নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাদাকাতুল ফিতর আদায়ে যা জানা প্রয়োজনঃ

০৬ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:০০

ছবি: অন্তর্জাল।

সাদাকাতুল ফিতর আদায়ে যা জানা প্রয়োজনঃ
সাদাকাতুল ফিতর রমজানের অন্যতম একটি আমল। দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে এই বিধানটির প্রবর্তন হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে সাদাকাতুল ফিতরকে ওয়াজিব করার মহান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো অভাবীদের অভাব দূর করা। অসহায় ও নিঃস্ব ব্যক্তিদের জরুরত পূরণ করা। বিশেষ করে রোজা রাখতে গিয়ে মানুষের যেসব ভুলত্রুটি হয়ে থাকে তা থেকে তাদেরকে মুক্ত করা। যেমন- হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব করেছেন রোজাদারকে বেফায়দা ও অশ্লীল কর্মকান্ড, অপবিত্রতা থেকে পবিত্র করার জন্য এবং ফকির-মিসকিনদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের জন্য।’ (আবু দাউদ)।

সদকায়ে ফিতর কার ওপর ওয়াজিব : যে ব্যক্তির ওপর কোরবানি ওয়াজিব, অর্থাৎ সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা বা তার সমপরিমাণ টাকা থাকে, তাহলে তার ওপর ঈদুল ফিতরের দিন সদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব- চাই তা ব্যবসার সম্পদ হোক বা না হোক, বছর অতিবাহিত হোক বা না হোক, পুরুষ হোক বা মহিলা হোক, কোনো পার্থক্য নেই। (হেদায়া, খ--১, পৃ. ১৯০)।

ছেলেমেয়েদের পক্ষ থেকে সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব : যে ব্যক্তির ওপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হবে, তার ওপর তার অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েদের পক্ষ থেকেও সদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। (হেদায়া, রহমানিয়া খ--১, পৃ. ১৯০)।

মহিলাদের শুধু নিজের ওপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব : যে মহিলার কাছে প্রয়োজনাতিরিক্ত সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা বা তার সমপরিমাণ টাকার সম্পদ থাকবে, তার ওপর শুধু নিজের সদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। তার ওপর নিজ ছেলেমেয়ে, মা-বাবা, ভাই-বোন এমনকি গরিব স্বামীর পক্ষ থেকে সদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব নয়। (আহকামে রমজান, পৃ. ১৭৫)।

সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব কখন : সদকায়ে ফিতর ঈদুল ফিতরের দিন সূর্য উদয়ের সময় আদায় করা ওয়াজিব হয়। তবে এর আগেও সদকায়ে ফিতর আদায় করা জায়েজ আছে। সুতরাং যে ব্যক্তি ওই সময়ের আগে ইন্তেকাল করবে বা ফকির হয়ে যাবে, তার ওপর সদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব নয়।

নবজাতক সন্তানের সদকায়ে ফিতর : যদি সুবহে সাদিকের আগে বা সুবহে সাদিকের সময় নবজাতক সন্তান জন্মগ্রহণ করে, তাহলে সম্পদশালী বাবার তার নবজাতক সন্তানের পক্ষ থেকে ‘ফিতরা’ আদায় করা তার ওপর ওয়াজিব। আর যদি সুবহে সাদিকের পর জন্ম গ্রহণ করে, তাহলে তার পক্ষ থেকে ‘ফিতরা’ আদায় করা ওয়াজিব নয়। (হিন্দিয়া)

নতুন মুসলমানের ফিতরা : যদি কোনো কাফের বা ফকির ঈদুল ফিতরের দিন সূর্য উদয়ের আগে বা সূর্য উদয়ের সময় মুসলমান বা সম্পদশালী হয়ে যায়, তাহলে তার ওপর সদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। আর যদি সূর্য উদিত হওয়ার পর মুসলমান হয় বা কেউ সম্পদশালী হয়, তাহলে তার ওপর সদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব নয়। (হিন্দিয়া রশিদিয়া, খ--১, পৃ. ১৯২)।

