নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাধারণত কোন ‘গোলকধাঁধায় (Maze)’ এর মধ্যে পড়লে মানুষের জীবনের উদ্দেশ্য তুলনামূলক সহজ হয়। নির্দিষ্ট বক্সের মধ্যে বা বৃত্তের মধ্যে আমাদের জীবন আটকে গেলে ঐ মুহুর্তে আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য স্থির থাকে। যিনি কোন গভীর কূপে নিপতিত হয়েছেন তিনি ঐ মূহুর্তে শুধু কূপ থেকে বাইরে আসার চিন্তা করতে পারেন। এমন হওয়া খুব কঠিন যে, গভীর কূপে পড়ে গিয়ে কেউ রিঙ্কি-পিঙ্কি-চমকি কে নিয়ে তীব্র রোমান্টিক হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নকশা আঁকছেন।
“বেঁচে থাকতে হবে এবং সেজন্য এই গভীর কূপ থেকে মুক্তি পেতে হবে।” – এখানে জীবনের লক্ষ্য একটাই। এখানে আমাদের চিন্তার পরিধি ঐ কূপ থেকে বাইর জগতে কীভাবে যাওয়া যায় সে পর্যন্তই আবদ্ধ থাকতে পারে। কোনকিছু না খেয়ে একজন মানুষের বেঁচে থাকার ক্ষমতা হাতেগোনা মাত্র কিছুদিন। এরমধ্যে ঐ একই কূপে আরো ন’জন মানুষ যদি পড়ে যান তাহলে তাদের একে অন্যের মধ্যে একরকম বন্ধুত্ব তৈরি হতে বাধ্য। কারণ এই দশজন ব্যক্তির লক্ষ্য একটাই। আর সেটা হলো, এই কূপ থেকে বাইরের জগতে ফিরে যাওয়া। আর সেটা দলবদ্ধ না হয়ে করা সম্ভব নয়।
বাইরের জগতে এই দশজন ব্যক্তির মধ্যে কি বন্ধুত্ব ছিলো? না কি শক্রুতা ছিলো? তা কিন্তু এই কূপে পড়া দশজনের মধ্যে দেখতে পাবেন না। কেন পাবেন না? কারণ যতক্ষণ ওরা বন্ধু বা শক্রু হিসেবে বাইরে ছিলো ততক্ষণ ওদের হাতে ওদের মত জীবনের কিছু উদ্দেশ্য ছিলো। কিন্তু এখন জীবনের উদ্দেশ্যেই হচ্ছে জীবিত থাকা এবং বাইরের জগতে ফিরে যাওয়া। ফলে মহৎ/হীন বা বিখ্যাত/কুখ্যাত হওয়ার যে বিশাল পরিধির জীবন উদ্দেশ্য তা এখানে উপলব্ধ হয় না, এখানে জাস্ট খাটে না। আমার যদি আগামীকাল বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় খাবার ঘরে না থাকে সেক্ষেত্রে আমি ফিলিস্তিনে চলমান জেনো*সাইড নিয়ে ভাববো না, ভাবতে সক্ষম নই। আমার জন্য এই পরিস্থিতিতে এই মুহুর্তে এক মুঠো চাল দরকার যা ফুটিয়ে ভাত করে খাওয়া যায়।
এই গভীর কূপের বাইরের জগত কে যদি বাস্তব জীবন হিসেবে বিবেচনায় নিই তাহলেও বাস্তব জীবন যে অনুরুপ বা তারচেয়েও ভয়ংকর কোন কূপ নয় সেটা কিন্তু আমরা জানি না। আমরা যেটাকে বাস্তব মনে করছি, বাস্তব হিসেবে উপলব্ধ করছি এবং যে বাস্তব জীবন আমাদের উঁচু লক্ষ্য স্থির করাতে সক্ষম হচ্ছে তার ভিত্তি নাও থাকতে পারে। মহৎ/হীন হওয়াতে আমাদের জীবনে যে তফাৎ ঘটতে পারে সে সম্পর্কে হয়তো আমরা জানি না। অথবা, ‘মহৎ/হীন হওয়া’ একটি সামাজিক প্রথা মাত্র যা এড়িয়ে না গিয়ে আমরা মেনে চলেছি। অথবা, ‘মহৎ/হীন হওয়া’ কে সামগ্রিক বিবেচনায় ‘অনর্থক হওয়া’ -ও বুঝাতে পারে।
