নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামের অনন্য ভ্রাতৃত্ববোধ এবং নজীরবিহীন আত্মত্যাগের বাস্তব কিছু ঘটনাঃ

১৫ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:০৭

ছবিঃ অন্তর্জাল।

ইসলামের অনন্য ভ্রাতৃত্ববোধ এবং নজীরবিহীন আত্মত্যাগের বাস্তব কিছু ঘটনাঃ

জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভালোবাসতে হবে সকল মানুষকেঃ

ইসলাম আমাদেরকে এক মহান জীবন বিধান উপহার দিয়েছে। ইসলাম ধর্ম যে সত্যিকারার্থে সব থেকে মানবিক, মানব কল্যানই যে এই ধর্মের উদ্দেশ্য এবং এটি যে প্রকৃতপক্ষেই মহান আল্লাহ তাআ'লা প্রদত্ত শ্রেষ্ঠতম জীবন বিধান তার অসংখ্য উদাহরণের মধ্যে এটিও একটি যে, এই জীবন বিধান মানব জীবনের সকল ক্ষুদ্রতা, সংকীর্ণতা এবং সীমাবদ্ধতার পর্দাকে সরিয়ে দিয়ে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভালোবাসতে শিখিয়েছে সকল মানুষকে। জাতিভেদ প্রথা, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, উঁচু নিচুর পার্থক্য, আশরাফ আতরাফের ফরক, বংশ কৌলিন্য, ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে কারও প্রতি ভিন্নতর সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি পোষন করা ইত্যাদি কোনো কিছুরই অস্তিত্ব নেই ইসলাম ধর্মের শিক্ষা, আদর্শ এবং বাস্তবতায়। শুধু মানুষই নয়, জগতের গোটা সৃষ্টিকুলের প্রতি দয়াপরবশ হওয়া এবং তাদের প্রতি ভালোবাসা পোষন করার মাঝেই নিহিত রয়েছে ইসলামের প্রকৃত ও মৌল আদর্শ।

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সকল সৃষ্টি-প্রাণিকুল আল্লাহর পরিবার-পরিজন। অতএব, আল্লাহ তায়ালার কাছে তার সৃষ্টজীবের মাঝে সে-ই প্রিয়ভাজন যে তার অধীনস্ত ও সৃষ্টজীবের সাথে দয়াপরবশ আচরণ করে এবং তাদের প্রয়োজনের প্রতি যত্নবান থাকে’। -মিশকাতুল মাসাবীহ

ইসলামের অনন্য ভ্রাতৃত্ববোধঃ

ইসলামী ভ্রাতৃত্বের মানদন্ড ঈমান। তাই একজন মুমিন অপর মুমিনের প্রতি সম্প্রীতি-ভালবাসা, সহানুভূতি ও সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করবে, তা সে যে দেশের হোক, যে বর্ণের কিংবা যে ভাষারই হয়ে থাকুন। কুরআনে হাকিমে ইরশাদ হয়েছে-

اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ اِخْوَةٌ فَاَصْلِحُوْا بَیْنَ اَخَوَیْكُمْ.

মুমিনগণ পরস্পর ভাই ভাই। সুতরাং, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মাঝে মীমাংসা করে দাও। -সূরা হুজুরাত (৪৯) : ১০

আরেক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে-

وَ الْمُؤْمِنُوْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتُ بَعْضُهُمْ اَوْلِیَآءُ بَعْضٍ.

মুমিন নর ও মুমিন নারী সকলেই একে অন্যের বন্ধু। -সূরা তাওবা (৯) : ৭১

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

مَثَلُ الْمُؤْمِنِينَ فِي تَوَادِّهِمْ، وَتَرَاحُمِهِمْ، وَتَعَاطُفِهِمْ مَثَلُ الْجَسَدِ إِذَا اشْتَكَى مِنْهُ عُضْوٌ تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ الْجَسَدِ بِالسّهَرِ وَالْحُمّى.

সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও সহানুভূতির ক্ষেত্রে মুমিনদের দৃষ্টান্ত এক দেহের ন্যায়, যার একটি অঙ্গ অসুস্থ হলে গোটা দেহ জ¦র ও অনিদ্রায় আক্রান্ত হয়। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০১১; সহীহ মুসলিম, হদীস ২৫৮৬

অন্য হাদীসে ইরশাদ হয়েছে-

الْمُؤْمِنُ مِرْآةُ الْمُؤْمِنِ، وَالْمُؤْمِنُ أَخُو الْمُؤْمِنِ، يَكُفّ عَلَيْهِ ضَيْعَتَهُ، وَيَحُوطُهُ مِنْ وَرَائِهِ.

মুমিন মুমিনের জন্য আয়না। মুমিন মুমিনের ভাই। সে তার জমি সংরক্ষণ করে এবং তার অনুপস্থিতিতে তাকে হেফাযত করে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯১৮

এই সম্প্রীতি ও সহযোগিতার নির্দেশ তাকওয়া ও কল্যাণের পথে, ন্যায় ও বৈধ কাজে। কুরআনে কারীমের ইরশাদ-

وَ تَعَاوَنُوْا عَلَی الْبِرِّ وَ التَّقْوٰی وَ لَا تَعَاوَنُوْا عَلَی الْاِثْمِ وَ الْعُدْوَان.

তোমরা তাকওয়া ও ন্যায় কাজে পরস্পরে সহযোগিতা করো। পাপাচার ও অন্যায় কাজে সহযোগিতা করো না। -সূরা মায়েদা (৬) : ০২

ন্যায় ও কল্যাণের বিষয়ে নিজ কওমকে সাহায্য করা অন্যায় সম্প্রদায়প্রীতি নয়। জুলুম ও অন্যায় কাজে কওমকে সহযোগিতা করাই হচ্ছে নিষিদ্ধ সাম্প্রদায়িকতা। একবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হল, ‘আসাবিয়াত’ (তথা সাম্প্রদায়িকতা) কী? তিনি জবাব দিলেন, নিজ কওমকে তার অন্যায় অবিচারে সাহায্য করা। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫১১৯

সুতরাং অন্যায়ের ক্ষেত্রে পক্ষপাতই হল সাম্প্রদায়িকতা, যা ইসলামে কঠিনভাবে নিষিদ্ধ। ইরশাদ হয়েছে-

لَيْسَ مِنّا مَنْ دَعَا إِلَى عَصَبِيّةٍ، وَلَيْسَ مِنّا مَنْ قَاتَلَ عَلَى عَصَبِيّةٍ، وَلَيْسَ مِنّا مَنْ مَاتَ عَلَى عَصَبِيّةٍ.

যে ব্যক্তি আসাবিয়াতের দিকে ডাকে বা আসাবিয়াতের কারণে লড়াই-যুদ্ধ করে বা আসাবিয়াতের উপর মৃত্যুবরণ করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫১২১

অতএব ইসলামের সুস্পষ্ট নির্দেশনা হল, তাকওয়া ও কল্যাণের কাজে মুসলমানগণ পরস্পরকে সহযোগিতা করবে। নিজেদের মাঝে প্রীতি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখবে এবং অন্যায়ের পক্ষাবলম্বন ও সহযোগিতা থেকে বিরত থাকবে।

এখানে ইসলামের সীমাহীন সৌন্দর্য এই যে, ইসলাম প্রীতি-সৌহার্দ্যরে চূড়ান্ত স্তরের প্রতিও মুসলমানদেরকে উদ্বুদ্ধ করে। ঈমানী ভাইয়ের জন্য আপন স্বার্থ বিসর্জনেরও উৎসাহ দেয়।

ইসলামের সূচনালগ্নে মক্কার মুসলিমগণ এক কঠিন পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন। আপন গোত্রের অবিচার ও নিপীড়ন তাদেরকে স্বদেশত্যাগে বাধ্য করেছিল। তখন মদীনার মুসলমানগণ সহযোগিতা ও সহানুভূতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। তারা নিজেদের প্রয়োজন ও দারিদ্র্য সত্ত্বেও সহায়-সম্বলহারা মুহাজির মুসলমান ভাইদের জন্য ধন সম্পদ ও আপন স্বার্থ ত্যাগ করেছিলেন।

তাদের পরার্থপরতার এ গুণটি পছন্দ করে আল্লাহ পাক কুরআনে কারীমে ইরশাদ করেছেন-

وَ یُؤْثِرُوْنَ عَلٰۤی اَنْفُسِهِمْ وَ لَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ ۫ؕ .

তারা (আনসারেরা) নিজেদের উপর (মুহাজিরদের) প্রাধান্য দেয়। যদিও নিজেদের প্রয়োজন ও অভাব থাকে। -সূরা হাশর (৫৯) : ০৯

সূরাতুদ দাহরে আল্লাহ পাক জান্নাতের বিশেষ কিছু নিআমত উল্লেখ পূর্বক এসকল নেআমতের অধিকারীগণের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলেছেন-

وَ یُطْعِمُوْنَ الطَّعَامَ عَلٰی حُبِّهٖ مِسْكِیْنًا وَّ یَتِیْمًا وَّ اَسِیْرًا اِنَّمَا نُطْعِمُكُمْ لِوَجْهِ اللهِ لَا نُرِیْدُ مِنْكُمْ جَزَآءً وَّ لَا شُكُوْرًا .

(তারাই এসকল নিআমত লাভ করবে যারা...) এবং যারা মিসকীন, এতীম ও বন্দিদেরকে খাবার দান করে তার প্রতি (নিজেদের) আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও। (আর বলে) আমরা তো তোমাদেরকে খাওয়াই কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে। তোমাদের থেকে আমরা কোনো প্রতিদান বা কৃতজ্ঞতা কামনা করি না। -সূরা দাহর (৭৬) : ৮-৯

অন্য এক আয়াতে সৎকর্ম ও পুণ্যের বর্ণনা দেয়া হয়েছে এভাবে-

وَ لٰكِنَّ الْبِرَّ مَنْ اٰمَنَ بِاللهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَ الْمَلٰٓىِٕكَةِ وَ الْكِتٰبِ وَ النَّبِیّٖنَ وَ اٰتَی الْمَالَ عَلٰی حُبِّهٖ ذَوِی الْقُرْبٰی وَ الْیَتٰمٰی وَ الْمَسٰكِیْنَ وَ ابْنَ السَّبِیْلِ وَ السَّآىِٕلِیْنَ وَ فِی الرِّقَابِ.

