নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২৯)

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৮



তালবিয়া পাঠে কি যে স্বাদ! কি যে এক মজা! গুনগুন গুনগুন আওয়াজ! প্রত্যেকের মুখে একই বানী! প্রতিজন হাজিই মহান মালিকের দরবারে বিনীতভাবে নিজের উপস্থিতির জানান দিয়ে যাচ্ছেন! নিজেকে তুলে দিচ্ছেন মালিকের সমিপে! সোপর্দ করছেন পরম স্বত্তার একান্ত সান্নিধ্যে! আহ! লক্ষ লক্ষ মানুষ! কি মধুর গুঞ্জরন! কি প্রেমের নিবেদন! কি আত্মবলিদান! নিজেকে, নিজের অসহায়ত্বকে তুলে ধরার কি উদগ্র বাসনা! কি বিনয়াপ্লুত রোদন! অন্তরকে পুড়ে খাঁটি করার কি আত্মপ্রচেষ্টা! কি পরিমান দহন আর মুহাব্বতের আছর লুকায়িত রয়েছে হজের এই তালবিয়ায়!

বান্দার সঙ্গে আল্লাহ তাআ'লার প্রেমের সর্বোচ্চ সেতুবন্ধন হচ্ছে হজ। যাদের আর্থিক ও শারীরিক সামর্থ রয়েছে হজ তাদের জন্য ফরজ ইবাদাত। এ ফরজ ইবাদত পালনের উদ্দেশ্যে হাজিদের সর্বপ্রথম কাজ হলো ইহরাম বাঁধা। ইহরাম বাধার পরই এই তালবিয়া তিনবার পাঠ করতে হয়।

হজে গমনেচ্ছুদের সুবিধা বিবেচনায় বাংলায় উচ্চারণ ও অর্থসহ তালবিয়া তুলে ধরা হলো-

i) لَبَّيْكَ ا للّهُمَّ لَبَّيْكَ
ii) لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ
iii) اِنَّ الْحَمدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ
iv) لاَ شَرِيْكَ لَكَ

তালবিয়ার উচ্চারণ-
১. লাব্বাইক আল্লা-হুম্মা লাব্বাইক,
২. লাব্বাইক, লা-শারি-কা লাকা লাব্বাইক,
৩. ইন্নাল হামদা ওয়ান্ নি`মাতা লাকা ওয়াল-মুল্ক,
৪. লা শারি-কা লাক।"

তালবিয়ার অর্থ :
১. আমি হাজির হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত!
২. আপনার ডাকে সাড়া দিতে আমি হাজির। আপনার কোন অংশীদার নেই।
৩. নিঃসন্দেহে সমস্ত প্রশংসা ও সম্পদরাজি আপনার এবং একচ্ছত্র আধিপত্য আপনার।
৪. আপনার কোন অংশীদার নেই।

তালবিয়া পড়ার নিয়ম-
হজ ও ওমরা পালনকারীগণ মিকাতে (যেখানে ইহরাম বাঁধতে হয়) পৌঁছে অথবা তার পূর্ব হতে গোসল বা ওজু করে (পুরুষগণ ইহরামের কাপড় পরে) ২ রাকাআত নামায পড়ে কেবলামুখী হয়ে হজ বা উমরার নিয়ত করবে। নিয়ত শেষে অন্তত ৩ বার (পুরুষগণ সশব্দে) ৪ শ্বাসে তালবিয়াহ পাঠ করবে। নিয়ত ও তালবিয়ার দ্বারা ইহরাম বাঁধার কাজ সম্পন্ন করার পর বেশি বেশি তালবিয়াহ পড়তে থাকা। এ তালবিয়া তাওয়াফের স্থানে (বাইতুল্লা/কাবা) প্রবেশের পূর্ব পর্যন্ত পড়বে।

জেনে রাখা প্রয়োজন
বাংলাদেশ থেকে যারা সরাসরি পবিত্র নগরী মক্কায় যাবেন; তাঁরা বাংলাদেশ থেকেই ইহরাম বেঁধে রওয়ানা হবেন। তাদের জন্য ইহরাম পরবর্তী সময় তিনবার তালবিয়া পাঠ করতে হয়। আর যারা মদিনায় যাবেন; তাঁরা ইহরাম বাঁধবেন মদিনায় যাওয়ার পর; তার আগে নয়। আবার কেউ যদি বাংলাদেশ থেকে ইহরাম না বেঁধে মক্কায় যান; তবে সেখানে যেয়েও ইহরাম বাঁধা যাবে।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------



হজ তিন প্রকার। তিন প্রকারের হজ নিয়ে অনেকের কৌতুহল থাকে। কোন হজ আদায় করা কার জন্য সুবিধাজনক তা বুঝার জন্য এই বিষয়ে ধারনা রাখা একান্ত প্রয়োজন। তাই সবিস্তারে বিষয়টি উপস্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে-

