নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

।। বিপাশা- একটি নদীর নাম, একটি নির্ঝর স্বপ্নের নাম।।

সঞ্চারিণী

কবি সঞ্চারিণীর পরিচিতি সংক্ষেপঃ সঞ্চারিণী একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, আবৃত্তিকার , নৃত্যশিল্পী ও সংগীতশিল্পী । ১৯৬৭ সালে চীনে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় ক্যান্টন শহরের মিলিটারি হাসপাতালে তার জন্ম। উত্তরাধিকার সূত্রে পারিবারিক সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে বেড়ে ওঠা আর জন্মকালীন পরিবেশের প্রভাবে শিল্প ও সাহিত্য তার রক্তে। ঢাকা বেতারের- ক- বিভাগের নিয়মিত সঙ্গীতশিল্পী সঞ্চারিণী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ণকালীন – ডাকসু(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক দল ), রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হল, বিবর্তন, ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী, সৃজনি শিল্পী গোষ্ঠী ইত্যাদি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর একজন সফল সদস্য ছিলেন। কৈশোরে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে তার লেখা প্রকাশ পেলেও, বলা চলে হলিক্রস কলেজে অধ্যয়ণকালীন সময়েই কবিতায় তার উন্মেষ। কচিকাঁচার আসর ও কিশোর কাফেলার তিনি ছিলেন সদস্য শিল্পী ও লেখিয়ে। নিভৃতচারিণী কবি সঞ্চারিণী তার সাহিত্য-চর্চায় আশ্রয় খোঁজেন তার অপ্রকাশিত যাতনা আর কোমলতার। প্রকৃতিকে ভালবাসেন বলেই ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে দৃপ্ত পদচারণার পাশাপাশি সাফল্যের সাথে অর্জন করেন বি.এস.সি(সন্মান), এবং লিমনোলজীতে (থিসিস সহ এম. এস. সি ডিগ্রী) লাভ করেন। প্রবাসে এসে চাকুরীর পাশাপাশি তিনি সম্পন্ন করেন তার পি.এইচ.ডি (ডক্টরেট ইন বায়োলজী)। ১৯৯৪ সালে কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের প্রভাষক হিসেবে তার কর্ম জীবন শুরু। ১৯৯৮ সালে সৌদি আরবস্থিত বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিদ্যালয়ে তিনি তার স্বামীসহ প্রবাস কর্ম জীবন শুরু করেন। এর পর এশিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে তিনি বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন চাকুরীতে সাময়িক অব্যহতি দেন। মরু প্রকৃতি এই প্রকৃতিপ্রেমীর মাঝে সৃষ্টি করে শূন্যতা - দেশের জন্য, দেশবাসীর জন্য - মাতৃভূমির ছায়া সুনিবিড় কলকাকলি মুখর এই প্রকৃতির জন্য। বাস্তব জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের স্নেহময়ী মা সঞ্চারিণী; মাতৃত্বের গৌরবেই দু-দুবার বিসর্জন দেন তার কর্ম-জীবন । নিমগ্ন হন সাহিত্য , সঙ্গীত আর স্রষ্টার আরাধণায়। নির্মেঘ বৃষ্টি- তার এই নিমগ্নতার প্রথম প্রকাশ; যার প্রকাশনার দ্বায়িত্ব নিয়েছিল বাংলাদেশের অন্যতম সাহিত্য প্রকাশনা-অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী, এবং যার ভূমিকা লিখেছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ। বইটির প্রচার ও প্রসার হয়েছিলো ২০০৬ সালের একুশে বই মেলায়, এবং যার প্রকাশনা উৎসব ও শিল্পীর একক গানের অনুষ্ঠানে উদ্বোধন ও অংশগ্রহণ করেন কবি আল মাহমুদ, সাংবাদিক নাসির আলী মামুন প্রমূখ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় কাব্য গ্রন্থ - সেই চোখ- এবং –অনুক্ত- প্রকাশিত হয় ২০১০ সালের বই মেলায়, ছড়াকার লোকমান আপন এর -জল ছাপ- প্রকাশনী থেকে। ২০১৬ সালের বই মেলায় ইউ. কে প্রবাসী বাংলাদেশী জনাব সুজাত মানসুরের সম্পাদনায় বেরিয়েছে কবিতা সংকলন – মুক্তিযুদ্ধের কবিতা। ২০১৭ সালের বই মেলায় গল্প-গ্রন্থ- নৈর্ব্যাক্তিক সংবেদ- বেরুচ্ছে -অন্য-প্রকাশ- প্রকাশনী থেকে, আদিত্য প্রকাশনী থেকে -জলের একতারা - কাব্যগন্থ, দাড়িকমা প্রকাশনী, সাহিত্য প্রকাশন এবং বাংলার কবিতা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হচ্ছে-যৌথ কাব্য গ্রন্থ ও গল্প-গ্রন্থ। বর্তমানে কবি তার নির্বাচিত ১০০ টি কবিতা নিয়ে পরবর্তী বই মেলায় নির্বাচিত কবিতার বই, একটি উপন্যাস – আপোষ- বুননে ব্যস্ত ।