বরং পুণ্য তো হল, মানুষ ঈমান রাখবে আল্লাহ, শেষ দিন, ফেরেশতা, (আল্লাহর) কিতাব আর নবীগণের প্রতি এবং (নিজ) সম্পদের প্রতি ভালবাসা থাকা সত্ত্বেও তা দান করবে আত্মীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন মুসাফির ও সওয়ালকারীদেরকে এবং দাসমুক্তিতে। -সূরা বাকারা (২) : ১৭৭

নিজের প্রয়োজন সত্ত্বেও নিঃস্বার্থভাবে অপর ভাইকে নিজের উপর প্রাধান্যদানের বিষয়ে ইসলামের এই সুমহান আদর্শ সহজে হৃদয়ঙ্গম করার জন্য এখানে সাহাবায়ে কেরামের আলোকিত জীবনচরিত থেকে কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করা হচ্ছে, যাতে ফুটে উঠেছে এ-শিক্ষাটির বাস্তব ও সমুজ্জল চিত্র। শুরুতেই স্বয়ং নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কর্মপন্থা ও পবিত্র সীরাত থেকে তাঁর একটি ঘটনা লক্ষ করুন।

হযরত সাহল বিন সাদ রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একজন নারী সাহাবী নবীজীর জন্য সুন্দর কারুকার্য করা একটি নতুন কাপড় হাদিয়া এনে আরয করলেন, আমি এটি স্বহস্তে তৈরি করেছি। আপনি তা পরিধান করলে খুশী হব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাপড়টি গ্রহণ করলেন। তাঁর কাপড়ের প্রয়োজনও ছিল। যখন তিনি তা লুঙ্গি হিসাবে পরিধান করে ঘরের বাইরে আসলেন, এক ব্যক্তি বলল, খুব চমৎকার কাপড় তো! আমাকে তা দান করবেন কি? তখন নবীজী ঘরে ফিরে গিয়ে তা খুলে ভাঁজ করে লোকটির জন্য পাঠিয়ে দিলেন। এ দৃশ্য দেখে অন্যান্য সাহাবী ঐ ব্যক্তিকে তিরস্কার করে বলতে লাগলেন, আরে মিয়া! তুমি কি জানো না, কাপড়টি নবীজীর প্রয়োজন রয়েছে। আর তিনি কোনো কিছু চাইলে ‘না’ বলেন না। সে জবাবে বলল, আমি সবই জানি, এরপরও চেয়েছি, যাতে তাঁর মুবারক শরীর-স্পর্শে ধন্য কাপড় দিয়ে আমি নিজের কাফন বানাতে পারি। বর্ণনাকারী সাহাবী বলেন, ঐ ব্যক্তির মৃত্যুর পর সেই কাপড়েই তাকে দাফন করা হয়েছিল। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১২৭৭, ২০৯৩, ৫৮১০, ৬০৩৬

এটা তো নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নূরানী জীবনের একটি ঘটনামাত্র। তাঁর পবিত্র সীরাত অধ্যয়ন করলে এ চিত্র খুব স্পষ্টভাবেই ফুটে ওঠে যে, জান-মালের পুরাটাই তিনি দ্বীন-ইসলামের জন্য উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন। তিনি কখনোই আপন স্বার্থ বা নিজের সুখ-শান্তির কথা ভাবেননি। সর্বদাই তাঁর চিন্তা ছিল উম্মতকে নিয়ে। তাদের প্রয়োজন ও কল্যাণ নিয়ে। তাঁর কাছে কোনো সম্পদ এলেই তিনি তা অভাবী ও প্রয়োজনগ্রস্তদের মাঝে অকাতরে বিলিয়ে দিতেন; এক বর্ণনায় তো এসেছে, এক ব্যক্তি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটে এসে কিছু চাইল। তিনি প্রার্থনাকারীকে বললেন, এখন তো আমার কাছে দেয়ার মত কিছুই নেই, তোমার প্রয়োজন মোতাবেক তুমি আমার নামে কারো থেকে কর্জ নিয়ে নাও, আমার হাতে কিছু আসলে আমি ঐ ঋণ পরিশোধ করে দিব। এ কথা শুনে হযরত উমর রা. বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ পাক তো আপনাকে সাধ্যের বাইরে কিছু করার নির্দেশ দেননি; বরং আমিই প্রার্থনাকারীকে কিছু দিয়ে দিই। হযরম উমরের একথা নবীজীর মনঃপুত হল না। ঐ মুহূর্তে এক আনসারী সাহাবী বলে উঠলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি ইচ্ছা মত দান করতে থাকুন। মহান আরশপতির কাছে কমে যাওয়ার আশংকা করবেন না। তার এ কথায় নবীজী খুবই খুশি হলেন এবং মুচকি হাসলেন। বললেন, আমাকে এমনটিই আদেশ করা হয়েছে। -শামায়েলে তিরমিযী (৩৫৫) (শায়খ মুহাম্মাদ আওয়ামাহ তাহকীককৃত) মুসনাদে বাযযার (২৭৩); আলমুখতারাহ, যিয়া মাকদিসী (৮৮); মাজমাউয যাওয়ায়েদ ১০/২৪২

আঁধার ঘরের আলোকিত মেজবানঃ

একজন ক্ষুধার্ত অসহায় ব্যক্তি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে তার অবস্থা জানাল। তিনি তাঁর স্ত্রীগণের নিকট লোক পাঠিয়ে ঘরে কোনো খাবার আছে কি না জানতে চাইলেন। সকলের কাছ থেকেই সংবাদ এল, ঘরে পানি ছাড়া কিছুই নেই। এরপর নবীজী সাহাবীদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের মধ্যে কে আজ এই ব্যক্তির মেহমানদারি করাতে প্রস্তুত? আনসারী সাহাবী আবু তালহা রা. দাঁড়িয়ে বললেন, আমি। তিনি তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে গেলেন। স্ত্রীকে বললেন, সে নবীজীর মেহমান, তার সমাদর করতে হবে। ঘরে কী খাবার আছে বল? স্ত্রী বললেন, বাচ্চাদের জন্য অল্প কিছু খাবার আছে। আর কিছুই নেই। তিনি বললেন, আচ্ছা, তুমি সেটুকুই মেহমানের জন্য প্রস্তুত কর। আর বাচ্চাদেরকে ঘুম পাড়িয়ে ফেলো। আর শোনো, মেহমানের সামনে খাবার দেওয়ার পর বাতি ঠিক করার ছুতায় তা নিভিয়ে ফেলবে। স্ত্রী সবকিছু প্রস্তুত করলেন। মেহমানের সামনে খাবার উপস্থিত করার পর পূর্বের কথা অনুযায়ী বাতি নিভিয়ে দেয়া হল। স্বামী-স্ত্রী উভয়ে অন্ধকারের মধ্যে ভান করলেন যে, তারাও সাথে খাচ্ছেন। এভাবে তারা পুরো পরিবার উপোস থেকে মেহমানকে খুশী করার চেষ্টা করলেন। সকালে যখন আবু তালহা রা. নবীজীর দরবারে উপস্থিত হলেন, নবীজী তাকে বললেন, গত রাতে মেহমানের সাথে তোমাদের স্বামী-স্ত্রীর আচরণে আল্লাহ পাক খুবই খুশি হয়েছেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৭৯৮,৪৮৮৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২০৫৪

এই ঘটনায় আমাদের জন্য বেশ কিছু শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে। যেমন-

প্রথমতঃ প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ ব্যক্তিকে প্রথমে নিজে মেহমানদারি করাতে চেয়েছেন। শুরুতেই তাকে অন্যের কাছে পেশ করেননি। অতএব, মেহমানদের আপ্যায়ন নিজের থেকেই শুরু করার চেষ্টা-প্রচেষ্টা গ্রহণের বাস্তব শিক্ষা নিহীত রয়েছে এই ঘটনায়।

দ্বিতীয়তঃ এই ঘটনাটিতে পরিবার পরিজনসহ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কষ্ট এবং মুজাহাদার যিন্দেগীর একটি চিত্রও ফুটে উঠেছে। আখিরাতের অন্তহীন সময়ের তুলনায় অতি সামান্য এই পার্থিব হায়াতে স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ, বিলাসবহুল এবং আরামপ্রিয় জীবনে যে তিনি অভ্যস্ত ছিলেন না এবং এগুলো যে তিনি পছন্দও করতেন না, সে শিক্ষা রয়েছে আমাদের জন্য।

তৃতীয়তঃ নিজের ঘরের অবস্থা সাহাবী আবু তালহা রা.-এর অজানা থাকার কথা নয়। এরপরও তিনি ক্ষুধার্তকে খাওয়ানোর মত মহা পুণ্যের কাজটি হাতছাড়া করতে চাননি। প্রিয় পাঠক, গভীরভাবে দৃষ্টিপাত করলে এই ঘটনায় আরো বহু শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত পাওয়া যাবে।

সাহাবায়ে কেরামের একে অপরের জন্য ত্যাগের অনন্য নমুনাঃ

মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের পর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাজির ও আনসার ছাহাবীদের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করে দিয়েছিলেন। সুন্দর শৃংখলার জন্য মুহাজির ও আনসারের কে কার সাথে বসবাস করবেন সেটাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন। আবদুর রহমান বিন আউফের ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করেছিলেন আনসারী সাহাবী সা‘দ বিন রবীর সাথে। তিনি আবদুর রহমান বিন আউফকে ঘরে নিয়ে গেলেন। এরপর তাকে সম্বোধন করে বললেন, ভাই আবদুর রহমান! আজ থেকে আমার অর্ধেক সম্পদের মালিক তুমি। আর শোনো, আমার দু'জন স্ত্রী রয়েছে। তোমার যাকে পছন্দ হয় বল, আমি তাকে তালাক দিয়ে দিব। ইদ্দত শেষ হলে তুমি তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে। আবদুর রহমান বিন আউফ রা. জবাবে বললেন, ভাই সা‘দ! আল্লাহ পাক তোমার সম্পদ ও পরিবারে বরকত দান করুন। তোমার সবকিছু তোমার কাছেই থাক। আমাকে শুধু বাজারের রাস্তাটা দেখিয়ে দাও। আমি ব্যবসা করতে চাই। সা‘দ বিন রবী রা. তাকে বনু কায়নুকার বাজার দেখিয়ে দিলেন। তিনি সেখানে গিয়ে বেচা-কেনা শুরু করলেন। প্রথম দিনই কিছু টাকা লাভ হল। তা দিয়ে তিনি খাওয়ার জন্য কিছু ঘি ও মাখন কিনে আনলেন। এভাবে তার ব্যবসায় দিন দিন উন্নতি হতে লাগল। নিজ হাতের উপার্জনের মাধ্যমেই তিনি আস্তে আস্তে সচ্ছল হয়ে উঠলেন। এরপর এক আনসারী নারীর সাথে তার বিবাহ হল। সহীহ বুখারী, হাদীস ৫১৬৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৩৮৬৩; মুসনাদে আবদ ইবনে হুমাইদ, হাদীস ১৩৩৩

প্রিয় পাঠক, এ ঘটনায় আলোকিত দু'জন মানুসের দু'টি বিষয় প্রতিভাত হয়ে ওঠে। যেমন-

প্রথমতঃ আনসারী সাহাবী সাদ বিন রাবী রা.-এর আপন মুসলিম ভাইয়ের জন্য বিরাট ত্যাগ ও নিঃস্বার্থ কুরবানী পেশ করার বিষয়টি লক্ষনীয় হয়ে উঠেছে।

দ্বিতীয়তঃ মুহাজির সাহাবী আবদুর রহমান বিন আউফ রা. এটাকে সুবর্ণ সুযোগ মনে করে তার আনসারী ভাইয়ের সম্পদ ও ব্যক্তিগত বিষয়ে দখল করেননি। বরং, তিনি সহানুভূতি দেখানোর কারণে তার প্রতি কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন করলেন এবং তার জন্য দুআ করলেন।

