নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

সন্তানের আকিকার গোশত বাবা মা খেতে পারবেন? সাত ভাগের কম হলে কুরবানি সহীহ হয় না - কথাটা কতটুকু সঠিক? এবং কুরবানির পশুর গোশত তিন ভাগে বন্টন প্রসঙ্গে

৩১ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:৩৮



সন্তানের আকিকার গোশত বাবা মা খেতে পারবেন? সাত ভাগের কম হলে কুরবানি সহীহ হয় না - কথাটা কতটুকু সঠিক? এবং কুরবানির পশুর গোশত তিন ভাগে বন্টন প্রসঙ্গে

ভাগে কুরবানির ক্ষেত্রে সাত ভাগের কম হলে কুরবানি সহীহ হয় না - কথাটা কতটুকু সঠিক?

গরু কিংবা মহিষ জাতীয় পশু কুরবানির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাত ভাগ এবং এর নিম্নে যে কোনো পরিমান অংশীদার মিলে কুরবানি বা আকীকা ইত্যাদি করা জায়েয। তবে শর্ত হচ্ছে, কারো ভাগে এক সপ্তমাংশের কম যেন না হয়। কারো ভাগের পরিমান এক সপ্তমাংশের কম হলে কোনো অংশীদারের কুরবানিই সহীহ হবে না। আর এ ধরনের পশুতে মৃত ব্যক্তির জন্যও ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে অংশ নেওয়া যাবে এবং এই অংশ সদকা করা জরুরি নয়। বরং এর হুকুম নিজের সাধারণ কুরবানির মতই। তা থেকে নিজেরাও খেতে পারবে এবং সদকাও করতে পারবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৩৭৪,৮৭৪; রদ্দুল মুহতার ৬/২৬৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৫৩১, ৩১৬, ৩৩৫

সন্তানের জন্য দেয়া আকিকার পশুর গোশত বাবা মা খেতে পারবেন?

আকীকা করা মুস্তাহাব। পুত্রসন্তানের জন্য দুটি ছাগল আর কন্যার জন্য একটি ছাগল। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম ছেলের পক্ষ থেকে দু'টি ছাগল আর মেয়ের পক্ষ থেকে একটি ছাগল দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫১৩

আর কুরবানির পশুতে আকীকার নিয়তে শরিক হওয়াও জায়েয। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন আকীকা ও কুরবানির কোনো অংশ পশুর এক সপ্তমাংশের কম না হয়।

আকীকার গোশত সন্তানের মা-বাবা ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন এবং ধনী-গরীব সকলেই খেতে পারবে। আকীকার গোশতের বণ্টন ও ব্যবহার কুরবানির মতোই। কিছু গোশত নিজেদের জন্য রাখা, কিছু আত্মীয়-স্বজনকে দেওয়া এবং কিছু গোশত গরীবদেরকে সদকা করা উত্তম। -আততালীকুল মুমাজজাদ ২৮৯, ২৯০; ইলাউস সুনান ১৭/১১৮; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/৩৯৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৪; আলমুসতাদরাক লিল হাকিম, হাদীস : ৭৬৬৯

কুরবানির পশুর গোশত নিজের, আত্মীয়স্বজনের এবং গরিব মিসকিনদের জন্য তিন ভাগে ভাগ করে বন্টন করা না হলে কি কুরবানি সহি হবে?

কুরবানির গোশত তিন ভাগ করে একভাগ নিজের জন্য রাখা, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনকে আর এক ভাগ ফকীর মিসকীনকে দেওয়া মুস্তাহাব। তবে এভাবে তিন ভাগে বণ্টন করা জরুরি নয়। কেউ পুরো গোশত নিজের জন্য রেখে দিলেও তার কুরবানি আদায় হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে নিজে না রেখে সব গোশত দান করে দিলে তাতেও কুরবানি আদায়ে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে না।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কুরবানীর গোশতের তিন ভাগের এক ভাগ পরিবার-পরিজনকে দিতেন। আরেক ভাগ গরিব প্রতিবেশীদের দিতেন এবং এক ভাগ ভিক্ষুক ও অসহায়দের দান করতেন। -আল মুগনী ১৩/৩৭৯

