নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

চার মাযহাবের চার ইমাম

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:১৯

ছবিঃ অন্তর্জাল।

চার মাযহাবের চার ইমাম

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা যুগে যুগে এমন কিছু মনীষী প্রেরণ করেছেন, যাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমে মানুষ পেয়েছে সত্যের দিশা। এই মনীষীদের মধ্যে মাযহাব চতুষ্টয়ের চার ইমাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। মজার বিষয় হচ্ছে, তাঁদের প্রত্যেকের মধ্যে ছিল পারস্পরিক ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক। ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর ছাত্র ছিলেন ইমাম মালেক (রহ.), তাঁর ছাত্র ছিলেন ইমাম শাফেয়ি রহ. এবং তাঁর ছাত্র ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহ.)।

ফিকহশাস্ত্রের উদ্ভাবক ইমাম আবু হানিফা (রহ.)

তাঁর নাম নোমান, উপনাম আবু হানিফা। এ নামেই তিনি পরিচিতি লাভ করেন। পিতার নাম সাবিত। তিনি ছিলেন একজন তাবেয়ি। হিজরি ৮০ সনে, মোতাবেক ৭০০ খ্রিস্টাব্দে কুফায় জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকেই তিনি তীক্ষ্ণ ধী-শক্তির অধিকারী ছিলেন। প্রাথমিক জীবনে তিনি ব্যবসার কাজে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন। পরবর্তী সময়ে একজন বিশিষ্ট আলেমের পরামর্শে জ্ঞানার্জনে উৎসাহ লাভ করেন। একসময় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর একান্ত খাদেম ও প্রসিদ্ধ সাহাবি হজরত আনাস (রা.) কুফায় আগমন করলে তিনি অল্প বয়সে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তৎকালীন কুফায় প্রথানুযায়ী ২০ বছরের আগে হাদিস বর্ণনার সুযোগ না থাকায় তিনি তাঁর কাছ থেকে কোনো হাদিস বর্ণনা করতে পারেননি। তবে তাঁকে দেখে বাল্য বয়সেই তাবেয়ি হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে জ্ঞানার্জনে আত্মনিযোগ করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি ইলমে কালামে পূর্ণ পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। অতঃপর পবিত্র কোরআন ও হাদিসের জ্ঞানার্জনে মনোনিবেশ করেন। ইমাম আবু হানিফা (রহ.) অসংখ্য গুণের অধিকারী ছিলেন। তিনি ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ আলেম, বিশিষ্ট আবেদ ও অতিশয় বুদ্ধিমান।

ইমাম আযম সম্পর্কে মনীষীদের কিছু উক্তিঃ

তাঁর সম্পর্কে মনীষীরা বিভিন্ন উক্তি করেছেন। যেমন—হজরত ইবনে মুবারক (রহ.) বলেন, আল্লাহ তাআলা যদি ইমাম আবু হানিফা ও সুফিয়ান সাওরি (রহ.) দ্বারা আমাকে সহায়তা না করতেন, তবে আমি অন্য মানুষের মতোই থাকতাম। ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলেন, মানুষ ফিকহশাস্ত্রে ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর পরিবার। তিনি অন্যত্র বলেন, যে ব্যক্তি ফিকহশাস্ত্র শিখতে চায় সে যেন ইমাম আবু হানিফা (র.)-এর ছাত্রদের আঁকড়ে ধরে। ইবনে মুবারক (রহ.) বলেন, ‘মানুষের মাঝে সবচেয়ে বড় ফিকহবিশারদ হলেন ইমাম আবু হানিফা (রহ.), আমি ফিকহশাস্ত্রে তাঁর ন্যায় যোগ্য কাউকে দেখিনি।’ হজরত ইবনে মুঈন বলেন, ইমাম আবু হানিফা (রহ.) হাদিসে সিকাহ (বিশ্বস্ত) ছিলেন। হজরত সুলায়মান ইবনে আবু শায়ক বলেন, ইমাম আবু হানিফা (রহ.) একজন বুজুর্গ ও দাতা ছিলেন। আবু নুয়াইম বলেন, তিনি মাসয়ালায় গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তিনি একাধিকবার প্রসিদ্ধ সাহাবি হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.)-এর সাক্ষাৎ লাভ করেন। সুতরাং তিনি তাবেয়ি। তাঁর সময় চারজন সাহাবি জীবিত ছিলেন। যথা—হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.), হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আবু আওফা (রা.), হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) ও আবু তুফায়েল আমের ইবনে ওয়াসেলা (রা)।

তিনি ফিকহশাস্ত্রের উদ্ভাবক। তাঁর ৪০ জন সুদক্ষ ছাত্রের সমন্বয়ে একটি ফিকহ সম্পাদনা বোর্ড গঠন করেন। এ বোর্ডের মাধ্যমে দীর্ঘ ২২ বছর কঠোর পরিশ্রম করে ফিকহশাস্ত্রকে একটি পূর্ণাঙ্গ শাস্ত্র হিসেবে রূপদান করেন। বোর্ডের ৪০ জন সদস্য থেকে আবার ১০ জন সদস্য নিয়ে একটি বিশেষ বোর্ড গঠন করেন। ফিকহশাস্ত্র প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে এ বিশেষ বোর্ডের অবদান সবচেয়ে বেশি। যখন বোর্ডের সামনে কোনো একটি মাসয়ালা পেশ করা হতো। অতঃপর সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে তা লিপিবদ্ধ করা হতো। এভাবে ৯৩ হাজার মাসয়ালা কুতুবে হানাফিয়াতে লিপিবদ্ধ করা হয়। তিনি হিজরি ১৫০ সনে, মোতাবেক ৭৬৭ খ্রিস্টাব্দে খলিফা মনসুর কর্তৃক প্রয়োগকৃত বিষক্রিয়ার ফলে কারাগারে ইন্তেকাল করেন।

মদিনার ইমাম ইমাম মালেক (রহ.)