ইফরাদ হজ....................................................................................................
হজের মাসে (শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ) ওমরা ছাড়া শুধুমাত্র হজ আদায়ই হলো ইফরাদ হজ। এ ধরনের হজ আদায়কারীকে মুফরিদ বলা হয়। বিশেষ করে যারা অন্যের হজ অর্থাৎ বদলি হজ আদায় করেন, তাঁদের জন্য ইফরাদ হজ আদায় করতে হয়।

যেভাবে ‘ইফরাদ’ হজ আদায় করবেন
মুসলিম উম্মাহর জন্য হজ আদায়ের সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত ফরজ হজ আদায়ের নিয়ম হচ্ছে তিনটি। তামাত্তু, ক্বিরান ও ইফরাদ। ইতিপূর্বে তামাত্তু ও ক্বিরান হজ আদায়ের নিয়ম তুলে ধরা হয়েছে। ইফরাদ হজ আদায়কারীদের জন্য ধারাবাহিক নিয়ম তুলে ধরা হলো-

ইফরাদ হজের নিয়মগুলো হলো-

১. হজের ইহরাম (ফরজ)
যারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সরাসরি মক্কায় যাওয়ার ইচ্ছা করেছেন, তারা নিজ নিজ দেশ থেকে অর্থাৎ মিকাত অতিক্রম করার পূর্বেই ইহরাম বাঁধবেন। ইহরাম বাঁধার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সেরে ওজু বা গোসল করে সেলাইবিহীন দু’টি কাপড় পরিধান করা। মহিলারা তাদের ইহরামের পোশাক পরিধান করবেন। অতপর দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে হজ ও ওমরার নিয়ত করা এবং তিনবার তালবিয়া পাঠ করা-

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ওমরাতান; লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক; লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক; ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক; লা শারিকা লাক।

২. তাওয়াফে কুদুম (সুন্নাত)
ইফরাদ হজ আদায়কারীদের জন্য এ তাওয়াফকে ‘তাওয়াফে কুদুম’ বলা হয়; যা আদায় করা (সুন্নাত)।

হাজরে আসওয়াদ থেকে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে দুই হাত কাঁধ পর্যন্ত ওঠিয়ে তাওয়াফ শুরু করা। প্রথম তিন চক্কর রমল তথা বীরের মতো বুক ফুলিয়ে কাঁধ দুলিয়ে ঘন ঘন কদমে দ্রুতগতিতে প্রদক্ষিণ করা। পরবর্তী চার চক্কর সাধারণভাবে হেটে আদায় করা।

সম্ভব হলে হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করে তাওয়াফ শুরু করে রুকনে ইয়ামেনি অতিক্রম করার সময় তা স্পর্শ করা। সম্ভব না হলে ইশারা করাই যথেষ্ট।

রুকনে ইয়ামেনি থেকে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত তাওয়াফকালে এ দোয়া পড়া-

উচ্চারণ : রাব্বানা আতিনা ফিদ্দিুনিয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াক্বিনা আ’জাবান নার। অতপর হাজরে আসওয়াদে এসে তাওয়াফ শেষ করা। এভাবে সাতবার চক্কর বা প্রদক্ষিণ করা।

৩. সাঈ (ওয়াজিব)
সাঈ করা (ওয়াজিব)। এ সময় সাঈ করা সম্ভব না হলে তাওয়াফে জিয়ারাতের পর করতে হবে।
ইফরাদ হজ আদায়কারীরা সাফা পাহাড়ের ওপরে আরোহন করে সেখান থেকে ক্বিবলামুখী হয়ে সাঈ’র নিয়ত করে সাফা হতে সাঈ শুরু করা। সাফা ও মারওয়ার মধ্যবর্তী নির্ধারিত চিহ্নিত স্থান দ্রুতবেগে অতিক্রম করা। মারাওয়া পাহাড়ে আরোহন পূর্বক দোয়া করা। অতপর আবার সাফায় আসা। এভাবে সাতবার সাঈ করা। যদি এ সময় সাঈ না করা যায়; তবে তাওয়াফে জিয়ারাতের পর তা আদায় করা ওয়াজিব।

জিলহজের ৮ তারিখ জোহরের নামাজের পূর্ব থেকে-

৪. মিনায় রাত যাপন (সুন্নাত)
মিনায় রাত যাপন করা (সুন্নাত)। আর জিলহজের ৮ তারিখ জোহর থেকে ৯ তারিখ ফজর পর্যন্ত ৫ ওয়াক্ত (জোহর, আসর, মাগরিব, ইশা ও ফজর) নামাজ মিনায় পড়া (মুস্তাহাব)।

