নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

তারাবীহ নামায বিশ রাকাতঃ একটি দলীলভিত্তিক পর্যালোচনা

৩০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৭

উপক্রমনিকা-
প্রিয়তম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুম, তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীগণ এবং পূর্ববর্তী উত্তম জামানাগুলোর মুজতাহিদ ইমামগণের আমল দ্বারা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত যে, তারাবী নামায বিশ রাকাত।

ভারতীয় উপমহাদেশে আট রাকাত তারাবীহর সূচনা:
কিন্তু ১২৮৪ হিজরীতে ভারতের আকবরাবাদ থেকে সর্বপ্রথম এক লা-মাযহাবী মৌলভী সাহেব আট রাকাআত তারাবীর ফাতওয়া প্রদান করেন। এরপর ১২৮৫ হিজরীতে পাঞ্জাব সীমান্তে মাওলানা মুহাম্মদ হুসাইন বাটালবী আট রাকাআত তারাবী নামায পড়া সুন্নত হওয়ার দাবি করেন।

কিন্তু কুরআন ও হাদীস সম্পর্কে তৎকালীন প্রাজ্ঞ হক্কানী উলামায়ে কেরাম উক্ত আট রাকাআত তারাবীর ফাতওয়াকে ভুল হিসেবে প্রমাণিত করে তা প্রত্যাখ্যান করেন।

আরব বিশ্বে আট রাকাআত তারাবীহর প্রারম্ভিক কাল:
আরব বিশ্বে ১৩৭৭ হিজরীতে শায়েখ নসীব রেফায়ী ও শায়েখ নাসীরুদ্দীন আলবানী রহ. সর্বপ্রথম আট রাকাআত তারাবীহর মত প্রকাশ করেন। তখন শায়েখ আতিয়্যা সালিমসহ আরবের জমহুর উলামায়ে কেরাম তাদের উক্ত রায়কে প্রত্যাখ্যান করেন এবং সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুম এর যুগ থেকে চলে আসা হারামাইন শরীফাইন তথা মক্কাতুল মুকাররমায় অবস্থিত বাইতুল্লাহ শরীফ ও মদিনাতুল মুনাওওয়ারার মসজিদে নববীতে বিশ রাকাআত তারাবীহর আমলকে অব্যহত রাখেন। আলহামদুলিল্লাহ, যা অদ্যাবধি অব্যাহত রয়েছে।

সুতরাং, আট রাকাআত তারাবীহ পড়ার মতকে অনুসরণের অর্থ হল, স্বয়ং প্রিয়তম রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কিরাম রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুম ও মহান তাবেয়ীগণের অনুসৃত আমলকে প্রত্যাখ্যান করে নব্য সৃষ্ট বিদআতি দলের অনুসরণ করা।

তারাবীহ নামায বিশ রাকাআতের প্রমাণ:

প্রমান ০১-
عن ابن عباس ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يصلى فى رمضان عشرين ركعة والوتر

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে বিশ রাকাআত এবং বিতির পড়তেন। {মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-২/২৯৪, হাদীস নং- ৭৬৯২, মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ-২১৮, আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-১২১০২, মাজমাউজ যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-১৭২, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪৩৯১}

প্রমান ০২-
عن جابر بن عبد الله قال خرج النبى صلى الله عليه وسلم ذات ليلة فى رمضان فصلى الناس اربعة وعشرون ركعة واوتر بثلاثة

হযরত জাবের রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বলেনঃ রমজান মাসের এক রাতে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহিরে তাশরীফ নিয়ে এলেন। আর সাহাবায়ে কেরামকে ২৪ রাকাআত [৪ রাকাআত ঈশার, আর ২০ রাকাআত তারাবীহের] নামায পড়ালেন। আর তিন রাকাআত বিতির পড়ালেন। [তারীখে জুরজান-২৭}

যেহেতু আহলে হাদীস ভাইদের দাবি, তাদের নিকট গ্রহনযোগ্য দলীল শুধু কুরআন ও সহীহ হাদীস। তথা আল্লাহ ও রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা। কোন ব্যক্তির মতামত তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আর এ দু’টি হাদীসকে আল্লাহ এবং রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম না সহীহ বলেছেন, না জঈফ বলেছেন। তাই গায়রে মুকাল্লিদরা এ দু’টি হাদীসকে না সহীহ বলতে পারবে, না জঈফ বলতে পারবে। এবার দেখার বিষয় হল, উম্মতের ঐকমত্যের আমল এই হাদিসের উপর আছে কি নেই? রাসুলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জমানা থেকে ছিল, কি ছিল না। যদি দেখা যায় যে, জমহুর উম্মত তথা, মুসলিম উম্মাহর অধিকাংশ আলেম উলামাগন প্রথম জামানা থেকে এই হাদিসগুলোয় বর্ননা মোতাবেক ২০ রাকাআত তারাবীহ পড়ার উপর আমল করে এসেছেন এবং এখনও করে যাচ্ছেন। তাহলে আমল হিসেবে গ্রহণযোগ্য হওয়ার দ্বারা উক্ত হাদীস নিসন্দেহে সহীহ হয়ে যায়।

ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর আদেশ

প্রমান ০৩-
عن يحيى بن سعيد ان عمر بن الخطاب امر رجلا يصلى بهم عشرين ركعة

হযরত ইয়াহইয়া বিন সাঈদ থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় ওমর বিন খাত্তাব রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এক ব্যক্তিকে বিশ রাকাআত পড়ার হুকুম দিলেন। {মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-২/২৯৩}

হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর শাসনামল

প্রমান ০৪-

وروى مالك من طريق يزيد بن خصيفة عن السائب بن يزيد عشرين ركعة

হযরত সায়েব বলেনঃ হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর সময়কালে বিশ রাকাআত তারাবীহ ছিল। {ফাতহুল বারী-৪/৪৩৬} যার সনদ বুখারীতে দুই স্থানে আছে।

প্রমান ০৫
عن السائب بن يزيد ، قال : كنا نقوم في زمان عُمَر بن الخطاب رضي الله عنه بعشرين ركعة والوتر

হযরত সায়েব বিন ইয়াজিদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বলেনঃ আমরা হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর শাসনামলে বিশ রাকাআত তারাবীহ ও বিতির পড়তাম। {সুনানে সুগরা লিল বায়হাকী, হাদীস নং-৮৩৩, মারিফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদীস নং-১৪৪৩}

ইমাম নববী রহঃ, সুবকী রহঃ [শরহুল মিনহাজ], মোল্লা আলী কারী রহঃ [শরহুল মুয়াত্তা] ও সুয়ুতী রহঃ এ বর্ণনাকে সহীহ বলেছেন।

প্রমান ০৬-
محمد بن كعب القرظى كان الناس يصلون فى زمان عمر بن الخطاب فى رمضان عشرين ركعة ويوترون بثلاث

মুহাম্মদ বিন কাব কুরজী বলেনঃ ওমর ফারুক রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর শাসনামলে লোকেরা রমজান মাসে বিশ রাকাআত তারাবীহ ও তিন রাকাআত বিতির পড়তো।

প্রমান ০৭-
عن يزيد بن رومان ، أنه قال : « كان الناس يقومون في زمان عمر بن الخطاب في رمضان بثلاث وعشرين ركعة »

হযরত ইয়াজিদ বিন রূমান বলেনঃ লোকেরা হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর শাসনামলে বিশ রাকাআত তারাবীহ এবং তিন রাকাআত বিতির রমজান মাসে আদায় করতো। {মারিফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদীস নং-১৪৪৩, মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৩৮০, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪৩৯৪}

প্রমান ০৮-
عن الحسن ان عمر بن الخطاب جمع الناس على ابى بن كعب فكان يصلى بهم عشرين ركعة

হযরত হাসান রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত। হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু লোকদেরকে হযরত উবায় বিন কাব রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর কাছে একত্র করে দিলেন। আর তিনি লোকদের বিশ রাকাআত তারাবীহ পড়াতেন। {সুনানে আবু দাউদ-১/২০২, সিয়ারু আলামিন নুবালা-১/৪০০}

প্রমান ০৯-
عن ابى بن كعب ان عمر بن الخطاب امره ان يصلى باليل فى رمضان فصلى بهم عشرين ركعة

হযরত উবায় বিন কাব রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বলেনঃ হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু আমাকে এই মর্মে আদেশ দিলেন যে, আমি যেন লোকদেরকে তারাবীহ পড়াই। তখন বিশ রাকাআত পড়া হতো। {কানযুল উম্মাল-৮/২৬৪}

ইমাম বায়হাকী, আল্লামা বাজী, কাশতাল্লানী, ইবনে কুদামা, ইবনে হাজার মক্কী, তাহতাবী, ইবনে হুমাম, বাহরুর রায়েক প্রণেতা রহঃ প্রমুখগণ এ ব্যাপারে একমত হয়ে বলেনঃ হযরত ওমর ফরুক রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর শাসনামলে বিশ রাকাআত তারাবীহের উপরই সকলের সিদ্ধান্ত স্থির হয়। এবং এভাবেই চলতে থাকে। ইংরেজ আমলের পূর্বে কোন একজন মুহাদ্দিস বা ফক্বীহ এটাকে অস্বীকার করেননি। আর সুন্নত হওয়ার জন্য সেটির নিরবচ্ছিন্ন হওয়া শর্ত। তাই এই বিশ রাকাআত তারাবীহ সুন্নতে ফারূকী হয়েছে। এ হচ্ছেন সেই ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু, যার ব্যাপারে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে, যদি আমার পর কোন নবী হতো তাহলে নবী হতেন ওমর। তিনি আরও বলেছেনঃ দ্বীনের ব্যাপারে সবচে’ মজবুত হলেন ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু। যদি বিশ রাকাআত তারাবীহ নামায বিদআত হয়, তাহলে হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুসহ সে সময়কার সমস্ত আনসার ও মুহাজির সাহাবীগণের বিদআতি হওয়া আবশ্যক হয়। (নাউজুবিল্লাহ)। ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেনঃ উবাই বিন কাব রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু মুহাজির ও আনসার সাহাবীদের মাঝে তারাবীহ পড়াতেন। কোন একজনও এ ব্যাপারে আপত্তি উত্থাপন করেন নি। {মাজমুআ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া-৩৩/১১২}

হযরত উসমান রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর শাসনামল

প্রমান ১০-

হযরত সায়েব বিন ইয়াজিদ বলেনঃ হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর শাসনামলে লোকেরা বিশ রাকাআত তারাবীহ পড়তেন। আর হযরত উসমান রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর শাসনামলে লম্বা কেরাতের কারণে লাঠির উপর ভর দিতেন। {বায়হাকী-৪/২৯৬}

হযরত উসমান রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর শাসনামলের একজন ব্যক্তির নামও বলা যাবে না, যে ব্যক্তি আট রাকাআত পড়ে জামাত থেকে বেরিয়ে যেত। কিংবা কেউ বিশ রাকাআত তারাবীহকে বিদআত বলেছে এমন একজন ব্যক্তিও পাওয়া যাবে না।

আলী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর শাসনামল

প্রমান ১১-

عن ابى عبد الرحمن السلمى عن على قال دعى القراء فى رمضان فامر منهم رجلا يصلى بالناس عشرين ركعة قال وكان على يوتر بهم

হযরত আবু আব্দুর রহমান সুলামী বলেনঃ হযরত হযরত আলী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু রমজান মাসে কারীদের ডাকতেন। তারপর তাদের মাঝে একজনকে বিশ রাকাআত তারাবীহ পড়াতে হুকুম দিতেন। আর বিতিরের জামাত হযরত আলী নিজেই পড়াতেন। {বায়হাকী-৪/৪৯৬}

প্রমান ১২-
عن ابى الحسناء ان عليا امر رجلا ان يصلى بالناس خمس ترويحات عشرين ركعة

হযরত আবুল হাসনা বলেনঃ হযরত আলী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এক ব্যক্তিকে পাঁচ তারাবীহ এর সাথে বিশ রাকাআত পড়াতে হুকুম দিয়েছেন। {সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৪৮০৫, ৪৩৯৭, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-২৩৪৭৪}

হযরত আলী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু নিজেই রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, যে ব্যক্তি বিদআতের উৎপত্তি করবে তার ফরজ, নফল কিছুই কবুল হয় না। {বুখারী-২/১০৮৪, মুসলিম-১/১৪৪}

হযরত আলী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু আজানের পর ইশার নামাযের জন্য আবার ডাকতে শুনে বললেনঃ এ বিদআতিকে মসজিদ থেকে বের করে দাও। {বাহরুর রায়েক}

তিনি এক ব্যক্তিকে ঈদগাহে ঈদের নামাযের আগে নফল পড়তে দেখে খুবই ধমক দিলেন লোকটিকে। যদি বিশ রাকাআত তারাবীহ বিদআত হতো, তাহলে এর হুকুম কেন দিলেন তিনি?

জানা আবশ্যক
ইংরেজ শাসনের আগে একজন মুহাদ্দিস বা ফক্বীহের নাম বলা যাবে না, যারা আলী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর শাসনামলের বিশ রাকাআত তারাবীহ পড়াকে অস্বীকার করেছেন। কোন ব্যক্তি সেই জমানার একজন ব্যক্তির নামও বলতে পারবেন না, যে ব্যক্তি আট রাকাআত তারাবীহ পড়ে মসজিদ থেকে বেরিয়ে যেতেন। এটাও মনে রাখতে হবে যে, এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হল যে, বিশ রাকাতওয়ালী নামাযের নাম 'তারাবীহ' হযরত আলী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বর্ণনা করেছেন। খোলাফায়ে রাশেদার কেউ বা কোন সাহাবী আট রাকাআতের সাথে তারাবীহ শব্দ উচ্চারণ করেননি। হাদীস ভান্ডারে এর কোন প্রমাণ নেই।

প্রমান ১৩-
عن زيد بن وهب قال كان عبد الله يصلي بنا في شهر رمضان فينصرف وعليه ليل قال الا عمش كان يصلى عشرين ركعة ويوتر بثلث

হযরত জায়েদ বিন ওহাব বলেনঃ হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু আমাদের তারাবীহ পড়িয়ে ফারিগ হতেন এমতাবস্থায় যে, তখনো রাত অনেক বাকি থাকতো, ইমাম আমাশ বলেনঃ তিনি বিশ রাকাআত তারাবীহ আর তিন রাকাআত বিতির পড়াতেন। {কিয়ামুল লাইল-১৫৭}

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু খোদ বলেছেন যে, সুন্নত ছেড়ে দেয়া উত্তম বিদআতের উপর মেহনত করার চেয়ে। {হাকেম-১/১,৩} যদি বিশ রাকাআত তারাবীহ বিদআত হতো, তাহলে তিনি কেন পড়ালেন?

জমহুর সাহাবাগণ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুম

প্রমান ১৪-

ابو حنيفة عن حماد عن ابراهيم ان الناس كانوا يصلون خمس ترويحات فى رمضان

হযরত ইমাম আবু হানীফা রহঃ, হযরত ইবরাহীম [মৃত্যু-৯৬হিজরী] থেকে বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয় লোকেরা [সাহাবী ও তাবেয়ীগণ] রমজান মাসে পাঁচ তারাবীহর সাথে বিশ রাকাআত তারাবীহ পড়তো। {কিতাবুল আসার লিআবী ইউসুফ}

প্রমান ১৫-
عن عبد العزيز بن رفيع قال كان ابى بن كعب يصلى بالناس فى رمضان بالمدينة عشرين ركعة ويوتر بثلاثة

হযরত আব্দুল আজীজ বিন রফী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ হযরত উবায় বিন কাব রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু লোকদেরকে রমজান মাসে মদীনা মুনাওয়ারায় বিশ রাকাআত তারাবীহ এবং তিন রাকাআত বিতির নামায পড়াতেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা-২/৩৯৩}

প্রমান ১৬-
عن عطاء قال ادركت الناس وهم يصلون ثلثة وعشرون ركعة بالوتر

হযরত আতা [মৃত্যু-১১৪হিজরী] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি লোকদের [সাহাবী ও তাবেয়ীগণ] বিশ রাকাআত তারাবীহ এবং তিন রাকাঅাত বিতির পড়তে দেখেছি। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা-২/৩৯৩}

তাবেয়ীগণ রহঃ

হযরত সুয়াইদ বিন গাফালা যিনি বয়সে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মাত্র তিন বছরের ছোট ছিলেন। তিনি ইমামতি করাতেন। হযরত আবুল হাজীব বলেনঃ

প্রমান ১৭-
كان يؤمنا سويد بن غفلة فى رمضان فيصلى خمس ترويحات عشرين ركعة

হযরত সুইয়াইদ বিন গাফালা রমজান মাসে আমাদের জামাতের সাথে পাঁচ তারবিহায় বিশ রাকাআত নামায পড়াতেন। {বায়হাকী-২/৪৯}

প্রমান ১৮-
عن ابى البخترى انه كان يصلى خمس ترويحات فى رمضان ويوتر بثلاث

হযরত আবুল বুখতারী রহঃ বলেনঃ তিনি রমজানে পাঁচ তারবিহায় বিশ রাকাত ও তিন রাকাআত বিতির পড়তেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৭৬৮৬}

প্রমান ১৯-
عن سعيد بن ابى عبيد ان على بن ربيعة كان يصلى بهم فى رمضان خمس ترويحات ويوتر بثلاث

হযরত সাঈদ বিন আবু উবায়েদ থেকে বর্ণিত। হযরত আলী বিন রাবীয়া পাঁচ তারবিহা তথা বিশ রাকাআত তারাবীহ এবং তিন রাকাআত বিতির জামাতের সাথে পড়তেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা-২/৩৯৩}

এ সকল হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, বিশ রাকাআতের সাথে তারাবীহ শব্দ এবং বিশ রাকাআত তারাবীহের আমল তাবেয়ীগণের মাঝে বিনা প্রতিবাদে নির্বিঘ্নে প্রচলিত ছিল। আর পুরো খাইরুল কুরুনে কোন এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা যাবে না, যে ব্যক্তি বিশ রাকাআত তারাবীহকে অস্বীকার করেছেন বা অপছন্দ করেছেন। কিংবা বিশ রাকাআত তারাবীহকে বিদআত বলেছেন, বা আট রাকাআত জামাতের সাথে পড়ে মসজিদ থেকে বেরিয়ে গেছেন। পুরো খাইরুল কুরুনের মাঝে আট রাকাআতের সাথে তারাবীহ শব্দ ব্যবহার করেছেন এরকম কোন প্রমাণ কোথাও বিদ্যমান নেই।

মসজিদে নববীতে বিশ রাকাআত তারাবীহ
মদীনা তায়্যিবায় হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু , হযরত উসমান রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু , হযরত আলী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এর শাসনামলে বিশ রাকাআত তারাবীহই পড়া হতো। আজও মদীনা মুনাওয়ারায় বিশ রাকাআত তারবীহই পড়া হয়। হযরত আয়শা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহাও মদীনা মুনাওয়ারায় অবস্থান করতেন। তিনিই রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এ ফরমান বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার দ্বীনের মাঝে বিদআত বের করবে, তার কাজটি পরিত্যাজ্য। যদি বিশ রাকাআত তারাবীহের নামায বিদআত ও নাজায়েজ হতো, তাহলে হযরত আয়শা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা বছরের পর বছর এর উপর চুপ করে বসে থাকতেন না।

হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুও মদীনায় অবস্থান করছিলেন। তিনি ঐ হাদীসের রাবী, যাতে বলা হয়েছে যে, প্রত্যেকটি বিদআত গোমরাহী আর প্রত্যেক গোমরাহী জাহান্নামে নিক্ষেপকারী।

অথচ তারই সামনে অর্থ শতাব্দী পর্যন্ত মসজিদে নববীতে বিশ রাকাআত তারাবীহ জামাতের সাথে পড়া হচ্ছিল, অথচ তিনি এর বিরুদ্ধে কোন কথা বলেন নি। এটা হতে পারে না।

বাইতুল্লাহ শরীফে বিশ রাকাআত তারাবীহ
মক্কা মুকাররমায় হযরত আতা বিন আবী রাবাহ রহঃ [মৃত্যু ১১৪হিজরী] বলেনঃ ادركت الناس وهم يصلون ثلاثة وعشرون ركعة بالوتر তথা আমি লোকদের [সাহাবা ও তাবেয়ীগণ] বিতির নামাযসহ ২৩ রাকাআত পড়তে দেখেছি। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা-২/৩৯৩}

আর ইমাম ইবনে আবী মালিকাহ [মৃত্যু ১১৭হিজরী] লোকদের মক্কায় বিশ রাকাআত তারাবীহ পড়াতেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা-২/৩৯৩}

ইমাম শাফেয়ী রহঃ [মৃত্যু ২০৪হিজরী] বলেনঃ আমি স্বীয় শহর মক্কায় লোকদের বিশ রাকাআত তারাবীহ পড়া অবস্থায়ই পেয়েছি। {তিরমিজী-১/১৬৬}

আর আজ পর্যন্ত মক্কা মুকাররমায় বিশ রাকাআত তারাবীহই পড়া হচ্ছে।

কুফায় বিশ রাকাআত তারাবীহ
কুফায় হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বিশ রাকাআত তারাবীহ এবং তিন রাকাআত বিতির পড়াতেন। {মুখতাসার কিয়ামুল লাইল-১৫৭}

ইমাম ইবরাহীম নাখয়ী রহঃ [মৃত্যু-৯৬হিজরী] বলেনঃ লোকেরা [সাহাবীগণ ও তাবেয়ীগণ] রমজান মাসে পাঁচ তারাবীহ [বিশ রাকাআত] পড়তেন। {কিতাবুল আসার লিআবী ইউসুফ-৪১}

বসরায় বিশ রাকাআত তারাবীহ
হযরত ইউনুস রহঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আবুল আশআস [মৃত্যু ৮৩হিজরী] এর ফেতনার পূর্বে জামে মসজিদ বসরাতে দেখেছি যে, হযুরত আব্দুর রহমান বিন আবী বাকরা [মৃত্যু ৯১হিজরী] হযরত সাঈদ বিন আবীল হাসান [মৃত্যু ১০০হিজরী] এবং হযরত ইমরানুল আব্দী লোকদের পাঁচ তারাবীহ [বিশ রাকাআত] পড়াতেন। {কিয়ামূল লাইল-১৫৮}

মোটকথা, পুরো খাইরুল কুরুনের মাঝে বিশ রাকাআত তারাবীহকে অস্বীকারকারী একজনও ছিল না। কোন ইসলামী রাজত্বে এটাকে অস্বীকার করা হয়নি। এটাকে সর্ব প্রথম অস্বীকার করেন আহলে হাদীস, সালাফি এবং গায়রে মুকাল্লিদ বন্ধুরা ইংরেজরা উপমহাদেশে আসার পর।

চার ইমাম রহঃ এর বক্তব্য
শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবী রহঃ বলেনঃ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত চার মাযহাবে সীমাবদ্ধ। এ চার ইমামের মাঝে প্রথম ইমাম হলেন ইমাম আবু হানীফা রহঃ [মৃত্যু ১৫০ হিজরী] ও বিশ রাকাআত তারাবীহের প্রবক্তা। [ফাতাওয়া কাজীখান-১/১১২} ইমাম মালিক রহঃ এর একটি বক্তব্য বিশ রাকাআতের পক্ষে, দ্বিতীয় বক্তব্য ৩৬ রাকাআতের পক্ষে। [যাতে বিশ তারাবীহ আর ১৬ রাকাআত নফল] হেদায়াতুল মুজতাহিদ-১/১৬৭}

ইমাম শাফেয়ী রহঃ বিশ রাকাআতের প্রবক্তা। {আলমুগনী-২/১৬৭}

ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহঃ এর মুখতার বক্তব্যও বিশ রাকাআতের পক্ষে। [আলমুগনী-২/১৬৭}

চার মাযহাবের ফিক্বহের ইবারতের মাঝে কোন একটি ইবারতেও শুধু আট রাকাআত তারাবীহকে সুন্নত আর বিশ রাকাআতকে বিদআত বলা হয়নি।

সাহাবাগণের নিরবচ্ছিন্ন আমল ও ইজমার আলোকে
তারাবীহ নামায বিশ রাকাআত। সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুম থেকে এ আমলই সারা পৃথিবীতে চালু হয়েছে। যা আজও সারা পৃথিবীতে আমল হয়ে আসছে। কতিপয় আহলে হাদীস বন্ধুগন ব্যতীত মসজিদে নববী এবং বাইতুল্লাহসহ সারা পৃথিবীতে তা সকল মুসলমাগণ আমল করে আসছেন।

এ ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামের মাঝে আমলী ইজমা হয়েছিল।

ইবনে কুদামা হাম্বলী রহঃ [মৃত্যু ৫৯৫ হিজরী] আলমুগনী গ্রন্থের ২য় খন্ডের ১৬৭ নং পৃষ্ঠায়, আল্লামা কাশতাল্লানী শাফেয়ী রহঃ [মৃত্যু ৯২৩ হিজরী] “ইরশাদুস সারী” এর ৩য় খন্ডের ৫১৫ নং পৃষ্ঠায় বিশ রাকাআতের উপর সাহাবাগণের ইজমার কথা উল্লেখ করেছেন।

মোল্লা আলী কারী হানাফী রহঃ [মৃত্যু ১০১৪হিজরী] “শরহুন নুকায়া” এর ২য় খন্ডের ২৪১ পৃষ্ঠায় এবং আল্লামা সাইয়্যেদ মুরতাজা জুবাইদী [মৃত্যু-১২০৫ হিজরী] সাহেব “ইতহাফুল সাদাতুল মুত্তাকীন” কিতাবের ৩য় খন্ডের ৭০০ নং পৃষ্ঠায় সাহাবাগণের এ ইজমাকে নকল করেছেন।

উম্মতে মুসলিমার ইজমা
১২৮৪ হিজরীর ইংরেজ আমলের আগে পৃথিবীর কোন মসজিদে রমজানের পুরো মাস মসজিদে আট রাকাআত তারাবীহ জামাতের সাথে পড়ার কোন নজীর নেই। একটি মসজিদের নাম কোন আহলে হাদীস বন্ধু দেখাতে পারবেন না। না মসজিদে নববীতে কোনদিন আট রাকাআত তারাবীহ পড়া হয়েছে। না বাইতুল্লায়। না পৃথিবীর কোন মুসলিম পল্লিতে। রানী ভিক্টোরিয়ার আমলে সর্বপ্রথম এ বিদআতের সূচনা হয়।

এর আগে সমগ্র উম্মতে মুসলিমা ঐক্যমত্বের ভিত্তিতে ২০ রাকাআত ও এর চেয়ে বেশি রাকাআত তারাবীহ পড়ে আসছেন। বিস্তারিত জানতে বিশ রাকাআতের পক্ষে জ্বলন্ত প্রমান হিসেবে নিচে উপস্থাপিত শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে বিশ্বজুড়ে সমাদৃত বিখ্যাত কিতাবগুলো খুলে দেখুন-
১- মিরকাত-৩/১৯৪।
২- ইতহাফুল সাদাতিল মুত্তাকীন-৩/৪২২।
৩- আনারাতুল মাসাবীহ-১৮।
৪- হাশিয়ায়ে শরহে বেকায়া মাওলানা আব্দুল হাই লৌক্ষèবী রহঃ।
৫- উমদাতুল কারী-৫/২৬৭।
৬- ফাতাওয়ায়ে কাজীখান-১১০।
৭- আলমুগনী-১/৮০৩।
৮- শরহে মুকান্না’-১/৮৫২।
৯- শরহুল বুখারী লিলকাসতাল্লানী।
১০- আওযাজুল মাসালেক-১/৩৯০।
১১- শরহে নুকায়া-১০৪।
১২- আউনুল বারী-২/৩০৭।
১৩- কিতাবুল আজকার-৮৩।
১৪- ফাতহুল কাদীর-১/৪০৭।
১৫- আরফুশ শাজী-২৩০।
১৬- আলবাহরুর রায়েক-২/৬৬।
১৭- ফাতাওয়ায়ে শামী-১/৫১১।
১৮- বাদায়েউস সানায়ে-১/২৮৮।
১৯- আলমাসাবীহ-১৬।
২০- হালবী শরহে মুনিয়্যা-৩৮৮।

এবার আসুন ৮ রাকাআত নিয়ে একটু বিশ্লেষনে যাই-
৮ রাকাআত তারবীহের কোন প্রমাণ সহীহ হাদীস নেই।

৮ রাকাআত তারাবীহের পক্ষে আহলে হাদিস, সালাফী এবং গায়রে মুকাল্লিদ বন্ধুদের দলিলসমূহ:

১নং দলিল
عن أبي سلمة بن عبد الرحمن أنه أخبره : أنه سأل عائشة رضي الله عنها كيف كانت صلاة رسول الله صلى الله عليه و سلم في رمضان ؟ فقالت ما كان رسول الله صلى الله عليه و سلم يزيد في رمضان ولا في غيره على إحدى عشرة ركعة يصلي أربعا فلا تسل عن حسنهن وطولهن ثم يصلي أربعا فلا تسل عن حسنهن وطولهن ثم يصلي ثلاثا . قالت عائشة فقلت يارسول الله أتنام قبل أن توتر ؟ . فقال يا عائشة إن عيني تنامان ولا ينام قلبي (صحيح البخارى- أبواب التهجد، باب قيام النبي صلى الله عليه و سلم بالليل في رمضان وغيره1/154

হযরত আবু সালমা বিন আব্দুর রহমান থেকে বর্ণিত তিনি আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহার কাছে জানতে চান নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায কেমন হত রামাযান মাসে? তিনি বললেন-রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রামাযান ও রামাযান ছাড়া ১১ রাকাআত থেকে বাড়াতেন না। তিনি ৪ রাকাআত পড়তেন। তুমি এর সৌন্দর্য্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জানতে চেও না। তারপর পড়তেন ৪ রাকাআত। তুমি এর সৌন্দর্য্য ও দীর্ঘতা বিষয়ে জানতে চেও না, তারপর পড়তেন ৩ রাকাআত। হযরত আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা বলেন- তখন আমি বললাম- হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি বিতর পড়ার পূর্বে শুয়ে যান? তিনি বললেন-হে আয়েশা! নিশ্চয় আমার দু’চোখ ঘুমায় আমার কলব ঘুমায়না। (সহীহ বুখারী-১/১৫৪)

জবাব
১-
এই হাদিসে ইযতিরাব তথা অস্পষ্টতা ও পরস্পর বিরোধিতা থাকায় এ দিয়ে দলিল দেয়া ঠিক নয়। আল্লামা কুরতুবী রহঃ বলেন- আমি আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা এর এই বর্ণনাটি অনেক আহলে ইলমদের কাছে জিজ্ঞাসা করেছি। অনেকেই এতে অস্পষ্টতা ও পরস্পর বিরোধিতা আছে বলে মত প্রকাশ করেছেন। (ফাতহুল বারী শরুহুল বুখারী-৩/১৭)

২-
খোদ হযরত আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা থেকে ১৩ রাকাআত তারাবীহের কথা সহীহ সনদে বর্ণিত আছে। সুতরাং হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী অস্পষ্টতা ও পরস্পর বিরোধিতা দূর করতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন-“সঠিক কথা হল এ ব্যাপারে আমি যা উল্লেখ করেছি এগুলো সব ভিন্ন সময় ও ভিন্ন পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল” অর্থাৎ নবীজী একেক সময় একেক রাকাআত নামায পড়েছেন তারাবীহের ক্ষেত্রে।(ফাতহুল বারী-৩/১৭)

এর মাধ্যমে আহলে হাদিস বন্ধুদের “৮ রাকাআতের মাঝেই তারাবীহ নামায সীমাবদ্ধ এরচে’ বেশী তারাবীহ নামায নেই” এই দাবিটি বাতিল হয়ে যাচ্ছে। খোদ আহলে হাদিসদের আলেম মাওলানা আব্দুর রহমান মুবারকপুরী বলেন-নিশ্চয় একথা প্রমাণিত যে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১৩ রাকাআত তারাবীহ পড়েছেন ফজরের দু’রাকাআত সুন্নত ছাড়াই।(তুহফাতুল আহওয়াজী-২/৩)

৩-
এই হাদিস দ্বারা প্রমান হল, নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সালামে ৪, ৪ রাকাআত করে তারাবীহ আর শেষে এক সালামে ৩ রাকাত বিতর পড়েছেন, অথচ আহলে হাদিস বন্ধুেদের আমল দেখা যায়, এর সম্পূর্ন বিপরীত। তারা তারাবীহ দুই দুই রাকাআত করে পড়েন। আর বিতর এক রাকাআত বা তিন রাকাআত দুই সালামে পড়েন। সুতরাং, যেই হাদিস দলিলদাতাদের কাছে আমলহীন এর দ্বারা কি দলিল দেয়া যায়?

৪-
আসল কথা হল এই যে, এই হাদিসটি তাহাজ্জুদ নামাযের সাথে সংশ্লিষ্ট। এতে তারাবীহের কথা বর্ণিত নয়। নিম্নে এ ব্যাপারে কিছু প্রমাণ উপস্থাপন করা হল।

হাদিসটিতে মূলত তাহাজ্জুদের বর্ণনা এসেছে একথার দলিল

১-
হাদিসের শব্দ ما كان رسول الله صلى الله عليه و سلم يزيد في رمضان ولا في غيره (নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রামাযান ও রামাযান ছাড়া অন্য সময় বাড়ান না) এটাই বুঝাচ্ছে যে, প্রশ্নটি করা হয়েছিল রামাযান ছাড়া অন্য সময়ে যে নামায নবীজী পড়তেন তা রামযানে বাড়িয়ে দিতেন কি না? এই প্রশ্নটি এজন্য করা হয়েছে, যেহেতু বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রামাযানে আগের তুলনায় অনেক বেশি পরিমানে নামায পড়তেন ও ইবাদত করতেন, তাই এই প্রশ্নটি করাটা ছিল স্বাভাবিক। আর রামযান ছাড়া কি তারাবীহ আছে? যে রামাযানের আগেই তারাবীহ আর বিতর মিলিয়ে ১৩ রাকাত নবীজী পড়তেন? নাকি ওটা তাহাজ্জুদ? তাহাজ্জুদ হওয়াটাই কি সঙ্গত নয়? সুতরাং এটা স্পষ্টত: বুঝা যায়, তারাবীহ নয় প্রশ্ন করা হয়েছে তাহাজ্জুদ নিয়ে যে, নবীজী তাহাজ্জুদের নামায রামাযান ছাড়া যে ক’রাকাআত পড়তেন তা থেকে রামাযানে বাড়িয়ে পড়তেন কি না? এর জবাবে আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা বললেন- ১৩ রাকাআত থেকে বাড়াতেন না তাহাজ্জুদ নামায।

২-
এই হাদিসের শেষাংশে এই শব্দ আছে যে قالت عائشة فقلت يارسول الله أتنام قبل أن توتر ؟ (তারপর আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা বললেন- হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি বিতর পড়ার আগে ঘুমান?) এই বিষয়টি তারাবীহ এর ক্ষেত্রে কল্পনাতীত যে নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবীহ নামায পড়ে ঘুমিয়ে পড়েন আর সাহাবীরা বিতর পড়ার জন্য নবীজীর জন্য অপেক্ষমাণ থাকেন। বরং এটি তাহাজ্জুদ এর ক্ষেত্রে হওয়াটাই যুক্তিসঙ্গত নয় কি?

৩-
মুহাদ্দিসীনে কিরাম এই হাদিসকে তারাবীহ এর অধ্যায়ে উল্লেখ করেননি, বরং তাহাজ্জুদ অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন। ইমাম মুহাম্মদ বিন নসর মারওয়াজী তার কিতাব “কিয়ামুল লাইল” এর “عدد الركعات التى يقوم بها الامام للناس فى رمضان”(রামযানে ইমাম কত রাকাআত তারাবীহ পড়বে) অধ্যায়ে অনেক হাদিস আনলেও আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা থেকে বর্ণিত এই হাদিসটি সহীহ হওয়া সত্বেও তিনি আনেননি। সেই সাথে এদিকে কোন ইশারাও করেননি।

৪-
মুহাদ্দিসীনে কিরাম এই হাদিসকে তারাবীহ এর রাকাআত সংখ্যার অধ্যায়ের পরিবর্তে তাহাজ্জুদের অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন। যেমন ইমাম বুখারী রহঃ তার প্রণিত বুখারী শরীফে এই হাদিসটি নিম্ন বর্ণিত অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন-

(ক) বিতর অধ্যায়-(১/১৩৫)
(খ) নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রাতে (নামাযের উদ্দেশ্যে) দান্ডয়মানতা রামযানে ও রামযান ছাড়া-(১/১৫৪)
(গ) রামযানে (নামাযের উদ্দেশ্যে) দান্ডয়মানতার ফযীলত অধ্যায়-(১/২৬৯)
(ঘ) নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু’চোখ ঘুমায় মন ঘুমায়না-(১/৫০৩)

প্রথম অধ্যায়ে বিতরের রাকাআত সংখ্যা আর দ্বিতীয় অধ্যায়ে তাহাজ্জুদ রামাযানে বেশি পড়তেন কিনা তা জানা আর তৃতীয় অধ্যায়ে রামাযানে বেশি বেশি নামাযের ফযীলত আর চতুর্থ অধ্যায়ে নবীজী ঘুমালে যে তার অযু ভাঙ্গে না তার কারণ বর্ণনা করার জন্য হাদিস আনা হয়েছে। তারাবীহের রাকাআত সংখ্যা বুঝানোর জন্য কোথায় এসেছে এই হাদিস?

