নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবিঃ অন্তর্জাল।
পানিফলের ঔষধি ও পুষ্টি গুণ
ফল যখন পানিফলঃ
দেখতে কালচে বেগুনি রঙের এবং কিছুটা এবড়োথেবড়ো বলে এই ফল আমি আগে কোনো দিন খাইনি। হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখেছি বলেও মনে পড়ে না। অবশ্য গত কিছু দিন পূর্বে প্রথম টেস্ট করতে হয়েছে অনেকটা ঠেকায় পড়ে। কিন্তু খেয়ে বেশ ভালোই লাগলো। পরিবারের ছোটদের আগ্রহের কারণেই মূলতঃ এই ফল খাওয়ার সুযোগ হয় এবং খাওয়ার প্রয়োজনেই এটির বিষয়ে জানারও দরকার হয়। গুগল করে বুঝতে পারলাম যে, দেখতে যেমন-তেমন হলেও পানিফল আসলে বেশ উপকারী একটি দেশী ফল। দেশী ফলফলাদির কদর এমনিতেই কমে যাচ্ছে ক্রমান্বয়ে। অনেক প্রজাতিই দিনকে দিন হারিয়ে যাচ্ছে। পানিফলটাও যাতে অবহেলা আর অযত্নে আমাদের দেশ থেকে হারিয়ে না যায় সে দিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। পানিফল মূলতঃ একটি বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। দেশে একসময় এই ফলের ব্যাপক কদর ছিল। নানান কারণে যদিও তা এখন অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। হয়তো আগের মত এখন আর এটি সহজলভ্য নয় অথবা দেশী বিদেশী নানা প্রজাতির ফলের সমারোহে এটির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন অনেকে।
পানিফলের গাছ
যেভাবে খেতে হয় পানিফলঃ
পানিফল কাঁচা এবং সেদ্ধ দুভাবেই খাওয়া যায়। পুরু খোসা ছাড়িয়ে ভেতরের শাঁসটি খেতে হয়। পানিফলের ব্যাপক পুষ্টিগুণ রয়েছে যা শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ, শরীর গঠন, রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
পানিফলের পরিচয় এবং উৎপত্তিঃ
পানিফলের বৈজ্ঞানিক নাম Trapa natans। এর ইংরেজি নাম water chestnut। পানিফল স্থানভেদে water caltrop, buffalo nut, devil pod নামেও পরিচিত। পানিফলের আদি নিবাস ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকা হলেও এর প্রথম দেখা পাওয়া যায় উত্তর আমেরিকায়। অথচ যুক্তরাষ্ট্রেরই বেশ কিছু জায়গায় পানিফলের গাছকে আগাছা হিসেবে গণ্য করা হয়! জানা যায় যে প্রায় ৩০০০ বছর পূর্বে চীনে পানিফলের চাষ হতো।
পানিফল যেন প্রাকৃতিক সিঙ্গারাঃ
পানিফলের গঠনটা চমৎকার। এটি দেখতে সিঙ্গারার মতো। পানিফলের রয়েছে ব্যাপক পুষ্টিগুণ যা শরীরের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ, শরীর গঠন, রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
পানিফলের পুষ্টি গুণঃ
পানিফলের প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য অংশে রয়েছে-
খাদ্যশক্তি- ৬৫ কিলোক্যালরি
জলীয় অংশ- ৮৪.৯ গ্রাম
খনিজ পদার্থ- ০.৯ গ্রাম
খাদ্যআঁশ- ১.৬ গ্রাম
আমিষ- ২.৫ গ্রাম
চর্বি- ০.৯ গ্রাম
শর্করা- ১১.৭ গ্রাম
ক্যালসিয়াম- ১০ মিলিগ্রাম
আয়রন- ০.৮ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি১- ০.১৮ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি২- ০.০৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি- ১৫ মিলিগ্রাম
পানিফলের ঔষধি যত গুণাগুণঃ
পানিফলের শুধু খাদ্যগুণ নয়, রয়েছে ঔষধি গুণও! যেমন -
পেটের রোগ থেকে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ। এমনকি এতে রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধক গুণও।
