নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মেহেদি হাসান, মি. বিকেল নামে পরিচিত। আমি একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ও অ্যাপ ডেভেলপার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, এবং নাট্য পরিচালক। মাইক্রোসফটে ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত এবং গল্প বলা আমার প্রধান পরিচয়।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নাম মি. বিকেল।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রাক্তন

০৯ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১:৫৪




- বৃষ্টি কেমন লাগে তোমার?
- অসহ্য লাগে।
- তাহলে মনে হয় এখনো ভালো করে পর্যবেক্ষণ করা হয়নি।তাছাড়া তোমার সাথে আমার পছন্দের মিল খুঁজে না পাওয়াটাও একটা ইস্যু।
- দেখ ঝিনুক, আমাদের দেখা হলো প্রায় দুইবছর চারমাস পাঁচদিন পর।তাও কতখনের জন্য! মাত্র এক ঘন্টার জন্য।এখন এই একঘন্টা কি ব্যবহার করবে? না কি নষ্ট করবে সেটা তোমার হাতে।
- আমার পুরো নাম অসীমা রায় ঝিনুক।অবশ্য ঝিনুক নামটা তোমার দেয়া।তারপর থেকে এখন পর্যন্ত এই নামটাই ব্যবহার করছি।কি অদ্ভূত তাই না! বাদ দাও, বিয়ে-শাদী কিছু করেছো?
- না, বেকারদের বিয়ে নিয়ে ভাবতে নেই।অবশ্য বেশ কয়েকটা ওয়েবসাইটে লেখালেখি করছি।তা দিয়ে হাত খরচ চালানো যায় কিন্তু সংসার নয়।
- তাহলে লেখালেখি এখনো বাদ দাওনি? জেনে খুশি হলাম।
- কেন খুশি হলে বলো তো! এজন্যই তো শেষমেশ আমাকে ছেড়ে চলে গেলে।
- আসলে দূর থেকে তোমায় একজন সাধারণ মানুষ বলে মনে হয়েছিলো।কিন্তু কাছে এসে দেখলাম তুমি একজন লেখক।তাও খুবই সিরিয়াস একজন লেখক।এই লেখালেখি দিয়ে কতদূর যেতে পারবে তুমি! বা পেরেছো কি!
- পুঁজিবাদী তত্ত্ব দিয়ে আমাদের থামানো যায় না।কি দরকার? টাকাই তো! মিলে যাবে একদিন।কিন্তু কি-বোর্ড থামানো যাবে না।ওটা চলবে ওর মত করে।
- জানো বিশ্বাস, তোমার এই গোঁড়ামীপূর্ণ আচরণটা তোমাকে নীচে নামিয়ে দেবার মূল কারণ।তুমি তোমার শিল্প নিয়ে থাকতে চাও, বুঝতে চাও।কিন্তু শিল্পের বাহিরে একটা পৃথিবী আছে আর আমার মনে হয় সেই পৃথিবীর সাথে এডজাস্ট করে চলাটাও একটা শিল্প, যা সবাই পারে না।আর তুমি তো একদমই পারছো না।
- বেশ তো! পারছি না।কই তাতে আমার কি আসে বা যায়।আমি তো এসব নিয়ে ভাবি না বা ভাবছি না।আমি আমার লেখালেখি নিয়ে খুব ভালো আছি।আমার সাথে দুই কদম মিলে সামনে যেতে না পারাটা তোমার ব্যর্থতা এবং সেটাও মাত্র দেওয়া তোমার সংজ্ঞা অনুযায়ী।এই শিল্পে তোমার কোন আয়ত্ত নেই।
- ঝগড়া আরো চালিয়ে যাবো?
- স্বাস্থ্যকর ঝগড়া আমার ভালো লাগে।বলছো যখন, তখন বাদ দিলাম।কি করো এখন? তাছাড়া হুবহু প্রশ্ন তোমার কাছে, বিয়ে-শাদী করেছো?
- এখনো করিনি।তবে একজন আছে, হাত ধরে এই বৃষ্টিতে ভেজার জন্য।
- আর তারপর সর্দি-জ্বর হয়ে যাবে।অবশ্য এতেও সমস্যা নাই।তুমি তো আবার ডাক্তার, ইশ্! আমি বরাবরই ভুলে যাই।
- খোঁচা দেওয়া হচ্ছে?
- না, তোমার স্ট্যান্ডার্ড তুলে ধরার চেষ্টা করছি।শেষমেশ এই নদীর ঢেউয়ে আর এই উস্কানিমূলক বাতাসে সেটাও আবার যেন হারিয়ে না যায়।
- বিশ্বাস, আমি কিন্তু অপমানিত হচ্ছি।
- একঘন্টা না হয় অপমানিত হলে! এটুকু সহনশীলতা নেই তোমার মধ্যে?
- আছে, বলো? আর কি কি ভাবে বলা যায় তার একটাও বাদ দিয়ো না।

এরপর খানিক সময়ের নীরবতা।সবই মিলছে, মেলাটাও যুক্তিক।কিন্তু খাপছাড়া হয়ে যাচ্ছে কেন তা বুঝা যাচ্ছে না।বিশ্বাস ভেবেছিলো ঝিনুককে দেখার পর নস্টালজিক হয়ে যাবে।পিছনের কথা মনে পড়ে যাবে।রোমান্টিক কথোপকথনে মেতে উঠবে পুরো সময়।কিন্তু কোথায় যেন আজ সে তার হৃদয়টা ধার দিয়ে চলে এসেছে।তাই হয়তো আবার লম্বা শ্বাস নিয়ে মুখ খুললো বিশ্বাস...

