নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে মায়ের মর্যাদা ও অধিকার এবং পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের ফজিলত:

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:৫১



ইসলামে মায়ের মর্যাদা ও অধিকার:
ইসলামে মায়ের মর্যাদা আলোচনা করতে গেলে আবশ্যিকভাবেই বাবার প্রসঙ্গ এসে যায়। কারণ, কুরআন হাদিসে পিতা মাতার মর্যাদা বর্ণনায় অধিকাংশ স্থানেই একটি শব্দ 'ওয়ালিদাইন' বলে উভয়কে একত্রে বুঝানো হয়েছে। তাই আলোচ্য নিবন্ধে মায়ের মর্যাদা তুলে ধরার সাথে সাথে বাবার মর্যাদার বিষয়টিও আলোচনা করার ইচ্ছে। ইসলামে মাতা পিতার মর্যাদাকে জগতের অন্য সকলের উপরে সমুন্নত করা হয়েছে। সম্মান, মর্যাদা ও অধিকারের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে মা বাবার ক্ষেত্রে। বিশ্ব চরাচরের স্রষ্টা মহান প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার পরপরই ঘোষনা করা হয়েছে মাতা পিতার মর্যাদা। কুরআন ও হাদিসের বিভিন্ন স্থানে মা বাবার সঙ্গে সদ্ব্যবহারের বিষয়ে অধিক তাগিদ দেওয়া হয়েছে। পিতা মাতা উভয়েরই রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। তবে একজন নারীকে মা হতে গিয়ে যে অবর্ণনীয় কষ্ট, অসাধারণ ধৈর্য্য, অপরিমেয় কষ্ট আর ত্যাগের কুরবানি করতে হয় সে বিচারে মায়ের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে বিশেষ মর্যাদা ও সম্মান। একজন নারী যখন মা হন, তখন তাকে বিশেষ সম্মান ও অধিক মর্যাদা দেয়ার নির্দেশ দেয় ইসলাম। তার সঙ্গে সর্বোত্তম আচরণ করা, তাকে কোন প্রকার কষ্ট না দেওয়া, তার সেবায় সর্বদা সচেষ্ট হওয়া এবং তার কল্যাণের জন্য আল্লাহ তাআ'লার নিকট দুআ করার শিক্ষা দেয় ইসলাম। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা ইরশাদ করেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا حَتَّى إِذَا بَلَغَ أَشُدَّهُ وَبَلَغَ أَرْبَعِينَ سَنَةً قَالَ رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَى وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَصْلِحْ لِي فِي ذُرِّيَّتِي إِنِّي تُبْتُ إِلَيْكَ وَإِنِّي مِنَ الْمُسْلِمِينَ ﴿15﴾

“আর আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি উত্তম আচরণের নির্দেশ প্রদান করেছি। তার মা তাকে গর্ভে ধারণ করেছে অতি কষ্টে এবং তাকে প্রসবও করেছে অতি কষ্টে। তার গর্ভধারণ ও দুধপান ছাড়ানোর সময় ত্রিশ মাস। অবশেষে যখন সে তার শক্তির পূর্ণতায় পৌছে এবং চল্লিশ বছরে উপনীত হয়, তখন সে বলে, হে আমার রব, আমাকে সামর্থ্য দান করুন, আপনি আমার উপর ও আমার মাতা-পিতার উপর যে নিয়ামত দান করেছেন, আপনার সে নিআমতের যেন আমি শোকর আদায় করতে পারি এবং আমি যেন সৎকর্ম করতে পারি, যা আপনি পছন্দ করেন। আর আমার জন্য আপনি আমার বংশধরদের মধ্যে সংশোধন এনে দিন। নিশ্চয় আমি আপনার কাছে তাওবা করলাম এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তভূর্ক্ত।” -সূরা আল-আহকাফ: আয়াত- ১৫

কুরআনুল কারিমের অন্যত্র আল্লাহ তাআ'লা বলেন,

وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا ﴿23﴾ وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُلْ رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا ﴿24﴾

“আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট (জীবদ্দশায়) বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদের আচরণে বিরক্ত হয়ে 'উফ' শব্দটিও উচ্চারণ করো না (কিংবা তোমাদের আচরণে বিরক্ত হয়ে তারা 'উফ' শব্দ উচ্চারণ করতে বাধ্য হন এমনটিও করো না) এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। আর তাদের উভয়ের জন্য দয়ার হাত সম্প্রসারিত করে দাও এবং বল, হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন-পালন করেছেন।” -সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ২৩-২৪

আল্লাহ তা’আলা অন্য আয়াতে ইরশাদ করেন :

{وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئاً وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا }

‘তোমরা ইবাদত কর আল্লাহর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সাথে।' (সূরা আন-নিসা:৩৬)।

পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার একটি আবশ্যিক বিষয়, যদিও তারা অমুসলিম হন:
পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার ও তাদের অধিকার সংরক্ষণ করা ওয়াজিব। এমনকি যদি তারা অমুসলিম হন তবুও। তাদের মুসলিম হওয়ার সাথেও তাদের প্রতি সদ্ব্যবহারের বিষয়টি জড়িত নয়। আসমা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

(قَدِمَتْ عَلَيَّ أُمِّي وَهِيَ مُشْرِكَةٌ فِي عَهْدِ قُرَيْشٍ إِذْ عَاهَدَهُمْ، فَاسْتَفْتَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمْ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ قَدِمَتْ عَلَيَّ أُمِّي وَهِيَ رَاغِبَةٌ أَفَأَصِلُ أُمِّي؟، قَالَ: نَعَمْ صِلِي أُمَّكِ)

‘একবার আমার মা আমার কাছে বেড়াতে এলেন। তিনি ছিলেন মুশরিকাহ। আর তখন কুরাইশদের সাথে মুসলমানদের চুক্তি ছিল। আমি নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার মা আমার কাছে এসেছেন। তিনি আমার আতিথেয়তা পেতে আগ্রহী। তবে কি আমি তার সাথে সম্পর্ক রাখব? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তোমার মায়ের সাথে তুমি সম্পর্ক রাখবে।’ (মুসলিম)।