উল্লেখ্য, এ বণ্টন উত্তম জরুরি বা আবশ্যক নয়। তেমনি একেবারে ওজন করে তিন ভাগ করাও আবশ্যক নয়। বরং কুরবানিদাতার জন্য এতে তারতম্য করার অবকাশ অবশ্যই রয়েছে। তবে এটি যেহেতু একটি মুস্তাহাব এবং উত্তম আমল তাই সামর্থ্যবানদের এর উপর আমল করা উচিত। কিন্তু কারো পরিবারের সদস্য সংখ্যায় বেশি হলে কিংবা নিজেদের বেশি গোশতের প্রয়োজন থাকলে সেক্ষেত্রে তারা নিজেদের প্রয়োজন পরিমাণ গোশত রাখতে পারবে, এটা তাদের জন্য অনুত্তম হবে না। -ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৩৭; বযলুল মাজহূদ ১৩/৪৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৮৬; ইলাউস সুনান ১৭/২৬২

এ বিষয়ে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে: হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কুরবানির গোশত বণ্টন সম্পর্কে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানির গোশত তিন ভাগ করে একভাগ নিজ পরিবারের জন্য রাখতেন, এক ভাগ গরীব প্রতিবেশীকে দিতেন আর এক ভাগ অন্যান্য গরীব-মিসকীনকে দান করতেন। -আল ওযায়েফ, আবু মুসা আলআসবাহানী, মুগনী ইবনে কুদামা ১৩/৩৭৯-৩৮০

আরেক হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা কুরবানির গোশত যে পরিমাণ ইচ্ছা খাও, অন্যদেরকে খাওয়াও এবং যতটুকু ইচ্ছা জমা করে রাখ। -সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ১৫১০

শেষোক্ত হাদিসের দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, কুরবানির গোশত বণ্টনের বিষয়টি কুরবানিদাতার ইচ্ছাধীন। অন্যকে না দিলেও গুনাহ হবে না। আর প্রথম হাদীসে কুরবানির গোশত বণ্টনের উত্তম পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। তাই উভয় হাদীসের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। -সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৯৭২; মুয়াত্তা, ইমাম মুহাম্মাদ পৃ. ২৮১-২৮২; হিদায়া ৪/৪৫০; উমদাতুল কারী ১০/৫৭-৫৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৭-৩২৮

وَالْأَفْضَلُ أَنْ يَتَصَدَّقَ بِالثُّلُثِ وَيَتَّخِذَ الثُّلُثَ ضِيَافَةً لِأَقْرِبَائِهِ وَأَصْدِقَائِهِ وَيَدَّخِرَ الثُّلُثَ؛ وَيُسْتَحَبُّ أَنْ يَأْكُلَ مِنْهَا، وَلَوْ حَبَسَ الْكُلَّ لِنَفْسِهِ جَازَ لِأَنَّ الْقُرْبَةَ فِي الْإِرَاقَةِ وَالتَّصَدُّقِ بِاللَّحْمِ تَطَوُّعٌ (رد المحتار، كتاب الاضحية-9/474، زكريا، بدائع الصنائع-4/224، زكريا، الفتاوى السراجية-389

ছবি: অন্তর্জাল।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:০৭

ইসিয়াক বলেছেন: অনেক দরকারী পোষ্ট।
ধন্যবাদ

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২৩

নতুন নকিব বলেছেন:



অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে প্রথম মন্তব্যটিতে প্রেরণা দিয়ে যাওয়ায়।

শুভকামনা সবসময়।

২| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৭

নীল আকাশ বলেছেন: অনেক দরকারী একটা পোস্ট দিয়েছেন। কয়েকদিন আগেই আকীকা কুরবানীর সাথে দেয়া যাবে নাকি নিয়ে আমার সাথে কয়েকজনের মতবিরোধ হয়েছিল। সুত্র ছিল না দেখে এদের কিছু বলতে পারি নি। কুরবানীর মাংশ সোজা ৩ ভাগ করা নিতেও অনেকের মাঝে বিভ্রান্তি আছে।

