নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মেহেদি হাসান, মি. বিকেল নামে পরিচিত। আমি একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ও অ্যাপ ডেভেলপার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, এবং নাট্য পরিচালক। মাইক্রোসফটে ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত এবং গল্প বলা আমার প্রধান পরিচয়।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নাম মি. বিকেল।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসামাজিক হোন, পরিশ্রমী হোন, সফল হোন: আপনার জীবনের গল্প লিখুন

১৯ শে জুন, ২০২৪ বিকাল ৪:২৭



আজ আমি যে কথাটি বলতে যাচ্ছি, তা হয়তো আপনাকে কিছুটা বিব্রত করতে পারে। আমি একটি সরল সত্য উপস্থাপন করতে চাই - ‘আমাদের জীবনের কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নেই।’ হ্যাঁ, আপনি সঠিকভাবেই পড়েছেন। আমাদের জীবনের কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য নেই। দর্শন অনুসন্ধান করে, গুগল এবং ইউটিউবে সার্চ করে আপনি আপনার জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পাবেন না, কারণ যার অস্তিত্ব নেই তা খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য আমাদেরকেই নিজেদের জন্য তৈরি করতে হবে, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।

যদি আপনি স্কুলে পড়াশোনা করেন, তবে আপনার প্রাথমিক উদ্দেশ্য হওয়া উচিত ভালো মার্ক বা গ্রেড অর্জন করা। স্কুল শেষ হলে, একটি মানসম্মত কলেজে ভর্তি হওয়া আপনার পরবর্তী লক্ষ্য হবে। এরপর, আপনি কোন শাখায় পড়বেন - বিজ্ঞান, মানবিক বা বাণিজ্য - তা নির্ধারণ করা জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বিষয়ে পড়বেন এবং কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন, তা নিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় সফল হওয়া আপনার আরেকটি উদ্দেশ্য হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষে, আপনি কোন কর্মক্ষেত্র বা পেশা বেছে নেবেন, সেটিও আপনার নিজের তৈরি করা জীবনের উদ্দেশ্য হবে।

আমরা জীবনের উদ্দেশ্যের কোনো ‘ডিফল্ট মোড’ নিয়ে জন্মাই না। পৃথিবীতে আসার পর, আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য আমরা নিজেরা নির্মাণ করি। কোনো বিশেষ নির্দেশনা নেই যা অনুসরণ করে আপনি আপনার জীবনের উদ্দেশ্য তৈরি করবেন। প্রথমত, আমরা জানি না যে আমরা কতদিন বাঁচব, এবং সেই সময়ে আমাদের কী হতে হবে। দ্বিতীয়ত, আমরা যতদিন পৃথিবীতে থাকব, সেই সময়ে আমরা সম্পূর্ণ সুস্থ থাকব কিনা তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

ব্যক্তি বিশেষের জীবনের উদ্দেশ্য ভিন্ন হতে পারে। কেউ ক্ষমতা চায়, কেউ অর্থ, কেউ খ্যাতি, আবার কেউ ভালোবাসার মানুষকে। প্রত্যেকে তাদের জীবনের উদ্দেশ্য নিজেদের চলমান পরিস্থিতি অনুযায়ী গড়ে তোলেন। জীবনের উদ্দেশ্য নির্ধারণে কোনো গদবাঁধা নিয়ম নেই। পৃথিবীতে এমন কোনো বই নেই যা আপনার পরিস্থিতি বুঝে আপনার জীবনের উদ্দেশ্য তৈরি করে দেবে। কোনো প্রতিষ্ঠান, শুভাকাঙ্ক্ষী, হুজুর, গুরু, নাটক/সিনেমা/সিরিজ, বন্ধু বা আত্মীয়-স্বজন, পডকাস্ট, ইউটিউব ভিডিও বা আর্টিকেল—কেউই আপনার জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান রাখে না এবং আপনাকে সেভাবে গাইড করতে পারে না।

