নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেসুরে বাদল

২০ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১২:৫৬




গোত্রে গোত্রে মারামারি হবে, রক্তপাত হবে, নিঃসঙ্গ-স্বামীহারা হবে অনেক নারী।আর সবচেয়ে বড় ব্যাপারটা হলো, “পালিয়ে বাঁচবে এক যুবক ছেলে”।তাকে গল্পের নায়ক বানিয়ে দিলে আরব উপন্যাসে আরো একটি আলাদিন নেমে আসতে পারে।কিন্তু একজন লেখক হিসেবে বলুন, অথবা তার উদ্দেশ্যে থাকা সেই চমকপ্রদ আলাদিন চরিত্র কি আমাদের মনে গাঁথা আলাদিনের জায়গাটা নিতে পারবে তো! উইল স্মিথ নিজেও দৈত্য সেজে তা পেরেছেন কি! গল্প আর কমিক্স অথবা প্রাণ পাওয়া জীবও যদি আলাদিন হয় তবুও মনের এক কোঠায় আলাদিন অন্য একটা অস্তিত্ব হয়ে থাকবে আজীবন।অসম্ভব ভালোলাগার একজন নায়ক, যাকে দেখলেই কপি করে নিজের লাইফ স্টাইলে তা যোগ করে চলতে খুব ইচ্ছে করতে পারে।আর এই ইচ্ছেটাও স্বাভাবিক, গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়।

না, গোত্রে গোত্রে মারামারি আমার জন্য একটু উপচে যাওয়া চিন্তার ফলাফল হতে পারে।তারচেয়ে বরং চলুন একজন সাধারণ মানুষের গল্প পড়া যাক।সেখানে ঐ টিপিক্যাল প্রেম, উত্থান-পতন, বিয়ে দিয়েই শেষ করে দেয়া।ভালো হয় না? অঙ্কুশ হাজরা যদি এভেঞ্জারস্ এর সাথে বম্বাদার দুঃখের সংসার মেলাতে পারে তাহলে আমার মনে হয় আমি অন্তত অত ননসেন্সিক্যাল কিছু করছিনা।উল্টো মার্ভেল আর ডিসির ফ্যান আমায় কোন একদিন জড়িয়েও ধরতে পারে।মানে ভালোবেসে(মেয়েরা প্রাধান্য পাবে)।যাকগে, বরাবরের মত আজকের ভূমিকাও অনেক বড়।সময় নেই, চলে যাচ্ছি মূল গল্পে,

গল্পের নামঃ বেসুরে বাদল
শব্দ সংখ্যাঃ ৭৫০টি
প্রকাশিত গল্পের ক্রমিক নং ৩০

“রিমঝিম বৃষ্টিতে ভালো একটা ঘুম, এবং ঘুম থেকে উঠেই বউয়ের বানিয়ে দেয়া হট কফি।বউ যদি নিজেও হট হয় তাহলে কফিটা একটু ঠান্ডা হলেও চলবে তবে রিপ্লেসমেন্ট নয়।মানে হট কফি এবং হট বউ দুটোই জরুরী”- ভাবছিলো সায়ন।কারণ রাতের বেলা আউটসোর্সিং করে দিনের বেলা একটু ঘুম দেওয়াটা ওর জন্য বাধ্যতামূলক-ই বলা যায়।বিয়ে নিয়ে ভাবছে সে, খুব চিন্তিত।আজকাল মানুষের গুণের চেয়ে দোষের পরিমাণ অনেক বেশি বলে মনে করে সায়ন।অবশ্য তার এই দর্শন কোন দার্শনিক থেকে পেয়েছে সেটা সে জানেনা।জানার ইচ্ছেও নেই।বয়েস আটাশ ছুঁইছুঁই করছে।ব্যাংকে লাখ পাঁচেক টাকা আছে।সেভিংস এর বাহিরেও অন্তত অনলাইন জব আছে।তাই বিয়ের পিড়িতে বসা অনেকটাই কর্তব্য বলে মনে করছে, সায়ন।