শরীর ঠাণ্ডা করতে পানিফলের জুড়ি নেই। শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে দারুণ কাজ দেয় এই পানিফল। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর পানিফলে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি ভাইরাল গুণ রয়েছে। এমনকি অ্যান্টিক্যানসার হিসেবেও কাজ করে পানিফল। বমিভাব, হজমের সমস্যা দূর করতে পানিফলের জুড়ি নেই। অনিদ্রা, দুর্বলতা দূর করতে কাজে দেয় এই ফল। পানিফল ঠাণ্ডালাগা, সর্দিতেও স্বস্তি দিতে পারে। ব্রঙ্কাইটিস, অ্যানিমিয়া কমাতে পারে এই ফল।
পটাশিয়াম থাকায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভাল কাজ করে পানিফল। ত্বক উজ্জ্বল আর সতেজ রাখতেও পানিফল অনবদ্য। পটাশিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন B, ভিটামিন E ভরপুর পানিফল চুল ভালো রাখে।
দারুণ কার্যকরী পানিফলের শাঁস শুকিয়ে রুটি বানিয়ে খেলে অ্যালার্জি ও হাত-পা ফোলা রোগ কমে যায়। বিছা বা পোকা কামড় দিলে আহত স্থানে পানিফল পিষে লাগালে ব্যথা দ্রুত সেরে যায়।
দেশী সুন্দর এই ফলটির স্বাদ সময় সুযোগমত একবার হলেও চেখে দেখতে অনুরোধ থাকলো। ধন্যবাদ সকলকে।
তথ্য গ্রহণের জন্য কৃতজ্ঞতা- ভেষজ ও স্বাস্থ্য ফেবু পেজ এবং Click This Link
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩৪
নতুন নকিব বলেছেন:
নিকটস্থ নার্সারিতে খোঁজ নিলে আশা করি, সন্ধান পেয়ে যাবেন।
ধন্যবাদ।
২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৫
ওমেরা বলেছেন: আমি এটা ছোট বেলায় খেয়েছিলাম।
৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর একটা পোষ্ট দিয়েছেন।
এই ফলটা সম্পর্কে আমার জানার ইচ্ছা ছিলো খুব।
৪| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২০ ভোর ৫:০৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
খুব ভাল একটি ফল নিয়ে লিখেছেন ।
এটি স্বাদে যেমন ভাল তেমনি বিবিধ ধরনের খাদ্যগুনেও ভরপুর ।
মুক্তি যুদ্ধের সময়ে চারদিকে জলাসয়ে ঘেরা দুর্গম স্থানে অবস্থানের সময় বর্ষাকালে বিলে ও বাইদে জন্মানো পানিফল
আমাদেরকে অনেকটা বাচিয়ে রেখেছিল । প্রতি দিনই বিল হতে তোলা বিভিন্ন জাতের প্রচুর পানিফল খেতাম সকলে ।
শুধু কি পানিফল বিলে পাওয়া যেতু তিন কোনা কাটা ওয়ালা সিংরা , শাপলা ফুল হতে জন্ম নেয়া ভেট ফল, শাপলা গাছের নীচে শালুক , পদ্ম ফুল হতে জন্ম নেয়া মাকনা ফল সবই ছিল খুবই সুস্বাধু ও খাদ্যগুণ সম্পন্ন । হাউর এলাকায় এখনো প্রচুর পানিফল , শাপলা, শালুক পাওয়া যায় ।
শাপলা ফল ( ভেট )
শাপলা গাছের নীচে জন্ম নেয়া শালুক
দলবেধে পানিতে নেমে শালুক আহরন
পদ্মফুলের নীচে জন্ম নেয়া মাকনা ফল
হাউর, বাউর, বিল ও জলাসয়গুলিতে এখন ঘের দিয়ে মাছ চাষের ফলে পানিফল সহ উপরে দেখানো বিভিন্ন জাতের পানি ফলের
আবাদ এখন দেশে অনেক কমে গেছে । অথচ এগুলি ছিল আমাদের দেশের বদ্ধ পানির জলাসয়গুলির সুস্বাস্থের ইনডিকেটর ।
এদের আবাদ আগের মতই চলুক আমাদের গ্রামীন এলাকার জলাসয়গুলিতে এ কামনাই রইল ।
পোষ্টটি প্রিয়তে গেল
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:২৫
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: একটা চারা দরকার আমার।