![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শুনতে অবিশ্বাস্য হলে ঘটনা সত্য সাক্ষী দূর্বল নয়। বাংলাদেশের জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ফেরী ঘাট থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের অপর প্রান্ত গাইবান্ধার বালাশী ঘাটে ফেরীতে করে ট্রেন পারাপার করা হতো।ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে সর্বশেষ ২০১৫ সাল পর্যন্ত ট্রেনের ফেরী চলাচল করলেও নদীর নাব্যতার সংকটে বর্তমানে ফুটানী বাজার ফেরী ঘাট নামে যাত্রী পারাপার চলছে। যমুনা সেতু চালু হওয়ার পূর্বে উত্তর বঙ্গের সাথে প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম ছিলো বাহাদুরাবাদ-বালাসী ফেরী ঘাট। কিছু ট্রেন সরারসরি ফেরীতে করে নদী পার হতো। আবার কিছু ট্রেনের যাত্রী স্ট্রীমারে নদী পার হয়ে অন্য ট্রেনে গন্তব্যে পৌছাতো। যমুনা সেতু চালু হওয়ার পর কিছু যাত্রীবাহী ট্রেন যমুনা সেতুর উপর দিয়ে উত্তর বঙ্গে প্রবেশ করতো এবং মালবাহী ভারী ট্রেন বাহাদুরাবাদঘাট দিয়ে ফেরীতে পার হতো।
১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের সময় বিদ্রোহীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে শেষ বিদ্রোহী নেতা সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের নামানুসারে এই এলাকার নামকরণ করা হয় বাহাদুরাবাদ। শুধুমাত্র দেশেই নয়, একসময় এর পরিচিতি ছিল বিশ্বজুড়েই। বাহাদুরাবাদের বিশ্বখ্যাতি এনে দিয়েছিল একমাত্র এই ফেরি ঘাটটিই।
গাইবান্ধার প্রান্তে ঘাটের স্থান পরিবর্তন হয়েছিল বেশ কয়েকবার নদীর নাব্যতার কারণে। কিন্তু বাহাদুরাবাদ ঘাটে এ সমস্যা ছিল না। নাব্যতার সংকট দেখা দিলে পন্টুন সরিয়ে কার্যক্রম ঠিক রাখা যেত ঘাটের। এতে করে রেললাইনের কোন পরিবর্তন করা লাগতো না। অপরপ্রান্তের গাইবান্ধার ভরতখালি কঞ্চিপাড়া রেলওয়ে স্টেশন হারিয়ে গেলেও রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ স্টেশনটি এখনো ঐতিহ্য বহন করছে কালের সাক্ষী হয়ে।
বাদুরাবাদ ঘাটকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল ব্যবসা-বাণিজ্য,কর্মসংস্থান হয়েছিল কয়েক হাজার মানুষের, রেলওয়ের স্টীমার ঘাটসহ রেললাইনের দুই পাশে দিয়ে ছিল দোকানপাট। ভাতের হোটেল থেকে শুরু করে, ফলমূলের দোকান, কনফেকশনারী, কী ছিল না বাহাদুরাবাদ ঘাটে? তখনকার ভাতের হোটেলগুলি বেশ সমাদৃত ছিল।
আন্তঃনগর ট্রেনের মধ্যে তিস্তা আর একতার যা বর্তমান ব্রহ্মপুত্র নামে চলে এই রুটে, ফেরী সংযোগ ছিল এই দুটি ট্রেনের জন্য, ট্রেন দুটি প্রথমের দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে এসে, যাত্রা বিরতিহীন ভাবে এসে থামতো বাহাদুরাবাদ ফেরিঘাটে, সে কারণেই হয়তো দেশের উত্তরে জেলার মানুষের মাঝে জনপ্রিয় ছিলো এই রাস্তাটি।
১৯৯৮ সালে যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হলে কালক্রমে এই রুটের চাহিদা কমতে শুরু করে উত্তরাঞ্চলের মানুষের কাছে। ট্রেন থেকে ফেরি, ফেরি থেকে ট্রেন এভাবে পরিবর্তন করে গন্তব্যে যাওয়ার চেয়ে সেতু রোডে সরাসরি গন্তব্যে যাওয়া স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে উত্তর অঞ্চলের মানুষ। এর প্রভাব পড়তে শুরু করে বাহাদুরাবাদ ফেরিঘাটে। ২০০৩ সালে সেতুর উপর দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হলে কালপরিক্রমায় যাত্রী ফেরী সার্ভিস পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় বাহাদুরাবাদ ঘাটে। এরপর আস্তে আস্তে ভাঙতে থাকে যমুনার বাম তীর, একসময় নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায় ঐতিহ্যবাহী বাহাদুরাবাদ ফেরিঘাট। বেকার হয়ে পড়ে ফেরিঘাটে সকল প্রকার ব্যবসায়ী সহ শ্রমিকেরা, আজও তারা খুঁজে ফেরে সেই ঐতিহ্যবাহী বাহাদুরাবাদ ফেরিঘাট।
১৫ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ২:২১
রবিন.হুড বলেছেন: আমি ঐতিহ্যবাহী বাহাদুরাবাদ ঘাট দেখতে গিয়েছিলাম ১০ জুন। এখন আর ঘাটের জৌলুস নাই। ট্রেন পারাপারের স্মৃতি চিহ্নও নাই।
২| ১৫ ই জুন, ২০২৫ রাত ৮:২১
মেহবুবা বলেছেন: অনেক অনেকদিন আগের কথা, রেলপথে চলাচলে একেবারেই অনভিজ্ঞ এই আমাকে ফেরীতে ট্রেন পার করবার কথা বলবার জন্য অন্যদের হাসিমুখ দেখতে হয়েছিল।
৩| ১৫ ই জুন, ২০২৫ রাত ৮:৪২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমি দুইটা বড় নৌকার উপরে বাস পাড় করতে দেখেছি, বরিশাল অঞ্চলে। ইহার কোন ইঞ্জিন নাই। মানুষ দড়ি ধরে টেনে এই ধরণের ফেরিকে এক পাড় থেকে আরেক পাড়ে নেয়। ফেরীতে ট্রেন পাড় করার কথা আমি আমার মাতার কাছে শুনিয়াছিলাম। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ হয় নাই।
৪| ১৫ ই জুন, ২০২৫ রাত ৮:৫৬
কামাল১৮ বলেছেন: ১৯৬৬ তে একবার পার হয়েছিলাম এই ফেরি।
৫| ১৬ ই জুন, ২০২৫ সকাল ১১:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: বিষয়টা আমি জানি।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:২৪
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: হ্যাঁ আমি নিজ চক্ষে দেখেছি।