নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাযহাব কি? মাযহাব কেন মানবো এবং কোনটি মানবো? -পর্ব-২

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৬



হামদ ও সানা সবটুকু আল্লাহ জাল্লা জালা-লুহুর শানে আজিমে:

আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি লা- তারাহুল উয়ূন, ওয়ালা তুখা-লিতুহুজ্জুনূন, ওয়ালা- ইয়াছিফুহুল অ-ছিফূন। ওয়ালা- তুগাইয়্যিরুহুল হাওয়াদিদ। ওয়ালা- ইয়াখশাদ্দাওয়ায়ির। ইয়া'লামু মাসাকি-লাল জিবাল ওয়া মাকাহিলাল বিহার। ওয়া আদাদা কতরিল আমতার। ওয়া আদাদা অরাকিল আশজার। ওয়া আদাদা মা- আজলামা আলাইহিল্লাইল। ওয়া আশরাকা অালাইহিন্নাহা-র। ওয়ালা- তুওঅরি- মিনহু ছামা-য়ুন ছামাআ। ওয়ালা আরদুন আরদা। ওয়া্লা বাহরুন মা ফি কারি। ওয়ালা- জাবালুন মা- ফি ওয়ারি। হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম। লা- তা'খুজুহু ছিনাতুও ওয়ালা- নাউম। হুআল আহাদুচ্ছমাদ। আল্লাজি লাম ইয়াত্তাখিজ ছ-হিবাতাও ওয়ালা- ওলাদ। ওয়া খলাকাল খলকা ওয়া আহছ-হুম আদাদা। ওয়া রফাআচ্ছামাআ বিকুদরতিহী বিগইরি আমাদ। ওয়া বাছাতাল আরদা বিকুদরতিহী আলা মা ফি জামাদ। ওয়া কচ্ছামার রিযকা ফালা ইয়ানছা- বিখলকিহী আহাদ। ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুআন আহাদ। হুয়াল আলিয়্যুল আজিম।

দরুদ ও সালাম প্রিয়তম সরকারে দোজাহানের রওজায়ে আতহারে:

ওয়াচ্ছালাতু ওয়াসসালামু আলা হাবিবিনাল মুসতাফা। আল্লাজি আ'তাহু খুলুকা আদাম। মা'রিফাতা শীশ। শুযাআ'তা নূহ। খুল্লাতা ইবরাহীম। লিছানা ইসমাঈল। রিদাআ ইসহাক। ফাসাহাতা ছা-লিহ। হিকমাতা লূত। বুশরা ইয়া'কূব। জামালা ইউসুফ। ছবরা আইয়্যুব। ত্ব-আতা ইউনূস। জিহাদা ইউশা। ছওতা দাউদ। হুব্বা দানিয়াল। অকারা ইলিয়াস। যুহদা ঈসা। কুওয়্যাতা মূসা। হাইবাতা সুলাইমান। ওয়া ইলমাল খিদর। সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়া আলা আলিহী ওয়া আসহাবিহী ওয়া আতবায়িহী ইলা ইয়াওমিদ্দিন।

সহজ ভাষায় মাযহাব, তাক্বলীদ ও লা-মাযহাবিয়্যাতের পরিচয়

'মাযহাব' শব্দটি একটি স্বীকৃত শব্দ ছিল। ছিল না কোন দাগ বহুল ব্যবহৃত এই শব্দটিতে। কিন্তু ইদানিং উক্ত শব্দে নানাবিধ কালিমা লেপনের চেষ্টা চলছে। 'মাযহাব' বিষয়ে উদ্ভট এবং অবান্তর সব প্রশ্ন তুলে স্বতসিদ্ধ এবং সুপ্রমানিত একটি বিষয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে বহুমাত্রিক প্রলোভনে, নানাবিধ ছল ছুতোয়।

ধারনা হয়, এ অপচেষ্টার মূল কারণ অজ্ঞতা কিংবা ফিতনা সৃষ্টির অপচেষ্টা। মাযহাব বিষয়ে সমালোচনাকারীরা হয়তো মাযহাব বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণাই রাখেন না। কিংবা জেনেশুনে মুসলিম উম্মাহকে বিভক্ত করার জন্য এ বিষয়ে সৃষ্টি করে যাচ্ছেন ধুম্রজাল।

যদিও এ্ই বিষয়ক ধারাবাহিকের প্রথম পর্বে বিষয়টির উপর কিছুটা ধারনা দেয়ার চেষ্টা করেছিলাম, তবু সবার বুঝার সুবিধার্থে বক্ষমান পোস্টেও কিছুটা পেছন থেকে আলোচনা শুরু করতে হবে। আশা করি, ধৈর্য্যচূতি ঘটবে না, সম্মানিত পাঠকবৃন্দের।

আমাদের অনেকের কাছেই মাযহাব বিষয়টি অস্পষ্ট। আমরা সরল ব্যাখ্যায় উক্ত বিষয়টি উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। এ বিষয়ে পরিস্কার ধারণা পেতে হলে আমাদের পূর্ণ আলোচনাটি ধৈর্য সহকারে, গভীর মনযোগের সাথে উপলব্ধিতে আনয়নের চেষ্টা করতে হবে। ইনশআল্লাহ পূর্ণ আলোচনাটি পাঠের পর আশা করি এ বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় পরিস্কার হয়ে যাবে।



মাযহাব কী?