দেরিতে ফিতরা আদায় করা মাকরুহ : ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাজের আগে সদকায়ে ফিতর আদায় করতে হবে; কিন্তু ঈদের নামাজের আগে সদকায়ে ফিতর আদায় না করে পরে আদায় করা সুন্নতপরিপন্থি ও মাকরুহ হবে। তা সত্ত্বেও দেরিতে আদায় করলেও আদায় হয়ে যাবে। (দুররে মুখতার, খ--২, পৃ. ৩৬৭)।

বিবাহিত মেয়ের সদকায়ে ফিতর কার ওপর ওয়াজিব : যদি বিবাহিতা মেয়ে বাবার বাড়িতে অবস্থান করে থাকে, তখন দেখার বিষয় হচ্ছে, সে সম্পদশালী কি না। যদি সে সম্পদশালী হয়, তাহলে সে প্রাপ্তবয়স্ক হোক বা না হোক, তার সম্পদ থেকে নিজ ‘সদকায়ে ফিতর’ আদায় করা ওয়াজিব। তবে মেয়ে যদি প্রাপ্তবয়স্ক, কিন্তু সম্পদশালী নয়, তাহলে তার সদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব নয়। আর যদি মেয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক হয় এবং স্বামীর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া না হয় অথবা সম্পদশালীও না হয়, তাহলে বাবার ওপর তার ‘সদকায়ে ফিতর’ আদায় করা ওয়াজিব। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া)।

রোজা না রাখলেও সদকায়ে ফিতর আদায় করা ওয়াজিব : যদি সম্পদশালী ব্যক্তি কোনো কারণবশত রমজানের রোজা রাখতে না পারে, এরপরও তার ‘সদকায়ে ফিতর’ আদায় করা ওয়াজিব। তা না হলে সে গোনাহগার হবে। (ফতোয়ায়ে শামি, খ--১, পৃ. ১৬৩)।

সদকায়ে ফিতরার পরিমাণ : সদকায়ে ফিতর হচ্ছে খেজুর, যব, গম, আটা বা এগুলোর নগদ মূল্য টাকাপয়সা দ্বারা ‘সদকায়ে ফিতর’ আদায় করা যাবে। (হিন্দিয়া, খ--১, পৃ. ১৯৩)।

মাসআলা : যদি সদকায়ে ফিতর গম বা আটা দ্বারা আদায় করতে চায়, তাহলে এক সা অর্থাৎ আনুমানিক সাড়ে তিন সের ভালো মানের খেজুর বা তার মূল্য আদায় করতে হবে। (রশিদিয়া খ--১, পৃ. ১৯১)।

মাসআলা : যদি সদকায়ে ফিতর গম বা আটা দ্বারা আদায় করতে চায়, তাহলে পৌনে দুই সের (তথা ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম) ভালো মানের গম বা আটা সদকা করতে হবে। আর যদি মূল্য আদায় করতে চায়, তাহলে ওই গম বা আটা পরিমাণ মূল্য সদকা করে দেবে। (দুররে মুখতার, খ--১, পৃ. ৩৪৬)।

সদকায়ে ফিতর কাকে দেবে : যেসব লোককে জাকাত দেওয়া যায়, তাদের সদকায়ে ফিতরও দেওয়া যায়। আর যেসব লোককে জাকাত দেওয়া জায়েজ নেই, তাদের সদকায়ে ফিতর দেওয়াও জায়েজ নেই। (ফতোয়ায়ে শামি, খ--২, পৃ. ৩৪৪)।

সদকায়ে ফিতরের টাকা দিয়ে মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ : সদকায়ে ফিতরের টাকা দিয়ে মসজিদ, মাদ্রাসা, রাস্তা, হাসপাতাল নির্মাণসহ জনকল্যাণমূলক কাজ করা জায়েজ হবে না; বরং ওই টাকা গরিব-মিসকিন তথা জাকাতের উপযোগীদের বণ্টন করে দিতে হবে।

