নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Musafir

মুসাফির রকস

সহজ এবং সরল কথায় চলােফরা করেত ভালবািস। িচন্তার রােজ্য িবচরন করা আমার স্বভাবজাত ৈবিিশষ্ট্য

মুসাফির রকস › বিস্তারিত পোস্টঃ

খালেদাকে ধন্যবাদ হাসিনাকে না... (সংগৃহীত লেখা)

২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৪১

খালেদাকে ধন্যবাদ হাসিনাকে না...

খালেদ এস সোহেল এমবিএ



স্বাধীনতার পর থেকে প্রাপ্য অনেক কিছুর বদলে শুধু প্রতিহিংসা, জিঘাংসা, কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি, প্রতিপক্ষকে ছোট করতে গিয়ে নিজেকে তো বটেই, জাতিকেও ছোট করার অসংখ্য নজির দেখেছে বাংলাদেশ৷ খুব বড় বড় অর্জনও গৌণ হয়ে গেছে তাতে৷ বাঙালির ভাষার অহঙ্কারের ঐতিহাসিক তাৎপর্য, বহির্বিশ্ব তাই খুব কমই জানে৷ নোবেল কিংবা গিনেস বুকের স্বীকৃতি প্রসঙ্গ জোর করে না তুললে বিদেশিদের বোঝানো যায়না প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর রাজনৈতিক হানাহানির বাইরে ভালো অনেক কিছুই আছে বাংলাদেশের ৷ অথচ সুস্থ রাজনীতি পথ না হারালে দীর্ঘ সংগ্রামের সুফল হিসেবে পাওয়া এ দেশ আজ কোথায় থাকতো! অনেকের মতে আমাদের দেশের বড় রাজনৈতিক দু’দলের সম্পর্ককে ‘বিরোধিতা’ না বলে ‘শত্রুতা’ বললে বোধহয় সত্যের অপলাপই হয়৷দীর্ঘ হানাহানির মাঝে একটা দুটো সুস্থ, স্বাভাবিক আচরণ যে দেখা যায়নি তা নয়, তবে সেগুলো অনুল্লেখ্য হয়ে গেছে হানাহানির পৌনঃপুনিকতায় ফেরায়৷তবে যাই হোক, খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ।

২১ মার্চ দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বঙ্গভবনে যান। শোক বইয়ের সামনে রাখা রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ছবির দিকে তাকিয়ে ছিলেন কিছুক্ষণ। এ সময় তিনি খেয়াল করেন রেওয়াজ মোতাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ছবিতে কোন কালো ব্যাজ নেই। বিরোধী দলীয় নেত্রী বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তৎক্ষণাত রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবকে ডেকে একটি কালোব্যাজ লাগিয়ে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। এ ঘটনায় ব্যাথিত হন তিনি। পরে বঙ্গভবনে রাখা শোক বইতে স্বাক্ষর করেন। স্বাক্ষর শেষে প্রয়াত রাষ্ট্রপতির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। পরে রাষ্ট্রপতির সন্তানদের ডেকে সমদেনা জানান ও তাদেও খোঁজ খবর নেন।

বিরোধীদলীয় নেত্রী সরকারের ঘোষণা করা তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকেও তিন দিন শোক পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ২২ ও ২৩ মার্চ নিজের পূর্ব নির্ধারিত বগুড়া ও জয়পুরহাট সফরও একদিন করে পিছিয়েছেন খালেদা জিয়া৷

অনেক দিন পর এক শোকাবহ পরিবেশে পাশাপাশি হয়েছিলেন দেশের দুই নেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া। অনেকটা কাছাকাছি দূরত্বে গেলেও দেখা কিংবা কথা হয়নি তাদের। বঙ্গভবনে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া। বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতির কফিনে তার ফুল দেয়ার সময় কাছাকাছি দূরত্বে অবস্থান করছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি শ্রদ্ধা জানাতে আসা কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সেই সময়ে সে সুযোগটি গ্রহণ করতে পারতেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যেহেতু তার চাচ্চু জিল্লুর রহমান, তার রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এবং তার সরকারের বঙগভবনে গিয়েছিলেন বিরোধী দলীয় নেত্রী।

গত বছরের ২১শে নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে তারা কাছাকাছি হয়েছিলেন। কিন্তু দু’জনের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়নি। সর্বশেষ ২০০৯ সালে সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানেই দেখা হয় দুই নেত্রীর। তারা সেখানে কুশল বিনিময়ও করেন।

