নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
আয়াতুল কুরসির ফজিলত
মহাগ্রন্থ আল কুরআন গোটা মানবজাতির জন্য আল্লাহ তাআ'লা প্রদত্ত জীবন বিধান। হেদায়েতের আলোকবর্তিকা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার অমিয় বাণী। মানব জাতির কল্যানের জন্য, জীবন জিজ্ঞাসার সকল উত্তরের জন্য নাজিল করা হয়েছে এ মহাগ্রন্থ। আল্লাহ পাক এ গ্রন্থের শুরুতেই এর সত্যায়নে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন যে, এ কিতাবে কোনো শোবাহ, সন্দেহ বা সংশয় কোনো কিছুই নেই। আর তিনি এ মহাগ্রন্থে একথাও বলে দিয়েছেন যে, মানবজাতির কল্যাণে এমন কোনো কিছু নেই- যা আল কুরআনে লিপিবদ্ধ করা হয়নি। বলা বাহুল্য, আল কুরআনের প্রতিটি আয়াতই গুরুত্ববহ। এর ভেতরেও কিছু আয়াত রয়েছে বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। আয়াতুল কুরসি সেই বিশেষ আয়াতগুলোর অন্যতম। আসুন, জেনে নিই আয়াতুল কুরসির ফজিলত-
আয়াতুল কুরসি কুরআনুল কারিমের সবচেয়ে বড় সূরা ‘সূরা আল-বাক্বারার ২৫৫ নং আয়াত’। যা সমগ্র কুরআনের সবচেয়ে বড় আয়াতও বটে। এ সূরার রয়েছে অনেক ফজিলত। এর ফজিলত সম্পর্কে কিছু হাদিস-
এক. কুরআনুল কারিমের সবচেয়ে ফজিলতওয়ালা ও গুরুত্বপূর্ণ আয়াত:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রিয় সাহাবী হযরত উবাই ইবনে কা’ব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুকে একবার জিজ্ঞেস করলেন- 'তুমি কি জানো, কুরআনুল কারিমের সবচেয়ে ফজিলতওয়ালা ও গুরুত্বপূর্ণ আয়াত কোনটি?'
উবাই ইবনে কা’ব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু আরজ করলেন, 'সেটি হচ্ছে আয়াতুল কুরসি।'
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা সমর্থন করলেন এবং বললেন, 'হে আবুল মুনজির! তোমাকে এ উত্তম জ্ঞানের জন্য ধন্যবাদ।' (মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)
দুই. প্রত্যেক ফরজ নামাজের পরে নিয়মিত আয়াতুল কুরসি পাঠকারীর জান্নাতে প্রবেশে মৃত্যুই একমাত্র বাধা:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'প্রত্যেক ফরজ সালাত শেষে আয়াতুল কুরসি পাঠকারীর জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য আর কোনো বাধা থাকে না মৃত্যু ব্যতিত।' (নাসাঈ)
তিন. আয়াতুল পাঠকারীর হেফাজতে ফেরেশতা নিযুক্ত থাকেন; শয়তান তার নিকটবর্তী হতে পারে না:
'শয়নকালে আয়াতুল কুরসি পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত তার হেফাজতের জন্য একজন ফেরেশতা পাহারায় নিযুক্ত থাকে। যাতে শয়তান তার নিকটবর্তী হতে না পারে।' (বুখারি)
চার. আয়াতুল কুরসি পাঠ করে ঘরে ঢুকলে শয়তান সে ঘর হতে বের হয়ে যায়:
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'সূরাহ বাকারার মধ্যে এমন একটি আয়াত রয়েছে, যে আয়াতটি পুরো কুরআনের নেতাস্বরূপ। তা পড়ে ঘরে প্রবেশ করলে শয়তান বের হয়ে যায়। তা হলো ‘আয়াতুল কুরসি’।' (মুসনাদে হাকিম)
পাঁচ. আয়াতুল কুরসি কুরআনুল কারিমের সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন আয়াত:
হজরত যর আবু জুনদুব ইবনে জানাদাহ রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেন, একদিন আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এলে তাকে মসজিদে বসা দেখি এবং আমিও গিয়ে তার কাছে বসি। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে আবু যর! নামাজ পড়েছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, ওঠো, নামাজ পড়ো। আমি উঠে নামাজ পড়ে আবারও গিয়ে বসলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তখন বলেন, মানুষ শয়তান থেকে এবং জিন শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! মানুষও শয়তান হয় নাকি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! নামাজ সম্বন্ধে আপনি কী বলেন? তিনি বললেন, এটা একটি উত্তম বিষয়। তবে যার ইচ্ছা বেশি অংশ নিতে পারে এবং যার ইচ্ছা কম অংশ নিতে পারে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আর রোজা? তিনি বললেন, এটি একটি উত্তম ফরজ এবং তা আল্লাহর কাছে অতিরিক্ত হিসেবে জমা থাকবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সাদকা? তিনি বললেন, এটা বহুগুণ বিনিময় আদায়কারী। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! কোন দান সবচেয়ে উত্তম? তিনি বললেন, অল্প সংগতি থাকতে বেশি দেয়ার সাহস করা এবং দুস্থ মানুষকে গোপনে সাহায্য-সহযোগিতা করা। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সর্বপ্রথম নবী কে? তিনি বললেন, হজরত আদম আলাইহিসসালাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি কি নবী ছিলেন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, তিনি আল্লাহর সঙ্গে কথোপকথনকারী নবী ছিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! রাসূল কতজন ছিলেন? তিনি বললেন, তারা হলেন ৩১০-এরও কিছু বেশি। তবে অন্য সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, তারা ছিলেন ৩১৫ জন। এরপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আয়াতুল কুরসি।’ -নাসায়ি
ছয়. ঘুমানোর পূর্বে আয়াতুল কুরসি পাঠকারীর জন্য পাহাড়াদার নিযুক্ত করা হয়; শয়তান সকাল পর্যন্ত তার কাছে আসতে পারে না:
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু একদিন দেখতে পেলেন একজন আগন্তুক সদকার মাল চুরি করছে। তখন তিনি আগন্তুকের হাত ধরে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, আমি তোমাকে আল্লাহর রাসূলের কাছে নিয়ে যাব।'
তখন আগন্তুক বলে যে, সে খুব অভাবি আর তার অনেক প্রয়োজন। তাই দয়াবশত: হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু তাকে ছেড়ে দিলেন। পরদিন সকালে হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসার পর তিনি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহুকে জিজ্ঞাসা করলেন ‘গতকাল তোমার অপরাধী কি করছে?’
হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু তখন তাকে ক্ষমা করার কথা বললেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘অবশ্যি সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে আর সে আবার আসবে।’
এর পরেরদিন আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু অপেক্ষায় থাকলেন। যখন সে আবারো চুরি করতে আসলো তখন তিনি তাকে পাকড়াঁও করলেন আর বললেন, ‘এবার অবশ্যই আমি তোমাকে আল্লাহর রাসূলের কাছে নিয়ে যাব।’
এবারও সে বলে যে- 'সে খুব অভাবি আর তার অনেক প্রয়োজন আর শপথ করে যে, সে এর পরে আর আসবে না।'
পরদিন আবারো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি একই জবাব দেন আর তখন তিনি বলেন, ‘আসলেই সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে আর সে আবারও আসবে।’
পরদিনও আবার হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু চোরের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন। আর যখন সে আবারো চুরি করতে আসলো তখন তিনি তাকে পাকড়াঁও করলেন আর বললেন ‘এবার অবশ্যই আমি তোমাকে আল্লাহর রাসূলের কাছে নিয়ে যাব। তুমি বার বার শপথ করো আর চুরি করতে আসো।’
চোর যখন দেখল এবার তাকে সত্যিই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে নিয়ে যাবে তখন অবস্থা বেগতিক দেখে সে বলে, ‘আমাকে মাফ কর। আমি তোমাকে এমন কিছু বলে দিব যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাকে কল্যাণ দান করবেন।’
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু সেটা জানতে চাইলে চোর বলে, ‘যখন ঘুমাতে যাবে তখন আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবে তাহলে আল্লাহ তাআ'লা তোমার জন্য একজন পাহাড়াদার নিযুক্ত করবে, যে তোমার সঙ্গে থাকবে আর কোনো শয়তান সকাল পর্যন্ত তার কাছে আসতে পারবে না।’
এটা শুনে হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু তাকে ছেড়ে দিলেন।
পরদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবারও আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহুর নিকট সেই অপরাধীর কথা জানতে চাইলে তিনি আগের রাতের কথা বললেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘যদিও সে চরম মিথ্যাবাদী কিন্তু সে সত্য বলেছে।'
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন, ‘তুমি কি জানো সে কে?’
