![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ তাঁর নিজের প্রয়োজনেই বদলায়
বৌদ্ধ ধর্ম পৃথিবীর প্রাচীন ধর্মগুলোর মধ্যে একটি। আজ থেকে আড়াই হাজার বছর পূর্বে সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধের নিজ শিক্ষা ও সাধনালব্ধ জ্ঞানের ফসল বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা ! গৌতম বুদ্ধের জন্ম ও মৃত্যুর সময়কাল নিয়ে ইতিহাসবেত্তাদের মধ্যে অনেক মতবিরোধ রয়েছে। Born c. 563 BCE or c. 480 BCE[1][2] Lumbini, Shakya Republic (according to Buddhist tradition)[note 1] Died c. 483 BCE or c. 400 BCE (aged 80) Kushinagar, Malla Republic (according to Buddhist tradition)[ তাই ইতিহাসের আলোকে গৌতম বুদ্ধ ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাস পর্যালোচনা না করে বুদ্ধ ও তাঁর ধর্মের মূল শিক্ষা নিয়ে আলোকপাত করবো আজ !
গৌতম বুদ্ধ শাক্য রাজবংশের ক্ষত্রিয়-ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শাক্য ক্ষত্রিয় বংশের পরিবারগণ ব্রাহ্মণ গোত্রের ছিল ! তিনি দীর্ঘ ৪৫ বৎসর ধর্ম প্রচার করেন এবং ৮০ বৎসর বয়সে ইন্ডিয়ার কুশীনগরে মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন ! গৌতম বুদ্ধের বাল্য নাম- সিদ্ধার্থ, গৌতম, শাক্যমুনি ! সিদ্ধার্থের জন্মের সাতদিন পরেই রানী মাতা মায়াদেবী মারা যান অতঃপর বিমাতা মহাপ্রজাপতি গৌতমী কর্তৃক লালিত পালিত হয়েছিলেন বলে তাঁর নাম হয় গৌতম ! বাবার নাম শূদ্ধোদন ! বাবা হিমালয়ের পাদদেশে বর্তমান নেপালের কপিলাবস্তু নামক রাজ্যের রাজা ছিলেন ! স্ত্রীর নাম যশোধরা !
শান্ত এবং চাপা স্বভাবের সিদ্ধার্থ গৌতম একদিন সদ্য ভূমিষ্ঠ নিজ পুত্রকে একনজর দেখে স্ত্রীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গৃহত্যাগী হলেন গৃহত্যাগী গৌতম সিদ্ধার্থ ঘুরতে ঘুরতে একদিন উরুবিললু গ্রামে (যেটি বর্তমানে ভারতের বুদ্ধ গয়ায় বোধি বৃক্ষ হিসেবে পরিচিত ) একটি অশ্বত্থ বৃক্ষের নিচে পূর্বমুখী হয়ে বজ্রাসনে বসেন অতঃপর এক বৈশাখী পূর্ণিমার রাত্রির তৃতীয় প্রহরে সর্ব তৃষ্ণা ক্ষয় করে বোধিজ্ঞান লাভ করে বুদ্ধ হন ! সিদ্ধিলাভের পর থেকে গৌতম বুদ্ধ বুদ্ধত্ব বা আলোকিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে খ্যাত হয়েছিলেন ! বুদ্ধত্ব লাভের পর সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধ ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে প্রথম জীবনের সঙ্গী পঞ্চবর্গীয় শিষ্য কৌন্ডিন্য, ভদ্দিয়, বপ্প, মহানাম ও অশ্বজিতের নিকট সর্ব প্রথম ধর্মচক্র প্রবর্তন করেন ! বুদ্ধের প্রচারিত ধর্ম ৮৪ হাজার ধর্মস্কন্ধে বিভক্ত ! তিনি শিষ্যদের বলেন- হে ভিক্ষুগণ ! ! প্রব্রজিতদের (পাপ কার্য মোচন) জন্য সাধন পথে দুটি অন্তরায় পরিত্যাগ করা উচিত (এক) আত্মপীড়ণ না করা (দুই) অতি ভোগ বিলাসের পথ ত্যাগ করা উচিত এবং সাধনার মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা ! সে মধ্যম পথ হলো অষ্টাঙ্গিক মার্গ বা আটটি পথ, যথা- ১. সদ্ দৃষ্টি ২. সদ্ কর্ম ৩. সদ্ বাক্য ৪. সদ্ জীবিকা ৫. সদ্ সংকল্প ৬. সদ্ প্রচেষ্টা ৭. সম্যক স্মৃতি এবং ৮. সম্যক সমাধী !