সঞ্চারিণী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাব্য-নাটিকাঃ শিস দিয়ে যায় অহর্নিশ

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:৪৩

নৈসর্গিক রূপকের আশ্রয়ে একজন সঙ্গীতানুরাগী নিঃসঙ্গ পুরুষ (নীল পাহাড়) এর তীব্র প্রেমাকাংখা, অতৃপ্ততা, হতাশা আর নির্লিপ্ততার পাশাপাশি তার প্রেমিকা (নদী)-র নিরব প্রেম নিবেদন, অপ্রকাশিত প্রেমের নিরুদ্ধ বেদনা, চাপা অভিমান এবং সব শেষে প্রেম প্রকাশের অপূর্ব মাধুর্য তুলে ধরার প্রয়াস; কাব্য-নাটিকাঃ-
শিস দিয়ে যায় অহর্নিশ

নীল পাহাড়ের দিন কাটছিল চরম শুন্যতার মাঝে এ’ভাবেঃ

বিষন্নতায় মৌন নীল নির্ঘুম পাহাড়
অজানা পাখীর গান শুনে কাটায় প্রহর
খোঁজে আর ডাকে সেই পাখিটিকে,

নীল পাহাড়ঃ কোথায় উড়ে গেলে নীল পাখী?
ধরা দাও ... কাছে এসো ...
বড্ড যে নিঃসঙ্গ লাগছে!
পাখিটা ধরা দেয় না
আসে ও না কভু কাছে
শুধু দূরে কোথাও
শোনা যায় তার বিরহী সুরের প্রতিধ্বনি

নীল পাহাড়ের জীবনে প্রেমিকা (নদী)-র আবির্ভাবঃ

কোন এক বিষন্ন রাতের প্রান্তিকে
ঝরা পালকের আলতো ছোঁয়ায়; ঘুম এলো তার দু’চোখ জড়িয়ে
নদী এলো পা’য় পা’য় সেই রাতে। প্রশান্ত-
পাহাড়ের অলখে, ছলকে ছুঁয়ে গেলো ঢেউ-পাহাড়টির চরণ
আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠতেই
নদীটি আড়াল, জলের দাগে শুধু রেখে গেলো তার আসার স্মৃতি-চিহ্ন
নীল পাহাড়টি টের পেলো; ঘুমের ফাঁকে কেউ এসেছিলো তার কাছে

নীল পাহাড়ঃ তবে কী এসেছিলো নীল পাখি? সমস্ত
রোমকূপ জুড়ে কেন তবে মাতাল
করা সেই চেনা ঘ্রাণ?

নীল পাখি ফেরে না
নদীও আসে না আড়াল ভেঙ্গে কাছে
মধ্য নদীর চোরা স্রোতে শুধু
বয়ে চলে তার অভিমানি ক্ষোভঃ


নদীঃ নদীকে বাঁধে নি কেন কেউ?
কেন ডাকে নি অমন মোহন পিছু ডাক?

নীল পাহাড়ঃ যে যাবার যাবে-ই-সে
শুনবে না পিছু ডাক কারও;
কোনদিনও!