এখন কূপের বাস্তবতা বিবেচনায় দেখা যেতে পারে, ওদের একে অন্যের প্রতি সহানুভূতি থেকে সহমর্মিতা জাগছে। দিন যত বাড়ছে তত এই মৃত গভীর কূপের মধ্যে আটকে পড়া মানুষের মধ্যে সম্পর্ক আরো সুন্দর হচ্ছে। ওরা বস্ত্রহীন হয়ে কাপড় দিয়ে দড়ি বানাচ্ছে, সাপ বা বিষাক্ত পোকামাকড় থেকে বাঁচার জন্য ওদের মধ্যে দু’জন সারাক্ষণ পাহারা দিচ্ছে। বাকি আটজনের মধ্যে ছয়জন উপরে উঠার জন্য মাটির তৈরি সিঁড়ি বানাচ্ছে।
আর সর্বশেষ দূর্বল দুজন মস্তিষ্ক খাটিয়ে সবার ব্যাগ থেকে পাওয়া কোমল পানীয় ও বিস্কুটের প্যাকেট দিয়ে সবার জন্য ভাগ ভাগ করে খাবার তৈরি করছে। কারণ দশজন মিলে আরো কমপক্ষে দশদিন এখানে জীবিত থাকতে হবে। অন্ধকার এই জঙ্গলের মৃত গভীর কূপে হয়তো সাহায্য করতে কেউ আসবে না। একজন একটু বুদ্ধি করে সময় সময় লাইটার দিয়ে কিছু গাছের শুকনো পাতা একত্র করে আগুন জ্বালিয়ে দিচ্ছে। ধূয়ায় আকাশ ভর্তি হতে হবে, এটাকে এমার্জেন্সি সাইন বিবেচনায় যদি কেউ রক্ষা করতে আসে চিন্তায়।
এখানে সে*ক্সের ধারণা নাই, এখানে লোভের ধারণা নাই, এখানে কোন প্রকারের সামাজিক রীতিনীতি, সংস্কৃতি বা প্রথা মেনে চলার বালাই নাই। নামাজ পড়ার সময় নাই, জীবন বাঁচানোই এখানে ফরজ। এখানে হিংসা নাই, বিদ্বেষ নাই, রাগও নাই। এখানে তো ফেসবুকও নাই, ইনস্টাগ্রামও নাই। এই জঙ্গলে এমনিতেই নেটওয়ার্ক পায় না। তার উপর এই গভীর মৃত কূপে তো কোনরুপ কোন কানেকশন নাই।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, হঠাৎ এখানে টাকার ধারণা বিলুপ্ত হয়ে গেছে! তবে, এখানের শুরু থেকে আগামী দশদিনের জন্য কিছু নিয়ম তো সবাই মিলে ঠিক করেছেন। কারা কি কি ভূমিকা পালন করবেন, কারা কি কি কাজ করবেন… পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে দায়িত্বের বিভাজন এখানেও ঘটছে।
এই যে নতুন প্রথার সৃষ্টি হচ্ছে ওদের অজান্তে সেটা কি আমাদের বাস্তব জীবনে ঘটে নাই? আমাদের বাস্তব জীবনে এরুপ হাজারো প্রথা/নিয়ম বিবর্তনের হাত ধরে আমাদের কাছে আসে নাই? আচ্ছা, এসবের উপর কোন ‘A-B’ টেস্ট করা হয়েছে? সমস্ত রীতিনীতির কোন পরীক্ষামূলক ‘A’ প্রান্তের সাথে ‘B’ প্রান্তের ফলাফল জানা গেছে? একটা বৈদ্যুতিক তার টানার সময় তারের একপ্রান্তের সাথে আরেক প্রান্তের কানেকশন কতবার পরীক্ষা করা হয়!
