নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

মৃতের পরিবারের লোকেরা কাউকে খাওয়াবে না, বরং এলাকাবাসীরই খাওয়ানোর কথা তাদেরকে

২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৫৭

ছবিঃ অন্তর্জাল।

মৃতের পরিবারের লোকেরা কাউকে খাওয়াবে না, বরং এলাকাবাসীরই খাওয়ানোর কথা তাদেরকে

আমাদের সমাজে প্রচলিত সাধারণ একটি নিয়ম রয়েছে- কোনো ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তার সন্তান সন্তুতি এবং পরিবার পরিজনদের দেখা যায়, আত্মীয় স্বজন এবং এলাকাবাসীর জন্য তারা খানাদানা ও ভোজের আয়োজন করে তাদেরকে খাইয়ে থাকেন। এটার নাম দেয়া হয়ে থাকে মুর্দা খাওয়ানো বা মুর্দার নামে খাওয়ানো। প্রকৃতপক্ষে মুর্দা ব্যক্তি তো আর কখনোই খান না। তার পক্ষে খাওয়া সম্ভবও নয়। তার নাম দিয়ে জীবিতগণই এগুলো খেয়ে থাকে। কখনো কখনো এমনও দেখা যায় যে, কারও নামে খাওয়ানো না হলে সেই পরিবারের লোকদেরকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা হয়। ভিন্ন চোখে দেখা হয়। সমাজের ভ্রুকুটির শিকার হন তারা এমনকি হেয়প্রতিপন্ন হওয়া থেকেও বাঁচতে পারেন না অনেক সময়ে। অর্থবিত্ত যাদের যথেষ্ট পরিমানে রয়েছে তারা তো বিরাটাকারে ভোজের আয়োজন করে থাকেন কিন্তু যারা গরিব অসহায় অভাবী, দিন এনে দিন খেতে হয় যাদের, একটা দিন কাজ না করলে সে দিনের খাবার জোটে না যাদের- নিকটাত্মীয়দের মৃত্যুতে তাদের জীবনে নেমে আসে অন্ধকারের কালো ছায়া। তাদের শুরু হয় জীবন মরণ যন্ত্রণা। সমাজের তথাকথিত নেতাদের তিরষ্কার, ভর্ৎসনা আর চাপে চ্যাপ্টা হবার যোগার তাদের। জমি বেঁচে হোক আর সূদে অর্থ গ্রহণ করে হোক, যে করেই হোক ঋণ করে হলেও খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করতে বাধ্য হন তারা। এমন নজির ভুরি ভুরি এবং এই প্রচলন শহর বন্দর ছাপিয়ে গাও গ্রামে, এমনকি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে।

কারও মৃত্যুতে তার পরিবারের সদস্যরা এলাকাবাসীকে না খাওয়ালে যে তিরষ্কারের মুখোমুখি হতে হয়, তার ভাষাগুলোও সাঙ্ঘাতিক রকমের। বলা হয়- 'অমুকের ছেলেরা এলাকার মানুষের হাতটা পর্যন্ত ধোয়াতে পারলো না!'

'আরে! বাবা তোরা না পারিস তো পাঁচ কেজি করে চাল ভিক্ষে চা, সবাই দিবে, তা দিয়েই না হয় খাওয়ানোর আয়োজন কর!'

'আহারে পোড়া কপাল রে! এত এত ধন সম্পদ রেখে গেল, ছেলে মেয়েরা তার নামে একটা চল্লিশা পর্যন্ত খাওয়াতে পারলো না।' ইত্যাদি ইত্যাদি।

মৃত ব্যক্তির নামে প্রচলিত খানাদানার আয়োজন করা কি আসলেই আবশ্যক?

আমাদের দেশে মৃত ব্যক্তির নামে তিন দিনের দিন কুলখানি নামে এবং ৪০ দিনের দিন চল্লিশা নামে যে খানার আয়োজন করা হয়, তা ইসলামসম্মত নয়। তবে হ্যাঁ, মৃত ব্যক্তির ইসালে সাওয়াবের নিয়তে দিন-তারিখ নির্দিষ্ট না করে গরিবদের খাওয়ানো বৈধ। কিন্তু আমাদের দেশে যেভাবে প্রথা বানিয়ে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে খানার আয়োজন করা হয়, ধনী-গরিব সবাইকে আমন্ত্রণ করে এক বিশাল অনুষ্ঠান করা হয়, সামাজিক কারণে অনেকে অর্থবিত্ত না থাকা সত্ত্বেও এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করতে বাধ্য হন- এসব পদ্ধতি সঠিক নয় এবং এগুলো নিঃসন্দেহে গর্হিত বিদআতমূলক কাজের মধ্যে পড়ে।

