নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

দান সদকার গুরুত্ব, পেশাদার ভিক্ষুককে ভিক্ষা দেয়া, মসজিদে টাকা কালেকশন এবং মাযারে ওরসের নামে দানের প্রসঙ্গে ইসলাম কি বলে?

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৪৮

আমাদের দেশের হাজারও সুসজ্জিত মাযারগুলোর একটি। কিন্তু কথা হচ্ছে, এই যে মাযার বা কবর এবং এর পরিপার্শ্বের সন্নিহিত দৃষ্টিনন্দন ঝকঝকে তকতকে চত্বর - এই পাকাকরণ, সৌন্দর্য্যবর্ধন ইত্যাদিতে ব্যয় করা অর্থের প্রকৃত হকদার তো ছিলেন এই সমাজের নিতান্ত অভাবী, দরিদ্র এবং অসহায় মানুষগুলো। আশ্চর্য্যের বিষয় হচ্ছে, জীবিত অভাবীদের জন্য আমাদের যেন কোনো দায় নেই, দরদ নেই, কর্তব্য নেই। কিছু মানুষ অভাবের কারণে ঠিকমত দু'বেলা দু'মুঠো খেতেও পায় না, দিবাবসানে বাস্তুহীন মানুষের মাথা গোজার ঠাঁই হয় রাস্তার পাশের ফুটপাত; আর এসবের বিপরীতে কবরে মৃত ব্যক্তিকে খুশি করার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। হায় হায়! কি অদ্ভূতুরে এবং উদ্ভট আমাদের চরিত্র! ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

দান সদকার গুরুত্ব, পেশাদার ভিক্ষুককে ভিক্ষা দেয়া, মসজিদে টাকা কালেকশন এবং মাযারে ওরসের নামে দানের প্রসঙ্গে ইসলাম কি বলে?

দরিদ্র, অসহায় এবং অভাবী ব্যক্তিকে দান করা নিশ্চিতভাবে মহৎ কাজ। দানের বিষয়ে কুরআন হাদিসে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ফরজ ইবাদত হিসেবে সাহেবে নিসাবগণকে যাকাত আদায়ের পাশাপাশি নফল দান সদকার প্রতিও অধিক পরিমানে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। এটি মূলতঃ ইসলামের সৌন্দর্য্য। দান সদকার মাধ্যমে সমাজে গরিব ধনী তথা উঁচু নিচুর ভেতরে সৌহার্দ্য সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি হয়। গরিব, অসহায় এবং নিঃস্বদের অভাব অনটন লাঘব হয়। তাদের কষ্টের জীবনে কিছুটা হলেও আনন্দ হাসির ঝিলিক ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআন ও সুন্নতে রাসূলে অনেক উৎসাহবেঞ্জক বাণী এসেছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন:

(مَّن ذَا ٱلَّذِي يُقۡرِضُ ٱللَّهَ قَرۡضًا حَسَنٗا فَيُضَٰعِفَهُۥ لَهُۥٓ أَضۡعَافٗا كَثِيرَةٗۚ ) [البقرة:245]

কে আছে, যে আল্লহকে উত্তম ঋণ দেবে, ফলে তিনি তার জন্য বহুগুণে বাড়িয়ে দেবেন। -সূরা আল বাকারা:২৪৫

আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ সদকা করে - আর আল্লাহ হালাল ব্যতীত অন্য কিছু গ্রহণ করেন না - আল্লাহ তাআলা তা তাঁর ডান হাতে গ্রহণ করেন এরপর তিনি তা লালন করেন, যেমন তোমাদের কেউ তার ঘোড়ার বাচ্চাকে লালন করে, এমনকি একসময় সে সদকা পাহাড়তুল্য হয়ে যায়।’ -বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম

যে ব্যক্তি গোপনে সদকা দেয় তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওই সাত জনের মধ্যে গণ্য করেছেন যাদেরকে আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের কঠিন দিনে তাঁর আরশের নিচে ছায়া দিবেন যেদিন তাঁর ছায়া ব্যতিত অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘....এবং এমন ব্যক্তি যে সদকা করল, অতঃপর তা গোপন করল, এমনকি তার বাম হাত জানলো না, তার ডান হাত কি দান করেছে।’ -বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম

কাআব ইবনে উজরা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সদকা পাপ নিভিয়ে দেয় যেভাবে পানি আগুন নেভায়।’ -বর্ণনায় তিরমিযী

নফল সদকার উপকারিতাঃ

নফল সদকা প্রদানের মাধ্যমে নানাবিধ উপকারিতার বিষয়টি প্রমানিত। এর দ্বারা ব্যক্তিগত এবং সামাজিক উভয়বিধ ফায়দা অর্জিত হয়ে থাকে। প্রথমত: ব্যক্তিগত যে উপকারিতাগুলো লাভ হয় তার মধ্যে রয়েছে-

এক. আত্মার পরিশুদ্ধি

পবিত্র কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন:

(خُذۡ مِنۡ أَمۡوَٰلِهِمۡ صَدَقَةٗ تُطَهِّرُهُمۡ وَتُزَكِّيهِم ) [التوبة:301]

তাদের সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ করুন। এর মাধ্যমে তাদেরকে আপনি পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবেন। -সূরা তাওবা:১০৩

দুই. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণঃ

সদকা প্রদান নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অভ্যাস তথা জীবনাচারের বিশুদ্ধ অনুসরণ। কেননা তাঁর জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য গুণ ছিল দান-খয়রাত করা। আর তিনি এমনভাবে দান করতেন যারপর আর দারিদ্র্যের ভয় থাকতো না। তিনি বিলাল রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুকে বলেছেন, ‘হে বিলাল, তুমি সদকা করো, আরশের মালিক তোমার সম্পদ কমিয়ে দেবেন এ আশঙ্কা করো না। -বর্ণনায় বাযযার

তিন. সদকার বিনিময়ে রিযকঃ

ব্যক্তি যা ব্যয় করবে আল্লাহ তাআ'লা তাকে এর পরিবর্তে রিযক দেবেন। আর সদকা দ্বারা মানুষের আত্মোন্নতি ঘটে। আল্লাহ তাআলা বলেন :

(وَمَآ أَنفَقۡتُم مِّن شَيۡءٖ فَهُوَ يُخۡلِفُهُۥۖ وَهُوَ خَيۡرُ ٱلرَّٰزِقِينَ ٣٩ )[سبأ:93]

আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় কর তিনি তার বিনিময় দিবেন এবং তিনিই উত্তম রিয্কদাতা। -সূরা সাবা:৩৯

চার. বেচা-কেনার ভুল থেকে সম্পদকে পবিত্র করাঃ

কায়েস ইবনে আবি গারাযা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আমাদেরকে দালাল বলা হতো। একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের পাশ দিয়ে গেলেন এবং এর থেকেও উত্তম নামে আমাদেরকে সম্বোধন করলেন। তিনি বললেন, ‘হে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, নিশ্চয় ব্যবসায় অহেতুক কথা ও কসম এসে যায়, অতঃপর তোমরা তা সদকা দ্বারা মিশ্রিত করো [অর্থাৎ তার কাফফরা প্রদান করো]’। -বর্ণনায় আবু দাউদ

পাঁচ. সদকা সাওয়াব অর্জন ও গুনাহের কাফফারাঃ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ সদকা করে - আর আল্লাহ তাআ'লা হালাল ব্যতিত অন্য কিছু গ্রহণ করেন না। আল্লাহ তাআলা তা তাঁর ডান হাতে গ্রহণ করেন এরপর তিনি তা লালন করেন, যেমন তোমাদের কেউ তার ঘোড়ার বাচ্চাকে লালন করে, এমনকি একসময় সে সদকা পাহাড়তুল্য হয়ে যায়।’ -বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম

ছয়. সদকায়ে জারিয়ার ফায়দা লাভ হয় মৃত্যুর পরেওঃ

আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন মানুষ মরে যায় তখন তার আমাল বন্ধ হয়ে যায়, তবে তিন প্রকার ব্যতিত। যথা: ১. সদকায়ে জারিয়া অথবা ২. এমন ইলম যার দ্বারা মানুষ উপকৃত হয় অথবা ৩. সৎ সন্তান যে তার জন্য দুআ করে।’ -বর্ণনায় মুসলিম

দ্বিতীয়ত: সামাজিক উপকার

এক. যাকাত একটি ফরজ ইবাদত। এই ফরজ বিধানটি যথাযথভাবে আদায় করার ক্ষেত্রে ছোটখাট ত্রুটিবিচ্যুতি হয়ে থাকা স্বাভাবিক। সদকা মূলতঃ যাকাতের সেইসব ত্রুটিবিচ্যুতির ঘাটতি হিসেবে কাজ করতে পারে। অধিক পরিমানে নফল সদকা যাকাতের সামাজিক উন্নয়নের অভিপ্রায়কে পরিপূর্ণতা দান করতে সাহায্য করে।

দুই. সমাজে পারস্পারিক সহায়তা, সহযোগিতা, স্থিতিশীলতা ও মিল-মহব্বত কায়েম করে। ধনী দরিদ্র্যের বৈষম্য নিরসনেও এর কমবেশি ভূমিকা রয়েছে।

ভিক্ষাবৃত্তিকে তাদের পেশা হিসেবে গ্রহণ

আমরা উপরের সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অবগত হলাম যে, সাধারণভাবে নফল দান সদকার অনেক ফজিলত রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে দেখা যায়, বাজার-ঘাটে কিছু লোক ভিক্ষা করে বেড়ান, তারা ভিক্ষাবৃত্তিকে তাদের পেশা হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছেন। ইসলাম এই ধরণের ভিক্ষা করার অনুমতি প্রদান করে কি? এছাড়া কিছু লোককে দেখা যায়, মসজিদে নিয়মিত চাঁদা কালেকশন করে থাকেন, এমনটা করা কি বৈধ আছে?