আপনি হয়তো বিভিন্ন আর্টিকেল, ইউটিউব ভিডিও, বা লেখকদের কথায় এই পরিচিত বাণীটি শুনে থাকবেন—‘তিনবেলা খাবার, একটি বিছানা, এবং একজন বন্ধু থাকলেই বেঁচে থাকা যায়।’ কিন্তু আমি মনে করি, এই ধারণাগুলো অত্যন্ত সীমিত। মানুষের জীবনের আকাঙ্ক্ষা এর চেয়ে অনেক বেশি। প্রত্যেকে নিজেকে বিশেষ মনে করতে চায়, জনপ্রিয় হতে চায়, সম্মানিত হতে চায়, এবং এমন ক্ষমতা রাখতে চায় যা দিয়ে তার স্বাধীনতা বজায় রাখা সম্ভব। আমার এক শ্রদ্ধেয় শিক্ষক বলতেন, ‘এই পৃথিবীতে আমরা সবাই পাগল, কিন্তু কে কীসের জন্য পাগল তা বলা বড়ই অদ্ভুত।’ প্রথমে আমি এই কথায় গুরুত্ব দিইনি এবং এটিকে অনর্থক মনে হয়েছিল, কিন্তু এখন আমি বুঝি যে প্রত্যেকের জীবনের আকাঙ্ক্ষা এবং উদ্দেশ্য সত্যিই অনন্য এবং ব্যক্তিগত।

জীবনে আমাদের প্রত্যেকেরই নানা ভূমিকা পালন করতে হয়, যেমনটি শেক্সপিয়রের নাটক ‘As You Like It’ এ বলা হয়েছে—আমরা সবাই অভিনেতা। কোন পথ আপনি বেছে নেবেন তা সম্পূর্ণভাবে আপনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। জীবনের উদ্দেশ্য নির্ধারণ এবং নিজের জন্য নির্দিষ্ট ভূমিকা বেছে নেওয়া যত দ্রুত সম্ভব হয়, তত দ্রুত আপনি জীবনে অগ্রগতি করতে পারবেন। কারণ যদি আপনি জীবনের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে না পারেন, তাহলে সমাজ ও পরিবার আপনাকে প্রাধান্য দেবে না। এছাড়াও, বর্তমান স্ট্যাটাস-চালিত সমাজে নিজের ভূমিকা নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই যত দ্রুত আপনি আপনার জীবনের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে পারবেন, তত দ্রুত আপনি সেই লক্ষ্যের দিকে কাজ করতে পারবেন।

আমাদের মধ্যে যে মহৎ হওয়ার ইচ্ছা বিরাজ করে, তা অবজ্ঞা করা বা অস্বীকার করা যায় না। নৈতিকতা ও নীতিশাস্ত্র থাকলেও, আপনার জীবনের উদ্দেশ্যের জন্য আপনাকেই একটি গল্প তৈরি করতে হবে। যদি এখনও শুরু না করে থাকেন, তাহলে এখনই শুরু করুন। নিজের ভূমিকা নির্বাচন করুন এবং অধ্যবসায়ের সাথে কাজ করুন। যদি আপনি সত্যিকারের অগ্রগতি করতে চান, তাহলে আপনাকে হয়তো অসামাজিক হতে হবে, কর্মনিষ্ঠ হতে হবে, ভ্রমণ কমাতে হবে, বিনোদন থেকে দূরে থাকতে হবে, এমনকি একাকীত্ব মেনে নিতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, যদি আপনার ভূমিকা ও গল্প সফল হয়, তাহলে সেই সাফল্য অমূল্য হবে। ধন্যবাদ।

ছবি: Bing Enterprise (Copilot Ai)
Also Read It On: অসামাজিক হোন, পরিশ্রমী হোন, সফল হোন: আপনার জীবনের গল্প লিখুন

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৯

কামাল১৮ বলেছেন: মানবিক হতে হবে।কোন সামাজিক হবেন? হিন্দু,ইহুদি,খৃষ্টান না মুসলিম।প্রত্যকের আলাদা আলাদা সমাজ আছে।মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে।

২০ শে জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২১

মি. বিকেল বলেছেন: মানবিকতা এমন একটি মূল্যবোধ যা সকল ধর্ম ও সামাজিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে। মানবিক সমাজ গঠনের জন্য প্রত্যেকের মধ্যে সহানুভূতি, সহযোগিতা এবং সমবেদনা থাকা প্রয়োজন। এটি একটি সার্বজনীন মানবিক আদর্শ যা সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। তাই, মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে গেলে আমাদের সকলের মধ্যে এই মূল্যবোধগুলো চর্চা করা উচিত।