জিলহজের ৯ তারিখ সূর্যোদয়ের পর-

৫. আরাফাতের ময়দানে অবস্থান (ফরজ)
হজের অন্যতম রুকন হলো আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা। ৯ জিলহজ সকালে মিনায় ফজরের নামাজ আদায় করে আরাফায় আসার প্রস্তুতি স্বরূপ গোসল করে একবার তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা। জোহরের নামাজের পূর্বেই আরাফায় আসা।

উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার; ওয়া লিল্লাহিল হামদ’

অতপর দুপুরের পর থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে হজের খুতবা শ্রবন করা। এবং নিজ নিজ তাবুতে জোহর ও আসরের নামাজ নির্দিষ্ট সময়ে আলাদাভাবে আদায় করা। সেখান থেকে সুর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাজ না পড়ে মুযদালিফার দিকে রওয়ানা হওয়া।

৬. মুযদালিফায় অবস্থান (ওয়াজিব)
আরাফার দিন সূর্যাস্তের পর মুযদালিফায় গিয়ে ইশার সময় মাগরিব ও ইশা এক আজানে ও একই ইক্বামাতে একসঙ্গে আদায় করা (সুন্নাত)। প্রত্যেক নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক আদায় করা অর্থাৎ ১৩ জিলহজ আসর নামাজ পর্যন্ত তাকবিরে তাশরিক আদায় করা।

জিলহজের ১০ তারিখ-
তবে ১০ জিলহজ ফজরের নামাজের পর সুর্যোদয়ের পূর্বে কিছু সময় অবস্থান করা (ওয়াজিব)। মিনায় কংকর নিক্ষেপের জন্য এখান থেকেই পাথর সংগ্রহ করে রাখা।

৭. কংকর নিক্ষেপ (প্রথম দিন)
১০ জিলহজ ফজর নামাজ মুযদালিফায় আদায় করে সুর্যোদয়ের পূর্বেই মিনায় এসে বড় জামরায় ৭টি (সাত) কংকর নিক্ষেপ করা (ওয়াজিব)। এ দিন সম্ভব না হলে রাতের শেষ পর্যন্ত সময়ে কংকর নিক্ষেপ করা। কংকর নিক্ষেপের জায়গায় বাংলায় দিক-নির্দেশনা দেয়া হয় তা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করা।

৮. মাথা মুণ্ডন করা (ওয়াজিব)
যেহেতু এ হজে কুরবানি ওয়াজিব নয়, তাই কংকর নিক্ষেপের পর মাথা হলক বা মুণ্ডনের মাধ্যসে বিশ্ব নবির আদর্শের অনুসরণ করা (ওয়াজিব)। তবে চুল ছেঁটে নিলেও হবে।

শারীরিক সম্পর্ক ছাড়া সব কাজ করা যাবে
৯. তাওয়াফে জিয়ারাত (ফরজ)
হজের সর্বশেষ ফরজ কাজ। এ তাওয়াফে জিয়ারাত ১২ জিলহজ সুর্যাস্তের পূর্বেই সম্পন্ন করা। ১২ তারিখের পর এ তাওয়াফ করলে দম বা কুরবানি দিতে হবে।

১০. সাঈ (ওয়াজিব)
তাওয়াফে কুদুমের পর সাফা-মারওয়া সাঈ না করলে, তাওয়াফে জিয়ারাতের সময় সাফা-মারওয়ায় সাঈ আদায় করে নিতে হবে।

১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান এবং কংকর নিক্ষেপ
১১. কংকর নিক্ষেপ (ওয়াজিব)
১১ ও ১২ জিলহজ উভয় দিনই মিনায় অবস্থিত তিন জামরায় ৭টি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করা (ওয়াজিব)। প্রথমে ছোট জামরায়, তারপর মধ্যম, অতপর বড় জামরায় কংকর নিক্ষেপ করা। সর্বক্ষেত্রে দুর্বল ও নারীদের জন্য রাতের বেলায় কংকর নিক্ষেপ করা উত্তম।

১২. বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব)
সমগ্র বিশ্ব থেকে আগত সকল হজ যাত্রীদের জন্য বিদায়ী তাওয়াফ করা ওয়াজিব। তবে হজ শেষে বাইতুল্লায় যে কোনো নফল তাওয়াফই বিদায়ী তাওয়াফে পরিণত হয়ে যায়।

বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়-
যারা বদলি হজ আদায় করেন। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির হয়ে হজ আদায় করেন, তিনি ইফরাদ হজ করবেন।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------


তামাত্তু হজ....................................................................................................
শাওয়াল, জিলক্বদ, জিলহজ মাসে হজের সফরে প্রথমেই ওমরার ইহরাম বেঁধে ওমরা করে ইহরাম খুলে ফেলা; অতপর হজের জন্য পুনরায় ইহরাম বেঁধে হজ সম্পন্ন করাকে তামাত্তু হজ বলে।