এ প্রশ্নের উত্তরে বলতে হয়, যে ব্যক্তির কাছে একদিন চলা যায় এইটুকু পরিমান খাদ্যের ব্যবস্থা রয়েছে, তাকে ইসলাম ভিক্ষাবৃত্তি থেকে নিষেধ করে।

হজরত সাহল ইবনুল হানজালিয়া রা. থেকে বর্ণিত আছে, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তির কাছে একদিনের সকাল-সন্ধ্যার খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে, তারপরেও যদি সে ভিক্ষাবৃত্তি করে, তাহলে সে যেন জাহান্নামের আগুন একত্রিত করছে।

ইমাম আজম আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ বলেন; এমন ব্যক্তির জন্য ভিক্ষাবৃত্তি করা বৈধ নয়। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে; যে নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি নিজের সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভিক্ষাবৃত্তি করে, যেমন সে জাহান্নামের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ একত্রিত করছে। এখন তার ইচ্ছা; বেশি একত্রিত করুক বা স্বল্প করুক। -মিশকাতুল মাসাবিহ

অন্যদিকে ইসলাম সম্পদশালী ব্যক্তিদেরকে নির্দেশ প্রদান করেছে, তারা যেন অভাবগ্রস্ত লোকদের অবস্থার খোঁজ খবর রাখেন এবং তাদের প্রয়োজন পূরণের চিন্তা করেন।

অতএব, রাস্তাঘাট এবং হাটে-বাজারে যেসব লোক পেশাদারী হিসাবে ভিক্ষাবৃত্তি করে থাকে, ভিক্ষাবৃত্তিকে তারা পেশা বানিয়েছে, তাদেরকে ভিক্ষা না দিলে কোন পাপ হবে না। তবে যদি আলামত এবং নিদর্শন দ্বারা বুঝা যায় যে, সে সত্যিই অভাবগ্রস্ত ব্যক্তি, ভিক্ষা একান্ত নিরুপায় হয়েই করছে, এ ছাড়া অন্য কোনো কাজ করার মনোদৈহিক সক্ষমতা তার নেই- তাহলে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী এমন অসহায় অভাবীকে সাহায্য করা উচিত।

হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হে আদম সন্তান! তুমি ব্যয় করো, আমি তোমার উপর ব্যয় করবো। কুরআনে কারিমের আয়াতেও আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ভিক্ষুককে তাড়িয়ে দিও না। আর যদি কিছু দেয়ার তাওফিক না থাকে, তাহলে নম্রতার সাথে ওজর পেশ করো।

মসজিদে টাকা কালেকশনঃ

মসজিদের নিজের জন্য ভিক্ষা করা বৈধ নয়, অবশ্য কোনো কল্যাণের কাজে চাঁদা উত্তোলনের লক্ষ্যে উদ্বুদ্ধকরণ হিসেবে ঘোষণা করে দেয়া অথবা নেহায়েত অভাবগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য অন্য ব্যক্তি মানুষকে অবহিত করলে এর বৈধতা রয়েছে। কিন্তু মসজিদে এমন চাঁদা উঠানো, যাতে মানুষের ঘাড়ের উপর দিয়ে যেতে হয় এবং নামাজি এবং তেলাওয়াতকারীদের ইবাদতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয় অথবা নামাজির সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করতে হয়, এগুলো বৈধ নয়। এই ধরণের প্রয়োজনগুলোতে অর্থ কালেকশন বরং মসজিদের দরজায় করার অবকাশ রয়েছে।

আল্লাহ তাআলা-ই ভালো জানেন। ফতোয়া প্রণয়ন ও গ্রন্থনায় দারুল উলুম দেওবন্দ এর ইফতা বিভাগ কর্তৃক ৩০ এপ্রিল ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দ প্রকাশিত মূল ফতোয়ার সহযোগিতা নেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গ মাযার

'মাযার' আরবি শব্দ। এর বাংলা অর্থ- যিয়ারত বা দর্শনীয় স্থান। যে স্থানকে যিয়ারত করা হয়, তার নামই মাযার। মুসলমানের কবর যিয়ারত করা জায়েজ। রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

عن ابن بريدة عن أبيه قال قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم- « نهيتكم عن زيارة القبور فزوروها فإن فى زيارتها تذكرة

হযরত ইবনে বুরাইদা রাঃ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- আমি (ইতোপূর্বে) তোমাদের কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, এখন যিয়ারত কর। কেননা, কবর যিয়ারত মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয়। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৭০০, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৩০৫, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৫৭১, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৬৯

কিন্তু আমাদের ভালোভাবে বুঝতে হবে যে, উপরোক্ত হাদিসে প্রদত্ত অনুমতি সাপেক্ষে কবর যিয়ারত করা ছাড়া কবর তথা মাযারকে ঘিরে আরও আরও যত কাজ করা হয়, তার সবগুলোই বিদআত। কবরে মোমবাতি, আগরবাতি ইত্যাদি জ্বালানো, মাযারে মান্নত মানা, কবরে গিলাফ পড়ানো, কবরকে গোসল করানো, কবরকে সিজদা করা, কবরকে ঘিরে উরসের আয়োজন করা, মাযারে গিয়ে কবরবাসীর কাছে নিজের কল্যানের জন্য দুআ করা, মৃত ব্যক্তির কাছে নিজের প্রয়োজন পূর্ণ করে দেয়ার আবেদন করা ইত্যাদি কোনোটিরই শরিয়তে সামান্যতম বৈধতা নেই। এসব কাজ করা কোনো অবস্থায় জায়েজ নেই। এছাড়া মাযারে শিন্নি পাকানো, মাযারকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠানাদি পালন ইত্যাদি সকল কাজই বিদআত ও শরিয়ত গর্হিত গুনাহের কাজ। এসব কাজের আদৌ কোন ভিত্তি ইসলামে নেই।

মাযার এবং কবরকে ঘিরে উরস করা

স্বীয় কবরকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান করাকে নিষিদ্ধ করে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-

عن أبى هريرة قال قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم- « لا تجعلوا بيوتكم قبورا ولا تجعلوا قبرى عيدا وصلوا على فإن صلاتكم تبلغنى حيث كنتم (سنن ابى داود-كتاب المناسك، باب زيارة القبور، رقم الحديث-2044

তোমরা স্বীয় ঘরকে কবর বানিয়ো না। অর্থাৎ, কবরের ন্যায় ইবাদত-নামায, তিলাওয়াত ও যিকির ইত্যাদি বিহীন করো না এবং আমার কবরে উৎসব করো না। অর্থাৎ বার্ষিক, মাসিক বা সাপ্তাহিক কোন আসরের আয়োজন করো না। তবে হ্যাঁ, আমার উপর দরূদ পাঠ কর। নিশ্চয় তোমরা যেখানেই থাক না কেন, তোমাদের দরূদ (আল্লাহ তায়ালার ফেরেশতাদের দ্বারা) আমার নিকট পৌঁছে দেয়া হয়ে থাকে। -সুনানে আবু দাউদ: হাদিস নং-২০৪৪/৪০

এখানে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে- রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ রওযা মুবারকে উৎসব (উরস) পালন করতে বারণ করেছেন। তাহলে অন্য কে আর এমন আছে যার কবরে তা বৈধ হতে পারে?

হাদিসের বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার আল্লামা মুনাভী রহঃ এই হাদিসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন-

قال المناوي ويؤخذ منه أن اجتماع العامة في بعض أضرحة الأولياء في يوم أو شهر مخصوص من السنة ويقولون هذا يوم مولد الشيخ ويأكلون ويشربون وربما يرقصون فيه منهي عنه شرعا وعلى ولي الشرع ردعهم على ذلك وإنكاره عليهم وإبطاله (عون المعبود-كتاب المناسك باب زيارة القبور-6/23)

এ হাদিস থেকে বুঝা যায় যে, সাধারণ মানুষ যারা বছরের কোন নির্দিষ্ট মাসে বা দিনে উরস ইত্যাদির নামে ওলীদের মাযারে একত্রিত হয় এবং বলে- আজ পীর সাহেবের জন্মবার্ষিকী বা মৃত্যুবার্ষিকী, সেখানে তারা পানাহারেরও আয়োজন করে, আবার নাচ গানেরও ব্যবস্থা করে থাকে, এ সবগুলিই শরীয়ত পরিপন্থী ও গর্হিত কাজ। এসব কাজ প্রশাসনের প্রতিরোধ করা জরুরী। -আউনুল মা’বুদ-৬/২৩

মাযার ঘিরে বাতি প্রজ্বলন হারাম

عن ابن عباس قال : لعن رسول الله صلى الله عليه و سلم زائرات القبور والمتخذين عليها المساجد والسرج (سنن الترمذى- أبواب الصلاة عن رسول الله صلى الله عليه و سلم ، باب ما جاء في كراهية أن يتخذ على القبر مسجدا-2/136)

“হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত যে, রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিশম্পাত করেছেন (বেপর্দা) কবর যিয়ারতকারীনী মহিলাদের উপর, এবং সেসব লোকদের উপর যারা কবরকে মসজিদ বানায় (কবরকে সেজদা করে) এবং সেখানে বাতি প্রজ্জ্বলিত করে। -জামি তিরমীযী-২/১৩৬

উক্ত হাদিসে সুষ্পষ্ট কবরে বাতি প্রজ্জ্বলনকারীর উপর আল্লাহ তায়ালার অভিশম্পাত করেছেন আল্লাহর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

আরেক হাদিসে এসেছে,

عن عائشة رضي الله عنه أن رسول الله صلي الله عليه و سلم قال في مرضه الذي لم يقم منه، لعن الله اليهود والنصارى، اتخذوا قبور أنبيائهم مساجد.

হযরত আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোগশয্যায়্তযে রোগশয্যা হতে তিনি আর উঠে দাঁড়াননি, এরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা ইহুদি ও নাসারাদের লা’নত দিয়েছেন্ততারা তাদের নবীর কবরকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছে। -বুখারি ও মুসলিম

মাযারে মান্নত করা হারাম

আল্লাহ ছাড়া কারো নামে মান্নত বা কুরবানী করা যায় না। কারণ, মান্নত ও কুরবানী হচ্ছে ইবাদত। আর ইবাদত আল্লাহ তাআ'লা ব্যতিত অন্য কারো উদ্দেশ্যে করা জায়েজ নয়। অধিকন্তু জ্ঞাত থাকা প্রয়োজন যে, মান্নত জায়েজ হলেও এ বিষয়টির প্রতি ইসলামি শরিয়া কাউকে উৎসাহ প্রদান করে না। কিন্তু কেউ যদি কোনো ব্যাপারে মান্নত করে বসে তখন তার উপরে তা আদায় করা ওয়াজিব। মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-

قُلْ إِنَّ صَلاَتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (162) لاَ شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَاْ أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ (163) (سورة الأنعام-162-163)

আপনি বলুনঃ আমার নামায, আমার কুরবানী এবং আমার জীবন ও আমার মরণ বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহ তাআ'লার জন্যই। তাঁর কোন অংশিদার নেই। আমি তা-ই করতে আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি প্রথম আনুগত্যশীল। -সূরা আনআম-১৬২-১৬৩

সূরা কাউসারে মহান রাব্বুর আলামীন বলেন-

فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ

অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কুরবানী করুন। -সূরা কাউসার-২

প্রার্থনাঃ

মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদের জন্য দ্বীনের প্রতিটি বিষয়ে সহিহ এবং পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান অর্জন করার তাওফিক দান করুন এবং দ্বীনকে সুন্নাহর আলোকে ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে পালন করা সহজ করে দিন।

সময় নিয়ে লেখাটি পাঠ করার জন্য কৃতজ্ঞতা।

শান্তি বারতা, প্রারম্ভে এবং পরিশেষে।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৩৯

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: সুন্দর!

