![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্মৃতি রোমান্থন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। কিছু স্মৃতি হাসায় আবার কিছু স্মৃতি স্মরণ করে মানুষ নিরবে কাঁদে। প্রত্যেকের জীবনের কিছু ঘটনা মনে রাখা হয় যাকে স্মৃতি বলে থাকি। অন্যভাবে বলা যায় মস্তিষ্কে তথ্য ধারণ করে রাখার প্রক্রিয়া কিংবা মস্তিষ্কে ধারণকৃত তথ্যকে স্মৃতি বলে। এই প্রক্রিয়ায় প্রথমে তথ্য আহরণ করে মস্তিষ্কে জমা করা হয় এবং দরকার অনুযায়ী সেই তথ্য আবার ভান্ডার থেকে খুঁজে নিয়ে আসা হয়। জমাকৃত তথ্য হারিয়ে গেলে কিংবা সময়মত খুঁজে পাওয়া না গেলে তা দূর্বল স্মৃতিশক্তির লক্ষণ। অত্যধিক মানসিক চাপের কারণে স্মৃতি-দৌর্বল্য দেখা দেয়।
স্মৃতির প্রকারভেদঃ
• সংবেদী স্মৃতি
• স্বল্প মেয়াদী স্মৃতি
• দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতি
সংবেদী স্মৃতিঃ
কয়েক সেকেন্ড বা তারও কম সময় যে স্মৃতি স্থায়ী হয় তাই সংবেদী স্মৃতি । একটি পাত্রের দিকে এক পলক তাকানোর ফলে পাত্রটির আকার কেমন ছিল, বর্ণ কি ছিল ইত্যাদি যে সব তথ্য মস্তিস্কে সংরক্ষিত হয় তা সংবেদী স্মৃতির উদাহরণ । অথবা একসারি শব্দ এক সেকন্ডের পর্যবেক্ষণে পর যতগুলো মনে রাখা যাই তাও সংবেদী স্মৃতির উদাহরণ । এটি একটি স্বতঃস্পূর্ত প্রক্রিয়া । অধিকাংশ সময়ই পর্যবেক্ষক যা দেখে সব মনে রাখতে পারে না।
স্বল্প মেয়াদী স্মৃতিঃ স্বল্প মেয়াদে যে স্মৃতি মস্তিষ্ক ধারন করে তাই স্বল্প মেয়াদী স্মৃতি। প্রয়োজন অনুসারে মনের গতিপ্রকৃতি বা মস্তিস্কের নির্দেশনা মোতাবেক স্মৃতি শক্তির মেয়াদ নির্ধারিত হয়। আবার অসুস্থতাজনিত কারনে কারও স্বল্প মেয়াদী স্মৃতি হতে পারে।
দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতিঃ যে স্মৃতি আজীবন মনে থাকে তাকে দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতি বলে। যে ঘটনা মনে দাগা দেয় বা যে বিষয় আমাদের ভবিষ্যতে প্রয়োজন হতে পারে সে বিষয়টি দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতি হিসেবে আমাদের মস্তিস্কে সংরক্ষিত হয়।
সকল মানুষের স্মৃতি শক্তি এক রকম হয় না। আবার সব বয়সের স্মৃতি এক রকমভাবে সংরক্ষণ হয় না। আমি ছোট্ট বেলা থেকে মুখস্ত বিদ্যাকে না বলার কারনে এখন অনেক পড়া মুখস্ত করতে পারি না বা মনে রাখতে পারি না। তবে দেখে শুনে বুঝে পড়ার কারনে শিক্ষা গ্রহনে কোন সমস্যা হয়নি। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এর মতো একবার পড়ে মুখস্থ করতে না পারলেও বুঝে পড়লে হ্রদয়ে ধারন করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি।
শৈশব স্মৃতি সব সময়ই মধুর হয়। কিন্তু সবাই তা মনে রাখতে পারে না। আমার জন্ম ১৯৮২ সালের শেষের দিকে হলেও ১৯৮৭ সালের ঘটনা স্মরনে আছে।
স্মৃতি-১
মায়ের কোলে চড়ে তাঁর মামার বাড়িতে গিয়ে দেখি লন্ডন প্রবাসী মামা বাড়িতে বিল্ডিং দিচ্ছে যার কারনে পুরাতন ঘর এর অংশবিশেষ ভাঙ্গা হয়েছে এবং নতুন বিল্ডিং এর জন্য গর্ত করে ভিত্তি ঢালাই দিচ্ছে। বড় বড় চতুর্ভূজ আকৃতির গর্ত করে লোহার খাচা বানিয়ে ইটের খোয়া, সিমেন্ট ও বালু মিশিয়ে ঢালাই দিয়ে পিলার বানানোর দৃশ্যটা আমার কাছে নতুন তাই স্মৃতিপটে ভেসে আছে। তবে সালটা মনে থাকার কথা না। পরবর্তীতে বিল্ডিং এর ভিত্তি/নেম প্রেট দেখে ১৯৮৭ সালের ঘটনা বলে নিশ্চিত হয়েছি।
