নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোথা থেকে এলাম?

১৩ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৯:০৩


এ প্রশ্নের অবতারণা কবে এসেছিল মানুষের মনে? কত শতাব্দী আগে? এ রহস্যের সমাধান করতে মানুষের বৈচিত্র্যময় ভাবনার পরিণতি হাজার হাজার ধর্ম- যা টিকে আছে (৪৩০০টি) বা বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু যতই সময় গড়িয়েছে ততই বেড়েছে প্রশ্ন আর উত্তর দিতে পারেনি প্রাচীন গ্রন্থগুলো। তারা বলেছে ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন? কিন্তু মানুষ সন্তুষ্ট থাকেনি তাতে। প্রশ্ন করেছে ঈশ্বরকে কে সৃষ্টি করেছে? উত্তর এসেছে ঈশ্বর স্বয়ম্ভু, নিজেই নিজেকে সৃষ্টি করেছেন এবং সৃষ্টির শুরুতেই ওই মহাবিশ্ব, প্রাণিজগৎ এবং মানুষ সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু মানুষ তাতেও সন্তুষ্ট থাকেনি- তাদের অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর ছিল অজানা। প্রশ্ন করাকেই সন্দেহের চোখে দেখা হয় এবং অন্ধভাবেই বিশ্বাস করাকেই গুরুত্ব দিতে বাধ্য করা হয়। কিন্তু মানুষ ওই সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়েছে বিবর্তনবাদের মাধ্যমে। সচেতন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ হকচকিত হয়েছে প্রশ্নাতীত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে।

বিবর্তনের মাধ্যমে প্রাণের ধারণা প্রথম করেন গ্রীক দার্শকগণ। থেলিস ভেবেছিলেন সকল প্রাণির উদ্ভব হয়েছে পানি থেকে। অ্যারিস্টটল ধারণা দেন- অজৈব বস' থেকেই জৈব বস্তু সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে দীর্ঘকাল আর কথা বলা যায়নি খৃষ্ট ধর্মের প্রভাবের কারণে। অন্য ধর্মগুলোও চিন্তার জগৎকে থামিয়ে দিয়েছে। ধর্মগুলোতে রয়েছে পূর্ববর্তী চিন্তার প্রকাশ। পরবর্তীতে নতুন চিন্তা যেহেতু সাংঘর্ষিক তাই তা গ্রহণ করা হতো না এবং নতুন চিন্তা আসলেই তাকে দমন করা হতো। তবুও ইউরোপের দার্শনিকরা অন্ধকার যুগ পেরিয়ে কথা বলা শুরু করে এবং তারা নতুন দিগন্তের উন্মোচন করে।

আজ বিভিন্ন পরীক্ষায় জানা যায়, অ্যামোনিয়া, মিথেন ও জলীয় বাষ্পের সমন্বয়ে সমুদ্রে তৈরি এমাইনো এসিডই সেই জৈববস্তু যা থেকে প্রাণের সূচনা। সেখান থেকে আসে প্রোটিন অনু। সেই প্রোটিন অনু থেকেই আসে প্রোটোপ্লাজম। এককোষি প্রাণের উদ্ভব হয়। কিভাবে হয়? তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। যদি ওই পরিবেশ তৈরি করে এমনটা পরীক্ষাগারে করা যায় তবেই প্রকৃত সত্যটা জানা যাবে। এককোষি প্রাণের আবির্ভাব হতেই পৃথিবীর বয়স হয়েছে শতকোটি বছর। অর্থাৎ আজ থেকে ৩৫০ কোটি বছর আগে অকোষীয় জৈব পদার্থের কোষীয় রূপান্তর ঘটে। এরপর থেকেই বিবর্তনবাদ কথা বলে!