৫-
আল্লামা হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন- আর আমার কাছে এটি প্রকাশিত হয়েছে যে, ১১ রাকাআতের থেকে না বাড়ানোর রহস্য এটি যে, নিশ্চয় তাহাজ্জুদ ও বিতরের নামায রাতের নামাযের সাথে খাস। আর দিনের ফরয যোহর ৪ রাকাআত আর আসর সেটাও ৪ রাকাআত আর মাগরিব হল ৩ রাকাআত যা দিনের বিতর। সুতরাং সাযুজ্যতা হল- রাতের নামায দিনের নামাযরের মতই সংখ্যার দিক থেকে সংক্ষিপ্ত ও বিস্তারিতভাবে। আর ১৩ রাকাআতের ক্ষেত্রে সাযুজ্যতা হল- ফযরের নামায মিলানোর মাধ্যমে। কেননা এটি দিনের নামাযই তার পরবর্তী নামাযের জন্য।(ফাতহুল বারী শরহুল বুখারী-৩/১৭)

ইবনে হাজার রহঃ এর এই রহস্য বা হিকমত বর্ণনা কি বলছেনা এই হাদিস দ্বারা তাহাজ্জুদ উদ্দেশ্য তারাবীহ নামায নয়? এই বক্তব্যে তাহাজ্জুদের কথা স্পষ্টই উল্লেখ করলেন ইবনে হাজার রহঃ।

তাহাজ্জুদ ও তারাবীহের মাঝে পার্থক্য

আহলে হাদিস বন্ধুগন বলেন “তাহাজ্জুদ আর তারাবীহ একই”। তাদের এই দাবিটি ভুল প্রমানিত হয় নিম্নবর্ণিত কারণে

১-
তাহাজ্জুদের মাঝে ডাকাডাকি জায়েজ নয় তারাবীহতে জায়েজ।

২-
তারাবীহের সময় ঘুমানোর আগে তাহাজ্জুদের সময় নির্ধারিত নয় তবে উত্তম ঘুমের পর।

৩-
মুহাদ্দিসীনে কিরাম তাহাজ্জুদ ও তারাবীহের অধ্যায় হাদিসের কিতাবগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন করে সাজিয়ে কিতাবগুলো লিখেছেন।

৪-
তাহাজ্জুদ নামাযের হুকুম কুরআন দ্বারা প্রমাণিত যথা সূরা ইসারার ৭৯ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তায়ালা وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِ نَافِلَةً لَّكَ عَسَى أَن يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَّحْمُودًا অর্থাৎ আর রাতে তাহাজ্জুদ পড় এটি তোমার জন্য নফল, অচিরেই তোমাকে তোমার রব প্রশংসিত স্থানে অধিষ্ঠিত করবেন।

আর তারাবীহের ব্যাপারে আল্লাহর নবী বলেন- নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা রামযানের রোযা তোমাদের উপর ফরয করেছেন আর আমি তোমাদের উপর এতে কিয়াম করাকে সুন্নত করেছি (সুনানে নাসায়ী-১/৩০৮)

সুতরাং বুঝা গেল তাহাজ্জুদ আল্লাহর আয়াত আর তারাবীহ নবীজীর বক্তব্য দ্বারা প্রমাণিত।

৫-
তাহাজ্জুদের হুকুম মক্কায় হয়েছে আর তারাবীহের হুকুম মদীনায় হয়েছে।

৬-
ইমাম আহমাদ রহঃ ও তারাবীহ তাহাজ্জুদ আলাদা বিশ্বাস করতেন (মাকনা’-১৮৪)

৭-
ইমাম বুখারী রহঃ এর ক্ষেত্রে বর্ণিত তিনি রাতের প্রথমাংশে তার সাগরীদদের নিয়ে তারাবীহ পড়তেন আর শেষ রাতে একাকি তাহাজ্জুদ পড়তেন। (ইমাম বুখারী রহঃ এর জীবনী)

৮-
তাহাজ্জুদ এর নির্দিষ্ট রাকাআত সংখ্যা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত অর্থাৎ বিতরসহ বেশি থেকে বেশি ১৩ রাকাআত আর কমপক্ষে ৭ রাকাআত। আর তারাবীহ এর রাকাআত সংখ্যার ক্ষেত্রে খোদ আহলে হাদিস ভাইদের ইমামগনের স্বাক্ষ্য যে এর কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত নয়।

স্মর্তব্য
তারীখুল খুলাফা তথা খুলাফায়ে রাশেদীনের ইতিহাস অনুযায়ী হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু ১৫তম হিজরীতে তারাবীহ নামাযের জামাতের শুরু করেন। আর হযরত সাইয়্যেদা আয়শা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা ৫৭ হিজরীতে ইন্তেকাল করেছেন। পুরো ৪২ বছর আম্মাজান আয়শা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা হুজরার নিকটবর্তী মসজিদে নববীতে ২০ রাকাআত তারাবীহের বিদআত জারী থাকল, অথচ যেই আম্মাজান আয়শা সিদ্দিকা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা নিজেই রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, যে ব্যক্তি দ্বীনের মাঝে দ্বীন হিসেবে নতুন বিষয় উদ্ভাবন করবে তার সে বিষয় পরিত্যাজ্য। [বুখারী, মুসলিম] সেই আয়শা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা থেকে একথা প্রমানিত নয় যে, তিনি ৪২ বছরের মাঝে কোন দিন তাহাজ্জুদওয়ালী হাদীসটিকে বিশ রাকাআত তারাবীহের বিরুদ্ধে দলীল হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। এখন পথ দুইটি। হয়তো এটা মানা হবে যে, এ হাদীসের সাথে তারাবীহ বিশ রাকাআতের কোন সম্পর্ক নেই। যা আয়শা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা ভাল করেই বুঝতে পেরেছেন। তাই তিনি কোন কথাই বলেন নি মসজিদে নববীতে বিশ রাকাআত তারাবীহ হতে দেখে। কিংবা আম্মাজান আয়শা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহা তার বর্ণিত হাদীসটিকে বিশ রাকাআত তারাবীহের বিরোধী মনে করতেন, কিন্তু তার মনে সুন্নতের মোহাব্বত আর বিদআতের প্রতি এতটুকু ঘৃণা ছিল না, যতটুকু আজকালকার ধার্মিক আহলে হাদীস আর গায়রে মুকাল্লিদ কিংবা সালাফী ভাইদের রয়েছে। (নাউজুবিল্লাহ)। এমনটি কেবলমাত্র রাফেজী শিয়ারাই বলতে পারেন। অন্য কেউ এমন কথা বলতে পারে না।

২ নং দলিল
عن جابر بن عبد الله قال : صلى بنا رسول الله صلى الله عليه و سلم في رمضان ثمان ركعات والوتر فلما كان من القابلة اجتمعنا في المسجد ورجونا أن يخرج إلينا فلم نزل في المسجد حتى أصبحنا فدخلنا على رسول الله صلى الله عليه و سلم فقلنا له : يا رسول الله رجونا أن تخرج إلينا فتصل بنا فقال : كرهت أن يكتب عليكم الوتر (قيام الليل-90)

হযরত জাবের রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাথে রামযানে ৮ রাকাআত নামায ও বিতর নামায পড়লেন। তারপর যখন পরদিন হল আমরা মসজিদে একত্রিত হলাম এবং আকাংখা করলাম নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে আসবেন। আমরা মসজিদে অবস্থান করতে লাগলাম। প্রভাত হয়ে গেল। তখন আমরা গেলাম নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে। তাকে বললাম- হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আকাংখী ছিলাম আপনি আমাদের কাছে যাবেন এবং আমাদের নিয়ে নামায পড়বেন, তখন তিনি বললেন- আমি এটি পছন্দ করছিলাম না যে, তোমাদের উপর বিতর ফরয হয়ে যাক। (কিয়ামুল লাইল-৯০)

জবাব
এই হাদিসটি নিয়ে আহলে হাদিস ভাইদের সবচে’ বেশি খুশি হতে দেখা যায়। অথচ আশ্চর্যের বিষয় হল, এই হাদিসটি দুর্বল। শুধু একজন নয় এই হাদিসের তিনজন রাবীর ক্ষেত্রে মুহাদ্দিসীনে কিরাম বলেছেন তারা গ্রহণযোগ্য নন। আসুন, দেখি- মুহাদ্দিসীনে কিরাম কি বলেন এই হাদিসের বর্ণনাকারীদের ব্যাপারে।

ইবনে হুমাইদ রাজী
১. হাফেজ জাহাবী রহঃ বলেন- তিনি দুর্বল
২. ইয়াকুব বিন শি’বা রহঃ বলেন- তিনি অনেক অগ্রহণীয় হাদিস বর্ণনা করেন।
৩. ইমাম বুখারী রহঃ বলেন- এতে আপত্তি আছে।
৪. আবু জুরআ রহঃ বলেন- তিনি মিথ্যাবাদী।
৫. ইসহাক কু’সজ রহঃ বলেন- আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি তিনি মিথ্যাবাদী।
৬. সালেহ জাযরাহ রহঃ বলেন- প্রত্যেক বিষয়ে সে হাদিস বর্ণনা করে। আল্লাহর উপর অধিক অপবাদ আরোপকারী আমি তাকে ছাড়া কাউকে দেখিনি। সে লোকদের হাদিস পরিবর্তন করে ফেলে।
৭. আল্লামা ইবনে খারাশ রহঃ বলেন- আল্লাহর কসম সে মিথ্যাবাদী
৮. ইমাম নাসায়ী রহঃ বলেন- সে গ্রহণযোগ্য নয়। (মিযানুল ই’তিদাল-৩/৪৯-৫০)

ইয়াকুব বিন আব্দুল্লাহ আশআরী
ইমাম দারা কুতনী রহঃ বলেন- সে শক্তিশালী নয় (মিযানুল ই’তিদাল-৩/৩২৪)

ঈসা বিন জারিয়া
১. আল্লামা ইয়াহইয়া বিন মায়ীন রহঃ বলেন- তার কাছে অগ্রহণীয় হাদিস আছে।
২. ইমাম নাসায়ী বলেন- তার হাদিস অগ্রহণীয়।
৩. ইমাম নাসায়ী বলেন- তার হাদিস পরিত্যাজ্য।
৪. আবু দাউদ রহঃ বলেন- তার হাদিস অগ্রহণীয়।
৫. আল্লামা জাহাবী বলেন- তিনি দুর্বলদের মাঝে শামীল (মিযানুল ই’তিদাল-২/৩১১)

এছাড়া এ হাদিসটি “বুলুগুল মারাম” কিতাবে হযরত জাবের থেকেই বর্ণিত কিন্তু সেখানে রাকাআত সংখ্যার কথা উল্লেখ নেই। দেখুন বুলুগুল মারাম-৪২-৪৩।

এছাড়াও এ হাদিসে আরেকটি সমস্যা আছে, তাহল- এই হাদিসে বিতর ফরয হবার আশংকার কথা বলা হয়েছে অথচ অন্য সহীহ হাদিসে তারাবীহ ফরয হয়ে যাবার আশংকা উল্লেখ করা হয়েছে। (মিযানুল ই’তিদাল-২/৪২-৪৩)

আরেকটি বিষয় হল, এতে সর্বদা আট রাকাআত পড়ার কোন কথা উল্লেখ নেই। যা সুন্নত হওয়ার জন্য শর্ত।

এছাড়া হযরত জাবের রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু ইন্তেকাল করেছেন ৭০ হিজরীর পর মদীনায়। কমপক্ষে ৫৫ বছর যাবত তার সামনে মদীনা মুনাওয়ারায় মসজিদে নববীতে বিশ রাকাআতের কথিত বিদআত চালু ছিল। আর হযরত জাবের রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু নিজের জবানে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণিত যে, شر الأمور محداثاتها وكل محدثة بدعة وكل بدعة ضلالة وكل ضلالة فى النار তথা প্রত্যেক নব উদ্ভুত ধর্মীয় বিষয় বিদআত। আর প্রতিটি বিদআত পথভ্রষ্টতা, আর প্রতিটি পথভ্রষ্টতা জাহান্নামী। {নাসায়ী} কিন্তু তারপরও কমপক্ষে ৫৫ বছর যাবত হযরত জাবের রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু মসজিদে নববীতে এ বিদআত চলতে দেখেছেন। অথচ সুন্নতের হাদীস তার সামনে ছিল। যা তিনি প্রকাশ্যে না বলে কেবল ঈসা বিন জারিয়ার কানে কানে বলেছেন? আর তিনি এ আমানত এক শিয়া ইয়াকুব বিন আব্দুল্লাহর কাছে বলেছেন। ব্যস এতটুকুই?!

হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর জঈফ হাদীসটি দিয়ে কী প্রমাণিত হয়? এর দ্বারা একাথাতো প্রমাণিত হয় না যে, সকল লোকেরা যখন বিশ রাকাআত তারাবীহ পড়তেন, তখন হযরত জাবের রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু আট রাকাত পড়ে মসজিদ থেকে বেরিয়ে গেছেন। এরকম কোন বর্ণনা কি আছে? থাকলে গায়রে মুকাল্লিদ ভাইয়েরা পেশ করার সাহস রাখেন কি? দয়া করে যে কুরআন হাদিসের দোহাই আপনারা দিয়ে থাকেন, সেই কুরআনের মালিক মহান আল্লাহকে ভয় করুন। হাদিসের উৎস ভূমি প্রিয় রাসূলের সাথী মহান সাহাবী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুমগনকে সম্মান করুন। তাহলে স্বয়ং রাসূল পাককেই সম্মান করা হবে। আর মেহেরবানী করে সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুম থেকে বড় আল্লামা হওয়ার দাবী পরিহার করুন। আল্লাহ তাআলা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নতের উপর আমল এবং তা প্রচারের তৌফিক সকলকে দান করুন। আমীন।

৩ নং দলিল
و حدثني عن مالك عن محمد بن يوسف عن السائب بن يزيد أنه قال أمر عمر بن الخطاب أبي بن كعب وتميما الداري أن يقوما للناس بإحدى عشرة ركعة ( موطأ مالك-98

মুহাম্মদ বিন ইউসুফ সায়েব বিন ইয়াজীদ রহঃ থেকে বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয় ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু ওবাই বিন কাব রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু ও তামীমে দারী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু কে মানুষের সাথে ১১ রাকাআত নামায পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।(মুয়াত্তা মালিক-৯৮)

জবাব
এই হাদিস দিয়েও দলিল দেয়া ঠিক নয়। কারণ-

১-
হাদিসটির শব্দে পরস্পর বিরোধিতা রয়েছে। যেমন এই হাদিসের সূত্রের একজন বর্ণনাকারী মুহাম্মদ বিন ইউসুফ। তার সাগরীদ ৫ জন। তার মধ্যে ৩ জন ১১ রাকাআত, আর ১ জন ১৩ রাকাআত ও ১ জন ২১ রাকাআতের বর্ণনা নকল করেন। এছাড়া যারা ১১ রাকাআতের কথা বর্ণনা করেন তাদের বর্ণনার শব্দেও রয়েছে বিস্তর ফারাক। যথা-

ক.
ইমাম মালিক এনেছেন- ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু, উবাই বিন কাব রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু ও তামীমে দারী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু কে মানুষের সাথ ১১ রাকাআত নামায পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

খ.
হযরত ইয়াহইয়া আল কাত্তান বর্ণনা করেন- ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু, উবাই বিন কাব ও তামিমে দারী এর কাছে লোকদের একত্র করেন। আর তারা দু’জন ১১ রাকাআত নামায পড়াতেন।

গ.
আব্দুল আজীজ বিন মুহাম্মদ রহঃ এর বর্ণনায় এসেছে- আমরা হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর আমলে ১১ রাকাআত নামায পড়তাম।

বর্ণনাকারীর বর্ণনার ঠিক নেই, সেই সাথে এগার রাকাআতের কথা বলেছেন তাদের বক্তব্যটিও পরস্পর বিরোধী। এমন বর্ণনা গ্রহণযোগ্য নয়, বরং পরিত্যাজ্য। (ইলাউস সুনান-৭/৪৮)

২-
এই বর্ণনাটি হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু থেকে আরেকটি সহীহ ও শক্তিশালী বর্ণনার বিপরীত। হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু থেকে ২০ রাকাআত তারাবীহের কথা ইমাম মালিক রাহঃ তার মুয়াত্তার ৪০ নং পৃষ্ঠায় ও হাফেজ ইবনে হাজার ফাতহুল বারীর ৪ নং খন্ডের ২১৯ নং পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেন। সুতরাং বুঝা গেল, এই বর্ণনাটি আমলযোগ্য নয়।

৩-
ইমাম মালিক রাহঃ নিজেই এই বর্ণনাটি আমলযোগ্য মনে করেন নি, তাই তিনি নিজে ৮ রাকাআতের কথা বলেন না।

৪-
যদি হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু থেকে ১১ রাকাআতের বর্ণনাটি সহীহ হত তাহলে পরবর্তীতে হযরত উসমান রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু ও আলী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু থেকে এরকম বর্ণনা ও আমল প্রমাণিত হত, অথচ তাদের থেকে এরকম বর্ণনা প্রমাণিত নয়।


এটাও হতে পারে যে, প্রথমে হযরত ওমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর কাছে নবীজী থেকে ৮ রাকাআতের বর্ণনা এসেছিল কিন্তু পরবর্তীতে ২০ রাকাআতের বর্ণনাটি পৌঁছলে তিনি ৮ রাকাআতের বর্ণনাটি পরিত্যাগ করেন।

এই সকল কারণে এই হাদিসটি আমলযোগ্য হিসেবে বাকি থাকে না।

তারাবীহ বিষয়ে আহলে হাদিস ভাইদের কাছে মানব্যর ব্যক্তিদের মতামত

১-
শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেন- আর যারা ধারণা করে যে, নিশ্চয় রামযানের দন্ডায়মানতার নির্দিষ্ট সংখ্যা প্রমাণিত আছে নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যার উপর বাড়ানো কমানো যাবেনা সে ভুলের মাঝে আছে।(ফাতওয়া ইবনে তাইমিয়া-২/৪০১)


আল্লামা ইবনে সুবকী রহঃ বলেন- জেনে রাখ! নিশ্চয় রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বিশ রাকাত তারাবীহ পড়েছেন না তার চে’ কম পড়েছেন তা তার থেকে বর্ণিত নেই (শরহুল মিনহাজ)


আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী রহঃ বলেন- নিশ্চয় উলামায়ে কিরাম মতানৈক্য করেছেন এর সংখ্যার ক্ষেত্রে, যদি তা নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত বিষয় হত তাহলে তাতে মতবিরোধ হত না। (আল মিসবাহ-৭৪)


মাওলানা ওয়াহীদুজ্জামান বলেন- তারাবীহ নামাযের নির্দিষ্ট রাকাআত নেই। ( নুজুলুল আবরার-১/১২৬)


আবুল খায়ের নুরুল হাসান খাঁ বলেন- মোটকথা হল নির্দিষ্ট সংখ্যা নবী পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত নয়। (আল আরফুল জাদি-৮৪)


নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান বলেন- নিশ্চয় তারাবীহ নামায সুন্নত মৌলিকভাবে। যেহেতু নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা রাতে পড়তেন, তারপরে তা ছেড়ে দিয়েছেন উম্মতের প্রতি দরদে, যেন তা ফরয না হয়ে যায়, আর এর কোন নির্দিষ্ট রাকাআতের কথা সহীহ হাদিসে নেই, কিন্তু নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একথা জানা যায় যে, তিনি রামাযানে এত ইবাদত করতেন যা অন্য সময়ে করতেন না। (আল ইনতিকাদুর রাজী’-৬১)

ঠান্ডা মাথায় উল্লেখিত আলোচনা পড়লে আশা করি সবার কাছে স্পষ্ট হবে ৮ রাকাআত তারাবীহের দাবিটি একটি ভুল দাবি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের রামাযানের এই পবিত্র আমল তারাবীহ ২০ রাকাআত আদায় করে তার নৈকট্য হাসিল করার তৌফিক দান করুন।

তারাবীহ নামায আট রাকাআত দাবিদারদের কাছে আমাদের কয়েকটি প্রশ্ন
রমজানুল মুবারকের বরকত থেকে বঞ্চিত থাকা এবং অন্যদের বঞ্চিত রাখাকে 'হাদীসের উপর আমল' নাম দেয়া হয়েছে। আপনি তাদের সাথে কথা বলে দেখুন, পরিস্কার ভাষায় আপনাকে বলে দিবে যে, “আমরা নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ছাড়া কাউকে মানি না। আমরা শুধুমাত্র মুহাম্মদী, আমরা না আবু বকরী, না ওমরী, না হানাফী না শাফেয়ী। আমাদের প্রতিটি কাজের উপর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিল মারা আছে”। এরকম স্লোগানধারী আট রাকাআতী ভাইদের কাছে আমাদের বিনীত জিজ্ঞাসা-


রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা জীবনের মাঝে শুধুমাত্র তিন রাত এবং তাও রমজানের শেষ দশদিনের ভেতরে জামাআতের সাথে তারাবীহ নামায পড়েছেন। এরপর আর পড়েন নি। আপনারা রমজানের চাঁদ উঠা থেকে নিয়ে প্রতি বছর পুরো রমজান মাস তারাবীহ নামায আদায় করে থাকেন, এটাতো হাদীসের খেলাফ। এ বিষয়ে তো আপনারা মুহাম্মদী রইলেন না। কারণ, এর উপর সর্বদা আমল করার বিষয়টি সাহাবায়ে কেরাম থেকে প্রমাণিত। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে নয়। তাই আপনারা জীবনে শুধু তিন রাত তারাবীহ জামাতের সাথে পড়ে সারা জীবন ঘরে আরামে বসে থাকুন। যেন বাকি লোকেরা শান্তির সাথে রমজানের বরকত হাসিল করতে পারে। কিন্তু আপনারা এক্ষেত্রে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ ছেড়ে দেন কেন? কেন?? কেন??? কেন????