তামাত্তু হজ যেভাবে আদায় করবেন
মুসলিম উম্মাহর জন্য হজ আদায়ের সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত ফরজ আদায়ের নিয়ম হচ্ছে তিনটি। তামাত্তু, ক্বিরান ও ইফরাদ। এ তিন ধরনের হজের মধ্যে তামাত্তু হজ আদায় সহজ।

তামাত্তু হজ আদায়ের নিয়ম তুলে ধরা হলো-

১. ওমরার ইহরাম (ফরজ)
যারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সরাসরি মক্কায় যাওয়ার ইচ্ছা করেছেন, তারা নিজ নিজ দেশ থেকে অর্থাৎ মিকাত অতিক্রম করার পূর্বেই ইহরাম বাঁধবেন। ইহরাম বাঁধার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সেরে ওজু বা গোসল করা। অতপর মিকাত অতিক্রমের পূর্বেই দুটি সেলাইবিহীন কাপড় পরিধান করা। অতপর দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে ওমরার নিয়ত করা এবং তিনবার তালবিয়া পাঠ করা-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ওমরাতান; লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক; লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক; ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক; লা শারিকা লাক।

২. ওমরার তাওয়াফ (ফরজ)
ওজুর সঙ্গে ইজতিবাসহ তাওয়াফ করা। ইজতিবা হলো ইহরামের চাদরকে ডান বগলের নিচে রেখে চাদরের দুই মাথা বাম কাঁধের সামনে ও পিছনে ফেলে রাখা।

হাজরে আসওয়াদ থেকে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠিয়ে তাওয়াফ শুরু করা। প্রথম তিন চক্কর রমল তথা বীরের মতো বুক ফুলিয়ে কাঁধ দুলিয়ে ঘন ঘন কদমে দ্রুতগতিতে প্রদক্ষিণ করা। পরবর্তী চার চক্কর সাধারণভাবে হেঁটে আদায় করা।

সম্ভব হলে হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করে তাওয়াফ শুরু করে রুকনে ইয়ামেনি অতিক্রম করার সময় তা স্পর্শ করা। সম্ভব না হলে ইশারা করাই যথেষ্ট।

রুকনে ইয়ামেনি থেকে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত তাওয়াফকালে এ দোয়া পড়া-
উচ্চারণ : রাব্বানা আতিনা ফিদ্দিুনিয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াক্বিনা আ’জাবান নার। অতপর হাজরে আসওয়াদে এসে তাওয়াফ শেষ করা। এভাবে সাতবার চক্কর বা প্রদক্ষিণ করা।

৩. মাকামে ইবরাহিমে নামাজ (ওয়াজিব)
তাওয়াফ সম্পন্ন হলে মাকামে ইবরাহিম সন্নিকটবর্তী প্রান্তে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে দোয়া করা। এটা দোয়া কবুলের স্থান। অতপর দাঁড়িয়ে ঝমঝমের পানি পান করা।

৪. ওমরার সাঈ (ওয়াজিব)
সাফা পাহাড়ের উপরে আরোহন করে সেখান থেকে ক্বিবলামুখী হয়ে সাঈ’র নিয়ত করে সাফা হতে সাঈ শুরু করা। সাফা ও মারওয়ার মধ্যবর্তী নির্ধারিত চিহ্নিত স্থান দ্রুতবেগে অতিক্রম করা। মারাওয়া পাহাড়ে আরোহনপূর্বক দোয়া করা। অতপর আবার সাফায় আসা। এভাবে সাতবার সাঈ করা।

৫. মাথা মুণ্ডানো (ওয়াজিব)
পুরুষ হলে বিশ্বনবির আদর্শ অনুসারে সম্পূর্ণ মাথা মুণ্ডণ করা বা চুল ছাঁটা। মহিলা হলে চুলে মাথা এক ইঞ্চি পরিমাণ কর্তন করে ওমরার ইহরাম থেকে বের হওয়া।

৬. হজের ইহরাম (ফরজ)
৭ জিলহজ হারাম শরিফে হজের নিয়মাবলীর ওপর খুতবা দেয়া হয়। তা মনোযোগ সহকারে শুনা বা বুঝে নেয়া। অতপর হারাম শরিফ বা বাসা থেকে আগের নিয়মে শুধু হজের নিয়তে ইহরাম বেঁধে ৮ জিলহজ জোহরের নামাজের পূর্বে মিনায় পৌঁছা।

৭. মিনায় অবস্থান (সুন্নাত)
৮ জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজর পর্যন্ত মোট পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় আদায় করা এবং সেখানে অবস্থান করা।

