|  |  | 
| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস | 
গল্পের নামঃ নবাগত
প্রকাশিত ছোট গল্পের ক্রম নম্বরঃ ২৮
শব্দ সংখ্যাঃ ১৮০০ 
 
ঝকঝকে আর ত্বকত্বকে দেহটা নিয়ে প্রচন্ড রোদের মধ্যে সামনে হাঁটছেন রাকিব হাসান।তিনি এক প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকুরী করেন।তার মাইনে খুব একটা ভালো নয়, মাত্র পনেরো হাজার টাকা।যে তুলনায় পরিশ্রম করেন তিনি, সেই তুলনায় এই টাকার পরিমাণ খুবই কম।তবে কোম্পানীর দেয়া কিছু সুবিধা তিনি ভোগ করেন।বিশেষ করে- ফোন বিল, খাবার বিল থেকে শুরু করে হোটেলে থাকার বিল পর্যন্ত কোম্পানী বহন করে।সুতরাং পনেরো হাজার টাকা ক্যাশ হিসেবেই পকেটে থেকে যায়।অন্যদিকে সাত-সকালে কাজে বের না হলে ফোন ট্র্যাকিং করে কোম্পানীর মূল অফিস থেকে বস নিজেই ফোন করে।চাই কাজ থাকুক বা না থাকুক তাকে বাহিরে বের হতে হয়।
ইচ্ছে হলে তিনি পরিবারকে কিছু টাকা পাঠিয়ে দেন।কারণ, তিনি ছাড়াও তার পরিবারে বৃদ্ধ বাবা-মা সহ ছোট দুই ভাই আছে, যারা এখনো পড়াশোনা করছে।
যাইহোক, তার বয়েস এখন চব্বিশ পেরিয়ে পঁচিশ ছুইছুই।একা থাকেন।একাকীত্ব তার জীবনের এক বিশাল বড় অধ্যায়।ঢাকায় থাকার সময় সে এক নার্সিং কলেজে পড়া মেয়ের প্রেমে পড়ে।তারপর ব্যস্ততার জন্য সেই সম্পর্ক ছুটে যায়, একেবারে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।কারণ, একজন মানুষ সাতসকালে উঠে ভাবছেন আজ কোন জেলায় তাকে হাজিরা দিতে হবে? কোন মেশিনটা আবার ঝামেলা করছে? তাকে স্পটে গিয়ে সেই সব ঠিকঠাক করে দিতে হয়।একজন বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সত্ত্বেও এমন চাকুরীতে তিনি সন্তুষ্ট নন বরং বিরুক্ত।সারাদিন শেষে হয়তো কোন এক হোটেলে উঠেন, নয়তো রুমে ফিরে যান।আসলে এই সবকিছুই নির্ভর করে তার কাজের সময়ের ব্যপ্তির উপর।এরপরে আবার রাত জেগে কাছের মানুষটাকে সময় দিতে হয়, সবসময় হয়তো পারেন না, আর এটাই সম্পর্ক ভাঙ্গার মূল কারণ ছিলো।অন্যদিকে পাঠক হয়তো বলতে পারেন, তার কি আর কোন আপশন ছিলো না? রাকিব হাসান হলে নিশ্চয় বলবেন, সত্যিই আমার হাতে আর কোন অপশন ছিলো না!