এত দারুন পোস্ট, সোজা প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম। যখন ইচ্ছে বের করে নেয়া যাবে।
ধন্যবাদ এবং ছালাম দিয়ে গেলাম প্রিয় ভাই।
আল্লাহ আপনাকে এর জন্য উত্তম পুরষ্কার দান করুন, আমীন।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:২৯

নতুন নকিব বলেছেন:



এখন উল্টাপাল্টা মাসআলা দেয়ার লোক অনেক। অনলাইনে এদের সংখ্যা আরও বেশি। মানুষকে যে কতভাবে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষ মাসআলা মাসায়েলের বিষয়ে রীতিমত দ্বিধান্বিত। প্রায় প্রতিটি প্রমানিত ও প্রতিষ্ঠিত আমলের বিষয়েও মতবিরোধ উসকে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সমাজে বিভেদ বিভ্রান্তি ছড়ানো একশ্রেণির মানুষের নেশায় পরিনত হয়েছে। ব্যক্তি, দল এবং নিজের খাহেশাত পূরণের উদ্দেশ্যে দ্বীনের বিভিন্ন বিষয়ে মনগড়া ব্যাখ্যা দেয়ার অপচেষ্টা অহরহ দেখা যায়। এই কারণেই মূলত: এসব বিষয়ে লেখা।

আপনার আন্তরিক মন্তব্যে আনন্দিত। লাইকসহ পোস্ট প্রিয়তে নেয়ায় কৃতজ্ঞতা। আল্লাহ পাক আপনাকেও উত্তম পুরষ্কারে ভূষিত করুন। শুভকামনা সবসময়।

৩| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:২০

রাজীব নুর বলেছেন: ইউটিউবে কি আপনার কোনো চ্যানেল আছে?

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৩০

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি না, নেই। ইউটিউবে চ্যানেল খুললে সুবিধা কি?

৪| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:২৪

ঢাকার লোক বলেছেন: একই পশুতে কোরবানির সাথে আকিকা করা যদিও কোন কোন আলেম জায়েজ বলেছেন, তা রসুলুল্লাহ (স) এর সুন্নতের পরিপন্হি। কাজেই আকিকা ছাগল বা ভেড়া দিয়ে, মেয়ে হলে একটা, ছেলের বেলায় দুইটা, দেয়াই উত্তম। দেখুন,
https://youtu.be/caToIw-RgcM

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:০৩

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ, সুন্দর মন্তব্য রেখে যাওয়ায়।

সবচেয়ে উত্তম কুরবানি ও আকীকা আলাদাভাবে করা। তবে একত্রে করলে আদায় হবে না, বিষয়টি এমন নয়। একত্রে একই পশুতে করলেও কুরবানি এবং আকীকা দুটোই আদায় হবে। কারণ আকীকাও এক ধরনের কুরবানি। হাদীস শরীফে আকীকার উপরও ‘নুসুক’ শব্দের প্রয়োগ হয়েছে। আর এখানে ‘নুসুক’ অর্থ কুরবানি। হাদীসের আরবী ইবারতটা দেখেে নিই একটু-

سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم عن العقيقة، فقال : لا أحب العقوق كأنه كره الاسم، قالوا يا رسول الله! نسألك عن أحدنا يولد له، فقال : من أحب منكم أن ينسك عن ولده فليفعل، على الغلام شاتان مكافأتان، وعلى الجارية شاة.

(দ্র. আলমুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক : ৭৯৬১; আলমুসনাদ আহমদ : ৬৭১৩, ৬৭২২; আসসুনান আবু দাউদ (আকীকা অধ্যায়)২৮৪২; আস-সুনান নাসায়ী : ৭/১৬২, ১৬৩; আলমুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১২/৩২৪ হাদীস : ২৪৭২৭; আলমুসতাদরাক হাকিম, ৫/৩৩৭, হাদীস : ৭৬৬৬)

سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم عن العقيقة، فقال : لا يحب الله العقوق، من ولد له منكم ولد فأحب أن ينسك عنه فليفعل.