মাযহাব শব্দের অর্থ- পথ, রাস্তা বা গন্তব্যে পৌঁছার সরনি। মাযহাব মানে পথ, যে পথের গন্তব্য- কুরআন ও সুন্নাহ। ভিন্নভাবে বললে, মাযহাব হল মাধ্যম, যা অবলম্বনের দ্বারা পৌঁছে যাওয়া যায় কুরআন এবং সুন্নাহর কাছে।

একটি কথা স্বত:সিদ্ধ যে, আমরা সবাই কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করতে চাই। অর্থাৎ কুরআনে বর্ণিত অজুর ফরজ, হাদীসে বর্ণিত অযুর সুন্নত, মুস্তাহাব, অযু ভঙ্গের কারণ, কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত নামাযের আরকান, আহকাম, ফারায়েজ, নামাযের মাসনূনাত, কতগুলি ওয়াজিব, নামায ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট কারণ কতগুলো? আমাদের দৈনন্দীন জীবনের জীবনঘনিষ্ট মাসায়েলের শরয়ী সমাধান কি? এসব বিষয়ে আমরা কুরআন ও হাদীসে বর্নিত নিয়ম নীতি মেনে আমল করে আল্লাহ পাককে খুশি করতে চাই। কিন্তু আমরা অধিকাংশ জনগনই আলেম নই। ইজতিহাদ (কুরআন হাদিসের জ্ঞানে এই পরিমান বিশেষজ্ঞ যে, কুরআন হাদিসের গভীর জ্ঞানের মাধ্যমে কুরআন ও হাদিস ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করে তা থেকে প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসায়েল বের করার যোগ্যতাকে ইজতিহাদ বলে) করার মত যোগ্যতা আমাদের অনেকেরই নেই। আর একারনে, কুরআন খুলে স্পষ্ট শব্দে অজুর ফরজগুলো দেখতে পাই না। হাদীস খুলে নাম্বারসহ গোসলের ফরজ, নামাযের বিবিধ মাসায়েল নাম্বারসহ, নির্দিষ্ট আকারে বের করতে পারি না। তখন আমরা মুজতাহিদ ইমাম আবু হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক কুরআন ও সুন্নাহ গবেষনা করে বের করা অযুর মাসায়েল, গোসলের মাসায়েল, নামাযের মাসায়েল ইত্যাদি নাম্বারসহ, আলাদা শিরোনাম দিয়ে দিয়ে তারা যা সংকলিত করেছেন, সেই পথনির্দেশনা অনুসরণ করে আমরা আল্লাহ জাল্লা শানুহূ এর প্রেরিত কুরআন ও তাঁর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহের অনুসরণ করি।

তাহলে এর অর্থ কী দাঁড়াল? আমরা মানছি কিন্তু কুরআন ও হাদীস। কিন্তু আমরা নিজেরা বুঝি না বলে যিনি বুঝেন, তার বের করা মাসআলা-মাসায়েলের অনুসরণ করে মূলত: কুরআন ও হাদীসেরই অনুসরণ করছি।

এর নামই মাযহাবের অনুসরণ। মুজতাহিদ ইমামগণ কুরআন ও সুন্নাহ থেকে যে মাসায়েলগুলো বের করে আলাদা শিরোনাম দিয়ে দিয়ে, নাম্বার দিয়ে দিয়ে আলাদা করে লিখে যা সংকলিত করেছেন, কুরআন ও সুন্নাহ থেকে বের করা সেসব মাসআলা-মাসায়েলের সংকলনের নাম হল মাযহাব।

তো মাযহাব অনুসরণ করে আমরা কুরআন ও সুন্নাহই মূলত: অনুসরণ করছি। উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি আরও পরিস্কার হতে পারে।

উদাহরণঃ

সূর্য যখন ডুবে যায়। পৃথিবীজুড়ে নেমে আসে অন্ধকার। তখন পৃথিবীর বুকে যে বস্তুগুলো আছে তা আমাদের চোখের পাওয়ার দূর্বল হবার কারণে আমরা সেগুলো দেখতে পাই না। তখন আমরা বাল্ব, হারিকেন, মোমবাতি, লাইট ইত্যাদি জ্বালিয়ে উক্ত বস্তুগুলোকে দেখি। তো এই যে আঁধারের কারনে কিছুক্ষন পূর্বেও যে বস্তুগুলো আমরা দেখতে পাইনি, আলোর ফোকাসের কারনে এখন দেখতে পাচ্ছি, সে বস্তুগুলো কিন্তু উক্ত আলোর ফোকাস এসে সৃষ্টি করেনি। বরং এগুলো যথাযথভাবে স্বস্থানে এতক্ষনও বিদ্যমান ছিল। আমাদের চোখের পাওয়ারের দুর্বলতার কারণে আগে থেকে থাকা যে বস্তুগুলো আমরা দেখতে পাচ্ছিলাম না, আলোর প্রতিফলনে তা দেখতে সক্ষম হচ্ছি মাত্র। বাল্ব, হারিকেন, মোমবাতি, লাইট ইত্যাদির আলোর ফোকাস কোন বস্তু তৈরি করে না, বরং দেখার ক্ষেত্রে সাহায্য করে মাত্র।