বাবা বিয়ে ধরছে, মা বিয়ে ধরছে, বড় বোনও বিয়ে ধরছে কিন্ত সমস্যা ওখানে নয় যে বাঙালী মেয়ের অভাব পড়েছে।সমস্যা হলো, সায়নের মতে- “এত কম বয়সী মেয়েকে বিয়ে করা উচিত নয়, যদি তাই-ই করে তাহলে এত এডুকেটেড হলাম কেন? না, শিক্ষারও কোন দোষ নেই।অন্তত সে আমার কথা বুঝবে, সেটাকে অযোক্তিক মনে হলে যুক্তিক কোন কিছুর চেষ্টা করার কথা বলবে, খুব সংক্ষেপে আন্ডারস্ট্যান্ডিং বস্তুটা থাকতে হবে”।

শেষমেশ এক মেয়েকে পছন্দ হলো তার।মেয়েটা অনার্স সম্পন্ন করেছে মাত্র মাত্র।বয়েস আনুমানিক চব্বিশ বছর।দেখতে একদম ঠাসা।আরো নোংরা শব্দ ব্যবহার করা যায় তার রুপের বর্ণনা নিয়ে।কিন্তু আজ থাক।
বিয়েটা বেশ ধূমধাম করেই হলো।পাড়া-প্রতিবেশি, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবী কেউ বাদ পড়লোনা।এখন থেকে জীবনের দ্বিতীয় পার্ট নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে মনস্থির করলো সায়ন।

বাসর রাত...
সেদিন রাতের স্মৃতি সায়নের আজীবন মনে থাকবে, অসম্ভব ভালো লাগার একটি রাত।মেয়েটা যেন ওকে শুষে নিয়েছিলো নিজের মধ্যে।সমস্ত খারাপলাগা, হতাশা, ভয় সব যেন এক নিমিষেই ছিটকে গেলো জীবন থেকে।ঠিক যেন এমন জীবনই প্রত্যাশা করে আসছিলো সায়ন।কিন্তু সকালবেলার দৃশ্যটা মন মত হলো না।
মানে মেয়েটা গোসলে এত সময় লাগিয়ে দিলো যে হট কফি আর কপালে জুটলো না।এটা নিয়ে সায়ন যারপর নাই হতাশ হয়ে গেলো।একটুপর মেয়েটা এসে আবার পাশে শুয়ে পড়লো।সায়ন মনে মনে ভাবতে লাগলো, “আবার! এটা দিয়ে আটবার হয়ে যাবে!” আর তখন পানসে হয়ে যাবে শরীর।এখন এইজন্য সারাদিন ঘুমালে লোকে কি ভাববে!

এদিকে আস্তে আস্তে সময় পার হতে লাগলো।স্বার্থপর সময়, কারো কথা শুনে না যেন।ওহ্, হ্যাঁ, সায়নের বউয়ের নাম বর্ষা।কিন্তু বর্ষা নামে, কথায় এবং কাজে আমবস্যা অথবা চৈত্রর প্রখর খরা।একটুও রঙ রস নেই।নিঃশব্দে চলাফেরা করা কোন বিড়াল অথবা সাইলেন্ট মুডে থাকা পুরনো ব্র্যান্ডের কোন ফোন।শুধু ভাইব্রেশন হয়, মানে অঙ্গভঙ্গিতেই সব বুঝিয়ে নেয় পাশাপাশি বুঝাতে চেষ্টা করে।এই তো সেদিন, চা হাতে নিয়ে সায়নের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো পুরো দেড়ঘন্টা।একটা বারও বললো না, “সায়ন, তোমার চা?”।এটুকুতেও কি সমস্যা কে জানে! অবশ্য রাতজেগে আউটসোর্সিং করাটা-ই এখন সমস্ত দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকার একমাত্র রাস্তা।হ্যাঁ, অনেক ব্যস্ত থাকতে হবে।নতুবা সায়নের নিজের জীবনেও আমবস্যা নেমে আসার দেরি নেই।