কুরআন হাদিসে এসবের বাধ্য বাধকতার নজির নেইঃ

কুরআনুল কারিম দ্বারা এসব আচার অনুষ্ঠান প্রমানিত নয়। হাদিসে নববী এবং সাহাবাদের জীবন থেকেও এসবের কোনো বৈধতা পাওয়া যায় না। বাধ্যবাধকতার তো কথাই আসে না। এসব খানাদানার অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্রে বরং কোথাও কোথাও লোক দেখানোর জন্য প্রতিযোগিতামূলক খাবারের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ ধরনের খানা খেতে হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে। ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমা বলেন, ‘মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অহংকারীর খাদ্য গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন।’ -আবু দাউদ, হাদিস : ৩৭৫৪

মৃতের শোকাহত পরিবারের জন্য খাবারের আয়োজন করার নির্দেশ প্রদান করেছে ইসলামঃ

আমরা এ বিষয়টিতে আরো স্পষ্ট হতে পারি নিচের হাদিসের নির্দেশনা থেকে। যে হাদিসে বলা হয়েছে- কারো মৃত্যুর পরে মৃত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে খাওয়া তো দূরের কথা, উল্টো তিন দিন মৃতের শোকাহত পরিবারের জন্য খাবারের আয়োজন করার নির্দেশ প্রদান করেছে ইসলাম। -আবু দাউদ, হাদিস : ৩১৩৪

মৃত ব্যক্তির বাড়ির আনুষ্ঠানিকতা ও খাদ্যায়োজনকে শরিয়তনিষিদ্ধ মাতম মনে করা হতোঃ

আমাদের সমাজে চল্লিশা, কুলখানি ইত্যাদির মাধ্যমে উল্টো মৃত ব্যক্তির পরিবারের কাছ থেকে খাবার আদায় করা হয়! অথচ, জারির ইবনে আবদুল্লাহ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেন, ‘আমরা রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর যুগে মৃত ব্যক্তির বাড়ির আনুষ্ঠানিকতা ও খাদ্যায়োজনকে (শরিয়তনিষিদ্ধ) মাতম বলে গণ্য করতাম।’ -মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৬৮৬৬, ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬১২

মৃত ব্যক্তির জন্য সাওয়াব পৌঁছানোর সঠিক পথ ও পদ্ধতিঃ

মূল কথা হলো, মৃত ব্যক্তির জন্য বছরের যে কোনো দিন যে কোনো ভালো আমল দ্বারা ইসালে সওয়াব করা একটি ভালো কাজ। নগদ টাকা সদকা করা, বিনিময় ছাড়া তিলাওয়াত, তাসবিহ অথবা গরিব-মিসকিনদের খানা খাওয়ানো ইত্যাদির মাধ্যমে যে কোনো সময় ইসালে সওয়াব করা যায়। তবে দিন-তারিখ নির্ধারিত করে, যেমন- তিন দিনা, সাত দিনা, চল্লিশা বা চল্লিশ দিনা বা মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা নব-আবিষ্কৃত কুপ্রথা। এগুলো বিদআতমূলক রুসম রেওয়াজ মাত্র। এসব প্রথা এবং কার্যাবলী শরিয়তসম্মত না হওয়ায় তা নিঃসন্দেহে বর্জনীয়। -রদ্দুল মুহতার : ২/২৪০, ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত : ১/৪৩৯-৪৪৭

মৃত ব্যক্তির পরিবারের প্রতি কেমন ছিল মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর করুনা এবং মমত্বপূর্ণ আচরণঃ

আমাদের সমাজে চলমান মৃত ব্যক্তির পরিবারের উপরে জুলূম চাপিয়ে দেয়ার এই যে উপরে বর্ণিত অপপ্রথা, এর কারণ কি? এর নানাবিধ কারণ থাকতে পারে। তবে একটি কারণ সম্ভবতঃ, মৃত ব্যক্তির পরিবারের প্রতি সদয় না হওয়া, তাদের প্রতি সহৃদয়তার পরিচয় না দেয়া। সঙ্গত কারণে আমাদের জেনে নেয়া প্রয়োজন যে, মৃত ব্যক্তির পরিবারের প্রতি কেমন ছিল মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর করুনা এবং মমত্বপূর্ণ আচরণ।

