![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি, তাই যাহা আসে কই মুখ...।
মুল লেখকঃ কমান্ডার হাসান জামান খান
FELIX HOUPHOUET BOIGNY INTL, আবিদজান এয়ারপোর্ট। ২৫ মে ২০১১, আফ্রিকান এয়ারলাইন্স যোগে আফ্রিকার মাটিতে প্রথম অবতরণ । আকাশ থেকে দৃশ্য দেখে ঠিক আনুমান করতে পারছিলাম না যে দেশটি কেমন হতে পারে? যা হোক প্লেন থেকে বের হয়ে কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশন এর পর্ব সেরে একটু এগুতেই Health Card প্রদর্শন করতে হল । তারপর অনুমতি পাওয়া গেলো সামনের দিকে যাবার। বেশ ক্লান্ত ছিলাম। দশ ঘণ্টার আকাশ পথ পাড়ি। তবে যাত্রাপথে দুবাই ও আদ্দিসআবাবা এ দুটি দেশে কিছু সময়ের বিরতি ছিল । তাই কিছুটা প্রাণশক্তি নিয়ে আবিদজান পদার্পণ। যা হোক, বেশ গর্বের সাথে এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে চারদিক তাকিয়ে দেখছিলাম। ভিন্ন পরিবেশ , ভিন্ন মানুষ আর ভিন্ন ভাষা সবকিছু মিলে কিছু সময় এলোমেলো লাগছিলো। বিদেশের মাটিতে এটাই তো স্বাভাবিক। এ নিয়ে আবার ভাবার কি আছে ? অপেক্ষা করছিলাম বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের জন্য। আমাকে স্বাগত জানাতে আসার কথা। এমনি মুহূর্তে আমাকে দাড়িয়ে দেখতে পেয়ে একজন দুজন করে আফ্রিকান কাছে এসে ফরাসী ভাষায় প্রশ্ন করতে লাগলো, কোন দেশের নাগরিক? কোথায় যাবো? গাড়ী চাই কি না? সেল ফোনের কার্ড দরকার আছে কি? ইত্যাদি, ইত্যাদি। ভাগ্যিস দেশ ত্যাগ করার আগে চট্টগ্রামে আলিয়াস ফ্রসেইসে ফরাসী ভাষার উপর প্রাথমিক জ্ঞান নিয়েছিলাম। কিন্তু এটা যে যথেষ্ট ছিল না তা ওদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে খুব ভালোভাবেই উপলব্দি করলাম। এমনি সময় চোখে পড়লো বাংলাদেশের তিন জন কর্মকর্তা পোশাক পরিহিত অবস্থায় একটি সাদা রঙের বিলাসী গাড়ী নিয়ে এয়ারপোর্টের দিকে এগিয়ে আসছে। কাছে আসতেই দেখতে পেলাম নৌবাহিনীর অফিসার লেঃ কমান্ডার নাজমুল সাথে সেনাবাহিনীর মেজর মুজিব এবং মেজর ফারুক । ওদের দেখে স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেললাম। স্বাগত জানালো হাসিমুখে। তারপর বাসস্থানের উদ্দেশে যাত্রা । গাড়ির সামনের সিটে বসে উপভোগ করছিলাম দেশটির সৌন্দর্য । আমি একেবারে অবাক। বাংলাদেশের প্রকৃতির রূপের সাথে আফ্রিকার কি যে অপূর্ব মিল তা নিজ চোখে না দেখলে অনুমান করা দায় । রাস্তার নেটওয়ার্ক আর গাড়ী চলার শৃঙ্খলা দেখে মনে হলো আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলাম অথচ গাড়ীর হর্ন শুনতে পেলাম না ! গাড়ীগুলো নিজের লেন অতিক্রম করছে না। কোনো পথযাত্রী এলোপাথাড়িভাবে রাস্তা পাড় হচ্ছে না । মনে মনে ভাবছিলাম কি ভেবে আসা আর কি দেখছি। নিজ চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। এক কথায় অপূর্ব। এক মাস পূর্বে যে এখানে যুদ্ধ হয়েছিল এ কথা বিশ্বাস করা কঠিন। বার বার প্রশ্ন জাগছিল এখানে কেনো সহিংসতা?
©somewhere in net ltd.