নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুন্দর ব্যবহার এবং আচার-আচরণের জন্য হাদিসে বর্ণিত পুরস্কার এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১৪



সুন্দর ব্যবহার এবং আচার-আচরণের জন্য হাদিসে বর্ণিত পুরস্কার
সুন্দর ব্যবহার, সুন্দর আচার-আচরণ মানবজীবনের সৌন্দর্য্যকে ফুটিয়ে তোলে। এ বিষয়ে ইসলাম বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। মার্জিত, উত্তম এবং সুন্দর আচার-আচরণের জন্য হাদিসে বারবার তাগিদ দেয়া হয়েছে। দেয়া হয়েছে পুরস্কারপ্রাপ্তির ঘোষনা। আজ সে বিষয়েই সামান্য আলোকপাত করার ইচ্ছে-

এক. মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, 'কিয়ামতের দিন মুমিনের আমলনামায় সুন্দর আচরণের চেয়ে অধিক ভারী আমল আর কিছুই হবে না। যে ব্যক্তি অশ্লীল ও কটু কথা বলে বা অশোভন আচরণ করে, তাকে মহান আল্লাহ তায়ালা ঘৃণা করেন। আর যার ব্যবহার সুন্দর, সে তাঁর ব্যবহারের কারণে নফল রোযা ও তাহাজ্জুদের সাওয়াব লাভ করবে।' [সুনানে তিরমিযী]

দুই. প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য এক হাদিসে বলেছেন, 'সবচেয়ে বেশি যা মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে, তা হলো- মহান আল্লাহ্ তায়ালার ভয় এবং সুন্দর আচরণ। আর সবচেয়ে বেশি যা মানুষকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবে, তা হলো- (মানুষের) মুখ এবং লজ্জাস্থান।'' [সুনানে তিরমিযী, হাকিম আল মুসতাদরাক]

তিন. অারেক হাদিসে প্রিয় নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ''সুন্দর আচরণ্ই নেক আমল।'' [সহীহ মুসলিম]

চার. অন্য একস্থানে প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 'তোমাদের মধ্যে যার আচার-ব্যবহার সুন্দর, সে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন সে আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে।' [সুনানে তিরমিযী]

পাঁচ. অাল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য এক হাদিসে বলেছেন, 'অশোভন-অশ্লীল কথা ও আচরণের সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। আর যার আচরণ যত সুন্দর তার ইসলাম তত সুন্দর।'' [মুসনাদে আহমদ]

ছয়. প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য এক হাদিসে বলেছেন, 'যার আচার-ব্যবহার সুন্দর, আমি তার জন্য সর্বোচ্চ জান্নাতে
একটি বাড়ির নিশ্চয়তা প্রদান করছি।'' [আবু দাউদ]

সাত. প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য এক হাদিসে বলেছেন, 'যদি কেউ বিনম্রতা ও নম্র আচরণ লাভ করে, তাহলে সে দুনিয়া ও আখেরাতের পাওনা সকল কল্যাণই লাভ করল। আর রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়-স্বজনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং সুন্দর আচরণ বাড়িঘর ও জনপদে বরকত দেয় এবং আয়ু বৃদ্ধি করে।'' [আহমদ]

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আমাদের সকলকে বর্ণিত হাদিসগুলোর উপর আমল করে সকলের সাথে উত্তম আচার-আচরণে অভ্যস্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন।


প্রশ্নোত্তরে প্রয়োজনীয় এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা যা জেনে রাখা ভালো:
প্রশ্ন এক. কেরোসিন তেল কি পবিত্র, না অপবিত্র? কাপড় বা গায়ে কেরোসিন লাগলে, তা সহ নামাজ পড়া যাবে কি?

উত্তর : কেরোসিন তেল মূলত: নাপাক নয়। কোনো অনুসঙ্গ (নাপাক পদার্থ) তাতে মিশ্রিত হলে কেরোসিন নাপাক হতে পারে। আর কেরোসিন তেল থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা হয় এটির দুর্গন্ধের জন্য। এই একই কারণে দ্রব্যটি মসজিদেও পরিত্যাজ্য। তবে, বিশেষ প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে মসজিদেও ব্যবহার করা যায়।

প্রশ্ন দুই: প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন কোন খাদ্য বেশি পছন্দ করতেন এবং কোন খাদ্যের গুণ, প্রাণশক্তি ও নিরাময় ক্ষমতা বেশি বলে বর্ণনা করতেন?

