নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবিঃ অন্তর্জাল।
ঘূর্ণিঝড়-মহামারি-জলোচ্ছ্রাসসহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ এবং এসব থেকে বেঁচে থাকার উপায়
প্রাকৃতিক বিপর্যয় তথা ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, মহামারি ইত্যাদি দেখা দিলে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চিন্তিত এবং বিচলিত হতেন। তিনি আল্লাহর আজাব-গজবকে ভয় করতেন। ঝড় ঝঞ্জা শুরু হলে তিনি আল্লাহ তাআ'লার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতেন। নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন। এসব আজাব-গজব থেকে মুক্ত থাকতে দিক-নির্দেশনাসহ তাওবাহ-ইসতেগফারের পরামর্শ দিতেন সাহাবায়ে কেরামগণকে।
ঘূর্ণিঝড়, মহামারিসহ অন্য যে কোনো দুর্যোগ ও বিপর্যয় সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা মানুষকে সতর্ক করতে কুরআনুল কারিমে একাধিক আয়াত নাজিল করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُم بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ
'মানুষের কৃতকর্মের জন্য জমিনে ও সমুদ্রে বিপর্যয় দেখা দেয়। যাতে আল্লাহ তাদের কতিপয় কৃতকর্মের স্বাদ তাদের আস্বাদন করান, যাতে তারা (সঠিক পথে) ফিরে আসে।' -সুরা রূম : আয়াত ৪১
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে-
وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ ۗ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ
'আর অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ প্রদান করুন সবরকারীদের।' -সুরা বাকারাহ : আয়াত ১৫৫
উপরোক্ত আয়াতের শেষে বর্ণিত 'সবরকারীগণের' পরিচয় বিবৃত হয়েছে পরবর্তী আয়াতে। ইরশাদ হয়েছে-
الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
সবরকারী লোকদের পরিচয় হচ্ছে, যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো। -সুরা বাকারাহ : আয়াত ১৫৬
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মহামারি আসার কারণ বর্ণনায় হাদিসের ঘোষণাঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসব মহামারি ও ঘূর্ণিঝড়সহ যাবতীয় বিপদাপদের আগমন কেন ঘটে, সে সম্পর্কে সাহাবাদের কাছে বর্ণনা করেছেন। এমন কিছু কাজ আছে যেসব কাজের কারণে আল্লাহ তাআলা মানুষের ওপর দুর্যোগ-মহামারি ইত্যাদি শাস্তি চাপিয়ে দেন। হাদিসে এসেছে-
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বললেন-
হে মুহাজিরগণ! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও। (আর তাহলো)-
১. যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন মহামারি আকারে (নতুন-নতুন) প্লেগরোগের প্রাদুর্ভাব হয়, যা আগের লোকদের মধ্যে কখনও দেখা যায়নি।
২. যখন কোনো জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে তখন তাদের ওপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন পিবদ-মুসিবত।
৩. আর যখন কোনো জাতি জাকাত আদায় করে না, তখন আসমান থেকে বৃষ্টিবর্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি জমিনে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকতো তবে আর কখনও বৃষ্টিপাত হতো না।
৪. যখন কোনো জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের ওপর বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করে দেন। আর তারা (শাসকবর্গ মানুষের) সহায় সম্পদ কেড়ে নেয়।