আপনারা প্রত্যেক বছর পুরো মাস মসজিদে এসে তারাবীহ নামায পড়ে থাকেন। এটাতো আপনাদের তরীকা অনুযায়ী মুহাম্মদী পদ্ধতি নয়। কেননা, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবীহ নামায তিন দিন পড়ার পর তৃতীয় দিন বলেছেনঃ

অর্থাৎ হে লোক সকল, তোমরা নিজেদের ঘরে নামায পড়, নিশ্চয় ফরজ নামায ছাড়া বাকি নামায স্বীয় ঘরে পড়া উত্তম। {বুখারী-১/১০১, মুসলিম-১/২৬৬}

তাই ঘর রেখে আপনারা মসজিদে কেন? কেন?? কেন??? কেন????


এ নামাযের নাম তারাবীহ বলে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রেখেছেন না সাহাবায়ে কেরাম? এ নামাযকে তারাবীহ যারা বলে থাকেন, তারা কি মুহাম্মদী না অন্য কিছু?


আপনারা সারা মাস ইশার নামাযের পরপরই তারাবীহ নামায পড়ে থাকেন। এর কোন প্রমাণ তো হাদীসের কিতাবে নেই। এ আমলের দ্বারাও আপনারা না মুহাম্মদী থাকেন, না আহলে হাদীস থাকেন। তাহলে আপনারা কি?


পুরো রমজান মাসে আপনারা তারাবীহ নামাযের পর জামাতের সাথে বিতির নামায পড়ে থাকেন, এক্ষেত্রেও তো আপনারা না মুহাম্মদী, না আহলে হাদীস থাকেন। কারণ কি?


রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারাবীহ নামাযে না নিজে পুরো কুরআন খতম করেছেন, না অন্যদের হুকুম দিয়েছেন। আপনাদের কিছু মসজিদে যে, তারাবীহ নামাজে পুরো কুরআনের খতম হয়, শুধু তাই নয়, কিছু মসজিদে তো কুরআন খতমের জন্য নামাযে কুরআন শরীফ উঠিয়ে দেখে দেখে পর্যন্ত পড়া হয়, এ আমলের ক্ষেত্রে না আপনারা মুহাম্মদী থাকেন, আর না আহলে হাদীস। কারণ কি?


আপনারা যে রমজানের সারা মাস আট রাকাআত তারাবীহ আর এক রাকাআত বিতির পড়ে থাকেন এ নয় রাকাআতের কোন হাদীস আছে? দেখাতে পারবেন?


আপনারা যেহেতু বলে থাকেন যে, তারাবীহ আর তাহাজ্জুদ একই নামাযের দু’টি নাম। এ দুই নাম মূলত: এক নামাযের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য এরকম বক্তব্য নির্ভর একটি সহীহ হাদীস পেশ করতে পারবেন?

এক্ষেত্রে আপনারা না কোন হাদীস পেশ করেন, না রমজান ছাড়া এ তারাবীহ/ তাহাজ্জুদ নামায এতটা গুরুত্ব দিয়ে পড়ে থাকেন। রমজান ও রমজান ছাড়া একই নামাযের এ পার্থক্য কোন সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত?


আপনারা যে বলে থাকেন যে, এগার মাস এ নামায নফল থাকে। আর বারতম মাস তথা রমজানে এসে সেটা সুন্নতে মুআক্কাদা হয়ে যায়। এগার মাস এ নামাযের সময় হল শেষ রাত, আর বারতম মাসে এর সময় শুরু রাতেও হয়।

এগার মাস এটাকে ঘরে পড়া উত্তম, আর বারতম মাসে এসে এটাকে মসজিদে পড়া উত্তম। এগার মাসে এ নামায একা একা পড়া উত্তম আর রমজান মাসে এসে তা জামাতের সাথে পড়া উত্তম।

এসব বক্তব্য কি আপনাদের 'মনগড়া হাদীস' থেকে প্রমাণিত না রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীস থেকে?

এসব বক্তব্যকে যখন আপনারা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীস থেকে প্রমাণ করতে পারেন না, তাহলে আপনারা না মুহাম্মদী, না আহলে হাদীস। বরং আহলে নফস সাব্যস্ত হচ্ছেন না?

১০
আপনারা আট রাকাআত তারাবীহকে জামাআতের সাথে পুরো মাসে মসজিদে ইশার পরপর পড়াকে যে সুন্নতে মুআক্কাদা বলে থাকেন, আর বিশ রাকাআত তারাবীহকে বিদআত ও হারাম বলে থাকেন, এ ব্যাপারেও আপনাদের কাছে কোন হাদিস নেই। বরং আজ পর্যন্ত ‘সুন্নতে মুআক্কাদা’, ‘বিদআত’, ‘হারাম’, ‘সহীহ’, ‘হাদীসে সহীহ’, ‘হাদীসে জঈফ’ এর কোন পূর্ণাঙ্গ সংজ্ঞা আপনারা কুরআন ও হাদিস থেকে দেখাতে পারেন নি। যখন কোন স্থানে আটকে যান, তখন কঠিন প্রয়োজনের সময় এই বিদআতী মাযহাবপন্থীদের উদ্ভাবিত ঊসুলে ফিক্বহ বা উসুলে হাদীস থেকে চুরি করে নেয়া সংজ্ঞা নিয়ে ঝান্ডা উড়াতে থাকেন। তারপরও আপনারা কি করে মুহাম্মদী আর আহলে হাদিস বাকি থাকেন?

বিনীতভাবে বলছি, যদি একথা মেনেও নেই যে, আপনাদের কাছে বিশ রাকাআত তারবীহ আদায় করা বিদআতি কর্ম ও হারাম কাজ হওয়ার উপর কোন দলীলও থাকে, তবুও প্রশ্ন হল, আপনারা যেখানে তারাবীহ বিষয়ে ৯/১০ টি পয়েন্টে মুহাম্মদী নন, ৯/১০ টি পয়েন্টে আহলে হাদীস নন। এ দশ-দশটি বিষয়ে আপনারা নিজেরা মুহাম্মদী বা আহলে হাদিস বাকি থাকেন না, সেখানে নিজেদের নাম আহলে হাদিস রাখা বা হাদিসের উপর আমলকারী বলাটা একটি জঘন্য মিথ্যাচার নয় কি? হ্যাঁ, তবে আপনাদের যদি নফসের হাদিসের পূজারী বলা হয়, তবে একথা অবশ্য সঠিক হয়।

আহলে হাদিস ভাইদের প্রতি বিনয়ের সাথে উদাত্ত আহবান রাখছি, বর্নিত এই ১০ টি বিষয়ে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একটি সহীহ হাদীস পেশ করে নিজেদের খাঁটি আহলে হাদিস হিসেবে প্রমাণ করুন।

যদি না পারেন, তাহলে ২০ রাকাআত তারাবীহকে বিদআত বলার মিথ্যাচার থেকে দয়া করে বিরত থাকুন।

আল্লাহ তাআলা আমাদের ইবাদতের মাসে ধোঁকাবাজদের ধোঁকায় পড়ে ইবাদত থেকে গাফিল হয়ে আট রাকাআত পড়ে মসজিদ থেকে চোরের মত চুপিসারে বেরিয়ে যাওয়ার বে-আদবী কর্ম থেকে হিফাযত করুন। অন্য অধিক নামাজ আদায়ে অভ্যস্ত মুসলিম ভাইদের মনে ওসওয়াসা সৃষ্টিকারী সকল বিষয় পরিহার করে সহিহ আমল করার তাওফীক দান করুন। জ্বিন শয়তান, মানব শয়তানের কবল থেকে মুসলিম উম্মাহকে হিফাযত করুন। আমীন। ছুম্মা আমীন। ইয়া রব্বাল আলামীন।


নোট:
আরও বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে দেয়া বইটির ৩৮৭-৪৩৪ পৃষ্ঠা দেখে নিতে পারেন।

Dolilshoho-namajer-masayel(Almodina.com).pdf

কৈফিয়ত:
ইচ্ছে এবং চেষ্টায় ত্রুটি ছিল না। তবু লেখাটিকে আকারে এরচে' ছোট করা সম্ভব হয় নি। কষ্ট করে পুরো লেখাটি পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা সীমাহীন। সকলের প্রতি মাহে রমজানের শুভেচ্ছা আবারও। ভাল থাকুন অনুক্ষন।

লেখাটি তৈরিতে কৃতজ্ঞতা:
১। তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা কর্তৃক প্রকাশিত এই বিষয়ক নিবন্ধ।
২। মাওলানা আব্দুল মতিন রচিত দলিলসহ নামাজের মাসায়েল।
৩। আল কুরআন।
৪। ফাতহুল বারী শরহুল বুখারী
৫। বুখারি শরীফ।
৬। তিরমিজি শরীফ।
৭। মুসলিম শরীফ।
৮। আবু দাউদ শরীফ।
৯। নাসায়ী শরীফ।
১০। ইবনে মাজাহ শরীফ।
১১। সহি আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব।
১২। মুসনাদ আহমদ।
১৩। কুরআনের আলো ডট কম ওয়েসাইট।
১৪। ফাতওয়া ইবনে তাইমিয়া।
১৫। নুজুলুল আবরার।
১৬। আল ইনতিকাদুর রাজী’।
১৭। আল মিসবাহ।
১৮। ইলাউস সুনান।
১৯। আল আরফুল জাদি।
২০। শরহুল মিনহাজ।
২১। আল বুলুগুল মারাম।
২২। মিযানুল ই’তিদাল।
২৩। তুহফাতুল আহওয়াজী।
২৪। আলমুগনী।
২৫। ইরশাদুস সারী।
২৬। শরহুন নুকায়া।
২৭। ইতহাফুল সাদাতুল মুত্তাকীন।
২৮। কিতাবুল আসার লিআবী ইউসুফ।
২৯। মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা।
৩০। মুখতাসার কিয়ামুল লাইল।
৩১। আল বাহরুর রায়েক।
৩২। মারিফাতুস সুনান ওয়াল আসার।
৩৩। সিয়ারু আলামিন নুবালা।
৩৪। কানযুল উম্মাল।
৩৫। শরহু মুয়াত্তা।
৩৬। সুনানু বাইহাকি।

মন্তব্য ৬৩ টি রেটিং +১২/-০

মন্তব্য (৬৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৮

নতুন নকিব বলেছেন:



এই পোস্টটি প্রিয় ব্লগার মোস্তফা সোহেল ভাইকে উৎসর্গ করা হল।

২| ৩০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৬

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: সুন্দর পোস্টের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ

আমরা ছোট বেলা থেকেই ২০ রাকাত তারাবীহ নামাজ পড়ি আলহামদুলিল্লাহ

৩০ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:২৪

নতুন নকিব বলেছেন:



মন্তব্যে অভিনন্দন অপরিসীম।

"আমরা ছোট বেলা থেকেই ২০ রাকাত তারাবীহ নামাজ পড়ি, আলহামদুলিল্লাহ।''

মাশাআল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহুম্মা আমীন।

৩| ৩০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১:০৭

লর্ড অফ দ্য ফ্লাইস বলেছেন: তারাবি ২০ রাকাত বাচ্চারাও জানে।
৮ রাকাত তারাবি আবার কোথা থেকে আসল?

৩০ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:২৮

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় BEELZEBUB,
দারুন মন্তব্য আপনার!

"তারাবি ২০ রাকাত বাচ্চারাও জানে।"

জানলে কি হবে? তারাও জানেন বৈকি! মানতে হলে তো আগে মান্য করার মানসিকতা প্রয়োজন। সমস্যাটা এখন ফেরকাবাজীতে পরিনত হয়েছে। সত্য জেনেও দেখবেন, তারা তাদের পূর্বসূরী ৮ রাকাআতের প্রবক্তাদের অনুসরন ত্যাগ করতে পারছেন না।

আবারও রমজানুল মোবারক!
ভাল থাকবেন নিরন্তর।

৪| ৩০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১:২৮

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: লেখাটি প্রিয়তে নিলাম। পরে আবার পড়ব।
এবার আমি কিছু কথা বলি নকিব ভাই, হাদিস কোরান সম্মন্ধে আমার জ্ঞান খুবই কম।
তারাবীর নামাজ আট-না বিশ রাকাত এই নিয়ে মত বিরোধ আছে আমাদের সমাজে।
কেই বলে আট রাকাত পড়লেও হবে আবার কেউ বলে বিশ রাকাত পড়লেও হবে।
গত বছর কি তার আগের বছর এটিএন বাংলায় রমজান মাসে তারেক মুনোয়ার এর একটি অনুষ্ঠান দেখেছিলাম । তিনি বলেছিলেন তারাবী আট রাকাত।
আর একটি কথা , আমি কিন্তু জন্মসূত্রে আহলে হাদীস। আপনি যে ভাবে ''কথিত আহলে হাদীস'' কথাটি বলেছেন তাতে করে মনে হচ্ছে আহলে হাদীস দের উপর আপনার ক্রোধ আছে।
আমি কিন্তু এই সব আহলে হাদীস বা হানাফি কিছুই মানি না। আমার কাছে একজন মানুষের বড় পরিচয় সে একজন মানুষ। তার পর ধর্ম হিসেবে মুসলিম হলে তাকে জাত ভাই মনে করি। আমরা কিন্তু সকলেই আগে আল্লাহকে বিশ্বাস করি। তারপর তার রাসূলকে। এখন আমরা যদি আল্লাহর দেয়া কোরান ও রাসূলের মূখ নিসৃত বানী অনুসরন করি তাহলে তো কোন সমস্যা থাকেনা। তবে সমস্যা হল আমরা বেশির ভাগ মানুষ সাধারন গোত্রের । আর তাই কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা সেটা বেশির ভাগ সময়ই বুঝতে পারিনা।
যায় হোক সুন্দর আলোচনার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। পরে আবার আসছি এখন নামাযে যায়।

৩০ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৩

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় সোহেল ভাই,
লেখাটি প্রিয়তে নেয়ায় কৃতজ্ঞতা।

জন্মসূত্রে হানাফি কিংবা আহলে হাদিস হওয়াতে কোন সমস্যা নেই। সোহেল ভাই, সত্যিকারার্থে সমস্যা হচ্ছে, অামাদের মানসিকতার ভেতরে। পরস্পর একে অপরের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ দিনে দিনে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আপনি কষ্ট নিবেন না প্লিজ, তথাকথিত বলার পেছনে কিছু কারন রয়েছে। প্রখ্যাত তাবেয়ী ইমাম আবু হানিফা রহ. এর নামে এই দলের ব্যক্তিবর্গ যেসব অমূলক, ভ্রান্তিপূর্ন অশালীন উদ্ভট কথা বার্তা ছড়িয়েছেন, দেখলে আপনিও আশ্চর্য হবেন। নিজেদের মতকে সহীহ প্রমানের কসরত করতে গিয়ে মিথ্যাচারের সীমা লঙ্ঘন করে ইসলামের ইতিহাসকে স্থানে স্থানে বিকৃত করেছেন তারা। মিথ্যাচারপূর্ন পুস্তিকা ছাপিয়ে তাদের ফ্রি বিতরন করতেও দেখেছি। ইবনে তাইমিয়া রহ. তাদের দৃষ্টিতে অনন্য। বেশ ভাল মানুন তাকে। কিন্তু, তাকে মানতে গিয়ে আরেক মহান ব্যক্তিকে নিয়ে মিথ্যাচার করতে হবে কেন?

আপনার উদার মানসিকতাকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আপনার কথাগুলো অনেক ভাল লেগেছে। তারপরেও আপনার আপত্তিটি আমি গুরুত্বের সাথে নিলাম, যাতে আপনার কষ্ট বিদূরিত হয়- সেরকম কিছু করার প্রচেষ্টা থাকবে।

সাথে থাকার জন্য, পাশে থেকে প্রেরনা দানের জন্য অসংখ্য কৃতজ্ঞতা আবারও। আর এই পোস্টটিই তো আপনাকে উদ্দেশ্য করে।

ভাল থাকবেন ভাই।

৩১ শে মে, ২০১৭ সকাল ১১:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



সোহেল ভাই,
আপনার পরামর্শকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছু কারেকশন করেছিলাম। দয়া করে যদি পুরো পোস্টটিতে এখন যদি আরেকবার নজর বুলোতেন।

সাথে থাকায় কৃতজ্ঞতা অশেষ।

৫| ৩০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১:২৯

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালো লাগলো জানতে পেরে। অনেক কষ্টের পোষ্ট।

শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

৩১ শে মে, ২০১৭ সকাল ১০:০৬

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় কবি,
পাঠ ও মন্তব্য প্রেরনা নিশ্চয়ই।

আপনার জন্য্ও শুভাশিষ অশেষ।

৬| ৩০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১:৫৭

শাহজালাল হাওলাদার বলেছেন: সু প্রশস্ত তথ্য বহুল পোষ্টের জন্য আন্তরিক মুবারকবাদ।
বর্তমানে জাহিলদের ৮ রাকায়াত বাদিতা অনেক কমে গেছে, মাওলানা নুরুল ইসলাম অলিপুরি সহ বরেণ্য ওলামায়ে কেরাম এ প্রসঙ্গে বহুল প্রচারণা চালাচ্ছেন।

৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:০৭

নতুন নকিব বলেছেন:



মন্তব্যে আসায় আপ্লুত!