এর পরের ৫০ কোটি বছরের মধ্যে প্রাচীনতম ব্যাকটেরিয়ার যে ফসিল পাওয়া যায় তাও অতি সরল কিন্তু শুরুর চেয়ে অনেক জটিলতর। এর পরের ২০০ কোটি বছর এককোষি ব্যাকটেরিয়ারই ফসিল পাওয়া যায় বিভিন্ন রূপে। প্রিক্যাম্ব্রিয়ান কালের যে ফসিল পাওয়া যায় তার সবই বহুকোষী ও ক্ষুদ্র অমেরুদণ্ডী প্রাণির। ক্যাম্ব্রিয়ান কালে পাওয়া ফসিলগুলোতে জেলিফিস, স্পঞ্জ এর মতো প্রাণির দেখা মেলে। অর্ডোভিসিয়ান কালের ফসিলের মধ্যে কোরাল, সি-অর্চিনসহ চোয়ালবিহীন মাছদের দেখা মেলে। ডেভোনিয়ান কালে চোয়ালযুক্ত মাছের আধিপত্য দেখা যায়। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত সকল ফিসলের প্রাণিরাই জলে বাস করতো। এর পরে পাওয়া যায় উভচর প্রাণির ফসিল। কুমির জাতীয় প্রাণির উদ্ভব ঘটে তাই কুমিরকে এখন জীবন্ত ফসিল বলা হয়। এমন আরো কিছু প্রাণি রয়েছে যারা তেমন পরিবর্তন হয়নি। এরপরের স'রে যে ফসিল পাওয়া যায় তা সরীসৃপের। আরো পরের স্তরে ডাইনোসর! এ এক বিস্ময়কর ধারাবাহিকতা যে প্রাচীন ও সরল প্রাণিগুলো পাওয়া যায় পূর্ববর্তী স্তরে। এ ধারাবাহিকতার ব্যাখ্যা কি? এখন জিন পরীক্ষা করেও দেখা যাচ্ছে এক যুগের প্রাণি পরিবর্তন হয়ে অন্য সময়ে কিছুটা ভিন্ন প্রাণিতে পরিণত হয়েছে। কয়েক ধাপ পেরিয়ে এসেছে আধুনিক ঘোড়া বা হাতি। কেন এমন ধারাবাহিকতা? এর ব্যাখ্যাও শুধুমাত্র বিবর্তনবাদ দিয়েই দেয়া সম্ভব।

এককোষী সেই আদি কোষটি আর টিকে নেই। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়ার মতো অনেক ব্যাকটেরিয়া এখনো টিকে আছে, তাদের অনেকে হয়েছে আরো জটিল। সরল থেকে জটিল প্রাণের উৎপত্তির ব্যাখ্যা অন্যকোনভাবেই দেয়া সম্ভব নয়। তাই বলতেই হয় সমস্ত প্রাণিই এসেছে বিবর্তনের মাধ্যমে।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৯:৪০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ঈশ্বর নিজেকেই নিজে সৃষ্টি করেছেন,এটা একটা স্ববিরোধী ধারনা।

১৪ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৩৬

মুজিব রহমান বলেছেন: অবশ্যই। সহমত।

২| ১৪ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: গত কয়েক দিনের পোষ্ট থেকে বুঝা যাচ্ছে বির্বতন, জন্ম, সৃষ্টি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে খুব পড়াশোনা করছেন। খুব ভালো।

১৪ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৩৮

মুজিব রহমান বলেছেন: তা নয়। বিষয়টি আমার কাছে খুবই আগ্রহের। একটি বই পড়তে গিয়ে দেখলাম তিনি ল্যামার্কবাদ থেকেই বের হতে পারেন নি। দুটো গুলিয়ে লিখেছেন। তাই আবারো মনে হল- এ নিয়ে প্রচুর লেখা দরকার। দেশে বিবর্তনবাদকে জনপ্রিয় করা গেলে, ধর্মীয় মৌলবাদ কমে আসবে।

৩| ১৪ ই মার্চ, ২০২১ রাত ২:২৭

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: নটরডেম কলেজে আমি গাজী আজমল স্যারকে তার শিক্ষকতার শুরুর দিকে পেয়েছিলাম। মুগ্ধ হয়ে তার লেকচার শুনতাম।
আপনি হয়তো আমার সমসাময়িক বা জুনিয়রই হবেন। আপনার পোস্টগুলি আমি পড়ছি নিয়মিত, আপনার লেখার মধ্যে যথেষ্ট সাবলীলতা এবং কমেন্টের উত্তর প্রদানে আপনার মধ্যে যথেষ্ট ধৈর্য আমি দেখতে পাই।

আপনার লেখা অনেক আকর্ষণীয় হলেও ইদানিং আপনি বিবর্তন নিয়ে বেশি অবসেসড হয়ে পড়েছেন মনে হচ্ছে। ভিন্ন কিছু নিয়েও লেখা শুরু করুন, না হলে আপনার এই পোস্টগুলোর প্রতি পাঠকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে।