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৪২

নতুন নকিব বলেছেন:



বাদলা দিনে আপনার জন্য একরাশ শুভকামনা এবং কল্যানের দুআ। প্রথম মন্তব্যে আপনাকে পেয়ে ভালো লাগলো।

২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ধান ভানতে শীবরে গীতে চলে গেলেন ভায়া?
দান প্রসংগে বলতে গিয়ে মাজার, রওজা, জিয়ারত, মান্নত, ওসিলার বিরোধীতায় শেষ করলেন?

একি অজ্ঞতা? নাকি ভ্রান্ত বিশ্বাসের ফল?

মান্নত তো বাবা আদমের সময় থেকেই আল্লাহ মনোনীত বিধান।
যার মানত পূর্ন হতো তাই আল্লাহর পছন্দ বলে স্বীকৃত হতো! নয় কি?

আসুন জিয়ারত প্রসংগে
মাযার শরীফ যিয়ারত করা খাছ সুন্নত, এবং এর বিরোধিতা করা কুফরী।
8 আগস্ট, 2014, 10:38 AM-এসবাই
নিয়ত করে মাযার শরীফ বা কবর যিয়ারত করা খাছ সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত। যা কিনা অসংখ্য হাদীস শরীফের দলীল দ্বারা প্রমানিত। অথচ কিছু বাতিল ফির্কা,ওহাবী,সালাফী ,দেওবন্দী, জামাতি এরা কবর যিয়ারতকে বিদয়াত, শিরিক বলে থাকে , শুধু তাই নয় তারা যিয়ারতকে কবর পূজা বলেও আখ্যায়িত করে থাকে ! শুধু তাই নয়, তারা সারা বিশ্বে সকল মাযার শরীফ ভেঙ্গে ফেলার জন্য চেষ্টা করছে এবং অনেক মাযার শরীফ ভেঙ্গেও ফেলেছে। নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক !

আসুন আমরা বিস্তারিত দলীল আদিল্লা দ্বারা প্রমান পেশ করি মাজার শরীফ বা কবর যিয়ারত করা খাস সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত !
সহীহ হাদীস শরীফের মধ্যে এরশাদ হয়েছে--
عن ابن عمر رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم من زار قبري وجبت له شفاعتي
অর্থ: হযরত ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এরশাদ করেছেন, যে ব্যাক্তি আমার কবর ( রওজা শরীফ) যিয়ারত করলো তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেল।"
দলীল--
√ জামে ছগীর ১৭১ পৃষ্ঠা , √ শিফাউস সিকাম ২, √ ওফাউল ওফা ৩৯৪ পৃষ্ঠা !

অসংখ্য প্রমাণ আছে যা উল্লেক করতে গেলে কলেবর পোষ্টের চেয়ে বড় হয়ে যাবে।
অল্প কিছু দেখুন :
আসুন কবর যিয়ারত প্রসঙ্গে অন্যান্য হাদীস শরীফ গুলা লক্ষ্য করি।
বিখ্যাত হাদীস শরীফের কিতাব " মিশকাত শরীফে " কবর যিয়ারত প্রসঙ্গে " যিয়ারাতুল কুবুর" বা কবর যিয়ারত নামক একটা অধ্যায় রচনা করা হয়েছে ! সেখান থেকে কিছু দলীল পেশ করা হলো -
عن بريدة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم كنت نهيتكم عن زيارة القبور فزوروها
অর্থ : হযরত বুরায়দা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, আমি তোমাদের কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, এখন তোমরা তা করতে পারো।"
দলীল-
√ মুসলিম শরীফ, √ মিশকাত শরীফ ১৬৭০ ( বাংলা অনুবাদ, সুবিধার জন্য হাদীস নম্বর বাংলা অনুবাদ কিতাব থেকে দেয়া হলো যাতে সবাই সহজেই খুজে পায় )
كنت نهيتكم عن زيارة القبور فزوروها فا نها نزهد في الدنيا وتذكرة الاخرة
অর্থ : হযরত ইবনে মাসুদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, নিশ্চয়ই হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, আমি তোমাদের কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম , এখন তোমরা তা করতে পারো। কেননা উহা দুনিয়ার আসক্তি কমায় এবং আখিরাতকে স্মরন করায় !"
দলীল-
√ ইবনে মাজাহ, √ মিশকাত শরীফ ১৬৭৭

হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, একদিন নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনা শরীফের কিছু কবরের নিকট গেলেন অতঃপর তাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, সালাম হোক তোমাদের প্রতি হে কবরবাসী !"
দলীল-
√ তিরমীযি শরীফ, √ মিশকাত শরীফ ১৬৭৩

সহীহ হাদীস শরীফে বর্নিত আছে-
عن محمد بن النعمان يرفع الحديث الي النبي صلي الله عليه و سلم قال من زار قبر ابويه او احدهما في كل جمعة غفر له و كتب برا
অর্থ: হযরত ইবনে নোমান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ননা করেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি প্রত্যেক জুমুয়ার দিন নিজ পিতা-মাতা অথবা তাদের মধ্যে একজনের কবর যিয়ারত করবে তাকে মাফ করে দেয়া হবে |"
দলীল--
√ শুয়াইবিল ঈমান লিল বায়হাক্বী, √ মিশকাত ১৬৭৬

এ পবিত্র হাদীস শরীফেও একক ভাবে কবর যিয়ারত করার কথা বলা হয়েছে। যে ব্যক্তি তাঁর পিতা মাতার যিয়ারত করতে যাবে সে বাড়ী থেকে নিয়ত করেই রওয়ানা হবে অর্থাৎ যিয়ারতকারী একমাত্র কবর যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে কবরস্থানে গমন করবে। আর এ ক্ষেত্রে দূরবর্তী কিংবা নিকটবর্তী দূরত্বের কোন পার্থক্য নাই। নিকটেও যে হুকুম দূরেও একই হুকুম।
এ প্রসংগে আল্লামা আব্দুর রহমান যাফীরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
ولا فرق في الزيارة بين كون المقابر قريبة او بعيدة
অর্থ: কবর যিয়ারতের ক্ষেত্রে নিকট ও দূরের কোন পার্থক্য নাই।"
দলীল-
√ কিতাবুল ফিক্বাহ আলা মাযাহিবিল আরবায়া ১ম খন্ড ৫৪০ পৃষ্ঠা।,

হযরত আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
ندب الزيارة وان بعد محلها
অর্থ: দূরবর্তী স্থানেও (কবর) যিয়ারতের জন্য গমন করা মোস্তাহাব।"
দলীল-
√ শামী ২য় খন্ড ২৪২ পৃষ্ঠা।

এছাড়া আরো অসংখ্য সহীহ হাদীস শরীফে কবর যিয়ারত করার ব্যাপারে বলা হয়েছে। এসকল হাদীস শরীফের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত মুহাদ্দিস , হাফিযে হাদিস , আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
اعلم ان استحباب زيارة القبور قد ثبت بهذه الا حاديث ال جال والنساء جميعا وقد اختلفوا في النساء
অর্থ : জেনে রাখুন পুরুষ ও মহিলাদের জন্য কবর যিয়ারত এ সকল হাদীসের রায় অনুযায়ী মোস্তাহাব প্রমানিত, তবে মহিলাদের ব্যাপারে মতানৈক্য আছে।"
দলীল-
√ ফতহুল বারী ফি শরহে বোখারী ৩য় খন্ড ১১৮ পৃষ্ঠা |

বিখ্যাত ইমাম আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
وبزيارة القبور اي لا با با ءس بهابل تندب
অর্থ- কবর যিয়ারত এতে কোন অসুবিধা নেই, বরং এটা মোস্তাহাব!
দলীল-√ ফতোয়ায়ে শামী ২/২৪২

শুধু তাই নয় ওহুদ যুদ্ধে শহীদ গনের মাজার শরীফ যিয়ারত করার জন্য স্বয়ং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই প্রতি বছর ওহুদ প্রঙ্গনে যেতেন !যেটা বর্নিত আছে --
وفيه يستحب ان يزور شهداء جبل احد لماروي ابن ابي شيبة " ان النبي صلي الله عليه وسلم كان ياء تي قبور الشهداء باحد علي رأس كل حول فيقول السلا عليكم بما صبرتم فنعم عقبي الدار
অর্থ : ওহুদ পাহাড়ের শহীদগনের ( কবর) যিয়ারত করা মোস্তাহাব। ইবনে আবী শায়বা হতে বর্নিত আছে , হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি বৎসরান্তে ওহুদের শহীদগনের কবর যিয়ারত করতে আসতেন। অতঃপর বলতেন, তোমাদের প্রতি সালাম , যেমন তোমরা ধৈর্য ধারন করেছিলে তেমনি পরকালে উত্তম বাস স্থান লাভ করেছ।"
দলীল--√ ফতোয়ায়ে শামী ২য় খন্ড ২৩৪ পৃষ্ঠা !

বর্নিত আছে, পরবর্তীতে খলিফাতুল মুসলেমীন হযরত আবু বকর সিদ্দিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ও আমিরুল মু'মিনিন ওমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এই ধারাকে বজায় রেখেছিলেন। উনারাও উহুদ জিহাদে শহীদ গনের মাজার শরীফ যিয়ারত করতে যেতেন।"
দলীল-√ উমদাতুল ফিক্বাহ।

সেটার ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে আবেদীন শামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
ندب الزيارة وان بعد محلها
অর্থ : দূরবর্তী স্থানেও ( কবর) যিয়ারতের জন্য গমন মুস্তাহাব !"
দলীল-√ শামী ২য় খন্ড ২৪২ পৃষ্ঠা !