(দ্র. আলমুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১২/৩২১, হাদীস : ২৪৭২২; আলমুয়াত্তা ইমাম মালিক, আকীকা অধ্যায়, হাদীস : ৬৫৮)

আকীকাও যখন এক প্রকারের কুরবানি তখন একটি গরু বা উট দ্বারা একাধিক ব্যক্তির (সাত জন পর্যন্ত) আলাদা-আলাদা কুরবানি আদায় হওয়ার হাদীসগুলো থেকে কুরবানি এবং আকীকা একত্রে আদায়ের অবকাশও প্রমাণিত হয়। এটা শরীয়তের পক্ষ হতে প্রশস্ততা যে, গরু বা উটের ক্ষেত্রে একটি ‘জবাই’ সাত জনের সাতটি জবাইয়ের স্থালাভিষিক্ত হিসেবে গণ্য হয়। একারণে একটি উট বা গরু সাতজনের পক্ষে যথেষ্ট হয়ে যায়।

সহীহ মুসলিমে সাহাবী জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, ‘আমরা হজ্বের ইহরাম বেঁধে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বের হলাম। তিনি আমাদেরকে আদেশ করলেন যেন প্রত্যেক উট ও গরুতে সাতজন করে শরীক হয়ে কুরবানি করি।’ -সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্ব, হাদীস : ১৩১৮/৩৫১

خرجنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم مهلين بالحج، فأمرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم أن نشترك في الإبل والبقر، كل سبعة منا في بدنة.

অন্য বর্ণনায় আছে, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘(একটি) গরু সাতজনের পক্ষ হতে এবং (একটি) উট সাত জনের পক্ষ হতে (কুরবানি করা যাবে)।’

البقرة عن سبعة والجزور عن سبعة.

-আস-সুনান আবু দাউদ, হাদীস : ২৮০১, কিতাবুল আযাহী

মূলকথা হচ্ছে, ‘নুসুক’ বা কুরবানির ক্ষেত্রে শরীয়তের প্রতিষ্ঠিত মূলনীতি এই যে, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার ক্ষেত্রে একটি ‘জবাই’ (إراقة الدم) দ্বারা একটি কুরবানি আদায় হলেও উট এবং গরুর ক্ষেত্রে একটি ‘জবাই’ দ্বারা সাতটি কুরবানি আদায় হতে পারে। অর্থাৎ এখানে ‘জবাইয়ে শরীক হওয়া’ সত্বেও তা (সর্বোচ্চ সাত জনের) কুরবানি আদায়ের পক্ষে যথেষ্ট। আকীকাও যেহেতু হাদিসের পরিভাষায় ‘নুসুক’ বা কুরবানি তাই একই মূলনীতিতে আকীকাও শামিল থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং ‘একটি পশু জবাই’ করা দ্বারা যেমন তা আদায় হবে, তেমনি নির্ধারিত নিয়মে ‘জবাইয়ে শরীক হওয়ার’ (شركة في دم) দ্বারাও তা আদায় হবে।

সুতরাং এ প্রশ্নের অবকাশ নেই যে, ‘আকীকায় তো পশু জবাই করতে বলা হয়েছে। অতএব অন্তত: একটি পশু জবাইয়ের দ্বারাই তা আদায় হতে পারে।’ কারণ শরীয়তের দৃষ্টিতে পশু জবাই (إراقة الدم) -এর দায়িত্ব যেমন একটি পশু জবাই করার দ্বারা আদায় হয় তেমনি নির্ধারিত পশুতে ‘শরীক হওয়ার’ দ্বারাও (شركة في دم) তা আদায় হয়। আকীকার ক্ষেত্রে এই মূলনীতি প্রযোজ্য নয় বলে দাবি করলে ব্যতিক্রমের বিধান সম্বলিত দলীল লাগবে। আমাদের জানামতে এমন কোনো দলীল নেই।