এটা কেবল বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা নয়; বরং মুহাজির ও আনসারী সাহাবীগণের সাধারণ কর্মপন্থা এরকমই ছিল। হাঁ, কেউ কেউ তার কর্মসংস্থান তৈরি বা জীবন-যাপনের নিজস্ব একটা ব্যবস্থা হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আনসারী ভাইয়ের সাহায্য গ্রহণ করেছেন ঠিক তবে তা ছিল ক্ষণকালের জন্য। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তারা নিজেরাই কর্ম প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিজেদের জীবন ধারণের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। তাদের মুসলিম ভাইদের উপর বোঝা হয়ে থাকেননি।

আনসার ছাহাবীদের মুসলিম ভাইদের জন্য স্বার্থত্যাগ এবং মুহাজিরদের পক্ষ থেকেও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের বিষয়টি যে ব্যাপক ও সাধারণ ব্যাপার ছিল তা বোঝার জন্য আরো এক-দুটি বর্ণনা লক্ষ করুন।

হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, আনসার সাহাবীগণ নবীজীকে বললেন, আমাদের খেজুর বাগানগুলো মুহাজির ভাই ও আমাদের মাঝে সমানভাবে বণ্টন করে দিন। নবীজী তাদের এ প্রস্তাব নাকোচ করে দিলেন। তাই আনসারগণ মুহাজিরগণকে বললেন, তোমরা শুধু আমাদেরকে চাষাবাদের কাজে সাহায্য করবে আর আমরা তোমাদেরকে ফসলের ভাগ দিব। অবশেষে তারা সকলেই এই প্রস্তাবে সম্মত হলেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২৩২৫,২৭১৯

হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, মুহাজিরগণ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যে ভাইদের নিকট আমরা আশ্রয় গ্রহণ করেছি তাদের চেয়ে উত্তম মানুষ আর দেখিনি। তারা সামান্য বিষয়েও আমাদের প্রতি সহানুভূতি দেখায় এবং আমাদের জন্য প্রচুর সম্পদ বিসর্জন দেয়। আমরা শুধু তাদের বাগান ও জমির কাজে সহযোগিতা করি। এতেই তারা আমাদেরকে ফসলের সমান ভাগ দেয়। আমরা আশংকা করছি, তারাই (আখেরাতের) সমস্ত প্রতিদান নিয়ে যাবে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না। যতক্ষণ তোমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে এবং তাদের জন্য দুআ করবে। (তোমরাও প্রতিদান পাবে।) -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৩০৭৫; সুনানে নাসাঈ, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লায়লা ১৮১

হযরত আনাস রা. থেকে এক বর্ণনায় এসেছে, (বাহরাইন বিজিত হওয়ার পর) নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমস্ত যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আনসার সাহাবীদের নামে লিখে দিতে চাইলেন। তারা এ প্রস্তাবে অসম্মতি জ্ঞাপন করলেন। আর আবেদন জানালেন, আমাদেরকে যে পরিমাণ সম্পদ দেয়া হবে মুহাজির ভাইদেরও যেন সেই পরিমাণই দেয়া হয়। তখন রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি তোমরা (মুহাজিরদেরকে রেখে কোনো কিছু) নিতে সম্মত না হও তাহলে ধৈর্যধারণ করতে থাকো হাউযে কাউসারের নিকট আমার সাথে তোমাদের সাক্ষাৎ হওয়া পর্যন্ত। কেননা, ভবিষ্যতে বিভিন্ন বিষয়ে তোমাদের উপর অন্যদেরকে প্রাধান্য দেয়া হবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৭৯৪, ২৩৭৬, ২৩৭৭

এই হাদীসে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নিকট আনসারদের পছন্দনীয় তিনটি বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হয়েছে,

১. নিজেদের উপর মুহাজিরদের প্রাধান্য দেয়া।

২. মুহাজিরদের প্রতি সর্বদা সমবেদনা প্রকাশ করা।

৩. নিজেদের জন্য দুনিয়ার তুলনায় আখেরাতের প্রতিদানকেই প্রাধান্য দেয়া। -ফাতহুল বারী ৫/৫৯

সত্যিকারের আকাঙ্খার কুরবানী একেই বলেঃ

একবার আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. অসুস্থ হলেন। তিনি মৌসুমের প্রথম আঙ্গুর খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। তখন তার স্ত্রী ছফিয়্যা খাদেমকে আঙ্গুর কিনে আনার জন্য বাজারে পাঠালেন। সে এক দিরহামের বিনিময়ে এক থোকা আঙ্গুর কিনে আনছিল। ঐ সময় এক ভিক্ষুক তার পিছু নিল। সে তা নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলে ভিক্ষুক জোরে আওয়াজ দিয়ে বলল, ভিক্ষুক এসেছে, কিছু দিন। ইবনে ওমর রা. তার আওয়াজ শুনে খাদেমকে আঙ্গুরগুলি দিয়ে দিতে বললেন। ভিক্ষুক নিয়ে চলে গেল। স্ত্রী আবার খাদেমকে এক দিরহাম দিয়ে পাঠালেন আঙ্গুর আনার জন্য। সে তা কিনে ঘরে ফিরছিল। পথিমধ্যে সেই ভিক্ষুক পুনরায় তার পিছু নিল এবং পূর্বের মতই আরচণ করল। ইবনে উমর রা. এবারও তাকে আঙ্গুর দিয়ে দিতে বললেন। এভাবে তিন বার বা চারবার ঘটার পর স্ত্রী ভিক্ষুককে ধমক দিয়ে বললেন, তোমার কি লজ্জা-শরম নেই? এবার যদি আস তাহলে...। এরপর আঙ্গুর আনা হল ইবনে উমর রা. তা খেলেন।

হযরত ইবনে উমর রা.-এর বিশিষ্ট শাগরেদ হযরত নাফে রাহ.-এর বর্ণনায় এসেছে, ইবনে উমর রা. যদি এই ঘটনা জানতেন (স্ত্রী কর্তৃক ভিখারীকে ধমকানো) তাহলে ঐ আঙ্গুর তিনি কখনোই খেতেন না। আরো বর্ণিত হয়েছে, প্রথমবার ছাড়া প্রতিবারই স্বয়ং ঐ ভিখারীর কাছ থেকেই ঐ আঙ্গুর কেনা হয়েছিল। আর সে নিজেই বারবার নির্লজ্জের মত এসে তা চাচ্ছিল। -তবাকাতে ইবনে সা‘দ ৪/১২০; তবরানী কাবীর (১৩০৬৭) হিলয়াতুল আওলিয়া আবু নূয়াঈম ১/৩৬৯,২৬০ মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯/৩৪৭

রবী ইবনে খুছাইম রাহ. অনেক বড় বুযুর্গ ছিলেন। তিনি নবীযুগ পেয়েছিলেন। তার খাদেমা বণর্না করেন, তার কাছে চিনি খুব প্রিয় ছিল। কিন্তু যখন কোনো ভিখারী আসত তিনি তা নিজে না খেয়ে ভিখারীকেই দান করে দিতেন। তাই খাদেমা একদিন তাকে বলল, ভিখারীর তো চিনির প্রয়োজন নেই। তার জন্য তো রুটিই যথেষ্ট। তিনি জবাবে বললেন, আমি কী আল্লাহ পাকের এই বাণী পাঠ করিনি-

وَ یُطْعِمُوْنَ الطَّعَامَ عَلٰی حُبِّهٖ .

খাবারের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও তারা তা দান করে... (মিসকীন ও অন্যান্যদেরকে।) তবাকাতে ইবনে সাদ ৮/৩০৮; দুররে মানছূর, সুয়ূতী ৬/২৯৯

ঘরে থাকা একটিমাত্র রুটিই দিয়ে দিলেনঃ

এক অভাবী ব্যক্তি আম্মাজান হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট এসে কিছু চাইল। তিনি সেদিন রোযা ছিলেন। ঘরে মাত্র একটি রুটি ছিল। তিনি তার খাদেমাকে রুটিটা ভিখারিকে দিয়ে দেয়ার জন্য বললেন। খাদেমা বলল, ঘরে তো আপনার ইফতারির জন্য কিছুই নেই। তিনি পুনর্বার বললেন, রুটিটা তাকে দিয়ে দাও। বাধ্য হয়ে খাদেমা তা ভিখারিকে দিয়ে দিল। -মুয়াত্তা মালেক, বাবুত তারগীব ফিছ ছাদাকাহ

অনেক ঘর ঘুরে ছাগলের মাথা ফিরে এল প্রথম বাড়িতেঃ

মদীনায় একটি পরিবার ছিল খুবই অভাবগ্রস্ত। তাদের কাছে ছাগলের একটি মাথা ছাড়া কিছুই ছিল না। যখন তাদের নিকট এছাড়া অন্য কিছু আসল তারা বলল, হায় যদি ছাগলের মাথাটি আমাদের চেয়ে অভাবী কাউকে দান করে দিতে পারতাম। অতপর তারা সেটি এক দরিদ্র পরিবারে পাঠিয়ে দিল। এই পরিবারও পূর্বের পরিবারের ন্যায় তাদের চেয়ে বেশি প্রয়োজনগ্রস্ত মনে করে মাথাটি অন্য এক বাড়িতে পাঠিয়ে দিল। এভাবে ছাগলের মাথাটি মদীনার বিভিন্ন বাড়িতে ঘুরতে লাগল। এক পর্যায়ে সর্বপ্রথম যেই বাড়ি থেকে তা দান করা হয়েছিল সেই বাড়িতেই ফিরে এল। আলকুনাওয়াল আসমা, আদদূলাবী ১/২০০; হিলয়াতুল আওলিয়া, আবু নুয়াঈম ৩/৩৩৮

একটি দুর্বল সূত্রে হযরত ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, সেটা ছিল আল্লাহর রাসূলের এক সাহাবীর বাড়ি। আর মাথাটি সাত বাড়িতে ঘুরে পুনরায় তাঁর বাড়িতেই ফিরে এসেছিল। এই প্রেক্ষিতেই নাযিল হয়েছিল-

وَ یُؤْثِرُوْنَ عَلٰۤی اَنْفُسِهِمْ وَ لَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ .

