নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যতটা দেখছি ততটা শিখছ

মঈনুল হাসান সজল

মস্তিস্কের স্বাধীনতা চাই।।

মঈনুল হাসান সজল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা এবং আমাদের অস্তিত্বে

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:০০

অনেক দিন আগে "TCA" এর জন্য লিখে ছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল- কিছুটা Motivation... হয়নি ভেবে আবার দিলাম।

আমরা এবং আমাদের অস্তিত্বে
………………………………..মইনুল হাসান সজল

অন্যভ্যাস বশত লিখতে বসে একটি ভাবনা ঘিরে ধরলো যে , কী নিয়ে আগাবো । আমার বন্ধুদের নানা অনুরোধে এই লেখাটি লিখতে বসা। তাদের অনেকের মতে যন্ত্র, কম্পোজিশন , ব্যাকারন এই সব নিয়ে লেখাই নাকি শ্রেয় । কিন্তু আমি তো আমাদের নিয়ে লিখতে চাই। এদিকে আবার আমার স্বভাব জাত কাজটি লেখা নয় , আঁকা, তাও আবার আলো দিয়ে । যদিও এই অংকন আমাদের শিল্পীর মর্যাদা দেয় কিনা তা প্রশ্ন বিদ্ধ । আমাদের কাছে প্রশ্ন আছে, শিল্পী কে ? রঙ ও তুলির সম্বনয়ক নাকি আলো ও যন্ত্রের সম্বনয়ক নাকি দু’ই ।
ব্যাক্তিগত মতে কখনো সমাধানে পৌছানো যায়না। তার পরেও আমি মনে করি দু’ই । রঙ এর বদলে আলো , তুলির বদলে যন্ত্র , জন্মদেয় চিত্রের । যা সকল শিল্পের আগে মানুষের মস্তিকে সাড়া দেয়, অনুভূতি জন্মায়। সেই অনুভূতি যা রঙ ও তুলির সম্বন্বয়ে সমসাময়িক । তাহলে আমাদের আমাদের কি শিল্পী বলা যায়, চলমান আলোকচিত্র শিল্পী?

কেননা চলমান আলোকচিত্র ধারক/গ্রাহক বা চিত্রগ্রাহক হিসেবে আমরা বেশী পরিচিত হলেও শুধু ধারক/গ্রাহক হিসেবে কর্মসাধন কি আমাদের হয়ে থাকে? না. তা হয়না। নান্দনিক, শিল্প সম্মত, রুচিশীল ও যুক্তি/ব্যাকরন ভিত্তিক ছবি সৃষ্টি করাই আমাদের কাজ।পৃথিবীর সকল আনন্দ বেদনা, দুৎখ কষ্টের সত্য ও সুন্দর এর স্বরুপ উপস্হাপন ই আমাদের মূল অর্জন।সংগ্রাম কিংবা দূর্যোগ, বাধ কিংবা অপবাদ সত্যের পথে সুন্দরকে জয়ের জন্যই যেন এই শিল্পিরা।এই অজেয়দের তাই কিভাবে মূল্যায়ন করা হবে,তা পাঠকদের জন্যই রইল।
চলমান আলোকচিত্র শিল্পীদের সক্রিয়তা সম্পর্কে যাদের মূঢ়তা, রুষ্টতা এবং সময়ে সময়ে উদাসিন করুনা, তাদের প্রতি দুঃখবোধের কোন কারন নেই। কারন এককালে মনিষী নাট্যকার বার্নাড’শ যিনি ১৯৫০ সাল পর্যন্ত কাল কাটিয়ে গেছেন তিনিও আলোকচিত্র বুঝতেনা । যিনি আধুনিক ও পুরাকালের ইতিহাস, দর্শণ, সমাজতন্ত্র যখন অতুলনীয় ব্যাখা দিতে পারতেন তখন তিনিও আলোকচিত্রের নাড়ি টিপে টিপে এর শিল্পতত্ত্ব পুরোপুরি বোঝেননি বলে কথিত আছে । আসলে আলোকচিত্রে নন্দনতত্ত্বের যে বিস্তৃতি তার সম্পর্কে বার্নাড’শ কিছুটা হয়তো উদাসিন ছিলেন। যদিও একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয় যে , আইজেন স্টাইনের বিশ্ব বিস্তৃত ছবি ‘Battleship Potemkin’ যখন বাজেযাপ্ত হয় তখন তিনি নির্মম সমালোচনার মাধ্যমে সরকারকে আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবো বলেছিলেন ।

