নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গতকাল দীপাবলীর উপর শারিরীক ও মানসিক যে চাপ গেছে তাতে করে সে এখনো ক্লান্ত। ঠাকুর মার কথা ভেবে ভেবে সারারাত ঘুমাতে পারেনি। যে ঠাকুর মা ছোট বেলা থেকেই তাকে আগলে রেখেছিলে সে একা করে দিয়ে চলে গেলো পরপারে। এটাই জীবনের নিয়ম। জীবনের নিয়মে একাকিত্ব দূর করতে যার সাথে জুটিবদ্ধ হলো সে ও এখন অনেক দূরে। শুধু শহরের দূরত্ব নয় মনের দূরত্বও অনেক। সকলের একই কথা দূরত্ব কমিয়ে কাছে থাকাই জীবনের স্বার্থকতা। কালজয়ী কথা সাহিত্যিক শরৎ চন্দ্র চট্টপাধ্যায় গভীর জীবন বোধ থেকে বলেছেন, “ বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না দূরেও ঠেলে দেয়”। আবার জীবন যুদ্ধের অভিজ্ঞ সৈনিকেরা বলে থাকেন, ‘‘ মাঝে মাঝে প্রিয়জনকে ছেড়ে দূরে থাকলে ভেঙ্গে যাওয়া সম্পর্কের উন্নয়ন ঘট”। তবে যে শিক্ষা মানুষের জীবনকে স্বার্থক না করে অহংকার ও স্বেচ্চাচারিতার মাধ্যমে কাছের মানুষ থেকে দূরে রাখে তাকে সুশিক্ষা বলার যুক্তি নাই। নারীদের চাকরি তাদের স্বাবলম্বী করার থেকে সমাজিক সম্পর্ক ছিন্ন করে একাকীত্বকে উৎসাহিত করে, যার করুণ পরিনতি দেখা দেয় বৃদ্ধাবয়সে।
অফিসে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছে দীপাবলী দুদিন বাসায় থাকবে। মানসিভাবে সুস্থ্য হতে একটু বিশ্রামের প্রয়োজন আছে।
শরীর দূর্বল হলেও খাবার খেতে মন চাইছিলো না তাই দোতলার বউদি এসে কিছু খাবার খাইয়ে দিয়েছে। এখন বিছানায় শুয়ে ভাবছে, একাকী থাকা যে কতো কঠিন তা একাকী না হলে অনুধাবন করা যায় না। গুণীজনে বলে গেছেন,“ অসৎ সঙ্গীর চেয়ে একাকীত্ব ভালো আর একাকীত্বের চেয়ে সৎ সঙ্গী ভালো”। অনন্ত তো একজন সৎ সঙ্গী। সে আমার একাকীত্ব দূর করতে ভালোবেসে কাছে এসেছিলো। এই সময় আমার পাশে থাকলে আমার বোঝাটা হালকা হয়ে যেত। ছোট ছোট কিছু ভুল বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে অভিমান করে চাকরিকে গুরুত্ব দিয়ে অনন্তকে দূরে ঠেলে ভুল করেছি।
ঠাকুর মার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ছোট বেলার বন্ধু খোকন ছুটে এসেছে দীপাবলীর বাসায়। ট্যাক্সী চালক খোকন যাত্রী নিয়ে চা বাগানে গিয়েছিলো সেখান থেকে ঠাকুর মার পরোলোক গমনের খবর জানতে পেরে সকালের ট্রেনে ছুটে আসে বন্ধুর বিপদে পাশে দাড়াতে। বারান্দায় উদাস মনে বসে আছে দীপাবলী। তাই দেখে খোকন বলে উঠলো
একাকী এই বৈরাজ্ঞ সাধনের দরকার কি আছে?
আমাকে কি করতে বলিস?
তুই অনন্তে এর কাছে ফিরে যা। সে তোর জীবনসঙ্গী, ভবনদী পার করার জীবন তরী।
তা কি করে হয়? আমি তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি । তার ডাকে সাড়া না দিয়ে ক্যারিয়ারের পিছনে ছুটে চলছি।
সময় গেলে সাধন হবে না। সময় থাকতে সংসারী হও।
চাকরি আর সংসার এক সাথে করা খুব চ্যালেঞ্জিং।
শোন দীপা যে রাধে সে চুলও বাধে।
সংসারের টানাপোড়ন আর ভালো লাগে না।
সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে, এ কথা সত্যি করবি তোর জীবনে।
আমার কথা রাখ, তোর মা ও বৌ ভাল আছে?
হ্যা সবাই ভালো আছে, বউয়ের ভালোবাসায় মা অনেক পাল্টে গিয়েছে। আমার কথা বাদ দে। তুই এখন কি করবি বল?
আজ কাল দুদিন অফিসে যাবো না। তোর সাথে বসে ছোট বেলার গল্প করবো।
ঠিক আছে আমার সাথে না হয় ছোট বেলার গল্প করলি কিন্তু বড় বেলার গল্প করতে তো অনন্ত এর কাছে যাওয়া উচিৎ।
তোর প্রস্তাবটা ভেবে দেখবো
বাঙালী এখন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। যৌথ পরিবার ভেঙে একক পরিবার গঠনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দূর্বার গতিতে। তাইতো প্রয়োজনে কেউ কাউকে পাশে পাচ্ছে না। পশ্চিমা বিশ্ব যেখানে বাঙালীর পারিবারিক বন্ধনের প্রশংসায় ব্যস্ত তখন বঙ্গ সন্তানেরা পশ্চিমার খারাপ নিদর্শন গ্রহণ করে ডিভোর্স দিয়ে একা একা থাকতে পছন্দ করা শুরু করছে।
বাঙালীর পারিবারিক ও সামাজিক সম্প্রীতি দিন দিন কমে যাচ্ছে। এখন একমাত্র বিয়ে-শাদী ও কারো মৃত্যু ছাড়া আত্মীয় স্বজনের দেখা পাওয়া যায় না। দীপবলীর আত্মীয়-স্বজন নেই বললেই চলে। কয়েকজন সহপাঠী, হোস্টেল মেট ও অফিস কলিগ এসে সান্তনা দিয়ে গেলে। সকল সান্তনা বাক্যের মধ্যে একটা কথা সবাই বলার চেষ্টা করেছে যে, একা না থেকে অনন্ত এর নিকট গিয়ে থাকলে মঙ্গল হবে।
দীপাবলী Click This Link
দীপাবলী-০১ Click This Link
দীপাবলী-০২ Click This Link
দীপাবলী-০৩ Click This Link
দীপাবলী-০৪ Click This Link
দীপাবলী-০৫ Click This Link
২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭
রবিন.হুড বলেছেন: পড়ে মতামত দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:২৫
এসো চিন্তা করি বলেছেন: ভালো হয়েছে
আমার লেখা পড়ার আমন্ত্রণ রইলো ☺️