- ঝিনুক! একটা কথা বলার ছিলো? একটু ব্যক্তিগত হয়ে যায়।তবুও, শুনবে?
- বলো? আমার আর তোমার মধ্যে ব্যক্তিগত ব্যাপার নামেও এখন একটা ফোল্ডার আছে?
- হ্যাঁ, আছে।যাকগে, ওর নাম ঈশিতা।পাশের ফ্লাটে থাকে।একটা এনজিও কোম্পানির এম.ডি পদে আছেন।আজকাল দেখা করতে চান।তবে একটু প্রাইভেটে।
- এমন ভাবে বলছো যে, মেয়েটা তোমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।দেখা করো, দেখবে সাফ-সাফ বলে দিচ্ছে, “আমার পিছনে অনর্থক ঘুরাঘুরি বন্ধ করো”।
- সত্যি বলতে আমি ঘুরছি না।উনি আমার লেখালেখি খুবই পছন্দ করেন।শুধু তাই নয়, উনি নিজের টাকায় আমার একটি বই প্রকাশও করেছেন।
- ওহ্, এই ব্যাপার।নিশ্চয় বই বিক্রি করে কিছু টাকা হাতে পেয়েছেন।তোমায় ব্যবহার করছে বিশ্বাস! এমন হয় না।তোমার নাম বিশ্বাস বলে ঢাকা শহর পুরোটা তোমায় বিশ্বাস করা শুরু করে দিবে এমন ভাবাটা স্রেফ পাগলামি।
- হ্যাঁ, আমি যা করছি তাও তো একটা পাগলামি-ই।এই যে, এক্স-গার্লফ্রেন্ডের সাথে বসে আছি আর অনর্থক ঝগড়া করছি।এসব তো পাগলামির ফরম্যাটেই পড়ে, তাই না?
- না, না, না, তুমি আর এসব ফালতু কথা বলো না।কই তোমার সেই মেরিলিন মনরো? ডাক দাও? না হয় অন্তত একটা ফোনকল করো?
- ডাক দিবো? না কি ফোনকল করবো?
- ওর ফোন নম্বর আছে তোমার কাছে? হাসালে আমায়।
- সত্যিই আমি তোমায় আজ অনেক হাসালাম।যাকগে, সামনে নদীর কিনারায় একটা মেয়েকে দেখতে পাচ্ছো?
- হ্যাঁ পাচ্ছি, তিনি তো প্রায় একঘন্টা ধরে জল ছিটাছিটি করছেন।অনেকটা বাচ্চাদের মত করে।এখন আবার প্লিজ বলো না যে, ওটাই তোমার সেই মেরিলিন মনরো।লেখকদের নিয়ে আর পারা যায় না।গল্প না থাকলেও কল্পনার গলাটিপে নতুন গল্প বের করে।
- এবার তুমি আমায় সত্যিই হাসালে ঝিনুক, হা হা হা... একবার ডাক দেই?
- দাও? আমি কি তোমায় ধরে আছি?
- ঈশিতা? ঈশিতা...


একটু পরেই ঐ মিষ্টি মেয়েটি উপস্থিত হলো বিশ্বাস এবং ঝিনুকের মাঝে।কানে ব্লুটুথ ইয়ারফোন।পরিচয় ছোট্ট করে দিলো, বললো আমি ঈশিতা সেন।
তারপর ঈশিতা আস্তে করে বিশ্বাসের হাতে হাত রেখে বললো, “বিশ্বাস, বিয়েটা এবার করি চলো”।


@Mehedi Hasan

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৯:৪৫

ইসিয়াক বলেছেন: ভালোই

০৯ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৫

মি. বিকেল বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।

২| ০৯ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১১:০২

করুণাধারা বলেছেন: শেষে এসে ধাক্কা!! এটা কি অনুগল্প? চমৎকার লিখেছেন।

০৯ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৬

মি. বিকেল বলেছেন: হা হা হা....জ্বী! এটা অনুগল্প।বাস্তব জীবনের ধাক্কা আরো কড়া।

৩| ০৯ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: আধুনিক ছেলে মেয়ের গল্প।

০৯ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৭

মি. বিকেল বলেছেন: ঠিক তাই।



মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০১

মেঘ প্রিয় বালক বলেছেন: সহজ সরল গল্প হলেও ভালোই লেগেছে মোটামোটি।

০৯ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:৪০

মি. বিকেল বলেছেন: ধন্যবাদ।


আপনার মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পেলাম।

৫| ১০ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:১৭

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ভালো লেগেছে।

১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৪৯

মি. বিকেল বলেছেন: মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.