নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রবিন.হুড

রবিন.হুড › বিস্তারিত পোস্টঃ

শব্দের নানান ব্যবহার

১১ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:০৬

বাংলা ভাষায় একটা কিন্তু ইংরেজী ভাষায় দুইটা। তা হল শব্দ যার ইংরেজি হচ্ছে সাউন্ড এবং ওয়ার্ড। এখন আলোচনা করবো ওয়ার্ড বা শব্দের নানামূখী ব্যবহার নিয়ে।
শব্দই ভাষার সম্পদ। বাংলা ভাষার শব্দ ভান্ডারে অসংখ্য শব্দ রয়েছে। উৎসের উপর ভিত্তি করে বাংলা ভাষার শব্দ হচ্ছে, তৎসম, অর্ধ তৎসম, তদ্ভব, বিদেশী ও দেশী বা খাঁটি বাংলা। এক একটি শব্দের এক একটি বিশেষ অর্থ আছে। আবার শব্দের অর্থ অঞ্চল ভেদে ভিন্ন হয়। কথায় আছে, এক দেশের গালি অন্য দেশের বুলি। বাংলাদেশে যার নাম চুল ভারতে তার নাম ভিন্ন। আবার পঞ্চগড় জেলার একটা উপজেলার যে নাম তা অন্য এলাকায় মেয়েদের গোপন অঙ্গ বুঝায়।
কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে কোন একটি শব্দ শুধুমাত্র একটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত না হয়ে ভিন্ন ভিন্ন বিশেষ বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়। শব্দের এরূপ ব্যবহারকে ভিন্নার্থে প্রয়োগ বলা হয়। বাংলা ব্যাকরণে এরূপ কতকগুলো শব্দের ভিন্নার্থক বিশেষ্য, বিশেষণ ও ক্রিয়াপদের প্রয়োগ দেখানো হল।
পাকা
• পরিপক্ব- পাকা জাম খেতে মিষ্টি।
• খাঁটি – পাকা সোনায় খাদ থাকে না।
• অভিজ্ঞ – তিনি একজন পাকা লোক।
• দক্ষ – বুলবুল একজন পাকা খেলোয়াড়।
• স্থায়ী – শাড়িটির রং পাকা।
• সাদা – কী ব্যাপার, তোমার সব চুল দেখি পেকে যাচ্ছে।
• নিপুণ – তোমার মা রান্না-বান্নায় খুবই পাকা।
• বখাটে – ছেলেটা অল্প দিনেই পেকে গেছে।
• ইটের তৈরি – শহরের অধিকাংশ লোক পাকা বাড়িতে বাস করেন।
এরকম আরও শব্দ আছে যার একাধিক অর্থ আছে এবং বাক্যে বিভিন্ন পদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
আবার মানুষের ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে শব্দের পদ বা অর্থ পরিবর্তন হতে পারে। যেমনঃ
রাজাকার একটা বিশেষ সংগঠন/বাহিনীর নাম ছিল বাক্যে ব্যবহার হতো বিশেষ্য হিসেবে। কিন্তু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে রাজাকার বাহিনী বা রাজাকারের পাকিস্থানের পক্ষে কাজ করা, যুদ্ধাপরাধ করা, অমানবিক আচরণ করার কারনে বর্তমানে নেতিবাচক বিশেষণ পদে রূপান্তরিত হয়েছে।
মীর জাফর আলী খান একজন ব্যক্তির নাম। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজ উদ দৌলার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করার ফলে মীর জাফর শব্দটি এখন বিশ্বাস ঘাতক এর সমার্থক শব্দ হিসেবে নেতিবাচক বিশেষণ পদে রূপান্তরিত হয়েছে।
মানুষের ব্যবহারের ফলে নতুন শব্দ তৈরী হতে পারে অখ্যাত শব্দ জনপ্রিয় শব্দে রূপান্তরিত হতে পারে।
শব্দ নিয়ে ধর্ম চর্চা হয়। যেমন জল হিন্দুদের শব্দ পানি মুসলমানের শব্দ । অথচ দুটি শব্দের উপাদান এক , সৃষ্টিকর্তা এক এবং সকল মানুষের তৃষ্ণা নিবারণ করে।
শব্দ নিয়ে রাজনীতি হতে পারে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জয়বাংলা, জিন্দাবাদ ও নারায়ে তাকবীর শব্দগুলো তিনটি ভিন্ন রাজনৈতিক দলের শ্লোগান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এই শ্লোগান উচ্চারণের মাধ্যমে বর্তমান জনগণের রাজনৈতিক আদর্শ প্রকাশিত হয়।
সুন্দর শব্দ চয়ন ভাষাকে শ্রুতি মধুর করে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য গড়ে তোলে। মুখের সুন্দর ব্যবহার দিয়ে মানুষকে আপন করে নেয়া যায়। আবার রুঢ় শব্দ বা গালিগালাজ দিয়ে মানুষের মন বিষিয়ে তোলা যায়।
সাহিত্যেও শব্দের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সহজ সরল শ্রুতিমধুর শব্দের সাহিত্য পাঠকদের আকৃষ্ট করে এবং হ্রদয়ের গহিনে স্থান দেয়।
খুন ফারসি শব্দ। রক্ত এবং হত্যা-এই দুই অর্থেই খুন শব্দটি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এখন বাংলা শব্দে যেভাবে হত্যাকাণ্ড বোঝাতে খুন শব্দটি ব্যবহার হয়, সেটি মূলত এসেছে কবিতা এবং সংবাদপত্রের ব্যবহার থেকে। কথিত আছে, বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার অগ্নিবীণা কাব্যগন্থে প্রথম হত্যা বোঝাতে খুন শব্দ ব্যবহার করেছিলেন।কিন্তু ভাষাতত্ত্ববিদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ শাহরিয়ার রহমান এ বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন।তিনি বলছেন, "আমার মনে হয় না নজরুলই প্রথম ব্যবহার করেছেন এই শব্দ। তবে এটা ঠিক যে রক্ত বোঝাতে কাজী নজরুল ইসলাম খুন শব্দটি ব্যবহারের পর বিষয়টি নিয়ে সেসময় অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল।"

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:৫৭

শেরজা তপন বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

১২ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:১৬

রবিন.হুড বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

২| ১৩ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পোষ্ট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.