তেমনি কুরআন ও হাদিসের ভেতরে যে মাসয়ালা-মাসায়েলগুলো লিপিবদ্ধ করা আছে, তা আমরা কুরআন ও হাদিস খুলে নিজেদের ইলমের দুর্বলতার কারণে দেখতে পাই না। যেমন অজুর ফরজ, গোসলের নির্দিষ্ট ফরজ, সুন্নাত, মাকরূহ ইত্যাদি আলাদা আলাদাভাবে নির্দিষ্ট আকারে আমরা দেখতে পাই না। কারণ আমাদের জ্ঞান কম। ইলম কম। অথচ এ মাসআলাগুলো কুরআন ও হাদিসের ভিতরে আছে। তখন আমরা মুজতাহিদ ইমামদের জ্ঞান, তাদের ইলমের প্রদীপের আলোয় কুরআন ও হাদিসের ভেতরের মাসআলাগুলোকে দেখে থাকি মাত্র। যে মাসায়েলগুলো মুজতাহিদ ইমামগণ তাদের ইলম ও ফাক্বাহাতের ফোকাস দিয়ে কুরআন ও হাদিসের ভিতর থেকে বের করে উম্মতের জন্য উন্মোচিত করে দিয়েছেন।

মূলত আমরা মানছি কুরআন ও সুন্নাহকে। কিন্তু না বুঝার কারণে সহায়তা নিচ্ছি মুজতাহিদ ইমামগণ থেকে। পরিস্কার বুঝা গেল, মাযহাবের ইমামগণ মাসআলা বানাননি, বরং তারা কুরআন ও হাদিসের ভিতর থেকে মাসআলা দেখিয়েছেন।

বিষয়টি সম্পর্কে আরো পরিস্কার ধারণা রাখতে হলে আমাদের তিনটি পরিভাষা সম্পর্কে জানতে হবে। শব্দগুলো হলঃ ১-মুজতাহিদ। ২-মুকাল্লিদ। ৩-গায়রে মুকাল্লিদ।

মুজতাহিদ কাকে বলে?

যিনি কুরআন ও সুন্নাহ ঘেটে নিজে নিজে অজু গোসল, নামায, হজ্ব ইত্যাদিসহ মানুষের জীবন ঘনিষ্ট সকল মাসায়েল, ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাহ, মুস্তাহাব, মাকরূহ, এসব ভেঙ্গে যাবার কারণ ইত্যাদি আলাদা আলাদা করে বের করে আমল করতে সক্ষম, উক্ত ব্যক্তিকে বলে মুজতাহিদ। অর্থাৎ যিনি নিজে নিজে কুরআন ও সুন্নাহ থেকে জীবন ঘনিষ্ট যাবতীয় মাসায়েল বের করে আমল করার ইলমি যোগ্যতা রাখেন তাকে বলা হয় মুজতাহিদ।

যেমন চার মাযহাবের ইমামগণ ছিলেন মুজতাহিদ।

মুকাল্লিদ কাকে বলে?

মুকাল্লিদ উক্ত ব্যক্তিকে বলে, যিনি নিজে নিজে কুরআন ও সুন্নাহ ঘেটে জীবন ঘনিষ্ট সকল মাসায়েল নির্দিষ্ট আকারে বের করতে পারে না, কিন্তু যিনি পারেন, সেই মুজতাহিদের বের করা মাসায়েল অনুপাতে আমল করে আল্লাহর বিধানের পাবন্দী করেন। উক্ত ব্যক্তিকে বলা হয় মুকাল্লিদ।

যেমন আমরা সবাই হানাফী মাযহাবের মুকাল্লিদ।

গায়রে মুকাল্লিদ কারা?