শুধু তাই নয়, তিনি একা একা কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনের বেশ কিছু বছর।সঙ্গিনী ছাড়াও যে যৌবনের এতগুলো বছর কাটানো যায় তা রাকিব হাসানকে না দেখলে বুঝা মুশকিল।ওর কাছে নবাগত একজন মানুষ স্রেফ একজন খরিদ্দার বা ভোক্তার মত।আসবে, সমস্যার সমাধান করে নিবে তারপর চলে যাবে।তাই খুব করে কাউকে কখনো গুরুত্ব দিয়ে উঠা হয়নি।অন্যভাবে বললে বলা যায়, সেই সময়টায় পাননি তিনি।
এখন রাজশাহীর এক হোটেলে থাকেন।এই হোটেলটা নামীদামী কোন হোটেল নয়, বরং একটু ভূতুড়ে টাইপের।রুম নং ৪০৪ এ থাকেন রাকিব হাসান।প্রতি রাতের জন্য তাকে পাঁচশ টাকা গুনতে হয়।প্রসঙ্গত, তার একটা বন্ধু আছে, আকাশ।কিন্তু আকাশের সাথেও তার কথা হয় মাসে দুই-একদিন, এর বেশি নয়।অবশ্য এই একঘেয়েমী জীবন নিয়েই সন্তুষ্ট রাকিব।কিন্তু এই একঘেয়েমী জীবনে হঠাৎ একটা ইউটার্ন ঘটে।সাদাকালো এই জীবন হঠাৎ খুব রঙীন হয়ে দেখা দেয় তার কাছে।এখন খুব সাতসকালে ঘুম থেকে উঠতে পারেন তিনি, বসের ট্র্যাকিং সিস্টেমটাকে আর কষ্ট করে কাজ করতে হয় না।
মানুষটির নাম, অনন্যা।ফেসবুকে ওদের পরিচয়।মেয়েটা তার প্রোফাইলে কোন তথ্য না দিয়ে রাখলেও রাকিবকে সব তথ্য দিয়ে দেয়।আর এক নিঃশ্বাসে সেসব বিশ্বাস করে নেন রাকিব।কারণ, রাকিব হাসানের ডায়েরীতে লেখা এক স্বপ্নের অপ্সরীর সাথে মেয়েটা খুব মিলে যায়,
“লম্বা চুল, সাদা-লালা শাড়ি, কপালে লাল টিপ, দোহারা গড়ন, শুভ্র বদন আর উচ্চতায় তাকে পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চি হতে হবে এবং পাশাপাশি মেয়েটার মধ্যে পুরো বাঙালীয়ানা থাকতে হবে।”
কিন্তু এই চাওয়ার পরপরই স্রষ্টা তাকে এতবড় চ্যান্স বাস্তব জীবনে দিয়ে দিবে তা কখনো ভেবে দ্যাখেননি তিনি, এ যেন মেঘ না চাইতে বৃষ্টি।অন্যদিকে অনন্যা কোটিপতি বাবার একমাত্র মেয়ে, অনন্যার ভাষ্য মতে।রাকিবের স্বপ্ন একদিন তিনি অনন্যাকে বিয়ে করবেন, তারপর বউ করে তিনি তাকে নিজের কেনা ঢাকার উত্তরায় নতুন কোন ফ্লাটে তুলবেন।আর এজন্য তাকে অনেক অনেক পরিশ্রম করতে হবে, এবং তাই তিনি কাজে আরো বেশী মনযোগী হয়েছেন।
ছয়মাস পর...
রাকিবঃ আমাদের মনে হয় দেখা করা উচিত।এই ভার্চুয়াল জীবনের বাহিরেও তো একটা জীবন আছে, অনন্যা...হ্যাঁ! আমি বাস্তব জীবনের কথা বলছিলাম।
অনন্যাঃ আমি তো আর হারিয়ে যাচ্ছি না, এই অবান্তর কথাগুলো না বললেই নয়।আচ্ছা, শার্টটা তোমার পছন্দ হয়েছে?
রাকিবঃ হ্যাঁ, অনেক পছন্দ হয়েছে।এই দিয়ে মোটমাট চৌদ্দটা শার্ট, একটা পাঞ্জাবি, চারটে টি-শার্ট।আর আজকের হাত খরচ কিন্তু পাইনি।ওটাও দিয়ে দিয়ো, প্লিজ! হাহ্!
অনন্যাঃ এরকম করে কেন বলছো?