বিখ্যাত ফিক্বাহের কিতাব "ফিক্বহুস সুন্নাহ" কিতাবে এ প্রসংগে উল্লেখ আছে-
زيارة القبور مشتحبة للرجال
অর্থ: পুরুষদের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব।"
দলীল-√ ফিক্বহুস সুনান ১ম খন্ড ৪৯৯ পৃষ্ঠা।

বিখ্যাত হাদীস শরীফ বিশারদ, হাফিজে হাদীস আল্লামা হযরত বদরুদ্দীন আইনী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেছেন-
لان السيدة فاطمة رضي الله عنها كنت تزور قبر حمز كل جمعة و كانت عايشة رضي الله عنها تزور قبر اخيها عبد الرحمن بمكة كذا
অর্থ: হযরত সাইয়্যিদা ফাতিমাতুয যাহরা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা প্রতি শুক্রবার হযরত হামজা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার কবর যিয়ারত করতে যেতেন, অনুরূপ ভাবে হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা স্বীয় ভাই আব্দুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার কবর যিয়ারত করার জন্য মক্কা শরীফ যেতেন।"
দলীল-√ উমদাতুল ক্বারী ফি শরহে বুখারী ৮ম খন্ড ২৫০ পৃষ্ঠা।

শুধু তাই নয় শাফেয়ী মাযহাবের ইমাম, ইমাম শাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজে ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ যিয়ারত করার জন্য আসতেন ! যেটা ইমাম শাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি নিজেই বলেন-
اني لاتبرك بابي حنيفة واجءي الي قبره فاذا عرضت لي حاجة صليت ر كعتين و ساءلت الله تعالي عند قبره فتقضي سريعا
অর্থ : নিশ্চয়ই আমি ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে বরকত হাসিল করি। যখন আমার কোন সমস্যা দেখা দেয় তখন আমি উনার মাজার শরীফে এসে প্রথমে দুই রাকাত নামাজ আদায় করি। অতঃপর উনার উসীলা দিয়ে আল্লাহ পাকের নিকট সমস্যা সমাধানের জন্য প্রর্থনা করি।তা অতি তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে যায়।"
দলীল--√ ফতোয়ায়ে শমী, মুকাদ্দিমা ১ম খন্ড ৫৫ পৃষ্ঠা

এছাড়াও সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, তাবেয়িন, তাবে তাবেঈন রহমাতুল্লাহি আলাইহিম আজমাঈন উনাদের কবর যিয়ারত করার অসংখ্য দলীল প্রমাণ রয়েছে।
বিখ্যাত ওলী আল্লাহ মুজাদ্দিদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি সুলত্বনুল হিন্দ হাবীবুল্লাহ খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী আজমেরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার মাযার শরীফ যিয়ারত করতে গিয়েছিলেন। এতে যিয়ারত ভিন্ন আর অন্য কোন উদ্দেশ্যে ছিলো না।"
দলীল-√ সিরাতে মুজাদ্দিদে আলফে সানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি।

আর এ প্রসংগে ওহাবীদের ইমাম আশরাফ আলী থানবী ফতোয়া দিয়েছে-
"পুরুষদের জন্য কবর যিয়ারত করা মুস্তাহাব। যিয়ারত অর্থ দেখাশুনা। সপ্তাহে অন্ততঃ একদিন কবর যিয়ারত করা উচিত। সেদিন শুক্রবার হওয়াই সবচাইতে ভালো। বুজুর্গানে দ্বীনের কবর যিয়ারত করার জন্য সফরে যাওয়াও দুরস্ত আছে।"
দলীল-√ ইমদাদুল ফতোয়া।

আর প্রচলিত এই মাজার পূজা তত্ত্ব জন্মদেয় ভন্ড আবদুল ওাহাব। ওহাবী মতবাদের জনক।
ইবনে আব্দুল ওহাব আনুমানিক ১৭৪০ সাল থেকে ভ্রান্ত ওহাবি মতবাদ প্রচার করতে থাকেন যে মাজার জিয়ারত করা মাজার পুজার শামিল । তাই মাজার জিয়ারত ও এর জন্য সফর উভই হারাম। তাঁর এ ভয়ংকর মতবাদ দেখে তার পিতা তাঁকে তা থেকে বিরত থাকতে বলেন। ১৭৪৫ সালে তার পিতার মৃত্যু পর্যন্ত তিনি তার এ ভ্রান্ত মতবাদ প্রচারে বিরত থাকেন। কিন্তু তার পিতার ইন্তেকালের পরপরই আবার শুরু হয় তার এ প্রচারনা। তারই আপন ভাই তাঁকে এ ব্যাপারে পিতার নির্দেশের কথা স্মরণ করেও কোন ফল হয় নি। ভায়ের বাধার কারণে পরবর্তিতে সে তার নিজের ভাইকে হত্যা করে। শুধু তাই নয়, তারা আরবে অবস্থিত মাজার গুলো ধ্বংস করতে থাকে। উনবিংশ শতাব্দির শুরুতে এই ওহাবিরা মক্কা-মদিনা আক্রমণ করে সব কবর ধ্বংস করে ফেলে। কেবল মাত্র মসজিদে নববীতে অবস্থিত রাসুলে পাক (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তাঁর দুই সঙ্গী হযরত আবু বকর (রা) ও হযরত ওমর (রা) এর রওজা গুলো রক্ষা পায়। তারা বারবার ওগুলো ভাংতে উদ্যোগ নিলেও মুসলিম বিশ্বে বিশেষ করে মিশর ও তুরুস্কের প্রবল বাধা ও হুমকির মুখে তা থেকে বিরত থাকে।

এভাবে মাজার ভাঙার সংস্কৃতি তাদের মাধ্যমে বিবিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে, যা লিবিয়া, মালি, সোমালিয়া, তিউনিসিয়া,ইরাক ও সিরিয়াতে আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। ইরাকে যৌন জিহাদীরা হাজার হাজার মাজার ও কবর ধ্বংস করছে ।এরা নবি ও সাহাবীদের মাজারগুলোকেও রেহাই দিচ্ছে না । তারা মাজারের মধ্যে থাকা তাজা লাসকেও পর্যন্ত পা দিয়ে পিছে মারাতে কার্পন্য করছে না । কত বড় বেয়াদব এরা ! আল্লাহর অভিশাপ তাদের ও তাদের সমর্থকদের উপর পড়ুক ।

বাংলাদেশেও তাদের দোসররা হযরত শাহ জালাল (রা) সহ ভিবিন্ন স্থানে বোমা হামলা করেছিলো। এরা তালেবানি আর আল-কায়েদার উত্তরসূরি। সন্ত্রাসির মাধ্যমে তারা ইসলামের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা বুঝে না যে স্বয়ং নবী করীম (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মাজার জিয়ারতের জন্যে অসিয়ত করে গেছেন।

ওয়াহাবী মতবাদের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠাতা মুহম্মদ বিন ’আব্দিল ওয়াহাব নজদীকে যখন সুন্নী উলামায়ে কেরাম তাঁর বদ-আকীদা ও কুকীর্তির জন্যে দোষী করলো – তখন সে আত্মপক্ষ সমর্থন করে লিখেছে: “সুলাইমান বিন সুহাইল এমন কিছু ব্যাপারে আমাকে মিথ্যামিথ্যি অভিযুক্ত করেছে – যা আমি বর্ণনা করি নি, বরং এসবের অধিকাংশ আমার ধারণায়ও ছিলো না। যেমন- আমি নাকি নেককারদের উসীলা করাকে কুফরি বলেছি, আমি নাকি (নবীজীকে) “ইয়া আকরামাল খালক” বলার কারণে ইমাম বুসীরীকে কাফের বলেছি এবং আমি নাকি দালাইলুল খাইরাত পুড়িয়ে দিয়েছি! এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে আমার উত্তর হচ্ছে, সুবহানাকা! হাযা বুহতানুল ’আযীম!! অর্থাৎ হে আল্লাহ! তোমারই পবিত্রতা ঘোষণা করে বলছি, এসব জলজ্যান্ত মিথ্যে কথা!! (সূত্র: মুহম্মদ ইবনে ’আব্দিল ওয়াহাব নজদীর ১ ও ১১নং রিসালার ১২ ও ৬৪নং পৃষ্ঠা)

মাজার শরীফ জিয়ারতকে যারা কবর-পূজা বলে – তারা অহরহ তাদের এ গোমরাহীর সমর্থনে একটি হাদীছ শরীফ পেশ করে তার অপব্যাখ্যা করে থাকে। সেটি হচ্ছে, হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) বলেন, আল্লাহর রাসূল (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরমান: তিনটি মসজিদ ছাড়া আর কোথাও (উটের) হাওদা বেঁধো না; যথা- মসজিদুল হারাম, মসজিদুল আকসা ও আমার মসজিদ (মিশকাত: ৬৪২, বুখারী ও মুসলিম) আসুন! হাদীছ শরীফটি নিয়ে একটু বিশ্লেষণ করি:-

প্রথমত, এটি একটি মানসূখ বা রহিত হাদীছ শরীফ। নাসেখ বা রহিতকারী দু’টি হাদীছ শরীফ আগেই পেশ করেছি – যেখানে নবীজী (’আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ফরমান: আমি তোমাদের কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন থেকে জিয়ারত করো (মিশকাত: ১৬৬৮ ও ১৬৭৫)

দ্বিতীয়ত, এ হাদীছ শরীফে রওজা শরীফ, মাজার শরীফ ও মুসলমানদের কবর জিয়ারতের কোনো কথাই নেই। আর তাই, এটিকে কবর জিয়ারতের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলাটা চরম অজ্ঞতা ও হাস্যকর তথা গোমরাহী।

তৃতীয়ত, ঐ নিষেধাজ্ঞা শুধু অন্যান্য মসজিদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। নইলে, ঐ ৩টি মসজিদ ছাড়া আর কোথাও যাওয়ার উদ্দেশেতো বাড়ী থেকেই বের হওয়া যাবে না! যেমন- বাজার, অফিস-আদালত, ব্যবসা কেন্দ্র, স্কুল-কলেজ-মাদরাসা-বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, শ্বশুর বাড়ী, বিয়াইয়ের বাড়ী তথা আর কোথাওতো তাহলে যাওয়া যাবে না, তাই না?

চতুর্থত, একটি হাদীছ শরীফ দিয়ে আরেকটি হাদীছ শরীফকে ব্যাখ্যা করাই উত্তম ব্যাখ্যা। মুসনাদে আহমাদে উল্লিখিত হাদীছ শরীফটি আরেকটু বিস্তারিতভাবেই রয়েছে – যা অনায়াসে আলোচ্য হাদীছ শরীফটির ব্যাখ্যা হতে পারে; যেমন- হযরত আবূ সাঈদ খুদরী (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) বলেন, আল্লাহর রাসূল (সল্লাল্লাহুতা’লা ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরমান: মসজিদুল হারাম, মসজিদুল আকসা ও মসজিদে নবভী – এ ৩টি মসজিদ ছাড়া অন্য কোনো মসজিদে নামাজ আদায়ের উদ্দেশে সফর করা মুসাফিরের জন্যে সঙ্গত নয় (মুসনাদে আহমাদ:১১৬০৯)। সুতরাং এটা দিবালোকের মতোই পরিষ্কার হয়ে গেলো যে, ঐ নিষেধাজ্ঞা অন্যান্য মসজিদে বেশি সওয়াবের উদ্দেশে সফর করার বেলায়ই প্রযোজ্য; মাজার শরীফ বা কবর জিয়ারতের ক্ষেত্রে মোটেও প্রযোজ্য নয়।

আশা করি ভ্রান্তি থাকলে দূর হবে।
একজন অলি হওয়া মূখের করা না। রাজনৈতিক নেতা হ্ওয়া না যে চািইলঅম আর হয়ে গেলাম। এটা আল্লাহ এবং রাসূল সা: এর অনুমোদন ক্রমেই হ্ওয়া সম্ভব। যেখানে কোন ফাঁকি স্থান নেই। তাই একজন অলি আউলিয়াকে ছওট করার আগে, হেয় করার আগে হাজার বার ভাবা উচিত।