৮. আরাফাতের ময়দানে অবস্থান (ফরজ)
হজের অন্যতম রুকন হলো আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা। ৯ জিলহজ সকালে মিনায় ফজরের নামাজ আদায় করে আরাফায় আসার প্রস্তুতি স্বরূপ গোসল করে একবার তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা। জোহরের নামাজের পূর্বেই আরাফায় আসা।

উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার; ওয়া লিল্লাহিল হামদ’
অতপর দুপুরের পর থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে হজের খুতবা শ্রবন করা। এবং নিজ নিজ তাবুতে জোহর ও আসরের নামাজ নির্দিষ্ট সময়ে আলাদাভাবে আদায় করা। সেখান থেকে সুর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাজ না পড়ে মুযদালিফার দিকে রওয়ানা হওয়া।

৯. মুযদালিফায় অবস্থান (ওয়াজিব)
আরাফার সুর্যাস্তের পর মুযদালিফায় গিয়ে ইশার সময় মাগরিব ও ইশা এক আজানে ও একই ইক্বামাতে একসঙ্গে আদায় করা। প্রত্যেক নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক আদায় করা অর্থাৎ ১৩ জিলহজ আসর নামাজ পর্যন্ত তাকবিরে তাশরিক আদায় করা। পরদিন মিনায় কংকর নিক্ষেপের জন্য এখান থেকেই পাথর সংগ্রহ করে রাখা।

১০. কংকর নিক্ষেপ (প্রথম দিন)
১০ জিলহজ ফজর নামাজ মুযদালিফায় আদায় করে সুর্যোদয়ের পূর্বেই মিনায় এসে বড় জামরায় ৭টি (সাত) কংকর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব। এ দিন সম্ভব না হলে রাতের শেষ পর্যন্ত সময়ে কংকর নিক্ষেপ করা। কংকর নিক্ষেপের জায়গায় বাংলায় দিক-নির্দেশনা দেয়া হয় তা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করা।

১১. কোরবানি করা (ওয়াজিব)
মিনায় রাত্রি যাপন করে সকালে কুরবানি নিশ্চিত করা জরুরি। কুরবানি সম্পন্ন করার পর মাথা হলক বা মুণ্ডন করা বিশ্বনবির আদর্শের অনুসরণ, যা ওয়াজিব। সতর্কতা- কংকর নিক্ষেপ, কুরবানি ও মাথা মুণ্ডনের মধ্যে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা জরুরি।

১২. তাওয়াফে জিয়ারাত (ফরজ)
হজের সর্বশেষ ফরজ কাজ। এ তাওয়াফে জিয়ারাত ১২ জিলহজ সুর্যাস্তের পূর্বেই সম্পন্ন করা। ১২ তাওয়াফের পর আদায় করলে দম বা কুরবানি দিতে হবে।

১৩. কংকর নিক্ষেপ (ওয়াজিব)
১০, ১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করা এবং ১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থিত তিন জামরায় ৭টি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করা। প্রথমে ছোট জামরায় তারপর মধ্যম, অতপর বড় জামরায় কংকর নিক্ষেপ করা। সর্বক্ষেত্রে দুর্বল ও নারীদের জন্য রাতের বেলায় কংকর নিক্ষেপ করা উত্তম।

১৪. মিনায় রাত যাপন
মিনায় অবস্থানরত দিনগুলোতে ১০-১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনাতেই রাত যাপন করুন এবং ১৩ জিলহজ কংকর নিক্ষেপ শেষ করে মিনা থেকে ফিরে আসা সুন্নাত। (এর মাঝে মক্কায় এসে তাওয়াফে জিয়ারাত সম্পন্ন করে আবার মিনা যাওয়া।)

১৫. মিনা ত্যাগ
১৩ জিলহজ মিনায় না থাকতে চাইলে ১২ জিলহজ সন্ধ্যার আগে মিনা ত্যাগ করা। সুর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করা উত্তম।

১৬. বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব)
সমগ্র বিশ্ব থেকে আগত সকল হজযাত্রীর জন্য বিদায়ী তাওয়াফ করা ওয়াজিব। তবে হজ শেষে যে কোনো নফল তাওয়াফই বিদায়ী তাওয়াফে পরিণত হয়ে যায়।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------


ক্বিরান হজ....................................................................................................
হজ ও ওমরার ইহরাম এক সঙ্গে বেঁধে প্রথমে ওমরা সম্পন্ন করবে। অতপর ইহরাম থেকে বের হওয়া যাবে না এবং সকল প্রকার নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকেতে হবে। ৭ তারিখ মক্কায় হজের নিয়ম সম্পর্কিত বয়ান শুনার পর হজের প্রস্তুতি গ্রহণ করা।