সংবিধানের ৫০ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের মেয়াদ হবে আগামী পাঁচ বছর। এক্ষেত্রে সামনের দিনগুলোতে রাষ্ট্রক্ষমতায় পরিবর্তন হলেও বঙ্গভবনে কোন পরিবর্তন হবে না। সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টকে অপসারণের একমাত্র পথ অভিশংসন। কিন্তু তা অত্যন্ত জটিল পথ। প্রথমত, প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করতে হলে দুই-তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্যের ভোট প্রয়োজন হবে। দ্বিতীয়ত, প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘন বা গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হতে হবে...। আওয়ামী লীগ যাকে মনোনীত করবে তিনিই হবেন বাংলাদেশের বিংশতিতম রাষ্ট্রপতি।

কোন কোন দুর্ঘটনা ও দুর্যোগের মধ্যে সম্ভাবনার একটা দিকও থাকে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরাজমান সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তেমনি একটি সম্ভাবনার দিক তৈরি হয়েছে কিনা সেটা ভেবে দেখা যেতে পারে। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তার অবসানের জন্য কেউ কেউ রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক/অন্তর্র্বতী সরকার গঠনের কথা প্রস্তাব আকারে তুলেছিলেন। এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একটা সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে সেই সম্ভাবনার দরজা খুলে দিতে পারে।

আওয়ামী শিবিরে আপাতত একটা স্বস্তি বইছে যেন। তারা ভাবছে, নতুন রাষ্ট্রপতি পাঁচ বছর থাকতে পারবেন। এই সুযোগ অলৌকিক।

বাংলাদেশ হয়তো কোনো ভোটাভুটি ছাড়াই একাদিক্রমে চতুর্থ রাষ্ট্রপতি পেতে চলেছে। বি. চৌধুরী, ইয়াজউদ্দিন ও জিল্লুর রহমানের পরে নতুন একজন। রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ দলীয় সরকারের মেয়াদের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এটা প্রমাণ করে যে সংবিধান একজন নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতির আসনে দেখতে চেয়েছে। একান্ত দলীয় ও ব্যক্তিগত আনুগত্যের বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি নিয়োগ অবশ্যই সংবিধানের চেতনাবিরুদ্ধ। আগামী নির্বাচনে বিরোধী দল জয়ী হলে তারা সরকার গঠন করবে। রাষ্ট্রপতি নিয়োগের সুযোগ পাবে না। কিন্তু বাস্তবে রাষ্ট্রপতি প্রতিমুহূর্তে হোঁচট খেতে পারেন। তিনি লড়তে গেলে তাঁর সামনে ঝুলবে অভিশংসনের খড়্গ।

দেশের চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা, জনগনের গভীর উদ্বেগ ও উত্কণ্ঠার এবং এই অসহিষ্ণু সময়ে, রাজনৈতিক সম্প্রীতি ও রাজনৈতিক শিষ্টাচারের একটু পরশও আমরা পেলাম শুধুমাত্র বিএনপি’র সুন্দর ও যথোপযুক্ত রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। এ জন্য বিএনপিকে ধন্যবাদ। আশা করেছিলাম এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ শুভবুদ্ধির পরিচয় দিবে। কিন্ত আগের মতই অবস্তা দেখাগেল। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে বিরাট সুযোগ ছিল। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারতেন, এতে জাতি উপকৃত হতে পারত। সে কারণে আপনাকে ধন্যবাদ দিতে পারলাম না।

বিরোধিতা ভুলে দেশে বর্তমানে যে সংঘর্ষের রাজনীতি বিরাজ করছে তাতে কোন প্রতিষ্ঠান বা কোন ব্যক্তিকে বাইরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সংঘর্ষের রাজনীতিতে এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হবে- এটাই স্বাভাবিক। রাজনীতিবিদরাই এ সমস্যার সৃষ্টি করেছেন, একমাত্র তারাই এ পরিস্থিতির সমাধান করতে পারেন।

বাইরের কোন শক্তি অথবা দেশের ভেতরের রাজনীতি বহির্ভূত কোন শক্তি এ সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। শোকে সমবেদনা জানানোর এই প্রয়াস নিঃসন্দেহে ধন্যবাদার্হ৷ জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় গুলোতে অন্তত সরকার এবং বিরোধীদলের প্রত্যাশিত ঐক্যের প্রত্যাসায়।



লেখক রাজনৈতিক

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.