বস্তুতঃ জীব মাত্রেরই মৃত্যু অনিবার্য। আর মুমিনের পরম আরাধ্য পরকালীন জীবনই। মায়াভরা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে সবাইকে। তবু প্রিয়জনের বিদায় মানুষকে ব্যথিত করে, শোকসন্তপ্ত করে, বিহবল করে তোলে। প্রিয়জন হারানো এই শোকাতুর মানুষগুলোর প্রয়োজন একটু মমতা, একটু হৃদ্যতাপূর্ণ আচরণের, একটু আশা ও সান্ত্বনার বাণীর। প্রিয় নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রিয়জন হারানো মানুষদের সেবা, সান্ত্বনা ও খোঁজখবর রাখার শিক্ষা দিয়েছেন আমাদের। আসুন, দেখে নিই কেমন ছিল মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের প্রতি তাঁর আচরণ-

মৃত ব্যক্তির পরিবারের প্রতি সান্ত্বনাঃ

মৃত ব্যক্তির পরিবারের জন্য সবচেয়ে বড় সাহায্য হলো সান্ত্বনা দেওয়া ও ধৈর্যধারণে তাদের উৎসাহিত করা। কেউ মারা গেলে মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার বাড়ি যেতেন এবং তাদের আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিতেন। মৃত ব্যক্তির পরিবারকে শোক ও বিলাপের পরিবর্তে ধৈর্যধারণে উৎসাহিত করতেন। উম্মে সালমা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের কারো ওপর বিপদ এলে সে যদি বলে, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহুম্মা আজুরনি ফি মুসিবাতি ওয়াখলিফলি খাইরাম-মিনহা। (নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা নিশ্চয়ই তাঁর কাছে ফিরে যাব। হে আল্লাহ! আমাকে আমার বিপদের উত্তম প্রতিফল দান করুন এবং বিপদকে আমার জন্য কল্যাণে পরিবর্তন করে দিন) আল্লাহ তার বিপদকে কল্যাণে পরিবর্তন করে দেন।’ -সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২১৬৬)

সন্তানহারা মায়ের প্রতি বিশেষ সান্ত্বনাঃ

নারী কোমল হৃদয়ের অধিকারী। আপনজনের মৃত্যুতে তারা বেশি শোকাতুর হয়। বিশেষত যদি মৃত্যুটা সন্তানের হয়। তাই মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সন্তানহারা মাকে বিশেষ সান্ত্বনা দিতেন। তিনি বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে নারী তিনটি সন্তান আগেই পাঠাবে (মারা যাবে), তারা তার জন্য জাহান্নামের প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াবে।’ তখন জনৈক নারী বলল, আর দুটি পাঠালে? তিনি বললেন, ‘দুটি পাঠালেও।’ -সহিহ বুখারি, হাদিস : ১০১

আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, ‘এক নারী রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কাছে তার অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে এলো এবং বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এর ব্যাপারে আশঙ্কা করছি। ইতিপূর্বে আরো তিনজন মৃত্যুবরণ করেছে। তখন রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তুমি তো এক কঠিন প্রাচীর দ্বারা জাহান্নাম থেকে নিজেকে রক্ষা করেছ।’ -সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১৮৭৭

মৃত ব্যক্তির পরিবারের জন্য খাবার তৈরিঃ

মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন মানুষের ভেতর সবচেয়ে দয়ালু ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী। মানুষের মৃত্যু তার হৃদয়ের মমত্ব আরো বাড়িয়ে দিত। তিনি তার পরিবার-পরিজনের জন্য খাবার তৈরি করতেন, যেন তারা মৃত্যুশোকের কারণে অভুক্ত না থাকে। আবদুল্লাহ ইবনে জাফর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, যখন জাফর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর মৃত্যুর খবর এলো মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘জাফরের পরিবারের জন্য খাবার তৈরি করো। কেননা তাদের কাছে এমন দুঃসংবাদ এসেছে, যা তাদের ব্যস্ত করে রাখবে।’ -সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩১৩২