ক্বিরান হজ যেভাবে আদায় করবেন
মুসলিম উম্মাহর জন্য হজ আদায়ের সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত ফরজ আদায়ের নিয়ম হচ্ছে তিনটি। তামাত্তু, ক্বিরান ও ইফরাদ। ইতিপূর্বে তামাত্তু হজ আদায়ের নিয়ম তুলে ধরা হয়েছে। ক্বিরান হজ আদায়কারীদের জন্য ধারাবাহিক নিয়ম তুলে ধরা হলো-

ক্বিরান হজ আদায়ের নিয়ম তুলে ধরা হলো-

১. হজ ও ওমরার ইহরাম (ফরজ)
যারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সরাসরি মক্কায় যাওয়ার ইচ্ছা করেছেন, তারা নিজ নিজ দেশ থেকে অর্থাৎ মিকাত অতিক্রম করার পূর্বেই ইহরাম বাঁধবেন। ইহরাম বাঁধার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সেরে ওজু বা গোসল করে সেলাইবিহীন দু’টি কাপড় পরিধান করা। মহিলারা তাদের ইহরামের পোশাক পরিধান করবেন। অতপর দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে হজ ও ওমরার নিয়ত করা এবং তিনবার তালবিয়া পাঠ করা-

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ওমরাতান; লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক; লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক; ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক; লা শারিকা লাক।

২. ওমরার তাওয়াফ (ওয়াজিব)
ওজুর সঙ্গে ইজতিবাসহ তাওয়াফ করা। ইজতিবা হলো ইহরামের চাদরকে ডান বগলের নিচে রেখে চাদরের দুই মাথাকে বাম কাঁধের সামনে ও পিছনে ফেলে রাখা।

হাজরে আসওয়াদ থেকে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে দুই হাত কাঁধ পর্যন্ত ওঠিয়ে তাওয়াফ শুরু করা। প্রথম তিন চক্কর রমল তথা বীরের মতো বুক ফুলিয়ে কাঁধ দুলিয়ে ঘন ঘন কদমে দ্রুতগতিতে প্রদক্ষিণ করা। পরবর্তী চার চক্কর সাধারণভাবে হেটে আদায় করা।

সম্ভব হলে হাজরে আসওয়াদকে চুম্বন করে তাওয়াফ শুরু করে রুকনে ইয়ামেনি অতিক্রম করার সময় তা স্পর্শ করা। সম্ভব না হলে ইশারা করাই যথেষ্ট।

রুকনে ইয়ামেনি থেকে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত তাওয়াফকালে এ দোয়া পড়া-
উচ্চারণ : রাব্বানা আতিনা ফিদ্দিুনিয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াক্বিনা আ’জাবান নার। অতপর হাজরে আসওয়াদে এসে তাওয়াফ শেষ করা। এভাবে সাতবার চক্কর বা প্রদক্ষিণ করা।

৩. সাঈ (ওয়াজিব)
ক্বিরান হজ আদায়কারীরা সাফা পাহাড়ের ওপরে আরোহন করে সেখান থেকে ক্বিবলামুখী হয়ে সাঈ’র নিয়ত করে সাফা হতে সাঈ শুরু করা। সাফা ও মারওয়ার মধ্যবর্তী নির্ধারিত চিহ্নিত স্থান দ্রুতবেগে অতিক্রম করা। মারাওয়া পাহাড়ে আরোহন পূর্বক দোয়া করা। অতপর আবার সাফায় আসা। এভাবে সাতবার সাঈ করা। যদি এ সময় সাঈ না করা যায়; তবে তাওয়াফে জিয়ারাতের পর তা আদায় করা ওয়াজিব।

৪. তাওয়াফে কুদুম (সুন্নাত)
ক্বিরান হজ আদায়কারীদের জন্য এ তাওয়াফকে ‘তাওয়াফে কুদুম’ বলা হয়; যা আদায় করা (সুন্নাত)।

৫. সাঈ (ওয়াজিব)
ওমরা আদায়ের জন্য সাঈ করুন। তবে ক্বিরান হজ আদায়ের নিয়তকারীদের জন্য ওমরার সাঈ’র পর চুল ছাঁটা, কাঁটা বা মুণ্ডন নিষেধ। বরং ইহরামের সব বিধান মেনে চলা। অর্থাৎ সকল প্রকার নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা।

৭ জিলহজ হারাম শরিফে হজের নিয়মাবলীর ওপর খুতবা দেয়া হয়। তা মনোযোগ সহকারে শুনা বা বুঝে নেয়া। ৮ জিলহজ জোহরের নামাজের পূর্বে মিনায় পৌঁছা।

জিলহজের ৮ তারিখ জোহরের নামাজের পূর্ব থেকে-

৬. মিনায় অবস্থান (সুন্নাত)
জিলহজের ৮ তারিখ জোহর থেকে ৯ তারিখ ফজর পর্যন্ত ৫ ওয়াক্ত (জোহর, আসর, মাগরিব, ইশা ও ফজর) নামাজ মিনায় পড়া (মুস্তাহাব) এবং তথায় অবস্থান করা (সুন্নাত) ।