মাতা-পিতার সদ্ব্যবহারের নির্দেশ এখানেই শেষ নয়। বরং, তারা যদি আল্লাহর সাথে কুফরী করার নির্দেশও দেন এবং শিরক করতে বাধ্য করেন, তবু তাদের সাথে ভালো ব্যবহার অব্যাহত রাখতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-:

{وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْناً عَلَى وَهْنٍ وَفِصَالُهُ فِي عَامَيْنِ أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيرُ . وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلى أَنْ تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ}

‘আর আমি মানুষকে তার মাতাপিতার ব্যাপারে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দু’বছরে সুতরাং আমার ও তোমার পিতা-মাতার শুকরিয়া আদায় কর। প্রত্যাবর্তন তো আমার কাছেই। আর যদি তারা তোমাকে আমার সাথে শিরক করতে জোর চেষ্টা করে, যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তখন তাদের আনুগত্য করবে না এবং দুনিয়ায় তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে। আর অনুসরণ কর তার পথ, যে আমার অভিমুখী হয়। তারপর আমার কাছেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। তখন আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দেব, যা তোমরা করতে।’ (সূরা লুকমান:১৪-১৫)

বক্ষমান আয়াত ও হাদিসে এটাই স্পষ্ট যে, পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা সর্বাবস্থায় ওয়াজিব, আর তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই। এটা স্পষ্ট মহাপাপ। গুনাহে কবিরাহ। কারণ, কুরআনের উল্লেখিত আয়াতের মর্ম অনুধাবনে বুঝা যায়, শিরক এর মত একটি মহাপাপের প্রতি পিতা-মাতার নির্দেশের পরও যখন অমুসলিম পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে তাহলে একজন মুসলিম পিতা-মাতার অধিকার কতখানি হতে পারে। নিশ্চয় তাদের অধিকার সবচেয়ে বেশি। আর তা যথাযথভাবে আদায় করাও কঠিন। যে তা আদায় করতে পেরেছে, সে নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআ'লার তাওফিকপ্রাপ্ত ভাগ্যবানদের একজন।

জিহাদের চেয়েও পিতার-মাতার সেবার গুরুত্ব অধিক:
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পিতা-মাতার অধিকারকে জিহাদের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। বুখারী ও মুসলিমে আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাযি. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন-

(سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمْ أَيُّ الْعَمَلِ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ؟ قَالَ: الصَّلَاةُ عَلَى وَقْتِهَا، قَالَ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: ثُمَّ بِرُّ الْوَالِدَيْنِ، قَالَ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ.)

‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় আমল কোনটি? তিনি বললেন, ‘সময়মতো নামায আদায় করা’। আমি বললাম, এরপর? তিনি বললেন, ‘পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার’। আমি বললাম, এরপর? তিনি বললেন, ‘আল্লাহর পথে জিহাদ করা।’ (বুখারী)

আব্দুল্লাহ বিন আমর রাযি. হতে অপর এক বর্ণনায় নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

( رِضَى الرَّبِّ فِيْ رِضَى الْوَالِدِ، وَسَخَطِ الرَّبِّ فِيْ سَخَطِ الْوَالِد)

‘পিতার সন্তুষ্টিতে রবের সন্তুষ্টি। আর পিতার অসন্তুষ্টিতে রবের অসন্তুষ্টি।’ (তিরমিযী, সহীহ)

মুয়াবিয়া বিন জাহিমা রাযি বলেন:

(أَنَّ جَاهِمَةَ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمْ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَدْتُ أَنْ أَغْزُوَ وَقَدْ جِئْتُ أَسْتَشِيرُكَ، فَقَالَ: هَلْ لَكَ مِنْ أُمٍّ؟ قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: فَالْزَمْهَا، فَإِنَّ الْجَنَّةَ تَحْتَ رِجْلَيْهَا )

'এক লোক রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, আমি যুদ্ধে যেতে চাই। আপনার কাছে পরামর্শের জন্য এসেছি। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার মা আছে? লোকটি বলল, জ্বি আছে। তিনি বললেন, ‘তাহলে তাকে সঙ্গ দাও। কেননা জান্নাত তার পদতলে।’ (নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ)।

অন্যদিকে যে ব্যক্তি পিতা-মাতাকে জীবিত পেয়েও জান্নাত অর্জন করতে পারল না, তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

(رَغِمَ أَنْفُ، ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ، ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ، قِيلَ: مَنْ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟، قَالَ: مَنْ أَدْرَكَ أَبَوَيْهِ عِنْدَ الْكِبَرِ أَحَدَهُمَا أَوْ كِلَيْهِمَا فَلَمْ يَدْخُلِ الْجَنَّةَ)

‘তার ধ্বংস হোক, তার ধ্বংস হোক, তার ধ্বংস হোক! জানতে চাওয়া হলো, কার কথা বলছেন ইয়া রাসুলাল্লাহ? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতার কোনো একজনকে বা উভয়কে বার্ধক্যে পেয়েছে, অথচ জান্নাতে যেতে পারল না।’ (মুসলিম)।

হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল,

يا رسول الله من أبرُّ؟ قال: أُمّك، قال: ثم من؟ قال: أمَّك، قال: ثم من؟ قال أباك

“হে আল্লাহর রাসূল! সবচেয়ে বেশি ভালো ব্যবহারের উপযুক্ত ব্যক্তি কে?

তিনি বললেন, তোমার মা।

লোকটি আবার বললেন, তারপর কে?

আল্লাহর রাসূল বললেন, তোমার মা।

লোকটি আবারো বললেন, তারপর কে?