কেমন আছেন?

পাচ্ছি না কেন?

রেগুলার চাই।

ভাল থাকবেন।

৭| ৩০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ২:২৩

ধ্রুবক আলো বলেছেন: ভাই, ২০ রাকাতও পড়া যায়, ইমাম মালিকি(র) ইমাম আহমেদ (র) উনারা ৪০ রাকাতও পড়েছেন।
নবী করিম (সঃ) তাহাজ্জুদ নামাজ যে কয় রাকাত পড়তেন রমজান মাসে তারাবীহ সেই কয় রাকাত পড়তেন মানে ৮ রাকাত। নবী করীম সাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম তারাবীহ জামাতে মাত্র তিনদিন পড়েছেন। আর বাকি সময় বাড়িতেই পড়েছেন আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত।
কেউ যদি তারাবীহ ২০, ২২, ৪০ কিংবা ১০০ রাকাতও পড়ে সমস্যা নাই পড়া যাবে। তবে মনে রাখতে হবে নবী করীম(সঃ) ৮ রাকাতই পড়েছেন কিন্তু কোনো হাদিসে কম বা বেশি পড়া যাবে কিনা তা উল্লেখ নাই, তাই ২০ রাকাত বা তার কম/বেশি পড়া যাবে।

এখন কেউ যদি বলে ২০ রাকাত নয় ৮ রাকাতই পড়তে হবে তাহলে সে ভুল, যদি কেউ ৮ রাকাত নয় ২০ রাকাতই পড়তে হবে তাহলেও সে ভুল।
আশা করি এটা নিয়ে দ্বন্দ না করাই শ্রেয় হবে।
নিজেদের ভেতর দ্বন্দ রাখা ঠিক নয়, এই সকল দ্বন্দই আমাদের মুসলিমদের এক হতে দিচ্ছে না।

৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:১২

নতুন নকিব বলেছেন:



ধ্রুবক আলো ভাই,
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য আপনার অভ্যাস।
এখানেও তার স্বাক্ষর রয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ।

ভাই,
২০ রাকাআত ৪০ রাকাআত সব বাদ দিয়ে ৮ রাকাআতকে যখন একমাত্র সঠিক বলে ধরে নেয়া হয়, তখন নিরব থাকা যায় কিভাবে?

মূলত: দ্বন্দ-সঙ্ঘাত সৃষ্টির জন্য নয়, বিষয়টি ক্লিয়ার করার জন্যই দলিল প্রমানসহ এই লেখাটি।

আল্লাহ পাক আমাদের সঠিক পথে চলার এবং সঠিক সুন্নতের উপরে আমল করার তাওফিক দিন। আমীন।

৮| ৩০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ২:৫৮

সাঈদ মুহাম্মাদ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: চমৎকার সময়োপযোগী, তথ্যবহুল এবং গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট দেয়ার জন্য লেখককে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। এরপরও কিছু বেকুব ৮ রাকাত ৮ রাকাত করে ম্যাৎকার করতেই থাকবে। আল্লাহ তা'আলা সবাইকে বুঝার তাওফীক দান করুন।

৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:২৭

নতুন নকিব বলেছেন:



আশরাফ ভাই,
মন্তব্যে মোবারকবাদ।
আলহামদুলিল্লাহ। আমরা চাই সত্য সবার সামনে উদ্ভাসিত হোক। ২০ রাকাআত ৪০ রাকাআত কোনটাই যদি সহিহ হাদিসের আলোকে যুক্তিতে না টেকে আমরাও ৮ রাকাআতকে মনে প্রানে গ্রহন করব। কিন্তু, মিথ্যাচার মেনে নেয়া যায় না।

আল্লাহ পাক আমাদের সঠিক পথে চলার এবং সঠিক সুন্নতের উপরে আমল করার তাওফিক দিন। আমীন।

৯| ৩০ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:০০

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ধ্রুবক আলো সুন্দর মন্তব্য করেছেন।
আশা করি এটা নিয়ে দ্বন্দ না করাই শ্রেয় হবে।
নিজেদের ভেতর দ্বন্দ রাখা ঠিক নয়, এই সকল দ্বন্দই আমাদের মুসলিমদের এক হতে দিচ্ছে না।
মুসলিমদের ঝগড়া বিবাদের ভেতরে না যাওয়াই উত্তম।

৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৩০

নতুন নকিব বলেছেন:



পরামর্শ শ্রদ্ধার সাথে গ্রহন করা হল।

আল্লাহ পাক আমাদের সঠিক পথে চলার এবং সঠিক সুন্নতের উপরে আমল করার তাওফিক দিন। আমীন।

১০| ৩০ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:২৬

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: এই লেখাটি পড়লাম ভাল লাগল ,

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

আলেমদের ইজতিহাদনির্ভর মাসয়ালাগুলো নিয়ে কোন মুসলিমের সংবেদনশীল আচরণ করাকে আমরা সমীচীন মনে করি না। যে আচরণের কারণে মুসলমানদের মাঝে বিভেদ ও ফিতনা সৃষ্টি হয়।

শাইখ ইবনে উছাইমীন রহিমাহুল্লাহকে এমন ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় যিনি ইমামের সাথে ১০ রাকাত তারাবী নামায পড়ে বিতিরের নামাযের অপেক্ষায় বসে থাকেন, ইমামের সাথে অবশিষ্ট তারাবী নামায পড়েন না, তখন তিনি বলেন:

“এটি খুবই দুঃখজনক যে, আমরা মুসলিম উম্মাহর মধ্যে এমন একটি দল দেখি যারা ভিন্ন মতের সুযোগ আছে এমন বিষয় নিয়ে বিভেদ সৃষ্টি করেন। এই ভিন্ন মতকে তারা অন্তরগুলোর বিচ্ছেদের কারণ বানিয়ে ফেলেন। সাহাবীদের সময়েও এই উম্মতের মাঝে মতভেদ ছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁদের অন্তরগুলো ছিল ঐক্যবদ্ধ। তাই দ্বীনদারদের কর্তব্য, বিশেষভাবে যুব-সমাজের কর্তব্য হচ্ছে- ঐক্যবদ্ধ থাকা। কারণ শত্রুরা তাদেরকে নানারকম ফাঁদে ফেলানোর জন্য ওঁত পেতে বসে আছে।”[আশ-শারহুল মুমতি‘ (৪২২৫)]

এই মাসয়ালার ব্যাপারে দুই পক্ষই অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করে। প্রথম পক্ষের লোকেরা যারা ১১ রাকাতের বেশি তারাবী পড়েন তাদের আমলকে একেবারে অস্বীকার করে এ আমলকে বিদআত আখ্যায়িত করেন। আর দ্বিতীয় পক্ষের লোকেরা যারা শুধু ১১ রাকাতে সীমাবদ্ধ থাকেন তাদের আমলকে অস্বীকার করে বলেন: তারা ইজমা‘ এর খেলাফ করছে।

চলুন আমরা এ ব্যাপারে শাইখ ইবনে উছাইমীন রহিমাহুল্লাহ এর উপদেশ শুনি, বলেন:

“এক্ষেত্রে আমরা বলব: বাড়াবাড়ি বা শিথিলতা কোনটাই উচিত নয়। কেউ কেউ আছেন সুন্নাহ্ তে বর্ণিত সংখ্যা মানার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করেন এবং বলেন: সুন্নাহ্ তে যে সংখ্যার বর্ণনা এসেছে তা থেকে বাড়ানো নাজায়েয। যে ব্যক্তি সে সংখ্যার বেশী তারাবী পড়ে তার কঠোর বিরোধিতা করেন এবং বলেন যে, সে গুনাহগার ও সীমালঙ্ঘণকারী।

এই দৃষ্টিভঙ্গি যে ভুল এতে কোন সন্দেহ নেই। কিভাবে সে ব্যক্তি গুনাহগার বা সীমালঙ্ঘণকারী হবে যেখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রাতের সালাত (কিয়ামুল লাইল) সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন:“দুই রাকাত দুই রাকাত।” তিনি তো কোন সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেননি। এ কথা সবারই জানা আছে যে,যেই সাহাবী রাতের সালাত সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে প্রশ্ন করেছিলেন, তিনি রাতের নামাযের সংখ্যা জানতেন না। কারণ যিনি সালাতের পদ্ধতিই জানেন না,রাকাত সংখ্যা সম্পর্কে তার না-জানবারই কথা। আর তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সেবকও ছিলেন না যে আমরা এ কথা বলব- তিনি রাসূলের বাসার ভিতরের আমল কি সেটা জানতেন। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই সাহাবীকে কোন সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেননি, শুধু সালাতের পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন,এতে জানা গেল যে, এ বিষয়টি উন্মুক্ত। সুতরাং যে কেউ ইচ্ছা করলে ১০০ রাকাত তারাবীর নামায ও ১ রাকাত বিতির নামায আদায় করতে পারেন।

আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-বাণী :

(صلوا كما رأيتموني أصلي)

“তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখলে সেভাবে সালাত আদায় কর।”

এই হাদিসটির বিধান সাধারণ নয়; এমনকি এ মতাবলম্বীদের নিকটও নয়। তাই তো তারা কোন ব্যক্তির উপর একবার ৫ রাকাত,একবার ৭ রাকাত, অন্যবার ৯ রাকাত বিতির আদায় করা ওয়াজিব বলেন না। আমরা যদি এ হাদিসকে সাধারণভাবে গ্রহণ করি তাহলে আমাদেরকে বলতে হবে যে বিতিরের নামায কোনবার ৫ রাকাত,কোনবার ৭ রাকাত এবং কোনবার ৯ রাকাত আদায় করা ওয়াজিব। বরং “তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখলে সেভাবে সালাত আদায় কর”-এ হাদিস দ্বারা সালাত আদায়ের পদ্ধতি বুঝানো উদ্দেশ্য; সালাতের রাকাত সংখ্যা নয়। তবে রাকাত সংখ্যা নির্দিষ্ট করে এমন অন্য কোন দলীল পাওয়া গেলে সেটা ভিন্ন কথা।

যাই হোক,যে বিষয়ে শরিয়তে প্রশস্ততা আছে সে বিষয়ে কারো উপর চাপ প্রয়োগ করা উচিত নয়। ব্যাপারটি এ পর্যন্ত গড়িয়েছে যে,আমরা দেখেছি কিছু ভাই এ বিষয়টি নিয়ে এত বেশি বাড়াবাড়ি করেন যে,যেসব ইমাম ১১ রাকাতের বেশি তারাবী নামায পড়েন এরা তাদের উপর বিদআতের অপবাদ দেন এবং (১১ রাকাতের পর) মসজিদ ত্যাগ করেন। এতে করে তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বর্ণিত সওয়াব থেকে বঞ্চিত হন। তিনি বলেছেন:“ইমাম নামায শেষ করা পর্যন্ত যে ব্যক্তি ইমামের সাথে কিয়ামুল লাইল (রাতের নামায) পড়বে তার জন্য সম্পূর্ণ রাতে নামায পড়ার সওয়াব লেখা হবে।” [হাদিসটি বর্ণনা করেছেন তিরমিযি (৮০৬)এবং ‘সহীহুত তিরমিযি গ্রন্থে (৬৪৬)আলবানী হাদিসটিকে সহীহ্ আখ্যায়িত করেছেন]এ শ্রেণীর লোকদের মধ্যে অনেকে ১০ রাকাত বিতির আদায় করে বসে থাকে; ফলে কাতার ভঙ্গ হয়। আবার কখনও তারা কথাবার্তা বলে; যার ফলে মুসল্লিদের সালাতে বিঘ্ন হয়।

আমরা এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ পোষণ করছি না যে তাঁরা ভাল চাচ্ছেন এবং এক্ষেত্রে তাঁরা মুজতাহিদ; কিন্তু সব মুজতাহিদ সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছেন না।

আর দ্বিতীয় পক্ষটি প্রথম পক্ষের সম্পূর্ণ বিপরীত। যারা ১১ রাকাতের মধ্যে তারাবীকে সীমাবদ্ধ রাখতে চান এরা তাদের কঠোর বিরোধিতা করেন এবং বলেন যে, তুমি ইজমা‘ থেকে বের হয়ে গেছ। অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:“আর যে তার কাছে সত্য প্রকাশিত হওয়ার পর রাসূলের বিরোধিতা করে এবং মু’মিনদের পথের বিপরীত পথ অনুসরণ করে আমি তাকে সেদিকে পরিচালিত করব যেদিকে সে অভিমুখী হয় এবং আমি তাকে প্রবেশ করাব জাহান্নামে। আর তা কতই না খারাপ প্রত্যাবর্তন।” [আন-নিসা, ৪:১১৫]

তারা বলেন যে, আপনার আগে যারা অতিবাহিত হয়েছেন তাঁরা শুধু ২৩ রাকাত তারাবীই জানতেন। এরপর তারা বিপক্ষবাদীদের তীব্র বিরোধিতা শুরু করেন। এটাও ভুল।[আশশারহুল মুমতি (৩/৭৩-৭৫)]

যারা ৮ রাকাতের বেশি তারাবীর নামায পড়া নাজায়েয মনে করেন তারা যে দলীল দেন সেটা হলো আবু সালামাহ্ ইবনে আব্দুর রহমান এর হাদিস যাতে তিনি আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) কে প্রশ্ন করেছিলেন :“রমজানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সালাত কেমন ছিল?” তিনি বললেন: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানে বা রমজানের বাইরে ১১ রাকাতের বেশি আদায় করতেন না। তিনি ৪ রাকাত সালাত আদায় করতেন- এর সৌন্দর্য ও দৈর্ঘ্য সম্পর্কে প্রশ্ন করবেন না (অর্থাৎ তা এতই সুন্দর ও দীর্ঘ হত)। এরপর তিনি আরো ৪ রাকাত সালাত আদায় করতেন-এর সৌন্দর্য ও দৈর্ঘ্য সম্পর্কে প্রশ্ন করবেন না (অর্থাৎ তা এতই সুন্দর ও দীর্ঘ হত)। এরপর তিনি ৩ রাকাত সালাত আদায় করতেন। আমি বলতাম:“ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি কি বিতির পড়ার আগে ঘুমিয়ে যাবেন?” তিনি বলতেন:

“হে আয়েশা! আমার চোখ দুটি ঘুমালেও অন্তর ঘুমায় না।”

[হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারী (১৯০৯) ও ইমাম মুসলিম (৭৩৮)]

তারা বলেন: এই হাদিসটি নির্দেশ করছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানে ও রমজানের বাইরে রাতের বেলা নিয়মিত এভাবেই সালাত আদায় করতেন। আলেমগণ এ হাদিস দিয়ে দলীলের বিপক্ষে বলেন যে, এই হাদিসটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল সাব্যস্ত করছে। কিন্তু কোন আমল দ্বারা তো ওয়াজিব সাব্যস্ত করা যায় না।

আর রাতের সালাত (এর মধ্যে তারাবীর নামাযও শামিল) যে কোন সংখ্যার মধ্যে সুনির্দিষ্ট নয় এ ব্যাপারে বর্ণিত স্পষ্ট দলীলগুলোর মধ্যে একটি হলো ইবনে উমর (রাঃ) এর হাদিস- “এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রাতের সালাত সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন:“রাতের সালাত দুই রাকাত, দুই রাকাত। আপনাদের মধ্যে কেউ যদি ফজরের ওয়াক্ত হয়ে যাওয়ার আশংকা করেন তবে তিনি যেন আরো এক রাকাত নামায পড়ে নেন। যাতে করে এ রাকাতটি পূর্বে আদায়কৃত সংখ্যাকে বিতির (বেজোড়) করে দেয়।”[হাদিসটি বর্ণনা করেছেন,ইমাম বুখারী (৯৪৬)ও ইমাম মুসলিম (৭৪৯)]

বিভিন্ন গ্রহণযোগ্য ফিক্বহী মাজহাবের আলেমগণের মতামতের দিকে দৃষ্টি দিলে পরিষ্কার হয় যে, এ বিষয়ে প্রশস্ততা আছে। ১১ রাকাতের অধিক রাকাত তারাবী পড়তে দোষের কিছু নেই।

হানাফী মাজহাবের আলেম ইমাম আস্‌সারখাসী বলেন:

“আমাদের মতে বিতির ছাড়া তারাবী ২০ রাকাত ।”[আল্‌মাবসুত (২/১৪৫)]

ইবনে ক্বুদামাহ বলেন: “আবু-আবদুল্লাহ অর্থাৎ ইমাম আহমাদ (রাহিমাহুল্লাহ) এর কাছে পছন্দনীয় মত হলো তারাবী ২০ রাকাত। এই মতে আরো রয়েছেন ইমাম ছাওরী, ইমাম আবু-হানীফা ও ইমাম শাফেয়ী। আর ইমাম মালেক বলেছেন: “তারবীহ ৩৬ রাকাত।”[আলমুগনী (১/৪৫৭)]

ইমাম নববী বলেছেন:

“আলেমগণের ইজমা অনুযায়ী তারাবীর সালাত পড়া সুন্নত। আর আমাদের মাজহাব হচ্ছে- তারাবীর নামায ১০ সালামে ২০ রাকাত। একাকী পড়াও জায়েয, জামাতের সাথে পড়াও জায়েয।”[আলমাজমূ (৪/৩১)]

এই হচ্ছে তারাবী নামাযের রাকাতের সংখ্যার ব্যাপারে চার মাজহাবের অভিমত। তাঁদের সবাই ১১ রাকাতের বেশী পড়ার ব্যাপারে বলেছেন। সম্ভবত যে কারণে তাঁরা ১১ রাকাতের বেশি পড়ার কথা বলেছেন সেটা হলো:

১.তাঁরা দেখেছেন যে,আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা)এর হাদিস নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নির্ধারণ করে না।

২.পূর্ববর্তী সাহাবী ও তাবেয়ীগণের অনেকের কাছ থেকে ১১ রাকাতের বেশি তারাবী পড়ার বর্ণনা পাওয়া যায়। [আল-মুগনী (২/৬০৪)ও আল-মাজমূ (৪/৩২)]

৩.নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ১১ রাকাত সালাত আদায় করতেন তা এত দীর্ঘ করতেন যে এতে পুরো রাতই লেগে যেত। এমনও ঘটেছে এক রাতে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবীদেরকে নিয়ে তারাবীর সালাত আদায় করতে করতে ফজর হওয়ার অল্প কিছুক্ষণ আগে শেষ করেছিলেন। এমনকি সাহাবীগণ সেহেরী খেতে না-পারার আশঙ্কা করেছিলেন। সাহাবীগণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে সালাত আদায় করতে পছন্দ করতেন এবং এটা তাঁদের কাছে দীর্ঘ মনে হত না। কিন্তু আলেমগণ খেয়াল করলেন ইমাম যদি এভাবে দীর্ঘক্ষণ ধরে সালাত আদায় করেন তবে মুসল্লিদের জন্য তা কষ্টকর হবে। যা তাদেরকে তারাবীর নামায থেকে বিমুখ করতে পারে। তাই তাঁরা তেলাওয়াত সংক্ষিপ্ত করে রাকাত সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষে মত দিলেন।

