষণ যদিও সংক্ষিপ্ত।বিবর্তন তত্ত্বের উৎকৃষ্ট উদাহরণ বর্তমানের করোনা।সেটা ইতিমধ্যে কয়েকবার নিজেকে পরিবর্তিত করেছে নিজের প্রয়োজনে।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৫৮

মুজিব রহমান বলেছেন: এটা মাইক্রো লেভেলের বিবর্তন। তবুও বড় উদাহরণ যে বারবার বদলে যাচ্ছে।

৩| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:



লেখক বলেছেন: অবশ্যই। সক্রেটিসও বিশ্বাসী ছিলেন।

-সক্রেটিসের বিরুদ্ধে কি কি অভিযোগ ছিলো?

৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৩৬

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

মুজিব রহমান বলেছেন: ইসলামিক আইন আর সভ্য আইন ভিন্ন। কোন দেশই আর সম্পূর্ণ ইসলামি আইনে চলে না। আস্তে আস্তে সভ্য ও মানবিক আইন বাড়ছে। ভবিষ্যতে আরো বাড়বে এবং অসভ্য/ইতর আইনগুলো বিতাড়িত হবে।


Let alone Bangladesh!

৫| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০২

স্প্যানকড বলেছেন: আমরা কই থাইকা আইছি এর চেয়ে বেশী জানা দরকার আমরা ন্যাংটো কেন মন মগজে? অন্যপ্রাণীরা অতটা না যতটা সৃষ্টির সেরা! ভালো থাকবেন।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৩

মুজিব রহমান বলেছেন: এক সময়তো লেংটা ছিলই।

৬| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: কোথা থেকে এলাম।
এসব নিয়ে ভেবে সময় অপচয় করার কোনো মানে হয়না।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৫

মুজিব রহমান বলেছেন: কি বলেন? এটা না জানলে মানুষ এগিয়ে যাবে কিভাবে? বিবর্তনবাদ ছাড়া কি আজ চিকিৎসা বিজ্ঞান চলবে?

৭| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৫১

এমেরিকা বলেছেন: এরিস্টোটল, প্লেটো বা সক্রেটিসের মত মহাজ্ঞানী লোক পৃথিবীতে কোনদিন জন্মাবে বলে আমার মনে হয়না। তারা এত জ্ঞানী হয়েও স্রষ্টায় অবিশ্বাস করেননি বা নাস্তিক হয়ে যাননি। আর আমাদের নুরুল ইসলা০৬০৪, উদাসী স্বপ্ন, এ আর ১৫, চাঁদগাজী, কলাবাগান১ এরা দু চার পাতা কোরআন পড়েই ধর্মের অসারতা নিয়ে বিরাট জ্ঞানী হয়ে যায়!

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৮

মুজিব রহমান বলেছেন: ওই সময় মানুষের ভাবনা আরো সীমাবদ্ধ ছিল। তাদের ভাবনা সীমিতই ছিল। তাদের মতো জ্ঞানী জন্মাবে না তা কে বলল?

৮| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৩২

স্প্যানকড বলেছেন: স্বর্গ থেকে আইছি। হইছে,এইবার ব্রেক মারেন!পারলে হাত! মানে অন্যকিছু লিখেন! ধন্যবাদ...

২৪ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫০

মুজিব রহমান বলেছেন: আগের পোস্টটিই ছিল অন্যরকম।
আপনি আমার সবপোস্টেই আপত্তি করতে পারবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.