৫. আর যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাজিলকৃত বিধান গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ লাগিয়ে দেন।' -ইবনে মাজাহ
উল্লেখিত কুরআনের আয়াত ও হাদিসের দিক-নির্দেশনা প্রমাণ করে যে, মানুষের গোনাহের কারণেই দুনিয়াতে বিভিন্ন রকম বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে। এ বিপর্যয় কখনো সমুদ্রে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, জমিনে ঝড়-তুফান, অজানা মহামারি, রোগ-ব্যধি, অন্যায়ভাবে যুদ্ধ-বিগ্রহ তৈরি করে দেয়।
উত্তরণের উপায়ঃ
এ থেকে উত্তরণে একমাত্র উপায় হলো-
দুনিয়ায় যাবতীয় অন্যায় কাজ ছেড়ে দিয়ে মহান আল্লাহর দিকে ফিরে আসা। বেশি বেশি তাওবাহ ইসতেগফার করা। মানুষের অধিকারের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া। তবেই মহান আল্লাহ এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ সব বিপদ-আপদ থেকে হেফাজত করবেন। তাই মহান আল্লাহর কাছে তার আজাব থেকে বাঁচত প্রথমেই অন্যায়মূলক সব গোনাহের কাজ ছেড়ে দেয়া আবশ্যক।
অতঃপর কুরআনে বর্ণিত ছোট্ট এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়া। আর তাহলো-
- رَبَّنَا اكْشِفْ عَنَّا الْعَذَابَ إِنَّا مُؤْمِنُونَ
উচ্চারণ : 'রাব্বানাকশিফ আন্নাল আজা-বা ইন্না- মুমিনু-ন।'
অর্থ : 'হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের উপর থেকে আপনার শাস্তি প্রত্যাহার করুন, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করছি।' -সুরা দুখান : আয়াত ১২
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ যারা আল্লাহ তাআ'লার প্রতি বিশ্বাস রাখেন না, তাকে স্রষ্টা হিসেবে মানেন না, তাঁর পুরষ্কার ও শাস্তিতে আস্থা রাখেন না; সর্বোপরি পরকালে অবিশ্বাস করেন- তাদের কাছে এই লেখা গুরুত্বহীন এবং অপলাপ মনে হতে পারে। এই কারণে তারা যাতে বিভ্রান্তির হাত থেকে বাঁচতে পারেন, সে জন্য এই পোস্ট এড়িয়ে যেতে তাদের অনুরোধ করছি। বলা বাহুল্য, কুরআনুল কারিমের একাধিক আয়াত এবং হাদিসের দলিল নির্ভর এই লেখা শুধুমাত্র যারা কুরআনুল কারিম এবং হাদিসে গভীর আস্থা রাখেন, আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী সেসব ব্যক্তিগণের জন্য।
পোস্ট পাঠে শুভকামনা সকলের জন্য।
৩১ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৩৮
নতুন নকিব বলেছেন:
প্রাকৃতিক বিপর্যয় যা কিছু বলি অধিকাংশই আমাদের হাতের কামাই। আল্লাহর রহমত ছাড়া বাঁচা অসম্ভব।
-সত্য বলেছেন। ধন্যবাদ।
২| ৩১ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:৫০
নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: মহান আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কেউ কিছুই করতে পারে না। গাছের পাতা ও নড়ে না। যাইহোক লেখাটা ভাল লাগল ।
৩১ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৩৯
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার বিশ্বাস সঠিক।
লেখা ভালো লেগেছে জেনে প্রীত। অনেক অনেক শুভকামনা জানবেন।
৩| ৩১ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:৫৫
শেরজা তপন বলেছেন: আপনার শেষের কথাগুলো ঠিক -তবে বিশ্বের অর্ধেকের মত ধার্মিক মানুষ বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচালে আছে!
তারা আসলেই ভীষন বেকায়দায় আছে!
