নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুন্দর বাক্যবিনিময়ে প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে উত্তম চরিত্র

৩০ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:২৩

ছবিঃ অন্তর্জাল।

সুন্দর বাক্যবিনিময়ে প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে উত্তম চরিত্র

সুন্দর বাক্যবিনিময় ভদ্রতার পরিচায়ক। মানব চরিত্রের মাধুর্য, সৌন্দর্য্য এবং উৎকর্ষতার পাশাপাশি নিম্নতা ও নিচতা পরিমাপেরও অন্যতম একটি উপাদান হচ্ছে তার ভাষা। ভাষা তিক্ত ও কঠোর হলে তার আঘাত হয় অতি ভয়ানক এবং তার ক্ষত অনেক গভীর পর্যন্ত পৌঁছে যায়। পক্ষান্তরে বিনম্র এবং সুন্দর আচরণ মন গলিয়ে দিতে পারে শক্ত এবং কঠিন হৃদয়ের মানুষের অন্তরও। সুন্দর ভাষা ব্যবহারের সর্বোচ্চ দিক হলো, সকল নবী-রাসূল এ ভাষার মাধ্যমে তাঁদের উপরে অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন। আবার এর নেতিবাচক দিক খেয়াল করলে দেখা যাবে, মানুষের যাবতীয় কাজ-কর্ম এবং চাল-চলনের নেতিবাচক ফলাফলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলোর মধ্যেও এটি একটি। বর্তমান অবাধ প্রচার মাধ্যমের কল্যাণে পাশ্চাত্যের তথাকথিত সভ্য দাবিদারদের নৈতিক স্খলন ও চারিত্রিক রোগ-ব্যধি আমাদের মধ্যেও অনুপ্রবেশ করছে। আমরা নিজেদের অলক্ষ্যেই ক্রমশঃ ধাতস্থ হয়ে উঠছি তাদের বাচন, কথকতা এবং প্রকাশভঙ্গিতেও। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের ভাব, ভাষা এবং আচার আচরণ ও প্রকাশভঙ্গিতে তাদের অন্ধানুকরণ অনেকাংশেই আজ বিকশিত ও প্রতিভাত।

এ কথা সর্বজন স্বীকৃত যে, আমাদের চারিত্রিক উন্নতির পেছনে ভাষার ভূমিকা ব্যাপক। চরিত্র তখনই সুদৃঢ় হয় যখন এর ভিত্তি স্থাপিত হয় গভীর জ্ঞান এবং সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে। আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, জ্ঞানের প্রকাশ ঘটানোর ক্ষেত্রে ভাষা অন্যতম শক্তিশালী একটি মাধ্যম।

এ কারণে কথোপকথন হতে হবে সুন্দর, শ্রুতিমধুর এবং মার্জিত। বক্ষমান সংক্ষিপ্ত নিবন্ধে সুন্দর কিংবা ভালো ভাষা ও কথোপকথনের কিছু কলাকৌশল উল্লেখ করার চেষ্টা করবো আমরা।

অর্থহীন বাক্যবিনিময় বর্জনীয়ঃ

কথোপকথনের আকর্ষণ নির্ভর করে বক্তব্যের উদ্দেশ্যের উপরে। সুতরাং, বক্তব্যের উদ্দেশ্য যত মহৎ হবে বক্তব্য ও কথোপকথন তত সুন্দর, শ্রুতিমধুর, মনোমুগ্ধকর, কমনীয় এবং আকর্ষণীয় হবে। তাই অর্থহীন বাক্যবিনিময় থেকে বিরত থাকা একান্ত কর্তব্য। একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে- 'ক্কওলুল খইরি আওয়িস সমতি', অর্থ- 'হয় উত্তম কথা অন্যথায় নিরবতা'। অর্থাৎ, আপনার মুখ নিঃসৃত প্রতিটি কথা হবে অর্থপূর্ণ এবং উত্তম। এমন উত্তম কিছু বলার না থাকলে আপনার নিরব থাকাই উত্তম।