২| ২০ শে জুন, ২০২৪ রাত ১২:৪৪

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


জীবনের গল্প লিখতে এবং/অথবা সফল হতে অসামাজিক হতে হবে এটা সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না এবং পূর্ব শর্ত না।
তবে সফলতার অন্যতম প্রধান উপাদান পরিশ্রম এই কথা ঠিক।


কারো জীবনের লক্ষ্য যদি হয় সে নেতা হবে, অথবা জনপ্রিয় ব্যক্তি হবে অথবা কর্ম উদ্ধারের জন্য একটা সফল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে তাহলে তাকে সামাজিক হওয়ার ছাড়া বিকল্প নাই।

আবার অনেককেই আপদ দৃষ্টিতে দেখা যায় যে সে অসামাজিক, কিন্তু অনুসন্ধান করলে দেখা যায় নিদিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সমাজের সাথে খুবই গরিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করে চলে অর্থাৎ সামাজিক।

প্রতিটা মানুষ যেমন স্বতন্ত্র, তেমনি প্রতিটা মানুষের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, জীবনাচরণ ইত্যাদি ভিন্ন।

একটা মানুষের সাথে অন্য একটা মানুষের উপাদান গত, ঘটনা গত, পরিবেশগত, স্বাস্থ্যগত ইত্যাদি আরো শত শত বিষয়ে পার্থক্য আছে যে কোন সাধারণ ফর্মুলা দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা সম্ভব না।

পরিশ্রম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হওয়া সত্ত্বেও, যার একটা বা দুটা পা নেই, সে সর্বোচ্চ পরিশ্রম করেও কোন ভাবেই পা আছে এমন মানুষের সাথে দৌড়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে না।

২০ শে জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২২

মি. বিকেল বলেছেন: শুধু শিরোনাম দেখে মন্তব্য করার চেয়ে না করাটাই ভালো। কারণ শিরোনাম আকর্ষণীয় রাখতে হয়, পাঠক তাতে আগ্রহ বেশি খুঁজে পান। ধন্যবাদ

৩| ২১ শে জুন, ২০২৪ রাত ১:৪৮

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


মি. বিকেল,

শিরোনাম দেখে আকৃষ্ট হয়ে লেখাটা সবটাই একাধিক বার পড়ে ছিলাম।
লেখাটা ভাল লেগেছিল।
তাই লেখাটার সমর্থনে আরো কিছু কথা সংযোজন করেছিলাম মাত্র।

কিন্তু হয়তো আমার জ্ঞান অথবা প্রকাশ করার ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কারণে সঠিক ভাবে তা প্রকাশ বা পরিস্ফুট করা সম্ভব হয় নাই।

কিন্তু আমি তো এত অহংকারী হতে পারবো না যে বলবো আমি কি লিখেছি তা আপনি অনুধাবন, পর্যালোচনা, এবং বিবেচনা করতেই পারেন নাই।

তবে অনেক ক্ষেত্রেই মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা সময় এবং সম্মানের জন্য অপরিহার্য এবং পরিহরণীয়।

২১ শে জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৪

মি. বিকেল বলেছেন: দেখুন, আমি ব্যক্তি হিসেবে প্রচন্ড অহংকারী। আপনি যা সংযোজন করেছেন তা পড়ে মনে হয়েছে শুধু শিরোনাম দেখে সামাজিক বা অসামাজিক হওয়ার বিষয়টি আপনাকে ভাবিয়েছে। কিন্তু এই লেখায় আমি স্পেশ্যাল কেস হিসেবে যারা জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পাচ্ছে না তাদের জন্য শুধু লিখেছি

এখানে মুশকিল হয়, একটা ব্লগ যে-ই লিখুক তাকে বহু শ্রম দিতে হয়। বহু লেখা পড়তে হয়, জানতেও হয়। কিন্তু তার বিনিময়ে হুটহাট কিছু মন্তব্য আসে যা রাগান্বিত হতে বাধ্য করায়। দিনশেষে একজন ব্লগার সাধারণ মানুষের তুলনায় বেশি সেন্সিটিভ এবং চিন্তাশীল হবে এটাই স্বাভাবিক।

আমি অহংকারী স্বীকার করছি, আপনি মন্তব্য করা পরিহার করলেও আমার কিছু জিজ্ঞেসা নাই। আমার বা আমাদের কাজ হলো আমরা যেটুকু জানি বা বুঝি সেটুকু শেয়ার করা। এবং তা চলমাম থাকবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.