নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মেহেদি হাসান, মি. বিকেল নামে পরিচিত। আমি একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ও অ্যাপ ডেভেলপার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, এবং নাট্য পরিচালক। মাইক্রোসফটে ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত এবং গল্প বলা আমার প্রধান পরিচয়।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নাম মি. বিকেল।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

Secularism এবং একটি নতুন বিবাদের নাম!

০২ রা অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৯:৪৪



In my opinion, there is nothing that can be called secular, and we have no specific definition of Secularism.

তুরষ্ক এবং ভারত দুটোই সেক্যুলার দেশ। কিন্তু তারা একই রকম সেক্যুলারিজম প্রাকটিস করছেন কি? তাহলে বিবিধ দেশের বিবিধ সেক্যুলারিজমের সংজ্ঞা আমায় বিভ্রান্ত করছে কেনো? ধর্মকে সাথে নিয়ে কি-বোর্ডে হাত চালানো আরো বিপদজনক। তবুও চেষ্টার ক্রুটি থাকবে না। খুব সম্ভবত জীবদ্দশায় কোনো আর্টিকেল লিখতে গিয়ে আমি এত বিপাকে পড়িনি।

Secularism এর বাংলা অর্থ আসে "ধর্মনিরপেক্ষতা" এবং এখানেই আপদ লুকিয়ে আছে। মুশকিল হচ্ছে, আপনি যখন ভিন্ন ভাষার শব্দের আক্ষরিক অনুবাদ করবেন এবং ব্যাখ্যা ছাড়াই সেটার উপর ভর করবেন। যদি এমন বিশ্বাস হৃদয়ে শক্ত করে ধারণ করে থাকেন তাহলে এই অনুচ্ছেদ আপনার জন্য নয়। কারণ, আমি আমার লেখনীতে তা ক্রমাগত ভেঙ্গে ফেলার চাপ প্রয়োগ করবো।

প্রথমত, রাষ্ট্রীয়ভাবে যেসব রাষ্ট্র সেক্যুলার বিবেচনায় রাখা হয়েছে সেখান থেকে একটু বের হয়ে আমি ব্যক্তি সেক্যুলারিজমে প্রবেশ করবো। একজন সেক্যুলার ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য কী কী তা তুলে ধরার চেষ্টা করছি,

(ক) পৃথকীকরণঃ একজন ব্যক্তি যখন তার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে কর্ম জীবনে প্রবেশ করে বিভিন্ন সংগঠন/অর্গানাইজেশন/প্রতিষ্ঠান থেকে ধর্মকে পৃথক করবেন তিনি হলেন একজন সেক্যুলার ব্যক্তি। এমনকি তার দৈনন্দিন নানাবিধ কাজেও ধর্ম টানবেন না। মুশকিল হচ্ছে এটার প্রাকটিস তিনি কীভাবে করবেন? এর যথাযথ উত্তর কোথাও নেই। ভিন্ন বিশ্বাসীদের মধ্যে বর্ডার লাইন সামনে এসে দাঁড়াবেই। আর তখন শুরু হবে দাঙ্গ বা ফ্যাসাদ, যেটা একেবারেই কাম্য নয়। তাই সদয় হওয়া ছাড়া উপায় আছে কিনা তা যাচাই করে দেখতে হবে।

(খ) স্বাধীনতাঃ ধর্মকে প্রাইভেট প্রাকটিসে নিয়ে আনতে হবে। যারা অন্য কোনো ধর্মে বা ভিন্ন বিশ্বাসে বিশ্বাসী এমনকি নাস্তিক তাদেরকেও তাদের সেই বিশ্বাস প্রাকটিস করার স্বাধীনতা দিতে হবে। এবং কোনভাবেই বিশ্বাসের অমিল কারো ক্ষতি বা দ্বন্দ্বের কারণ হয়ে দাঁড়াবে না। তিনি হলেন একজন সেক্যুলার মানুষ। এই কথাগুলো অনেকটা কনভিন্সিং এবং সমাজেও ইমপ্লিমেন্ট হয়তো অনেকাংশে সম্ভব।

(গ) সমতাঃ আপনি যে দেশে বাস করছেন সে দেশের অধিকাংশের বিশ্বাস যদি একইরকম হয় এবং ভিন্ন বিশ্বাসীদের সংখ্যা যদি কম হয় এবং এতে করে আপনি যদি আলাদা রাষ্ট্রীয় সুযোগ খুঁজেন তাহলে ঠিক সেক্যুলার হওয়া গেলো না। আপনি যদি আপনার বিশ্বাসে কোনো বিশেষ দিন উদযাপনের অধিকার রাষ্ট্র থেকে আদায় করে নিতে পারেন তাহলে ক্ষুদ্রতম অংশ যারা ভিন্ন বিশ্বাসে বিশ্বাসী তাদের অধিকারও রাষ্ট্র থেকে সবাই মিলে আদায় করে দিতে হবে। এই সমতা(Status-quo) বজায় রাখতে হবে তবেই তাকে বলবো একজন সেক্যুলার ব্যক্তি। কিন্তু মেজোরিটির ডোমিনেশন তো বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব? মেজোরিটি কি মাইনোরিটিদের নিয়ে ভাবতে যাবে! না কি স্বার্থপরতার পরিচয় দিবে?