মিথ্যা সকল পাপের মূলঃ

সর্বদা সত্য কথা বলা নিজের জন্য অত্যাবশ্যকীয় করে নিতে হবে। কেননা, মিথ্যা সকল পাপের মূল। রাসূলে কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- সবচেয়ে বড় খেয়ানত হলো, তুমি তোমার মুসলমান ভাইকে এমন একটি কথা বললে যা সে সত্য বলে মনে করল অথচ তা মিথ্যা। -আবু দাউদ

কথা কাজে মিল থাকা চাইঃ

কথাবার্তায় ওইসব বিষয় শামিল থাকা চাই যে বিষয়ে পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস আছে। নিজের বক্তব্যের সাথে কাজের মিল রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। বক্তব্য ও কাজের বৈপরীত্য থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে। অন্যথায় এতে সমাজে বে-আমলীর পরিবেশ সৃষ্টি হবে। কথা ও কাজের বৈপরীত্যের নিন্দা করে কুরআনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা মানুষকে ভালো কথা শোনাও অথচ নিজেরা তা ভুলে যাও!’ -সুরা বাকারা : আয়াত- ৪৪

বাক্য প্রয়োগে কৃত্রিমতা ও লৌকিকতা কাম্য নয়ঃ

বাক্য প্রয়োগে কৃত্রিমতা ও লৌকিকতা থেকে মুক্ত থাকতে হবে। কেননা, এসব মানুষের সাথে সম্পর্ক জোড়ার পরিবর্তে সম্পর্কের ভাঙন সৃষ্টি করে। নিজের সত্তাকে অন্যের সামনে সহজ-সরলরূপে প্রকাশের চেষ্টা করতে হবে।

উত্তম কথা মর্যাদা বৃদ্ধির কারণঃ

মন ভাঙে, হতাশা এবং ভীতির সৃষ্টি করে এ ধরনের বাক্যের পরিবর্তে আশা সঞ্চারক এবং কল্যাণকর কথা বলা চাই। বক্তার প্রধান উদ্দেশ্য যদি হয় মানুষের কল্যাণ কামনা তাহলে সে সামাজিক জীবনে মানুষের জন্য উপকারী ব্যক্তি হিসেবে প্রমাণিত হবে। হাদীসে ইরশাদ হয়েছে- বান্দার যবান থেকে কোনো সময় ভালো কথা বের হয়, যা আল্লাহর পছন্দের কারণ। বান্দা এটাকে তেমন গুরুত্বই দেয় না। অথচ আল্লাহ তাআলা এর বদলায় তার মর্যাদা বুলন্দ করেন। -সহীহ বুখারী

বাক্যে নম্রতা ও কমনীয়তা থাকা বাঞ্চনীয়ঃ

বাক্যে কমনীয়তা ও ঋজুতা অবলম্বন করতে হবে। আল্লাহ তাআলা ফেরাউনের মতো জালিমের সাথেও নরম ভাষায় কথা বলার আদেশ দিয়েছিলেন হযরত মূসা আলাইহিস সালামকে। ইরশাদ হয়েছে,

فَقُوۡلَا لَہٗ قَوۡلًا لَّیِّنًا لَّعَلَّہٗ یَتَذَکَّرُ اَوۡ یَخۡشٰی

‘তাদের সাথে নরম ভাষায় কথা বলবে’। -সূরাহ, ত্ব-হা-, আয়াত- ৪৪

উপরোক্ত আয়াতে ফেরাউনের মত মহা দুর্বৃত্ত এবং পাপিষ্ঠ ব্যক্তির সাথেও বিনম্র আচরণের নির্দেশ থেকে সহজেই বুঝে নেয়া সম্ভব যে, সাধারণ মানুষের সাথে কেমন হওয়া উচিৎ আমাদের আচরণ। মুসলমানগণ পরস্পরের মধ্যে কী ধরনের বাক্যবিনিময় করবে তা বলাই বাহুল্য।