স্মৃতি-২
১৯৮৮ সালের বন্যার স্মৃতি মানসপটে এখনো ভেসে আসে। আমাদের গ্রামের বাড়িতে কাঠের দোতলা বাড়ি ছিলো যার নিচ তলা ১৯৮৮ সালের বন্যায় ডুবে গিয়েছিলো ফলে আমরা দোতলায় অবস্থান করেছিলাম। বাড়ির উঠান ডুবে ঘরের নিচতলা ডুবে যাওয়া ঘরের ভিতরে মাছ, সাপ ও ব্যাঙ এর যাতায়াত মনে পড়ে। একদিন ডাকপিয়ন নৌকা দিয়ে এসে বড় মামার পাঠানো মানি অর্ডার দিয়ে যায় যা দোতলার বারান্দা থেকে গ্রহণ করা হয়।
স্মৃতি-৩
বড় মামা তখন বাকেরগঞ্জ থানার ওসি। মামার বাসায় বেড়াতে গিয়েছি। মামার বাসা নদীর পারে।সেই নদীতে বোটে চড়েছি। একদিন সকাল বেলা দেখলাম বড় মাছ বরফের মধ্যে করে কেউ দিয়ে গেছে। আর একদিন রাতের বেলা বাসার পাশের রাস্তা দিয়ে মশাল মিছিল যাচ্ছে সরকার বিরোধী শ্লোগান দিতে দিতে। স্মৃতিপটের এই ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখলাম ১৯৯০ সালে সৈরাচার বিরোধী সারাদেশ জুড়ে যে গণ আন্দোলন হয়েছিল তার অংশ হিসেবে বরিশালে ঐ মশাল মিছিল হয়েছিল।
স্মৃতি-৪
আমার স্পষ্টভাবে মনে আছে আমি শৈশবে একবার হ্যা/না ভোট দিয়েছিলাম। এতো ছোট বেলায় কবে কিভাবে ভোট দিয়েছিলাম তার বিশ্লেষণ করে দেখি যে তখন ভোট গ্রহনের দায়িত্বে ছিলেন আমার ছোট চাচা তাই অন্যদের সাথে ভোট কেন্দ্রে যাই এবং প্রতিদ্বন্দিতামূলক ভোট না হওয়ায় আইন শিথিল থাকার কারনে আমি ভোট দেওয়ার সুযোগ পাই।
বাংলাদেশে ৩ বার গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ২ বার অনুষ্ঠিত হয় প্রশাসনিক গণভোট এবং ১ বার অনুষ্ঠিত হয় সাংবিধানিক গণভোট।
প্রথম গণভোট প্রশাসনিক গণভোট হয় ১৯৭৭ সালে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসন কার্যের বৈধতা দান। ফলাফল ৯৮.৮০% 'হ্যাঁ' ভোট। দ্বিতীয় গণভোট প্রশাসনিক গণভোট ১৯৮৫ সালে । হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সমর্থন যাচাইয়ের লক্ষ্যে হ্যাঁ-না ভোট। ফলাফল ৯৪.১৪% হ্যাঁ ভোট। তৃতীয় গণভোট সাংবিধানিক গণভোট অনুষ্ঠিত হয়- ১৯৯১ সালে। সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী আইন প্রস্তাব। ফলাফল ৮৪.৩৮% হ্যাঁ ভোট।
আমি ১৯৯১ সালে তৃতীয় গণভোটে হ্যা ভোট দিয়েছিলাম বলে মনে হচ্ছে।
২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৮
শাওন আহমাদ বলেছেন: আপনার স্মৃতিতে চোখ বুলালাম তবে এটা আমারও প্রশ্ন, আপনার ছোট চাচা নাগরিক দায়িত্ব ও আপনার শৈশবের ভোট দেয়া নিয়ে, আপনার বিবেক কি বলছে?
৩| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৫
ধুলোপরা চিঠি বলেছেন:
এই জাতির মানুষ কি এজন্য প্রাণ দিয়ে এই দেশ এনেছিলেন? আপনার ছোট চাচা ও আপনি অপরাধ করেছিলেন, আপনাদের মতো লোকজন এই দেশকে এখানে এনেছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০১
ধুলোপরা চিঠি বলেছেন:
এখন, আপনার ছোট চাচা নাগরিক দায়িত্ব ও আপনার শৈশবের ভোট দেয়া নিয়ে, আপনার বিবেক কি বলছে?