নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

এসো, হাদিসে বর্ণিত গল্প শুনি; কুষ্ঠরোগী, অন্ধ ও টেকোর কাহিনী

১২ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:০১



এসো, হাদিসে বর্ণিত গল্প শুনি; কুষ্ঠরোগী, অন্ধ ও টেকোর কাহিনী
সে হাজার হাজার বছর পূর্বেকার কথা। বনী ইসরাঈলীগন বাস করতেন মিশর এবং তার আশপাশের এলাকায়। তাদের মাঝে তিন ব্যক্তি ছিলেন। তারা ছিলেন- যথাক্রমে, একজন কুষ্ঠরোগী, অন্যজন টেকো এবং সর্বশেষজন অন্ধ। মহান আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা তাদেরকে পরিক্ষা করার ইচ্ছে করলেন এবং এ জন্য তিনি তাদের নিকট একজন ফেরেশতাকে পাঠালেন।

ফেরেশতা দরবেশের বেশে প্রথমোক্ত কুষ্ঠরোগী লোকটির কাছে এসে বললেন, ‘তুমি কি চাও?'

তিনি বললেন, ‘সুন্দর রং এবং সুন্দর চামড়া। কেননা মানুষ আমাকে ঘৃণা করে’।

ফেরেশতা উক্ত ব্যক্তির আরও কাছে এগিয়ে এলেন। আস্তে আস্তে তার শরীরে হাত বুলিয়ে দিলেন। এতে তার কুষ্ঠরোগ দূর হল। তার শরীরে পরিবর্তন এল। তাকে সুন্দর চর্ম এবং বর্ণ দান করা হল।

ফেরেশতা অতঃপর তাকে প্রশ্ন করলেন, ‘তোমার নিকট কোন্ সম্পদ সবচেয়ে বেশী পছন্দনীয়?'

সে বলল, 'উট’।

তাকে তখন দশ মাসের গর্ভবতী একটি উটনী প্রদান করা হল।

ফেরেশতা বললেন, ‘আল্লাহ পাক এতে তোমায় বরকত দিন’।

এবার ফেরেশতা গেলেন টেকো ব্যক্তির কাছে। তাকে প্রশ্ন করলেন, ‘তোমার সবচেয়ে পছন্দের জিনিস কোনটি?'

তিনি বললেন, ‘সুন্দর চুল এবং এই টাক হতে মুক্তি, লোকেরা যার কারণে আমাকে ঘৃণা করে’।

ফেরেশতা তার মাথায় হাত বুলালেন। এতে তার টাক ভাল হয়ে গেল। পূর্বের ব্যক্তির ন্যায় তাকেও দান করা হল। তাকে দেয়া হল মাথা ভর্তি সুন্দর চুল। এরপর ফেরেশতা বললেন, ‘কোন মাল তোমার নিকট অধিক প্রিয়’?

উক্ত ব্যক্তি বললেন, 'গরু'।

তখন তাকে তার আরজি মোতাবেক একটি গর্ভবতী গাভী দেয়া হল।

ফেরেশতা বললেন, 'আল্লাহ পাক এতে তোমাকে বরকত দিন'।

সবশেষে ফেরেশতা গেলেন অন্ধ ব্যক্তিটির কাছে। তাকে প্রশ্ন করলেন, ‘তোমার অধিক পছন্দের জিনিস কোনটি’?

তিনি বললেন, ‘আল্লাহ পাক আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিন, আমি যাতে মানুষকে দেখতে পারি’।

ফেরেশতা তার চোখ স্পর্শ করলেন। এতে আল্লাহ পাক তার চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিলেন। এরপর ফেরেশতা প্রশ্ন করলেন, ‘কোন মাল তোমার নিকট অধিক প্রিয়’?

তিনি বললেন, 'ছাগল'।

তাকে তখন অধিক সংখ্যক বাচ্চা দেয় এমন ছাগী দান করা হল।

ফেরেশতা তাকেও বললেন, 'আল্লাহ পাক এতে তোমাকে বরকত দিন'।

কিছু কাল পরের কথা। উক্ত তিন ব্যক্তিরই অবস্থার পরিবর্তন হল। উট, গাভী এবং ছাগলের বাচচা হয়ে বংশ বৃদ্ধি হল। ফলে একজনের উটে ময়দান ভরে গেল, অপরজনের গরুতে মাঠ পূর্ণ হয়ে গেল এবং আর অন্যজনের ছাগলে উপত্যকা ভরপুর হয়ে গেল।

সেই ফেরেশতা আবার এলেন। সেই কুষ্ঠরোগীর কাছে। প্রথমবার যে রূপ ধারণ করে এসেছিলেন সেই রূপে আজও। গরিব দরবেশের বেশে। তাকে শুধালেন, ‘আমি একজন মিসকীন। সফরে আমার সবকিছু নিঃশেষ হয়ে গেছে। আজ আল্লাহ পাক ব্যতীত কেউ নেই, যার সাহায্যে আমি আমার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি, তারপর তোমার সহায়তায়। যে আল্লাহ পাক তোমাকে সুন্দর বর্ণ, সুন্দর ত্বক এবং এত এত সম্পদ দিয়েছেন, সে আল্লাহর নামে তোমার নিকট আমি একটা উট চাচ্ছি, যার সাহায্যে আমি গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি’।