শ্রেণিভেদে সকলের সাথে শিষ্টাচারপূর্ণ আচরণ হওয়া উচিতঃ

শ্রোতার বয়স, মেধা, মানসিক অবস্থা এবং যোগ্যতার প্রতি লক্ষ্য রেখে কথা বলা বিধেয়। শিশুদের সাথেও আদব বজায় রেখে কথা বলতে হবে এবং তাদের সাথে দর্শন বা ফালসাফার ঘুরানো প্যাঁচানো কথাবার্তা বলা উচিৎ নয়। এমনিভাবে মা-বাবার সাথে কথা বলার সময় আল্লাহর নির্দেশ পালনে যত্নবান থাকতে হবে। তাদের সামনে ‘উফ্’ শব্দটিও উচ্চারণ করা যাবে না, কঠোরতা করা যাবে না, উত্তেজিত বা বিরক্তি প্রকাশ করা যাবে না। সর্বদা আদব ও ইহতেরামের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদেরকে উত্তম চরিত্র গঠনের তাওফিক দান করুন। সুন্দর বাক্য বিনিময়ের মাধ্যমে সকলের প্রিয়ভাজন হওয়ার কিসমত নসিব করুন।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৪৩

হাবিব বলেছেন: জাজাকাল্লাহ খায়রান

৩০ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৫৮

নতুন নকিব বলেছেন:



লাইকসহ প্রথম মন্তব্যে অনেক অনেক শুকরিয়া।

আপনি ইদানিং সম্ভবতঃ ব্লগে নিয়মিত। খুবই ভালো। কিছু কাজের ব্যস্ততায় সবসময় আসার সুযোগ হয় না।

আপনিসহ প্রিয় ব্লগের সকলের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন।

২| ৩০ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:০০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সুন্দর এবং দরকারি একটা পোস্ট দিয়েছেন।

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘কবিরা গুনাহগুলোর একটি হলো নিজের মা-বাবাকে অভিশাপ করা।’ জিজ্ঞেস করা হলো, ‘আল্লাহর রাসুল! মানুষ নিজের মা-বাবাকে কিভাবে অভিশাপ করে?’ তিনি বললেন, ‘যখন সে অন্যের বাবাকে গালাগাল করে, তখন সে নিজের বাবাকেও গালাগাল করে থাকে। আর যে অন্যের মাকে গালি দেয়, বিনিময়ে সে তার মাকেও গালি দেয়।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৯৭৩, তিরমিজি, হাদিস : ১৯০২)

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপদাতা, অশ্লীলভাষী ও গালাগালকারী হয় না। (তিরমিজি, হাদিস : ২০৪৩)

যারা বিনা অপরাধে ঈমানদার পুরুষ ও নারীদের কষ্ট দেয়, তারা অবশ্যই মিথ্যা অপবাদ ও স্পষ্ট অপরাধের বোঝা বহন করে। (সুরা আহজাব, আয়াত : ৫৮)

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসেকি [আল্লাহর অবাধ্য আচরণ] এবং তার সঙ্গে লড়াই ঝগড়া করা কুফরি’ (বুখারি, হাদিস : ৬০৪৫, ৭০৭৬; তিরমিজি, হাদিস : ১৯৮৩)।

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার (কোনো মুসলিম) ভাইয়ের সম্মান নষ্ট করেছে অথবা কোনো বিষয়ে জুলুম করেছে, সে যেন আজই (দুনিয়াতে) তার কাছে (ক্ষমা চেয়ে) হালাল করে নেয়—ওই দিন আসার আগে, যেদিন দিনার ও দিরহাম কিছুই থাকবে না। তার যদি কোনো নেক আমল থাকে, তবে তার জুলুমের পরিমাণ অনুযায়ী তা থেকে নিয়ে নেওয়া হবে। আর যদি তার কোনো নেকি না থাকে, তবে তার সঙ্গীর পাপরাশি তার (জালেমের) ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৪৪৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ৯৩৩২)

৩০ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:১০

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনি বিষয় সংশ্লিষ্ট আয়াত এবং হাদিস উল্লেখ করে চমৎকার একটি মন্তব্য রেখে যাওয়ায় বিশেষ কৃতজ্ঞতা। আমি মূলতঃ ইচ্ছে থাকা সত্বেও পোস্টটিতে অনেক কথা লিখতে চেয়েও লিখিনি শুধু কলেবর বৃদ্ধি না করার জন্য।

অনেক ভালো থাকার প্রার্থনা।

৩| ৩০ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: এক হাদিসে পড়েছিলাম- তোমার টাকা পয়সা নাই। সমস্যা নাই। তোমার মুখ আছে। মুখ দিয়ে দুটা ভালো কথা বলে দাও।

৩১ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৮:২৯

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.