আমাদের তথ্যচিত্র হোক কিংবা প্রামাণ্য চিত্র কিংবা বিনোদন চিত্র, আমারা একালে চলচ্চিত্র বা ফ্লিম বলতেই বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করি । একটি কথা চিরকাল মনে রাখতে হবে, “The film is After all , a collection of camera angels consciously selected and purposely limited within the frame”

সেক্ষেত্রে চলচ্চিত্রের নান্দনিক অভিব্যাক্তি সম্পূর্ন রুপে নির্ভর করে একমাত্র চলমান আলোকচিত্র শিল্পীদের উপর । এব্যাপারে ‘দেলাক্রোয়া’ এর কিছু কথা উল্লেখ্য যে, ‘……..কোন একটা কম্পোজিশন, বিষয় সুনির্বাচনের ফলে যা এমনিতেই চিত্রাকর্ষক হয়ে আছে , যদিও তাতে এমন কিছু রেখা যুক্তকরা যায় যার বিণ্যাস রসানুভূতিকে বৃদ্ধি করে , আলো ছায়া যুক্ত করা যায় । যা কল্পনা শক্তিকে উদ্বিপ্ত করে এবং চরিত্র অনুসারে তাতে রং লাগানো যায়। তাহলে একটি বৃহত্তর উদ্দেশ্য সাধিত হয়। তাহলো একটি উন্নততর অনুভূতির জগতে প্রবেশ । যেন সঙ্গিতজ্ঞ তার থিমকে সুর ও স্বরের বিন্যাসে যুক্তকরে নান্দনিক করেন ’ ।

একটি নির্মানের মূল হাতিয়ার হলো ক্যামেরা। আর তা ব্যবহার করি আমরা। লিখিত চিত্রনাট্য যা পরিকল্পনার পর্যায়ে থাকে, তাকে চলচ্চিত্রে বাস্তবায়িত করার ভৌত দায়িত্ব আমাদের। চলচ্চিত্র এবং ক্যামেরার দুটি দিক থাকে, একটি তার টেকনোলজি, যা সম্পর্কে আমরা কমবেশী সবাই জানি ।আর একটি তার শৈল্পিক বা নান্দনিক দিক, যা আমাদের যোগ্য অবস্হানটুকু দেয় বা দিতে পারে। পৃথিবীতে যত ধরনের ক্যামেরা যন্ত্রটি আছে তার কর্ম পদ্ধতি নির্দিষ্ট যা রূপ পায় কিছু সু নির্দিষ্ট টেকনিক বা কলাকৌশলের প্রয়োগের মধ্যে দিয়ে।যেমন-ফোকাসিং, অ্যাপারচার নির্বাচন, শার্টার নির্বাচন, লেন্স, ফিল্টার, লাইটিং, ডেপথ অব ফিল্ড ইত্যাদি। কিন্তু নান্দনিকতা, যা একজন শিল্পির সারমূল। নান্দনিকতা শিল্পসৃষ্টির প্রথম তৎপরতার সমসাময়িক।

শিল্প মানব মনে আনন্দিত উপলব্ধির বহি:প্রকাশ এবং সেই শিল্পকে সৌন্দর্যের নানান দৃষ্টিকোন থেকে পরীক্ষা বা ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করা যেতে পারে। শৈল্পিক শৃঙ্খলা কোন ছকে বাঁধা নয় এবং প্রত্যেক শিল্পী প্রয়োজনবোধে তার নিজস্ব প্রকাশবিধি করে নেয়। কিন্তু তার পরও পথিকের জন্য ছায়াপথ হলেও থাকে। আমাদের জন্যও আছে। যেমন-শর্ট সাইজ, রুলস অব থার্ড, একসেস লাইন ইত্যাদি। কিন্তু এ কথা অনস্বিকার্য যে, আমাদের নির্দিষ্ট বিধিগুলো নিয়েও মাঝে মাঝে দন্দ লেগে যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শর্ট সর্ম্পকে জানতে চাইলে আমরা বিভিন্ন শর্ট সাইজ সর্ম্পকে আমরা বলি। যেমন-লং, মিট, ক্লোজ ইত্যাদি।কিন্তু বস্তুত পক্ষে Shot তিন ধরনের-
1. Simple shot 2. Complex shot 3. Development shot