রাকিবঃ আমার কেন জানিনা মনে হচ্ছে, আমি তোমার সাথে নয় অনন্যা, আমি এই মোবাইলটার সাথে প্রেম করছি।প্লিজ! আমাকে আর ঋণী করো না।
মোবাইলে সেদিন এই কথাগুলো বলার কারণে ওপাশ থেকে অনন্যার কান্নার শব্দ শুনতে পাচ্ছিলেন রাকিব।একসময় ফোন রেখে দিলেন।একটা মেয়ে, নিঃস্বার্থভাবে তাকে কেন এত ভালোবাসতে যাবে? এটা কি একটা সমস্যা নয়! আবার সন্দেহের এই দোকানে বেচাকেনা আর চলছেনা, সেটা যেন স্পষ্ট! রাকিব হাসান পুরো ব্যাপারটাকে একদম মেনে নিতেই পারছেন না।এখন তিনি শুধু চান তার ভালোবাসার মানুষটির সাথে একবার দেখা করতে।
এরপর রাকিবের সাথে অনন্যার আর কথা হচ্ছিলো না।বলতে গেলে, যোগাযোগ একদম নেই বললেই চলে।দুই-একটা টেক্সট করেন, তাও দায়সারা ভাব।আসলে এই দুজনের মধ্যে যে কেমিষ্ট্রি ছিলো তা ম্যাথম্যাটিকস্ এ গিয়ে একেবারে হার মেনে গেলো।হিসেব এখন মেলানো বড় দায় হয়ে গেছে।হঠাৎ একদিন অনন্যার টেক্সট এলো,
“আগামীকাল শুক্রবার। ফ্রি আছো? যদি ফ্রি থাকো তাহলে দেখা হচ্ছে “মি. & মিসেস জো” রেস্টুরেন্টে।বিকেল পাঁচটায়।”
রাকিব তখন এক সার্কিট নিয়ে কাজ করছিলেন, তার কারিগরি হাত একটু নড়তেই স্মার্টফোনটি বের হয়ে আসলো পকেট থেকে।একবার দেখে নিলেন ম্যাসেজটা তারপর আস্তে করে আবার ফোনটা পকেটে রেখে দিয়ে নিজের কাজে মন দিলেন।রুমে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা ছয়টা।ব্যাগে অল্প কিছু খাবার ছিলো, সেসব গলাধঃকরণ করে একটা ক্লান্তির ঘুম দিলেন।কারণ সপ্তাহে মাত্র একটা দিন ছুটি পান তিনি তার পৃথিবীর সমস্ত ব্যস্ততা থেকে।
পরেরদিন বিকেল পাঁচটা
রাকিব হাসান সময়ের প্রতি বেশ যত্নবান।তাই ঠিক ঠিক সময়ে রেস্টুরেন্টে উপস্থিত হয়েছেন।গায়ে আছে লাল শার্ট।অপেক্ষা করছেন, সেই ভালোবাসার মানুষটিকে অন্তত একবার দেখার জন্য।আর ভাবছেন, এই পৃথিবীতে কত গল্প শুরু হয়, আবার শেষও হয়ে যায় চোখের সামনে।এই নবাগত মানুষদের জন্য, যারা আসলে ঘূর্ণিঝড়ের মত জীবনে এসে হানা দেয়।আরো মিনিট পাঁচেক পর রাকিব লক্ষ্য করলেন, নীল গাউন পরা এক মেয়ে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করছে।নীল গাউনের সাথে কানে ঝুমকা।একটু বেমানান হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু সেরকম কিছুই মনে হচ্ছে না।লম্বা হিল আর ঠোঁটে করা লিপিস্টিক, হাতে একটা নীল রঙয়ের পার্স।সবমিলিয়ে চমৎকার হয়তো বলা যায় না, তবে ঠিকঠাক।কিন্তু একি! মেয়েটা রাকিবের দিকেই এগুচ্ছে।আর দেখতেও অনেকটা অনন্যার মত।
“আপনি রাকিব হাসান, তাই না?”- বললো মেয়েটা।
“জ্বী! আপনি? আপনি কি অনন্যা?”- প্রতুত্ত্যরে রাকিব।
“হ্যাঁ, আমি-ই অনন্যা।আপনার এই টেবিলে কি আমি বসতে পারি”- মেয়েটার গলা ভারি শোনাচ্ছিল।
“হুম, নিশ্চয় বসতে পারেন।ঘড়ি ধরে আপনি প্রায় আধাঘন্টা লেইট করছেন।”- রাকিবের কন্ঠে শ্লেষ এবং বিরুক্তি।