কোন ভুল বলে থাকলে ক্ষমা করবেন। আর সত্য হলে ধারন করবেন।
আল্লাহ হাজির ও নাজির। তিনিই শ্রেষ্ঠ মীমাংসা কারী।

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:২২

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রিয় ভাই,
দুঃখিত! এই লেখায় কোনো অলী আউলিয়ায়ে কেরামকে হেয় করা হয়নি। বরাবরই তাদের প্রতি আমাদের হৃদয় পূর্ণ শ্রদ্ধা। আপনি সম্ভবতঃ লেখাটা ভালোভাবে না পড়েই মন্তব্যে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন। শিরোনামটা অন্তত পড়ে থাকলে 'ধান ভানতে শীবের গীত' কথাটা বলতে পারতেন বলে মনে হয় না।

যাই হোক, সংক্ষিপ্ত আলোচনায় কিছু বিষয় সহিহভাবে সবার সামনে তুলে ধরাই ছিল এই পোস্টের একমাত্র উদ্দেশ্য। এছাড়া আমি পোস্টের কোথাও দাবি করিনি যে, আমার কথা শতভাগ অথেনটিক। সকলকে তা মেনে নিতে হবে- এমন কোনো কথাও বলার চেষ্টা করেছি, এমনটা নয়। সুতরাং, কোনো ভুল বা আপত্তি দৃষ্টিগোচর হলে তা দেখিয়ে দিলে অবশ্যই খুশি হবো।

আরেকটি কথা, কোনো ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর হয়ে আমি লিখি না। কুরআনুল কারিম, হাদিসে নববি, ইজমা এবং কিয়াস ভিত্তিক ইসলামী শরিয়াতের অতি সামান্য যে জ্ঞান আল্লাহ পাক দিয়েছেন তার আলোকে কিছু বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করি। এবং তা শুধু মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই।

আর, কবর পাকাকরণের কথা যদি বলেন, তাহলে সাহাবায়ে কেরামের চেয়ে বড় অলী আউলিয়া পৃথিবীতে কে হতে পারেন? তাদের কবরগুলোই সেক্ষেত্রে পাকাকরণের ব্যাপারে অধিক হকদার হওয়ার কথা। লক্ষাধিক সাহাবির ভেতরে কতজনের কবর পাকা সেটা হাতে গুণে বলা যাবে, আশা করি। দু'চার জনের কবর ছাড়া বাকি সাহাবায়ে কেরামের কবর পাকা হলো না কেন? কোনো সাহাবির কবরে সুসজ্জিত গম্বুজ নেই কেন? এর কারণ, এটা রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন বলেই তারা এই কাজ থেকে বিরত থেকেছেন। যে সাহাবায়ে কেরাম তাদের ইনতিকালের পরে নিজেদের দেহ আচ্ছাদনের জন্য নতুন কাপড় দেয়াকে পর্যন্ত অপছন্দ করতেন এই বলে যে, নতুন কাপড়ের অধিক হকদার তো জীবিতগণ, আমাকে পুরাতন আমার এই শীর্ণ পরিধেয় দিয়েই দাফন করে দিও। আজ আমাদের ভিতরে সাহাবায়ে কেরামের সেই আদর্শের বিন্দু পরিমাণ অবশিষ্ট থাকলেও আমরা আমাদের কবরগুলোকে আলোকসজ্জিত করে জীবিতদের গৃহগুলোকে অন্ধকারময় করে রাখতে পারতাম কি না সন্দেহ।

প্রিয় ভাই, মৃত অলী আউলিয়াদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের কাছে কোনো কিছু প্রার্থনা করা বা চাওয়ার বিষয়ে আপনার মতামত জানতে চাই।

শুভকামনা সবসময়।

আবারো বলছি, আপনি কষ্ট পেয়ে থাকলে বলেন, প্রয়োজনে পোস্টটাই সরিয়ে নিব। বিকজ অফ আই লভ বিদ্রোহী....

৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:০০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: একটু দূরের প্রসঙ্গে বিদ্রোহী ভৃগু হজরতের কাছে দুটো প্রশ্ন রাখি।

আহমদ রেজা খান বেরলভী সাহেবের ব্যাপারে আপনার কি অভিমত?

বেরেলি আর দেওবন্দী উলামার মতবিরোধের ব্যাপারেই বা আপনার কি মতামত?

৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মসজিদ মাজারের নামে টাকা তুলে বাটপারেরা ভাগ নেয় । এইসব একরকম চাঁদাবাজি।

৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২৯

রাজীব নুর বলেছেন: শুধু ধর্মীয় দিন না, মানবিক দিক বিচার করে হলেও অসহায় দরিদ্র মানুষদের সাহায্য করা দরকার।

৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪৯

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন:
আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, আল্লাহ কাছে কিছু চাওয়ার জন্য কোন উসিলা বা মাধ্যমের প্রয়োজন নেই। কারন যদি উসিলা সত্য হয় তাহলে ইসলামের যে অন্যতম ভিত্তি, স্রষ্টা যে একজন, তাওহীদ, সেটার ধারনা নষ্ট হয়।

অনেকেই বলেন, নবী ও ওলীগণ মৃত্যুর স্বাদ নিয়েও জীবিত থাকেন এবং আল্লাহুতা’লা তাঁদেরকে দুনিয়াবাসীদের সাহায্য-সহযোগিতা করার ক্ষমতা দান করেন। - এই বিষয়ে কি কোরানে কোথাও বলা আছে বা ইংগিত আছে? বা আমাদের মহানবী সাঃ কি এই সম্পর্কে কিছু প্রকাশ্যে বলেছেন?

আমি হাদিসের রেফারেন্সের চাইতে অবশ্য কোরানের রেফারেন্সকে বেশি প্রাধান্য দিবো। কারন পবিত্র কোরান শরীফকে অবিকৃত রাখ বা হেফাজত করার দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহপাক নিয়েছেন। কোন হাদীস শরীফের ব্যাপারে এই ধরনের কোন ওয়াদা কি আল্লাহপাক করেছেন কি না আমার জানা নেই। ফলে যা মানুষ দ্বারা সংরক্ষিত হয়েছে, মানুষের সর্বোচ্চ ও আন্তরিকভাবে চেষ্টা থাকা স্বত্তেও তাতে কোন ত্রুটি বা ভুল থাকতে পারে না - এমন দাবি শতভাগ করা সম্ভব নয়। তাই আমি যে কোন মাসালার ক্ষেত্রে কোরানের রেফারেন্সকেই মুলত প্রাধান্য দেয়ার চেষ্টা করি, সেখান থেকে তাফসীর। তারপর হাদীস। হাদীসের ক্ষেত্রে বোখারী শরিফ ও মুসলিম শরীফে আমি প্রধানত দেখার চেষ্টা করি।


দুই, ওলী বা পীর মানার বিষয়টিও আমার কাছে ব্যক্তিগত বলে মনে হয়েছে। যে কেউ যে কাউকে ব্যক্তিগতভাবে ওস্তাদ মানতেই পারে। ওস্তাদ মানে শিক্ষক। কোরানে শিক্ষকদের মর্যাদা সম্পর্কে বলা আছে। এখানে ধর্ম আপনাকে বলবে আপনার শিক্ষককে সম্মান করুন। কিন্তু শিক্ষককেই ধর্ম বানিয়ে ফেলতে ইসলাম বলে না।

নিয়ত করে মাজার বা কবর জেয়ারত করা যাবে না - এই কথাটা খুবই হাস্যকর। প্রতিটি কাজের নিয়ত থাকে। নিয়তের আরেকটা মানে হচ্ছে প্ল্যান। একটা পরিকল্পনা বলি - আমার বাসা ধানমন্ডি। আগামীকাল আজিমপুরে আমার এক বন্ধুর বাসায় আমার দাওয়াত আছে। শুনেছি আমার শশুরের কবর আজিমপুরে আছে। তাই ঠিক করেছি - আগামীকাল জুম্মার নামাজ শেষ করে আসার সময় উনার করব জেয়ারত করে আসব।

এই নিয়ত করতে কি কোন দোষের কিছু আছে?

এখন আপনি যদি বলেন - আমি ভারত ভ্রমনে যাবো। সেখানে গিয়ে আজমীর শরীরে যাবো।
- আজমীর শরীফ কেন যাবেন?
সেখানে একজন বিখ্যাত আউলিয়া আছে। আমি তার মাজারে যাবো। আমি মানত করেছিলাম, আল্লাহ আমার মনের বাসনা পূর্ন করলে আমি খাজা বাবার দরগায় সিন্নি দিব!

আমি মনে করি - এই ধরনের নিয়ত বা মান্নত বা পরিকল্পনা করা যাবে না। এটা ইসলামী মূল্যবোধ ও নীতিমালার সাথে কনফ্লিক্ট তৈরী করি।

আবার আপনি যদি বলেন, আমি ভারত ভ্রমনে যাচ্ছি। উদ্দেশ্য আজমীরে যাওয়া।
কেন আজমীরে যাবেন?
শুনেছি, সেখানে নিজামুদ্দিন নামে একজন প্রসিদ্ধ ওলি ছিলেন। উনারা দ্বীনের প্রচারে অনেক কষ্ট করেছেন, কাজ করেছেন। তাই এই ঐতিহাসিক ব্যক্তির কবর জেয়ারত করে উনার জন্য দোয়া করব।

আমি যতটুকু বুঝি - এতে কোন সমস্যা নেই।

ওলী আউলিয়াদের সম্মান দেখানোতে কোন সমস্যা নেই। সমস্যা হচ্ছে তাদের উসিলায় কিছু চাওয়া। আমি খুবই অল্প জানি। আমি যা বিশ্বাস করি বা বিভিন্ন রেফারেন্স বই পড়ে যা বুঝেছি, সেটাই এখানে বলেছি।

৭| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪০

মা.হাসান বলেছেন: ভৃগু ভাইয়ের মন্তব্য বিভ্রান্তি মূলক।

নকিব ভাইয়ের পোস্টে পরিস্কার বলা আছে কবর জিয়ারত করা জায়েজ। মাজার(!) নামক স্থানে জিয়ারত ছাড়া যে সব ভন্ডামি হয় এগুলি নিষিদ্ধ। আল্লাহর নামে মানত জায়েজ, অন্য কারো নামে মানত জায়েজ না। ভৃগু ভাই কি প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন?

