নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মেহেদি হাসান, মি. বিকেল নামে পরিচিত। আমি একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ও অ্যাপ ডেভেলপার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, এবং নাট্য পরিচালক। মাইক্রোসফটে ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত এবং গল্প বলা আমার প্রধান পরিচয়।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নাম মি. বিকেল।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

কে-ড্রামার নতুন দিগন্ত: ‘ইটস ওকে টু নট বি ওকে (It\'s Okay to Not Be Okay)’ - এর মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিচ্ছবি

১২ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭



কোরিয়ান নাটক সংক্ষেপে ‘কে-ড্রামা (K-Drama)’ এর নাম শুনতেই মাত্র দুই বছর আগেও আমরা কেউ কেউ নাক সিঁটকাতাম। খুবই অল সময়ের মধ্যে কোরিয়ার নাটক/সিনেমা/সিরিজ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অবস্থা এখন এমন যে, আপনি ‘কে-ড্রামা (K-Drama)’ অপছন্দ করলে করতে পারেন কিন্তু এড়িয়ে যেতে পারবেন না। তারা এখন যেন সবখানে উপস্থিত। এবং এই প্রথম আমি কোন ‘কে-ড্রামা (K-Drama)’ নিয়ে রিভিউ লিখছি।

অসাধারণ গল্প, দুর্দান্ত স্ক্রিনপ্লে, স্কেল ধরে কাস্টিং, প্রয়োজনীয় বাজেট এবং ক্যামেরার চতুরতা আমাদেরকে মুগ্ধ করতে বাধ্য। সবচেয়ে দুর্দান্ত বিষয় হচ্ছে, গল্প। প্রত্যেকটি ‘কে-ড্রামা (K-Drama)’ ভয়ানক ভালো গল্প উপহার দিয়েই যাচ্ছে। আপনি যদি থ্রিলার/হর’র/কমেডি/ড্রামা যে কোন জনরা বেছে নেন তবুও আপনাকে হতাশ করবে না। এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তি পাওয়া ‘Queen of Tears’ – দেখার পর নিজের জন্য খুব আফসোস হয়েছে। কারণ আমি ঠিক এরকমই একটি গল্প লিখতে যাচ্ছিলাম।

২০২০ সালে মুক্তি পাওয়া টেলিভিশন সিরিজ এবং নেটফ্লিক্সের ট্রেডিং সিরিজ ‘It’s Okay to Not To Be Okay’ আমার কাছে শুরুতে ‘Overrated’ মনে হয়েছিলো। কিন্তু যখন দেখা শুরু করলাম তখন বুঝেছি অনেককিছু দেখা হয়নি, জানা হয়নি।

এই ড্রামা সিরিজের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ‘OK PSYCHIATRIST HOSPITAL’। এবং ভয়ানক বিষয় হচ্ছে, আপনি এটাকে সাধারণ সাইকিয়াট্রিস্ট কোন হাসপাতাল ভেবে ভুল করবেন না, ওটা আমাদেরই জীবন কে একটি পরিশীলিত একটি কাঠামোর মধ্যে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ঐ হাসপাতাল খোদ আমাদের জীবনের প্রতিফলন এবং ওখানে থাকা সমস্ত মানসিক রোগী আমাদের আশেপাশে বিদ্যমান। এবং যখন আপনি এটা আবিষ্কার করবেন তখন থেকেই আপনার এই সিরিজ আরো পছন্দের হয়ে উঠবে।

গল্পে মানসিক সমস্যা নামমাত্র কিন্তু আমরা আমাদের সাথে ঘটা অন্যায় নিয়ে বা কোন কিছুর আফসোস নিয়ে বাঁচার যে ভোগান্তি তার পরিত্রাণের রাস্তা খোঁজা হয়েছে এবং সম্ভাব্য কিছু সমাধানের দিকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই হাসপাতালে জোর করে কিছুই পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হচ্ছে না, না নিয়মিত কাউন্সিলিং এর নামে ধোকা বাজিও করা হচ্ছে না। বরং আমাদের যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভুল তা চিহ্নিত করা এবং নিজে সেসব ভুল থেকে বের হবার জন্য নিজের ভুল স্বীকার করার মাধ্যমে এক প্রকারের মুক্তির কথা বলা হয়েছে।

‘OK PSYCHIATRIST HOSPITAL’ কোন সাধারণ সাইকিয়াট্রিস্ট হাসপাতাল নয়। এখানে কেউ এডমিট কেন আছেন এবং তার ব্যাকগ্রাউন্ড ঘিরে যে জটিলতা সেটাকে পাত্তা না দেওয়া এবং শেষ পর্যন্ত ডাক্তারদের যে রোগীদের প্রতি নিরপেক্ষ আচরণ সেটা দেখার মত ছিলো। মূল ভূমিকায় থাকা, ‘মুন গ্যাং টে (Moon Gang Tae)’ তার আচরণ এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণের ভয়ানক ক্ষমতা যে কোন মেয়ের জন্য ঝামেলার হতে পেরে, প্রেমেও পড়ে যেতে পারেন।

অসাধারণ অভিনয় এই অভিনেতাকে বহু পুরষ্কার শুধু নয়; আমি মনে করি এই নাটক তার জীবনের একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। তবে উনার ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে জেনে আমি আরো বিস্মিত হয়েছি, এত কম বয়সে তিনি এতকিছু অর্জন করেছেন কীভাবে!