এই তিন ধরনের শর্টের মধ্যেই হচ্ছে বিভিন্ন সাইজ ও মুভমেন্টের শর্ট।আমরা শর্ট নেয়ার সময় অনেক ক্ষেএে এর ‘Elements’ নিয়ে ভাবার সময় পাইনা। এই তিন ধরনের শর্টের কিন্তু ছয়টি ‘Elements’ আছে।

1. Motivation 2. Information 3. Composition 4. Sound
5. Camera angel 6. Continuity

আর রং নিয়ে তো প্রায় আমাদের দন্ব দেখা যায়। প্রয়োজন ও অপ্রয়োজনের বেড়াজাল আমরা যেন ভেদ করতেই পারিনা। লাল ও নীল, রাত কিংবা দিনের কথা তো রয়েই গেল। একটি মজার বিষয় উল্লেখ না করেই পারছি না, প্রতিটি রংয়ের একটি নিজস্ব প্রকাশ ভঙ্গি আছে। যেমন:
সাদা- পবিএতা, শুভ্রতা, সেবা, শান্তি, আভিজাত্য
কালো- কুশ্রিতা, বিকৃত, ক্ষুদ্রতা, হতাশা
লাল- প্রেম, আনন্দ, বিপ্লব
নীল- ভয়, উদ্বেগ, হিংস্রতা
হালকা নীল- সহনশীলতা, রোমান্টিজম
হলুদ- অবিশ্বাস, শএুতা,
সবুজ- তারুন্য, জীবন, সততা, মুক্তি, আশা, মহত্ব
বেগুনী- হতাশা, শোক
কমলা- প্রেম, আলো, উৎসাহ
ধূসর- হতাশা, ঔদাসীন্য

উল্লেখ্য যে, বর্নতত্বের ইতিহাস ঘাটলে দেশও সময়ের সঙ্গে বর্নের ব্যাবহারিক প্রয়োগে নানা পরস্পর বিরোধী পরিচয় পাওয়া যায়।
তাহলে আরো একটি বিষয় স্পষ্ট যে , এই শিল্পীদের তার সীমানা অতিক্রম করতে হলে শিল্পের ব্যাকারণ , নান্দনিকতা এবং বোধকে সেই অবস্থানে বোঝাতে হবে যা তাকেও তার কাছে উপযুক্ত করে তোলে। একটি বিষয় আমাদের মনে রাখতেই হবে মনোযোগ , পর্যাবেক্ষণ , কল্পনা, ও আবেগ ই একটি কম্পোজিশনকে শ্রেষ্ঠ করে তুলতে পারে । একটি কম্পোজিশন একটি শট এবং অসংখ্যা শটে একটি মালাই একটি চলচ্চিত্র । এই মেলবন্ধনের রুপকারদের সময়ের সাথে নিজেদের তৈরী করেই নিতে হবে সময়ের মতো করেই। শিল্প ভাবনাকে গড়ে তুলতে হবে অনূমিতির মধ্যে দিয়ে নয় , তাকে সরাসরি শটে রুপদিতে হবে কম্পোজিশনের মা্ধ্যমে । আমাদের সৃষ্টিকর্মের শিল্পগুণকে নিয়ন্ত্রন করে যে সম্স্ত সূত্র তাকে কোন ভাবেই শীথিল বা সামান্য করা যাবে না।

কাল থেকে কালে শিল্পের ভাষা মানুষের হাতে হাতে কেবলেই রুপান্তরিত হয়েছে । গতদিনের শিল্প নিরীখ যেমন আজকে এসে এক নিমিষেই জীর্ণ হয়ে যাচ্ছে, তেমনি ক্ষেত্র বিশেষ একালের ভাষায় পূরোনো দিনের নির্মীত আবার নতুন সংজ্ঞাই চিহ্নিত হচ্ছে। এই দৃষ্ঠান্তই স্থান কাল পাত্র ভেদেই আমাদের শিল্পীদের শিল্প জয়ের দিকে এগোতে হবে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: শিল্পীরা বেঁচে থাকুক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.