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন,‘না’।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন, ‘সে হচ্ছে শয়তান।’ (বুখারি)
আয়তুল কুরসি-
اَللهُ لآ إِلهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ، لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ، لَهُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ، مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيْطُوْنَ بِشَيْئٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَآءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَ هُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ-
…
বাংলা উচ্চারণ- আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। লা তা’খুযুহু সিনাতুঁ ওয়ালা নাঊম। লাহূ মা ফিস্ সামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ’ ই’ন্দাহূ ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালা ইউহিতূনা বিশাইয়্যিম্ মিন ‘ইলমিহি ইল্লা বিমা শা-আ’ ওয়াসিআ’ কুরসিইয়্যুহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, ওয়ালা ইয়াউ’দুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়্যুল আ’জিম। (সূরা আল-বাক্বারা আয়াত-২৫৫)
অর্থ : 'আল্লাহ, যিনি ব্যতিত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। কোন তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করতে পারে না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তাঁরই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতিত এমন কে আছে যে, তাঁর নিকটে সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পিছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতুটুকু তিনি দিতে ইচ্ছে করেন তা ব্যতিত। তাঁর কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলির তত্ত্বাবধান তাঁকে মোটেই শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহান।'
আয়াতুল কুরসির বিশেষ মর্যাদার কারণ-
অত্র আয়াতে ১০ টি বাক্য রয়েছে। যার প্রত্যেকটি আল্লাহ সুবহানাহু তাআ'লার একত্ববাদের স্বীকৃতি, তাঁর সুমহান গুনাবলি, সর্বোচ্চ ক্ষমতা এবং বৈশিষ্টাবলী আলোচনা করা হয়েছে-
১. আল্লাহু লা- ইলাহা ইল্লা হু- তিনিই আল্লাহ যিনি ব্যতিত ইবাদতের উপযুক্ত আর কোনো ইলাহ নেই।
২. আলহাইয়্যুল কাইয়্যুম- তিনি সদা জীবিত এবং বিদ্যমান।
৩. লা তা’খুজুহু সিনাতুও ওয়ালা নাউম- আল্লাহ তাআ'লা তন্দ্রা ও নিন্দ্রা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।
৪. লাহু মা ফিসসামাওয়াতি ওয়া মা ফিল আরদ্বি- আকাশ এবং জমিনে যা কিছু রয়েছে তার সবই আল্লাহ তাআ'লার মালিকানাধীন।
৫. মানজাল্লাজি...বিইজনিহি- সৃষ্ট কোনো বস্তুই আল্লাহ তাআ'লার চেয়ে বড় নয় বিধায় এমন কে আছে যে তাঁর সামনে তাঁর অনুমতি ব্যতিত সুপারিশ করতে পারে?