তাইতো সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধ বলেছেন-
"you should know sufferings.
you should abandon origins.
you should attain cesesions.
you should practice the path.”
ত্রিপিটক বৌদ্ধদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ! সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধ কর্তৃক প্রচারিত ধর্মীয় রীতিনীতি, উপদেশ ও বাণীর সংকলনই ত্রিপিটক ! ত্রিপিটক তিনভাগে বিভক্ত, (এক) বিনয় পিটক (দুই) সূত্র পিটক (তিন) অভিধর্ম পিটকঅভিধর্ম পিটককে ত্রিপিটকের হৃৎপিণ্ড বলা হয় ! ত্রিপিটকের নয়টি অধ্যায় বা অঙ্গ রয়েছে, যথা- ১. সুত্ত ২. গায্য ৩. বৈজ্যাকরন ৪. গাথা ৫. উদ্যান ৬. ইতিবৃত্তক ৭. অবভূত ধম্ম ৮. জাতক ৯. বেদললো ! ত্রিপিটক পালি ভাষায় রচিত ! সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে ত্রিপিটকের পূর্ণাঙ্গ সংকলন হয় এবং সিংহলের রাজা বট্টগামিনীর রাজত্বকালে ত্রিপিটক প্রথম লিপিবদ্ধ হয় !
বৌদ্ধ ধর্মের মূল ভিত্তি হলো ঽকর্মবাদঽ ! বুদ্ধ ঽচেতনাঽকে কর্ম বলেছেন ! গৌতম বুদ্ধ কর্মবাদ সম্পর্কে উপদেশ দিয়েছেন- "প্রাণীগণ নিজ নিজ কর্মের অধীন ! কৰ্মই প্রাণীদের একান্ত আপন ! কৰ্মই জীবের পুনর্জন্মের হেতু ! কৰ্মই বন্ধু ! কৰ্মই আশ্রয় ! কৰ্মই জীবকে হীন-শ্রেষ্ঠ, উচ্চ-নিচ নানাভাবে বিভক্ত করে !" বুদ্ধ আরও বলেন- "মানুষ নিজেই নিজের ত্রাণকর্তা,অপর কেউ নয়,স্বর্গ-নরক নিজেদেরই পরিণতি !
বৌদ্ধরা প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা 'ত্রিরত্ন বন্দনা' করে ! 'বুদ্ধ, ধর্ম, ও সংঘকে ত্রিরত্ন বলা হয় ! বৌদ্ধদের নিকট এই ত্রিরত্ন পরম আধার বা আশ্রয় বা পরম পূজনীয় ! অজ্ঞানতা দূর করে জ্ঞানালোকে আলোকিত হওয়ার জন্য বৌদ্ধরা প্রতিদিন সন্ধ্যায় 'প্রদীপ পূজা' করে ! এছাড়াও বৌদ্ধরা বছরের বিভিন্ন সময় সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, প্রব্রজ্যা, উপসম্পদা, প্রবারণা, কঠিন চীবর দান, নবরত্ন পাঠ সহ আরও অনেক ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করেন ! 'শীল' শব্দের অর্থ চরিত্র. নিয়ম, নীতি, শৃঙ্খলা ইত্যাদি ! তাই সুশীল বলতে চরিত্রবান লোককেই বোঝানো হয় ! অন্যান্য ধর্মের মত বৌদ্ধ ধর্ম পালনের ক্ষেত্রেও প্রথমে শীলবান বা সৎ ও চরিত্রবান হতে হবে ! বৌদ্ধ ধর্মে গৃহী বা উপাসক-উপাসিকারা নিত্য যে শীল পালন করে তাকে গৃহী শীল বা পঞ্চশীল বলে ! গৃহীদের মধ্যে যারা 'প্রব্রজ্যা' (পাপ মোচন) ধর্মে দীক্ষা নেন তাঁদেরকে 'শ্রামণ' বলা হয় ! শ্রামন হচ্ছে গৃহী ও ভিক্ষুর মধ্যবর্তী স্তর ! ভিক্ষু হতে হলে প্রথমে শ্রামণ হতে হয় ! এদেরকে বিহারের প্রত্যাহিক কর্ম সম্পাদনের পাশাপাশি দশশীল পালন করতে হয় ! শ্রামণদের সকাল-বিকাল গুরু ভিক্ষুর নিকট দশশীল গ্রহণ বা প্রার্থনা করতে হয় ! দশশীলের বাংলা অনুবাদ-
