নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
সন্তান জন্মের পরে পিতা-মাতা এবং অভিভাবকদের করণীয় কিছু সুন্নত আমল:
বিশ্বজুড়ে প্রতিদিনই মুসলমানদের ঘরে ঘরে আগমন ঘটছে নতুন মেহমান নতুন সন্তানের। পৃথিবীর আলো দেখার শুভ সূচনাকালটা এই নতুন অতিথির জন্য অনেক গুরুত্ববহ। জন্মের পরে নতুন এই মেহমানের জন্য করণীয় কিছু মাসনূন আমল রয়েছে, যা পিতামাতা কিংবা তাদের অবর্তমানে উপযুক্ত অভিভাবকদের পালন করা উচিত। কিন্তু আমাদের সমাজে ক'জন ব্যক্তিকে পাওয়া যাবে যারা সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের পার্থিব জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ এই সূচনা লগ্নটিতে ইসলামি আদর্শের সঠিক অনুশীলনের লক্ষ্যে সুন্নত আমলগুলোর চর্চা করেন? এক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাতলানো সুন্নতগুলো পালন করা আমাদের দায়িত্ব হলেও পরিতাপের বিষয়, আমরা অনেকেই তা করি না। এর কারণ, সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে আমাদের অজ্ঞতা এবং উদাসীনতা। আসুন, এই বিষয়ক কিছু সুন্নত আমল সম্পর্কে জেনে নিই-
এক. নবজাতকের কানে আযান দেয়া:
হযরত আবু রাফে রা. তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, “আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আলীর পুত্র হাসানের কানে নামাযের আযানের মত আযান দিতে দেখেছি, যখন ফাতেমা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা তাকে জন্ম দেন।” হাদীসটিকে আবু দাউদ এবং তিরমিযী বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী সহীহ বলেছেন। (তিরমিযী, হাদীস নং- ১৫৫৩)
সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই আযান দিতে হবে। যেন তার কানে আল্লাহর মহত্বের প্রথম আওয়াজ প্রবেশ করে এবং শয়তান দূরে চলে যায়।
দুই. তাহনীক করা:
খেজুর চিবিয়ে পানির মত করে শিশুর মুখে দেয়া যেন এর কিছুটা তার পেটে প্রবেশ করে। এটাকেই তাহনীক বলা হয়। তবে খেজুর না পাওয়া গেলে অন্য যে কোন মিষ্টি দ্রব্য যেমন মধু বা অন্য কিছু দ্বারাও এভাবে তাহনীক করা যায়। তাহনীক করা সুন্নত এবং তা নেককার ব্যক্তি কর্তৃক হওয়া বাঞ্ছনীয়।
আবু মুসা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- “আমার ছেলে সন্তান হলে আমি তাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট নিয়ে আসি, তিনি তার নাম রাখেন ইব্রাহীম এবং খেজুর দ্বারা তাহনীক করেন এবং তার জন্য বরকতের করেন, তার পর সন্তানকেকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেন।” (বুখারী-হাদীস নং৫৪৬৭, মুসলিম- হাদিস নং ২১৪৫)
তিন. প্রথম দিনে নবজাতকের নাম নির্ধারণ:
বাচ্চার নাম যেমন জন্মের সপ্তম দিন অর্থাৎ আক্বীক্বার দিন নির্ধারণ করা সুন্নত তেমন প্রথম দিনেও নাম রাখা বৈধ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “রাতে আমার পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করে, আমি আমার পিতার নামে তার নাম ইব্রাহীম রেখেছি”। (বুখারী- হাদীস নং ১৩০৩, মুসলিম- হাদীস নং ২৩১৫)
চার. সপ্তম দিনে আকীকা করা:
আকীকা করা সুন্নতে মুআক্কাদাহ। তাই যে ব্যক্তি আকীকা করার সামর্থ্য রাখে, সে যেন অবশ্যই আকীকা করে। আর যার সামর্থ্য নেই তার উপর আকীকা জরুরী নয়।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “নবজাতকের আকীকা আছে। তাই তোমরা তার পক্ষ হতে কুরবানী করো এবং তার মাথার চুল পরিষ্কার কর। (বুখারী, আকীকা, নং৫৪৭১)
তিনি আরও বলেন: “প্রত্যেক বাচ্চা তার আকীকার বিনিময়ে বন্ধক থাকে, সপ্তম দিনে তার পক্ষ হতে জবাই করা হবে এবং তার মাথা মুণ্ডন করা হবে এবং নাম রাখা হবে”। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং৩১৬৫, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ)
পাঁচ. নবজাতকের মাথা মুণ্ডন এবং চুলের ওজন বরাবর রৌপ্য দান করা:
জন্মগ্রহণের সপ্তম দিনে যেমন আকীকা করা সুন্নত, তেমনি সেদিন নবজাতকের মা কর্তৃক সন্তানের চুলগুলো মুণ্ডন করা ও চুলের ওজন বরাবর রৌপ্য সদকা করাও সুন্নত। আলী রা. বলেন, “আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাসানের পক্ষ হতে ছাগল আকীকা করেন এবং ফাতেমা রাযি. কে বলেন- তার মাথা মুণ্ডন করো এবং চুলের ওজন বরাবর রৌপ্য সদকা করো”। (তিরমিযী, অধ্যায়, আযাহী, হাদীস নং ১৫১৯)
ছয়. খতনা করা:
খতনা করা প্রকৃতিগত বিষয়, যা ইসলাম সমর্থন করেছে এবং তা গুরুত্বের সাথে পালন করেছে। তাই ফুকাহাদের মধ্যে ইমাম শাফেয়ী, মালিক ও আহমদ রহ. এই আমলকে ওয়াজিব বলেছেন।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “পাঁচটি বিষয় স্বভাবগত, খতনা করা, নাভির নিচের চুল পরিষ্কার করা, মোচ কর্তন করা, নখ কর্তন করা এবং বগলের লোম ছিঁড়ে ফেলা”। (বুখারী, হাদিস নং ৫৮৯১, মুসলিম, অধ্যায়, ত্বাহারাহ )
খতনা করার নির্দিষ্ট কোন সময় সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়, তবে উলামায়ে কেরামের মতে সাবালক হওয়ার পূর্বে তা করে নেয়া উচিত।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সুন্নত মোতাবেক আমাদের জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন।
ছবি: অন্তর্জাল।
২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:৩৫
মাহের ইসলাম বলেছেন: জাযাকাল্লাহ খাইরান।
ঈদ মোবারক।
৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:৩৮
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: শুধু সুন্নত বলে কথা নয় এগুলো সকল মাতাপিতার মেনে চলা উচিত। এমনকি ভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা শুধু আযান দেওয়া বাদে বাকী সকল কাজ করতে পারেন। তাতে ভালোই হবে, মন্দ কিছু নেই এখানে।
৪| ১০ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১২:০৯
সুপারডুপার বলেছেন: নবজাতকের নাম জন্মের আগেই ঠিক করা উচিত; কারণ জন্মের পর পরই কি নামে ডকুমেন্ট হবে। আর জন্ম তারিখ ঠিক রাখা উচিত। বিদেশ থেকে ভারতীয়-বাংলাদেশিদের ,ইসলামিক দেশ গুলোর অনেকের ২ টা জন্ম তারিখ শুনে অবাক হয়। তারা বলে, একটা মানুষ কিভাবে নিজের জন্ম তারিখ নিজে ঠিক করতে পারে????
৫| ১০ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ২:৪১
ওমেরা বলেছেন: ভালো পোষ্ট । আমাদের পরিবারে সবই করতে দেখেছি তবে চুলের পরিমানে রৌপ্য দিতে দেখি নাই ।
৬| ১০ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১২:১০
নতুন বলেছেন: দুই. তাহনীক করা:
নবজাতকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাই তাকে মুরুব্বির মুখে চাবানো কিছু দেওয়া ঠিক হবেনা।
রাসুল সা: ১ বার দিয়েছিলেন বলে এখন যদি আমরা দুনিয়াতে লক্ষ নবজাতকের মুখে সবাই চিবিয়ে খাবার দেওয়া শুরু করি সেটা থেকে অবশ্যই কিছু না কিছু নবজাতক বিভিন্ন ইনফেক্সনে আক্রান্ত হতে পারে।
১১ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:০৩
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার সচেতনতার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিতেই হয়।
পাইকারিভাবে যাকে তাকে দিয়ে এই কাজ করানো হলে তেমনটা হওয়ার যথেষ্ট অবকাশ ঠিকই থেকে যায়। এটির উদ্দেশ্যটা বুঝা প্রয়োজন। নিছক নবজাতকের জীবনে বরকতের জন্যই কাজটি করেছিলেন আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাই যাকে তাকে দিয়ে এটা করানো ঠিক নয়। সম্ভব হলে শিশুকে প্রথম দুধ পান করানোর আগে কোন বুযুর্গ ব্যক্তির কাছে নিয়ে সামান্য খেজুর চিবিয়ে শিশুর মুখে দিবে। এটাকেই তাহনীক বলে। এটা ফরজ কিংবা ওয়াজিব কোনো বিষয় নয়। শুধুই মুস্তাহাব একটি আমল। সুতরাং শিশুর রোগাক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে এটি না করাই উত্তম।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: এই সব আজকাল কেউ মানে না।