বিড়-বিড় করে বলে উঠে নীল পাহাড়
আর সে কথা শুনে শুধু তার মন-পাখি


নদীর অভিমানঃ

একদিন ফুঁসিয়ে উঠেছে নদী অভিমানে
নোনা জল মিশে বেড়ে গেছে তার নাব্যতা
বিক্ষুব্ধ আছড়ে পড়া জল-রাশির তোড়ে বিব্রত
পাহাড়ের উদাসীনতা

কারও শীতল স্পর্শে জেগে উঠলো পাহাড়টির অজানা আবেশ

নীল পাহাড়ঃ কার ভেজা চুল ল্যাপ্টানো বুকের পরে?
জড়িয়ে রেখেছে তাকে কার নিটোল বাহুলতা
কার ঘন নিঃশ্বাসের শাবল; খুড়ছে কঠিন
পাথুরে মৃত্তিকা!



চিন-চিনিয়ে বেজে উঠে ব্যথার তার-সানাই
সর্বনেশে এমন ঘটনা ঘটেনি তো আগে!





ফুঁপিয়ে কেঁদেছে নদী অনুক্ত কথার স্রোতে
ফাল্গুনী হাওয়া বয়ে গেছে তার খোলা চুলে

নদীঃ আমি এসেছি
তোমার খুউব কাছাকাছি
ভালোবাসা দাও!
এক চুমুক হলেও দাও সুধা, অমৃত!


মৌনতা ভেঙেছে নির্বাক পাহাড়
প্রগলভ সে আজ খুশীর জোয়ারে।


নীল পাহাড়ঃ তবে কী তুমি-ই সেই নীল পাখি?যার-
গানের পাগল করা সুর ভেসে আসে ইথারে?
পদধ্বনি শুনি যার বারবার
যার পালকের চেনা ঘ্রানে, উতল আমার-
মনের বন? যার কোমল আদরে থামে এই-
যতিহীন স্নায়ু চাঞ্চল্য!?!



অভয় পেয়ে ভীরু নদীটি যেন কিছুটা সপ্রতিভ হ’লো। কুলু-কুলু ধ্বনির স্রোতে, নদী বল্ল তার না বলা সব মনের কথাঃ

নদীঃ যে গান তুমি শুনে গেছ এত কাল
সে আমার-ই গাওয়া,
যে পদধ্বনি শুনে চমকে ফিরেছ পিছু
সে আমার-ই নূপুর-নিক্কন
ঝরা পালকের ছোয়া; সে আমার-ই
কোমল স্পর্শ-মায়া!
আমার-ই স্রোতে ভেসে চলা শ্যাওলার ঘ্রাণে
উতল তোমার আদিম প্রবৃত্তি ।
আর ওই নীল পাখি; সে তোমার
মনের মন-পাখি;
হতাশার মাঝে যে তোমার আশার বর্তিকা;
সাধনার ধ্যান।
বেঁচে থাকার অনিন্দ্য আশ্বাস সে; আর-
কল্পিত ভূবনে মানস-প্রেম।

নদীর কথায় আপ্লুত হ’লো নীল পাহাড়ের আবেগী মন। এতকাল যে এমন-ই সুন্দরের প্রতীক্ষায় ছিলো সে।এতদিনে বুঝি দূর হলো তার ঘোর অমানিশার কাল। এক-এক করে ঝরে গেলো নীল পাখিটির কষ্ট-পালক। নদীর জলে মুখ লুকালো নীল পাহাড়ের যাতনাসমগ্র। ক্লান্ত বিধ্বস্থ মন-পাখিটি সমর্পিত হ’লো তরল নদীর অস্তিত্বে। নীল পাহাড়ের বুক চিরে প্রবাহিত হতে থাকলো ভালোবাসার নির্ঝরিণী। আর আজলা ভরে নদী পান করে চল্ল তার প্রেম-জল।

আজও নদীটি বহতা তাই নির্ঝর জল-স্বপ্ন রচনা করে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অসাধারণ এ কবিতাটি প্রিয়তে গেল ।
শুভেচ্ছা রইল ।

২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অসাধারণ কাব্য-নাটিকাটি প্রিয়তে গেল
শুভেচ্ছা রইল ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.