-তাহযীবুল আছার তাবারী, মুসনাদে ওমর রা. অংশ ১/১২১-১২২ (২০০); মুসতাদরাকে হাকেম ২/৪৮৩-৪৮৪; শুআবুল ঈমান, বায়হাকী ৩/২৫৯ (৩৪৭৯); ফাতহুল বারী ৭/১৫০

আত্মবিসর্জনের বিস্ময়কর এবং অভাবনীয় এক কাহিনীঃ

ইয়ারমুকের যুদ্ধে মুসলমানদের পানির সংকট ছিল। যুদ্ধে আহতদের অনেকে পানির জন্য কাতরাচ্ছিলেন। যখন অল্প কিছু পানি ইকরিমা রা.-এর সামনে উপস্থিত করা হল, তিনি বললেন, অমুক ভাইকে দাও, আমার চেয়ে তার পানির বেশি প্রয়োজন। অথচ তখন তিনি মারাত্মক আহত ছিলেন। তাঁর পানির খুবই প্রয়োজন ছিল। যখন তার ইশারাকৃত ব্যক্তির নিকট পানি আনা হল, তিনিও আরেকজনের দিকে ইশারা করে বললেন, তার পানির বেশি প্রয়োজন তার কাছে নিয়ে যাও। এভাবে সর্বশেষ ব্যক্তির কাছে পানি এনে দেখা গেল তিনি শহীদ হয়ে গেছেন। পূর্বের ব্যক্তির কাছে ফিরে এসে দেখা গেল তিনিও শহীদ হয়ে গেছেন। হযরত ইকরিমা রা. এর কাছে এসেও একই দৃশ্য পরিলক্ষিত হল। এভাবে পানি পান করা ছাড়াই সবাই শাহাদাত বরণ করলেন। রাযিআল্লাহু আনহুম ওয়া আরযাহুম। -তবাকাতে ইবনে সা‘দ, ৮/৫২০; তাফসীরে ইবনে কাছির, ৪/৩৫৭; আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া ৭/১২

এই ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সান্নিধ্য-ধন্য সাহাবীগণের আদর্শ ও কর্মপন্থা। তাঁরা সকলেই এই মহান নববী আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। তাঁরাই আমাদের জীবনের আদর্শ পুরুষ। আল্লাহ পাক আমাদেরকে সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ পথ অবলম্বন করার তাওফীক দান করুন। নবী ও তাঁর ছাহাবীদের পথ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

وَ السّٰبِقُوْنَ الْاَوَّلُوْنَ مِنَ الْمُهٰجِرِیْنَ وَ الْاَنْصَارِ وَ الَّذِیْنَ اتَّبَعُوْهُمْ بِاِحْسَانٍ رَّضِیَ اللهُ عَنْهُمْ وَ رَضُوْا عَنْهُ وَ اَعَدَّ لَهُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ تَحْتَهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَاۤ اَبَدًا ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ .

ঈমানে প্রথমে অগ্রগামী তথা মুহাজির ও আনসারগণ এবং যারা নিষ্ঠার সাথে তাঁদের অনুসরণ করেছে। আল্লাহ পাক তাঁদের সকলের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। আল্লাহ পাক তাদের জন্য এমন জান্নাত তৈরি করে রেখেছেন, যার তলদেশে নহর বহমান। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। এটাই মহা সাফল্য। -সূরা তাওবা (৯) : ১০০

শেষের প্রার্থনা- সেই মহান আদর্শের ছোঁয়ায় জেগে উঠুক বিশ্ব আবারঃ

আজ আমাদের ভেতরে কোথায় সাহাবায়ে কেরামের আলোকিত জীবনের উন্নত সেসব আদর্শ? আফসোস! আমরা শুধু নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। আমার আমার করে করে আমাদের জীবন অতিষ্ঠ। সবকিছু গিলে খাওয়ার পরেও আমাদের অন্তহীন ক্ষুধা মেটে না। আমাদের চাহিদা ফুরোয় না। আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয় না। আমাদের চাওয়া পাওয়া শেষ হয় না। আমাদের পেট ভরলেও চোখ ভরে না। পরের জন্য ভাবি না। অন্যের অধিকার নিয়ে চিন্তা করি না। হায় হায়! আমরাও যদি সাহাবায়ে কেরামের মত আত্মত্যাগের নজরানা আমাদের জীবনের পরতে পরতে পেশ করতে পারতাম! আমরাও যদি অপরের প্রয়োজনকে নিজেদের প্রয়োজনের উপরে স্থান দিতে পারতাম! আমরাও যদি অপরের অধিকার আর মর্যাদাকে সমুন্নত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে পারতাম! আমাদের ঐকান্তিক বিশ্বাস, যে সুমহান আদর্শের পরশ পাথরের সান্নিধ্য-ছোঁয়ায় ইসলামের প্রাথমিক যুগগুলোর উত্তম মানুষেরা একদা আলোকিত করেছিলেন গোটা বিশ্বকে, আজকের যুদ্ধ বিধ্বস্ত, ক্ষুধা পীড়িত অশান্ত পৃথিবীর কানায় কানায় আবার জান্নাতের সুবাতাস বইয়ে দেয়া সম্ভব একমাত্র সে মহত্তম আদর্শের পুনর্বাস্তবায়নের মাধ্যমেই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আমাদেরকে ত্যাগের সেসব মহান আদর্শ নিজেদের জীবনে ধারণ, অন্যদের সামনে উপস্থাপন এবং বিশ্বময় বাস্তবায়ন করার তাওফিক প্রদান করুন।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ১:২৭

এভো বলেছেন: অমুসলিমদের সাথে মুসলমানদের বন্ধন কেমন হবে সে ব্যপারের নীচের লিখা একটি ব্লগে পেলাম , এই ব্যপারে আপনার মতামত জরুরি , লিখাটা ঠিক না ভুল সেটা বোঝার চেষ্টা করছি , ধন্যবাদ

সূচনা
মুসলিমরা সবসময়ই প্রচার করে এসেছেন যে ইসলাম শান্তির ধর্ম। সাধারণ মুসলিমরা বিশ্বাস করেন যে ইসলাম সম্প্রীতির কথা বলে, ঘৃণা করতে শেখায় না। তারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন, ইসলাম কারো প্রতি বিন্দু মাত্র অবিচার করে না। একজন মুসলিম হিসেবে তাদেরকে এমন বিশ্বাস ধারণ করতেই হয়, কেননা একজন মুসলিম হিসেবে আপনি এমনটা কখনোই বিশ্বাস করবেন না যে ইসলাম কোনোভাবে কারো প্রতি অবিচার করে। ইসলামের প্রকৃত রূপ কি এমনই? না, অবশ্যই না। আসুন দেখে নিই, ইসলাম তাদেরকে কেমন দৃষ্টিতে দেখে যারা ইসলামে বিশ্বাস করে না। আসুন দেখি, কুরআন মুসলিমদেরকে অমুসলিমদের প্রতি কেমন মনোভাব রাখার শিক্ষা দেয়। তাহলেই আমরা বুঝতে পারবো ইসলাম আসলেই শান্তির ধর্ম নাকি জঘন্য একটি ধর্ম।

অমুসলিমরা নির্বোধ
2:171
وَ مَثَلُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا کَمَثَلِ الَّذِیۡ یَنۡعِقُ بِمَا لَا یَسۡمَعُ اِلَّا دُعَآءً وَّ نِدَآءً ؕ صُمٌّۢ بُکۡمٌ عُمۡیٌ فَہُمۡ لَا یَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۷۱﴾
English - Sahih International
The example of those who disbelieve is like that of one who shouts at what hears nothing but calls and cries cattle or sheep - deaf, dumb and blind, so they do not understand.
Bengali - Bayaan Foundation
আর যারা কুফরী করেছে তাদের উদাহরণ তার মত, যে এমন কিছুর জন্য চিৎকার করছে, হাঁক-ডাক ছাড়া যে কিছু শোনে না। তারা বধির, বোবা, অন্ধ। তাই তারা বুঝে না।
Bengali - Mujibur Rahman
আর যারা অবিশ্বাস করেছে তাদের দৃষ্টান্ত ওদের ন্যায় - যেমন কেহ আহবান করলে শুধু চীৎকার ও ধ্বনি ব্যতীত আর কিছুই শোনেনা, তারা বধির, মুক, অন্ধ; কাজেই তারা বুঝতে পারেনা।
তাফসীর

অর্থাৎ কাফির ও মুশরিকদেরকে যখন বলা হয় যে, তারা যেন আল্লাহর কিতাব ও রাসূল (সঃ)-এর সুন্নাতের অনুসরণ এবং নিজেদের ভ্রষ্টতা ও অজ্ঞতাকে পরিত্যাগ করে, তখন তারা বলে যে, তারা তাদের বড়দের পথ ধরে রয়েছে। তাদের পিতৃপুরুষ যাদের পূজা অর্চনা করতো তারাও তাদের উপাসনা করছে এবং করতে থাকবে। তাদের উত্তরেই কুরআন ঘোষণা করছে যে, তাদের পিতৃপুরুষদের কোন জ্ঞান ছিল না এবং তারা সুপথগামী ছিল না। এই আয়াতটি ইয়াহূদীদের সম্বন্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল। তাদের দৃষ্টান্ত পেশ করছেন যে, যেমন মাঠে বিচরণকারী জন্তুগুলো রাখালের কথা সঠিকভাবে বুঝতে পারে না, শুধুমাত্র শব্দই ওদের কানে পৌঁছে থাকে এবং ওরা কথার ভাল ও মন্দ সম্বন্ধে সম্পূর্ণ রূপে অজ্ঞাত থাকে, এইসব লোকের অবস্থা ঠিক তদ্রূপ। এই আয়াতের ভাবার্থ এও হতে পারে যে, আল্লাহ তাআলাকে ছেড়ে এরা যাদের পূজা করে থাকে এবং তাদের প্রয়োজন ও মনস্কামনা পূর্ণ করার প্রার্থনা জানিয়ে থাকে তারা এদের কথা শুনতে পায়, না জানতে পারে, না দেখতে পায়। তাদের মধ্যে না আছে জীবন, না আছে কোন অনুভূতি। কাফিরদের এই দলটি সত্য কথা শুনা হতে বধির, বলা হতে বোবা, সত্য পথে চলা হতে অন্ধ এবং সত্যের অনুধাবন হতেও এরা বহু দূরে রয়েছে। যেমন অন্য স্থানে আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ ‘আমার আয়াতসমূহে অবিশ্বাসকারীরা বধির, বোবা, তারা অন্ধকারের মধ্যে রয়েছে, আল্লাহ যাকে চান পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান সরল ও সঠিক পথ প্রদর্শন করেন।
কুরআন ২:১৭০-১৭১
তাফসীর ইবনে কাসির

অমুসলিমরা খারাপ
2:254
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنۡفِقُوۡا مِمَّا رَزَقۡنٰکُمۡ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَ یَوۡمٌ لَّا بَیۡعٌ فِیۡہِ وَ لَا خُلَّۃٌ وَّ لَا شَفَاعَۃٌ ؕ وَ الۡکٰفِرُوۡنَ ہُمُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۲۵۴﴾
English - Sahih International
O you who have believed, spend from that which We have provided for you before there comes a Day in which there is no exchange and no friendship and no intercession. And the disbelievers - they are the wrongdoers.
Bengali - Bayaan Foundation
হে মুমিনগণ, আমি তোমাদেরকে যে রিজিক দিয়েছি তা হতে ব্যয় কর, সে দিন আসার পূর্বে, যে দিন থাকবে না কোন-বেচাকেনা, না কোন বন্ধুত্ব এবং না কোন সুপারিশ। আর কাফিররাই যালিম।
Bengali - Mujibur Rahman
হে বিশ্বাসীগণ! আমি তোমাদেরকে যে জীবনোপকরণ দান করেছি তা হতে সেদিন সমাগত হওয়ার পূর্বে ব্যয় কর যেদিন ক্রয়-বিক্রয়, বন্ধুত্ব ও সুপারিশ নেই, আর অবিশ্বাসীরাই অত্যাচারী।
তাফসীর

আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তারা যেন সুপথে নিজেদের মাল খরচ করে, তাহলে আল্লাহর নিকট তার পুণ্য জমা থাকবে। অতঃপর বলেন যে, তারা যেন তাদের জীবদ্দশাতেই কিছু দান-খয়রাত করে। কেননা কিয়ামতের দিন না ক্রয়-বিক্রয় চলবে, না পৃথিবী পরিমাণ সোনা দিয়ে জীবন রক্ষা করা যাবে না কারও বংশ, বন্ধুত্ব ও ভালবাসা কোন কাজে আসবে। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবি) অর্থাৎ যখন শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে সে দিন না তাদের মধ্যে বংশ পরিচয় থাকবে, না একে অপরের অবস্থা জিজ্ঞাসাবাদ করবে।’ (২৩:১০১) সেদিন সুপারিশকারীর সুপারিশ কোন কাজে আসবে না।
অতঃপর আল্লাহ তা’আলা বলেন যে, কাফিরেরাই অত্যাচারী। অর্থাৎ পূর্ণ অত্যাচারী তারাই যারা কুফরের অবস্থাতেই আল্লাহ তা’আলার সাথে সাক্ষাৎ করে। হযরত আতা বিন দীনার (রঃ) বলেন, “আমি মহান আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যে, তিনি কাফিরদেরকে অত্যাচারী বলেছেন কিন্তু অত্যাচারীদেরকে কাফির বলেননি।
কুরআন ২:২৫৪
তাফসীর ইবনে কাসির

62:5
مَثَلُ الَّذِیۡنَ حُمِّلُوا التَّوۡرٰىۃَ ثُمَّ لَمۡ یَحۡمِلُوۡہَا کَمَثَلِ الۡحِمَارِ یَحۡمِلُ اَسۡفَارًا ؕ بِئۡسَ مَثَلُ الۡقَوۡمِ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِ اللّٰہِ ؕ وَ اللّٰہُ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۵﴾
English - Sahih International
The example of those who were entrusted with the Torah and then did not take it on is like that of a donkey who carries volumes (of books). Wretched is the example of the people who deny the signs of Allah . And Allah does not guide the wrongdoing people.
Bengali - Bayaan Foundation
যাদেরকে তাওরাতের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছিল তারপর তারা তা বহন করেনি, তারা গাধার মত! যে বহু কিতাবের বোঝা বহন করে। সে সম্প্রদায়ের উপমা কতইনা নিকৃষ্ট, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে। আর আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না।
Bengali - Mujibur Rahman
যাদেরকে তাওরাতের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়েছিল, অতঃপর তা তারা বহন করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত পুস্তক বহনকারী গর্দভ। কত নিকৃষ্ট সেই সম্প্রদায়ের দৃষ্টান্ত যারা আল্লাহর আয়াতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। আল্লাহ ফাসিক/পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করেন না।
তাফসীর

এই আয়াতগুলোতে ইয়াহূদীদেরকে নিন্দে করা হচ্ছে যে, তাদেরকে তাওরাত প্রদান করা হয় এবং আমল করার জন্যে তারা তা গ্রহণ করে, কিন্তু আমল করেনি। ঘোষিত হচ্ছে যে, তাদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে পুস্তক বহনকারী গর্দভ। যদি গর্দভের উপর কিতাবের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয় তবে সে তো এটা বুঝতে পারবে যে, তার উপর বোঝা রয়েছে, কিন্তু কি বোঝা রয়েছে তা সে মোটেই বুঝতে পারবে না। অনুরূপভাবে এই ইয়াহূদীরা বাহ্যিকভাবে তো তাওরাতের শব্দগুলো মুখে উচ্চারণ করছে, কিন্তু মতলব কিছুই বুঝে না। এর উপর তারা আমল তো করেই না, এমন কি একে পরিবর্তন পরিবর্ধন করে ফেলছে। সুতরাং প্রকৃতপক্ষে তারা এ নির্বোধ ও অবুঝ জন্তুর চেয়েও নিকৃষ্ট। কেননা, মহান আল্লাহ এদেরকে বোধশক্তিই দান করেননি। কিন্তু এ লোকগুলোকে তো তিনি বোধশক্তি দিয়েছেন, অথচ তারা তা ব্যবহার করে না ও কাজে লাগায় না। এ জন্যেই অন্য আয়াতে বলেছেনঃ “তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত, বরং তাদের চেয়েও নিকৃষ্ট! তারাই গাফিল।” (৭:১৭৯)
এখানে বলা হচ্ছে যে, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অবিশ্বাস করে ও মিথ্যা প্রতিপন্ন করে তাদের দৃষ্টান্ত কতই না নিকৃষ্ট। তারা অত্যাচারী এবং আল্লাহ তা’আলা অত্যাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।
কুরআন ৬২:৫-৮
তাফসীর ইবনে কাসির

অমুসলিমরা পশুর মতো
25:44
اَمۡ تَحۡسَبُ اَنَّ اَکۡثَرَہُمۡ یَسۡمَعُوۡنَ اَوۡ یَعۡقِلُوۡنَ ؕ اِنۡ ہُمۡ اِلَّا کَالۡاَنۡعَامِ بَلۡ ہُمۡ اَضَلُّ سَبِیۡلًا ﴿٪۴۴﴾
English - Sahih International
Or do you think that most of them hear or reason? They are not except like livestock. Rather, they are (even) more astray in (their) way.
Bengali - Bayaan Foundation
তুমি কি মনে কর যে, তাদের অধিকাংশ লোক শোনে অথবা বুঝে? তারা কেবল পশুদের মতো; বরং তারা আরো অধিক পথভ্রষ্ট।
Bengali - Mujibur Rahman
তুমি কি মনে কর যে, তাদের অধিকাংশ শোনে ও বুঝে? তারাতো পশুরই মত; বরং তারা আরও অধম।
তাফসীর

এরপর আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ তুমি কি দেখো না যে, তাদের অধিকাংশ শুনে ও বুঝে? তারা তো পশুরই মত; তারা আরো অধম। অর্থাৎ তাদের অবস্থা বিচরণকারী পশুর চেয়েও খারাপ। কারণ পশুরা ঐ কাজই করে যে কাজের জন্যে ওগুলোকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর এই মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে এক শরীক বিহীন আল্লাহর ইবাদতের জন্যে। কিন্তু তারা তা পালন করেনি। বরং তারা তাকে বাদ দিয়ে অন্যের ইবাদত করে এবং তাদের কাছে দলীল প্রমাণাদি কায়েম হওয়া এবং তাদের নিকট রাসূলদেরকে প্রেরণ করা সত্ত্বেও তারা তাঁর সাথে শরীক স্থাপন করে।
কুরআন ২৫:৪৪
তাফসীর ইবনে কাসির

অমুসলিমরা নাপাক
9:28
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّمَا الۡمُشۡرِکُوۡنَ نَجَسٌ فَلَا یَقۡرَبُوا الۡمَسۡجِدَ الۡحَرَامَ بَعۡدَ عَامِہِمۡ ہٰذَا ۚ وَ اِنۡ خِفۡتُمۡ عَیۡلَۃً فَسَوۡفَ یُغۡنِیۡکُمُ اللّٰہُ مِنۡ فَضۡلِہٖۤ اِنۡ شَآءَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ﴿۲۸﴾
English - Sahih International
O you who have believed, indeed the polytheists are unclean, so let them not approach al-Masjid al-Haram after this, their (final) year. And if you fear privation, Allah will enrich you from His bounty if He wills. Indeed, Allah is Knowing and Wise.
Bengali - Bayaan Foundation
হে ঈমানদারগণ, নিশ্চয় মুশরিকরা নাপাক, সুতরাং তারা যেন মসজিদুল হারামের নিকটবর্তী না হয় তাদের এ বছরের পর। আর যদি তোমরা দারিদ্র্যকে ভয় কর, তবে আল্লাহ চাইলে নিজ অনুগ্রহে তোমাদের অভাবমুক্ত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
Bengali - Mujibur Rahman
হে মু’মিনগণ! মুশরিকরা হচ্ছে একেবারেই অপবিত্র, অতএব তারা যেন এ বছরের পর মাসজিদুল হারামের নিকটেও আসতে না পারে, আর যদি তোমরা দারিদ্রতার ভয় কর তাহলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তোমাদেরকে অভাবমুক্ত করবেন, যদি তিনি চান। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতিশয় জ্ঞানী, বড়ই হিকমাতওয়ালা।
তাফসীর

আল্লাহ তাআলা তাঁর পবিত্র দ্বীনের অনুসারী এবং পাক পবিত্র মুসলিম বান্দাদেরকে হুকুম করছেন যে, তারা যেন ধর্মের দিক থেকে অপবিত্র মুশরিকদেরকে বায়তুল্লাহর পাশে আসতে না দেয়। এই আয়াতটি নবম হিজরীতে অবতীর্ণ হয়। ঐ বছরই রাসূলুল্লাহ (সঃ) আলী (রাঃ)-কে আবু বকর (রাঃ) -এর সাথে প্রেরণ করেন এবং নির্দেশ দেনঃ “হজ্বের সমাবেশে ঘোষণা করে দাও যে, এ বছরের পরে কোন মুশরিক যেন হজ্ব করতে না আসে এবং কেউ যেন উলঙ্গ হয়ে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ না করে। শরীয়তের এই হুকুমকে আল্লাহ তা’আলা এমনিতেই পূর্ণ করে দেন। সেখানে আর মুশরিকদের প্রবেশ লাভের সৌভাগ্য হয়নি এবং এরপরে উলঙ্গ অবস্থায় কেউ আল্লাহর ঘরের তাওয়াফও করেনি। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) গোলাম ও যিম্মী ব্যক্তিকে এই হুকুমের বহির্ভূত বলেছেন। মুসনাদে আহমাদে জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “এ বছরের পরে চুক্তিকৃতগণ ছাড়া এবং তাদের গোলামরা ছাড়া আর কেউই যেন আমাদের মসজিদে প্রবেশ না করে। কিন্তু এই মারফু হাদীস অপেক্ষা বেশী সহীহ সনদযুক্ত মাওকুফ রিওয়ায়াত রয়েছে।
মুসলিমদের খলীফা উমার ইবনে আবদুল আযীয (রঃ) ফরমান জারী করেছিলেনঃ “ইয়াহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে মুসলমানদের মসজিদে আসতে দিবে না।” এই আয়াতকে কেন্দ্র করেই তিনি এই নিষেধাজ্ঞা জারী করেছিলেন। আতা (রঃ) বলেন যে, সম্পূর্ণ হারাম শরীফই মসজিদুল হারামের অন্তর্ভুক্ত। মুশরিকরা যে অপবিত্র, এই আয়াতটিই এর দলীল। সহীহ হাদীসে রয়েছে যে, মুমিন অপবিত্র হয় না। বাকী থাকলো এই কথাটি যে মুশরিকদের দেহ ও সত্তাও কি অপবিত্র? এ ব্যাপারে জমহরের উক্তি এই যে, তাদের দেহ অপবিত্র নয়। কেননা আল্লাহ তা’আলা আহলে কিতাবের যবেহকৃত জন্তু হালাল করেছেন।
কুরআন ৯:২৮
তাফসীর ইবনে কাসির