এবার প্রস্তাবনা পেশ করতে যাচ্ছি,

"দুঃখিত! বাংলাদেশ পুরোপুরি একটি সেক্যুলার দেশ নয়।"

এখানেই মামলা চুকে গেলে রেহায় পাওয়া যেত। কিন্তু বাংলাদেশ আবার অনেকাংশে সেক্যুলার। তাই পয়েন্ট আকারে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছি,

The Holy Quran categorically states, “There shall be no coercion in matters of faith” (2:256).

• ধর্মীয় স্বাধীনতাঃ হ্যাঁ, এটা সত্য বাংলাদেশ একটি ইসলামিক রাষ্ট্র। কিন্তু এখানে কোন ভাবেই অন্য ধর্ম বা বিশ্বাসের প্রাকটিস করাকে নিষেধ করা হয় না। এখানে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা সব পাবেন। আপনি ভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী বলে আপনার NID কার্ডকে ছোট করে দেখা হয় না এখানে। একজন মুসলিম চাইলে অন্য ধর্মাবলম্বীদের কিতাব পড়তে পারেন। এমনকি মুসলিমদের পবিত্র আল-কুরআন অন্যদের পড়ার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। একাডেমিক থেকে চাকুরীর পরীক্ষায় সবাইকে সমান নম্বর দেওয়া হয়। উপর্যুপরি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য রয়েছে আলাদা কোটাও। এখন দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার জন্য পুরো রাষ্ট্র বা এখানকার সাচ্চা মুসলিমদের দায়ী করা সমুচিত হবে বলে অন্তত আমার মনে হয় না।

• নাস্তিকদের প্রতিঃ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী কোনো ব্যক্তি এখানে নাস্তিকদের জন্য বিশাল বড় হুমকি নয় বলে আমি মনে করি। কিছু উগ্রবাদী মানুষ আছেন যাদের জন্য পুরো ব্লেইম এখানকার মুসলিমদের উপর দেওয়া উচিত হবে না। বরং প্রকৃত অর্থে যাঁরা ইসলামিক স্কলার তারা আপনাকে সর্বোচ্চ পবিত্র কুরআন পাঠ করার আহ্বান জানাতে পারেন। এবং সেখানে আমি দোষের কিছুই দেখছি না। কারণ, তারা আপনাকে জোর করছে না।

• আইন ও পার্লামেন্টঃ সেই বিবেচনায় এখানে আইন সবার জন্য সমান। বাংলাদেশের সংবিধান এখানে কোনো বৈষম্য করছে না। এমনকি অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য বিশেষ সুবিধাও রয়েছে যেটা শুধুমাত্র তারা-ই পেয়ে থাকেন। আর পার্লামেন্টেও ভিন্ন ধর্মের মানুষ আছেন। শুধু পার্লামেন্ট নয়, একাধিক বড় বড় প্রতিষ্ঠান এবং সংগঠনও ভিন্ন ধর্মের মানুষের হাতেও আছে বা প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।

• মহিলা ও LGBT কে সমান অধিকারঃ পূর্বে বর্ণিত কথা অনুযায়ী এখানে মহিলাদের সমানভাবে দেখা হয়। তার বিশেষ উদাহরণ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যদিওবা LGBT অধিকার আইন এখন অবধি বাংলাদেশে স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। সূদুর ভবিষ্যতেও হবে বলে আমার মনে হয় না। এখানে আমার ব্যক্তি মতামত হলো, "কোন মন্তব্য নেই"।

• পাব্লিক সার্ভিসঃ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা কেন্দ্র ও রাজনীতি করার অধিকার এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে যে কোন সুবিধা ভোগ করেন বাংলাদেশের সকল জনগণ। সভা-সমিতি থেকে শুরু করে বড় বড় সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয় প্রধান ও অপ্রধান তিনটি ধর্মীয় কিতাবের অংশ পড়ে। যা বিভিন্ন দেশে বিরল বা বিলুপ্ত।

In Abu Dawud, one of the authentic compilations of Hadiths (sayings of the Prophet), it is recorded, “Beware! Whoever is cruel and hard on a non-Muslim minority, or curtails their rights, or burdens them with more than they can bear, or takes anything from them against their free will; I [Prophet Muhammad] will complain against the person on the Day of Judgment”.