কিন্তু আমরা যেটাকে আমাদের দায়িত্ব বিবেচনায় নিচ্ছি, আমাদের সংস্কৃতি বিবেচনায় নিচ্ছি, পুরুষ ও মহিলার দায়িত্বে বিভাজন করে নিচ্ছি তার কানেকশন কি মেপে দেখেছি? তারমানে কার্যত আমরা বৈদ্যুতিক তার কে যেটুকু গুরুত্ব দিয়ে থাকি সেটুকু গুরুত্বও আমরা নিজেদের দিই না। আর এজন্যই সাধারণ মানুষ হচ্ছে ‘Headless Monster’। বাঙালী জাতি আরো একধাপ এগিয়ে। ইতিহাস ভালো জানি না কিন্তু যে জাতি দুইশ’ বছরের গোলামী মাথা পেতে নিতে পারে তাদেরকে শুধু ‘Headless Monster’ বলা পাপ হবে।
অস্তিত্ববাদের আলোকে আমাদের বাস্তব জীবনের উদ্দেশ্য নির্ধারণ আর যাইহোক আমরা নিজেরা করি না, করছি না। হতে পারে আমাদের জীবনের আদৌ কোন উদ্দেশ্য নাই। আমাদের এই পৃথিবীতে হতে পারে কেউ ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছেন, ‘উদ্দেশ্য’ তো খোদ সমালোচিত শব্দ। আমার মতে, ‘উদ্দেশ্য’ হচ্ছে মূর্খদের ডিকশিনারির জনপ্রিয় শব্দ। বাঙালী জীবনের উদ্দেশ্য তো আরো অদ্ভুত।
একটা বেঈমানী ব্যবস্থায় সামষ্টিক ঈমানদারিত্ব দেখানোর ফলে আর যাইহোক ‘মহৎ/হীন’ কিছুই ঠিক হওয়া যায় না। একজন দুর্নীতিবাজ খুব সৎ তার দুর্নীতি করার ব্যাপারে। তার সাথে একবার বসুন, কথা বলুন। আমি শতভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছি, তিনি যদি আপনাকে যোগ্য মনে করেন তাহলে এমন কিছু সত্য কথা বলবেন যা হজম করার সামর্থ্য আপনার নাই। আমি কোনভাবেই কাউকে এসবে অনুপ্রাণিত করছি না। কিন্তু বেঈমানী ব্যবস্থায় কেউ ঈমানদারিত্ব দেখাবে এমন প্রত্যাশাকে ভুলে যেতে বলছি।
আর এতক্ষণ যে কূপের ধারণা দিলাম সেটা হলো কারিনা ভাইরাস (পড়ুন করোনা)। এই সময়ে হঠাৎ করে মানুষের মধ্যে অনেক সহানুভূতি থেকে সহমর্মিতা জেগেছিলো। খানিক সময়ের জন্য হলেও আমরা একটু মানুষ হয়েছিলাম। খানিক সময়ের জন্য হলেও আমরা সবাই আমাদের বেঁচে থাকার ‘উদ্দেশ্য’ পেয়েছিলাম। কূপ থেকে বাইরে আসার উদ্দ্যেশ্যের মত করে জীবিত থাকার উদ্দেশ্য।
কিন্তু লকডাউন/শাটডাউন শেষ হতে না হতেই আমরা দেখাতে ভুললাম না যে, আমরা মূলত কতটা অমানুষ! আমি যদি একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব (Conspiracy Theory) মেনেও নিই, তাহলে এই ভাইরাসের মধ্যে দিয়ে ‘Depopulation’ এ আমাদের আগামী ১০০ বছরের কিছু সুবিধাও থাকতে পারে। হতে পারে আজকের এই আঘাত সহ্য করার ফলে আগামীতে আমাদের জীবন সহজ হবে। আমাদের যে ‘Will Power' উপর আল্লাহ্ দিয়েছেনে তার সঠিক ব্যবহার আমরা সবাই কি করছি? জানি না। খুব সম্ভবত করছি না।
আমাদের মধ্যে অনেক ধরণের বিভাজন রয়েছে। কথায় আছে, “এক দেশের বুলি আরেক দেশের গালি।” যে সংস্কৃতি আপনি মেনে চলেন এবং সেটাকে একমাত্র সহীহ্ সংস্কৃতি বলে মনেপ্রাণে ধারণ করেন তা ঐ কূপের মত সংকীর্ণ জীবন ও সংকীর্ণ চিন্তা। একইসাথে আপনি যদি প্রভাবশালী হোন এবং আপনার ধারণ করা সংস্কৃতি কে অন্যের উপর চাপাতে চান তাহলে সেটা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন হয়, ওটাও এক ধরণের বর্বরতা।