উনি কোট করেছেনঃ ''عن ابن عمر رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم من زار قبري وجبت له شفاعتي
অর্থ: হযরত ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এরশাদ করেছেন, যে ব্যাক্তি আমার কবর ( রওজা শরীফ) যিয়ারত করলো তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেল।"'

মূল হাদিসে আছে কবর শব্দ। এখানে রওজা কোথা থেকে আসলো? কবর হলো কবর। নবি নিজে রওজা শব্দ বা মাজার শব্দ ব্যবহার করেন নি।
খৃস্টানদের মধ্যে কেহ কেহ তাদের নবিকে খোদা বানিয়ে ফেলেছে। মুসলমানদের কেহ কেহ এর চেয়ে বাড়াবাড়ি করেছে, নবি কে খোদার উপরে স্থান দিয়ে ফেলেছে (নবির পায়ের ধূলা আল্লাহর আরশের চেয়ে দামি- নাউজুবিল্লাহ)। কবর কে কবর বলুন। রওজা নয়।

এক লক্ষ চব্বিশ হাজারের মতো সাহাবির মাঝে হাতে গোনা কয়েকজনের কবর পাকা। বাকিদের কবরের কোনো চিহ্ণও নেই। ঐ সব কবর পাকা করা হয়েছে বিদাতি টুর্কিদের দ্বারা। সাহাবাদের জামানায় কেহ কবর পাকা করেছেন এমন নজির দেখান। ইসলাম আমরা কেউ সাহাবাদের চেয়ে বেশি বুঝি না।
শাজালাল, শাহপরান, মইনুদ্দিন চিশতি স হ সকল কবর মাটিতে মিশিয়ে দেয়া দরকার। ওনারা আল্লাহর ওলি। আমরা ওনাদের জীবন কাহিনী থেকে অনুপ্রেরনা নেবো। কিন্তু কবর সমান করার বিষয়ে সহিহ হাদিস আছে। প্রিয় নবির কবর নিয়ে যা করা হয়েছে তা দুঃখজনক। খোলাফায়ে রাশেদিনের সময়ে ওনার কবর যে শেপে ছিলো সেই শেপে আনা প্রয়োজন। কেহ যদি মনে করে সে সাহাবিদের চেয়ে নবিকে বেশি ভালোবাসে বা বেশি সম্মান দেখায়, তবে সে ভন্ড।

নবি কবর জিয়ারত করতে বলেছেন। কবর থেকে কিছু চাইতে বলেন নি। কবর কিভাবে জিয়ারত করতে হবে সেটাও নবি শিখিয়ে দিয়েছেন। কবরে যখন সালাম দেই তখন কামনা করি আল্লাহর তরফ থেকে কবরবাসির উপর শান্তি বর্ষিত হোক। এমন চাই না যে কবরবাসি আমাকে শান্তি দিক।

বর্তমান সৌদি রাজতন্ত্রে অপকর্ম অনেক, কিন্তু তারা কবর ভাঙার মাধ্যমে কিছু সুন্নতও প্রতিষ্ঠা করেছে। এই প্রসঙ্গে ফুরফুরার পীর সাহেব আবু জাফর সিদ্দিকী সাহেবের মূল্যবান বক্তব্য সংযুক্ত করলাম।




সূত্র: ''ফুরফুরার পীর আল্লামা আবু জাফর সিদ্দিকীর আল-মাউযূআত: একটি বিশ্লেষণাত্মক পর্যালোচনা" - লেখক ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর ( ইনি পীর সাহেবের জামাতা ছিলেন, এক জন হক আলেম ছিলেন।)

আসুন জিয়ারত প্রসংগে
মাযার শরীফ যিয়ারত করা খাছ সুন্নত, এবং এর বিরোধিতা করা কুফরী।


মাযার শরীফ কি জিনিস? একটি হাদিস দেখান যেখানে কবর কে মাজার শরিফ বলা হয়েছে।

৮| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৩

মা.হাসান বলেছেন: উপরে ছবিটি ভালো আসেনি, আবার দিলাম।

৯| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৭

আমি সাজিদ বলেছেন: বেশ চমৎকার আলোচনা চলছে।

১০| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০৫

মা.হাসান বলেছেন: নকিব ভাই, একটি বিষয় জানতে চাই। কোনো কোনো এলাকায় দেখেছি ঈদের সময় রুমাল-চাদর বের করা হয় ''ইমাম সাহেবের হাদিয়া''র জন্য। হাদিয়া আমার মতে চেয়ে নেয়া জায় না। যেটা চেয়ে নেয়া হয় সেটা ভিক্ষা। ভিক্ষুকের পিছনে ঈদের সালাত দুরস্ত হবে কি?
ইমাম সাহেব ওনার সম্মানি চেয়ে নিতে পারেন। আমার তাতে আপত্তি নেই। কিন্ত সেটা প্রি-এগ্রিড হওয়া বাঞ্চনীয় মন হয়। উনি কমিটির সাথে আলাপ করে এটা নিয়ে নিতে পারেন।

১১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৫৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: @নকীব ভায়া,
না ভায়া পুরোটা পড়েই অনেক ক্ষন অংশ নেব কি নেব না ভেবেই উত্তর লিখেছি।
মাজার প্রসংগ এবং এরপর যে বিষয়গুরৌ এসেছে তার উত্তরেই আরো ভিন্ন কি তথ্য এবং সত্য আছে তাই উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি মাত্র। এখনতো বলতে ইচ্ছে করছে উত্তর পুরোটা কি পড়েছেন?

একজন সাব্রিনার জন্র পুরো ডাক্তার সমাজকে হেয় করা যায় না, তেমনি মাজার কেন্দ্রীক কিছু মন্দ কাজ করনেওয়ালার জন্য মাজার বা অলি আউলীয়াদের জিয়ারত, তাঁদের ফয়েজ বরকতা লাভ থেকে দূরে থাকা উচিত নয়। এই বিষয় গুলোই অল্পে যতটুকু সম্ভব তুলে ধরতে চেয়েছি। বিকজ মি অলসো লভ ইউ।

একজীবনে চলে গেলে তো আর শোধরানোর সুযোগ নেই। তাই আর কি?

আর ইয়াজিদী গং মুসলিমদের মানসপট থেকে রাসূলে করিম ও তাঁর বংশধর অর্থাৎ আহলে বায়াতের নাম মুছে ফেলার জন্য এমন কিছু নেই যা করা হয়নি। আহলে বায়াতের প্রায় সব সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। জান্নাতুল বাকী এবং মাওয়া কবরস্থানে থাকা তাদের কবরগুলিকে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। রাসূলের নামে মিলাদ পড়াকে বেদাত বানানো হয়েছে। অগুণতি রাসূল প্রেমিকদের হত্যা করা হয়েছে। আহলে বায়াতের প্রতি অনুরক্ত শতশত সাহাবীদের জেলের মধ্যে হত্যা করা হয়েছে। কারা এসব করেছে? মুসলমানরাই করেছে। কারবালার নৃশংস হত্যাযজ্ঞের পর যেসকল মুসলিমরা নবী ও তার বংশধরদের অনুগত ছিলেন তাঁরা এর বিরুদ্ধে অভিনব এক সামাজিক প্রথার প্রচলন করলেন। মূলত ইরাক, ইরান, তুরস্কের দিকে এটির প্রচলন শুরু হয়। এই প্রথায় নিজের সন্তানের নাম রাখা হয় আহলে বায়াতের সদস্যদের নামে। আর সাথে মুহাম্মদ, আহমাদ, হুসেন, হাসান বা আলী যুক্ত করা হয়। এই প্রথার মাধ্যমে সন্তানদের মনে ও মগজে আহলে বায়াতের নাম গেঁথে দেয়াই উদ্দেশ্য ছিল। উমাইয়া রাজতন্ত্র বিশেষত সৌদ বংশ এবং তাদের অনুগত মুনাফেকরা নামের সাথে কখনোই আহমদ, মুহাম্মদ, হাসান, হোসেন অথবা আলী নাম ব্যাবহার করে না। আজহারি, তারেক মুনাওয়ার, জাকির নায়েকের নামের সাথে এসব নাম কখনো শুনেছেন? এখন কলেমা থেকে মুহাম্মাদের নাম বাদ দেয়ার চেষ্টা চলছে, নামের সাথে মুহাম্মদ নাম ব্যবহারের বিরূদ্ধে ফতোয়া দেয়া হচ্ছে। বিষয়টা অস্বাভাবিক না। তবে প্রকৃত মুসলিমদের মন ও মগজ থেকে আহলে বায়াতের নাম মুছে ফেলা অসম্ভব। মওলা হুসেইন এটাকে অসম্ভব করে দিয়ে গেছেন। কাল কেয়ামত পর্যন্ত আহলে বায়াতের নামেই মুসলমানরা পরিচিত হবে।

আপনার উভয়কালীন কল্যানকামনা করছি।

১২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:১৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: #কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন:
আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, আল্লাহ কাছে কিছু চাওয়ার জন্য কোন উসিলা বা মাধ্যমের প্রয়োজন নেই। কারন যদি উসিলা সত্য হয় তাহলে ইসলামের যে অন্যতম ভিত্তি, স্রষ্টা যে একজন, তাওহীদ, সেটার ধারনা নষ্ট হয়।

# দুই, ওলী বা পীর মানার বিষয়টিও আমার কাছে ব্যক্তিগত বলে মনে হয়েছে। যে কেউ যে কাউকে ব্যক্তিগতভাবে ওস্তাদ মানতেই পারে। ওস্তাদ মানে শিক্ষক। কোরানে শিক্ষকদের মর্যাদা সম্পর্কে বলা আছে। এখানে ধর্ম আপনাকে বলবে আপনার শিক্ষককে সম্মান করুন। কিন্তু শিক্ষককেই ধর্ম বানিয়ে ফেলতে ইসলাম বলে না।

<< উসিলার সাথে তাওহীদের কোন কনফ্লিক নেই ভায়া। এক না একক সেটা নিয়ে গবেষনা করতেই পারেন।
يَا أَيُّهَا ٱلَّذِينَ آمَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَٱبْتَغُوۤاْ إِلَيهِ ٱلْوَسِيلَةَ وَجَاهِدُواْ فِى سَبِيلِهِ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
”হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ্ পাককে ভয় কর এবং তাঁর নৈকট্য লাভের উপায় বা ওসিলা তালাশ কর”।
[সুরা মায়েদা,আয়াত নং ৩৫]।
এটা কোরআনের আদেশ। এখােন বলতে পারেন উলিল আমর কারা? এবং তাদেরই েকন অনুসরন করেত হেব । তার নির্দেশ পাবেন সুরা নিসায়-
يَا أَيُّهَا ٱلَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ ٱللَّهَ وَأَطِيعُواْ ٱلرَّسُولَ وَأُوْلِى ٱلأَمْرِ مِنْكُمْ
অর্থঃ হে ঈমানদার সকল! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর ও তাঁর রাসূল পাক ﷺ এঁর আনুগত্য কর এবং ওলিল আমরগণের আনুগত্য কর।
[সুরা নিসা,আয়াত নং ৫৯]