হ্যাঁ, আমাদের রাষ্ট্রধর্ম "ইসলাম"। এটা পাল্টানোর কথা আপনি হয়তো তুলতে পারেন। কিন্তু এর বেটার অলটারনেটিভ আছে বলে আমার কাছে মনে হয় না। কারণ এখানে প্রায় ৯০% শতাংশ মানুষ মুসলিম। এখন আবার সেক্যুলারিজমে গণতন্ত্র লালিত-পালিত হবে। সুতরাং ভোট করলেও এখানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকতে বাধ্য।

বরং ইসলাম সম্পর্কে যতটুকু জানি, এই ধর্ম নিজেই সেক্যুলার ধর্ম। অন্তত বিভিন্ন ইসলামিক স্কলার তাই বলার চেষ্টা করেছেন। পবিত্র আল-কুরআন বা হাদীসে এমনকি ইসলামের অতীত ইতিহাসে(কতিপয় মুনাফিক ব্যতিত) অন্যর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ দেখানো হয়নি। বরং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তাঁরা ছিলেন একেকটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা মহাপুরুষ। কিন্তু সেক্যুলারিজম যে সংজ্ঞা টেনেছে সেই অর্থে ইসলাম পুরোপুরি সেক্যুলার হতে পারবে না, সম্ভব নয় বলেই মনে হয়েছে। এমন দর্শন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমাকে ট্রমাটিক অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছে।

আবার শতভাগ কোন দর্শন সমাজে আজ অবধি প্রতিষ্ঠা করা যায়নি, খুব সম্ভবত শুধুমাত্র টাকার দর্শন ছাড়া। মানুষ যে ধর্মের-ই হোক না কেনো সে কিন্তু টাকাটা খুব ভাল করেই চিনে।

আবার, নাস্তিকতা হলো স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাসের অভাব। ধর্মনিরপেক্ষতা(Secularism) কেবল একটি গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য একটি কাঠামো সরবরাহ করে।

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে নাস্তিকদের সুস্পষ্ট আগ্রহ রয়েছে, কারণ তাতে অবাধ স্বাধীনতা আছে। তবে ধর্মনিরপেক্ষতা নিজেই কোনও নির্দিষ্ট ধর্ম বা বিশ্বাসের তত্ত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতে চায় না, বা কারও উপর নাস্তিক্য আরোপের চেষ্টা করে না। ধর্মনিরপেক্ষতা কেবল সমাজে - রাজনীতি, শিক্ষা, আইন এবং অন্য কোথাও - মুমিন(বিশ্বাসী) এবং অবিশ্বাসীদের জন্য সমতা নিশ্চিত করার জন্য একটি কাঠামো। ধর্মনিরপেক্ষতা(Secularism) অবাধ বাকপ্রকাশকে সুরক্ষা দেয় ধর্মীয় লোকেরা তাদের বিশ্বাসগুলি প্রকাশ্যে প্রকাশ করার অধিকার রাখে তবে যারা এই বিশ্বাসগুলির বিরোধিতা বা প্রশ্ন উত্থাপন করে তারাও তাই করে। এখন প্রশ্ন হলো, এই "অবাধ বাক-স্বাধীনতা" ঠিক কোন বাঁধ পর্যন্ত! যদি ইনফিনিটি পর্যায়ে যায় তাহলে সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টি হতে বাধ্য।

গণতন্ত্রে, সমস্ত ধারণা এবং বিশ্বাস অবশ্যই আলোচনার জন্য উন্মুক্ত থাকতে হবে। এখানে ব্যক্তি অধিকার থাকবে; ধারণা নয়। মানে বিশ্বাস হলো প্রাইভেট কিছু বা ব্যক্তি চর্চায় আবদ্ধ থাকবে। যদিও গণতন্ত্র নিজেই কী অদৌ যৌক্তিক?

মন্তব্যে আপনার কথাগুলো লিখে আমাকে এই ট্রমা থেকে মুক্তি দিবেন আশা করি।

ধন্যবাদ

References:
1. Click This Link
2. Click This Link

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:



অনেক সুন্দর গরুর রচনা লিখেছেন।

২| ০২ রা অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:১০

অধীতি বলেছেন: বেশ ভালই লিখেছেন।লেখার সময় অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করায় লেখা তার মাধুর্য হারিয়েছে।মনে হচ্ছে কোন আসামীর জবানবন্দি নেয়া হয়েছে।

৩| ০২ রা অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন: অনেক সুন্দর গরুর রচনা লিখেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.