আল্লাহর রাসূল বললেন, তোমার পিতা।” – বুখারি, আদাবুল মুফরিদ; ৫৯৭১, মুসলিম; ৮৫

মাতা পিতার অসন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রেখে হিজরতের অনুমতিও দেননি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম:
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট হিজরত করার জন্য অঙ্গিকার করতে আসে। আর সে তার মাতা পিতাকে ক্রন্দনরত অবস্থায় রেখে এসেছে। তখন রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন,

ارجع إليهما وأضحكهما كما أبكيتَهما

“তুমি তাদের উভয়ের নিকট ফিরে যাও এবং তাদের যেভাবে তুমি কাঁদিয়েছিলে, সেভাবে তাদের খুশি করিয়ে দাও।” –আবুদাউদ; ২৫২৮, ইবনে মাজাহ্; ২৭৮২

এতে প্রমাণিত হয় যে, মাতা পিতার অসন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রেখে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকটিকে হিজরত করার অনুমতিও প্রদান করেননি।

পিতা মাতার সাথে সদাচারণ আল্লাহ তাআ'লার নিকট পছন্দনীয় আমল:
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম, আল্লাহ তাআ'লার নিকট সর্বাধিক পছন্দনীয় আমল কোনটি?

উত্তরে তিনি বললেন,

الصلاة على وقتها، قلت: ثم أيّ؟ قال: برُّ الوالدين، قلت: ثم أيّ؟ قال: الجهاد في سبيل الله

“সময় মত নামায আদায় করা।

আমি বললাম তারপর কোনটি?

তিনি বললেন, মাতা-পিতার সাথে ভালো ব্যবহার করা।

আমি বললাম তারপর কোনটি?

তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।” –বুখারি; ৫৯৭০, মুসলিম; ৮৫

পিতা মাতাকে কষ্ট দেয়া সবচেয়ে বড় কবিরাহ গুনাহ:
মাতা পিতাকে কোন প্রকার কষ্ট দেয়া সন্তানের জন্য কোনো অবস্থায় ঠিক নয়। ইসলাম এ বিষয়ে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছে। তাদের কোন প্রকারের কষ্ট হতে পারে এমন সকল কাজ থেকে বিরত থাকতে ইসলাম কঠোরভাবে নির্দেশ প্রদান করেছে। সর্বোপরি, তাদের কোন প্রকার কষ্ট দেয়াকে 'মাতা-পিতার নাফরমানি' এবং 'কবিরা গুনাহ' সাব্যস্ত করা হয়েছে।

হযরত আবু বকরা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন বার বললেন,

ألا أُنبِّئكم بأكبر الكبائر؟ ثلاثاً. قالوا: بلى يا رسول الله، قال: الإشراك بالله، وعقوق الوالدين، . وجلس وكان متّكئاً فقال: ألا وقولُ الزور ما زال يكرِّرها حتى قلنا: ليته سكت

“আমি কি তোমাদের জানিয়ে দেবো, সবচেয়ে বড় কবিরা গুনাহ কী? (এ কথাটি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবার বলেছেন)
তারা বললেন, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল! তখন তিনি বললেন, সবচেয়ে বড় কবিরা গুনাহ, আল্লাহর সাথে শরীক করা, মাতা- পিতার নাফরমানি করা, (এই হাদিসের বর্ণনাকারী বলেন, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেলান দেয়া অবস্থায় ছিলেন, তারপর তিনি উঠে বসলেন এবং বললেন, সাবধান! মিথ্যা কথা বলা!) রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথাটি বার বার বলছিলেন, যার ফলে আমরা চাচ্ছিলাম, যদি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ হতেন!” –বুখারি; ৫৯৭৬, মুসলিম; ৮৭

ইমাম মুসলিম তার সহীহ গ্রন্থে হযরত আলী (রা.) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

لعن اللهُ من لعن والديه

“আল্লাহ তাআ'লার আযাব তার উপর যে তার মাতা পিতাকে অভিশাপ দেয় বা কষ্ট দেয়।” –মুসলিম; ১৯৭৮

পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার বিপদাপদ থেকে মুক্তি দেয়:
পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার সবচেয়ে বড় সওয়াবের কাজ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তাদের সাথে সদ্ব্যবহারে আল্লাহ তাআ'লার অবারিত রহমত প্রাপ্ত হওয়া যায়, যাবতীয় বিপদাপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

ঐ তিন ব্যক্তির ঘটনা হয়তো অনেকেরই জানা, যারা গুহায় আটকে পড়েছিলেন এবং বের হতে পারছিলেন না। তাদের একজন অপর দু'জনকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের ভালো আমলগুলো স্মরণ করো এবং সেগুলোর অসিলায় দু‘আ করো। আল্লাহ তাআ'লা হয়তো এর মাধ্যমে বিপদ কাটিয়ে দেবেন।

তাদের একজন তখন দু‘আ করেছিলেন এভাবে যে, ‘হে আল্লাহ! আমার বৃদ্ধ পিতা-মাতা ছিল। আবার ছোট ছোট শিশুও ছিল। আমি তাদের জন্য মেষ চরাতাম। যখন ফিরে আসতাম, তাদের দুধ খাওয়াতাম। প্রথমে আমার পিতা-মাতাকে খাওয়াতাম। এরপর সন্তানদের। একদিন আমার পশুগুলোর চারণভূমি একটু দূরে পড়ে গেল। ফিরতে দেরি হলো। সন্ধ্যা হয়ে গেল। আমি এসে দেখি তারা ঘুমিয়ে পড়েছেন। অন্যান্য দিনের মতো আমি তাদের জন্য দুধ নিয়ে হাজির হলাম। কিন্তু মাথার কাছে এসে জাগাতে অপছন্দ করলাম। আবার তাদের আগে আমার বাচ্চাদের খাওয়াতেও অপছন্দ করলাম। ওদিকে আমার বাচ্চারা আমার পায়ে পড়ে কাঁদছিল। এভাবে রাত শেষ হয়ে ফজর হলো। আপনি যদি জেনে থাকেন যে এ কাজটি আমি আপনার সন্তুষ্টির জন্যই করেছি, তাহলে আজ আমাদের বিপদ কাটিয়ে দিন।'

অপর দুই ব্যক্তিও অনুরূপ তাদের কৃত ভালো কাজের উল্লেখ করে আল্লাহ তাআ'লার কাছে প্রার্থনা করলেন। অতঃপর আল্লাহ তাআ'লা তাদের বিপদ কাটিয়ে দিলেন। গুহা মুখ থেকে পাথর সরে গেল এবং তারা গুহাভ্যন্তর থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলেন।