উত্তর : হযরত নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট সর্বাপেক্ষা পছন্দনীয় খাদ্যের মধ্যে ছারীদ উল্লেখযোগ্য। গোশতের তরকারিতে টুকরো রুটি মিলিয়ে যে খাদ্য তৈরি করা হয় তাকে ছারীদ বলা হয়। গোশতের মধ্যে হুযুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি পছন্দ করতেন খাসীর সামনের রানের গোশত। তরি-তরকারির মধ্যে তাঁর নিকট সর্বাধিক পছন্দের ছিল লাউ। এছাড়া দুধ, মধু, খেজুর, সিরকা, পনির ইত্যাদি খাবার তিনি আগ্রহভরে খেয়েছেন। শ্রেষ্ঠ খাদ্য হিসেবে দুধের উল্লেখই বেশি পাওয়া যায়, যা একই সাথে খাদ্য এবং পানীয়। প্রিয়নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাদ্য গ্রহনের তরিকা সম্পর্কে যেসব আদর্শ রেখে গিয়েছেন তন্মধ্যে মৌলিক কিছু প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যেতে পারে। হুযুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- 'তোমরা ততক্ষণ খাদ্যগ্রহণ করবে না, যতক্ষণ না তোমরা ভালোরকম ক্ষুধিত হও। যখন খানা খাবে তখন পেটকে তিনভাগে বিভক্ত করে নিও। একটি অংশ খাদ্যের, একটি পানীয়ের, অপর একটি শূন্য রেখো আল্লাহর জিকিরের জন্য, স্বাচ্ছন্দে শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য। খেতে বসলে কিছুটা বাকি থাকতেই উঠে পড়। একজনের খানা দু’জনের জন্য যথেষ্ট। দু’জনেরটা যথেষ্ট তিনজনের জন্য' - হাদিসে বর্ণিত এসব গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা মেনে চললে একজন মানুষ সাধারণত: খাদ্যজনিত কোনো রোগব্যাধির শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

প্রশ্ন তিন: কোনো মুসলমান অন্য ধর্মের লোককে সালাম দিতে পারবে কি? যদি পারে, তাহলে তার নিয়ম কি?

উত্তর : একজন মুসলমানের জন্য আল্লাহ তাআ'লার পক্ষ থেকে রহমত, বরকতপূর্ণ সালাম দেওয়ার যে বিধান ইসলামে রয়েছে, তা কেবল মুসলমানদের জন্যই। অমুসলিমকে সালাম দেওয়া যাবে, তবে তা ইসলামের সালাম নয়, সামাজিক ও মানবিক সালাম। এটি প্রচলিত নির্দোষ যে কোনো পন্থায় হতে পারে। বলা হয়, শান্তিপূর্ণ অবস্থায় অমুসলিমদের জন্য সালাম এরকম ‘আসসালামু আলা মানিত্তাবাআল হুদা’। অর্থাৎ, আল্লাহর দেখানো পথ গ্রহণকারী এ সালামের উপযুক্ত। কোনো অমুসলিম সম্ভাষন জানালে তার প্রতিউত্তর, গোনাহ হয় না এমন যে কোনো উপায়ে দেওয়া চলে। অমুসলিম যদি মুসলমানের মতো সালাম উচ্চারণ করে, তাহলে প্রতিউত্তরে সমভাবে সালামের জবাব দেওয়া যায়। তবে তাদের সাথে সালাম বিনিময়ের সময় হেদায়াতের শর্ত ও দুআ অবশ্যই মনে মনে পোষণ করতে হবে।

প্রশ্ন চার: অনেকেই মৃত ব্যক্তির জন্য চল্লিশা/কুলখানি করতে নিষেধ করেন, অবৈধ, বিদআত বলে থাকেন। তাহলে মৃত ব্যক্তিদের রূহে সওয়াব পৌঁছানোর উপায় কি?

