নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাসীমুল বারী-র প্রযুক্তির উঠোনে স্বাগতম

নাসীমুল বারী

ঢাকার আজিমপুরে জন্মেছি। বেড়েও উঠেছি এখানে। ঐতিহ্যবাহী ওয়েষ্ট এন্ড হাই স্কুল থেকে এসএসসি সনদপ্রাপ্ত আমার পৈত্রিক নিবাসটা কিন্তু ‘ইলশে পাড়া’- চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ উপজেলার সাদরা গ্রামে।

নাসীমুল বারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

শব্দের বাংলায়ন ব্যবহারে অভ্যস্থ হই (পুনঃসংযুক্তি-১)

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৭:২৮

আমরা আমাদের লেখায় কিংবা কথায় বাংলা ভাষাতেই কিছু ক্ষেত্রে সরাসরি ইংরেজি শব্দের ব্যবহার করি। একটু চেষ্টা করলে সে শব্দের বাংলাশব্দ বা প্রতিশব্দ বা ভাবশব্দ ব্যবহার করতে পারি। এতে আমাদের বাংলা ভাষারই মর্যাদা সমুন্নত থাকবে। কিংবা একটু চেষ্টা করি না সে শব্দটির একটি সুন্দর বাংলা শব্দ সৃষ্টি করতে। এভাবেই হয়ত আমাদের বাংলা শব্দভাণ্ডার আরও সমৃদ্ধ হবে।



দেড় সহস্রাধিক বছর বয়সের এ বাংলা ভাষাকে ব্যবহারের সময় আমরা অপ্রয়োজনে কিংবা চিন্তা ও চেতনায় শব্দভাণ্ডারে এত দারিদ্র্যে রাখব কেন? সৃষ্টি সুখের উল্লাসে আজ আমরা বাঁধ ভাঙার আওয়াজে সবাই মাতোহারা। সেখানে কেন আমার বাংলা ভাষার বেলায় আমি অন্য ভাষার শব্দের বাঁধ ভেঙে নিজের শব্দে বাহাদুরি দেখাই না? নিজ শব্দ ব্যবহারে নিজেকে কেন গৌরবান্বিত করি না? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'রিপোর্ট' শব্দের বাংলা করেছেন 'প্রতিবেদন' শব্দে। আজ রবীন্দ্রনাথ নেই বলে কি সময়ের সাথে মিলিয়ে নতুন বাংলা শব্দের সৃষ্টি বা উদ্ভব হবে না? আমরা পারি। শুধু প্রয়োজন আমাদের ইচ্ছাটা।



এই যেমন ধরুণ ব্লগ। ব্লগের বাংলায়ন এখনও খুঁজে পাই নি। সৃষ্টিও করতে পারি নি। আপনারাও চিন্তা করুন কিংবা চেষ্টা করুন অন্তত একবার। ব্লগে লেখা পাঠাই, তাকে বলি 'পোস্ট'। 'পোস্ট' শব্দটা ইংরেজি। একটু চেষ্টা করি না আমরা এ পোস্ট শব্দটাকে বাংলায়ন করতে। ইংরেজিতে এটাচমেন্ট- এর সরাসরি বাংলা 'সংযুক্তি'। একই শব্দের ব্যবহার ভাবের ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। ব্লগে একটা লেখা পাঠানো হয়। এ লেখাটা আসলে কারো হাতে পৌঁছে না। মূলত ব্লগে সংযুক্ত হয়। কিন্তু 'পোস্ট' এর প্রকৃত অর্থ 'ডাক' বা 'পদ'। এখানেও ভাবের ব্যবধানে দুটি অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে ব্লগে 'পোস্ট' দেওয়াকে 'সংযুক্তি' বললে ভাবগত পার্থক্যের চেয়ে স্পটতা বেশি মনে হয়। ব্লগে 'পোস্ট' দেওয়াকে 'সংযুক্তি' বলা অধিকতর যুক্তিযুক্ত মনে করি। আর তাই আমার প্রস্তাব 'পোস্ট'কে 'সংযুক্তি' বলা।



বাণিজ্যিকভাবে বহুমালিকানা প্রতিষ্ঠানের বেলায় 'লিমিটেড' ব্যবহার হয়। এই 'লিমিটেড'কেও আমরা বাংলায়ন করতে পারি 'সীমিত' শব্দ দিয়ে। 'সীমিত' শব্দটি শ্রুতিকটু নয়। বাংলা ভাষা আন্দোলনের সুচনাকারী আবুল কাসেম ষাটের দশকে একটি বইয়ের দোকান করেছিলেন। তিনি তার সন্তানদের নামে বইয়ের দোকানের নাম রাখেন 'কামরুল আহসান এবং ভাইয়েরা'। হঠাৎ শুনলে মনে হবে এ কেমন নাম। কিন্তু যদি ইংরেজিতে বলি, তবে হবে 'কামরুল আহসান এন্ড বাদ্রার্স'। এটি আমরা মেনে নেই। এমন নাম বহু আছে এই আমাদের বাংলাদেশেই। কিন্তু ওই রকম বাংলাটা আমরা মেনে নেই না। আসলে এটা আমাদের চেতনার সংকীর্ণতা। শুধু মাত্র ফেব্রুয়ারি মাস এলেই আমরা বাংলা ভাষা ব্যবহার নিয়ে অনেক কথা বলি। সারা বছর যেন বাংলার সেই চেতনাটা থাকে না। আমরা ভুলে যাই বাংলার প্রতি আমাদের কর্তব্য, দায়।



এপার্টম্যান্ট, ফ্ল্যাট, শপিংমল, আউটলেট, প্লট ইত্যাদি এসব শব্দও কি আমরা চেষ্টা করলে বাংলায়ন করতে পারি না। পুরো বছর ধরে যদি আমরা একটু একটু করে কিংবা একটি একটি করে শব্দের বাংলায়নের চেষ্টা করি তবে কি আমাদের বাংলাভাষার মর্যাদাটা আরও বেড়ে যেত না? ব্লগে এত লেখালেখি কার, জাতিকে সচেতন হতে অনেক কথাই লিখি। শব্দের বাংলায়নের চেষ্টা কি সেসব মহৎ কাজের চেয়ে ছোট?



আসুন আমরা আমাদের বাংলাচেতনাকে নিজেরাই সচেতন করি।



এটি আমার চেতনা। আমরা একটি আলোচনাও করতে পারি এখনকার বহুল প্রচলিত অবাংলা শব্দের বাংলায়ন নিয়ে।



দেখুন

‘লিঙ্গ’-এর বৈয়াকরণিক পরিবর্তন : একটি প্রস্তাবনাView this link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.