এর বাইরে বাকি যে প্রশ্নটি থাকে, তা হচ্ছে, দুই ধরনের কুরবানি এক পশু দ্বারা আদায় হওয়ার বিষয়। তো এটি একটি ইজতিহাদী বিষয়। একারণে মুজতাহিদ ইমামগণের মাঝে এ বিষয়ে কিছু মতপার্থক্যও আছে। কিন্তু নস বা কুরআন-সুন্নাহর সুষ্পষ্ট কোনো বিধানে এ বিষয়ে নিষেধ আছে বলে আমাদের জানা নেই; বরং অনুমোদনের পক্ষে হাদীস-আছারের দলীল আছে। পক্ষে বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম ‘আতা ইবনে আবী রাবাহ রাহ.এর ফতোয়াটিই সম্ভবত: বিজ্ঞজনের জন্য যথেষ্ট হবে। তিনি বলেছেন, ‘উট ও গরু সাত জনের পক্ষ হতে কুরবানি হতে পারে। আর এতে শরীক হতে পারে কুরবানীকারী, তামাত্তু হজ্বকারী এবং হজ্বের ইহরাম গ্রহণের পর হজ্ব আদায়ে অপারগ ব্যক্তি। বিস্তারিত দেখতে- আসসুনান, সায়ীদ ইবনে মানসূর-আল কিরা লি-কাসিদি উম্মিল কুরা, পৃ. ৫৭৩

এছাড়া https://islamqa.info পেইজে এ বিষয়ে দু'টি অভিমত উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথম অভিমত: কোরবানীর পশু আকিকা হিসেবে জায়েয হবে না বলার পরে এটিকে মালেকী, শাফেয়ি ও এক বর্ণনা মতে, ইমাম আহমাদের অভিমত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

এবং দ্বিতীয় অভিমতে বলা হয়েছে- কোরবানীর পশু আকিকা হিসেবেও যথেষ্ট হবে। এটিকে হানাফি মাযহাবের অভিমত এবং এক বর্ণনা মতে, এটি ইমাম আহমাদের অভিমত ও এটি হাসান বসরি, মুহাম্মদ বিন সিরিন ও কাতাদা প্রমুখের অভিমত বলে উল্লেখ করে এ অভিমতটি শাইখ মুহাম্মদ বিন ইব্রাহিম (রহঃ)ও মনোনীত করেছেন মর্মে বলা হয়েছে। বিস্তারিত দেখে নিতে পারেন-

একই পশু দিয়ে কোরবানী ও আকিকা দেয়ার বিধান

মন্তব্যে আপনাকে পেয়ে খুশি হলাম। কৃতজ্ঞতাসহ শুভকামনা। অনেক ভালো থাকুন।

৫| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ২:৪৩

কলাবাগান১ বলেছেন: "মেয়ে হলে একটা, ছেলের বেলায় দুইটা ছাগল" - এখানেও বৈষম্য!!!!!

৬| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১২

ঢাকার লোক বলেছেন: আমার মন্তব্যের বিস্তারিত প্রতিউত্তরের জন্য ধন্যবাদ । গরু বা উঁটে সাত শরিকে কোরবানি দেয়ার ব্যাপারে আমি কোনো দ্বিমত প্রকাশ করিনি । আকিকার বেলায় বলতে চেয়েছি, আকিকা ও কোরবানি দুইটি ভিন্ন ভিন্ন ইবাদাত এবং যেখানে আমাদের দেশে ছাগল বা ভেড়া পাওয়াও তেমন কঠিন নয়, সেখানে কিছু সংখ্যক আলেমের ইজতেহাদী মাসা'লা অনুসরণ করে কোনো এক কোরবানির ঈদে গরুতে শরিক হয়ে আকিকা না করে রাসূলুল্লাহ (স) এর সুস্পষ্ট সুন্নত, ছাগল/ভেড়া দিয়ে সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে আকিকা করাই কি উত্তম নয়?
জাজাকাল্লাহু খাইরান !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.