৬. ইয়া’লামু… খালফাহুম- মানুষের জন্মের পূর্বে এবং জন্মের পরের যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা জানেন।
৭. ওয়ালা ইউহিতুনা…বিমাশা আ- সমস্ত সৃষ্টির জ্ঞান মিলে একত্রিত হয়ে আল্লাহ তাআ'লার জ্ঞানের কোনো একটি অংশ বিশেষকেও পরিবেষ্টন করতে পারে না।
৮. ওয়াসিআ’… ওয়াল আরদ্বি- তাঁর কুরসি এতো বড় যে, সাত আসমান ও সাত জমিনকে পরিবেষ্টন করে আছে।
৯. ওয়া লা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা- আল্লাহ তাআ'লার নিকট এত বৃহৎ দু'টি সৃষ্টি আসমান-জমিনের হেফাজত করা কোনো কঠিন কাজ নয়।
১০. ওয়া হুয়াল আলিয়্যুল আজিম- তিনি অতি উচ্চ এবং অতি মহান। তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ আর কেউ নেই।
আল হাইয়্যুল কাইয়্যুম নামের বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
‘আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম’ শব্দ দু'টি আয়াতুল কুরসিতে ব্যবহৃত আল্লাহ তাআ'লার আকর্ষণীয় গুণবাচক নাম। যার অর্থ হলো- আল্লাহ তাআ'লা চিরঞ্জীব, চির প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহ তাআ'লার গুণবাচক এ শব্দদ্বয়ও কুরআনুল কারিমের বহুল মর্যাদাসম্পন্ন ও বড় আয়াত ‘আয়াতুল কুরসি’র অংশ। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াতাংশের শব্দ দু'টিরও অনেক ফজিলত বর্ণনা করেছেন।
সম্পূর্ণ আয়াতুল কুরসি তিলাওয়াতে মানুষ শয়তান থেকে হেফাজত থাকে। এ আয়াতটির রয়েছে অনেক ফজিলত। আর এ আয়াতের অংশ ‘আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম’ শব্দ দুটিরও রয়েছে আলাদা আলাদা ফজিলত।
আয়াতুল কুরসির প্রথম বাক্যে আল্লাহ তাআ'লা তাওহিদের ঘোষণা করেছেন। হাদিসে এ বাক্যেরও অনেক ফজিলত ও মর্যাদা ঘোষিত হয়েছে।
আর আয়াতুল কুরসিতে আল্লাহ তাআ'লার আকর্ষণীয় গুণবাচক ১০টি বাক্যের মধ্যে দ্বিতীয় বাক্য হলো- اَلْحَىُّ الْقَيُّوْمُ ‘আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম।’
আরবি (حَىُّ) হাইয়্যুন অর্থ হলো জীবিত। আল্লাহ তাআলা এ নামটি তাঁর গুণবাচক নাম হিসেবে গ্রহণ করে সবাইকে জানিয়ে দেন যে, তিনি সব সময় জীবিত ও বিদ্যমান থাকবেন; মৃত্যু তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। এ নামের জিকিরে আল্লাহ তাআ'লা বান্দার নেক হায়াত ও সুস্থতা দান করেন।
আর (قَيُّوْمُ) ক্বাইয়্যুম শব্দটি কিয়াম শব্দ থেকে উৎপন্ন। ক্বাইয়্যুম হলো সেই সত্তা যিনি নিজে জীবিত থেকে অন্যকে জীবিত রাখেন এবং নিয়ন্ত্রণ করেন। এ গুণবাচক শব্দদ্বয়ের মধ্যে ক্বাইয়্যুম আল্লাহর এমন এক বিশেষ গুণ; যাতে কোনো সৃষ্টিই অংশীদার হতে পারে না। তার সত্তা স্থায়ীত্বের জন্য কারো মুখাপেক্ষী নয়। এ কারণেই কোনো মানুষকে ক্বাইয়্যুম বলা বৈধ নয়।