সার কথা হলো- যিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত পদ্ধতিতে ১১ রাকাত সালাত পড়েন সেটা ভাল এবং এতে সুন্নাহ পালন হয়। আর যিনি তেলাওয়াত সংক্ষিপ্ত করে রাকাতের সংখ্যা বাড়িয়ে পড়েন সেটাও ভাল। যিনি এই দুইটির কোন একটি করেন তাঁকে নিন্দা করার কিছু নেই।

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ বলেছেন:

“যিনি ইমাম আবু হানীফা,শাফেয়ী ও আহমাদের মাজহাব অনুসারে ২০ রাকাত তারাবী সালাত আদায় করল অথবা ইমাম মালেকের মাজহাব অনুসারে ৩৬ রাকাত তারাবী আদায় করল অথবা ১৩ বা ১১ রাকাত তারাবী আদায় করল প্রত্যেকেই ভাল আমল করল। এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকার কারণে ইমাম আহমাদ এ মতই পোষণ করতেন। তাই তেলাওয়াত দীর্ঘ বা সংক্ষিপ্ত করার অনুপাত অনুযায়ী রাকাত সংখ্যা বেশি বা কম হবে।”[আল-ইখতিয়ারাত, পৃষ্ঠা- ৬৪]

আস-সুয়ুতী বলেছেন:

“রমজানে ক্বিয়াম তথা রাতের নামায আদায় করার আদেশ দিয়ে ও এ ব্যাপারে উৎসাহিত করে অনেক সহীহ ও হাসান হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এক্ষেত্রে কোন সংখ্যাকে সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ২০ রাকাত তারাবী পড়েছেন বলে সাব্যস্ত হয়নি। বরং তিনি রাতে সালাত আদায় করেছেন। কিন্তু কত রাকাত আদায় করেছেন এই সংখ্যা উল্লেখিত হয়নি। এরপর ৪র্থ রাতে দেরি করলেন এই আশঙ্কায় যে তারাবীর সালাত তাঁদের উপর ফরয করে দেয়া হতে পারে, পরে তাঁর উম্মত তা পালন করতে অসমর্থ হবেন।”

ইবনে হাজার হাইসামী বলেছেন:

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে তারাবীর সালাত ২০ রাকাত হওয়ার ব্যাপারে কোন সহীহ বর্ণনা পাওয়া যায়নি। আর এই ব্যাপারে যা বর্ণিত হয়েছে- “তিনি ২০ রাকাত সালাত আদায় করতেন; তা অত্যন্ত জয়ীফ (দুর্বল)।”[আল্‌মাওসূ‘আহ আল-ফিক্বহিয়্যাহ (২৭/১৪২-১৪৫)]

৩০ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৮

নতুন নকিব বলেছেন:



খুবই মূল্যবান দীর্ঘ চমকপ্রদ মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা অশেষ।

আমরা জানি। কিন্তু, মানি না। আল্লাহ পাক আমাদের হেদায়েত দান করুন। আমীন।

১১| ৩০ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৩২

ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: খুব সুন্দর আলোচনা। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।

৩০ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৪

নতুন নকিব বলেছেন:



ফরিদ ভাই,
মন্তব্যে আসায় কৃতজ্ঞতা।

অনেক দিনের ইচ্ছের প্রতিফলন। আপনার সুচিন্তিত এবং বিস্তারিত মূল্যায়ন চাই। অবশ্যই পুরো পোস্ট পাঠান্তে।

ভাল থাকবেন।

১২| ৩০ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৪০

নতুন বলেছেন: তারাবীর নামাজ কি রাসুল সা: নিজে নিয়মিত জামাতে পড়েছেন?

যতদুর জানি তিনি কয়েকদিন পড়েছেন.. এবং একা তাহাজ্জুত পড়তেন...

তারাবীর নামাজ ওমর রা: এর আমল থেকে চালু হয়েছে....

ধম`নিয়ে বাড়া্বাড়ী করে এটাকে কঠিন না বানানোই ভালো।

৩০ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৯

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় ভাই নতুন,
আপনি নতুন। আমিও কিন্তু নতুন। ভালো আছেন, নিশ্চয়ই। সুন্দর মন্তব্য নিয়ে আসায় আন্তরিক মোবারকবাদ।

আপনার জানাটা সঠিক।

তারাবীহর নামাজ উমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর আমল থেকে চালু হয়েছে। মদিনাতুল মুনাওআরায় মসজিদে নববীতে এবং মক্কাতুল মুকাররমায় বাইতুল্লাহতে তার আমল থেকে চলে আসা ২০ রাকাআত তারাবীহ এখনও চালু রয়েছে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, রাসূলে মাকবুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহান সাহাবীদের জামাত যে কাজটি চালু করেছিলেন, তাদের চেয়ে উত্তম মুসলিম কি এই শেষ জমানায় এসে নাজিল হল কি না?

সব কিছু জেনেও যারা সত্যকে পাশ কাটিয়ে ৮ রাকাআতের জালে আটকে পড়ে নিছক ফাঁকি দেয়ার মানসিকতায় ঝগড়া বিবাদ আর বাগ বিতন্ডায় লিপ্ত হন, সমাজে বিভেদ বিশৃঙ্খলা উস্কে দেন, ২০ রাকাআতকে প্রত্যাখ্যান করেন, তাদের মুখোশ উম্মোচন হোক, এটা কি আমাদের কামনা হওয়া উচিত নয়?

আর ডিসকাশন ছাড়া কোন জিনিষই ক্লিয়ার হয়ে ওঠে না। সাধারন্যে বিষয়টির মর্ম পৌঁছানোর মাধ্যমে তাদের মনগড়া মতবাদ থেকে সাধারন মুসলিমদের বাঁচানোর দায়িত্ব অবশ্যই আমাদের সচেতনদের।

ভাল থাকবেন ভাই।

১৩| ৩০ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৩

নতুন বলেছেন: https://www.youtube.com/watch?v=sMWEHN8SuCg

এখানে রাসুল সা: এর ৮ তারাবী+৩ বেতেরের কথা বলেছে এটা কি ভুল?

৩০ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০২

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনি দয়া করে, কষ্ট হলেও সময় সুযোগ করে পুরো পোস্টটিতে কাইন্ডলি একটিবার নজর দিন। আপনার প্রশ্নের জবাব পোস্টের ভেতরেই রয়েছে।

ধন্যবাদ লিঙ্ক দেয়ায়। সময় করে দেখে নেব ইনশাআল্লাহ।

ভাল থাকবেন।

১৪| ৩০ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৬

সিফটিপিন বলেছেন: ধর্ম সমন্ধে কিছুই জানিনা বললেই চলে। পোষ্ট ও মন্তব্য পরে যা বুঝলাম---

ছোট কাল থেকে ২০ রাকাত পরে আসছি।
আমি মনে করি মসজিদ জামায়াতে ২০ রাকাত পড়লে ক্ষতি কি, যদি কেও মনে করে একা একা যত বেশি পরতে পারে। আবার যদি কেও অসুস্থ থাকে তাহলে সে ৮ রাকাত পড়লে সমস্যা কি।
এ নিয়ে ক্যাচালের কোন কারণ দেখছি না।

৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৬

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় সিফটিপিন,
দু:খিত, আমি সিফটিপিন ভয় পাই! কাপড় ধোয়ার সময় সেদিন আমার হাতে ঢুকেছিল।

পরিচ্ছন্ন এডভাইসপূর্ন মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা।

ক্যাচাল উদ্দেশ্য নয়, জাস্ট সত্যটাকে দলিলের আলোকে দেখার ক্ষুদ্র প্রয়াস।

পুনরায়,
একটু মজা করলাম। সিফটিপিন কথন সত্য। মনে পড়লো তাই বললাম। প্লিজ, কষ্ট নিবেন না।

আপনার জন্য শুভকামনা আবারও।

১৫| ৩০ শে মে, ২০১৭ রাত ৮:২৭

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন:
সুন্দর পোষ্ট +

৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



কবীর ভাই,
অনুপ্রেরনাদানে কৃতজ্ঞতা অনেক।

আল্লাহ পাক আমাদের সঠিক পথে চলার এবং সঠিক সুন্নতের উপরে আমল করার তাওফিক দিন। আমীন।

১৬| ৩০ শে মে, ২০১৭ রাত ১১:২১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: খুবই সুন্দর ও উপযুক্ত দলিল সাথে দিয়ে লিখেছেন । লেখাটি প্রিয়তে গেল ।
রমাদান মাস, প্রাচুর্যের মাস, এ এক মহান মাস। সিয়ামের এই মাসে ইশার সালাত আদায় করার পরে এবং বিতরের সালাত আদায় করার পূর্বে দুই রাক’আত করে করে দশ সালামে যে বিশ রাক’আত সুন্নাত মুআক্কাদা সালাত আদায় করলে সায়িমের (রোজাদার) মননে এক অপূর্ব প্রফুল্লতা ও প্রশান্তি নেমে আসে। অন্তরের গভীরে এমন এক অনন্য জ্যোতির বিচ্ছুরণ ঘটে যার আভা প্রস্ফুটিত হয় তার চেহারায়। দিবসের প্রায় উনিশ ঘণ্টা কঠিন কৃচ্ছ সাধনের পর ইফতারের মধ্য দিয়ে সায়িমের মধ্যে যে আনন্দ আভা বিম্বিত হয় তা সুদৃঢ় হয়ে ওঠে কুড়ি রাক’আত তারাবীহর সালাত আদায়ের মধ্য দিয়ে। এছাড়াও এই সালাত পড়লে গোনাহরাশি ক্ষমা করা হয়। এখানে উল্লেখ যে, ৬২৪ খ্রিস্টাব্দের ২৮ ফেব্রুয়ারি মোতাবেক দ্বিতীয় হিজরীর শা’বান মাসের শেষ তারিখের দিবাগত রাত তথা পহেলা রমাদান রাতে (বাদ ’ইশা) সর্বপ্রথম তারাবীহর সালাত মসজিদুন্ নববীতে প্রিয়নবী হযরত রসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ’আলায়হি ওয়া সাল্লাম আদায় করেন। প্রিয়নবী রসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ’আলায়হি ওয়া সাল্লামের সহধর্মিণী আয়িশা রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহা থেকে বর্ণিত আছে যে, রসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ’আলায়হি ওয়া সাল্লাম সালাত (তারাবীহর সালাত) আদায় করেন এবং তা ছিল রমাদানে। মূলত আগে মসজিদুন নববীতে একাধিক জামা’আতে একই সময় তারাবীহ্ সালাত সাহাবায়ে কেরাম আদায় করতেন, কেউ কেউ একাকীও পড়তেন। তারাবীহর সালাতে কোরান মজীদ তিলাওয়াত সশব্দ হওয়াতে অনেকের কোরান পাঠের আওয়াজ উত্থিত হতো, মসজিদে নববীতে হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু এক ইমামের নেতৃত্বে এই সালাতের জামা’আত ব্যবস্থা চালু করেন। আমরা জানি হযরত উমর ইবনুল খাত্তাবের দশ বছরের খিলাফত (৬৩৪-৬৪৪ খ্রি) আমলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা গৃহীত হয় তার মধ্যে এই তারাবীহর সালাতের জামা’আত ব্যবস্থাও একটি। সম্ভবত এই জামা’আত ব্যবস্থা চালু হয় ৬৪১ খ্রিস্টাব্দে। একখানি দীর্ঘ হাদিসে আছে যে, হযরত রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ ’আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি রমাদানে ইমানের সঙ্গে সওয়াব লাভের আশায় তারাবীহ্ সালাতে দাঁড়াবে তাঁর পূর্ববর্তী গোনাহ্সমূহ মাফ করে দেয়া হবে। শিহাবের পুত্র বলেন যে, হযরত রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ’আলায়হি ওয়া সাল্লাম ইন্তিকাল করলেন, তারপরও এটা একই ভাবে চলে আসছিল। এমনকি হযরত আবু বকর রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহুর (প্রায় আড়াই বছরের) খিলাফতকালে এবং হযরত উমর রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহুর খিলাফতের প্রথমভাগে এ রকমটাই ছিল। ইব্নে শিহাব উরওয়া ইব্নে যুবায়র সূত্রে আবদুর রহমান ইব্নে আব্দ আল-কারী থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি রমাদানের এক রাতে হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহুর সঙ্গে মসজিদে নববীতে গিয়ে দেখতে পেলাম যে, লোকেরা বিক্ষিপ্ত জামা’আতে বিভক্ত । কেউ একাকী সালাত আদায় করছে আবার একজন সালাত আদায় করছে আর তাঁকে ইক্তিদা করে একদল লোক সালাত আদায় করছে। হযরত উমর রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু (এসব দেখে) বললেন : আমি মনে করি যে, এই লোকদের একজন কারীর (ইমামের) পেছনে একত্রিত করে দিলে সেটাই উত্তম হবে। এরপর তিনি উবাই ইব্নে কা’বের পেছনে সবাইকে কাতারবন্দী করে দাঁড় করিয়ে দিলেন। পরে আরেক রাতে আমি তাঁর সঙ্গে বের হলাম। তখন লোকেরা তাদের ইমামের সঙ্গে সালাত আদয় করছিল। হযরত উমর রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু এটা দেখে বললেন : অপূর্ব সুন্দর এই নতুন ব্যবস্থা (বুখারী শরীফ)।

হযরত উসমান (রা), হযরত আলী (রা), হযরত যুবায়র (রা), হযরত আবদুর রহমান ইব্নে আউফ (রা)-সহ সমস্ত সাহাবায়ে কেরাম এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। বিশ রাক’আত তারাবীহ্ সালাত আদায় করার ব্যাপারে সবাই ঐকমত্য পোষণ করে তা আমল করতে থাকেন। এখানে উল্লেখ্য যে, এই সালাতে যিনি ইমাম ছিলেন সেই হযরত উবাই ইব্নে কা’ব রাদিআল্লাহু তা’আলা আনহু প্রখ্যাত মুফতী ছিলেন। কোরান মজীদ ব্যাখ্যার ব্যাপারে তিনি সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন। তিনি মদিনা সনদ লিপিবদ্ধ করেন। তাঁর পান্ডিত্যের তারিফ প্রিয়নবী (সা) করেছেন। তাঁরই ইমামতিতে কুড়ি রাক’আত তারাবীহর সালাত আদায় হয়েছিল। সেই যে বিশ রাক’আত তারাবীহর সালাত জামা’আতের সঙ্গে শুরু হলো রমাদান মাসে, তা মসজিদুন নববীতে আজও আদায় হয়ে আসছে, মক্কার মসজিদুল হারামেও এই বিশ রাক’আত সালাতুত্ তারাবীহ্ পড়া হয়। পৃথিবীর সব দেশেই বিশ রাক’আতই পড়া হয়। তবে উপমহাদেশে সংখ্যায় খুবই কম একটি দল ৮ রাক’আত তারাবীহর সালাত আদায় করে। তারা প্রধানত লা ময্হাবী নামে পরিচিত। তারা নিজেদের আহলে হাদিস বলে পরিচয় দেয়। এদের বিষয়ে যে আলোচনা এ পোষ্টে করা হয়েছে তার সাথে সহমত পোষন করছি ।

তারাবীর গুরুত্ত আরো ভাল করে বুঝা যায় তারাবীর সালাতে প্রত্যেক দুই রাক’আত শেষে একটা দরুদ শরীফ পাঠ করার রীতি রয়েছে আর তা হচ্ছে : আল্লাহুম্মা সাল্লিয়ালা সাইয়্যিদিনা মওলানা মুহম্মদ। তারাবীহর সালাতের চার রাক’আত পরে বিরামকালে যে দু’আখানি পাঠ করা হয় তা হচ্ছে : ‘সুবহানা যিল্ মুলকি ওয়াল মালাকুতি সুবাহানা যিল্ ইয্যাতি ওয়াল আযমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়ায়ী ওয়াল জাবারুত, সুবহানাল মালিকিল হায়য়িল্লাযী লা ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুতু আবাদান আবাদান সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রব্বুনা ওয়া রব্বুল মালায়িকাতি ওয়াররূহ্’। যার বাংলা তরজমা হলো ‘পবিত্রতা ঘোষণা করছি সেই মহান সত্তার রাজ্য ও রাজত্বের অধিপতি (রাজাধিরাজ), পবিত্রতা ঘোষণা করছি সেই মহান সত্তার যিনি তাবত্ ইজ্জত্, মহত্ত্ব প্রতাপ-প্রতিপত্তি, শক্তিমত্তা, সৌকর্য ও মাহাত্ম্যের অধিপতি, পবিত্রতা ঘোষণা করছি সেই মহান সত্তার যিনি মালিক চিরঞ্জীব, যাঁর কোন নিদ্রা নেই, যাঁর কোন মৃত্যু নেই, তিনি বর্তমান চিরদিন চিরকাল, তিনি মহিমাময় পবিত্র, তিনিই আমাদের রব্ এবং ফেরেশতাদের ও আত্মার রব্”। এই দু’আ পাঠ শেষে মুনাজাত করতে হয়। তারাবীহর সালাতের মুনাজাত হিসেবে বহুল প্রচলিত মুনাজাতটি হচ্ছে : 'আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউযুবিকা মিনান্নার, বিরাহমাতিকা ইয়া আযীযু ইয়া গাফ্ফারু ইয়া কারীমু ইয়া সাত্তারু ইয়া রাহীমু ইয়া জাববারু ইয়া খালিকু ইয়া মোতাকাব্বিরু, আল্লাহুম্মা আর্জিনা মিনান্নারি ইয়া মুজীরু ইয়া মুজীরু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন” যার বাংলা তরজমা হলো “হে আল্লাহ্ যে জান্নাত ও দোযখের স্রষ্টা, আমরা আপনাদের নিকট চাচ্ছি জান্নাত এবং আশ্রয় চাচ্ছি দোযখের আগুন থেকে। আপনার রহমত কামনা করছি, হে প্রিয়, হে মহাক্ষমাশীল, হে মহামান্য দয়াবান, হে দোষ গোপনকারী, হে মহাপরাক্রমশালী, হে মহান স্রষ্টা, হে মহাহিতকারী, আপনি আপনার রহমত দ্বারা আমাদের দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করুন, হে রক্ষাকারী, হে রক্ষাকারী, হে রক্ষাকারী। হে পরম করুণাময় দয়ালু দাতা”। সালাতুত্ তারাবীহর জামা’আতকে ঐক্য ও সংহতি স্থাপনের প্রশিক্ষণ বললে অত্যুক্তি হবে না। মাহে রমাদানেই এই সালাত আদায় করতে হয়, যে কারণে এর গুরুত্ব ও অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অপরিসীম। দিবসে সিয়াম পালন করার মাধ্যমে যে দৈহিক ও মানসিক শুদ্ধতা অর্জিত হয়, রাতে তারাবীহর নামাজ পড়ে দেহ-মন প্রশান্ত হয়ে যায়।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল ।

৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৪

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় আলী ভাই,
কি বলে কৃতজ্ঞতা জানাব ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। অন্তহীন শুভাশীষ আর হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা আপনার জন্য। দীর্ঘ মন্তব্য দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল। আলহামদুলিল্লাহ।

আল্লাহ পাক আপনার মেধাকে আরও প্রসারিত করুন।

তারাবীহ সালাতের বিস্তারিত খুঁটিনাটি দোআ দরুদ তাসবীহ তাহলীল আপনি সবগুলোই সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। আরবি পড়তে জানেন না, এমন বাংলাভাষী অনেকের কাজেও লেগে যেতে পারে। আল্লাহ পাক কবুল করুন।

১৭ নং মন্তব্যের প্রতি উত্তরটি দেখার অনুরোধ থাকল।

ভাল থাকবেন প্রিয় ভাই।

১৭| ৩০ শে মে, ২০১৭ রাত ১১:৩৭

মানবী বলেছেন: প্রিয় ব্লগার নতুন নকিব, ডঃ এম এ আলী

পোস্ট এবং আলোচনার জন্য ধন্যবাদ। বিস্তারিত পড়া হয়নি, এক ঝলক দেখে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান থেকে মন্তব্য করা।
আমি রেফারেন্স মুখস্থ রাখতে পারিনা তবে স্কলারদের কথা খুব মনযোগ দিয়ে শুনি এবং নিজের ভুল গুলো সংশোধন করতে চেষ্টা করি।
আরব অধ্যুসিত মসজিদে আট রাক'আত তারাবী পড়তে দেখেছি। সাধারণত আমাদের উপমহাদেশের সংখ্যা গরিষ্ঠ মসজিদে ২০ রাকআত তারাবী পড়া হয়।
যাঁরা ইসলাম সম্পর্কে প্রচুর পড়াশুনা করেছেন এবং অনেক জানেন, তেমন স্কলারদেরকেই বলতে শুনেছি হযরত মুহম্মদ(সঃ) আট রাকাত তারাবী পড়তেন আবার কখনও কখনও ২০ রাকাত, সুতরাং দুটোই সঠিক।
আমাদের মাঝে একটি প্রবণতা আছে, আমাদের পূর্বপুরুষ যা করেছেন, যে প্রথা মেনে আমরা বড় হয়েছি তা সঠিক প্রমাণে খুব মরিয়া হয়ে থাকি। আর সব মানুষের মতো ভুল আমাদেরও হতে পারে। এই যেমন আমি এখানে আমার দুজন প্রিয় ব্লগারের সাথে মত পার্থক্য করে হয়তো ভুল করলাম, তবে সত্যটা জানাতে ইচ্ছে হলো।

প্রবাসীদের হাজার সমস্যার মাঝে একটি পজিটিভ দিক হলো, যে ধর্মেরই হোক- পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের স্বধর্মের মানুষের সাথে মেলামেশর সুযোগ হয়, জানার সুযোগ হয়। ইসলাম ধর্ম সারা বিশ্বে অভিন্ন হবার কথা, আমরা অনেক সময় এটাকে আন্চলিক করে ফেলি।

মসজিদের ইমাম ও স্কলারদের কাছ থেকে শোনা বক্তব্য থেকে যা শিখেছি, আত রাকাত, বিশ রাকাত দুটোই সঠিক। হযরত মুহম্মদ(সঃ) যেহেতু দুরকম পড়তেন, তাই এর কোনটাকে ভুল বলা বা কটাক্ষ করাটা কতোখানি ইসলামিক মূল্যবোধ ধারন করবে তা ভেবে দেখার বিষয়।

আপনারা ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ।

৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:০১

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার প্রতি অন্তহীন শ্রদ্ধা! গুরুত্বপূর্ন পরামর্শমূলক সুন্দর মন্তব্যে অভিনন্দন।

আসলে সঠিক বিষয়টি প্রমান হওয়া দরকার। এই মানসিকতা থেকেই এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। 'চালুনি যখন সুঁইকে বলে তোর পাছায় ছিদ্র' -বলুন তো জ্ঞানবান সচেতন যে কারও কাছে সেটা কেমন ঠেকতে পারে!

পুরো পোস্টের মূল কথা হচ্ছে-

১. আট রাকাআতের হাদিসটি যে তাহাজ্জুদের সাথে সংশ্লিষ্ট এই বিষয়টি দলিল দিয়ে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি।

২. প্রথম খাইরুল কুরূন তথা উত্তম যুগসমূহ যেমন, সাহাবায়ে কিরাম রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুমগনের যুগ, তাবেীয়গনের যুগ, এমনকি তাবে তাবেয়ীগনের যুগেও এমন একজন লোককে পাওয়া যাবে না, যিনি ৮ রাকাআত তারাবীহ নামাজ আদায় করেছেন।

৩. হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা প্রদানের মাধ্যমে মানুষদের আমল থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার অপচেষ্টাকে মেনে নেয়ার কোন যুক্তি নেই। হাদিসে হুজুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ''একটি কথা হলেও তোমরা আমার পক্ষ থেকে অন্যদের পৌঁছে দাও।'' সত্য যতটুকু জানি, পৌঁছে দেয়া অবশ্যই দায়িত্ব মনে করি।

৪. স্বয়ং বিদআতীগন মক্কাতুল মুকাররমা, মাদিনাতুল মুনাওওয়ারাহসহ তাবত বিশ্বের মুসলিমদের সহিহ আমলকে অন্ধের মত না দেখে কিংবা এড়িয়ে গিয়ে, অব্যহতভাবে 'বিদআত' 'বিদআত' বলে আমাদের কান ঝালাপালা করে তোলেন। অসংখ্য মানুষ তাদের প্রতিক্রিয়াশীলতায় আক্রান্ত, অসহায়। এই সহিহ আমলকারী অসহায়দের পক্ষে কথা বলা নৈতিক দায়িত্ব মনে করে কলম ধরেছি। তাওফিক প্রদানের মালিক একমাত্র আল্লাহ পাক।

আপনার প্রতি আবারও কৃতজ্ঞতা রেখে পুরো পোস্টটি সময় করে দেখে নেয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ রাখছি।

আল্লাহ পাক আপনার প্রতি রহম করুন।

১৮| ৩০ শে মে, ২০১৭ রাত ১১:৫৯

ওমেরা বলেছেন: মানবী আপু অনেক ধন্যবাদ ।লিখা আর কমেন্টগুলো পড়ে খুব খারাপ লাগছিল এবং মনে মনে কে কথাগুলো কমেন্টের জন্য গোছানোর চেষ্টা করছিলাম নীচে নেমে আপনার কমেন্টে আমার কথা গুলো দেখতে পেয়ে খুব ভাল লাগছে ।

নকীব ভাইয়া নিজেদের ভিতর ঐক্যের চেষ্টা করেন , যার অভাবে সারাবিশ্বে মুসলমানেরা নির্যাতিত হচ্ছে ।

ধন্যবাদ ।

৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:০৬

নতুন নকিব বলেছেন:



বোন ওমেরা,
অশেষ কৃতজ্ঞতা আন্তরিক মন্তব্যে।

ঐক্য আমাদের অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু, সত্য উদ্ঘাটন, সঠিকতা যাচাই এগুলোর প্রয়োজনও তো অস্বীকার করার উপায় নেই। পূর্বোক্ত স্বনামধন্য ব্লগার মানবীর ১৭ নং কমেন্টের প্রতি উত্তরটি দেখে নেয়ার অনুরোধ রাখছি।

ভাল থাকবেন।

১৯| ৩১ শে মে, ২০১৭ রাত ১২:৫১

করুণাধারা বলেছেন: অসুস্থতার জন্য লগইন করা দুরূহ হয়ে পড়েছে- তবু এখন করলাম তারাবী নামাজ নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।

মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘ প্রবাস জীবনে আমি দেখেছি সেখানকার মসজিদে তারাবী আট বা বিশ রাকাত দু' রকমই পড়া হয়। এমনকি বারো বা ষোলো রাকাতও পড়া হয়, যার যেমন খুশি কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ আরবেরা তারাবী পড়ে আট রাকাত। বিশ রাকাত পড়ে প্রধানত উপমহাদেশীয়রা। কিন্তু যে যার মত রাকাত পড়তে পারে, রমজান মাস আসামাত্র আট নাকি বিশ এই বিতর্কে তারা লিপ্ত হয় না।

আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন বিভক্তি থেকে।

ভাল থাকুন - শুভকামনা।

৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৫০

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় করুনাধারা,
আপনার আগমনে কৃতজ্ঞতা অশেষ। পরামর্শমূলক সুন্দর মন্তব্যে অভিনন্দন।

আপনার সুস্থতার জন্য আল্লাহর কাছে বিনীত প্রার্থনা রাখছি- তিনি যেন আপনাকে দ্রুত পরিপূর্ন সুস্থতা দান করেন।

দয়া করে ৭, ১২ এবং ১৭ মন্তব্যের উত্তরগুলো দেখে নিলে অনেক খুশি হব।

ভাল থাকবেন।

২০| ৩১ শে মে, ২০১৭ রাত ১:১৪

মা.হাসান বলেছেন: ১)তারাবি কি ফরয না ওয়াজিব?
সুননত সালাত নিয়ে কেন এই বিতরক? কেউ যদি এই সালাত না আদা্য করে তা হোলে কি সমস্যা?

২) হাদিসের বই এ কোথাও তারাবিহ শবদ টি পাও্য়া জা্য না। হাদিসে কিয়ামুল লাইল শবদ ব্যবহার করা হয়েছে। ইবাদত এর নাম বদলান উচিত না।
৩) বরতমানে পরওতিযোগিতা চলে কোন মোসজিদে বেশি তাড়াতাড়ি খতম করা যায়। এভাবে পড়ার চেয়ে না পড়া ভাল বলেন ওনেকে।
৪) পয়সার বিনিময়ে খতম সুষপষট নিষিদধ।
৫) রমজানে কোরান শোনা ও শোনানো সুননাত কিনতু সালাতের মধ্যে কোরান খতমের হাদিস ভিততিক দলিল নাই।
৬) সুননাতের মরযাদা ফরজের তুলনায় ওনেক কম। আমি যে মসজিদে যাই সেখানে 'তারাবি'-এর জন্য এশার সালাত সংখেপ (ছোট সুরা তে) করা হয়। ওনেক মসজিদে এটা করা হ্য়।

ওমর (রাঃ) কখনো জামাতে এই সালাত আদায় করেন নি।


বরকতের মাসে যত খানি সামরথ সেই ভাবে নফল/সুননত আদায় করা ভাল, বিতরক এড়ানো ভাল।

৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৬

নতুন নকিব বলেছেন:



গঠনমূলক মন্তব্যে অভিনন্দন প্রিয় হাসান ভাই।

দয়া করে ৭, ১২ এবং ১৭ নং কমেন্টের উত্তরগুলো দেখে নিলে কৃতজ্ঞতা থাকবে।

ভাল থাকবেন।

২১| ৩১ শে মে, ২০১৭ ভোর ৪:৪৩

মুহাঃ আমিরুল ইসলাম বলেছেন: প্রিয় নকিব, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৫১

নতুন নকিব বলেছেন:



আমির ভাই,
প্রানঢালা অভিনন্দন, মোবারকবাদ আপনাকেও মন্তব্যে আসায়।

ভাল থাকবেন নিরন্তর।

২২| ৩১ শে মে, ২০১৭ সকাল ৯:৩৩

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আমি এটা জানি আহলেহাদীস নাম ধারীরা মাঝে মাঝে হাদীস নিয়ে বেশিই তর্ক করে। যারা এমন করে তারা অবশ্যই আমার কাছে ঘৃনিত।
এইযে আমাদের সমাজে আহলে হাদিস,হানাফি আরও অনেক দল আছে। এগুলো আমার কাছে খুবই খারাপ লাগে।
আমাদের মুসলিমদের এত দল থাকবে কেন?
আমরা তো সবাই এক আল্লাহর বান্দা আর রাসূলের উম্মত।
এই ভেদাভেদ তো আমাদেরই তৈরী।
সুন্দর প্রতিমন্তব্যের জন্য নকিব ভাই আপনাকে আবারও ধন্যবাদ।

৩১ শে মে, ২০১৭ সকাল ১১:৪০

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় ভাই,
আবারও অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা পরামর্শমূলক সুন্দর মন্তব্যে।

আপনার পরামর্শকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছু কারেকশন করেছিলাম। দয়া করে যদি পুরো পোস্টটিতে এখন যদি আরেকবার নজর বুলোতেন।

সাথে থাকায় কৃতজ্ঞতা অশেষ।

২৩| ০১ লা জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:২২

শাহজালাল হাওলাদার বলেছেন: মন্তব্যে আসায় আপ্লুত!

কেমন আছেন?

পাচ্ছি না কেন?

রেগুলার চাই।

ভাল থাকবেন
ব্যাস্ততার মাঝেও আপনাদের মূল্যবান পোস্ট গুলো দেখার চেষ্টা করি। তাছাড়া ব্লগ মাতিয়ে রাখতে নকিব ভাই একাই তো একশ। কামনা করছি আল্লাহ আপনাকে খেদমত করার তাওফিক দান করুন।

০১ লা জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৩

নতুন নকিব বলেছেন:



ভালবাসা অগনন!

মাঝে মাঝে পাই না বলেই তো এমন কথা বলতে হয়।

তারাবীহ নামাজ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য গত কয়েক বছর যাবত লক্ষ্য করি, আট রাকাআত শেষ করতেই পেছনে একটা জটলা পাকানোর মত কিছু একটা ঘটে যায়। আমার ব্যক্তিগত অভিমত, যারা নিতান্ত মাজুর, ওজর বা অক্ষমতার কারনে ২০ রাকাআত পড়তে পারেন না, তারা সুবিধে মত যতটুকু সম্ভব পড়ুন, কিন্তু হইচই করে অন্য নামাজীদের মনে অসওয়াসা সৃষ্টির পায়তারা কেন?

দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত তারাবীহ নামাজ নিয়ে এই বিভ্রান্তি ব্যাপকতা লাভ করছে। আলহামদুলিল্লাহ! আমরাও এ বিষয়ক লেখালেখি অব্যহত রেখেছি ইনশাআল্লাহুল আজিজ। আল্লাহ পাকের শুকরিয়া অশেষ। আমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাগুলো হয়তো আল্লাহ পাক পছন্দ করছেন। বিভ্রান্তি কেটে যাচ্ছে। আলোর পরশে মোম যেমন গলে যায়, তেমনি বিভ্রান্তির শিকার সহজ সরল ভাইয়েরাও সত্য অধ্যয়ন-অনুধাবনে সঠিক পথের দিশা পাচ্ছেন। ''হাদিস মানি, কুরআন মানি'' র মত মিষ্টি কথার আড়ালে লুকিয়ে থাকা মুসলিম জাতিকে ''আমলশুন্য নামকাওয়াস্তে মুসলিম বানানোর অপপ্রয়াস'' তাদের সামনেও প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে।

প্রয়োজনে এই পোস্টটিকে মূল হিসেবে রেখে সাপোর্টিং হিসেবে আরও পোস্ট দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে আপনার মূল্যবান মতামত কামনা করছি।

ভাল থাকবেন ভাই।

২৪| ০৪ ঠা জুন, ২০১৭ দুপুর ২:০০

সমাজের থেকে আলাদা বলেছেন: ব্যক্তিগত জীবনে আপনি কি আমার জানার ইচ্ছা আছে। হেফাজতের দালাল হলে আশ্চর্য হব না।
অবশ্য ব্যক্তিগত জীবনে আপনার টাকার অভাব থাকার কথা না। ধর্মের ব্যবসা করে যারা তাদের টাকার অভাব কোনওকালে হয়নি।
আপনার প্রমাণের প্রতিটির জন্য আপনার কয়টি করে নেকী কাটা যায় তা ক্যালকুলেটর দিয়ে মাপবেন। আমি আপনাকে লোভী দালাল ছাড়া আর কিছুই বলতে চাচ্ছি না। মুখে আসে না।
মুসলমানের মধ্যে বিভিন্ন বিভেদ আনতে আর ইবাদতের নতুন স্টাইল আনতে আপনার মতো লোকের জুড়ি নেই। আবার এত বড় রেফারেন্স দিয়েছেন যে বাংলাদেশের জনসংখ্যা এটে গেছে।
একমাত্র অশিক্ষিত মুসলমানই বিভ্রান্ত হবে এই পোস্টে। তবে বাংলাদেশে অশিক্ষিতের কোনও অভাব নেই। আপনার ভাতেরও অভাব হবেনা।
Tarawih 11 rak'atHanafi scholars agree on 8 rak'at tarawihScholars differ in opinion about Tarawih
ইসলামের আজকের করুণ অবস্থা হতো না যদি আপনার মতো লোকের জন্ম না হতো।
তারাবীহ নিয়ে যে বিতর্ক তাতে আপনি শুধু নতুন ফিতনা যুক্ত করলেন।

০৪ ঠা জুন, ২০১৭ দুপুর ২:৫৪

নতুন নকিব বলেছেন:



শুধু তারাবীহ নামাজের বিভ্রান্তি দূর করেই ক্ষান্ত হওয়ার ইচ্ছে নেই। আহলে হাদিস উদ্ভাবিত প্রত্যেকটি বিভ্রান্তির যথোপযুক্ত জবাব দেয়া হবে। আমরা ওদের প্রত্যেক ফিতনার দাঁতভাঙ্গা উত্তর দিতে থাকব। এই উম্মতের ভেতর থেকে এই বিভ্রান্তির মূলোতপাটন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কলম চলতে থাকবে। চলতেই থাকবে। চলতেই থাকবে ইনশাআল্লাহ।

এদের মুখোশ উম্মোচন করা হবে। শুনে কষ্ট লাগছে? লাগলেও কিছু করার নেই। ফিতনামুক্ত কুরআন হাদিস নির্ভর সহীহ আমলের দিকে জাতিকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আনতেই হবে। আনতেই হবে ইনশাআল্লাহ। এবং অামরা আনব আল্লাহর রহমতে।

তাতে কারও গায়ের চামড়া পুড়ে গেলেও যেতে পারে। তাতে কারও ইর্ষাকাতর অসুস্থ মন আরও অধিক রোগগ্রস্ত হতেই পারে। তাতে কারও কারও দু:খে ক্ষোভে অপমানে নিজের চুল ছেড়ার ঘটনা ঘটতেই পারে। মূর্খদের শেখানো কঠিন। গো ধরে বসে থাকা হেয়ালীপনা নাদান মূর্খগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও কঠিন।

মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ আমরা আনিনি। এনেছেন এই মহান(!) বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীগন। তাদের বিভ্রান্তি বিভেদ আর ফিতনার জঞ্জাল দূর করার জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। তবে এটা ঠিক, পাগল কখনও নিজেকে পাগল বলে না।

রোজা রমজান না হলে দু'চার কথা বলতাম, তয় হালকাভাবে বলি, বেশি পন্ডিতি করা যুক্তিহীন এই আপনাদের দেখলে মনে হয়, ইসলামের হোল এজেন্সি নিয়ে এসেছেন আপনারা গুটিকয় লোক! যুক্তিতে ঠকলে আপনাদের তাঁর ছিড়ে যায়। তাহাজ্জুদের কিয়ামুল্লাইলের হাদিস দিয়ে তারাবীহ সালাতের দলিল দিতে চান, আবার ধরা খেলে চেচামেচি করে পাড়া মাথায় তোলেন, এসব কেমন স্বভাবরে ভাই?