অমুসলিমরা সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব
8:55
اِنَّ شَرَّ الدَّوَآبِّ عِنۡدَ اللّٰہِ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا فَہُمۡ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿ۖۚ۵۵﴾
English - Sahih International
Indeed, the worst of living creatures in the sight of Allah are those who have disbelieved, and they will not (ever) believe -
Bengali - Bayaan Foundation
নিশ্চয় আল্লাহর নিকট সবচেয়ে নিকৃষ্ট প্রাণী তারা, যারা কুফরী করে, অতঃপর ঈমান আনে না।
Bengali - Mujibur Rahman
নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট নিকৃষ্ট জীব তারাই যারা কুফরী করে এবং যারা ঈমান আনেনা।
98:6
اِنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡ اَہۡلِ الۡکِتٰبِ وَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ فِیۡ نَارِ جَہَنَّمَ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ؕ اُولٰٓئِکَ ہُمۡ شَرُّ الۡبَرِیَّۃِ ؕ﴿۶﴾
English - Sahih International
Indeed, they who disbelieved among the People of the Scripture and the polytheists will be in the fire of Hell, abiding eternally therein. Those are the worst of creatures.
Bengali - Bayaan Foundation
নিশ্চয় কিতাবীদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে ও মুশরিকরা, জাহান্নামের আগুনে থাকবে স্থায়ীভাবে। ওরাই হল নিকৃষ্ট সৃষ্টি।
Bengali - Mujibur Rahman
কিতাবীদের মধ্যে যারা কুফরী করে তারা এবং মুশরিকরা জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে; তারাই সৃষ্টির অধম।
তাফসীর

আল্লাহ তা’আলা কাফিরদের পরিণাম বর্ণনা করছেন যে, কাফির, ইয়াহুদী, নাসারা, মুশরিক, আরব ও অনারব যেই হোক না কেন যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ)-এর বিরোধ এবং আল্লাহর কিতাবকে অবিশ্বাস করে তারা কিয়ামতের দিন জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে, সেখানেই তারা চিরকাল অবস্থান করবে। কোন অবস্থাতেই তারা সেখান থেকে ছাড়া বা রেহাই পাবে না। এরাই নিকৃষ্টতম সৃষ্টি।
কুরআন ৯৮:৬
তাফসীর ইবনে কাসির

মন্তব্য
মধ্যপন্থী মুসলিমরা সাধারণত কুরআনের অমুসলিমবিদ্বেষী আয়াত সমূহ দেখে বিব্রতবোধ করেন। কুরআনের অমুসলিমদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা, তাদেরকে নিয়ে কটুক্তি করা, গালি দেওয়া তারা মেনে নিতে পারেন না। এটা তাদের মধ্যে থাকা প্রচলিত ভুল ধারণার বিরুদ্ধে যায়। তারা নিজেদের মনকে বুঝ দিতে দাবি করেন, ‘এসকল আয়াতে সকল অমুসলিমদের নির্দেশ করে কিছু বলা হয়নি, বরং কেবল তাদের নির্দেশ করা হয়েছে যারা মুসলিমদের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়েছিল’। তাছাড়াও তাদের বহুল প্রচলিত অভিযোগ, ‘ইসলামের সমালোচকরা আসলে কোন আয়াত কোন সময়ে কোন প্রসঙ্গে কোন প্রেক্ষাপটে কেন নাজিল হয়েছিল তা জানে না বা এড়িয়ে যায়’। আমার মুসলিম ভাই-বোনদের বুঝতে হবে যে, যখন কাউকে কেবল অমুসলিম হওয়ার জন্য নির্বোধ কিংবা সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব বলা হবে তখন প্রসঙ্গ বা প্রেক্ষাপটের কোনো প্রশ্নই আসে না। আমি যদি কেবল মুসলিম হওয়ার কারণে কাউকে নির্বোধ বা সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব বলি, তাহলে এটা বুঝতে অন্তত মুসলিমদের অসুবিধা হবে না যে আমি পৃথিবীর সকল মুসলিমকেই নির্বোধ বা সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব বলেছি। কুরআনের যে আয়াতে অমুসলিমদের বধির, বোবা এবং অন্ধ বলা হয়েছে সেই আয়াত থেকে দেখা যায় যে, কেবলমাত্র অমুসলিম হওয়া বা ইসলামের প্রতি বিশ্বাস না থাকার কারণেই তাদেরকে এমনটা বলা হয়েছে। যে আয়াতে তাদেরকে জালিম বলা হয়েছে সেই আয়াত থেকে দেখা যায়, কেবলমাত্র কাফির হওয়াই তাদের ‘জালিম’ উপাধি পাওয়ার কারণ। যে আয়াতে তাদেরকে সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব বলা হয়েছে সেই আয়াত থেকে দেখা যায়, কেবলমাত্র কাফির হওয়ার কারণেই তাদেরকে এমনটা বলা হয়েছে। যারা মুসলিমদের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধেই কেবল এসব শব্দ সমূহ প্রয়োগ করা হয়েছে এমন দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। প্রখ্যাত তাফসীরকারক ইবনে কাসিরের তাফসীর থেকে আমরা এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাইনি যে, অমুসলিমদের মধ্যে যারা মুসলিমদের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়েছিল কেবল তাদেরকেই নির্বোধ বা সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব বলা হয়েছে।

যদি ধরেও নিই যে, সত্যিকার অর্থেই কুরআনে নির্বোধ বা সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব কেবল সেইসব অমুসলিমদেরকেই নির্দেশ করে বলা হয়েছে যারা মুসলিমদের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়েছিল, তারপরও একটা সমস্যা থেকে যায়। আমি ইসলামের সমালোচনা করি বলে কয়েকজন মুসলিম এসে যদি আমার ওপর হামলা চালায় আর আমি যদি প্রাণে বেঁচে গিয়ে পরবর্তীতে ঘৃণা প্রকাশ করে বলি, “মুসলিমরা সন্ত্রাস” বা “মুসলিমরা সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব”, তাহলে কি কাজটা ভালো হবে? অবশ্যই সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয় একটা কাজ হবে। তাই কয়েকজন কাফের/মুশরিকের অপরাধের জন্য “অমুসলিমরা সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব” বা এজাতীয় কথা বলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ।

তথাকথিত শান্তির ধর্মের শিক্ষা কি জঘন্য! ইসলাম ১৪০০ বছর ধরে মুসলিমদেরকে এই শিক্ষাই দিয়ে এসেছে যে, অমুসলিমরা পশুর মতো, অমুসলিমরা সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব। কুরআন অনুযায়ী, হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী একজন মানুষ নিজের রক্ত দিয়ে কোনো মুসলিমের জীবন বাঁচালেও সে পশুর চেয়ে অধম, সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব। কুরআন অনুযায়ী, খ্রিস্টান ধর্মে বিশ্বাসী একজন মানুষ সকল নির্যাতিত মুসলিমের পক্ষে লড়াই করলেও সে পশুর চেয়ে অধম, সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব। কারণ, তারা ইসলামে বিশ্বাস করে না। কুরআন অনুযায়ী, কেবলমাত্র, কাফের হওয়ার কারণে তারা সৃষ্টির সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব, নর্দমার কীটও তাদের চেয়ে ভালো। কুরআন একজন মুসলিমকে তার প্রতিবেশী হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানদের ভালবাসতে শেখায় না, তাদের শ্রদ্ধা করতে শেখায় না, শেখায় তাদেরকে ঘৃণা করতে। কুরআন একজন মুসলিমকে তার অমুসলিম প্রতিবেশীদের ‘নর্দমার কীটের চেয়েও নীচু স্তরের প্রাণী’ ভাবতে শেখায়। দেশের অসংখ্য মাদ্রাসা থেকে অসংখ্য মাদ্রাসা শিক্ষার্থী অমুসলিমদের প্রতি এমন ঘৃণা নিয়েই বেড়ে ওঠে। সত্যিকারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ গড়ে তুলতে বাংলাদেশ সরকারের উচিত মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা নিষিদ্ধ করা। এমন দেশকে আমরা কিভাবেই বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বলবো যে দেশে এমন শিক্ষাব্যবস্থার অস্তিত্ব আছে যে শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ধর্মের মানুষদের সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব ভেবে ঘৃণা করতে শেখায়?

১৫ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:৫৯

নতুন নকিব বলেছেন:



তথাকথিত শান্তির ধর্মের শিক্ষা কি জঘন্য! ইসলাম ১৪০০ বছর ধরে মুসলিমদেরকে এই শিক্ষাই দিয়ে এসেছে যে, অমুসলিমরা পশুর মতো, অমুসলিমরা সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব। কুরআন অনুযায়ী, হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী একজন মানুষ নিজের রক্ত দিয়ে কোনো মুসলিমের জীবন বাঁচালেও সে পশুর চেয়ে অধম, সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব। কুরআন অনুযায়ী, খ্রিস্টান ধর্মে বিশ্বাসী একজন মানুষ সকল নির্যাতিত মুসলিমের পক্ষে লড়াই করলেও সে পশুর চেয়ে অধম, সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব। কারণ, তারা ইসলামে বিশ্বাস করে না। কুরআন অনুযায়ী, কেবলমাত্র, কাফের হওয়ার কারণে তারা সৃষ্টির সবচেয়ে নিকৃষ্ট জীব, নর্দমার কীটও তাদের চেয়ে ভালো। কুরআন একজন মুসলিমকে তার প্রতিবেশী হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানদের ভালবাসতে শেখায় না, তাদের শ্রদ্ধা করতে শেখায় না, শেখায় তাদেরকে ঘৃণা করতে। কুরআন একজন মুসলিমকে তার অমুসলিম প্রতিবেশীদের ‘নর্দমার কীটের চেয়েও নীচু স্তরের প্রাণী’ ভাবতে শেখায়। দেশের অসংখ্য মাদ্রাসা থেকে অসংখ্য মাদ্রাসা শিক্ষার্থী অমুসলিমদের প্রতি এমন ঘৃণা নিয়েই বেড়ে ওঠে।
সত্যিকারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ গড়ে তুলতে বাংলাদেশ সরকারের উচিত মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা নিষিদ্ধ করা। এমন দেশকে আমরা কিভাবেই বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বলবো যে দেশে এমন শিক্ষাব্যবস্থার অস্তিত্ব আছে যে শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ধর্মের মানুষদের সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব ভেবে ঘৃণা করতে শেখায়?


-ভাইজান,

ইসলাম তাহলে আপনাদের কাছে তথাকথিত শান্তির ধর্ম!!!???