পিতা-মাতার নির্দেশ মানা, তাদের ব্যয়ভার বহন করা, মৃত্যুর পর তাদের জন্য দুআ করা সবই তাদের অধিকার:
পিতা-মাতার অন্যতম অধিকার হলো, তাদের নির্দেশ মেনে চলা, যতক্ষণ না তা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশের বিরোধী হয়। আল্লাহ তা’আলা বলেন-

{وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا}

‘এবং দুনিয়ায় তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে।’ (সূরা লুকমান:১৫)

অনুরূপভাবে তারা দরিদ্র হলে তাদের ব্যয়ভার বহন করা, তাদের পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যবস্থা করে দেয়া, তাদের জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পরে তাদের জন্য দু‘আ করা, তারা জীবিতাবস্থায় যাদের সাথে ওঠাবসা করতেন তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলা।

পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের ফযীলত:
উপরের আলোচনায় পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের গুরুত্ব ফুটে উঠেছে। আমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছি যে, এই কাজটি দ্বারা আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জিত হয়, এটি জান্নাতে প্রবেশের অন্যতম কারণ এবং জিহাদের চেয়েও এই কাজকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে হাদিসে।

ওয়ায়েস ইবনে আমের আল ক্বারনীর ঘটনা কম বেশি সকলেই অবগত। তিনি ঐ লোক যার সম্পর্কে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে গিয়েছেন। আল্লাহ তাআ'লার কাছে তাঁর উচ্চ মর্যাদার কথাও বলে গেছেন। তার সাথে দেখা করে দু‘আ চাইতে বলেছেন, এবং দু‘আর মাধ্যমে আল্লাহ তাআ'লার কাছে চাইতে বলেছেন। অথচ একমাত্র আপন মাতৃসেবা ছাড়া তার আর কোনো বিশেষত্ব ছিল না।

মুসলিম শরীফের বর্ণনায় এসেছে, উমর রাযি. ইয়েমেন থেকে কোনো দল আসলে জিজ্ঞাসা করতেন, আপনাদের মধ্যে কি ওয়ায়েস বিন আমের আল ক্বারনী আছেন?
এমনকি একদিন তিনি ওয়ায়েস বিন আমের আল ক্বারনীর নিকট গেলেন। বললেন, আপনিই ওয়ায়েস বিন আমের?
তিনি বললেন, হ্যাঁ।
উমর রাযি. বললেন, মুরাদ এলাকার লোক আপনি?
তিনি বললেন, হ্যাঁ।
উমর রাযি. বললেন, আপনার কুষ্ঠরোগ ছিল, অতঃপর সুস্থতা লাভ করেছেন, অবশ্য এক দিরহাম পরিমাণ জায়গা বাকি, তাই না?
তিনি বললেন, হ্যাঁ।
উমর রাযি. বললেন, আপনার মা আছেন?
তিনি বললেন, হ্যাঁ।
উমর রাযি. বললেন, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তোমাদের কাছে ইয়েমেনের মুরাদ (যা ক্বারন এলাকায় অবস্থিত) থেকে আগত দলের সাথে ওয়ায়েস বিন আমের আসবে। তার কুষ্ঠরোগ ছিল, সুস্থ হয়েছে, কেবল এক দিরহাম পরিমাণ বাকি আছে। তার মা আছে, সে তার সেবা করে। সে আল্লাহর নামে কোনো কসম করলে আল্লাহ তা পূরণ করেন। তুমি যদি চাও যে সে তোমার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুক, তবে তা করো। অতএব, আপনি আমার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। ওয়ায়েস ক্বারনী ক্ষমা প্রার্থনা করলেন।
উমর রাযি. তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কোথায় যাবেন?
তিনি বললেন, কুফায়।
উমর রাযি. বললেন, আপনার ব্যাপারে কি কুফার গভর্নর লিখে পাঠাব?
তিনি বললেন, আমি সাধারণ মানুষের মাঝে থাকতেই পছন্দ করি।

আসবাগ বিন যায়েদের বর্ণনায় আছে, ওয়ায়েস আল ক্বারনী তার মায়ের সেবার জন্য রাসুলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেন নি।

মায়ের দুআ পাল্টে দিতে পারে জীবন:
সুলতানুল আরেফিন হজরত বায়েজীদ বোস্তামী (র.) -এর মাতৃভক্তির কথা আমরা অনেকেই জানি- এক রাতে জননী ঘুমন্ত অবস্থায় পানি চাইলে শিশু বায়েজীদ দেখলেন, ঘরে একটুও পানি নেই। তিনি কলসি নিয়ে ঝর্ণায় পানি আনতে গেলেন। এসে দেখলেন, ঘুমিয়ে পড়েছেন মা জননী। তিনি পানির পাত্র নিয়ে মায়ের শিয়রে দাঁড়িয়ে রইলেন। কখন মা জননীর ঘুম ভাঙবে আর কখন আবার পানি চাইবেন এবং তৎক্ষণাৎ তাকে পানি দিতে হবে যে! এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেন। সারাটা রাত দাঁড়িয়ে থাকলেন তিনি। সকালের আলো ফুটে উঠলে মা জননী দেখলেন, তার আদরের সন্তান তার শিয়রে পানির পাত্র হাতে তখনো দাঁড়িয়ে। মায়ের প্রতি ছেলের এই অসাধারণ ভালোবাসা-ভক্তি ও দায়িত্ববোধ প্রত্যক্ষ করে মা জননী হাত তুলে আল্লাহর কাছে ছেলের জন্য দুআ করলেন। আল্লাহ পাক মায়ের দুআ কবুল করলেন। বায়েজীদ হয়ে গেলেন জগতের বিখ্যাত অলিয়ে কামেল।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মাতৃভক্তির কথাও আমাদের জানা রয়েছে। তিনি মায়ের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে উত্তাল নদী সাঁতরে মায়ের কাছে হাজির হয়েছিলেন। মাতৃভক্তির এসব ঘটনা আমরা ছাত্র অবস্থায় পাঠ্যপুস্তকে পড়েছি। বর্তমান পাঠ্যপুস্তকে নৈতিকতা, মানবতা, গুরুভক্তি, মাতা-পিতার প্রতি আনুগত্যের প্রবন্ধগুলো তেমন একটা চোখে পড়ে না। আর সে কারণেই প্রশ্ন জাগে, আমাদের ছেলেমেয়েরা এসব নৈতিকতার পাঠ আত্মস্থ করবে কোত্থেকে?