জিলহজের ৯ তারিখ সূর্যোদয়ের পর-

৭. আরাফাতের ময়দানে অবস্থান (ফরজ)
হজের অন্যতম রুকন হলো আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা। ৯ জিলহজ সকালে মিনায় ফজরের নামাজ আদায় করে আরাফায় আসার প্রস্তুতি স্বরূপ গোসল করে একবার তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা। জোহরের নামাজের পূর্বেই আরাফায় আসা।

উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার; ওয়া লিল্লাহিল হামদ’
অতপর দুপুরের পর থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে হজের খুতবা শ্রবন করা। এবং নিজ নিজ তাবুতে জোহর ও আসরের নামাজ নির্দিষ্ট সময়ে আলাদাভাবে আদায় করা। সেখান থেকে সুর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাজ না পড়ে মুযদালিফার দিকে রওয়ানা হওয়া।

৮. মুযদালিফায় অবস্থান (ওয়াজিব)
আরাফার দিন সূর্যাস্তের পর মুযদালিফায় গিয়ে ইশার সময় মাগরিব ও ইশা এক আজানে ও একই ইক্বামাতে একসঙ্গে আদায় করা (সুন্নাত)। প্রত্যেক নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক আদায় করা অর্থাৎ ১৩ জিলহজ আসর নামাজ পর্যন্ত তাকবিরে তাশরিক আদায় করা।

জিলহজের ১০ তারিখ-
তবে ১০ জিলহজ ফজরের নামাজের পর সুর্যোদয়ের পূর্বে কিছু সময় অবস্থান করা (ওয়াজিব)।মিনায় কংকর নিক্ষেপের জন্য এখান থেকেই পাথর সংগ্রহ করে রাখা।

৯. কংকর নিক্ষেপ (প্রথম দিন)
১০ জিলহজ ফজর নামাজ মুযদালিফায় আদায় করে সুর্যোদয়ের পূর্বেই মিনায় এসে বড় জামরায় ৭টি (সাত) কংকর নিক্ষেপ করা (ওয়াজিব)। এ দিন সম্ভব না হলে রাতের শেষ পর্যন্ত সময়ে কংকর নিক্ষেপ করা। কংকর নিক্ষেপের জায়গায় বাংলায় দিক-নির্দেশনা দেয়া হয় তা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করা।

জিলহজের ১১ তারিখ-
১০. কোরবানি করা (ওয়াজিব)

মিনায় রাত্রি যাপনের করে সকালে কুরবানি নিশ্চিত করা জরুরি।

১১. মাথা মুণ্ডন করা (ওয়াজিব)
কুরবানি সম্পন্ন করার পর মাথা হলক বা মুণ্ডন করা বিশ্ব নবির আদর্শের অনুসরণ করা (ওয়াজিব)। তবে চুল ছেঁটে নিয়েও হবে।
সতর্কতা- কংকর নিক্ষেপ, কুরবানি ও মাথা মুণ্ডনের মধ্যে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা জরুরি।

শারীরিক সম্পর্ক ছাড়া সব কাজ করা যাবে

১২. তাওয়াফে জিয়ারাত (ফরজ)
হজের সর্বশেষ ফরজ কাজ। এ তাওয়াফে জিয়ারাত ১২ জিলহজ সুর্যাস্তের পূর্বেই সম্পন্ন করা। ১২ তারিখের পর এ তাওয়াফ দম বা কুরবানি দিতে হবে। যারা তাওয়াফে কুদুমের পর সাঈ না করলে তা আদায় করে নিতে হবে।

১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান এবং কংকর নিক্ষেপ-
১৩. কংকর নিক্ষেপ (ওয়াজিব)

১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থিত তিন জামরায় ৭টি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করা (ওয়াজিব। প্রথমে ছোট জামরায় তারপর মধ্যম, অতপর বড় জামরায় কংকর নিক্ষেপ করা। সর্বক্ষেত্রে দুর্বল ও নারীদের জন্য রাতের বেলায় কংকর নিক্ষেপ করা উত্তম।

১৪. মিনায় রাত যাপন
১০, ১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থানের সময় সেখানে রাত যাপন করা (সুন্নাত)। ১৩ জিলহজ কংকর নিক্ষেপ শেষ করে মিনা থেকে ফিরে আসা সুন্নাত। (এর মাঝে মক্কায় এসে তাওয়াফে জিয়ারাত সম্পন্ন করে আবার মিনা যাওয়া।)