‘গো মুন ইয়াং (Go Moon Young)’ অতি সুন্দরী, সহসাই তার প্রেমে পড়া যায়। একই সাথে তার রুপকথার গল্পগুলো বিভৎস হলেও বাস্তবতা বিবর্জিত নয়। গল্পকার গল্পে তাকে বেস্ট সেলার রাইটার বানিয়েছেন তা বহুভাবে ন্যায়সংগত। কু মুন-ইয়ং এর এর প্রেম একেবারে নিখাঁদ এবং খাঁটি। গল্প হলেও আমি তার প্রেমে পড়ে গেছি। এই গল্পে তার গল্পগুলো আরো সুন্দর। রুপ, মেধা এবং মুন গ্যাং জি এর হাত ধরে পৃথিবী পাল্টানোর গল্প তাকে আরো সুন্দরী এবং আবেদনময়ী করে গড়ে তুলেছে যেন।

সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে ছিলেন ‘মুন গ্যাং টে (Moon Sang Tae)’। অতি প্রতিভাবান অভিনেতা না হলে দর্শকদের পুরোপুরি বিশ্বাস করানো অসম্ভব যে, আমি একজন অটিস্টিক শিশু। এবং সিরিজ যদি এত দীর্ঘ হয় এবং চরিত্রের স্ক্রিন প্রেজেন্ট বেশি হয় তাহলে কোথাও না কোথাও ধরা খেয়ে যেতে পারতেন কিন্তু বিশ্বাস করুন আমার একবারের জন্যও মনে হয়নি তিনি তার ভূমিকায় ব্যর্থ হয়েছেন।

এই সিরিজের প্রত্যেকটি চরিত্রের উপর ন্যায় করা হয়েছে। কোন বিশেষ চরিত্রের উপর ভর না করে পার্শ্ব অভিনেতাদের/অভিনেত্রীদের অনেক সুযোগ এবং অনেক স্ক্রিন টাইম দেওয়া হয়েছে। সাধারণত ‘কে-ড্রামা’ তে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাই করা হলেও এই সিরিজ সেসবের থেকেও কয়েক ধাপ এগিয়ে। একই সাথে খুব সম্ভবত এমন কোন মানসিক সমস্যা বা আমাদের ব্যক্তি আচরণ বাদ রাখেনি যা সাধারণত বেশি দেখা যায় আমাদের মধ্যে। পুরো স্ক্রিন প্লে ভীষণ স্লো কিন্তু ব্যাপক মানসিক স্বস্তি দেবে আপনাকে। এমনকি এই সিরিজটি দেখার পরে নিজ সম্পর্কে আপনি আরো বেশি জানতে পারবেন।

ছোট ছোট সমস্যা, চেপে রাখা রাগ, অভিমান, ভালোবাসা তার পূর্ণতা পেতে পারে সঠিক সময়ে সঠিক মানুষের কাছে প্রকাশের মাধ্যমে। নিয়তির বেড়াজালে সবাই আবদ্ধ, যা আমরা করি তা দ্বিগুণ হয়ে আমাদের কাছেই যেন বারবার ফিরে আসে। যা অন্যায়, তা অন্যায়। যা ন্যায়, তা ন্যায়। এমন সরলরৈখিক যুক্তি হয়তো দেওয়া হয়নি কিন্তু মনোযোগ দিয়ে দেখলে এমন অনেক কিছুই খুঁজে পাবেন। এমন অনেক চরিত্র খুঁজে পাবেন যা দেখে আপনার মনে হতে পারে আপনি ওটা নিজেই ছিলেন। মনস্তাত্ত্বিক এই মেলোড্রামা কিছু কমেডি সহ সামনে আসে। একটু একঘেয়েমি আসলেও সার্থক হবেন দেখা শেষে।

সুতরাং, সময় পেলে একবার দেখা যেতেই পারে ‘It’s Okay to Not To Be Okay’ সিরিজটি। ব্যক্তিগত রেটিং ৯/১০ দেওয়া যায়, বাকি ১ হাতে থাক।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৮

অপু তানভীর বলেছেন: আমার কে ড্রামা মূলত দেখা শুরু হয়েছে এই ড্রামাটিকে দিয়েই । এর আগে আমি কোন ড্রামা দেখেছিলাম বলে মনে নেই ।
নায়কের বড় ভাইয়ের চরিত্রটি আসলেই চ্যালেঞ্জিং ছিল । নায়িকা নিজেও তো কম যান না !

১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:২৪

মি. বিকেল বলেছেন: হ্যাঁ, আমাকে তো পুরাই অবাক করেছে।

২| ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪

নতুন বলেছেন: নেটফ্লিক্সে কোরিয়ান একটা টিভি সিরিয়াল দেখেছিলাম, ভালোই লাগছিলো।

সমস্যা হইলো ওদের চেহারা একই রকমের লাগে নায়িকা আর নায়িকার বান্ধবীদের আলাদা করে চিনতে সময় লেগেছিলো।

আর কিছু কিছু সিরিয়ারের নায়করা নায়িকার থেকে বেশি সুন্দরী মনে হয় =p~

১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:২৫

মি. বিকেল বলেছেন: রেসিস্ট চিন্তা!

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.