৩১ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৪৬
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার সাথে সহমত পোষন না করে উপায় নেই। তবে সত্যিকারের ধার্মিক কখনো বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচালে থাকতে পারেন বলে মনে হয় না। যারা দোদুল্যমানতায় আক্রান্ত তাদেরকে ধার্মিক বলা কতটা যৌক্তিক সেটাই প্রশ্ন। তবে যারা দ্বিধা দ্বন্ধের মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছেন তারা যে আসলেই 'ভীষন বেকায়দায়' আছেন, এ কথা অতিব সত্য।
অবশ্য আমরা আশা করতে চাই, আপনার ভাষায় এইরকম 'ভীষন বেকায়দায়' যারা আছেন তারা একটা 'কায়দায়' অচিরেই ফিরে আসতে সক্ষম হবেন। তাদের জন্য শুভকামনা সবসময়।
সশ্রদ্ধ শুভকামনা জানবেন।
৪| ৩১ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৫৩
গফুর ভাই বলেছেন: ভাল লাগল
৩১ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৪৭
নতুন নকিব বলেছেন:
চমৎকার মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা।
শুভকামনা জানবেন।
৫| ৩১ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:০৫
বারবোসা বলেছেন:
শেরজা তপন ভাইএকটা অতি সত্যি কথা বলেছেন,
এর পেছনে যে কারণটা আছে বলে আমি মনে করি তা হল,সৃষ্টিকর্তার কোনো একটি সৃষ্টির কিংবা সৃষ্টজগতের কোনো ঘটনার আমরা ততোদিনই প্রসংশা করি যত দিন না আমরা,সৃষ্টিকর্তার পদ্ধতিটা আবিষ্কার করতে না পারি।এরপর পদ্ধতিটা বুঝতে পারলে মনে করি এ আর এমন কি। কিন্তু আমাদের এই ব্যাপারটা বোঝা উচিত,আমাদের এই আবিষ্কৃত পদ্ধতির যিনি প্রবর্তক, তার ক্রেডিট কখনোই কমে না। আমরা তাঁর পদ্ধতিটা বুঝে ফেললেও।
আল্লাহ তায়ালা এই বিশ্বজগৎ সুনির্দিষ্ট নিয়মের মাধ্যমেই পরিচালনা করেন।তিনি যেমন বিশ্বজগৎ সৃষ্টি করেছেন,ঠিক তেমনি নিয়মটাও তাঁরই তৈরী।আইন্সটাইন এবং স্টিফেন হকিং এই নিয়মটাকে ঈশ্বর হিসেবে বিশ্বাস করতেন।
৩১ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৪৯
নতুন নকিব বলেছেন:
কৃতজ্ঞতাসহ অভিনন্দন মন্তব্যে অভিব্যক্তি জানিয়ে যাওয়ায়।
শুভকামনা জানবেন।
৬| ৩১ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:০০
সাসুম বলেছেন: বিশেষ দ্রষ্টব্য পড়ে এড়িয়ে গেলাম।
ব্লগের সুদিন ফিরে এসেছে ভাবতেই ভাল লাগছে। চারদিকে লালসালুর দৈববানী।
৩১ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৫৩
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার একই মন্তব্য দু'বার এসেছে। নেট সমস্যার কারণে এমনটা হয়ে থাকতে পারে। একটি মুছে দিব কি?
বিশেষ দ্রষ্টব্য পড়েও এড়িয়ে যাওয়ার কথা লিখলেন ঠিকই! সত্যি সত্যি এড়িয়ে গেলেন কই? ঢিল তো হালকা পাতলা একটু মেরেই দিলেন! যাক, তবু ধন্যবাদ আপনাকে যে, তেমন বেশি কিছু বলেননি। শুধু লালসালুর কথা বলেছেন।
শুভকামনা সবসময়।
৭| ৩১ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:০০
সাসুম বলেছেন: বিশেষ দ্রষ্টব্য পড়ে এড়িয়ে গেলাম।
ব্লগের সুদিন ফিরে এসেছে ভাবতেই ভাল লাগছে। চারদিকে লালসালুর দৈববানী।
৮| ৩১ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:২১
রাজীব নুর বলেছেন: আমি জানি, আমি বিশ্বাস করি- কোরআন হাদীস আর ধর্ম দিয়ে কোনো কিছু থেকে বাঁচা সম্ভব না।
৩১ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:২৯
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করা আমাদের দায়িত্ব। প্রত্যেকের বিশ্বাসই শ্রদ্ধার, তা যা-ই হোক। মতামত ব্যক্ত করায় ধন্যবাদ।
শুভকামনা।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:৪৫
হাবিব বলেছেন: প্রাকৃতিক বিপর্যয় যা কিছু বলি অধিকাংশই আমাদের হাতের কামাই। আল্লাহর রহমত ছাড়া বাঁচা অসম্ভব।