১৪ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৪২

মুজিব রহমান বলেছেন: আমি ৮৯ ব্যাচ।
বিজ্ঞানচিন্তাতেও পোস্টগুলো করেছিলাম। একটি পো্স্টে অনুভূতি প্রকাশ ও মন্তব্য হাজার ছাড়ানোর পরে কর্তৃপক্ষই পোস্টটি সরিয়ে দিয়েছে দেখলাম। দেখুন এখানে বিভিন্নজন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখছে। আমার একটি অভ্যাস হল- একই বিষয় নিয়ে অনেকগুলো পোস্ট দেয়া। তাতে মনের কথাগুলো ভালভাবে প্রওকাশ করা যায়। এ বিষয়টি নিয়ে অসংখ্য পোস্ট দেয়া দরকার।

৪| ১৪ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ৭:২৭

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: বিবর্তনের উদাহরণের অভাবে নেই এই জগতে। কিছু বিবর্তন হয়েছে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে আর কিছু ঘটে অপেক্ষাকৃত দ্রুত। ভাইরাসের মিউটেশনতো অতি স্বাভাবিক বর্তমান যুগে। আমাদের চোখের সামনেই দেখতে পাই পিচ ফলের প্রাকৃতিক বা জেনেটিক রূপান্তরের ফল হচ্ছে নেকটারিন। প্রায় ২০০০ বছর পূর্বে চীনে পিচের ন্যাচারাল মিউটেশনের ফলে সৃষ্টি নেকটারিন যার একটি জিনের পার্থক্য রয়েছে রয়েছে পিচের সাথে। এর কারণে এর খোসা মসৃন, পিচের মতো সাদা রোঁয়া অনুপস্থিত।

৫| ১৪ ই মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৪

Laboni বলেছেন: একটু সময় বেরকরে কিছু ভালো মুভি দেখুন।।

৬| ১৫ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৯:৩৬

স্থিতধী বলেছেন: 'ঈশ্বর নিজেকেই নিজে সৃষ্টি করেছেন' ; এই পূর্বানুমান কে যদি না মানা যায়;
সেক্ষেত্রে বিগ ব্যাং এ ঘটা রেডিয়শনের মাধ্যমে পৃথিবীর প্রথম কণা কোয়ার্ক - লেপ্টনের আবির্ভাব , এ সমস্ত ঘটনা সব নিজে নিজে হতে থাকলো সেটা কেন মেনে নিতে হবে?

এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা কি?

১৬ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৯:০২

মুজিব রহমান বলেছেন: এখন তো বিজ্ঞান বিগ ব্যাংকের আগে চলে গেছে। বিগ ব্যাংক সূচনা নয়। বিজ্ঞান আরো সচেষ্ট আরো রহস্য উন্মোচন করতে।

৭| ১৬ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ৮:৪৪

সোনালি কাবিন বলেছেন: সুন্দর

৮| ১৭ ই মার্চ, ২০২১ ভোর ৬:৩৭

স্থিতধী বলেছেন: বিজ্ঞান আরো সচেষ্ট আরো রহস্য উন্মোচন করতে

সেটা অবশ্যই; কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে যে সৃষ্টির প্রথম উপাদান/ ঘটনাটি নিজে নিজেই এসে গেলো/ ঘটে গেলো সেটা কেন আমাদের মেনে নিতে হবে যদি আমাদের এটা মেনে নিতে হয় যে ঈশ্বর নিজেকেই নিজে সৃষ্টি করতে পারেন না?

আরো সোজাসাপ্টা করে বলতে গেলে বলতে হয় যে "ডিম আগে না মুরগী আগে" এমন ক্লাসিক তর্কের সর্ব বোধগম্য উত্তর কি আমরা বৈজ্ঞানিক বা দার্শনিক সমাজের কাছ থেকে এখনো পেয়েছি কিনা ?

১৭ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৯:২৬

মুজিব রহমান বলেছেন: বিগ ব্যাংকের আগে চিন্তা করছে মানুষ। এই চিন্তা কেন করে? মহাবিশ্বর বিভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা করার জন্য।

ডিম আগে না মুরগি আছে তার একটি ব্যাখ্যা সরাসরি আছে। মুরগির উপাদান নিয়েই যেহেতু ডিম তাই মুরগিই আগে। আরো ব্যাখ্যা আছে এ নিয়ে। তবে বিবর্তন হিসেব করলে মুরগিও বিবর্তিত হয়েছে ডিম পারতে পারতেই। একদিনেতো বিবর্তিত হয়নি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.