বিনীতভাবে আমার পরিচয় জানাচ্ছি যে, আমি একজন মুসলিম এবং আপনার সদয় অবগতির জন্য একথাও জানাচ্ছি যে, এই পরিচয় দিতে কুন্ঠিত নই, লজ্জিত নই, সংকুচিত নই, আড়ষ্ট নই, বরং সর্বান্তকরণে গর্ববোধ করি। অবনত মস্তকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি মহান মালিক সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার প্রতি।

আপনার কাছে একান্ত অনুরোধ, আপনার বুকে যদি সৎ সাহস থাকে, আপনি যদি সত্যবাদীতার মানদন্ডে নিজেকে প্রমান করতে সক্ষম হন বলে মনে করেন, দয়া করে আপনার ধর্মীয় পরিচয়টাও বলেন। তাহলে আপনাকে বুঝতে সুবিধা হবে এবং আপনার সাথে ডিসকাশনে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করা সম্ভব হবে।

আর তাফসীর তো আপনিই দেখা যাচ্ছে মুসলিমদের চেয়ে এমনকি তাফসীরকারদের থেকেও ভালো পারেন। যেসব আয়াত কপি পেস্ট করে বিশাল ঘৃণা বিদ্বেষের কালিমা ইসলামের গায়ে লেপনের চেষ্টা করেছেন, এসব তাফসীর নয়, আপনার মত ইসলাম বিদ্বেষী বন্ধুদের মনগড়া বানোয়াট অপব্যাখ্যা মাত্র। উদাহরনতঃ আপনার উল্লেখকৃত সূরা আল ফুরকান এর ৪৪ নং আয়াতটি নিয়েই কথা বলি। এই আয়াতে ঘৃণা ছড়ানো হয়নি। এখানে তাদের পথভ্রষ্টতার বিষয়টিকে চতুস্পদ জন্তুর সাথে তুলনা করে বলা হয়েছে যে, তারা চতুস্পদ জন্তুর চেয়েও পথভ্রষ্টতা এবং বিভ্রান্তিতে নিম্নতর স্তরে রয়েছে। আমি জানি না, আপনি আরবি জানেন কি না। যদি আরবি ভাষায় কিছু দখল আপনার থেকে থাকে তাহলে আপনার উল্লেখকৃত অত্র আয়াতটির দিকে দয়া করে একটু লক্ষ্য করুন। দেখুন তো! এখানে কি বলা হয়েছে! ঘৃণাটা কোথায় ছড়ানো হয়েছে, ভাইজনা? ঘৃণা তো বরং আপনি/ আপনারাই ছড়িয়ে যাচ্ছেন। কুরআনের আয়াতগুলোর অপব্যাখ্যা করে ইসলাম ধর্মের গায়ে কলঙ্ক লেপনের চেষ্টায় অহেতুক গলদঘর্ম হচ্ছেন।

أَمْ تَحْسَبُ أَنَّ أَكْثَرَهُمْ يَسْمَعُونَ أَوْ يَعْقِلُونَ ۚ إِنْ هُمْ إِلَّا كَالْأَنْعَامِ ۖ بَلْ هُمْ أَضَلُّ سَبِيلًا

আপনি কি মনে করেন যে, তাদের অধিকাংশ শোনে অথবা বোঝে? তারা তো চতুস্পদ জন্তুর মত; বরং আরও পথভ্রান্ত। -সূরা আল ফুরকান, আয়াত নং ৪৪

Or thinkest thou that most of them listen or understand? They are only like cattle;- nay, they are worse astray in Path.

অত্র আয়াতের ব্যাখ্যায় কাফের তথা অবিশ্বাসীগণ চতুষ্পদ জন্তুর চেয়েও অধম বলার কারণ হিসেবে তাফসীরে জালালাইনে বলা হয়েছে- চতুষ্পদ জন্তুর জ্ঞান নেই, আর কাফের তথা অবিশ্বাসীগণের জ্ঞান আছে, চতুষ্পদ জন্তুর জ্ঞান না থাকলেও সে তার প্রভুর ডাকে সাড়া দেয়, তার প্রতি অনুগত থাকে; কিন্তু এ দুরাত্মা কাফের তথা অবিশ্বাসীগণ নিজের জীবনের মালিককে চেনে না এবং তার অনুগতও হয় না এমনকি, তিনি তাদের হেদায়েতের জন্য যখন নবী রাসূলগণকে প্রেরণ করেন এবং তাঁরা তাঁদের মুজেযা প্রদর্শন করেন, তারপরও এরা সত্য গ্রহণে প্রস্তুত হয় না; বরং সত্যের বিরোধিতায় তৎপর থাকে।

চতুষ্পদ জন্তুরা সত্যকে সত্য জানে না, বাতিলকে বাতিল বোঝে না। কেননা, তাদেরকে বোধশক্তি দেয়া হয়নি; কিন্তু তারা হক তথা সত্যকে বাতিল বা মিথ্যা মনে করে না। পক্ষান্তরে কাফের তথা অবিশ্বাসীগণ হক তথা সত্যকে বাতিল বা মিথ্যে মনে করে এবং বাতিল তথা মিথ্যেকে হক বা সত্য মনে করে। তাই তারা চতুষ্পদ জন্তুর চেয়েও অধম।

বুঝাই যাচ্ছে যে, তারা তাদের মেধা এবং জ্ঞানকে খাটিয়ে প্রাণদাতা সৃষ্টিকর্তা মালিককে চিনে না নেয়ার কারণেই তাদেরকে এমন অভিধায় ভূষিত করা হয়েছে।


ভাইজান, কিছু লোক অহেতুকই মাদরাসা শিক্ষা বন্ধের দাবি তুলে মাতম তুলে থাকেন। এগুলো তাদের পন্ডশ্রম ছাড়া আর কিছুই নয়। বলি, মাদরাসা শিক্ষা বন্ধ করার কথা কেন আসে? কোন যুক্তিতে আসতে পারে? আপনি যদি নিজের প্রতি সামান্য ন্যায়নিষ্ঠাবান হয়ে থাকেন, তাহলে কপি পেস্টকৃত কুরআনের আয়াতের এসব অপব্যাখ্যাকে উপজীব্য করে মাদরাসার গায়ে এইভাবে মিছেমিছি দোষ চাপানোর চেষ্টা করতে আপনার বিবেকেও বাধবে। আসলে, ন্যায়ানুগ হলে সেই সুযোগটাই থাকে না। থাকার কথাও নয়। তা ছাড়া, যে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী সে দেশের মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করবেন এটা খুবই স্বাভাবিক।

মক্তব, মসজিদ এবং মাদরাসাসহ উচ্চ শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠা করে সেই জ্ঞান অর্জন করা তাদের ধর্মীয় এবং নাগরিক অধিকারও বটে। সেই অধিকার কেউ কেউ কেড়ে নেয়ার অযৌক্তিক দাবি করছেন কেন, এটাই প্রশ্ন। এসব যুক্তিহীন, গোয়েবলসীয় এবং মিথ্যা আব্দার ও আপত্তি দেখলে, তাদের প্রতি সত্যি বড় করুনা হয়! তাদের মনরঞ্জনের জন্য, মনোবাসনা পূরণের জন্য, একটু বিনোদন দেয়ার জন্য মাদরাসাগুলো যদি কিছুকালের জন্য হলেও বন্ধ করা যেত! তবে, ভাইজান, সত্যি কথা কি জানেন, মনের কোনে জেগে ওঠা কিছু প্রশ্নের উত্তর কিন্তু আসলেই পাওয়া যায় না। প্রশ্ন জাগে, বাংলাদেশে মাদরাসা বন্ধের এসব হাস্যকর দাবি কি কারও কারও মামার বাড়ির আব্দার?

আ্চ্ছা, ভাইজান, যাদের লেখা কপি পেস্ট করলেন, তাদের দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মাদরাসাগুলো যদি বন্ধ করে দেয়াও হয়, বাদ বাকি বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মাদরাসার কি হবে? আপনি একটু ভেবে বলতেন যদি! ভারতেই তো যতটুকু জানি, বাংলাদেশের চেয়ে সম্ভবতঃ বেশি মাদরাসা রয়েছে, মক্তব মাদরাসা মিলিয়ে অন্ততঃ কয়েক লক্ষ তো হবেই, সেগুলোর কি হবে? পাকিস্তানে হাজার হাজার মাদরাসা রয়েছে, সেগুলোর ফয়সালা কি? ইন্দোনেশিয়ার হাজার হাজার মাদরাসার কি হবে? মধ্যপ্রাচ্যের মাদরাসাগুলো বন্ধ করার পদ্ধতি কি? জানেন কি না, জানি না, আমেরিকায়ও কিন্তু এখন অনেক মাদরাসা চালু হয়েছে। ভুল বুঝবেন না আবার, এখন মানে কিন্তু এখনই না, করোনার আগের কথা বলছি। তারপরে শুধু কি আমেরিকাতেই মাদরাসা? ইউরোপের কোথায় নেই মাদরাসা? অস্ট্রেলিয়াতেও তো রয়েছে বেশ কিছু মাদরাসা। মাথা নষ্ট রে ভাই। পরিসংখ্যান এখানটাতেই শেষ নয়, আফ্রিকার অনেক দেশে রয়েছে শত শত মাদরাসা। খোদ দক্ষিন আফ্রিকায়ও রয়েছে মাদরাসা। হাজার হাজার মাদরাসা গোটা আফ্রিকাজুড়ে। সারা বিশ্বে ছড়ানো ছিটানো এসব মাদরাসা বন্ধের ব্যাপারে কি ব্যবস্থা করা যাবে, ভাইজান?

গত কিছু দিন পূর্বেকার ভারতের কোনো একটি কোর্টে কুরআনের কিছু আয়াত বাতিলের দাবি নিয়ে করা রিটের ঘটনাটা সম্ভবতঃ আপনার চোখে পড়ে থাকবে। খোঁজ খবর তেমন আর পরে রাখতে পারিনি। সেটার সর্বশেষ খবর কি হয়েছিল? যদি জেনে একটু জানাতেন!

অনেক ভালো থাকবেন। আপনার জন্য শুধুই শুভকামনা। অশেষ শুভকামনা।

২| ১৫ ই মে, ২০২১ দুপুর ২:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: বর্তমান ইসরাইল আর ফিলিস্তিন সমস্যা নিয়ে লিখুন।

১৫ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:৪৪

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, ভালো বলেছেন। আপনিও তো বেশ ভালো লিখে থাকেন। কিছু লেখেন না ফিলিস্তিনীদের নিয়ে! আহ! ঈদের প্রাক্কালে কতগুলো প্রাণ কেড়ে নেয়া হলো! কত মানুষ খুন করা হলো!

এই ইস্যুতে আমাদের প্রিয় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চমৎকার বলেছেন। তার কথা শুনে বড় শান্তি পেয়েছিলুম। তিনি বলেন যে, হাজারো রকেট ছুড়লে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।

এই প্রথম তার থেকে ট্রাম্প মহোদয়ের চেয়েও অধিক হাস্যরসাত্মক কোনো কথা শুনে ব্যাপক তৃপ্তি বোধ করলাম।

এমন বিনোদন যোগানোর জন্য শুভকামনা, জনাব বাইডেনজি। ইসরায়েলের আশীর্বাদে সামনের দিনগুলোয় পথচলা আপনার মসৃন হোক।

৩| ১৫ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:০০

চাঁদগাজী বলেছেন:


জাপানী, কানাডিয়ান, সুইডেনের লোকজন আমাদের চেয়ে ভালো আছে, সুখে থাকে, আমাদেরকে সাহায্য করে, ওগুলো কি ইসলামের অবদান?