১. প্রাণী হত্যা থেকে বিরত থাকবো- এ শিক্ষাপদ গ্রহণ করছি ! ২. অদত্তবস্তু গ্রহণ (চুরি) থেকে বিরত থাকবো- ...! ৩. অব্রহ্মচর্য্য থেকে বিরত থাকবো-...! ৪. মিথ্যাকথা বলা থেকে বিরত থাকবো-...! ৫.সূরা-মদ নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকবো-...! ৬. বিকাল ভোজন (অতিরিক্ত) থেকে বিরত থাকবো-...! ৭. নৃত্য-গীত-বাদ্য উৎসব প্রভৃতি প্রমত্ত চিত্তে দর্শন থেকে বিরত থাকবো-...! ৮. মাল্যধারণ সুগন্ধি, প্রসাধন দ্রব্য, অলংকার ব্যবহারঃ ৯. উচ্চাসন ও মহাশয্যায় শয়ন থেকে বিরত থাকবো-...! ১০. সোনা-রুপা গ্রহণ থেকে বিরত থাকবো-...! এছাড়াও শ্রামনগন ৭৫ প্রকার সেখিয়া ধর্ম পালন করে ! ভিক্ষুরা পালন করে ২২৭ টি শীল !
বোধিজ্ঞান অনুসারে "তৃষ্ণাই জন্মের মূল কারণ" ! তাই নির্বাণ লাভের জন্য তৃষ্ণার মূল ছেদন করা উচিত !
বৌদ্ধ ধর্মের প্রধান নৈতিকতা হলো: (এক) সর্বজীবে দয়া (দুই) আত্মসংযম (তিন) সত্যবাদিতা ! পূজা উপাসনার মতোই দানও একটি উপাসনা মনে করা হয় ! 'দান' শব্দের অর্থ ত্যাগ ! শীলবান ব্যক্তিরা নিয়মিত পূজা ও দান করে কারন, দান চেতনাকে উৎপন্ন করে, সৎকর্মে উৎসাহ বৃদ্ধি পায় এবং চিত্তে মৈত্রী করুণা ও উদারতা জাগ্রত করে !
বুদ্ধ ধর্মের শিক্ষায় সর্বাগ্রে কর্মকে প্রধান্য দেওয়া হয়েছে এবং চেতনাকেই কর্ম বলা হয়েছে কেননা, চেতনা কায়, বাক্যে, মনোদ্বারে সংঘটিত হয় ! সৎ চেতনায় সৎকর্ম উৎপন্ন হয় ! কর্ম ও কর্মফল জীবের প্রবাহমান ধারা ! তাই সৎকর্মের ক্ষেত্রে যেমন স্বর্গলোক, দেবলোক, ব্রক্ষ্মলোক রয়েছে তেমনি অসৎ কর্মের জন্য রয়েছে তির্যক,প্রেত,অসুর,নরক ইত্যাদি !
"
০৫ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৪
অসমাপ্ত কাব্য 21 বলেছেন: মুন্সি- মোল্লা বংশের সব লোকগুলোই কি হুজুর হয় ভাই ?
সনাতন ধর্মীয় রীতিতে কর্মগুণে জাত বংশ প্রথা পরিবর্তন করা যায় ! এক্ষেত্রে ক্ষত্রিয় থেকে ব্রাক্ষ্মণ হওয়ার চান্স আছে !
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই মার্চ, ২০১৭ ভোর ৫:২৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
" শাক্য ক্ষত্রিয় বংশের পরিবারগণ ব্রাহ্মণ গোত্রের ছিল ! "
-ক্ষত্রিয়'রা যোদ্ধা, ব্রাহ্মণেরা ধর্মীয় গুরু ও পুরোহিত; আপনি তালগোল পাকাচ্ছেন?