উত্তর: মৃত ব্যক্তির রূহে সওয়াব পৌঁছানোর সবচেয়ে উত্তম উপায় তার জন্য দুআ করা। সর্বোত্তম দুআ, 'হে আল্লাহ আপনি আমাকে, আমার বাবা-মা ও সকল ঈমানদার নারী পুরুষকে ক্ষমা করে দিন।'

কেবল পিতা-মাতার জন্য বলতে হয়, 'হে আল্লাহ আমার বাবা-মাকে রহম করুন, যেমন তারা আমাকে ছোটবেলা লালন করেছিলেন।'

এছাড়া যতরকম নফল ইবাদত আছে যেমন, কুরআন পড়া, নফল নামাজ-রোজা, দুআ-দরুদ, দান-খয়রাত ইত্যাদি করে তাদের রূহে সওয়াব পৌঁছানোর জন্য আল্লাহ তাআ'লার কাছে দুআ করা যায়। এজন্য তিন দিন, চল্লিশ দিন বা বছর শেষে মৃত্যুর দিন ধার্য করে আমল করা জরুরী নয়। বরং এভাবে না করাই উত্তম। সওয়াব পৌঁছানোর এ প্রক্রিয়া বছরের প্রতিটি দিন নিজের অভ্যাসে পরিণত করে নেওয়াই সন্তান ও আত্মীয় স্বজনের কর্তব্য। যারা নিষেধ করেন, বিদআত বলেন, তারা মূলত: আনুষ্ঠানিকতাকে নিষেধ করেন, সওয়াব পৌঁছানোকে নয়। ইসলামে বিষয়টি এমনই।

প্রশ্ন পাঁচ: অনেকেরই এই বিষয়ে জানার ইচ্ছে যে, নানার আগে মা ইন্তেকাল করলে নাতি/ নাতনী মায়ের ওয়ারিশ পাবে কি না।

উত্তর : এটির উত্তর হচ্ছে, পাবে না। মা না থাকায় অর্থাৎ মা নিজে ওয়ারিশ না হওয়ায় নাতি/নাতনী নানার সম্পত্তি পাবে না। পাওয়ার একটিই উপায় রয়েছে, যদি মায়ের মৃত্যুর পর নানা তাদের নামে ওসিয়ত করে যান। ক্ষেত্রবিশেষে এমন ওসিয়ত করা শরীয়তে বাতলে দেয়া আছে। ওসিয়ত না করলে তারা হকদার হবে না।

সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতাওয়া বিশ্বকোষ।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আমাদের প্রতিটি বিষয়ে সঠিক জ্ঞান অর্জনের তাওফিক দান করুন এবং কেবল সহি আমলগুলো সঠিক পদ্ধতিতে করার শক্তি দান করে ধন্য করুন।

ছবি: অন্তর্জাল।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩১

নীল আকাশ বলেছেন: খুব সুন্দর পোস্ট।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৫

নতুন নকিব বলেছেন:



মোবারকবাদ আপনাকে। লাইকসহ প্রথম মন্তব্যে অভিনন্দন।

শুভকামনা সবসময়।

২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশে সুন্দর ব্যবহার করলে পেয়ে বসে। মনে করে দুর্বলতা।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৬

নতুন নকিব বলেছেন:



অভিনন্দন এবং কৃতজ্ঞতা।

শুভকামনা থাকলো।

৩| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:২০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: বেশ গুরুত্বপুর্ন একটি বিষয়ে পোষ্ট দিয়েছেন । প্রিয়তে গেল ।
সুন্দর আচরণ বলতে আমরা সাধারণত বুঝি কারও সাথে সুন্দর করে কথা বলা, দেখা হলে সালাম দেয়া, কুশলাদি জিজ্ঞেস করা, কর্কশ ভাষায় কথা না বলা, ঝগড়া-ফ্যাসাদে লিপ্ত না হওয়া, ধমক বা রাগের সুরে কথা না বলা, গীবত বা পরনিন্দা না করা, অপমান-অপদস্ত না করা, উচ্চ আওয়াজে কথা না বলা, গম্ভীর বা কালো মুখে কথা না বলা, সর্বদা হাসিমুখে কথা বলা, অন্যের সুখে সুখী হওয়া এবং অন্যের দুঃখে দুঃখী হওয়া, বিপদে দেখা করে সহানুভূতি ও সহমর্মিতা প্রকাশ করা সুন্দর আচরণের অন্তর্ভুক্ত। সুন্দর আচরণ আমরা সবাই প্রত্যাশা করি, কিন্তু আমরা প্রায়ই অন্যের সাথে সুন্দর ব্যবহার করতে ভুলে যায়। সামান্য একটু অসতর্কতার কারণে আমাদের আচরণে একজন মানুষ অনেক কষ্ট পেতে পারে। তাই আমাদের সবসময় সচেতন থাকা উচিত- যাতে আমাদের আচরণে কেউ বিন্দুমাত্র কষ্ট না পায়। সুন্দর আচরণের উদ্দেশ্য হলো অন্যকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করা এবং নিজের মহত্ব অন্যের অন্তরে প্রতিষ্ঠিত করা। কিন্তু ইসলামে যে উত্তম আখলাকের শিক্ষা দেয়া হয়েছে, তার উদ্দেশ্য াআরো বেশী ফজিলতময় । আল্লাহ্ ও আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে উত্তম আখলাকের শিক্ষা দিয়েছেন তার উদ্দেশ্য শুধু পার্থিব স্বার্থ হাসিল করা নয়; বরং একজন মুসলিম হিসেবে অন্য মুসলিম ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে মিলিত হওয়া এবং ভালো আচরণ করা। সুন্দর আচরণ উন্নত ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। ইসলামের পথে মানুষকে আহ্বানের সর্বোত্তম পন্থা। সুন্দর আচরণের মাধ্যমেই যুগে যুগে নবী-রাসূলগণ অন্ধকারে নিমজ্জিত, পথহারা, দিশেহারা, মানুষকে আলোর পথ দেখাতে সক্ষম হয়েছিলেন।
এই মহৎ গুণের অনুপ্রবেশ ঘটাতে হবে আমাদের চরিত্রে। সমাজে বাস করতে গিয়ে মানুষ পারস্পরিক লেনদেন ও আদান-প্রদান করে থাকে। একজনের প্রয়োজনে অন্যজন লাগে। একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক কায়েম করতে হয়। কোমলতা উত্তম আচরণের অনন্য বৈশিষ্ট্য। স্বভাবে যে কোমল, আচরণে যে মার্জিত, সে হয় সবার কাছে সমানভাবে স্বীকৃত। ইসলামে মানুষের আচরণ মার্জিত ও ভদ্রোচিত হওয়ার প্রতি জোরালো তাগিদ রয়েছে। ইসলাম দুর্বার গতিতে ছড়িয়ে পড়ে তলোয়ারের জোরে নয়, বরং চারিত্রিক উদারতা ও কোমলময় স্বভাবের কারণেই। এটা আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে । কোমল স্বভাবের দ্বারা মানবজীবনের অনেক কঠিক ধাপ সহজেই পেরিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। কোমল স্বভাবের লোকদের সবাই আপন করে নেয়। তাদের শত্রু থাকে কম। ঘোর শত্রুও তার উদারতা ও কোমলতার কাছে হার মানতে বাধ্য হয়।

সুন্দর ব্যবহার এবং আচার-আচরণের পুরস্কার সম্পর্কে পোষ্টে বিষদভাবে বলা হয়েছে দেখা যায় । কোরান হাদিস অনুসারে সুন্দর আচরণ অতি বড় নেক আমলও বটে।ইসলামে সুন্দর আচরণের ব্যাপারে গুরুত্বারোপও করা হয়েছে। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত পরিষ্কার। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের মাধ্যমে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সুন্দর আচরণ শিক্ষা দিয়েছেন। প্রচুর সংখ্যক হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তম নৈতিক চরিত্রের ফজিলত মর্যাদা এবং আরও অনেক হাদীসে উন্নত নৈতিক চরিত্র অর্জন ও খারাপ চরিত্র বর্জনের জন্য উম্মতকে উৎসাহিত করেছেন। সুন্দর আচরণ করা এবং দয়া, সহানুভূতি ও কোমলভাবে কথা বলার ফজিলতের বিষয়ে এ পোষ্টে অনেক মুল্যবান হাদিস উদ্ধৃত হয়েছে । এখানে এই পোষ্টের কল্যাণে এ বিষয়ে আল কুরআনের দৃষ্টিতে সুন্দর আচরণ, দয়া, সহানুভূতি ও কোমলভা সংক্রান্ত কিছু আযাত তুলে দেয়া হল নীচে ।