এই আয়াতে আল্লাহ ও রাসূলের ﷺ সাথে আরেকটি সম্প্রদায়ের কথা আছে যারা হল “ওলিল আমর,যাদের আনুগত্য করাও আল্লাহর নির্দেশ তথা ফরজ।এখন প্রশ্ন হল ”ওলিল আমর” কারা? ওলিল আমরের ব্যাখ্যায় তাফসীরে খাজেনে বলা হয়েছে- “রাসূল ﷺ এঁর আপন চাচাত ভাই, রইছুল মোফাচ্ছেরীন ও বিশিষ্ট সাহাবী হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضى الله عنه) এবং হজরত জাবের (رضى الله عنه) বলেন: তাঁরা হল ফোক্বাহা ও উলামাগণ”। [তাফসীরে খাজেন,১ম খন্ড,৩৯ পৃ:]
এখন ফোকাহা হল মুজতাহিদ তব্কার ফকিহগণ।ঐ রকম ফকিহদের ৭টি তবকা রয়েছে,আর সকল তব্ কার ফকিহ্দের আনুগত্য করাও (অবস্তা ভেদে) ফরজ। উলামা হল,যারা আল্লাহকে সর্বদা ভয় করেন।যেমন,আল্লাহ তায়ালা বলেন অর্থ: নিশ্চয় উলামা বা আলিমগণই আল্লাহকে ভয় করেন (আল কোরআন) । এই আয়াতের তাফছিরে উল্লেখ আছে,হজরত ইবনে আব্বাস (رضى الله عنه) বলেন, এই আয়াতের তাফছির করে বলেন: যারা আল্লাহকে ভয় করে তাঁরাই আলিম [দারেমী শরিফ,১ম খন্ড,১০৮ পৃ:] সুতরাং পবিত্র কোরআনের আয়াত দ্বারা প্রমান মুজতাহিদ তব্ কার ফকিহ্ ও তাক্বওয়াশীল আলিম তথা খোদাভীতু আলিমের অনুসরণ করা ফরজ।
এবং অিলেদর স্বরুপ আরো পরিষ্কার করেছেন বিভিন্ন আয়াতের মাধ্যমে। যেমন
إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ ٱللَّهُ وَرَسُولُهُ وَٱلَّذِينَ آمَنُواْ ٱلَّذِينَ يُقِيمُونَ ٱلصَّلاَةَ وَيُؤْتُونَ ٱلزَّكَاةَ وَهُمْ رَاكِعُونَ
”নিশ্চয়ই তোমাদের ওলি (বন্ধু) হলেন আল্লাহ এবং তাঁর রসুল আর ঈমানদার লোকেরা-যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দিয়ে দেয়,এবং আল্লাহর প্রতি অনুগত বাধ্যগত থাকে। [সূরা আল মায়িদা,আয়াত নং ৫৫]
وَمَن يَتَوَلَّ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُ وَٱلَّذِينَ آمَنُواْ فَإِنَّ حِزْبَ ٱللَّهِ هُمُ ٱلْغَالِبُونَ
”আর যারা ওলি (বন্ধু) মানে আল্লাহকে এবং আল্লাহর রসুলকে আর ঈমানদার লোকদেরকে,তারাই আল্লাহর দল এবং আল্লাহর দলই থাকবে বিজয়ী ” [সূরা আল মায়িদা,আয়াত নং ৫৬]

এবং অলিদের নিশ্চয়তাও দিয়েছেন পবিত্র কোরআনে
আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন ,পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ করেন, ﺃَﻻ ﺇِﻥَّ ﺃَﻭْﻟِﻴَﺎﺀ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻻَ ﺧَﻮْﻑٌ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﻭَﻻَ ﻫُﻢْ ﻳَﺤْﺰَﻧُﻮﻥَ
“সাবধান! নিশ্চয়ই যারা আল্লাহপাকের ওলী তাদের কোন ভয় নেই এবং চিন্তা-পেরেশানীও নেই।” [সূরা ইউনূছঃ ৬২]


#অনেকেই বলেন, নবী ও ওলীগণ মৃত্যুর স্বাদ নিয়েও জীবিত থাকেন এবং আল্লাহুতা’লা তাঁদেরকে দুনিয়াবাসীদের সাহায্য-সহযোগিতা করার ক্ষমতা দান করেন। - এই বিষয়ে কি কোরানে কোথাও বলা আছে বা ইংগিত আছে? বা আমাদের মহানবী সাঃ কি এই সম্পর্কে কিছু প্রকাশ্যে বলেছেন?

<<ওয়ালা তাহ সাবান্নাল্লাযীনা কুতিলু
ফি সাবীলিল্লাহি আমওয়াতান, বাল আহইয়া উন ই'নদা রাব্বিহিম ইউর যাকুন। সুরাঃ আলে ইমরান-(১৬৯)।
অর্থঃ যে আল্লাহর রাস্তায় ফানা হয়ে গেছে বা ইন্তেকাল করেছে তাহাকে কখনো (মরা) মৃত বলে ধারণা বা চিন্তাও করিও না।
বরং তাহারা জীবিত, আমি অলি আল্লাহদের গোপনে রিযিক দিয়া বাঁচাইয়া রাখি।
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاءٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ (169)

"যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে, তাদের কখনও মৃত মনে কর না, বরং তারা জীবিত এবং তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে জীবিকা পেয়ে থাকে।" (৩:১৬৯)

فَرِحِينَ بِمَا آَتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ وَيَسْتَبْشِرُونَ بِالَّذِينَ لَمْ يَلْحَقُوا بِهِمْ مِنْ خَلْفِهِمْ أَلَّا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ (170) يَسْتَبْشِرُونَ بِنِعْمَةٍ مِنَ اللَّهِ وَفَضْلٍ وَأَنَّ اللَّهَ لَا يُضِيعُ أَجْرَ الْمُؤْمِنِينَ (171)

"আল্লাহ নিজ অনুগ্রহ থেকে তাদের যা দিয়েছেন তাতেই তারা সন্তুষ্ট। শহীদদের পক্ষের যারা এখনও তাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি, তাদের সুসংবাদ দাও যে, তাদের ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।" (৩:১৭০)

আর নিয়ত করে জিয়ারত, মান্নত এগুলো নিয়ে আগের কমেন্টে মোটামুটি বিস্তারিত যা আছে বলেছি। মানা আর না মানা দিয়েইতো ইসলাম। মানলে মুসলমান না মানলে কাফের।
সব আরবেরতো একই রকম জুব্বা ছিল। পাগড়ী ছিল। যারা মোহাম্মদ সা: কে মেনেছে, বায়াত হয়েছে তারাই মুসলমান। যারা অস্বীকার করেছে তারা তা হয়নি।
ইয়াজিদ অনুগত্য করেনি আহলে বায়াতের কাছে। সে মুসলমান নয়। এটা আমার কথা নয়, জান্নাতে যুবকদের সর্দার ইমাম হোসাইনে রা: রায়। আমি বিশ্বাস করি। আমি মানি।

ভাল থাকুন। শুভকামনা সবসময়।




১৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৫৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: # মা.হাসান বলেছেন: ভৃগু ভাইয়ের মন্তব্য বিভ্রান্তি মূলক
নকিব ভাইয়ের পোস্টে পরিস্কার বলা আছে কবর জিয়ারত করা জায়েজ। মাজার(!) নামক স্থানে জিয়ারত ছাড়া যে সব ভন্ডামি হয় এগুলি নিষিদ্ধ। আল্লাহর নামে মানত জায়েজ, অন্য কারো নামে মানত জায়েজ না। ভৃগু ভাই কি প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন?
উনি কোট করেছেনঃ ''عن ابن عمر رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم من زار قبري وجبت له شفاعتي
অর্থ: হযরত ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এরশাদ করেছেন, যে ব্যাক্তি আমার কবর ( রওজা শরীফ) যিয়ারত করলো তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেল।"'

<< যাহা সত্য তাহাই বলেছি। সত্যকে বিভ্রান্তি মনে হবে যারা জানে না, অথবা যারা জেনেও মানে না।
রাসূল সা: রওজা জিয়ারত কতটা প্রেম এবং মর্তবার দেখুন! যে শাফায়াতের কাঙাল সকল মুসলিম তাই নিশ্চত করা হয়েছে, জিয়ারতের উসিলায়।
এখানে বিভ্রান্তির কিছু আছে কি? সরলা ভাষায় ব্যক্ত।

# মূল হাদিসে আছে কবর শব্দ। এখানে রওজা কোথা থেকে আসলো? কবর হলো কবর। নবি নিজে রওজা শব্দ বা মাজার শব্দ ব্যবহার করেন নি।
খৃস্টানদের মধ্যে কেহ কেহ তাদের নবিকে খোদা বানিয়ে ফেলেছে। মুসলমানদের কেহ কেহ এর চেয়ে বাড়াবাড়ি করেছে, নবি কে খোদার উপরে স্থান দিয়ে ফেলেছে (নবির পায়ের ধূলা আল্লাহর আরশের চেয়ে দামি- নাউজুবিল্লাহ)। কবর কে কবর বলুন। রওজা নয়।

<< কোনো মুসলিমকে যেখানে দাফন করা হয় ওই জায়গাকে ‘কবর’ বলা হয়। হাদিস শরিফে আছে, ‘মানুষের কবরটি হয়তো জান্নাতের একটি বাগান হবে অথবা জাহান্নামের একটি গর্ত হবে।’ বাগানকে আরবিতে ‘রওজা’ বলা হয়। অতএব আম্বিয়ায়ে কেরাম ও সাহাবিরা যেহেতু জান্নাতি, তদ্রূপ নেককার মুমিনরাও ইনশাআল্লাহ জান্নাতে যাবেন, তাই তাঁদের কবরকে সম্মানার্থে ‘রওজা’ও বলা যায়।
আর ‘মাজার’ও একটি আরবি শব্দ। বাংলায় এর অর্থ হচ্ছে জিয়ারতের স্থান। এই অর্থে শরিয়ত মতে সব মুমিনের কবরই ‘মাজার’, কেননা সব মুমিনের কবরই জিয়ারতের স্থান এবং কবরই জিয়ারত করা হয়ে থাকে। তবে আমাদের দেশের অলি-বুজুর্গদের কবরকে ‘মাজার’ বলা হয়, যেহেতু সেখানে মানুষ বেশি জিয়ারত করে থাকে।

সূত্র : তিরমিজি, হাদিস : ২৪৬০, বুখারি, হাদিস : ১৩৩০, মুসলিম, হাদিস : ১৯৭৭, ৯৭০, আবু দাউদ, হাদিস : ২০৪২