তিনি বললেন, ‘(আমার উপর) অনেকের অধিকার রয়েছে’।

ফেরেশতা বললেন, ‘তোমাকে বোধ হয় আমি চিনি। তুমি কি কুষ্ঠরোগী ছিলে না? লোকেরা তোমাকে কি ঘৃণা করত না? তুমি না নিঃস্ব ছিলে? অতঃপর আল্লাহ পাক তোমাকে সম্পদ দিয়েছেন’।

তিনি বললেন, ‘এই সম্পদ তো আমি উত্তরাধিকার সূত্রে পূর্বপুরুষ থেকে পেয়েছি’।

ফেরেশতা বললেন, ‘তুমি যদি মিথ্যাবাদী হও, তাহলে তোমাকে যেন আল্লাহ পাক পূর্বের মতো করে দেন’।

সত্যিই তাই হয়ে গেল। আল্লাহ পাক ফেরেশতার দুআ কবুল করলেন। উক্ত ব্যক্তি ঠিক ঠিকই আগের মত কুষ্ঠরোগী হয়ে গেলেন। তার সকল সম্পদও মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে গেল।

ফেরেশতা এবার এলেন টেকো ব্যক্তির কাছে। প্রথমবার যে রূপে এসেছিলেন সেই রূপ ধারণ করে। প্রথম লোকটির নিকট যেভাবে সাহায্য চেয়েছিলেন তার নিকটেও একইভাবে তা-ই চাইলেন। আশ্চর্যজনকভাবে এই লোকটিও পূর্বের লোকটির মত একই উত্তর দিল। ফেরেশতা একেও বললেন, ‘তুমি যদি মিথ্যাবাদী হয়ে থাক, তাহলে আল্লাহ পাক যেন তোমাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দেন’।

সত্যিই তাই হয়ে গেল। আল্লাহ পাক ফেরেশতার দুআ কবুল করলেন। উক্ত ব্যক্তি ঠিক ঠিকই আগের মত টেকো হয়ে গেলেন। তার বিশাল সম্পদরাজিও মুহূর্তেই বিলীন হয়ে গেল।

সর্বশেষে ফেরেশতা এলেন অন্ধ ব্যক্তির কাছে। তাঁর আগের রূপ ধারণ করে। দরবেশের বেশে এসে বললেন, ‘আমি একজন মিসকীন মুসাফির। আমার সবকিছু সফরে নিঃশেষ হয়ে গেছে। এখন গন্তব্যে পৌঁছাতে আল্লাহ ব্যতীত আর কোন উপায় নেই, তারপর তোমার সহায়তায়। সেই আল্লাহর নামে তোমার কাছে একটি ছাগল সাহায্য চাচ্ছি, যিনি তোমাকে তোমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন। এ ছাগলটি দিয়ে আমি বাড়ি পৌছাতে পারব।'

লোকটি বললেন, ‘আমি ছিলাম অন্ধ। আল্লাহ্‌ পাক দয়া করে আমার দৃষ্টিশক্তি ফেরত দিয়েছেন। আমি দরিদ্র ছিলাম, আল্লাহ পাকই মেহেরবানী করে আমাকে ধনী করেছেন। কাজেই আপনার যত ইচ্ছে মাল আপনি নিয়ে যান। আল্লাহর শপথ! মহান আল্লাহর ওয়াস্তে আজ আপনি যা কিছু নিবেন, তার জন্য আমি আজ আপনার নিকট কোন প্রশংসাই দাবী করব না’।

ফেরেশতা বললেন, ‘তোমার সম্পদ তোমার কাছেই রাখ। তোমাদেরকে শুধুমাত্র পরীক্ষা করা হয়েছে। তোমার প্রতি আল্লাহ তা‘আলা সন্তুষ্ট এবং তোমার অপর দু’জন সাথীর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন’।

হাদিস সূত্র: আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, বুখারী হা/৩৪৬৪ ‘নবীদের কাহিনী’ অধ্যায়, অনুচেছদ-৫১; মুসলিম হা/২৯৬৪, মিশকাত হা/১৮৭৮ ‘যাকাত’ অধ্যায়, অনুচেছদ-৫

গল্পাকারে লেখার কারণে এখানে হাদিসের হুবহু অনুবাদ দেয়া হয়নি। কোথাও কোথাও সামান্য পরিমার্জিত।

আলোচিত হাদিসের ঘটনা থেকে শিক্ষনীয়: জীবনের সর্ব অবস্থায় আল্লাহ পাকের নেআমতের শোকর আদায় করতে হবে। শুকরিয়া-গুযার হতে হবে আমাদের। তাহলেই আল্লাহ পাক তাঁর নেআমতের পরিমান বাড়িয়ে দিবেন। পক্ষান্তরে অকৃতজ্ঞদের জন্য রয়েছে কেবল পীড়াদায়ক শাস্তি।

