নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জানালার পর্দার ফাঁক দিয়ে আলো প্রবেশ করায় সকাল ছয়টার দিকে ঘুম ভেঙ্গে গেলো দীপাবলীর। ঠাকুর মা তখন ঘুমে মশগুল। ঘুমোবে না কেন তার তো এখন অফুরন্ত সময়। জেগে থাকলে সময় কাটতেই চায় না। সারাজীবন কষ্ট করে নাতির বদৌলতে জীবনের শেষ বয়সে একটুখানী সুখের নাগাল পেলেন অশীতিপর বৃদ্ধা। বিছানা ছেড়ে বারান্দায় দাড়িয়ে কিছু সময় নির্মল হাওয়ায় দাড়িয়ে রইলো। সকাল বেলার হাওয়া যেন হাজার টাকার দাওয়া। অতপর হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে ঘরদুয়ার পরিস্কার করে সকালের নাস্তা তৈরিতে মনোযোগ দিলো দীপাবলী।
সবজি রুটিই সকালের জন্য উত্তম রাস্তা। সাথে ডিম মামলেট হলে তো কথাই নাই। ঢেঁড়শ ভাজি ও কিছু রুটি বানিয়ে খাবার টেবিলে রেখে গোছল করতে বাথরুমে গেলে দীপাবলী। গোছল শেষ করে দেখে ঠাকুর মা ঘুম থেকে উঠেছেন।
ঠাকুর মা হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেস হয়ে নাস্তার টেবিলে আস একসঙ্গে নাস্তা করি।
তুমি শুরু করো আমি আসছি।
নাস্তা করতে করতে ঠাকুর মা জিজ্ঞেস করে, অনন্ত কি গতকাল রাতেই চট্টগ্রাম চলে গেছে? যদি ঢাকায় থাকে তবে অফিসে গিয়ে ফোন করে বাসায় আসতে বলবি।
তার বাসায় আসার কি দরকার?
তোর দরকার না থাকতে পারে আমার আছে। নাত জামাই ঢাকায় আসবে আর আমার সাথে দেখা করে যাবে না তা কি হয়?
ইশ! নিজের জামাইকে দূর দূর করে তাড়িয়ে এখন নাত জামাইকে বাসায় দাওয়াত করতে চাও?
অতো কথা বলিশ না। তোর দাদা মশাইয়ের একটা ভুলের কারনে আমি একটা ভুল করে বিধবা সেজে সারা জীবন পস্তাইলাম। আমি চাই না তুই ভুল আমার মতো একাকিত্বের কষ্ট নিয়ে সোনার জীবন অঙ্গার করে দে।
আমি একা কোথায় তুমি আছো না?
আমি আর কতোদিন? তারপর একাকীত্বের ভর বইতে পারবি?
দীপাবলী কথা না বাড়িয়ে নাস্তা শেষ করে অফিসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ঠাকুর মা আমি যাচ্ছি তুমি সাবধানে থেকো আর কাজের বুয়া এলে তাকে ঘরটা মুছতে এবং নোংড়া কাপরগুলো ধুতে বলবে।
আচ্ছ ঠিক আছে, আমার কথা মনে রাখিস, অফিসে পৌছে ফোন করে অনন্ত এর খোজ নিস।
আচ্ছা দেখা যাক।
কিছুটা পায়ে হেটে বাসস্ট্যান্ডে পৌছালো দীপাবলী। অফিসগামী বাসে উঠে নির্ধারিত ছিটে বসে ভাবতে লাগলো, এইভাবে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ ও অফিসের ব্যস্তার কারনে ব্যক্তিগত জীবনে একাকী থাকার স্বার্থকতা কতটুকু।
চলবে.....।
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২৬
রবিন.হুড বলেছেন: আমাদের চাওয়া পাওয়ার ব্যবধান সম্পর্কে জানতে হবে। জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য স্থীর করে পথ চলতে হবে। সাময়িক সুবিধাকে গুরুত্ব না দিয়ে স্থায়ী সুবিধার কথা ভাবতে হবে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৭
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: কিছু পাওয়ার জন্য কিছু হারাতে হয় তথা কোরবানি করতে হয়।
পারিবারিক জীবনে কিছুটা অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা আনয়ন এবং কখনো কখনো ব্যক্তিগত স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময়ের অনেকটা ত্যাগ করতে হয় - যে সময়টা জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়।
আর এতসব কিছুর বিনিময়ে যা পাওয়া যায়, অবসর সময়ে তথা একটা সময় পরে এসব কিছু মূল্যহীন বলেই মনে সেই সময়ের তুলনায় যার বিনিময়ে এসব অর্জিত হয়েছে।
আবার পাশাপাশি ছোট-খাট মান-অভিমানের কারনে কিংবা ভূল বুঝা-বুঝির কারনেও জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় (যৌবন) থেকে অনেকটা সময় হারিয়ে যায় - যা আসলে পরে উপলব্ধিতে আসে যে খুবই সাধারন বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করে নিজের জীবনের কতটা ক্ষতি নিজেই করেছে।