নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
রওজায়ে আতহার সংলগ্ন মসজিদে নববীর পবিত্র চত্বর, মদিনাতুল মুনাওওয়ারা।
সুন্নাতের পাবন্দিতাই সাফল্যের মাপকাঠি:
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করেছেন। সাইয়্যিদুল আমবিয়া ওয়াল মুরছালীন, খাতামুন্নাবিয়্যিন মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমাদের নবী, রাসূল এবং পথপ্রদর্শক হিসেবে প্রেরণ করেছেন। তাঁর রেখে যাওয়া মানবতার শ্রেষ্ঠতম আদর্শ অনুসরণ ও অনুকরণকে আমাদের নাজাত এবং মুক্তির মাধ্যম হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। প্রিয় নবীজীর প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রতিটি মুমিনের হৃদয়ে ধিকি ধিকি জোনাকির মত আলো বিকিরণ করে যায়। একজন মুমিনের জন্য প্রিয় নবীজীর এই ভালোবাসার প্রকাশ ঘটে তাঁর জীবনাচার, তাঁর রেখে যাওয়া অনুপম আদর্শ -এই সুন্নাতকে মেনে চলার মাধ্যমে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের জন্য প্রিয় নবীজীর সুন্নাতকে উর্ধ্বে ওঠার সোপান বানিয়ে দিয়েছেন। আমাদের মর্যাদার মাপকাঠি, সাফল্যের চাবিকাঠি করে দিয়েছেন। কুরআন হাদিসের বানীর আলোকে একথা দিবালোকের মত সত্য যে, যার জীবনে যত বেশি সুন্নাতের প্রতি মুহাব্বত রয়েছে, সুন্নাত অনুসারে আমল রয়েছে তিনি তত উন্নত। তিনি তত সফল। তিনি তত বড় সম্মানের অধিকারী। জান্নাতেও তিনি তত উঁচু সম্মানে ভূষিত হবেন। এতবড় দামী সুন্নাত আমলের ক্ষেত্রে আমাদের উদাসীনতা, অপারগতা এবং কখনো কখনো ব্যর্থতা ব্যথিত করে। আমাদের মানবিক দুর্বলতা, অলসতা ইত্যাদিও এর জন্য দায়ী। আজ সারা পৃথিবীর সকল মানুষ যদি প্রিয় নবীজীর সুন্নাতের ছায়াতলে আশ্রয় নিতেন, পৃথিবীতে একটি মানুষও অভূক্ত ও অনাহারী থাকতেন না। জুলূম অত্যাচারের এই যে সয়লাব গোটা পৃথিবীজুড়ে, সুন্নাতের মহান আদর্শ ধারণ করে পৃথিবীবাসীকে এগিয়ে নিতে পারলে ইনসাফের জান্নাতি পরিবেশ কায়েম হতে পারতো। বিশ্ববিখ্যাত ইংরেজ পন্ডিত জর্জ বার্নাড’শ এর মন্তব্যটি এক্ষেত্রে প্রনিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন-
“IF A MAN LIKE MUHAMMAD WERE TO ASSUME THE DICTATORSHIP OF THE MODERN WORLD HE WOULD SUCCEED IN SOLVING ALL IT’S PROBLEMS IN A WAY THAT WOULD BRING SO MUCH NEEDED PEACE AND HAPPINESS”
'যদি মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মত কোনো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ব্যক্তি আধুনিক বিশ্বের নেতৃত্ব গ্রহণ করতে পারতেন তবে তিনি বর্তমান জগতের সমস্যাবলীর সকল সমাধান টেনে দিতেন। যিনি মানুষের বহু আশা-আকাঙ্খা আর সুখ-শান্তি এনে দিতে সম্পূর্ণভাবে সক্ষম হতেন।'
আসুন, জেনে নিই সেই সুন্নাত তিনটি:
তো কি এমন আমল যা করতে পারলে অন্যান্য প্রায় সকল সুন্নাত পালন করাই সহজ হয়ে যায় আমাদের জন্য? আজ সে কথাই আলোচনা করার প্রত্যাশা, ইনশাআল্লাহ। মুহাক্কিক আলেম উলামা, সলফে সালেহীন এবং বুজুর্গানে দ্বীন তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ তিনটি এমন সুন্নাত রয়েছে, যেগুলোর উপর আমল করতে পারলে অন্তরে নূর পয়দা হয় এবং এর দ্বারা অন্য সকল সুন্নাতের উপর আমল করা সহজ হয়ে যায়। আর অন্তরে সুন্নাতের প্রতি আমল করার স্পৃহা জাগ্রত হয়।
আলহামদুলিল্লাহ, গুরুত্বপূর্ণ সেই সুন্নাত তিনটি হচ্ছে-
১। সহীহ-শুদ্ধ উচ্চারণে আগে আগে সালাম দেয়া ও সর্বত্র সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটানো:
সহীহ-শুদ্ধ উচ্চারণে আগে আগে সালাম দেয়া ও সর্বত্র সালামের ব্যাপক প্রসার ঘটানো। (সহীহ মুসিলম, হাদীস নং ৫৪; সুনানে তিরিমজী, হাদীস নং ২৬৯৯)
জ্ঞাতব্য, السلام (আস-সালামু) এর শুরুর হামযা এবং মীমের পেশ স্পষ্ট করে উচ্চারণ করতে হবে। সালাম এর উত্তর শুনিয়ে দেয়া ওয়াজিব। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২৬)
২। প্রত্যেক শুভ কাজের প্রারম্ভে ও ভাল স্থানে গমনে ডান দিককে প্রাধান্য দেয়া:
প্রত্যেক শুভ কাজের প্রারম্ভে ও ভাল স্থানে গমনে ডান দিককে প্রাধান্য দেয়া। যথাঃ মসিজেদ ও ঘরে প্রবেশকালে ডান পা আগে রাখা। পোশাক পরিধানের সময় ডান হাত ও ডান পা আগে প্রবেশ করানো। এর বিপরীতে প্রত্যেক নিম্নমানের কাজে এবং নিম্নমানের স্থানে বাম দিককে প্রাধান্য দেয়া। যথাঃ মসিজদ বা ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বাম পা আগে রাখা, টয়লেটে বাম পা আগে দিয়ে প্রবেশ করা, বাম হাতে নাক পরিস্কার করা, পোশাক থেকে বাম হাত বা বাম পা আগে বের করা। (সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ১৬৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ২৫০৪৩; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং ৭৯১; সহীহ মুসিলম, হাদীস নং ২০৯৭)
৩। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার যিকির বেশি বেশি করা:
বেশি বেশি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার যিকির করা। (সূরা আহযাব, আয়াত ৪১; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং ১৮৩৯)
বিশেষ করে এই যিকিরগুলোর প্রতি যত্নবান হওয়া চাই-
এক. উপরে ওঠার সময় আল্লাহু আকবার, নীচে নামার সময় সুবহানাল্লাহ এবং সমতল ভূমিতে চলার সময় লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ পড়তে থাকা। (সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ২৯৯৩; সুনানে তিরিমজী, হাদীস নং ৩৩৮৩)
দুই. প্রতিদিন কুরআনে কারীম থেকে কিছু পরিমাণ তিলাওয়াত করা বা কুরআন তিলাওয়াত শ্রবণ করা। (সহীহ মুসিলম, হাদীস নং ৭৯১; সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ৫০৩৩)
তিন. পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পর সুন্নাত থাকলে সুন্নাতের পর নতুবা ফরজের পরে তিনবার ইস্তেগফার, একবার আয়াতুল কুরসী, একবার সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস পড়া। তাসবীহে ফাতেমী অর্থাৎ ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আল-হামদুলিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়া। (সহীহ মুসিলম, হাদীস নং ৫৯১; নাসায়ী, আসসুনানুল কুবরা, হাদীস নং ৯৮৪৮; তাবারানী, আলমুজামুল কাবীর, হাদীস নং ৭৫৩২)
চার. সকাল-বিকাল তিন তাসবীহ আদায় করা অর্থাৎ ১০০ বার কালিমায়ে সুওম (সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার), ১০০ বার ইস্তেগফার ও ১০০ বার কোন সহীহ দরূদ শরীফ পড়া। (সহীহ মুসিলম, হাদীস নং ২৬৯২, ২৬৯৫; ইতহাফ ৫/২৭৫)
পাঁচ. প্রত্যেক কাজে মাসনূন দুআ পাঠ করা। (সহীহ মুসিলম, হাদীস নং ৩৭৩; সুনানে তিরিমজী, হাদীস নং ৩৩৮৪)
ফরিয়াদ:
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার নিকট ফরিয়াদ, আমাদের জন্য এই আমলগুলোকে তিনি যেন সহজ করে দেন যাতে প্রতিটি সুন্নাতের উপর আমল করার সুযোগলাভে ধন্য হতে পারি আমরা।
ছবি: অন্তর্জাল।
২| ০২ রা জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:৫১
ওমেরা বলেছেন: আলহামদুল্লিলাহ । প্রথম দুটি সুন্নত সঠিক ভাবেই আদায় করি । যিকির সময় সুযোগ মত করার চেষ্টা করি ।
আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন দুনিয়া ও আখিরাতে ।
৩| ০৩ রা জুন, ২০১৯ দুপুর ২:৫৯
মেঘ প্রিয় বালক বলেছেন: সুন্দর বলেছেন,আল্লাহ আমল করার তৌফিক দাও সবাইকে।
৪| ০৩ রা জুন, ২০১৯ বিকাল ৫:১৮
নাসির ইয়ামান বলেছেন: ভাই,আপনি কোন পীরের মুরীদ? হয়তো আশরাফ আলী থানভীর সিলসিলার কোন পীরের মুরীদ হবেন?
আপনার পীরদের এগুলো ভণ্ডামি বাদ দিয়া কোরান সুন্নাহর দলীলভিত্তিক আলোচনা করেন।
আর নাহয় চুপ থাকেন, বৃদ্ধাশ্রমের আমল বাতলে দিয়ে লাভ নাই!
৫| ০৪ ঠা জুন, ২০১৯ সকাল ১১:২৭
টারজান০০০০৭ বলেছেন: সুন্দর পোস্ট ! হেদায়েত তো সুন্নতের অনুসরণের মধ্যে, আল্লাহর রাসূল স. কে ভালোবাসার মধ্যে।
৬| ০৫ ই জুন, ২০১৯ ভোর ৫:১১
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: খেলা শুরু হয়েছে।
খেলা দেখে এসে পড়বো।