পূর্বসূরীদের জীবনীতে পিতা-মাতার সদ্ব্যবহারের আরও কিছু দৃষ্টান্ত:
আমাদের সালাফগণ যখন পিতা-মাতার হক ও তাদের সাথে সদাচারের বিষয়টি বুঝেছেন, তখন তাঁরা পূর্ণভাবে পিতা-মাতার সেবায় আত্মনিয়োগ করেছেন। মুহাম্মদ বিন সিরীন র. এর নাম হয়তো শুনেছেন। তিনি যখন তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা বলতেন, তখন মনে হত তিনি অনুনয় বিনয় প্রকাশ করছেন। ইবনে আওফ বলেন, একবার এক লোক মুহাম্মদ বিন সিরীন এর বাড়িতে এলেন। তখন তিনি তার মায়ের সাথে কথা বলছিলেন। লোকটি বলল, তিনি কি কোনো সমস্যায় পড়েছেন? তখন অন্যরা বললেন, না, এভাবেই তিনি তার মায়ের সাথে কথা বলেন।

আরেক বিখ্যাত ব্যক্তির ঘটনা। তিনি হাইওয়াহ বিন শুরাইহ রহ.। তিনি একজন বড় মাপের প্রসিদ্ধ আলেম ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে ইলম শেখার জন্য সব অঞ্চল থেকে মানুষ আসত। তিনি তাদেরকে শেখাতেন। এরই মধ্যে কখনো তার মা বলতেন, হাইয়াহ, ওঠো, মুরগীকে খাবার দাও। মায়ের নির্দেশ পালনার্থে সাথে সাথে তিনি ক্লাস থেকে উঠে যেতেন এবং মুরগীকে খাবার দিয়ে আবার পাঠদানে যোগ দিতেন।

এই হচ্ছে আমাদের পূর্বসূরীদের কিছু অবস্থা। অথচ আজ আমাদের অবস্থান কোথায়? আমাদের তরুণ-তরুণীরা পিতা-মাতার সাথে কেমন আচরণ করছে? আমাদের সন্তানদের আচরণ কেমন? আমাদের সমাজের অবস্থা কেমন? আজ দেখা যায়, দু'দিনের পরিচিত অতি সামান্য এক বন্ধুকে খুশি করার জন্য পিতা-মাতাকে কাঁদাচ্ছে হৃদয়ের তন্ত্রী ছেঁড়া সন্তান। মাতা পিতাকে ছেঁড়ে চলে যাচ্ছে দু'দিনের তাদের কষ্ট দিচ্ছে ছোট-খাটো কারণে। তাদের সাথে রাগারাগি করছে।

তরুণ ও যুবক ভাইয়েরা, আসুন আমরা পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করি। তাদের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সব সময় চেষ্টা করি। দেখুন, আমাদের পিতা-মাতা আমাদের কাছে কী চান? তারা শুধু চান যে প্রয়োজনের সময় তাদের পাশে থাকি, তাদের খুঁটি হই। বরং, আমাদের মায়েরা তো শুধু একটু মিষ্টি কথা চান, একটু আদর আর মায়া চান। এর বেশি কিছু চান না। এটুকুও কি আমরা দিতে পারি না?

আসুন, তাওফিক চাই মহান রবের নিকট:
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদেরকে পিতামাতার সঙ্গে সর্বোত্তম আচরণ করার তাওফিক দান করুন। তাদের সম্মান, মর্যাদা ও অধিকারগুলো অনুধাবন করে তা পরিপূর্ণ রূপে আদায় করার তাওফিক দান করুন। তাদের উভয়ের সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহ তাআ'লার সন্তুষ্টি অর্জনের কিসমত নসিব করুন।

ধৈর্য্যধারণ করে দীর্ঘ পোস্টটি পাঠ করায় কৃতজ্ঞতা। সকলের মঙ্গল হোক।

ছবি: অন্তর্জাল।

মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:২৪

করুণাধারা বলেছেন: পড়লাম কিছুটা, অনেক বড় পোস্ট। বাকিটা পরে পড়ব ইনশাল্লাহ।

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৩

নতুন নকিব বলেছেন:



অসংখ্য ধন্যবাদ অাপনাকে এই পোস্টে লাইকসহ প্রথম মন্তব্যটি রেখে যাওয়ায়। জ্বি, পোস্ট বড় হয়ে গেছে কিছুটা। কিন্তু তারপরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে চেষ্টা থাকার পরেও এরচে' আর কাটছাট করতে পারিনি।

বাকিটা পড়ে পুনরায় যদি আপনার মূল্যবান মতামত জানানোর সুযোগ ঘটে সেজন্য আগাম কৃতজ্ঞতা।

অনেক ভালো থাকুন, প্রার্থনা নিরন্তর।

২| ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:২৯

নজসু বলেছেন:

আস সালামু আলাইকুম।
সুন্দর পোষ্ট।
পাঠের আগ্রহ রইল।

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৭

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

পোস্টে লাইকসহ আপনার উপস্থিতিতে আন্তরিক অভিনন্দন। দীর্ঘ পোস্ট পাঠের আগ্রহ প্রকাশ করায় কৃতজ্ঞতা থাকলো।

আপনার জন্য এবং আপনার পরিবার পরিজন সকলের জন্য কল্যানের দুআ সবসময়।

৩| ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন:

পিতা মাতার অধিকার কতটুকু সবার জানা উচিৎ তদানুযায়ি আমল করা উচিৎ।
অনেক টুকু পড়লাম। সুন্দর তথ্য বহুল পোস্ট।