যারা কুরআন ও সুন্নাহ থেকে নিজ প্রাজ্ঞতায় জীবন ঘনিষ্ঠ সমস্ত মাসায়েল নির্দিষ্ট আকারে বের করতে পারেন না, আবার যারা পারেন, সেই মুজতাহিদের উদ্ভাবিত মাসায়েল অনুসরণও করেন না, বরং নিজে নিজে পন্ডিতী করেন, তাদের বলা হয়, গায়রে মুকাল্লিদ।

তাদের উদাহরন আমি তুলে ধরতে চাই না। সম্মানিত পাঠক, আশা করি, তাদের চিনে নিতে পেরেছেন ঠিক ঠিক ভাবেই।

কয়েকটি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে বিষয়টি আরো পরিস্কার হবেঃ

দৃষ্টান্ত-১

সমুদ্রের তলদেশে হীরা মাণিক্য জহরত রয়েছে। যা সবারই প্রয়োজন। কিন্তু সবাই ডুবুরী নয়। ডুবুরী নিজ যোগ্যতায় ডুব দিয়ে সমুদ্রের তলদেশ থেকে হীরা মাণিক্য জহরত আহরণ করে তা ব্যবহার করে।

আর যারা ডুবুরী নয়, তারা উক্ত ডুবুরীর মাধ্যমে উক্ত হীরা মাণিক্য সংগ্রহ করে ব্যবহার করে।

যারা ডুব দিতে জানে না, তারা ডুবুরীর মাধ্যমে হীরা মাণিক্য জহরত পেয়ে ডুবুরীর জন্য দুআ করে। কিন্তু শুকরিয়ায় মাথা নত করে আল্লাহর দরবারে।

আরেক দল ডুবুরী নয়। আবার ডুবুরীর কাছেও যায় না, বরং ডুব না জানা সত্বেও ডুব দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

তেমনি কুরআন ও হাদিসের অভ্যন্তরে মাসায়েলের হীরা মাণিক্য জহরত লুকায়িত। মুজতাহিদ স্বীয় যোগ্যতাবলে সে মাসআলা বের করে আমল করেন। আর মুকাল্লিদরা মুজতাহিদের আহরিত মাসায়েলের হীরা মাণিক্য দ্বারা আমল করেন।

মুকাল্লিদগণ মুজতাহিদের আহরিত মাসায়েল অনুপাতে আমল করে ইবাদত করে আল্লাহর। আর মাসায়েল সংগ্রাহক মুজতাহিদের জন্য দুআ করে।

আর গায়রে মুকাল্লিদরা মুজতাহিদের কাছে না গিয়ে মাসায়েল বের করার যোগ্যতা না থাকা সত্বেও গবেষণার নামে দ্বীনের মাঝে ফিতনার সৃষ্টি করে।



দৃষ্টান্ত-২

কোন এলাকায় নবনির্মিত মসজিদের সকল মুসল্লির জন্যই অযু করার পানি প্রয়োজন। কিন্তু সবার পক্ষে জমিন খনন করে পানি বের করে অযু করা সম্ভব নয়।

তখন জমিন খনন করতে সক্ষম কোন দানবীর ব্যক্তি এসে তার অর্থ, শ্রম ও মেধা ব্যয় করে জমিন খনন করে পুকুর কেটে কিংবা নলকুপ বসিয়ে জমিনের নিচ থেকে মুসল্লিদের জন্য পানির ব্যবস্থা করে দেয়।

খননকৃত পুকুরের পানি আল্লাহর সৃষ্টি করা। সেই পানি কেবল দানবীর ব্যক্তিটি স্বীয় মুজাহাদা দিয়ে প্রকাশ ও ব্যবহার উপযোগী করে দিয়ে মুসল্লিদের উপর ইহসান করে থাকেন। অনেক সময় পানির প্রকাশক ও ব্যবস্থাপক উক্ত ব্যক্তির নামে কুপের নামকরণও হয়ে যায়। নামকরণ ব্যক্তির নামে হলেও সবাই জানেন উক্ত পানি জমিনের নিচে জমিনের সৃষ্টি লগ্ন থেকেই ছিল এবং পানির স্রষ্টা আল্লাহ তাআলা। দানবীর ব্যক্তি কেবল পানির প্রকাশক।

তখন উক্ত মসজিদের মুসল্লিরা পুকুর অথবা নলকুপের পানি দ্বারা অযু করে মসজিদে প্রবেশ করে ইবাদত করেন আল্লাহর। কিন্তু যেহেতু দানবীর ব্যক্তিটি জমিনের নিচ থেকে পানির ব্যবস্থা করে দিয়ে মুসল্লিদের উপর ইহসান করেছেন, তাই মুসল্লিগণ উক্ত পানি দিয়ে অযু করে দানবীর ব্যক্তির জন্য দুআ করে।

তেমনি কুরআন সুন্নাহের গভীরে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অযু, গোসল, সালাত ইত্যাদির ফরজ, সুন্নত, মুস্তাহাব ইত্যাদি কুরআন ও হাদিসের সূচনালগ্ন থেকেই তাতে প্রবিষ্ট করিয়ে রেখে দিয়েছেন। কিন্তু সবার পক্ষে কুরআন ও সুন্নাহ থেকে সেসব মাসায়েল নিজে নিজে বের করে আমল করা সম্ভব নয়। কিন্তু সেই মসজিদের অযুর ঘটনার মত, সবারই যেমন অযু করা প্রয়োজন। একইরকমভাবে, সবারই তেমনি আমল করা প্রয়োজন। আর এই আমলের সুবিধার্থে মুজতাহিদ ইমামগণ তাদের মুজাহাদা মেহনত দিয়ে কুরআন ও হাদিসের ভেতর থেকে মাসায়েলগুলো বের করে, আলাদা আলাদা শিরোনাম দিয়ে দিয়ে, নির্দিষ্ট আকারে লিপিবদ্ধ করে উম্মতের জন্য প্রকাশ করে দিয়েছেন।