ঐ মৃত গভীর কূপ আপনার জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে অনেক স্বচ্ছতা দেয়, কিন্তু জীবিত থাকার তাগিদে নারী-পুরুষ তো দূর; টাকার ধারণাও বিবেচনায় নেয় না। বাংলাদেশের সংস্কৃতি কোন কূপের ধারণার চেয়ে কি অনেক বড়? জানি না। আমরা আমাদের কে সভ্য বলবো এবং অন্যদেরও আমাদের মত সভ্য বানাবো এই দায়িত্ব আপনাকে কেউ দেয় নাই।
আর বড় ক্যানভাসে বারবার আমরা পিছনে ফিরে তাকাবো আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যের প্রয়োজনে। কার্ল মার্ক্সের ভূত আমাদের টাকার ধারণাকে বারবার চ্যালেঞ্জ করতে আসবে। কারণ জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়া যত স্বস্তির তত কঠিন। ভুল ন্যারেটিভে আপনার ‘আমি’ কে ক’দিন আর বোকা বানিয়ে রাখতে পারবেন? কূপের ধারণায় উদ্দেশ্য তুলনামূলক সহজ। কিন্তু জীবনে সুযোগ-সুবিধা যত বাড়বে জীবনে আপনার সত্যিকারের উদ্দেশ্য লাগবে। মানুষ উদ্দেশ্য ছাড়া মৃতপ্রায় জীবজন্তুর মতন। ‘উদ্দেশ্য’ খুঁজে পাওয়া সহজ নয়, বিশেষ করে এই কমার্শিয়াল ব্যর্থ সিস্টেমে।
আমাদের জীবনে বড় বড় পদ ও পদবী পাওয়ার সাথে সাথে উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়া আরো জটিল হয়ে পড়ে। যে মানুষ যত সফল সে মানুষ তত বেশি উদ্দেশ্যহীন হয়ে পড়ে। যে মানুষ যত ধনী সে মানুষ তত বেশি সংশয়ে ভোগে। খুব সম্ভবত আমরা কেউ-ই খারাপ নই। ব্যস! আমরা জানি না যে, নদীর ওপাড়ে কি আছে? যে নৌকায় যাচ্ছি তার গন্তব্য ঠিক কোথায়?
এই যে জীবন ভ্রমণ তা ক্রমাগত কঠিন ও জটিল হতে থাকে। আপনার মনে হতে পারে আপনি সব শর্ট-আউট করে নিয়েছেন। কিন্তু কেন-ই-বা নিয়েছেন? এতে আপনি কতবড় ‘মহৎ/হীন’ হলেন? বিশ্বাস করুন, এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের এতে কিছুই ফারাক পড়ে না।
আমরা মহৎ জীবনের মহৎ উদ্দেশ্য পালন করছি। কিন্তু কেন করছি? জানি না। যদি পুরো জীবন এই মহৎ উদ্দেশ্যে কাটিয়েও দেই তাহলেও কিচ্ছু আসে বা যায় না। ব্রয়লার ফার্মের মুরগীর মত জীবনের খাস কিছুই থাকতে পারে না। যে জীবনে চিন্তার বাতিক নাই, সে জীবন আর যাইহোক ‘জীবন’০ নয়। যে জীবন প্রথাগত ধারণার দাস সে জীবন থেকে অর্থ পাওয়া আরো কঠিন। যে জীবন শুধুমাত্র টাকার ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত সে জীবন থেকে মুক্তি নাই।
আসলে কিছু মানুষের জন্য করুণা হয়। মস্তিষ্ক ছাড়া একটা দেহ সামনে যদি ভূতের মতন হাঁটে তাহলে অদ্ভুত লাগে, করুণাও হয়। অস্তিত্ববাদীরা বা ‘Nihilistic’ এপ্রোচ আপনাকে ধাক্কা দেবে ঠিকই কিন্তু স্বজ্ঞানেও ফেরাবে। আমরা আস্তেধীরে আমাদের স্রষ্টাকে মেরে ফেলছি।
ছবি: Bing Enterprise (Copilot Ai)
০৮ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১০:২৫
মি. বিকেল বলেছেন: আপনার মন্তব্যে জীবনের দর্শনের সহজতা এবং সুখের সন্ধানের কথা উঠে এসেছে, যা অত্যন্ত গভীর এবং চিন্তাশীল। আপনি যে জীবনকে সহজ এবং সুখময় করার কথা বলেছেন, তা সত্যিই মূল্যবান। পরিবার, বন্ধু, আত্মীয় এবং স্বজনদের সাথে সময় কাটানো এবং নিজের মনের মধ্যে শান্তি এবং পজিটিভিটি ধরে রাখা জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ।