“ওহ্! আমার এক ক্লায়েন্টকে বিদায় দিতে দেরি হয়ে গেলো..”- মেয়েটার কন্ঠ বেশ নির্জীব।
রাকিব ঠিক বুঝতে পারছিলো না যে, একজন অনার্স পড়ুয়া মেয়ে এমন কি কাজ করে! তাও আবার রাজশাহীর মত এমন একটি শহরে, যেখানে কাজের চেয়ে কর্মচারী বেশি এবং স্টুডেন্টের চেয়ে শিক্ষক বেশি।তবুও এসব চিন্তা এক সাইডে রেখে রাকিব খাবারের অর্ডার করলেন।খাবার সময় মনে হতে লাগলো দুজনে শুধু স্পুনের আওয়াজ পাচ্ছিলো।আর কল্পনার এক কল্প রাজ্যে প্রবেশ করেছেন দুজন।সেখানে একাকীত্বের এক ভয়াবহ দানব ওদের কে খেদিয়ে বেড়াচ্ছে।
“কি ভাবছেন?”- মুখ খুলল রাকিব।
“তেমন কিছুই না।আপনি নিশ্চয় এখনো আমার উপর আর রাগ করে থাকবেন না।শেষমেশ দেখা তো দিলাম! কি বলেন! তাছাড়া সেইদিন খুব দেরিতে নয় যেদিন আমাদের মত অনেকেই এই বাস্তব পৃথিবীটা ভুলে যাবে, আর ভার্চুয়্যাল লাইফে নিজের সেক্স লাইফটাকে প্রেম আকারে সাজাবে... ঠিক বললাম?- কথাগুলো বলার সময় একটু নড়েচড়ে বসলো মেয়েটি।যেন মনে হয় তিনি এক তীর ছুঁড়ে মেরেছেন রাকিবের বুক বরাবর।কিন্তু রাকিব চুপ করে শুনলেন কথাগুলো।আর তারপর তিনিও শুরু করলেন, “হুম, ঠিক তাই।প্রত্যাশার চেয়ে তুমি অনেক সাহসী, অন্তত সঠিক শব্দ একদম সঠিক জায়গায় ব্যবহার করার ক্ষেত্রে।কিন্তু অনন্যা, মানুষ এখন অন্য কারো কথা শোনে শুধু কথাগুলোর উত্তর দেবার জন্য।যাকগে, আপনার ক্লায়েন্ট নিয়ে একটু কৌতুহল থেকেই গেলো।পড়াশোনার পাশাপাশি আর কি করেন আপনি?”
 
প্রশ্নটা শোনার পর মেয়েটা একটু নির্জীব হয়ে গেলেন।তারপর কয়েক সেকেন্ডের এক নিষ্পাপ লম্বা শ্বাস নিয়ে বলা আরম্ভ করলেন, রীতিমত বিটিভিতে চলা কোন তর্ক-বিতর্কে জয়ী হবার তাগাদা নিয়ে,
“যদি বলি আমি একজন প্রস্টিটিউট, ফুল টাইম প্রস্টিটিউট.. বিশ্বাস করবেন?”
রাকিব এবার কড়া এক ইলেকট্রিক শক্ খেলেন।মনে হতে লাগলো তার, এরচেয়ে ভালো ছিলো মেয়েটার সাথে কোনরকম তর্কে-বিতর্কে না যাওয়া।ভুল ছিলেন বলে নিজেকে কয়েকবার ধিক্কার দিলেন।কিন্তু এভাবে তো আর চুপচাপ থাকা যায় না, জলে নেমে কুমিরের জন্য ভয় করলে চলবে না কি! কোথাও হয়তো একটু আগুন আছে।আঁচ পাওয়া যায়, তানাহলে এত ধোঁয়া বের হতো না।তাই রাকিব তার ডিফেন্স মুডে ফিরে গেলেন, “না, আমি বিশ্বাস করবোনা।করতে পারিনা।আপনার গলা অনেক মিষ্টি।বিশেষ করে রাতদুপুরে আপনার গলায় রবীন্দ্রসংগীত আমাকে যেন অন্য রাজ্যে নিয়ে যায়।কখনো কখনো কবি নজরুলের কিছু গজল, আবার ক্লাসিক কিছু নাচ আমায় অনেক মুগ্ধ করেছে।তাছাড়া আপনার ড্রেস-আপ সেন্সে এত বাঙালীয়ানা আছে যে, যে কোন ছেলেকে মন্ত্রমুগ্ধ করতে বাধ্য।এখন সেই মেয়েটা যদি বলে যে, সে একজন বেশ্যা! এটা শুধু আপত্তিকর-ই নয় পাশাপাশি অসম্ভব, অবিশ্বাস্য”।
কয়েক মিনিট পর...