তখন মুজতাহিদের অনুসারীরা সেসব মাসায়েল অনুপাতে দ্বীন পালন করে, আর মাসায়েল বের করে দিয়ে ইহসানকারী মুজতাহিদ ইমামদের জন্য দুআ করেন। কিন্তু ইবাদত করেন কেবলমাত্র আল্লাহ তাআলার।

দৃষ্টান্ত-৩

নামাযের ইমামগণ ইমাম হবার কারণে তারা সরাসরি আল্লাহর ইবাদত করেন, আর মুসল্লিরাও ইমামের অনুসরণে ইবাদত মূলত: আল্লাহ তাআলারই করেন। কিন্তু বাহ্যিকভাবে দেখা যায়, তারা অনুসরণ করেন ইমামের।

তেমনি মুজতাহিদগণ ইমাম হবার কারণে তারা সরাসরি কুরআন ও সুন্নাহ থেকে মাসায়েল বের করে আমল করেন, আর মুকাল্লিদগণ মুজতাহিদ ইমামদের অনুসরণে ইবাদত করেন মূলত: আল্লাহ তাআলারই। যদিও দেখা যায়, তারা বাহ্যিকভাবে অনুসরণ করেন মুজতাহিদ ইমামের।

দৃষ্টান্ত-৪

বাংলাদেশের সংবিধানের কোন আইনী জটিলতায় কোন ব্যক্তি আক্রান্ত হলে, উক্ত ব্যক্তি সংবিধান বিশেষজ্ঞ উকিলের কাছে গমণ করেন। আর উক্ত উকিলের পথনির্দেশনায় মুআক্কিল ব্যক্তি বাংলাদেশের সংবিধান মান্য করেন।

এক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি উকিলের নির্দেশনা মানার কারণে মুআক্কিলকে সংবিধান বিরোধী আখ্যায়িত করেন না। করাটা আহমকী ছাড়া আর কিছু হতেও পারে না।

তেমনি কুরআন ও সুন্নাহ হল আল্লাহর দেয়া সংবিধান। যারা এ বিষয়ে প্রাজ্ঞ নন, তারা উক্ত বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মুজতাহিদ ইমামদের পথনির্দেশনায় আল্লাহর সংবিধান মান্য করে থাকেন। আর এটিই আল্লাহ পাকের স্পষ্ট নির্দেশনা।

আশা করি, মাযহাব অনুসরণের হাকীকত উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে এতক্ষনে পরিস্কার হয়ে গেছে। মাযহাব মানা মানে কুরআন ও হাদিসের ভিন্ন কিছু মানা নয়। বরং কুরআন ও হাদিস বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির পথনির্দেশনায় কুরআন ও হাদিস মানার নাম হল মাযহাব অনুসরণ। আর কুরআন ও হাদিস না বুঝার পরও নিজের উদ্ভট বুঝ অনুপাতে দ্বীন মানার নামই হল 'লা-মাযহাব' বা 'গায়রে মুকাল্লিদিয়্যাত'।

আল্লাহ পাক আমাদের দ্বীনের সহিহ বুঝ দান করুন। দ্বীনের পথে চলতে গিয়ে সমস্ত প্রকারের ধোঁকা ও প্রতারনা থেকে বেঁচে থেকে হেদায়েতের পথে চলে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের কিসমত নসিব করুন।

শুধু আমাদের পাক ভারত উপমহাদেশে নয়, সারা বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম যে হানাফি মাযহাবের উপর আমল করে চলেছেন, আসুন আমরাও কুরআন ও সহিহ হাদিসের ভিত্তিতে সংকলিত হানাফী মাযহাব অনুসরণ করে মনের প্রশান্তির সাথে ইবাদত করে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জনের পথে ধাবিত হই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা দ্বীন ইসলাম নিয়ে অহেতুক বাড়াবাড়ি বর্জন করে আমাদের সহীহ দ্বীনের উপর চলার তাওফিক দান করুন। আমীন।

মাযহাব বিষয়ে যারা আরও বিস্তারিত জানতে চান তাদের জন্য মাযহাব বিষয়ক নির্ভরযোগ্য একটি বইয়ের ওয়েব লিঙ্ক-

Mazhab-Ki-O-Keno- Justice Allamah Taqi Usmani

অথবা,

Mazhab Ki o Keno? Justice Allamah Taqi Usmani

কৃতজ্ঞতা: নিবন্ধটি সংকলনে আহলে হক মিডিয়ার সহায়তা নেয়ায় তাদের প্রতি সবিশেষ কৃতজ্ঞতা।