আপনি যে বলেছেন নিজের নাম পরিচিত করানোর চেয়ে বড় কিছু হলো অন্যদের উপকার করা এবং সবাইকে নিয়ে সুখি হয়ে বাঁচা, তা অত্যন্ত সত্য এবং প্রশংসনীয়। আপনার এই চিন্তাধারা অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে।
আপনার মতো চিন্তাশীল মানুষের সাথে আলোচনা করা সত্যিই আনন্দের। আপনার মতামত ও দর্শন শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
২| ১৭ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৭
কামাল১৮ বলেছেন: উদ্দেশ্যহীন জীবন স্রোতহীন নদির মতো।
০৮ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১০:২৯
মি. বিকেল বলেছেন: অস্তিত্ববাদ দর্শন অনুযায়ী, প্রত্যেক ব্যক্তির জীবনের উদ্দেশ্য তার নিজের অস্তিত্বের মধ্যে নিহিত। এই দর্শন বলে যে, আমাদের জীবনের অর্থ আমরা নিজেরা তৈরি করি, এবং সেই অর্থ হলো আমাদের পছন্দ, আমাদের কর্ম এবং আমাদের দায়িত্ব। স্রোতহীন নদির মতো উদ্দেশ্যহীন জীবন হলো একটি জীবন যা নিজের পথ নিজে তৈরি করে না, কিন্তু অস্তিত্ববাদ আমাদের শেখায় যে আমরা নিজেরাই হলাম আমাদের জীবনের নাবিক।
আমরা যদি নিজের জীবনের উদ্দেশ্য নির্ধারণ না করি, তবে আমাদের জীবন স্রোতহীন নদির মতো হয়ে যায়, যেখানে প্রবাহ নেই, গতি নেই, কোনো দিকনির্দেশ নেই। কিন্তু যখন আমরা নিজের জীবনের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করি, তখন আমাদের জীবনে প্রবাহ আসে, গতি আসে, এবং দিকনির্দেশ পাওয়া যায়। আমাদের প্রতিটি পছন্দ এবং প্রতিটি কর্ম আমাদের জীবনের নদীকে গতিশীল করে তোলে।
তাই, আমাদের উচিত নিজের জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে বের করা এবং সেই উদ্দেশ্যের দিকে নিজেদের পথ চালিত করা। এই উদ্দেশ্য হতে পারে সৃজনশীলতা, প্রেম, জ্ঞানের সন্ধান, অথবা অন্যের উপকার করা। প্রত্যেকের উদ্দেশ্য ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু সেই উদ্দেশ্য আমাদের জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলে।
আপনার মন্তব্য অত্যন্ত গভীর এবং চিন্তাশীল। আপনার চিন্তাধারা অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫
নতুন বলেছেন: এজন্য জীবনের দর্শন সহজ করতে হবে।
নিজের জীবনের সময়টা পরিবার, বন্ধু, আত্নীয়, স্বজন নিয়ে সুখে কাটানোর জন্য চেস্টা করতে হবে।
কারুর ক্ষতির চিন্তা করা ঠিক না, কারুর প্রতি খারাপ ধারনা পোষন করা ঠিক না, অর্থ মনে কোন নেতিবাচক জিনিস রাখা যাবেনা।
জীবনটা ছোট তাই পৃথিবির নতুন নতুন জিনিস দেখা, বোঝার চেস্টা করে গেলে জীবনটা বরিং লাগবেনা।
বাস্তবতা হইলো মানুষ আমার নাম দুনিয়ার মানুষের কাছে পরিচত করাইয়া লাভ নাই, মানুষ আলেকজান্ডারের নাম মনে রাখছে কিন্তু তার সময়ের আরো কত লক্ষ মানুষ ছিলো তাকে ভুলে গেছে।
তাই লোক দেখানোর জন্য নিজের সময় নস্ট করার দরকার নাই।
অন্যর ক্ষতি না করা, উপকারের চেস্টা করা আর সবচেয়ে বেশি চেস্টা করা সবাইকে নিয়ে কিভাবে সুখি হয়ে বেচে থাকা যায়।