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:০৬

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, প্রিয় কবি ভাই, শুধুমাত্র পিতা মাতার অধিকার সম্মন্ধে জেনে, এই বিষয়টিতে সচেতন থাকা সম্ভব হলে সমাজে সংঘটিত অপরাধের একটি বড় অংশ থেমে যেতে পারে। কারণ, প্রতিটি অপরাধীই কোনো না কোনো মা বাবার সন্তান। অপরাধী যদি নিজের মা বাবাকে অন্যের বদদুআ এবং তিরষ্কারের হাত থেকে বাঁচাতে চায়, এমনকি নিজের মাতা পিতার ইহকালীন ও পারকালীন সুখ শান্তির কথা চিন্তা করে, তার পক্ষে কোনো অপরাধই হয়তো সংঘটন করা সম্ভব নয়।

এত বড় পোস্টের অনেকটুকু পড়েছেন জেনে আনন্দিত হলাম। আশা থাকলো, সময় পেলে বাকিটুকুও পড়ে নিবেন।

অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।

৪| ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:১০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: মাতৃস্তন পান করানো সময় কতটুকু ত্রিশ মাস কি গর্ভকালও স্তন্য দান কাল মিলে। নকি দুধপানের সময় ৩০ মাস? নাকি ২বছর।

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:২৯

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ আপনাকে, গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করেছেন। একটু বিস্তারিত আলোচনা করছি, যাতে অনেকেরই বুঝতে সুবিধা হয়-

মাতৃদুগ্ধ পান করানোর বিধান:
একটি শিশু আত্মপ্রকাশ করার সাথে সাথেই শাখা যেরূপ তার মূলের প্রতি মুখাপেক্ষী থাকে, শিশুও তার মায়ের প্রতি সেরকম মুখাপেক্ষী থাকে। সে মায়ের গর্ভে থাকাকালীন রক্তরূপে যে আহার্য গ্রহণ করতো জন্মের পরে পৃথিবীর আলো বাতাসের স্পর্শে এসেও তাকে অনুরূপ আহার্য গ্রহণ করতে হয়। তবে এ রক্ত আল্লাহ তাআ'লার বিশেষ কুদরতে তাঁর জ্ঞান ও ইচ্ছায় দুগ্ধে পরিণত হয় যা শিশুর শরীর গঠনে প্রয়োজনীয় সকল উপাদানে সমৃদ্ধ। আর এ দুগ্ধ প্রবাহিত হয়ে মায়ের স্তনে এসে উপনীত হয় এবং শিশু আল্লাহ তাআ'লার বিশেষ দিক নির্দেশে তার সন্ধানপ্রাপ্ত হয়ে চুষতে থাকে। আল-কুরআনে এমনসব নীতিমালার কথা উল্লেখ করা হয়েছে যা মাতৃদুগ্ধদানের বিষয়ে মানুষকে উৎসাহিত করে এবং মা ছাড়া অন্য মহিলার স্তন থেকে দুগ্ধপান করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ এরশাদ করেন:

﴿وَٱلۡوَٰلِدَٰتُ يُرۡضِعۡنَ أَوۡلَٰدَهُنَّ حَوۡلَيۡنِ كَامِلَيۡنِۖ لِمَنۡ أَرَادَ أَن يُتِمَّ ٱلرَّضَاعَةَۚ ﴾ [البقرة: 233]

‘‘যে জননী সন্তানদেরকে পুরো সময় পর্যন্ত দুগ্ধপান করতে ইচ্ছে রাখে, তাঁরা নিজেদের শিশুদের পুরো দু’বছর ধরে দুগ্ধ পান করাবে।’’ এ আয়াত দ্বারা স্তন্যদান সংক্রান্ত নিম্নোক্ত দিক-নির্দেশনা পাওয়া যায়:

এক. শিশুকে স্তন্যদান মাতার জন্য ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকলে মা যেন তাঁর সন্তানকে তার স্তন্যপান থেকে বঞ্চিত না করে, ক্রোধের বশর্বতী হয়ে বা অসন্তুষ্টির কারণে শিশুকে স্তন্যদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা বৈধ নয়। বিবাহ বন্ধনে থাকাকালীন স্ত্রী স্বামীর নিকট থেকে স্তন্যদানের জন্য কোন প্রকার বেতন বা বিনিময় গ্রহণ করতে পারবে না। তবে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বা স্তন্যদানে নিয়োগকৃত ধাত্রী বিনিময় গ্রহণ করতে পারবে।

দুই. উক্ত আয়াতে স্তন্যদানের সময়সীমা দু’বছরের কথা বলা হয়েছে। ইমাম শাফয়ী রহ. এবং সাহেবাইন রহ. স্তন্যদানের সময়সীমা দু’বছর বলে মত প্রকাশ করেছেন। তবে ইমাম আবু হানিফা রহ. ও ইমাম যুফার রহ. এর মতে, স্তন্যদানের সময়সীমা আড়াই বছর বা ত্রিশ মাস বলা হয়েছে। তারা তাদের মতের পক্ষে আল্লাহ তা’আলার নিম্নোক্ত বানীকে দলীল হিসেবে পেশ করেছেন:

﴿وَفِصَٰلُهُۥ ثَلَٰثُونَ شَهۡرًاۚ﴾ [الأحقاف:15]

‘‘তার গর্ভ ও দুধপান করানোর সময়কাল ত্রিশ মাস।’’

অন্যত্র এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে:

﴿وَوَصَّيۡنَا ٱلۡإِنسَٰنَ بِوَٰلِدَيۡهِ حَمَلَتۡهُ أُمُّهُۥ وَهۡنًا عَلَىٰ وَهۡنٖ وَفِصَٰلُهُۥ فِي عَامَيۡنِ﴾ [لقمان: 14]

‘‘আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার ব্যাপারে নসিহত করছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে তাকে নিজের পেটে ধারণ করেছে। আর তাকে দুধ ছাড়াতে দুই বছর লেগেছে।’’

তিন: কুরআনের নির্ধারিত সময়সীমা তথা দু'বছর পূর্ণ হওয়ার আগেও কেউ চাইলে দুধ ছাড়িয়ে নিতে পারবে, তবে এ শর্ত থাকবে যে, এতে স্বামী-স্ত্রী পারস্পারিক আলোচনার পর, দুধ ছাড়িয়ে নিলে দুগ্ধপায়ী শিশুর কোন ক্ষতি হবে না এ ব্যাপারে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। এ সম্পর্কে কুরআনের বিধান হচ্ছে:

﴿فَإِنۡ أَرَادَا فِصَالًا عَن تَرَاضٖ مِّنۡهُمَا وَتَشَاوُرٖ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡهِمَاۗ وَإِنۡ أَرَدتُّمۡ أَن تَسۡتَرۡضِعُوٓاْ أَوۡلَٰدَكُمۡ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ﴾ [البقرة:233]

‘‘যদি স্বামী-স্ত্রী উভয়েই পারস্পারিক পরামর্শ ও আলোচনার ভিত্তিতে দুধ ছাড়িয়ে নিতে চায়, তাহলে সেক্ষেত্রে তাদের কারো কোন গুণাহ হবে না।’’

শুভকামনা আবারও।

৫| ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন।

মা আল্লাহর সবচেয়ে বড় উপহার সন্তানের জন্য।

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:৩১

নতুন নকিব বলেছেন:



ঠিক বলেছেন। সুন্দর বলেছেন- মা আল্লাহর সবচেয়ে বড় উপহার সন্তানের জন্য।

মন্তব্য রেখে যাওয়ায় অসংখ্য ধন্যবাদ। কৃতজ্ঞতা সবসময়।

৬| ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:৩২

তারেক ফাহিম বলেছেন: তথ্যবহুল পোষ্ট।


অধিকাংশই পড়েছি।

১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৬

নতুন নকিব বলেছেন:



পোস্টে আপনার আগমনে কৃতজ্ঞতা, প্রিয় ভাই।

হজের মওসুম। মনটা পরে আছে বাইতুল্লাহর ছায়ায় মায়ায়। কবুতর চত্বর, হিজরাহ রোড, ইবরাহিম খলিল রোড আর মিসফালাহর পথে প্রান্তরে। বাইতুল্লাহর শীতল পরশ নিতে আবারও ছুটে যেতে চায় অন্তর। মদিনাতুল মুনাওয়ারাহর পথপানে গড়াগড়ি খেয়ে শুদ্ধ বিশুদ্ধ পরিশুদ্ধ হতে চায় পাপে পোড়া দগ্ধ তনুমন। কত হাজারো লক্ষ হাজী সাহেবান লাব্বাইক ধ্বনিতে প্রিয় এই দুই শহরে এখন নূরানী সফরের বিমুগ্ধ কাফেলার যাত্রী হয়েছেন। ছুটে চলেছেন দিনরাত! তাদের সাথে যদি ছুটে যেতে পারতাম আমিও! আবার কবে যাব, যেতে পারবো, একমাত্র আল্লাহ পাকই জ্ঞাত। তাঁর কুদরত বুঝার সাধ্য কারও নেই। তাঁরই কাছে তাওফিক প্রার্থনা করছি।

অধিকাংশই পড়েছেন জেনে আনন্দিত। আশা, বাকিটুকুও পাঠ করবেন সময় সুযোগমত।

শুভকামনা সবসময়।

৭| ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:০০

নতুন বলেছেন: মা কি জিনিস সেটা বেশির ভাগ মানুষই টের পায় মা মারা যাবার পরে।

মা একটা বট গাছের শিকড়ের মতন, দেখা যায় না কিন্তু একজন মানুষ পৃথিবিতে আশা থেকে বড় হবারপেছেন পুরো অবদান মা এর।

২৪ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৮

নতুন নকিব বলেছেন:



ঠিকই বলেছেন, মায়ের জীবদ্দশায় অনেকের পক্ষেই মায়ের মর্যাদা বুঝার সুযোগ হয়ে ওঠে না। মা তো নিজেকে তিলে তিলে নি:শেষ করেই সন্তানকে বড় করে তোলেন। আহ! মায়ের অবদান! জগতে এর কোনো তুলনা নেই! এটা তুলনাহীন! উপমাহীন!

শুভকামনা সবসময়।

৮| ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:০৭

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ঠিক আছে। আমিও দু্বছর জানতাম। কনফার্ম হওয়া গেল। সালমান আবার গরুর দুধ খায় । দুধ খেতে পছন্দ করে খুব। :)

২৪ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:০০

নতুন নকিব বলেছেন:



সালমানের জন্য অনেক অনেক আদর। দুধে ভাতে বেড়ে উঠুক ছোট্ট সোনামনি।

৯| ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:২৭

তারেক ফাহিম বলেছেন: প্রতিত্ত্যরে এত আবেগঘন আকুতি খোদা তায়ালা যেন কবুল করে।

গতবারের আপনার হজ্জ্ব সিরিজটা আমার অনেক ভালো লাগছে।

২৪ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:০২

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনি তো প্রিয় স্থানগুলো ঘুরে আসা এক অনন্য ভাগ্যবান ব্যক্তি। আপনাকে দেখলে পেছনের স্মৃতিগুলো ছবি হয়ে ভেসে ওঠে।

হজ সিরিজ আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকবেন। শুভকামনা নিরন্তর।

১০| ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৩৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: নতুন নকিব,




সময়পোযোগী শিক্ষনীয় পোস্ট যদি এমন শিক্ষাকে আমরা ধারন করার মানসিকতা রাখি।

২৪ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৪:০৫

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার আগমন এবং আন্তরিক মন্তব্যে আপ্লুত! মা বাবার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব আমাদের যেন বুঝে আসে এবং সেভাবে আমরা যেন দায়িত্ব পালনে সক্ষম হই আল্লাহ পাক সেই তাওফিক আমাদের দান করুন।

শুভকামনা সবসময়।

১১| ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৫৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: পড়লাম। অত্যন্ত সময়োপযোগী একটা পোষ্ট দিয়েছেন, নকীব ভাই।
আপনার কাছে আমার দু'টা প্রশ্ন;

১) আরবী পড়ে বুঝতে পারবে, এমন ব্লগার খুব বেশী নাই। আপনি তো বাংলা তর্জমা দিচ্ছেনই, তাহলে আরবী দেয়ার বিশেষ কোন কারন কি আছে? নাকি শুধুই অর্নামেন্টাল কারন?

২) নিজের মাকে অসন্মান করলে কি হয়, এটা আমরা সবাই কম-বেশী জানি। কিন্তু, অন্যের মাকে অসন্মান করলে কি হয়, সে ব্যাপারে ইসলাম কি বিশেষ করে কিছু বলেছে? বললে সেটা কি.....যদি কষ্ট করে একটু জানাতেন!