যারা আব্দুল কাইয়্যুম না বলে শুধু কাইয়্যুম নাম ব্যবহার করে তারা গোনাহগার হবে।
অনেকে (حَىُّ-قَيُّوْمُ) হাইয়্যু ও ক্বাইয়্যুমকে আল্লাহ তাআ'লার ইসমে আজম হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন যে, বদরের যুদ্ধে একবার আমি চেয়েছিলাম যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখবো তিনি কি করছেন। সেখানে (প্রিয়নবিজীর কাছে) গিয়ে দেখলাম, তিনি সিজদায় পড়ে (يَا حَىُّ – يَا قَيُّوْمُ) ইয়া-হাইয়্যু, ইয়া-ক্বাইয়্যুমু’ বলে আল্লাহ তাআ'লার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছেন।
এই প্রিয় আয়াতের উপরে আমল করার তাওফিক আল্লাহ পাক আমাদের দান করুন:
আয়াতুল কুরসির পুরো আয়াতটিই আল্লাহ তাআ'লার একত্ববাদ, শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার গুণগান বিধায় আল্লাহ তাআ'লা এ আয়াতের মধ্যে অনেক ফজিলত রেখেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা আমাদের প্রত্যেককে অাল কুরআনের শ্রেষ্ঠতম আয়াত, আয়াতুল কুরসি মুখস্ত করে অন্তরে ধারণ করার তাওফিক দান করুন। হাদিসে বর্ণিত নিয়মে এই আয়াতের উপরে নিয়মিত আমল করার কিসমত নসিব করুন। সর্বোপরি মহাগ্রন্থ আল কুরআন অনুযায়ী জীব্ন যাপন করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার সন্তুষ্ট্যি অর্জনের মহাসৌভাগ্যবানদের কাতারে আমাদেরকেও শামেলে হাল করুন।
ছবি: গুগল।
২| ০৯ ই মে, ২০১৯ বিকাল ৩:০৪
নীল আকাশ বলেছেন: নকিব ভাই,
খুব দারুন একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন।
এটা আমার অত্যাধিক প্রিয় আয়াত।
লাইক সহ সোজা প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম।
মাহে রামাদানে এর চেয়ে ভালো আর কি বিষয় পোস্ট হতে পারে!
ধন্যবাদ।
৩| ০৯ ই মে, ২০১৯ রাত ৮:৩৭
ল বলেছেন: তিনি ব্যতিত কোন উপাস্য নেই,,,,
মাশাল্লাহ,, সুন্দর পোস্টে বিরামহীন ভালোলাগা +++
৪| ০৯ ই মে, ২০১৯ রাত ৯:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: সামুর সমস্যার কারনে ব্লগে আসতে পারি না।
আপনার সুন্দর পোষ্ট গুলো পড়া হয় না।
৫| ০৯ ই মে, ২০১৯ রাত ১১:৩৪
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: ভালো লেগেছে খুব।
আল্লাহ্ আপনার মঙ্গল করুন।
৬| ১০ ই মে, ২০১৯ ভোর ৫:০০
আমি ০০০ বলেছেন: সুরা বাকারার ২৮২ নং আয়াতটি কি সব থেকে বড় আয়াত নয়?আর
আবু হুরায়রার রা: কাছে যে শয়তান আস্ত সে কি মানুষ শয়তান নাকি জিন শয়টতান?
ফযিলতপূর্ন এই মাসে আপনার শ্রমসাধ্য এই লেখনি সকলকে ছু্য়ে যাক।
ধন্যবাদ জানিবেন।
৭| ১০ ই মে, ২০১৯ বিকাল ৪:২৭
আকতার আর হোসাইন বলেছেন: জাযাকাল্লাহ খাইরান..
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই মে, ২০১৯ সকাল ১১:৪৯
নজসু বলেছেন:
আস সালামু আলাইকুম।
সুন্দর পোষ্টটি সময় নিয়ে পড়বো ইনশায়াল্লাহ।