প্রথম পর্বের লিঙ্ক-

মাযহাব কি? মাযহাব কেন মানবো এবং কোনটি মানবো? -পর্ব-১

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১১

সনেট কবি বলেছেন: মাযহাব না মানলে মানুষ বিপথগামী হয়। কারণ কোরআন ও হাদীসের মর্ম সবাই সঠিকভাবে বুঝতে পারেনা। সেজন্য জ্ঞানীগণ কি বলেছেন সে অনুযায়ী চলতে হয়।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৭

নতুন নকিব বলেছেন:



মূলকথাটা বলেছেন। অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রথম কমেন্টে। নিরন্তর দুআ।

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: দাও দিয়ে আজ
জোড়াতালি
নিজের মনের
চোরাবালি l

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৬

নতুন নকিব বলেছেন:



দাও বিদায় দাও
আত্মবড়াই,
ভাল হওয়ার
চালাও লড়াই।

৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩০

একে৪৭ বলেছেন: দেশ দেশ করতে করতে আমরা আওয়ামিলীগ-বিএনপি করেছি।
আজ আমরা আওয়ামিলীগ-বিএনপি হতে পরেছি, শুধু মন থেকে দেশটাই হারিয়ে গেছে।

মাজহাব নিয়ে আপত্তি থাকার কথা ছিল না, কারন সব মাজহাব ভাল কথাই বলে। তবে ওই যে রাজনীতি'র মতো 'মাজহাব' ও আরেকটা টার্ম বা ভাগ, যা মূল ধর্ম ইসলাম থেকে আরেকটা বিভক্তি তৈরী করেছে, সেটার কারনে এইসব 'মাজহাব' থেকে দূরে থাকা উচিৎ।

আপনাদের কথাগুলো অনেকটা এরকমঃ
আমি পড়তে পারি না, তাই পড়তে চেষ্টা করার দরকার নাই, কারন আমি ভুল পড়বো।
কোন টিচার বা ইমাম, যিনি পড়তে পারেন বা পেরেছেন, উনি যা যেভাবে বলেছেন, ওনারটাই মানো, পরীক্ষায় পাস করা যাবে।

আসলেই কি এমনটা হওয়া উচিৎ?
মানুষকে পরকালে সফল হবার জন্য প‌্যাকেজ প্রোগ্রাম না দেখিয়ে পসিবল হলে পড়তে শিখিয়ে দিন, বুঝতে শিখিয়ে দিন, নিজেই বিচার করে নিবে। এতে সামগ্রিকভাবে মানুষজন উপকৃত হবে।

ভালো কাজের জন্য কোন দল নিয়ে ভাবার দরকার নাই, ইবাদতের জন্যও কোন মাজহাবের দরকার নাই। আমি যদি পূর্ণ বিশ্বাসে মন থেকে আল্লাহ্ কে ভুলভাবেও ডাকি, আল্লাহ্ মানুষের মতো অত নির্দয় নন যে সারা দিবেন না।
আর কারও ইবাদতে কোন ভুল থেকেই থাকে, তবে তা শুধরে দিতে পারেন, একজন সত্যিকারের ইমানদার ব্যাক্তি তা যৌক্তিক মনে হলে শুধরে নিবেন। তার জন্য কোন দলে নাম লেখানো, নির্দিষ্ট কোন পথে নাম লিখানো বা নিজেকে নির্দিষ্ট কোন পথের পথিক বানানোর দরকার আছে বলে মনে করি না। মুসলমান হলে তাদের পথ এক এবং অভিন্ন হবার/করার ডাক দেয়া উচিৎ।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫২

নতুন নকিব বলেছেন:



দারুন সুন্দর সুচিন্তিত একটি মন্তব্য করেছেন। আপনার প্রতি শ্রদ্ধা এতখানি আন্তরিকতা নিয়ে বিষয়টিতে কলম ধরার জন্য।

তবে, আপনি যেভাবে, যত সহজভাবে ধর্মীয় বিধি-বিধানকে বুঝতে চেষ্টা করেছেন আসলে বিষয়টি মোটেই ততটা সহজ কোনো বিষয় আদৌ নয়। ধর্মীয় বিষয়ে প্রত্যেকেই যদি হাদিস কুরআন দেখে দেখেই আমল করতে পারতেন, তাহলে আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু লোককে 'ফিকহ' তথা মাসআলা-মাসায়েল শেখার নির্দেশ দিতেন না। ইলম অর্জনের প্রতিও এতটা গুরুত্বারোপ করতেন না।

আর খোলা চোখে তাকালে সবচে' বাস্তব যে সত্যটি আমাদের সামনে ভেসে ওঠে, তা হচ্ছে, একটি ধর্মের, একটি জাতির সকল লোকের পক্ষে কুরআন হাদিসের গভীর তত্ত্ব ও তথ্যানুসন্ধান এবং গবেষনাপূর্বক মাসআলা-মাসায়েল উদ্ভাবন করে সেই অনুযায়ী আমল করে চলা কখনোই সম্ভব নয়। সুতরাং, কুরআন হাদিস যারা কম জানেন, কিংবা একেবারেই জানেন না, তাদের জন্য আমল করার সুবিধা স্বয়ং আল্লাহ তাআ'লা পবিত্র কুরঅানেও বলে দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেন-