১৫ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৪

নতুন নকিব বলেছেন:



পোস্টের বিষয়ের সাথে প্রশ্নের সম্পর্ক কি?

৪| ১৫ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

গাজীসাব ধনী মানুষের সম্পদে
অভাবীদের হক আছে। যারা দেয়
এটা তাদের কর্তব্য।

১৫ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৫

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ।

৫| ১৫ ই মে, ২০২১ বিকাল ৫:১৩

এভো বলেছেন: আমি প্রথমে পরিষ্কার করেছি, এটা আমার লিখা নহে, লেখকের ধর্মিয় বিশ্বাস কি সেটা জানি না কারন ছদ্ম নামে লিখা হয়েছে।
অমুসলিমদের ঘৃণা বিদ্যেস পোষণ করা এবং ভ্রাতৃ বন্ধন তো দুরের কথা কোন বন্ধুত্ব করা যাবে না, এই মর্মে হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে একটা লিখা আছে, পোড়বেন?

১৫ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৫

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ, সেই লেখাটা কেমন হতে পারে কিছুটা ধারণা করা কঠিন নয়। এতটা কষ্ট আপনাকে করতে হবে না।

প্রথম মন্তব্যের লেখাটা আপনার না, সেটা তো মন্তব্য পড়েই বুঝেছি। কপি পেস্ট করার কথা আপনি সেখানে বলেছেন। উত্তরে আমিও কিন্তু কপি পেস্ট কথাটার উল্লেখ করেছিলাম। প্রশ্ন হচ্ছে, এমন বিদ্বেষ প্রসূত একটি গার্বেজ লেখা আপনি যেহেতু কপি পেস্ট করে এখানে এনে দিয়েছেন। তো, এটি আপনার কাছে অপছন্দনীয় হলে কি কপি করে আনতেন? এ জন্যই মূলতঃ প্রশ্ন আপনাকেই করতে হচ্ছে। আচ্ছা, লেখাটা নিয়ে আপনার কি মতামত?

৬| ১৫ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪০

এভো বলেছেন: আমার মতামত কি জানতে চেয়েছেন -- প্রথমেই আমি লিখেছি --- এই ব্যপারে আপনার মতামত জরুরি , লিখাটা ঠিক না ভুল সেটা বোঝার চেষ্টা করছি , ধন্যবাদ
আমি কোরানের আয়াত গুলো চেক করেছি । সুরা বাইন্নার ৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে অমুসলিমরা নিকৃষ্ঠ জীব এবং এর তফসির দেওয়া হয়েছে ইবনে কাছিরের ।
লিখাটির ভিতরে কিছু ভ্যালিড পয়েন্ট আছে কোরানের আয়াত এবং তফসির সহ , সে কারনে আপনার নিকট পেশ করেছি এর দুর্বলতা কোথায় জানার জন্য ।
আপনি যেহেতু একজন মাহাদ্দিস তাই হাদিসের রেফারেন্স গুলো দেখাতে চেয়েছিলাম , হাদিস গুলো সহি এবং বেশ কয়েকটা তাহাকিক কৃত সহি হাদিস ।
আপনার লেখার হেডিং -- ইসলামের অনন্য ভ্রাতৃত্ববোধ এবং নজীরবিহীন আত্মত্যাগের বাস্তব কিছু ঘটনাঃ

এটা মূলত মমিনদের মধ্যে নিয়ে লিখেছেন , মুসলমান ও অমুসলিমের ভ্রাতৃ বন্ধন নিয়ে কিছু লিখেন নি , তাই এই বিষয় নিয়ে অন্য ব্লগের লিখা পেস্ট করেছি । ধন্যবাদ

১৭ ই মে, ২০২১ সকাল ৮:৪৭

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ।

৭| ১৫ ই মে, ২০২১ রাত ১০:৪৩

কামাল১৮ বলেছেন: পছন্দ না হলে কোরানের আয়াতকেও গার্বেজ বলতে আপনাদের বিবেকে বাঁধে না। এক নাম্বার কমেন্টর বেশির ভাগই কোরানের আয়াত এবং তার অর্থ ও তাফসীর আর তাকে আপনি গার্বেজ বলছেন।

১৬ ই মে, ২০২১ সকাল ৮:৩৯

নতুন নকিব বলেছেন:



দুঃখিত ভাই! আপনাকে সম্ভবতঃ ব্লগার এভোকে দেয়া তার দ্বিতীয় মন্তব্যে কৃত আমার প্রতিমন্তব্যটা দ্বিধায় ফেলেছে। যার কারণে সেটির বিপরীত ব্যাখ্যা দিয়ে আমাকে কুরআনুল হাকিমের মুখোমুখি দাড় করানোর চেষ্টা করলেন! কুরআনুল কারিমের সঠিকতা, মর্যাদা, সম্মান এবং শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে আমাদের বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।

প্রকৃতপ্রস্তাবে কুরআনের আয়াতকে গার্বেজ বলার প্রশ্নই আসে না। আমি সেটা বলিওনি। যেটা বলেছি তা হচ্ছে, ব্লগার এভোর প্রথম কমেন্টে উল্লেখকৃত আয়াতগুলোর মর্মবিরোধী মনগড়া ব্যাখ্যাগুলো আপত্তিকর। এসব আয়াতের অপব্যাখ্যা করে এক শ্রেণির মানুষ ইসলাম ধর্মের চিরন্তন সাম্য, মৈত্রী এবং সার্বজনীন ভ্রাতৃত্ববোধের বিপরীতে এসব আয়াতকে যুক্তি এবং ঢাল হিসেবে দাড় করাতে চান। এখানটাতেই আমাদের আপত্তি।

আরেকটি কথা, পবিত্র কুরআনের মনগড়া অর্থ কেউ যদি দাড় করায়, তাহলে সেগুলোকে তাফসীর বলার সুযোগ থাকে না। কুরআনের আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা, অপব্যাখ্যা ইত্যাদি, এই ধরণের বানোয়াট এবং ভ্রান্ত কথাবার্তাকে গার্বেজ না বলে উপায় কি?

কুরআনের সম্মান, মর্যাদা, মাহাত্ম এবং শ্রেষ্ঠত্ব সুপ্রমানিত এবং স্বতঃসিদ্ধ। এ বিষয়ে নতুন করে কিছু বলার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করি না।

মন্তব্যে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

৮| ১৬ ই মে, ২০২১ রাত ১২:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

ইসরাইল, ফিলিস্তিন এদের সম্পর্কে আমি বিশেষ কিছু জানি না।

১৭ ই মে, ২০২১ সকাল ৮:৪৭

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ।

৯| ১৬ ই মে, ২০২১ দুপুর ১২:১২

এভো বলেছেন: প্রকৃতপ্রস্তাবে কুরআনের আয়াতকে গার্বেজ বলার প্রশ্নই আসে না। আমি সেটা বলিওনি। যেটা বলেছি তা হচ্ছে, ব্লগার এভোর প্রথম কমেন্টে উল্লেখকৃত আয়াতগুলোর মর্মবিরোধী মনগড়া ব্যাখ্যাগুলো আপত্তিকর

এখানে ব্যাখ্যাগুলো ইবনে কাসিরের তফসির থেকে দেওয়া হয়েছে --- মোটেও মনগড়া কথা নহে , ইবনে কাসিরের তফসির । আপনি কি ইবনে কাসিরের তফসিরকে গার্বেজ এবং আপত্তিকর বোলছেন ?
ধন্যবাদ

১৭ ই মে, ২০২১ সকাল ৮:৫২

নতুন নকিব বলেছেন:



ইবনে কাসিরের তাফসিরটা ঠিক আছে। সেটা নিয়ে আমাদের আপত্তিরও কোনো কারণ নেই। কিন্তু সেই সাথে আপনার বলা উক্ত অজ্ঞাত লেখকের নিজের প্রদানকৃত কথা যতটুকু রয়েছে সেগুলো নিশ্চিতভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং আপত্তিকরভাবে বিদ্বেষপ্রসূত। এই সহজ বিষয়টা নিয়ে এত ব্যাখ্যারও কিছু নেই। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এসব বিষয় নিয়ে যারা অপপ্রচার চালিয়ে থাকেন, তাদের উদ্দেশ্য একমাত্র ইসলাম ধর্মের গায়ে কলঙ্কলেপন। আপনার কি মনে হয়?

ধন্যবাদ।

১০| ১৭ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:৫৫

এভো বলেছেন: কিন্তু সেই সাথে আপনার বলা উক্ত অজ্ঞাত লেখকের নিজের প্রদানকৃত কথা যতটুকু রয়েছে সেগুলো নিশ্চিতভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং আপত্তিকরভাবে বিদ্বেষপ্রসূত।
সেটা কি বিস্তারিত ভাবে ব্যাখা কোরবেন ?


এই সহজ বিষয়টা নিয়ে এত ব্যাখ্যারও কিছু নেই

বিষয়টা আমার কাছে মোটেও সহজ মনে হচ্ছে না ।

কোরানের আয়াত ও ইবনে কাসিরের তফসিরের উপর ভিত্তি করে উনি মন্তব্য করেছেন , আপনি কি সঠিক জবাব দিতে পারবেন -- আপত্তিকর উদ্দেশ্য প্রণোদিত এই জাতীয় মার্জিনাল শব্দ ব্যবহার না করে , ধন্যবাদ

১৯ শে মে, ২০২১ সকাল ১১:৪৫

নতুন নকিব বলেছেন:



একই বিষয় নিয়ে এভাবে প্যাচাপেচি আমার পছন্দ নয়। তাফসিরে ইবনে কাসিরের সেই অংশটুকুই তিনি কোট করেছেন যেটুকু করলে তিনি বিতর্কিত একটি বিষয়কে সাজিয়ে গুছিয়ে ইসলামের বিপক্ষে দাঁড় করাতে পারবেন। এরপরে তার সাথে নিজের মতামত সুবিধামত ঢুকিয়ে দিয়েছেন। ইসলাম বিদ্বেষীরা যেটা সচরাচর করে থাকেন উনিও সেটাই করেছেন। এই সহজ ব্যাপারটা না বোঝার কিছু নেই। আপনি ইচ্ছে করেই জল ঘোলা করার চেষ্টা করছেন। প্যাঁচানোর চেষ্টা করছেন। নয় কি?

দয়া করে আপনি অপ্রয়োজনীয় এসব মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন। তারপরেও বলে রাখছি, আমিও মানুষ, আমারও ভুল ভ্রান্তি হতে পারে, সেইক্ষেত্রে আমার কোনো মন্তব্য যদি আপনার কষ্টের কারণ হয়ে থাকে সে জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। তবু এটা নিয়ে আর বাড়াবাড়ি না করলে খুশি হব।

ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.