“আমাকে কোথাও নিয়ে যাবেন? দূরে কোথাও? যেখানে স্রেফ আমি আর আপনি থাকবো।আমাদের সাজানো একটা বাড়ি থাকবে... ধ্যাত! বাংলা সিনেমা হয়ে যাচ্ছে।আমি বরং কেটে পড়ি, কি বলেন মি. রাকিব?- রেস্টুরেন্টের বিল জোর করে মিটে দেবার পর হাসি হাসি মুখে বলল মেয়েটা।
“ভাববো, আপনি কি আপনার কথাগুলোর ব্যাপারে অনড়!”
“কোন কথা?”
“প্রস্টিটিউশন”
“হ্যাঁ, এটাই সত্য।আমি আনড়, অনড় থাকতেও বাধ্য।ও ও ও... এটা নিয়ে মাথা খারাপ করবেন না।আমি মি-টু আন্দোলন করি না।তাছাড়া আপনাকে ফাঁসানোর কোন ইচ্ছেও নেই।হা হা হা...”
“তাহলে স্রষ্টাকে বলে রাখা উচিত, ভুল করে আমার সাথে আপনার সাথে দেখা হয়েছে।আর আমিও ভোক্তা অধিকার আইন নিয়ে ভাবছিনা, ঘাটবোও না।”
“তাহলে তো বিদায় জানাতে হয় প্রিয় নবাগত!”
“অনন্যা! তুমি বড্ড অশ্লীল।চলো, এগিয়ে দিয়ে আসি...”
“সত্যি যাবেন আমার সাথে? আমার মেস পর্যন্ত?”
“হ্যাঁ, এটুকু তো করতেই পারি।পারি না?”
“চলুন..”
নারী দেহের স্পর্শ একটা পুরুষকে সবসময় বিমোহিত করে, যৌন উত্তেজনা দেয় এটা নারীদের ভুল ধারণা।কখনো কখনো সেই স্পর্শে থাকে, মায়া, শ্লেষ্ম বিদ্বেষ, রাগ, অভিমান বা ভালোবাসা।রিক্সায় একে অপরের হাত ধরলেও ওরা জানতো, খুব করে জানতো, এই পথ আর মাত্র কয়েক মিনিটের।শেষ গলিতে যখন রিক্সা পৌঁছে গেলো তখন আর রাকিবের আর বুঝতে বাকী রইলো না যে, অনন্যার কথাগুলো কি উদ্ভট, ভয়ংকর কিন্তু সত্য।রিক্সা থেকে নেমে যখন শেষ ভাড়াটাও মেয়েটা দিতে গেলো তখন রাকিব নিজের অজান্তে থামিয়ে দিলো অনন্যাকে।এরপর রিক্সাওয়ালাকে ব্যাক করতে বললেন ফেলে আসা গন্তব্যে।ফেরার পথে রাকিবের পিছনে ফিরে আর তাকানোর সাহস হয়নি।হতে পারে, পেছনে ফেলে রেখে আসা মানুষটির চোখে জল খুব করে ছলছল করছে।কিন্তু সত্য তো এটাও যে, রাকিবের চোখে জল চলে এসেছে।একসময় ফাঁকা রাস্তা পেয়ে হু...হু... করে উঠলো উনার ভেতরটা।রিক্সা থেকে নেমে চিৎকার দিয়ে কাঁদছিলেন।একসময় রিক্সাওয়ালা ভাই রাকিবের পাশে এসে বসলেন, জিজ্ঞেস করলেন, “ভাই! কি হইছে আমাকে একটু বলবেন? এই শহরের মাইয়ারা এরকমই”।
রাকিব সেদিন কিছু কথা বলেছিলেন, কথাগুলো ছিলো অনেক দূর্বোধ্য এবং জটিল, 
“নবাগত মানুষরা খুব রঙীন হয়।কিন্তু সমস্যা হচ্ছে একজন নবাগত যার জীবনে প্রবেশ করছে সেই মানুষটির জীবনের গল্পে অনেকগুলো চরিত্র আগে থেকেই থাকে।নবাগতকে সেই সব চরিত্রের সাথে মানিয়ে নিতে হয়, মানিয়ে চলতে হয়।ঐ পুরনো চরিত্রগুলো খুব দামী।ওরা ঐ নবাগতকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকায় অভিনয়ের জন্য জায়গা করে দেয়, নবাগতকেও সেই জায়গাটা করে নিতে হয়।পুরনো চরিত্রগুলো একই সাথে নবাগত এর সুখে হাসে আবার নবাগত এর দুঃখে কাঁদে।কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নবাগতরা এই প্রায়োরিটিটা মানতে নারাজ, এই নিয়ম ভাঙ্গনকে তারা বেশি দামী মনে করে।যাকগে মামা, আপনি কিছু বুঝলেন? 