যেমন-

وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ۚ [٣١:١٥]

যে আমার অভিমুখী হয়,তার পথ [মাযহাব] অনুসরণ করবে। [সূরা লুকমান-১৫]

মাযহাব মানে পথ। এ আয়াতে আল্লাহ অভিমুখী তথা কুরআন ও হাদীস বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের মাযহাব অনুসরণ করার পরিস্কার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।

আরেক আয়াতে এসেছে-

فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ [٢١:٧]

অতএব তোমরা যদি না জান তবে যারা জানে তাদেরকে জিজ্ঞেস কর। [সুরা আম্বিয়া-৭]

এ আয়াতেও না জানলে, না বুঝলে, বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের কাছে জিজ্ঞাসা করে মানতে বলা হয়েছে। আর বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের নির্দেশনা অনুপাতে ইসলামী শরীয়ত মানার নামইতো মাযহাব।

এরকম আরো অনেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা জ্ঞানীদের পথ অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। অনুসরণ করতে বলেছেন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের। আর এভাবে কুরআন ও হাদীস বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের অনুসরণে ইসলামী শরীয়ত মান্য করার নামই হল মাযহাব অনুসরণ করা।

এর উত্তরও আমরা পবিত্র কুরআনে পরিস্কার ভাষায় দেখতে পাই-

ইরশাদ হচ্ছেঃ

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنكُمْ ۖ [٤:٥٩]

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর,নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং “তোমাদের মধ্যে” যারা জ্ঞানী ও প্রাজ্ঞ তাদের। [সূরা নিসা-৫৯]

উক্ত আয়াতের দিকে লক্ষ্য করে দেখুন। আল্লাহ তাআ'লা ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণের নির্দেশের পরেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে 'উলিল আমর' তথা বিচারক বা জ্ঞানী প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের অনুসরণ করতে।

দয়া করে পর্ব-১ পড়ে মতামত জানালে অনেক খুশি হব। অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।

৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৫৮

জাহিদ হাসান উঃচেঃ বলেছেন: @ এ কে ৪৭- মাযহাবের ইমামদের উপর আস্তারাখা যায়।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৪

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ আপনার উপস্থিতি এবং সুন্দর মন্তব্যে।

ভাল থাকবেন, প্রার্থনা নিরন্তর।

৫| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৯

একে৪৭ বলেছেন: আমি মনে হয় আমার মন্তব্যের আসল জায়াগাটাই বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি।

আপনি যদি আমাকে বলেন যে আমি যেভাবে নামাজ আদায় করছি, সেখানে ভুল আছে। (থাকতেই পারে)
তারপর আমাকে সুধরে দিলেন, এবং রেফারেন্স দেখাতে আপনি দেখালেন কোরআনের এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ওই ইমাম এমনভাবে বলেছেন, তবে আমার তাতে কোন আপত্তি থাকার কথা না। কোন মুসলিমেরই থাকার কথা না যিনি মন থেকে চাইছেন তার ইবাদত যেন সঠিক হয়।

আমার আপত্তিটা ওখানে যখন ওই ইমামের একটা নির্দেশনা ফলো করতে গিয়ে আমাকে একটা আলাদা নাম দেয়া হবে, হানাফি... শাফি... আওয়ামীলিগ, বিএনপি...

যখন এরকম ভাগ চলে আসে, তখন মাঝে তিক্ততা চলে আসে, বিভেদ চলে আসে।
কোন ইমামের কোন নির্দেশনা কেউ ফলো করতেই পারে, তবে তার জন্য মাজহাবের নামে বিভিন্ন নামে ভাগ করার বিপক্ষে আমার অবস্থান বোঝাতে চেয়েছি।

মানুষের মস্তিষ্ক বড়ই আজব!
আপনি টিভিতে দেখছেন দুটো পশু খাবার নিয়ে কাড়াকাড়ি করছে।
আপনি যদি কিছুক্ষন সেই ভিডিওটি দেখতে থাকেন, আপনার ভেতরও তার একটা প্রভাব চলে আসবে। আপনি কোন একটা পশুর পক্ষ নিতে শুরু করবেন। মনে মনে চাইবেন যে নির্দিষ্ট একটা পশু খাবারটা পাক। যদিও এখানে আপনার কোন স্বার্থ জড়িত নেই।

আমরা কেন আবাহনি-মোহামেডানের পক্ষ নেই? দুটুইতো আমার দেশের দল!
কেন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে বিবাদ করি? কেউ কেউ স্পেইন, জার্মানি কিংবা ইটালীর পক্ষ নিয়ে করবে, সবগুলোইতো ভিনদেশী দলা!
এই পক্ষপাতিত্বটা আমাদের সধারন প্রবৃত্তি। যত ভাগ, তত মত, তত বিবাদ!