মৃত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কোমল আচরণঃ

আপনজনকে হারালে মানুষ সাধারণত অসংযত আচরণ করে। কিন্তু মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন সময় তাদের প্রতি কঠোর আচরণ না করে কোমল আচরণ করতেন। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (উহুদ যুদ্ধে) আমার পিতা আবদুল্লাহ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু শহিদ হলেন। আমি তাঁর মুখমণ্ডল থেকে কাপড় সরিয়ে কাঁদতে লাগলাম। লোকজন আমাকে নিষেধ করতে লাগল। কিন্তু নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে নিষেধ করেননি। আমার ফুফি ফাতিমা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহাও কাঁদতে লাগলেন। তখন নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তুমি কাঁদো বা না-ই কাঁদো (উভয়ই সমান)। তোমরা তাকে তুলে নেয়া পর্যন্ত ফেরেশতারা তাঁদের ডানা দিয়ে ছায়া বিস্তার করে রেখেছে।’ -সহিহ বুখারি, হাদিস : ১২৪৪

জাবির ইবনে আতিক রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবদুল্লাহ বিন সাবিত রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর শুশ্রূষার জন্য গিয়ে দেখতে পেলেন তাঁর মৃত্যু আসন্ন। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে উচ্চৈঃস্বরে ডেকেও তাঁর কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে বললেন, ‘হে আবু রাবি! আমাদের সম্মুখে তোমার ওপর আল্লাহর হুকুম (মৃত্যু) বিজয়ী হতে যাচ্ছে।’ এ কথা শুনে কিছু মহিলা উচ্চৈঃস্বরে কান্না শুরু করলে ইবনে আতিক রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু তাদের শান্ত করাতে লাগলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তাদের ছেড়ে দাও। যখন মৃত্যু হয়ে যাবে তখন কোনো ক্রন্দনকারিণীই ক্রন্দন করবে না।’ -সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১৮৪৬

মৃত ব্যক্তির প্রশংসার মাধ্যমে সান্ত্বনা দানঃ

রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো কখনো মৃত ব্যক্তির সম্মান ও পরকালীন মর্যাদা ঘোষণার মাধ্যমে তার পরিবার-পরিজনকে সান্ত্বনা দিতেন। আবদুল্লাহ বিন সাবিত রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর মৃত্যু ঘনিয়ে এলে তাঁর মেয়ে রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জানাল যে, তার বাবা শাহাদাতের আকাঙ্ক্ষা পোষণ করতেন। তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা তাঁর নিয়ত অনুযায়ী তাঁকে শাহাদাতের সওয়াব দিয়ে দিয়েছেন। আচ্ছা! তোমরা শাহাদাত কাকে মনে করো? তারা বলল, আল্লাহর রাস্তায় মৃত্যুবরণ করাকে। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহর রাস্তায় মৃত্যুবরণ করা ছাড়াও আরো সাত প্রকারের শাহাদাত আছে- এক. প্লেগ রোগে মৃত ব্যক্তি শহীদ, ২. পেটের পীড়ায় মৃত ব্যক্তি শহীদ, ৩. পানিতে ডুবে মৃত ব্যক্তি শহীদ, ৪. প্রাচীর বা ঘর চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি শহীদ, ৫. অভ্যন্তরীণ বিষফোঁড়ায় মৃত ব্যক্তি শহীদ, ৬. অগ্নিদাহে মৃত ব্যক্তি শহীদ, ৭. প্রসবকালে মৃত নারী শহীদ।’ -সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১৮৪৬

মৃত ব্যক্তির ঋণ পরিশোধঃ

ঋণ বান্দার অধিকার। কোনো ব্যক্তির ওপর যদি ঋণ থাকে, তবে ঋণদাতা ক্ষমা না করলে ক্ষমা হবে না। তাই মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চাইতেন মুসলিমরা যেন ঋণমুক্ত হয়ে মারা যায়। যদি কারো ওপর ঋণ থেকে যেত, তবে তিনি কখনো নিজে তা পরিশোধের দায়িত্ব নিতেন আবার কখনো অন্যরাও মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব গ্রহণ করত। আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর কাছে ঋণগ্রস্ত কোনো মৃত ব্যক্তিকে (জানাজার জন্য) আনা হলে, তিনি জিজ্ঞেস করতেন, সে কি ঋণ পরিশোধ করার মতো অতিরিক্ত কিছু রেখে গেছে? যদি বলা হতো যে সে ঋণ পরিশোধ করার মতো সম্পদ রেখে গেছে, তাহলে তিনি তার জানাজা পড়াতেন। অন্যথায় তিনি মুসলিমদের বলতেন, তোমরা তোমাদের সাথির জানাজা পড়ো। তারপর আল্লাহ যখন তাঁকে অনেক বিজয় দান করলেন তখন তিনি বললেন, আমি মুমিনদের জন্য তাদের নিজেদের চেয়েও অধিক ঘনিষ্ঠতর। কাজেই মুমিনদের কেউ ঋণ রেখে মারা গেলে, তা পরিশোধ করার দায়িত্ব আমারই। আর যে ব্যক্তি সম্পদ রেখে যাবে, তা তার ওয়ারিশরা পাবে।’ -সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৩৭১

মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করে সান্ত্বনা দানঃ

মানুষ যখন মারা যায় তখন তার আপনজনরা তার পরকালীন মুক্তি নিয়ে চিন্তিত থাকে। তাই কেউ তার জন্য দোয়া করলে তাদের হৃদয় প্রশান্ত হয় এবং মৃত ব্যক্তিও তা দ্বারা উপকৃত হয়। মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করতেন এবং অন্যদেরও দোয়া করতে বলতেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা যখন কোনো মৃত ব্যক্তির জানাজা পড়বে, নিষ্ঠার সঙ্গে দোয়া করবে।’ -সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩২০১

অপর বর্ণনায় এসেছে, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃতের দাফন শেষ করে সেখানে দাঁড়িয়ে বলতেন, ‘তোমাদের ভাইয়ের জন্য তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা করো এবং সে যেন প্রতিষ্ঠিত থাকে সে জন্য দোয়া করো। কেননা তাকে এখনই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ -সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩২২১

শেষের কথাঃ

মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের প্রতি সদয় হয়ে তাদের শোক এবং কষ্টকে ভাগাভাগি করার প্রকৃত ইসলামের শিক্ষাকে আমরা আমাদের জীবনে বাস্তবায়িত করতে পাারি, সেই তাওফিক প্রার্থনা করছি মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার দরবারে। পাশাপাশি, বর্তমানে করোনা ভাইরাস মহামারি ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে দেশের অনেক স্থানে স্বজনহারা পরিবারগুলো অনাকাঙ্খিত আচরণের শিকার হচ্ছে, যা ইসলামী শিক্ষার পরিপন্থী। তাদের এই দুর্দিনে তাদের পাশে থাকা এবং তাদেরকে সান্ত্বনা দেয়া একান্ত প্রয়োজন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন। ইসলামের আদর্শগুলো সঠিকভাবে বুঝে তা জীবনে ধারণ করার তাওফিক দান করুন।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:০৫

শেরজা তপন বলেছেন: মিলাদ, চল্লিশা, শোবে বরাতের হালুয়া রুটি এইসব রেওয়াজ আস্তে আস্তে উঠে যাচ্ছে। তবু কিছু মানুষ ধর্মের দোহাই দিয়ে নিজেদের স্বার্থে এখনো ধর্মভীরু মানুষদের প্রতারিত করে যাচ্ছে।
ভাল লিখেছেন।

২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:১৩

নতুন নকিব বলেছেন:



ভুল ধারণাগুলো ধীরে ধীরে কেটে যাক। মানুষ ধর্মপ্রাণ হওয়া ভাল কিন্তু ধর্মের নামে অধর্মের চাষ দেখলেই কষ্টটা বাড়ে।

আপনার সাক্ষাৎ পেলুম কত দিন পরে। অভিনন্দন, পাঠ এবং প্রথম মন্তব্যে।

শুভকামনা জানবেন।

২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:২৪

শেরজা তপন বলেছেন: খানিকটা দম ফেলানোর ফুসরত পেলে ব্লগে বসি খানিক্ষন। অনেকের লেখা পড়েই মন্তব্য করতে ইচ্ছে করে কিন্তু ইচ্ছে করেই কিছু বিষয় এড়িয়ে যাই। ভুল বুঝবেন না ভাই- ভাল থাকুন।

২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



বরাবরই আপনি প্রিয় মানুষ। ভুল বুঝিনি। আমার প্রতিমন্তব্যে হয়তো এমন কিছু ধারণা করেছেন বলে পুনরায় মন্তব্যে আসতে হয়েছে আপনাকে। দুঃখিত!