ছবি: অন্তর্জাল।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:৪৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: ব্যক্তি জীবনে আমরা প্রত্যেকেই আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন এর অনেক, অনেক, নেয়ামতপ্রাপ্ত। যে যত শোকরগুজারী, তার নেয়ামতসমূহ তত স্থায়ী হয়।

১৩ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:২০

নতুন নকিব বলেছেন:



সঠিক বলেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। সুন্দর মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন।

শুভকামনা সবসময়।

২| ১২ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:৫৮

আকতার আর হোসাইন বলেছেন: সর্বাবস্থায় যেনো আমরা সন্তুষ্ট থাকতে পারি মহান আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করুক।।।

১৩ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:২১

নতুন নকিব বলেছেন:




সুন্দর মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন। আপনার প্রার্থনা আল্লাহ পাক কবুল করে নিন।

শুভকামনা সবসময়।

৩| ১২ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:৩১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জীবন বোধের এই স্বচ্ছতার নামই ধর্ম!

সুন্দর, মানবতাবাদী, দয়ালু, ত্যাগি, নিরহংকারী এমন ৯৯ গুনে গুনী হবার তাগিদই ধর্ম!

অথচ ধার্মিক ভেকধারীদের, পোষাকী বক ধার্মিকদের আচরণ দোষে আজ প্রকৃত ধর্মই দোষীর কাঠগড়ায়!
বদলে যাক ভাবনা! বদলে যাক মানুষ। মানুষ মানুষ হয়ে উঠুক!

১৩ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:২৬

নতুন নকিব বলেছেন:



মানবতাবাদী প্রিয় কবি,
যথার্থ বলেছেন। মন্তব্যে আপনাকে পেয়ে আনন্দিত। অসংখ্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা আপনার জন্য।

ভালো থাকবেন সবসময়।



৪| ১২ ই মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর।

১৩ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:২৭

নতুন নকিব বলেছেন:



শুভকামনা, কৃতজ্ঞতা এবং অভিনন্দন।

৫| ১২ ই মার্চ, ২০১৯ দুপুর ২:১৪

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: শিক্ষনীয় পোষ্টটি দানে আল্লাহ আপনাকে উত্তম যাযা দান করুন।

১৩ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:২৮

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার উত্তম প্রার্থনার জন্য কৃতজ্ঞতা। আপনাকেও যথার্থ প্রতিদান প্রদান করুন আল্লাহ পাক।

শুভকামনা সবসময়।

৬| ১২ ই মার্চ, ২০১৯ দুপুর ২:৩১

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: পবিত্র হৃদয়ে নাপাক কখনও স্থান পায় না।

১৩ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:২৯

নতুন নকিব বলেছেন:



সঠিক।

কৃতজ্ঞতাসহ শুভকামনা।

৭| ১২ ই মার্চ, ২০১৯ দুপুর ২:৪৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আহা কি সুন্দর গল্প
শিক্ষনীয় গল্প ।
আল্লাহ পাক আমাদের হেদায়েত দিন

১৩ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:৩২

নতুন নকিব বলেছেন:



আসলেই এটি শিক্ষনীয় গল্প। হাদিসের ভান্ডারে কত যে শিক্ষনীয় গল্প রয়েছে। আমরা যদি খুঁজে খুঁজে দেখতাম। আমরা যদি সেগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহন করতাম। আমাদের জীবন পরিবর্তন হয়ে যেত।

আল্লাহ পাকের নিকট আপনার হেদায়েতের দুআ আমাদের সকলের জন্য কবুল এবং মঞ্জুর হোক।

কৃতজ্ঞতাসহ শুভকামনা।

৮| ১২ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:৪১

আরোগ্য বলেছেন: এটা পাঠ্য বইতে পড়েছিলাম। আবার পড়ে ভালো লাগলো।

১৩ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:৩৩

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত।

কৃতজ্ঞতা জানবেন। শুভকামনা সবসময়।

৯| ১৩ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:০৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
শিক্ষনীয় পোষ্ট।
আল্লাহ পাক আমাদের হেদায়েত দিন
আমরা যেন শুদ্ধ হই।

১৩ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:০৩

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যে।

কৃতজ্ঞতাসহ শুভকামনা।

১০| ১৩ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:১৬

সোনার হোরিণ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। আমার ছেলেটা ঘুমানোর আগে গল্প শুনতে চাচ্ছে। এখনই ওকে গল্প টা বলব।

১৩ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:০৫

নতুন নকিব বলেছেন:



বাহ! সুন্দর বলেছেন, সোনার হরিন। আপনার সোনামনিকে এই গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়াবেন জেনে আনন্দিত হলাম।

কৃতজ্ঞতা জানবেন। শুভকামনা সবসময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.