আমি জানি কষ্টটা আপনি করবেন। সেজন্যে অগ্রীম ধন্যবাদ। :)

২৯ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ৮:৫৮

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় ভাই,
আপনার পোস্ট এবং অধিকাংশ কমেন্টে বুদ্ধিমত্তার বিশেষ ছাপ থাকে। এগুলোতে বরাবরই মুগ্ধ না হয়ে পারি না। এই পোস্টটি আপনি পাঠ করেছেন জেনে আনন্দিতবোধ করছি।

প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে-

১) লেখার সাথে আরবি ইবারত যুক্ত করার কারণ:

ক. মূলত: এই লেখাগুলো আপাতত: ব্লগে প্রকাশ করলেও পরবর্তী সময়ে অন্য কোনো ছাপানো মাধ্যমে প্রকাশের ইচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ, বাংলাদেশের সবচে' পুরনো এবং নির্ভরযোগ্য একটি মাসিক ম্যাগাজিনে বিগত কয়েকটি সংখ্যায় আমার কয়েকটি লেখা ছাপানো হয়েছে। সামনের দিনগুলোতেও ইনশাআল্লাহ এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। আর ব্লগে আরবি জানা লোক মা-শাআল্লাহ একেবারে কম, এরকমটি মনে হয়নি আমার।

খ. আল্লাহ পাক তাওফিক দিলে এবং সময় সুযোগ পেলে বিক্ষিপ্ত লেখাগুলো গুছিয়ে বই আকারে ছাপানোর ইচ্ছে রয়েছে।

গ. আরবি ইবারত যুক্ত করার আরেকটি কারণ, এর ভেতরে অন্যরকম একটি বরকতের বিষয় লুকায়িত থাকে যা অনুবাদে থাকে না। কোনো একটি লেখার সাথে মূল আরবিটা যুক্ত থাকলে পড়ে তৃপ্তি পাওয়া যায়। না থাকলে অসম্পূর্ণ অসম্পূর্ণ লাগে।

ঘ. অর্ণামেন্টাল ব্যাপার যেটা আপনি বলেছেন, সেটাও একটি কারণ বটে।

ঙ. আমি অবাক হই, বাংলা যে কোনো ধরণের এক পৃষ্ঠা লেখা মুখস্ত করতে আমার যতটুকু সময় লাগে, আরবি বিশেষ করে পবিত্র কুরআনের কোনো একটি পৃষ্ঠা মুখস্ত করতে তার দশ ভাগের এক ভাগ সময় প্রয়োজন হয় না। তাই মূল আরবিগুলো যতটা সম্ভব যুক্ত করে দিলে এখান থেকেও কারও কারও মুখস্ত করার সুযোগটা থেকে গেল।

চ. সর্বোপরি, অন্য কারও কাছে কেমন লাগে জানি না, আমার কাছে মূল আরবি ছাড়া শুধু অনুবাদ পড়া কেমন যেন 'ঝুনা নারিকেলের ছোলা চিবানো'র মত রসকসহীন বিষয় ঠেকে।

ছ. অনুবাদের ক্ষেত্রেও একেকজন একেক ধরণের অনুবাদ করে থাকেন। আরবি ব্যতিত শুধু অনুবাদ পড়ে তৃপ্তি না পাওয়ার এটাও একটি কারণ। এক্ষেত্রে আরবি ইবারত সাথে থাকলে, কেউ যদি তার মনগড়া অনুবাদ করে থাকেন সেটা ধরা সহজ হতে পারে।

২) অন্যের মাকে অসম্মান করার বিষয়ে ইসলামের বিধান:

নিজের মাকে সম্মান করা যেমন জরুরি, অন্যের মাকেও যথাযথ সম্মানের চোখে দেখার নির্দেশ দেয় ইসলাম। শুধু মা বলে কথা নয়, ইসলামে ছোট বড় কাউকেই অসম্মান করার অনুমতি নেই। আপনার উত্থাপিত গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন একটি পোস্ট দেয়ার ইচ্ছে রয়েছে ইনশাআল্লাহ।

দেরিতে উত্তরে আসায় ক্ষমাপ্রার্থী। অনেক ভালো থাকুন। অনেক শুভকামনা আপনার পরিবার পরিজন সকলের জন্য।

১২| ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:২৬

মেঘ প্রিয় বালক বলেছেন: আল্লাহ আমাদের সকলকে পিতা-মাতার খেদমত করার তৌফিক দাও। আমিন।

১৩| ১৬ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:০২

করুণাধারা বলেছেন: পুরোটা পড়লাম। সুলিখিত। কোরআন শরীফে মা-বাবার মর্যাদা সংক্রান্ত আয়াতগুলি জানা ছিল, কিন্তু পরে অনেক কিছু লিখেছেন, যা জানা ছিল না। ভালো লাগলো পড়ে।

সাধারণ প্রচলিত একটা বাক্য আমার খুব পছন্দ, "মহিলাদের সম্মান করো, কারণ তারা মায়ের জাত।"

১৪| ১৭ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৯:১১

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন:
ঠিক বলেছেন। সুন্দর বলেছেন- মা আল্লাহর সবচেয়ে বড় উপহার সন্তানের জন্য।
মন্তব্য রেখে যাওয়ায় অসংখ্য ধন্যবাদ। কৃতজ্ঞতা সবসময়

ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।

১৫| ১৭ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:৪৮

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: বাবা-মার অবদান বলে শেষ করার মতো নয়। পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার, সেবা প্রতিটি সন্তানের অবশ্য কর্তব্য।

১৬| ১৭ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৭

ঢাবিয়ান বলেছেন: আজকের জমানায় সন্তানেরা শুধু নেয়, বিনিময়ে কিছু দেয় না। পিতামাতারা কিছু না পেয়েও সন্তানের মঙ্গল কামনা করে যায় আজীবন। এইসব কারনেই মনে হয় উন্নত দেশে সন্তান নেবার আগ্রহ দিনে দিনে কমে যাচ্ছে মানুষের মাঝে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.