ভাই বিষয়টা হলো শ্রদ্ধা, সম্মান আর ভালবাসার।
জাতির পিতার সমাধিকে আপনি কবর বলবেন না মাজার বলবেন আপনার বিশ্বাস আর ভালবাসাই তা নির্ধারন করে, নয় কি? আর আমাদের রাসূল তো সর্বকালের রাসূল। উনার কবরকে কবর বলবে তারাই যারা রাসূল সা: কে হেয় করতে চায়। রিসালাতের শান মানকে বুঝতে চায়না, বা বুঝেও স্বীকার করে না। যা আমরা দেখেছি- কারবালায়! এবং এর পরবর্তী কর্মকান্ডে! তারা আহলে বায়াত এবং আহলে রাসুল সা: গণকে অপমান এবং হেয় করেই তৃপ্তি পেত। অথচ আল্লাহ যেখানে উনাদের সম্মান করতে আদেশ দিয়েছেন।
সুরা আহজাবের ৩৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে , “নামাজের জন্য আসো, হে গৃহবাসী (আহলে বায়েত)! আল্লাহ তো কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূরে রাখতে এবং তোমাদেরকে সর্ম্পুণ রুপে পুতঃপবিত্র রাখতে” ”

হযরত মোহম্মদ ও তাঁর পরিবার সমগ্র মানব জাতির জন্য মহান আদর্শ স্বরূপ। তাঁদের জীবন চলার পথ এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা দেখে মানুষ চিনতে পেরেছে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে। রাসুল্লাহর (দঃ) তাঁর জীবদ্দশায়ের পর তার নিজের পরিবারের মধ্যে যাদের অনুসরন করার জন্য মানব জাতি কে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তারাই হলো আহলে বাইত ।এ সম্পর্কে বিবি আয়েশা (রাঃ)বলেন - একদিন রাসুল্লাহ (দঃ) একটি কালো রংয়ের পশমী চাদর পরিহিত অবস্থায় ছিলেন । এমন সময় হাসান (রাঃ) এলেন । নবীজি তাকে চাদরের মধ্যে ঢুকিয়ে নিলেন। তারপর হুসাইন এলেন তাকে ও নবীজি চাদরে আবৃত করলেন এরপর বিবি ফতিমা (রাঃ) এবং হযরত আলী(রাঃ) ঠাঁই পেলেন । অবশেষে সবাইকে ধরে রাসুল্লাহ (দঃ) তেলওয়াত করলেন ‘ আল্লাহ শুধু এই ইচ্ছাই করেন যে, তোমাদের মধ্যে থেকে অপবিত্রতা দূর করবেন । হে আহলে বাইত এবং তোমাদেরকে উত্তম রূপে পবিত্র করবেন।’- সহীহ মিশকাত

# এক লক্ষ চব্বিশ হাজারের মতো সাহাবির মাঝে হাতে গোনা কয়েকজনের কবর পাকা। বাকিদের কবরের কোনো চিহ্ণও নেই। ঐ সব কবর পাকা করা হয়েছে বিদাতি টুর্কিদের দ্বারা। সাহাবাদের জামানায় কেহ কবর পাকা করেছেন এমন নজির দেখান। ইসলাম আমরা কেউ সাহাবাদের চেয়ে বেশি বুঝি না।

<<ইসলামিক ফউন্ডেশন বুখারী হাদিস নং ১৩০৮ আর তৌহিদ ফউন্ডেশন হাদিস নং ১৩৯০<
"হযরত সুফিয়ান তাম্মার (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওযা উটের কুজের ন্যায় উঁচু দেখেছেন।"
হযরত আলীর (রা) হাদিস যদি কাফের-মুশরিক-মুসলমান সবার উঁচু কবর মাটির সাথে মিশিয়ে দেবার কথা বলা হতো তাহলে নবীজি (সা) এর কবর উঁচু হতো না। মক্কা বিজয়ের পর নবীজি ল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাবা থেকে সব মুর্তি ভেঙ্গে কাবাকে পবিত্র করেছিলেন। মুর্তি ভাঙা আর মাজার ভাঙা এক জিনিস নয়। আরও কিছু সহীহ হাদিস থেকে আমরা দেখি কবর পাকা করা না জায়েজ কিনা।
উক্ত কিতাবদ্বয়ের পরবর্তী হাদিস< "হযরত উরওয়া (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ওয়ালিদ ইবনে আব্দুল মালিকের শাসনামলে (৮৬ হিজরীতে) একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওযা মুবারকের এক দিকের দেয়াল ধসে গেলে সাহাবায়ে কেরাম তা মেরামত শুরু করেন। মেরামতের সময় হঠাত এক খানা পা দৃষ্টি গোচর হল। উপস্থিত লোকজন মনে করলেন হয়তোবা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পা মুবারক হতে পারে। কিন্তু তথায় উপস্থিত হযরত উরওয়া রা (হযরত আয়েশা রা এর ভাগিনা) সমবেত লোকদের উদ্দেশ্যে বললেন, না আল্লাহর কসম, এটা নবী করীম (সা) এর পা মুবারক নয়। এটা তো হযরত উমর (রা) এর পা।" এটা বুঝা গেল সাহাবা কেরামই সর্ব প্রথম নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, হযরত আবু বক্কর (রা) ও হযরত ঊমর (রা) এর রওযা পাকা করেছিলেন।
উল্লেখ্য যে, হযরত উমর (রা) উম্মুল মুমেনিন হযরত জয়নাব বিনতে জাহাশ (রা) এর মাজারের উপর গম্বুজ নির্মাণ করেছিলেন। উম্মুল মুমেনিন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা) মক্কায়্য অবস্থিত তাঁর ভাই হযরত আব্দুর রাহমান (রা) এর কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ করেন। তায়েফে অবস্থিত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) এর কবরের উপর বিশিষ্ট তাবীঈ মুহাম্মাদ বিন হানফিয়া (র) গম্বুজ নির্মাণ করেছিলেন। (দেখুন মুন্তাকা সরহে মুয়াত্তা ও বাদায়ে সানায়ে)।
কবরকে নামাজের স্থান বানাতে নিষেধ করা হয়েছে কিন্তু কবর জিয়ারত বা কবর ধ্বংস করতে বলা হয়নি। বরং কবর জিয়ারত করলে মৃত্যুর কথা স্মরণ হবে সে কথাও হাদিসে এসেছে। কবর বা মাজার ভাঙা এসব ওহাবী আকিদা আর তারাই সন্ত্রাসির মাধ্যমে ইসলামকে কলুসিত করে যাচ্ছে। আল্লাহ আমাদেরকে তাদের কুমন্ত্রনা থেকে রক্ষা করুণ।

# বর্তমান সৌদি রাজতন্ত্রে অপকর্ম অনেক, কিন্তু তারা কবর ভাঙার মাধ্যমে কিছু সুন্নতও প্রতিষ্ঠা করেছে। এই প্রসঙ্গে ফুরফুরার পীর সাহেব আবু জাফর সিদ্দিকী সাহেবের মূল্যবান বক্তব্য সংযুক্ত করলাম।

<< বর্তমান সউদি রাজতন্ত্রের ভক্ত হলে তো আর কোন কথারই অবকাশ থাকে না। তাদের জন্ম, ইতিহাস গুগলেই যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায়। আর তারা ইসলাম থেকে যে শত শথ যোজন দূরে তা অতি সাধারণ মুসলমান্ও বোঝে। এখন আপনি তার প্রশংসা করলে- আপনাকে সালাম।
আপনি ফুরফুরার পীর সাহেব আবু জাফর সিদ্দিকী সাহেবের মূল্যবান বক্তব্য তে ভরসা রাখতে পারেন, কিন্তু ইমাম শাফেয়ী রাহ:
এর বক্তব্য কি সেই গুরুত্ব পায় না?
শাফেয়ী মাযহাবের ইমাম, ইমাম শাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজে ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ যিয়ারত করার জন্য আসতেন ! যেটা ইমাম শাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি নিজেই বলেন-
اني لاتبرك بابي حنيفة واجءي الي قبره فاذا عرضت لي حاجة صليت ر كعتين و ساءلت الله تعالي عند قبره فتقضي سريعا
অর্থ : নিশ্চয়ই আমি ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে বরকত হাসিল করি। যখন আমার কোন সমস্যা দেখা দেয় তখন আমি উনার মাজার শরীফে এসে প্রথমে দুই রাকাত নামাজ আদায় করি। অতঃপর উনার উসীলা দিয়ে আল্লাহ পাকের নিকট সমস্যা সমাধানের জন্য প্রর্থনা করি।তা অতি তাড়াতাড়ি সমাধান হয়ে যায়।"
দলীল--√ ফতোয়ায়ে শমী, মুকাদ্দিমা ১ম খন্ড ৫৫ পৃষ্ঠা

আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন। অলি আউলিয়াদের শানে বেয়াদবী থেকে রক্ষা করুন। কারণ অলির সাথে শত্রুতা আল্লাহর সাথে শত্রুতারই নামান্তর।

ভাল থাকুন।

১৪| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কবর/ মাজারে গিয়ে ওখানে যিনি শুয়ে আছেন তার জন্য দোয়া করা যায়। কিন্তু উলটা যদি মনে করা হয় যে শায়িত ব্যক্তি আপনার ভালো করবেন বা অসিলা হবেন তবে এটা পরিষ্কার শিরিক। মৃত ব্যক্তির কোনও ক্ষমতা নেই। সে নিজেই হয়ত বিপদে আছেন।

১৫| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১৩

নতুন বলেছেন: বর্তমানে পীর/মাজারের নামে কি হচ্ছে?

ব্যবসা হচ্ছে আর কিছুই না। এমনকি মসজিদ আর মাদ্রাসা নিয়েও রাজনিতি আর ব্যবসা হচ্ছে।

যদি সৃস্টিকতা একজন হয়ে থাকে এবং তিনিই সব ক্ষমতার মালিক তবে অন্য কারুর কাছে যাবার প্রয়োজন কেন?

প‌ীর মানে শিক্ষক। কিন্তু এখানে বর্তমানে পীর মানে হচ্ছে ইসলাম বিষয়ে গোপন জ্ঞানের অধিকারী যিনি সৃস্টিকতার সাথে কানেসান আছে।

বর্তমানে ধর্মের নামে দান সদকার উপরে নিয়ন্ত্রন নেওয়ার জন্য রিতিমতন প্রতিযোগিতা হয় পীর ফকির আর হুজুর দের মাঝে।

পীর, মাজার,ফকির সবই বর্তমানে খুবই নিরাপদ একটা ব্যবসা মাত্র।

১৬| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: @সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: হযরত ধন্যবাদ।

এত বড় দুইটি ইস্যুকে দুই লাইনে জানতে চেয়েছেন, যার উত্তর দুই প্রবন্ধ হয়ে যাবার সম্ভাবনাই বেশি!
অন্য কোন খানে না হয় আলাপ হবে আহলে বায়াত, পাক পাঞ্জাতন, ইশকে ইলাহী, ওয়াহদাতুল ওজুদ,
সৃষ্টি তত্ত্ব আর স্রস্টাতত্ত্ব নিয়ে :) যদি আগ্রহ থাকে :)

ভাল থাকুন।শুভেচ্ছা অন্তহীন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.