শুভকামনা সবসময়।

৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:০২

আহলান বলেছেন: এই মূল্যবোধের অবক্ষয়ের যুগে ভালো কিছু আশা করাই কঠিন। নীতি নৈতিকতা বিবেক বোধ এসবের অভাবেই সমাজে অনেক কিছুই আজ কলুষিত।আমরা এমনিতেই এখন অনেক ব্যস্ত, জীবিত লোকেরই খোজ খবর নিই না, তো মৃত ব্যক্তির কথা ভেবে দোয়া করা তো আরো দূরের বিষয়। সেই চিন্তা ভাবনা থেকে চল্লিশ দিন পর যদি কোন সোয়াব রেসানি করা হয়, তবে তা মৃত ব্যক্তির জন্যেই কল্যাণকর বলে মনে করি। তবে যে তা চল্লিশ দিনেই করতে হবে এমন ভাবাটাও ঠিক নয়। আল্লাহু আয়ালাম!

২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৫০

নতুন নকিব বলেছেন:



সুন্দর বলেছেন। কৃতজ্ঞতা।

মৃত ব্যক্তির প্রতি সাওয়াব রেসানি বা তাকে সাওয়াব পৌঁছানো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি অবশ্যই ভালো আমল। কিন্তু এর পথ ও পদ্ধতি রয়েছে। যেমনটা আপনিও বলেছেন মন্তব্যে যে, তবে যে তা চল্লিশ দিনেই করতে হবে এমন ভাবাটাও ঠিক নয়।

দোআ বিশেষ গুরুত্ববহ। এটা জীবিত এবং মৃত সকলের জন্যই উপকারী। তবে, মৃত ব্যক্তির শোকগ্রস্ত পরিবারের উপরে সমাজকে খুশি করার জন্য বিশালাকারে আত্মীয় স্বজনসহ এলাকাবাসীকে খাওয়ানোর যে প্রথা বর্তমান, এটা কোনো অবস্থাতেই সুন্নাহ এবং শরিয়ত সম্মত নয়। সামাজিক নানান চাপে পড়ে এগুলো করতে গিয়ে অনেক পরিবারকে ঋণগ্রস্ত এমনকি দুর্দশাগ্রস্ত হতে দেখা গেছে।

শুভকামনা জানবেন।

৪| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:০৫

অনেক কথা বলতে চাই বলেছেন: আমি সব সময় এটা বলে আসছি মানুষকে যে এটা করার কোন দরকার তো না-ই বরং এটা আশা করাও অমানবিক। যেখানে মৃতের শোকে কাছের মানুষরা কাতর সেখানে তাদের থেকে খাওয়ার আয়োজন আশা করা? ভাবতেই তো লজ্জা হওয়া উচিৎ!

আমি আয়োজন করার experience আছে এমন ব্যক্তির কাছে জানতে চেয়েছিলাম এমন কেন করেন/করেছেন? আমাকে বলে হয়েছিল, "আসলে অনেক দূর থেকে মানুষগুলো আসে দু'আ করতে, তাই খাবার আয়োজন করার দরকার।" কি একখান যুক্তি!

২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৫২

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার নিকটা এতটাই সুন্দর যে, আপনার পছন্দের প্রশংসা করতে হয়।

সমাজের কঠিন বাস্তবতা উঠে আসা চমৎকার মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা।

শুভকামনা সবসময়।

৫| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৪৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ‌এতো বড়লেখার একটুও পড়লাম না। কারণ মূল বিষয়বস্তুটা আমার জানা (বর্তমানে)।
আমাদের দেশে সাধারণত দেখা যায় মৃতের বাড়িতে প্রথম চারদিন রান্না করা হয় না। আত্মিয়রা খাবার পাঠায়। ঠিক চার দিনের দিন মৃতের বাড়ি নিজেদের সাধ্য অনুযাই বা সাধ্যের বাইরে গিয়ে আত্মিয়-এলাকাবাসীদের (মসজিদে জিলাপি-মিস্টি-নিমকি দিয়ে) খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে।
ঠিক চল্লিশ দিনের দিন মৃতের বাড়ি নিজেদের সাধ্য অনুযাই বা সাধ্যের বাইরে গিয়ে আত্মিয়-এলাকাবাসীদের জন্য বিশাল খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করে। এবং এরপরে প্রতি মৃত্যুবার্ষিকিতেও করে।

