![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি রুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারি(১০'সিরিজ) ডিপার্টমেণ্টে পড়ালেখা করছি। সুযোগ পেলেই লেখালেখিতে বসে যাই। আমার লেখালেখির সব থেকে পছন্দের বিষয় হল ছোটগল্প ।বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে ভালো লাগে। আরও ভালো লাগে নতুন বন্ধু তৈরি করতে।
যতদূর চোখ যায় শুধু রাতের নিস্তব্ধতা। দুটো মানুষ পাশাপাশি দাঁড়িয়ে। কোন কথা নেই, তবুও হাজারো প্রশ্ন দুজনের মনে। অনবরত একজন আরেকজনকে প্রশ্ন করে যাচ্ছে, উত্তর শোনার অপেক্ষা করছে না কেউ। শাঁ শাঁ করে ছুটে যাচ্ছে নিউ ব্রান্ডের গাড়িগুলো, যেন একরাশ হতাশা সে শব্দে, দুমড়ে দিতে চায় বুকের ভেতরটা।
আমাদের ভিন্নতা কোথায় জানো, ভালোবাসি বলে আমরা ভালাবাসতে শুরু করিনি। তাইতো আমি তোমার থেকে বিচ্ছিন্নতা অনুভব করতে থাকি সারাটা সময়। কবি আবুল হাসান বলেছিলেন, শ্রীমতি আমাকে আর একাকীত্ব দেয়না। একাকীত্ব নিয়ে, বিচ্ছিন্নতা নিয়ে সবাই বাস করতে পারেনা, কবি বলে তিনি হয়তো পারতেন। আমি কবিত্ব চাইনি। অন্য আট দশটা পুরুষের মত আমারও স্বপ্ন একটা সহায়, মোটা অঙ্কের স্যালারি, একটা ঘর, যেখানে আমি প্রতি রাতে ফিরে যেতে পারবো নির্দ্বিধায়।
হাতির ঝিলের কালো পানি রাতের বেলাতেও কালো দেখায়, পরিষ্কার পানি হলেও তাই দেখাতো। শুদ্ধতাও কি পরিবর্তন হয় সময়ের সাথে? পানিতে আলোর খেলা দেখতে থাকে ছেলেটি, কেউ একটা প্লাস্টিকের নৌকা ভাসিয়েছে সে পানিতে। মৃদু আন্দোলনে দুলতে থাকে নিসংগ সে নৌকা। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পরিচিত মেয়েটিকে আজ বড্ড অচেনা লাগছে। মেয়েটির চুল খোলা, আলতো বাতাসে চুল উড়তে থাকে, নিয়ন আলোতে এক প্রকার মায়া থাকে, মেয়েটির উপর সে মায়া ভর করেছে।
জানো তো, কর্পোরেট সম্পর্কগুলো এমনই, সেখানে কোন আবেগ থাকতে নেই। সবাই তোমার আবেগ চাইবে কিন্তু কেউ নিজেরটা দিবে না। আমাদের শুরু তো সেখান থেকেই। একটা মেইল এড্রেসের জন্য তুমি আমার ডেস্কে তিনবার এসেছিলে। তৃতীয়বার আমি চিরকুটে মেইল এড্রেসের নিচে মোবাইল নাম্বার দিয়েছিলাম, তোমাকে আর ঘুরাতে চাইনি। তুমি যখন বার বার আমার ডেস্কে আসছিলে, তোমার চোখে তখন উচ্ছলতা ছিল,যদিও আমার ইচ্ছা করছিলো বার বার সে উচ্ছলতা দেখতে। মেয়েটি কথাগুলো শেষ করে পূর্ণ দৃষ্টিতে ছেলেটির দিকে তাকালো। ছেলেটির চোখ দূরে কৃত্রিম আলোর জোনাকমেলায় নিবদ্ধ। মেয়েটি জিগ্যেস করলো, তোমার নতুন অফিসের খবর বলো।
নতুন অফিসে কারো মেইল এড্রেস আমার দরকার হয়নি। ততক্ষণে একজনের হাত আরেকজনের হাতে। সব দুঃখ-কষ্ট কোথায় যেন মিলিয়ে গেলো। হু হু করে বাতাস বইতে শুরু করেছে। আর পাঁচ মিনিট তারা একসাথে থাকবে। তারপর যে যার পথে। আমরা হয়তো বাঁচি এই পাঁচ মিনিটই, বাকি সময়টা অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।
সমাপ্ত
©somewhere in net ltd.