রিক্সাওয়ালা মামা শুধু নির্বাক এবং বিস্ময়কর ভঙ্গিতে সেদিন রাকিবের দিকে তাকিয়ে ছিলেন আর ছোট্ট করে বললেন, “আমার কি আর অত্ত পড়ালেখা আছে মামা!”
(উৎসর্গ করছি, সকলের জীবনে আসা আসছে নবাগতদেরকে।)
ছবিটি নেয়া হয়েছেঃ ওয়ান মিসড্ কল মুভি থেকে।
 ৬ টি
    	৬ টি    	 +১/-০
    	+১/-০  ০৪ ঠা মে, ২০১৯  দুপুর ২:৫৭
০৪ ঠা মে, ২০১৯  দুপুর ২:৫৭
মি. বিকেল বলেছেন: শুভ রাত্রি!
ফণী এখন বেশ ফানি লাগছে।
২|  ০৪ ঠা মে, ২০১৯  দুপুর ১:২০
০৪ ঠা মে, ২০১৯  দুপুর ১:২০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম।
ভাবনার গল্প!  অনেক ভাবনা প্রশ্নরা ভীড় করে - - 
মেয়েটার সততাই কি কাল হলো?
রাকিব কি পারতো নতুন জীবন সাজাতে সাহায্য করতে।
অনন্যা কি মিথ্যা বলে ফাঁসাতে পারতো রাকিবকে!
আমাদের চাওয়া পাওয়া নিয়ে আমরা কি সত্যিই দৃঢ়চিত্ত!
  ০৪ ঠা মে, ২০১৯  দুপুর ২:৫৬
০৪ ঠা মে, ২০১৯  দুপুর ২:৫৬
মি. বিকেল বলেছেন: আমি গল্পকার, গল্প বলে যাওয়াটাই আমার অভ্যেসে পড়ে।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
৩|  ০৬ ই মে, ২০১৯  রাত ১:৪১
০৬ ই মে, ২০১৯  রাত ১:৪১
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: অল্প করে দিন।পুরো লিখা বেশীরভাগ ব্লগারগন পড়তে চান না। আর আমার কথা খারাপ লাগলে আমি দুঃখিত।আপনাকে কষ্ট দেয়ার উদ্দেশ্য বলি নি।
  ০৬ ই মে, ২০১৯  রাত ১:৫৪
০৬ ই মে, ২০১৯  রাত ১:৫৪
মি. বিকেল বলেছেন: কাউকে পড়তেই হবে বা পড়া আবশ্যক, এজন্য আমি লিখি না।
ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা মে, ২০১৯  রাত ২:৪০
০৪ ঠা মে, ২০১৯  রাত ২:৪০
আকতার আর হোসাইন বলেছেন: ঘূর্ণিঝড় ফণী থেকে আল্লাহ সবাইকে হেফাজতে রাখুক।
গল্প পরে পড়ব। এখন ঘুমাই।
শুভ রাত্রি।