আমার বাবা মারা যাওয়ার পরে চার দিনে পরে আমি ৭টা মসজিদে কয়েক হাজার প্যাকেট (মিস্টি-বালুসা-নিমকি-সমুচা ইত্যাদি) দিয়ে মিলাদ পড়িয়েছি। চল্লিশ দিনের পরে আমি ৩টি জবেহ করে মিলাদ পড়িয়েছি।
এবং তারপরে আমি যখন মত্যুবার্ষিকির কথা ভাবছি তখন চিন্তা করলাম টাকা খরচ করে লোকজনকে খাওয়ার ব্যবস্থা না করে যদি টাকাটার মাধ্যমে সাদকায় জারিয়ার ব্যবস্থা করি তাহলে বরং আরো বেশী ভালো হয়। তেখন থেকে তাই করছি। পরে খোজ নিয়ে বুঝতে পারলাম চল্লিশা-মৃত্যুবার্ষিকে পালন করা বেদাত।

বছর দেড় আগে মা মারা গেলেন। টার দিনের পরে মিলাদ পড়িয়ে মনটা কেমন কেমন করলো!! খোজ নিয়ে বুঝতে পারলাম এটাও বেদাত!!!

বাসায় মৌখিবক অসিয়ত করে দিয়েছি আমার মৃত্যুর পরে কুলখানি-চল্লিশা-মৃত্যুবার্ষিকি পালন করা যাবে না। আগামিতে লিখিতো অসিয়ত করার ইচ্ছে আছে যেটাতে আরো কিছু নির্দেশনা থাকবে।

২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:১৫

নতুন নকিব বলেছেন:



বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার মৌখিক অসিয়তটা ঠিক আছে। এগুলো সচেতনতার বিষয়। আমাদের সচেতন হতে হবে।

অনেক অনেক শুভকামনা।

৬| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:১৭

রানার ব্লগ বলেছেন: কুলখানি-চল্লিশা-মৃত্যুবার্ষিকি এই গুলা প্রত্যেকটাই মানুষের মানুষিক শান্তির জন্য করে, যারা করে তারাও জানে এতে মৃত ব্যাক্তির কোন লাভ হচ্ছে না, যিনি করেন তিনি করেন এই উদ্দেশে যাতে কেউ না কেউ দু মুঠ খেয়ে মৃত ব্যাক্তির জন্য দোয়া করে এই আশায়।

দাঁত বেদআত এর হিস্টিরি যদি খুলে বসেন তাহলে নবির আমলে যা যা হতো তার বাহিরে কিছু করাই বেদআত। আধুনিক এই যুগে আমদের বেদআত ছাড়া চলা মুশকিল হয়ে যাবে। তারপরেও মাওলানারা ইজমা টিজমা করে কিছু একটা ফাক ফোকর বের করে নিছে।

৩০ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৩২

নতুন নকিব বলেছেন:



অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

৭| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এটা আশার কথা যে,
সমাজ থেকে ধীরে ধীরে সকল
বেদাত ও কু প্রথাগুলো বিলিন
হচ্ছে।

৩০ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, সত্যিই আশার কথা। আগেকার দিনে দেখতাম, গ্রামে হাজার হাজার মানুষের জন্য শুকনো মৌসুমে বিশাল ধানখেতে বা খোলা মাঠে খাওয়ার আয়োজন করা হতো। সেসব এখন চোখে পড়ে না। ছোটবেলায় সেগুলোতে অংশগ্রহন করেছি। খালি মুখে/ গলায় সম্ভব হতো না বিধায় মাইক লাগিয়ে সেসব অনুষ্ঠান ম্যানেজ করার প্রয়োজন পড়তো। বিশাল ব্যাপার স্যাপার ছিল তখন।

ক্রমে এগুলো কমছে। ধন্যবাদ।

৮| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:২২

মা.হাসান বলেছেন: আমাদের গ্রামে এখনতো অবস্থাসম্পন্নরা ডেকোরেটর ডেকে বাবুর্চি ভাড়া এনে এসব করছেন। কিছু বলাও মুশকিল। আবার খাবার আয়োজন দু রকমের হয়। অবস্থা সম্পন্নদের জন্য আলাদা বসা, আনলিমিটেড মাংস-ভাত। সাধারণ এবং গরিবদের জন্য কপালে থাকলে মাংস, না থাকলে ঝোল-হাড়-ডালই সই।

খুব কষ্ট লেগেছিলো যখন কয়েক বছর আগে একজন অত্যন্ত গরিব ঘরের মেয়েকে দেখলাম ভিক্ষে করছে- বাবার চল্লিশা করতে হবে, না হলে বাবার আ্ত্মার শান্তি হবে না। খারাপটাই এখন চল হয়ে গিয়েছে।