একদিন এক বন্ধু ওর বাসায় আসলো।কলেজের জিগরী দোস্ত।কত হাসি-কান্নার অংশ হয়ে আছে সে সায়নের জীবনে।তাই যথারীতি আপ্যায়ন করাটা উচিত।তাই বর্ষাকে ডেকে বললো, “আচ্ছা বর্ষা, আজকে নতুন কি করা যায় বলো তো?”
বর্ষা বললো, “আপনার পুরনো বন্ধু?”
বন্ধুর দিকে একবার তাকিয়ে বর্ষাকে সায়ন বললো, “হ্যাঁ, অনেক পুরনো বন্ধু।কিন্তু পুরনো শব্দটা ওর জন্য যথার্থ নয়।আশা করি তুমি সেটা বুঝবে বর্ষা”।
“ঠিক বলেছেন, পুরনো সময়ের বন্ধু।এবং আপনার সবচেয়ে কাছের বন্ধু।সর্ষে ইলিশ চলবে?” – প্রতিত্ত্যরে বর্ষা প্রথম বারের মত এত লম্বা বাক্যে ব্যবহার করলো।

আর যাইহোক, সেদিন বর্ষার বন্ধুকে আপ্যায়ন করার ধরণটা দেখে বেশ মুগ্ধ হয়ে গেলো সায়ন।ভাবলো নিজে তো কখনো হট কফির অর্ডার করিনি ওর কাছে।তাই সে আজ রাতে সেটা করবে।এবং শুধু হট কফি দিলেই চলবে না অন্তত তার আগে বর্ষাকেও স্নান করে ভিজে চুল নিয়ে ওর সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে কিছুক্ষণ।
তাই সেদিন রাতে দেরি না করে বর্ষাকে বলে বসলো, “আচ্ছা বর্ষা, একটা অনুরোধ ছিলো রাখবে?”
বর্ষা আনমনে বলল, “বলুন? কি কথা?”
“আমাকে প্রত্যেক সকালে একটা করে হট কফি করে দিবে, পারবে তো? অবশ্য বেশি চাপ নেওয়ার দরকার নেই।মানে যদি তোমার সময় হয়, ইউ নো...” তোতলাতে তোতলাতে কথাগুলো বলল সায়ন।
বর্ষা আনমনে বললো, “চাপ তো আপনি নিচ্ছেন! ঠিকাছে করে দিবো”।
সায়ন এবার নির্ভয়ে বললো, “কিন্তু হট কফি করার সময় তোমাকেও একটু হট দেখতে চাই।মানে তুমি স্নান করে ভিজে চুলে সকালে আমার সামনে এসে দাঁড়াবে”।
মুখ ফসকে “হট” শব্দটা এমন ভাবে বের হওয়ায় একটু লজ্জা পেলো সায়ন তাই আমতা আমতা করতে লাগলো, “আজ...কাল...কার যুগে হট তো একটা কমপ্লিমেন্ট, তাই না! কিছু মনে করোনি তো!”

এই প্রথমবারের মত বর্ষা প্রাণ ভরে হাসলো।আগে সায়ন কখনো এভাবে দ্যাখেনি বর্ষাকে।হাসিতে মেয়েটাকে অনেক সুন্দর দেখায়।সায়ন একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বর্ষার দিকে।ওদিকে বর্ষা হেসেই চলেছে।
একসময় বর্ষা নিজেকে সামলে নিয়ে শুধু বললো, “মাত্র এইটুকুই, সায়ন?”

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৩:০৩

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: এইযুগের গল্প, উপন্যাস, প্রেম-বিয়ে-সংসার সংক্রান্ত নাটক-সিনেমা তথা আশেপাশের অবস্থা দেখেও যে বিয়ে করার মতো ডিসিশন নিতে পারে সে নিঃসন্দেহে সাহসী।
আপনার গল্প পড়ে এডাল্ট সিংগেলরা কিছুক্ষণের জন্য হলেওবিয়ের স্বপ্ন দেখবে! :)

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:১৬

মি. বিকেল বলেছেন: বেশ কিছুক্ষন হাসলাম।


ধন্যবাদ

২| ২০ শে আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: আবেগ যার যত বেশি, সে জীবনে তত দুঃখী হবে।

বাস্তব বড় কঠিন।

২১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:১৭

মি. বিকেল বলেছেন: তবুও আবেগ থাকাটা জরুরী মনে করছি।


ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.