আল কুরআনের দৃষ্টিতে সুন্দর আচরণ দয়া, সহানুভূতি ও কোমলভা

১. আল্লাহ্পাক বলেন, হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল। (আহযাব-৭০)।
২. আল্লাহ্ বলেন, আল্লাহর রহমতেই আপনি তাদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন, পক্ষান্তরে আপনি যদি রূঢ় ও কঠিন হৃদয় হতেন, তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। কাজেই আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন এবং তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করেন। (আল-ইমরান-১৫৯)।
৩. আল্লাহ্ বলেন, মুমিনদের জন্য আপনি আপনার ডানা অবনমিত করুন অর্থাৎ কোমল আচরণ করুন। (হিজর-৮৮)
৪. আল্লাহ্ বলেন, কেউ যখন তোমাকে সৌজন্যমূলক সম্ভাষণ জানাবে প্রতি উত্তরে তুমি তাকে তার চাইতে সুন্দর ধরনের সম্ভাষণ জানাও, কিংবা অন্তত ততটুকুই জানাও। (নিসা-৮৬)।
৫. আল্লাহ্ বলেন, তোমরা আল্লাহ্ ছাড়া কারও উপাসনা করবে না, পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, এতিম ও দরিদ্রদের সাথে সদ্ব্যবহার তথা সুন্দর আচরণ করবে এবং মানুষকে সুন্দর কথা বলবে। (বাকারা-৮৩)
৬. মহান আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেছেন, আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহ্বান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন উত্তম পন্থায়। (নাহল-১২৫)
৭. ইসলামের পথে যে ব্যক্তি মানুষকে আহ্বান করে সেই ব্যক্তি ও তার কথাই হচ্ছে সর্বোত্তম। এরশাদ হচ্ছে, যে আল্লাহ্র পথে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে আমি একজন আজ্ঞাবহ, তার কথা অপেক্ষা ভালো কথা বা উত্তম কথা কার? (হা-মীম সিজদাহ্-৩৩)
৮. মহান আল্লাহ্ বলেন, তোমরা তোমাদের পিতা-মাতা, নিকটাত্মীয়, এতিম, দরিদ্র, প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, পথিক এবং যারা তোমাদের অধিকারে এসেছে, সবার সাথে সুন্দর আচরণ কর। (নিসা-৩৬)।
৯. কথাবার্তা ও মৌখিক আচরণে একজন মুমিনকে কীভাবে শালীন হতে হবে সে ব্যাপারে আল্লাহ্ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘মানুষের সাথে সুন্দরভাবে কথাবার্তা বলো।’ (বাকারা : ৮৩)
১০. আল-কুরআনে ইরশাদ হচ্ছ, পৃথিবীতে দম্ভভরে পদচারণা করো না। নিশ্চয় তুমি তো ভূপৃষ্ঠকে কখনোই বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনোই পর্বত সমান হতে পারবে না। এসবের মধ্যে যেগুলো মন্দ কাজ সেগুলো তোমার পালনকর্তার কাছে অপছন্দনীয়। (বনী ইসরাইল-৩৮, ৩৯)


আল্লাহ আপনার সর্বাত্বক মঙ্গল করুন

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৪৮

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার কষ্টসাধ্য অসাধারণ মন্তব্য এই পোস্টটিকে পরিপূর্ণতাদানে সহায়ক হল। অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় আলী ভাই।

শিক্ষনীয় অনেক কিছুই উঠে এসেছে কুরআন হাদিসের আলোকে আপনার দীর্ঘ সুচিন্তিত মন্তব্যটিতে। কৃতজ্ঞতাসহ শুভকামনা পোস্ট প্রিয়তে নেয়ায়।

অনেক ভালো থাকুন প্রার্থনা সবসময়।

৪| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৩০

হাফিজ বিন শামসী বলেছেন: অতি প্রয়োজনীয় পোস্ট।

আলহামদুলিল্লাহ।

জাযাকাল্লাহু খাইর।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৫০

নতুন নকিব বলেছেন:



মোবারকবাদ। অভিনন্দন পোস্টে সুন্দর আন্তরিক মন্তব্য রেখে যাওয়ায়।

আপনাকেও আল্লাহ পাক উত্তম প্রতিদান প্রদান করুন।

৫| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:০৭

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:

এক গ্লাস বরফ মিশ্রিত বরফ শীতল ফ্রুট চা শুভেচ্ছা নেবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.