৩০ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৪৩

নতুন নকিব বলেছেন:



এসব অনুষ্ঠান করার পেছনে সমাজের জটিল ও কুটিল টাইপের বিভিন্ন লোকজন জড়িত থাকেন। তাই তাদের স্বার্থে আঘাত লাগার মত কিছু ঘটলে অর্থাৎ, নেগেটিভ কিছু বললে তা অনেক সময়ই বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। আয়োজকরা পর্যন্ত ভুল বুঝে বসেন।

আর শ্রেণিভেদের বৈষম্যটা আরও বেশি বেদনাদায়ক এবং সাংঘাতিক! একই অনুষ্ঠানে ধনীদের জন্য বিশেষ ধরণের খাবার আবার গরিদের জন্য সাধারণ খাবার। চিন্তা করলেই কষ্ট লাগে।

গ্রামে এখনও তাহলে ভিক্ষে করে চল্লিশা করার প্রচলন একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। এগুলো পরিপূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে। তবেই মুক্তি মিলবে সাধারণ মানুষের।

কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা।

৯| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৪৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: এইটা না করলে পরিবারে এবং সমাজে কেয়ামত সৃষ্টি হয়ে যাবে । ভালো ব্যাখ্যা করেছেন তবে অনেক কঠিন

৩০ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৪৬

নতুন নকিব বলেছেন:



এটা বন্ধ হোক সেটাই চাই। এগুলো সমাজে বিভক্তি বৃদ্ধির উপকরণ। গরিবদের শোষনের হাতিয়ার। সাধারণ মানুষের মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে খাওয়ার জন্য তথাকথিত মাতব্বরদের মনোপলি একটা সিস্টেম মাত্র।

শুভকামনা জানবেন।

১০| ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:১৯

কামাল১৮ বলেছেন: লুভী মৌলভীরা খাওয়ার জন্য কতো ফন্দি ফিকির করে।

৩০ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৩০

নতুন নকিব বলেছেন:



ভালো বলেছেন। ধন্যবাদ।

তবে, লোভী শুধুই মৌলভীরা একারাই বিষয়টি মোটেই এমন নয়। নেতা পাতি নেতা থেকে শুরু করে সমাজের অনেক শ্রেণি পেশার লোকই আছেন এই দোষে দুষ্ট। তাদেরকে ভুলে যাওয়া উচিত হবে না। জাগাতে হবে তাদেরকেও। সচেতন করতে হবে। তবেই মুক্তি।

১১| ০৫ ই মে, ২০২১ রাত ১:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: ধর্ম নিয়ে আমি আর লিখব না। কারন আপনি সমানে লিখে যাচ্ছেন। মাঠ ছেড়ে দিলাম।

০৫ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:২৮

নতুন নকিব বলেছেন:



কথাগুলো কথাটা আপনাকে আাগেও অন্যভাবে বলেছিলাম। বুঝাতে চেয়েছিলাম। হয়তো তখন পারিনি। যাক, ধন্যবাদ সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ, যার বিষয় যেটা নয়, যার যে বিষয়ে একাডেমিক স্টাডি নেই, যার যে বিষয়ে আন্তরিক বিশ্বাস নেই, যার যে বিষয়ে নিজের বাস্তব জীবনে প্রাকটিসিং কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড নেই - সেসব নিয়ে তার কাজ করা কতটুকু সাজে? নৈতিকতারও তো একটা বিষয় থাকে। যে কাজটি আমি নিজেই করি না, সে কথাটি অন্যকে বলি কিভাবে? কুরআনে তো বারংবার নামাজ কায়েম করতে বলা হয়েছে। এখন আমি নিজেই যদি বেনামাজি হয়ে থাকি, অন্যকে কিভাবে সেই কুরআনের অনুবাদ বা তাফসীর করে শোনাই? নিজের বিবেকের কাছেই তো প্রশ্ন ওঠার কথা।

এ ছাড়া, বিশেষ করে ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা তো আরও অনেক বেশি সেন্সেটিভ। ধর্ম মস্করার কোনো বিষয় নয়। অনেকে চালাকি করে ধর্ম নিয়ে কৌশলে হাসি-তামাশা করতে চায়। অনলাইনে এগুলো পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু একটা সময়ে এসে দেখবেন, তারাও ধরা ঠিকই খেয়ে যান। চালাকের উপরে চালাক থাকে। তাই না? সবক্ষেত্রেই এটা সত্য।

আবারও ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.