মাদ্রাসার গরিব ছাত্রদের ফিতরা দেওয়া উত্তম : মাদ্রাসার গরিব ছাত্রদের সদকায়ে ফিতর দেওয়া অধিক উত্তম। কেননা এতে ‘সদকায়ে ফিতর’ আদায়ের সঙ্গে সঙ্গে ‘সদকায়ে জারিয়াহ’র সওয়াবও অর্জন হয়।

একজনকে একাধিক সদকায়ে ফিতর দেওয়া : একটি সদকায়ে ফিতর একজন ফকির-মিসকিন বা একাধিক ফকির-মিসকিনকেও প্রদান করা জায়েজ। এভাবে একজনকে একাধিক সদকায়ে ফিতর দেওয়াও জায়েজ ও বৈধ হবে। (ফতোয়ায়ে শামি, খ--২, পৃ. ৩৬৪)।

ঋণের পরিবর্তে ফিতরার টাকা কর্তন করা : কোনো ধনী ব্যক্তি কোনো অসহায় ব্যক্তির কাছে ঋণ পাওনা থাকে, এ অবস্থায় যদি ধনী ব্যক্তি ঋণের পরিবর্তে গরিব থেকে সদকায়ে ফিতরের টাকা কর্তন করে, তাহলে তার সদকায়ে ফিতর আদায় হবে না।

কারাবদ্ধ ব্যক্তিকে ফিতরা দেওয়া :
যদি কোনো কারাবদ্ধ গরিব এবং জাকাতের উপযোগী হয়, তাহলে তাকে বা তার পরিবারকে জাকাত ও সদকায়ে ফিতরের টাকা দিতে পারবে।

২০২০ সালের ফিতরা সর্বনিম্ন ৭০ সর্বোচ্চ ২২০০ টাকাঃ
১৪৪১ হিজরি সনে জনপ্রতি সর্বনিম্ন ৭০ টাকা ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর ধনী শ্রেণির জন্য জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২ হাজার ২শ’ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বিশিষ্ট মুফতি ও আলেমদের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভায় সাদকাতুল ফিতরের এ হার চূড়ান্ত করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মিজানুর রহমান। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে গত ২০১৯ সালে ফিতরা জনপ্রতি সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯৮০ টাকা ও সর্বনিম্ন ৭০ টাকা ছিল। আর ২০১৮ সালে ছিল সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩১০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৭০ টাকা।

যেসব দ্রব্য দ্বারা ফিতরা আদায় করা যায়ঃ
ইসলামী শরীয়াহ মতে আটা, খেজুর, কিসমিস, পনির, যব ইত্যাদি পণ্যগুলোর যে কোনো একটি দ্বারা ফিতরা দেয়া যায়। দেশের সব বিভাগ থেকে সংগৃহীত আটা, যব, খেজুর, কিসমিস ও পনিরের সর্বোচ্চ বাজারমূল্যের ভিত্তিতে এই ফিতরা নির্ধারণ করা হয়। তবে খুচরা বাজার মূল্যের তারতম্যের কারণে স্থানীয় মূল্যে পরিশোধ করলেও ফিতরা আদায় করা যায়। ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের আগে মুসলমানরা নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী উপরোক্ত পণ্যগুলোর যে কোনো একটি পণ্য বা এর বাজারমূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করতে পারেন।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:১২

রাজীব নুর বলেছেন: আমি আমার সাধ্য মতো সারা বছরই দরিদ্র লোকদের দান করি। এই দান করে আমি আনন্দ পাই।

২| ০৬ ই মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৩

জাফরুল মবীন বলেছেন: ফিতর শব্দের অর্থ কী?

৩| ০৬ ই মে, ২০২০ রাত ৮:৪৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: এইবার যাকাতের শাড়ি নাই মরণও নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.