কান্নাকাটি করে লাভ নেই, সত্য মেনে নেয়ার জন্য তৈরি হোন। আমরা স্বাগত জানাব। মিথ্যে ছেড়ে দিন। ভাতের অভাব আল্লাহ পাক আপনাদেরটাও দূর করে দিবেন। নিজে আমল করবেন না। আবার অন্যদের আমলেও অসওয়াসা দিবেন। এই ব্যধি দূর করুন।

আল্লাহ পাক আমাদের হেদায়েত দান করুন।

০৪ ঠা জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪০

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় আলাদা,
আসুন, আপনার ৪ সপ্তাহ ২ দিনের আমলনামায় হালকা একটু চোখ বুলিয়ে আসি।

১। 'জ্বীন তাড়ানোর আয়াত ও আরও কিছু আজগুবী গল্প' পোস্টে বলেছেন-

''আমি যে মসজিদে নামাজ পড়তাম সেটার ঈমাম (সম্ভবত তিনি হানাফী ছিলেন, কারণ ওটা সরকারী মসজিদ) বিশ্বাস করতেন আল্লাহর আকার আছে (নাউযুবিল্লাহ)''

প্রশ্ন: হানাফিগন কি আল্লাহ পাকের আকারে বিশ্বাস করেন? করেন না। তো, তাদের প্রতি আপনার এই অন্ধ বিদ্ধেষ কেন?

২। ''মূর্তিপ্রিয়রা সইতারে না'' পোস্টে আপনার মন্তব্য-

''আপনি কি হেফাজতের গু পরিষ্কার করার মেথর নাকি?
''পাদ দিয়ে মূর্তি সরিয়েছে হেফাজত আর তার গু পরিষ্কার করতে নেমেছেন আপনি।''

প্রশ্ন: আপনি কি আহলে হাদিসেরটা? আপনার বেআদবিমূলক কথাবার্তাই প্রমান করে, আপনি কোন জাতের আর কতটা রুচিশীল।

৩। ''মূর্তিপ্রিয়রা সইতারে না'' পোস্টে আপনার মন্তব্য-

''অতিরিক্ত পাদ যদি কেউ মারে তার কাছ থেকে দূরে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। হেফাজত পাদ মেরে সংসদ ভরে দিয়েছে। তাই মূর্তিটির বিশেষ অনুরোধে তাকে দূরে রাখা হয়েছে।
শুনেছি পাদ মেরে ওযূ না করেই হুজুররা আবার বিজয় মিছিল করেছিলেন?''

প্রশ্ন: এখানেও আপনার রুচীর নিচতার প্রকট প্রকাশ।

৪। ''মাযহাবী মুসলমান ও হিন্দুধর্মের মিলগুলো'' পো্স্টে আপনার বক্তব্য-

''আসলে এই প্রাক-ভারত উপমহাদেশের বেশীরভাগ মুসলমানের পূর্বপুরুষ ছিলো হিন্দু, তাও নিম্নবর্ণের। ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়দের অত্যাচারে ধর্মের প্রতি বিমুখ হয়ে মুসলমান হলেও আচার-কলাগুলো আর ছাড়তে পারেনি বেশীরভাগই।''

প্রশ্ন: তা সাহেব, আপনি কোন ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়র তনয় নাজিল হলেন এখানে? কোন আসমান থেকে আপনার আগমন?

৫। ''মাযহাবী মুসলমান ও হিন্দুধর্মের মিলগুলো'' পো্স্টে আপনার বক্তব্য-

''মাদ্রাসার আলেমদের নিয়ে আমার চুলকানি আছে। সরকার কর্তৃক প্রতিটি মাদ্রাসার জন্য বরাদ্দ আছে, মাদ্রাসাতে কেউ ফ্রিতেও পড়েনা। তবুও মাদ্রাসার আলেম-ওলামারা যে বাড়িবাড়ি ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ঘোরেন তা দেখলে বিরক্ত লাগে। ভিক্ষাবৃত্তি জিনিসটা একেবারে দরিদ্রদের জন্য, সেটা পেটমোটা হুজুরের মানায় না। আর তারা ভিক্ষাও বেশ একটা দাম্ভিকতার সাথে চান, যেন এটা তাদের অধিকার।''

প্রশ্ন: ক. আপনার এত চুলকানি ক্যারে? দেইখ্যেন, স্কিন সামলে চুলকাইয়েন।
খ. হুজুরের পেটের দিকে আপনার এত চোখ যায় ক্যারে? ট্যারা চোখে তাকান কেন?
গ. হুজুরদের প্রতি ইর্ষা তো পেট ভরা। ভিক্ষাবৃত্তি যাতে করতে না হয় এজন্য, কোন দিন কোন হুজুরকে কিংবা এতিমখানা
মাদরাসায় দু'টাকা দান করে দেখেছেন?


৬। ''মাযহাবী মুসলমান ও হিন্দুধর্মের মিলগুলো'' পো্স্টে আপনার বক্তব্য-

''মাযহাবীদের বিদআত-অইসলামিক সংস্কৃতি নিয়ে বিরোধ কম হয়নি। প্রথম জিনিসটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন হাজী শরিয়তউল্লাহ। ইসলামের জন্মভূমি মক্কার মুসলমানদের সাথে এই এলাকার মাযহাবীদের পার্থক্য দেখে তিনি প্রকৃত ইসলাম প্রচার করতে ব্রতী হোন, ফরায়েজী আন্দোলন গড়ে ওঠে। এই ফরায়েজীরাই আজকের আহলে-হাদীস।''

প্রশ্ন: ক. মিথ্যা কথা বলার অভ্যাস কবে ছাড়বেন?
খ. নাকি সত্য ইতিহাস জানা নেই?


৭। ''মাযহাবী মুসলমান ও হিন্দুধর্মের মিলগুলো'' পো্স্টে আপনার বক্তব্য-

''ফরায়েজী আন্দোলনের পরে থেকে যেভাবে তৎকালীন সমাজে মুসলমানদের উন্নতি ঘটতে থাকে এমটা আগে হয়নি। তবে তা প্রতিমাপূজারীর রক্ত নেয় মাযহাবীদের ভালো লাগেনি বলাই বাহুল্য। যাহোক, উপমহাদেশকে আহলে হাদীসরা মুক্তমনা কিছু মুসলমান মনীষী দিতে পেরেছে, আর মাযহাবীরা বিশাল একদল সার্টিফাইড মোল্লা আর হাস্যকর একগাদা ফতোয়া ছাড়া আর কিছু দিতে পেরেছে কিনা সন্দেহ।''

প্রশ্ন: অকাট মিথ্যের ছড়াছড়ি দেখছি!


৮। ''মাযহাবী মুসলমান ও হিন্দুধর্মের মিলগুলো'' পো্স্টে আপনার বক্তব্য-

''আমি আহলে-হাদীস নই, যদিও ওদের কিছু চিন্তা আমি সমর্থন করি। ওরা যে শতভাগ সঠিক এটার দাবীও আমি করবো না। তবে মাযহাবীদের মতো শিরকী-বিদআতী ওরা নয়। মাযহাবী মুসলমানদের জন্যই বাকি মুসলিম বিশ্ব এই এলাকার মুসলমানদের দেখলে মুখ টিপে হাসে।''

প্রশ্ন: আমি আহলে হাদিস নই, হানাফি নই, আমি কিছুই নই। আমি মিথ্যাবদি। ঠিক আছে?

৯। ''মাযহাবী মুসলমান ও হিন্দুধর্মের মিলগুলো'' পো্স্টে আপনার বক্তব্য-

''দোষ অবশ্য তাদের দেয়া যায়না। যে দলের জন্ম হিন্দুস্তানে, তারা যে ইসলামের নামেও হিন্দুয়ানী কাজকারবার করবে এটাই তো স্বাভাবিক। তাই এই এলাকার জন্য মাযহাবী মুসলমানরাই সঠিক মুসলমান গণ্য হবে এবং বাকিরা অপাঙক্তেয় হবে এটাই স্বাভাবিক।''

প্রশ্ন: আপনি তো ভাল ফতোয়া দিতে পারেন। নতুন মুফতী সাহেব।

ভাল থাকবেন।

২৫| ০৪ ঠা জুন, ২০১৭ রাত ১০:২৮

সমাজের থেকে আলাদা বলেছেন: Click This Link
এটা আপনার কথিত মাদ্রাসার হুজুরদের খতিয়ান।
এখন এদের সাহায্য দেব না কনডম দেব এটা নিয়ে আমি চিন্তায় আছি।

২৬| ০৫ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১১:২৪

সমাজের থেকে আলাদা বলেছেন: ওরে বাবা! নকিব হুজুর আমারে সামুর ভয় দেখায় রে!!!
জীবনে একটা ভালো হুজুর দেখলাম না। জনস্বার্থে কাজ করা বহু লোকের নাম টিভিতে আসে, কোনও দাঁড়িওয়ালা টুপিওয়ালা হুজুর দেখিনি কোনওদিন। এক আজাইড়া মারামারি আর ছাত্রধর্ষণের খবরই হুজুরদের নিয়ে পাওয়া যায়।
একটা হুজুর দেখাও তো বাবা, যে জীবনে ব্যবসা-রাজনীতি ছাড়া আর কিছু করেছে।
সামুর শালা লাগো গো তুমি, আমারে ডর দেহাও! যাও যা করিবার করিয়া দেখাও।

০৫ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১১:৩১

নতুন নকিব বলেছেন:



সামুর ভয় দেখাই নি ভাই! নিয়ম নীতির কথা স্মরন করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি।

এই মন্তব্যটিও আপনার অনেকগুলো ফালতু কথার সমাহার। আপনি কি আজ রোজাদার? হয়ে থাকলে, দয়া করে হুজুরদের নামে পাইকারী গিবত থেকে বিরত থাকুন।

ভাল থাকুন।

২৭| ০৫ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১১:৩৩

সমাজের থেকে আলাদা বলেছেন: গীবত হয় যখন মিথ্যা বানিয়ে বলা হয়। সত্য কথায় কেবল যাদের বলা হয় তাদের গায়ে লাগে।
সাহস থাকলে বলুন আপনি বাস্তব জীবনে কি করেন।

০৫ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:২১

নতুন নকিব বলেছেন:

Sorry, you are not right totally. If you want to know, please go to the path bellow and see about your writings first. We wish, you will feed back us after understanding the actual meaning of Back Biting.

Back Biting - Gibat

Please, try to learn also minimum curtsy that, how to ask someone, about his intimacy. First you need to provide your acquaintance, after that you could title to ask another about his/ her.

Thanks again.

২৮| ০৫ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:৪১

সমাজের থেকে আলাদা বলেছেন: মাদ্রাসার ছাত্রের শিক্ষার বুলী
”ঠাঁই নাই ওরে ঠাঁই নাই
হুজুরের কাছে পুঁটকি না দিয়ে
মাদ্রাসায় কোনও রেহাই নাই”

হালকা ইংরেজীও বলতে শিখেছেন দেখি। আইএস বাংলা টিমের সদস্য নাকি আপনি হুজুর? ইংল্যান্ডে নতুন হামলার দ্বায়িত্ব কি আপনিই পেয়েছেন?

২৯| ০৫ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৩

সমাজের থেকে আলাদা বলেছেন: পুঁটকিমারা হুজুরের কাছে ইসলাম নিয়ে জ্ঞান আমি শুনিনা।

৩০| ০৫ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ২:২২

কাউয়ার জাত বলেছেন: প্লিজ নতুন নকিব এই খবিসের মন্তব্যগুলো ডিলেট করুন এবং একে ব্লক করে দিন।
এই পোস্টের জন্য এজাতীয় মন্তব্য বেমানান, প্রতিউত্তর করাও বোকামি।

০৫ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ২:২৭

নতুন নকিব বলেছেন:



সম্মানিত ভাই,
আপনার পরামর্শ শিরোধার্য। তবে একটু সময় নিতে চাই। ঐ নোংড়া স্বভাবের ব্যক্তিটি পর্যবেক্ষনে রয়েছেন। তাকে তার সীমালঙ্ঘনের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে এত তাড়াতাড়ি চাই না। কিছুটা অবকাশ দেয়া আর কি!

আপনি কেমন আছেন, প্রিয় ভাই?
আপনার আগমনে আনন্দিত বোধ করছি।

৩১| ০৫ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:০৩

আশাবাদী অধম বলেছেন: আমি ব্যক্তিগতভাবে এদেশীয় আহলে হাদীসদের attitude চরমভাবে অপছন্দ করি। এরা সবসময় নিজেদের সাব্যস্তকৃত হকের গরমে টগবগ করে।
তবে আমি এদেশীয় মাযহাবী আলেমদেরকেও দেখি সংকীর্ণতার পরিচয় দিতে।

আচ্ছা এক ব্যক্তি কুরআনের মাত্র দশটি সূরা জানে। সে লাইলাতুল কদরে কয় রাকাত নামাজ পড়বে? আমি বলব তার সামর্থ্য অনুযায়ী দুই রাকাত করে নামাজ পড়তে থাকবে, সম্ভব হলে সারারাত পড়বে। তাকে যদি ৮ বা ২০ এমনকি ৪০ রাকাতেও সীমাবদ্ধ করা হয়, দেখা যাবে রাতের বড় অংশে তার ঘুমানো ছাড়া করণীয় কিছু থাকবেনা। এজন্য প্রথমে বলা উচিত যেটা মরহুম খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (আল্লাহ তাকে জান্নাতে উচ্চ মাকাম দান করুন) বলতেন, তারাবী সময়ের হিসাবে হওয়া উচিত, রাকাতের হিসাবে নয়। অর্থাৎ দীর্ঘ সময় নিয়ে রমজানের রাতের নামাজ পড়া উচিত। বিশেষত শেষ দশকে সারারাত জেগে কিয়াম করার চেষ্টা করা উচিত।

২০ রাকাত তারাবীহ সবচেয়ে প্রামাণ্য। কিন্তু এটাকে রাসূল (সা) এর প্রতি সম্পৃক্ত করা ভুল। পাশাপাশি তারাবীহ এবং তাহাজ্জুদ আলাদা এটাও আমি ব্যক্তিগতভাবে মেনে নিতে পারিনা। আমার প্রশ্ন: রাসূল সা রমজানে এবং রমজানের বাইরে ১১ রাকাত পড়তেন। এর তিন রাকাত বিতির। তবে আজকে তারাবীহ এর সাথে বিতির আসলো কিভাবে? দুই নামাজ যদি আলাদা হয় তবেতো রমজানে বিতির হবে তাহাজ্জুদের সাথে তারাবীহর সাথে না।
আমাদের সমস্যা মাসাআলা নিয়ে যতটা তার চেয়ে বেশি পারস্পরিক ঘৃণা বিদ্বেষ। আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করুন।

০৫ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:৩২

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় আশাবাদি অধম,
আপনার উদার মানসিকতাকে শ্রদ্ধা অশেষ! সুন্দর মন্তব্যে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা!

আসলে তারাবীহর মত একটি বিষয় নিয়ে এই ধরনের পোস্ট দিতে হবে, এটা ভাবি নি। রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত চলমান একটি প্রতিষ্ঠিত সুন্নতকে তারা যেভাবে নানান ছল ছুুঁতো আর বাহানায় ফেলে 'বিদআত' আর 'ভ্যাজাল' প্রমানের কসরত করে যাচ্ছেন, অনেক দেখে, অনেক যাচাই করে অবশেষে এই সিদ্ধান্তে আসতে নিছক বাধ্য হয়েছি বলতে পারেন। বিভ্রান্তি দূর করার দায়িত্ব যদি আমরা এড়িয়ে যাই, সুবিধাবাদীগন অবৈধ ফায়দা হাসিলের চেষ্টা চালাতেই থাকবেন।

আপনার অনেক বক্তব্যের সাথেই আমাদের সহমত।

আল্লাহ পাক আমাদের হেদায়েত প্রদান করুন। আমীন।

ভাল থাকবেন।

৩২| ০৫ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৬

আশাবাদী অধম বলেছেন: এই যে "সমাজের থেকে আলাদা" নামক ব্লগার। ধারণা করছি উনি ধর্মবিরোধী নন, বরং আহলে হাদীস। তো একজন মানুষের মনে কি পরিমাণ ঘৃণা-বিদ্বেষ থাকলে অন্য একজন ধার্মিক ব্যক্তিকে, হোক না ভিন্ন মতের, এজাতীয় ভাষায় আক্রমণ করতে পারে? তাও রমজান মাসে? উনি সম্ভবত আপনাকে কাফের বা মুশরিক মনে করেন।

ইসলামের শিক্ষা কি এটাই?
ব্লগে নাস্তিক বা ধর্মবিরোধীদের আমরা মাঝে মধ্যে কটু কথা বলে থাকি। কিন্তু ইউটিউবে দেখবেন, দুই পক্ষই ধার্মিক, অথচ ভাষার ব্যবহারে তারা কতটা কদর্য! জান্নাত কি আমলের মাধ্যমে হাসিল হয়? না বিতর্কের মাধ্যমে? কে কাকে বোঝাবে।

পরস্পর ঘৃণা বিদ্বেষ পরিহার করা যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা অনুধাবন করি না।

০৫ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৩

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় আশাবাদি অধম,
আবারও মন্তব্যে আসায় কৃতজ্ঞতা সীমাহীন।

আহলে হাদিসদের আমরাও শ্রদ্ধা করি। আমি সাহসের সাথে বলতে পারি, এত বড় পোস্ট ঘেঁটে তাদের কারও প্রতি একটি অশালিন শব্দ পাওয়া যাবে না। তাদের আলেমগন আমাদের মতের বিরুদ্ধে কখনও কখনও যেতে পারেন, কিন্তু, তারা আমাদের শ্রদ্ধার পাত্র আজীবন। আর, সর্বোপরি তারা তো মুসলিম। ইসলাম অমুসলিমদের পর্যন্ত আমাদের যে পরিমান সম্মান তা'জিম করতে শেখায় তারই বা নজীর কোথায় পাওয়া যাবে?

কিন্তু, তিনি যেভাবে এই পোস্ট ছাড়াও আমার অন্য পোস্টে চরম অশালীনতার পরিচয় দিয়েছেন, তা তার হীন নিচ মানসিকতাকে প্রকটভাবে তুলে ধরেছে।

তিনি আহলে হাদিস হলেও হতে পারেন। যদি আহলে হাদিস হয়ে থাকেন, তাহলে বিনীতভাবে জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছে হয়- তিনি কি আহলে হাদিসের সত্যিকারের চেহারাকে কি জনসম্মুখে তুলে ধরছেন? যাক, আমরা তাকে বলতে দিয়েছি। তিনি বলতে থাকুন। আহলে হাদিস হোন অথবা অন্য যা ই হয়ে থাকুন, মানুষ তো তিনি অবশ্যই। মানুষ হিসেবে তার রুচিশীলতার প্রমান দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

আল্লাহ পাক হেদায়েত প্রদানের মালিক।
ভাল থাকবেন, প্রিয় ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.