তাই বোঝাতে চেয়েছি- সঠিক-ভুল থাকতে পারে, আমরা একে অন্নকে সুধরে দিবো, বিভিন্ন সোর্স সোর্স বা জ্ঞানি-গুনি ইমামের দেখানো পথও নিবো।
তবে মাজহাবের নামে কোন ভাগ নয়। আমরা মুসলিম, এটাই হোক একমাত্র ভাগ।

ধন্যবাদ।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার উপলব্ধি নি:সন্দেহে মহত এবং প্রশংসাযোগ্য।

আপনি অবশ্যই একমত হবেন, মাযহাব হঠাত করে আজ কালকে সৃষ্ট কোনো বিষয়ের নাম নয়। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মহান সাহাবীদের সংস্পর্শে থাকা প্রখ্যাত তাবেয়ী এবং তাবে তাবেয়ীদের যুগ থেকে চার মাযহাবের যাত্রা শুরু হয়ে আজ অবদি সারা পৃথিবীতে আচরিত হয়ে আসছে। কেউ বললেই মাযহাবকে যেমন অস্বীকার করা যাবে না। মাযহাবের আওতায় থেকেই মূলত: দ্বীন ইসলামের সকল মাসআলা-মাসায়েল সুশৃঙ্খলভাবে আমাদের পর্যন্ত এসে পৌঁছেছে। চারটি মাযহাব থাকাতে কোনো সমস্যা নেই।

আপনি প্রথম পর্বে যুক্ত করে দেয়া মুফতী তকি উসমানী সাহেবের মাযহাব কি ও কেন? বইটি দয়া করে যদি সময় সুযোগমত পড়ে মতামত জানান অনেক কৃতজ্ঞ থাকবো।

অনেক ভাল থাকবেন। আপনার মন্তব্যগুলো অনেক ভাল লেগেছে।

৬| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৮

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক লম্বা পোস্ট, প্রয়োজনীয় বিষয় গুলো জানতে পেরে ভালো লাগছে।

শুভকামনা আপনার জন্য সবসময়

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৭

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার উপস্থিতি আনন্দদায়ক। সুন্দর মন্তব্য রেখে যাওয়ায় শুভকামনা অশেষ। অনেক ভাল থাকার প্রার্থনা।

৭| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৯

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।
লা-মাযহাবীরা কি সবাই নিজেরে খুউব জ্ঞানী ভাবে??

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৩

নতুন নকিব বলেছেন:



ভাবনা বোধ হয় তাদের এমনই। ভাবনা যা ই হোক, পৃথিবীতে একজন লা মাযহাবিদাবিদারও মাযহাব না মেনে পুরোপুরি ইসলাম ফলো করতে পারেন না। এটাই প্রকৃত বাস্তবতা।

মুখে যতই বাগাড়ম্বর করুন না কেন, তারা মাযহাবের মহান ইমামদের নিকট ইচ্ছায় হোক, আর অনিচ্ছায়, জ্ঞাতসারে কিংবা অজ্ঞাতসারে এসে নতজানু হন। এই বাস্তবতা তারাও অনুধাবন করতেন, যদি একটু সুস্থ মাথায় চিন্তা করতেন।

৮| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২২

ঢাকার লোক বলেছেন: একজন প্রকৃত মুসলমান হওয়ার জন্য মাজহাব এর চেয়ে বেশি জরুরি কোরান এবং সব ইমামের ইমাম রাসূল (স) এর সহী সুন্নাহ কে জানা এবং সে হিসাবে আমল করা , কোরান সুন্নাহ অনুসারে যা ঠিক তা অনুসরণ করা আবশ্যক, কোনো বিশেষ মাজহাবের তাকলীদ করা ফরজ/ওয়াজিব মনে করা ভুল, এতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অন্য মাজহাবে অনুসৃত সঠিক মাসায়েলকে অস্বীকার করে ভুল মাসায়েলের শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকতেই পারে . মাজহাব সম্পর্কে শেইখ মতিউর রহমান মাদানী সাহেবের বেশ কয়েকটা লেকচার ইউটিউবে আছে , যারা আরো জানতে আগ্রহী তারা সময় করে দেখতে পারেন . ধন্যবাদ

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪২

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ। কৃতজ্ঞতা।

মতিউর রহমান মাদানী অথবা আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ সাহেবগন কি যে বলতে পারেন, ভাল জানা আছে। এরা তো আবার কি না 'শেইখ'! এরা তো অধিকাংশ 'মাদানী'! 'মক্কী' দেখি না! 'মক্কী' নেই? হায়রে পতন! হায়রে অধ:পতন!

আপনি সম্ভবত: আমার দু'টি পোস্টের কোনোটাই পড়েন নি! পড়ে থাকলে আপনার কমেন্ট এমন হওয়ার কথা নয়।

দয়া করে দু'টি পোস্টে যদি একটিবার নজর বুলিয়ে পুনরায় মন্তব্যে আপনার মূল্যবান মতামত জানাতেন!

অনেক কৃতজ্ঞতা আবারও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.