১৫. মিনা ত্যাগ
১৩ জিলহজ মিনায় না থাকতে চাইলে ১২ জিলহজ সন্ধ্যার আগে মিনা ত্যাগ করা। সুর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করা উত্তম।

১৬. বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব)
সমগ্র বিশ্ব থেকে আগত সকল হজ যাত্রীদের জন্য বিদায়ী তাওয়াফ করা ওয়াজিব। তবে হজ শেষে যে কোনো নফল তাওয়াফই বিদায়ী তাওয়াফ পরিণত হয়ে যায়।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তিকে হজ করার তাওফিক দান করুন। যথাযথভাবে হজ এর প্রতিটি বিধান আদায় করে হজে মাবরূর, মাকবূল নসিব করুন। বার বার হজের উদ্দেশ্যে তাঁর প্রিয় ঘর বাইতুল্লাহর সান্নিধ্য অর্জন করার সৌভাগ্যলাভে ধন্য করুন। তাঁর প্রিয় হাবিবের রওজার পাশে দাড়ানোর কিসমত দান করুন। তাঁর স্মৃতিবিজড়িত মক্কাতুল মুকাররমাহ এবং মদিনাতুল মুনাওওয়ারাহর প্রিয় স্থানগুলোতে বারবার হাজির হয়ে হৃদয়ের ব্যথা বেদনা বিদূরিত করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ তাআ'লা এবং তার প্রেরিত মহান রাসূলে সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুহাব্বত দিয়ে অন্তর পরিপূর্ন করে নেয়ার তাওফিক দিন।



এই সিরিজের আগেকার পোস্টগুলো। ইচ্ছে করলে ঘুরে আসতে পারেন পেছনের পর্বগুলোয়-

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৩)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৪)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৫)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৬)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব৭)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৮)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৯)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১০)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১১)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১২)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১৩)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১৪)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১৫)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১৬)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১৭)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১৮)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১৯) ব্লগে দেড়শোতম পোস্ট
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২০)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২১)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২২)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২৩)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২৪)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২৫)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২৬)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২৭)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২৮)

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩২

নজসু বলেছেন:


আস সালামু আলাইকুম।
অসম্ভব সুন্দর একটি পোষ্ট।

কবে যে বলতে পারবো-
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক লাব্বাইকা লা শারীকা,
লাকা লাব্বাইক ইন্নালহামদা ওয়ান নিয়ামাতিকা
অতারা ওয়াল,মুলক লা শারীকা লাক।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৮

নতুন নকিব বলেছেন:



ওয়াআলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকা-তুহ।

পোস্ট ভালো লাগায় কৃতজ্ঞতা অশেষ।

কবে যে বলতে পারবো-
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক লাব্বাইকা লা শারীকা,
লাকা লাব্বাইক ইন্নালহামদা ওয়ান নিয়ামাতিকা
অতারা ওয়াল,মুলক লা শারীকা লাক।


আহ! হৃদয়ের এই যে আকুল আঁকুতি, গভীর এই টান ঠিকই আপনাকে বাইতুল্লাহর কিনারে দাঁড় করিয়ে দিবে এক দিন।

অনেক ভালো থাকুন। অতি দ্রুত পূরন হোক আপনার মনোবাসনা।

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:০০

শামছুল ইসলাম বলেছেন: হজ নিয়ে বিস্তারিত পোস্ট।
ভালো লেগেছে।

প্রিয়তে নিলাম।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৫৫

নতুন নকিব বলেছেন:



আগমনে মুগ্ধতা। পোস্ট ভালো লাগায় এবং প্রিয়তে নেয়ায় সবিশেষ কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা।

অনেক অনেক ভালো থাকুন।

৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৩

হাবিব বলেছেন: অনেক অনেক ভালো লেগেছে..

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক নিয়মে হজ করার তাওফিক দিন

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৫৬

নতুন নকিব বলেছেন:



আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক নিয়মে হজ করার তাওফিক দিন

আপনার প্রার্থনা কবুল হোক।

পোস্ট ভালো লাগায় আন্তরিক মোবারকবাদ।

অনেক ভালো থাকবেন, প্রার্থনা নিরন্তর।

৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন। লেখা বেশ গোছানো। প্রানবন্ত।

আচ্ছা, ওমরা নিয়ে বিস্তারিত লিখবেন। এ বিষয়টা নিয়ে একটা পোষ্ট কি দয়া করে দিবেন প্লীজ।

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১৩

নতুন নকিব বলেছেন:



জাজাকুমুল্লাহ। পোস্টটি পাঠ এবং আন্তরিরক মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা।

উমরাহ নিয়ে আপনার আগ্রহের বিষয়টি চিন্তায় থাকলো। ইনশাআল্লাহ, লেখার চেষ্টা করবো।

অনেক ভালো থাকুন। শুভকামনা নিরন্তর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.