তাঁর নাম মালেক, উপনাম আবু আবদুল্লাহ, উপাধি ইমামু দারিল হিজরাহ। পিতার নাম আনাস। তিনি ৯৩ হিজরিতে মদিনায় জন্মগ্রহণ করেন। তৎকালীন সময়ে মদিনা ছিল কোরআন ও হাদিস শিক্ষার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হয়। এটি হলো রাসুল (সা.)-এর প্রিয় শহর। রাসুল (সা.) ও সাহাবিরা ইন্তেকাল করলেও তাঁদের বংশধরের বেশির ভাগ এখানেই বসবাস করেন। তিনি এখানেই জ্ঞানার্জন করেন। আবদুর রহমান ইবনে হরমুজ (রহ.)-এর কাছে তিনি হাদিসশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। অতঃপর ইমাম জুহরি (রহ.), নাফে (রহ.), ইবনে জাকওয়ান (রহ.) এবং ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ (রা.)-এর কাছ থেকে হাদিস শ্রবণ করেন। হিজাজের ফকিহ রাবিয়াতুর রায় (রহ.)-এর কাছে তিনি ফিকহশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। স্বীয় ওস্তাদদের থেকে রেওয়ায়াত ও ফতোয়া দানের সনদপ্রাপ্তির পর ফতোয়ার আসন সমাসীন হন। ৭০ বছর বয়সে তিনি অধ্যাপনার কাজ শুরু করেন। মসজিদ-ই-নববী ছিল তাঁর পাঠদানের জায়গা। বিভিন্ন এলাকা থেকে অসংখ্য জ্ঞানপিপাসু তাঁর দরবারে এসে জড়ো হতো। ইমাম মালেক ইবনে আনাস (রহ.) একজন যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, ফিকহবিদ ও মুজতাহিদ ছিলেন।

ইমাম মালেক সম্পর্কে মনীষীদের কিছু উক্তিঃ

তাঁর সম্পর্কে ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলেন, ইমাম মালেক ইবনে আনাস না থাকলে হেজাজবাসীদের ইলম বিলুপ্ত হয়ে যেত। হাদিসের পাঠদানে ইমাম মালেক খুবই আগ্রহবোধ করতেন এবং এটাকে তিনি ইসলাম প্রচারের অংশ হিসেবে মনে করতেন। তিনি গভীর প্রজ্ঞার সঙ্গে পাঠদান করতেন। পাঠদানের প্রারম্ভে গোসল করা, পরিষ্কার জামা-কাপড় পরিধান করা ও খুশবু ব্যবহার ইত্যাদি ছিল তাঁর নৈমিত্তিক অভ্যাস। তিনি সুদীর্ঘ ৫০ বছরকাল শিক্ষা ও ফতোয়া দানের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

প্রিয় নবীজীর প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ও সম্মানঃ

প্রিয়নবী (সা.)-এর সম্মানার্থে তিনি মদিনায় পাদুকা ব্যবহার করতেন না এবং বাহনে চড়তেন না। তিনি বলতেন, যে জমিনে প্রিয়নবী শায়িত আছেন, সে জমিনে আমি বাহনে চড়তে লজ্জাবোধ করি। তিনি ১৭৯ হিজরির ১১/১৪ই রবিউল আউয়াল (৭৯৫ খ্রি. জুন) বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪। মতান্তরে ৮৬/৮৭/৯০ বছর। তাঁকে জান্নাতুল বাকিতে সমাহিত করা হয়।

নাসিরুল হাদিস ইমাম শাফেয়ি (রহ.)

তাঁর নাম মুহাম্মদ, উপনাম আবু আবদুল্লাহ, মাতার নাম উম্মুল হাসান। নিসবতি নাম শাফেয়ি, পিতার নাম ইদরিস, তাঁর পূর্বপুরুষ শাফেয়ি (রহ.)-এর নামানুসারে তিনি শাফেয়ি নামে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি ১৫০ হিজরি মোতাবেক ৭৬৭ খ্রিস্টাব্দে ফিলিস্তিনের আসকালান প্রদেশের গাজাহ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। কারো কারো মতে, যেদিন ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ইন্তেকাল করেন সেদিনই ইমাম শাফেয়ি (রহ.) জন্মগ্রহণ করেন।

দুই বছর বয়সের সময় তাঁর পিতা ইন্তেকাল করেন। ফলে তাঁর মাতাই তাঁকে লালন-পালন করেন। বাল্যকালে তাঁর মাতা তাঁকে নিয়ে পবিত্র মক্কা শরিফে গমন করেন। অতঃপর পবিত্র ভূমিতেই তাঁর বাল্যকাল অত্যন্ত দরিদ্র অবস্থায় অতিবাহিত হয়। বাল্যকালে তিনি সেখানকার অধিবাসীদের কাছ থেকে প্রাচীন আরবি কবিতা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানার্জন করেন। সাত বছর বয়সে তিনি পবিত্র কোরআন মজিদ হিফজ করেন এবং ১০ বছর বয়স মুয়াত্তায়ে ইমাম মালেক মুখস্থ করেন। অতঃপর মক্কা শরিফের বিশিষ্ট জ্ঞানপণ্ডিত মুসলিম ইবনে খালিদ জানজি (রহ.) ও সুফিয়ান ইবনে উয়ায়না (রহ.)-এর কাছে ফিকহ ও হাদিসশাস্ত্র শিক্ষা করেন। ১৫ বছর বয়সে তাঁর ওস্তাদ তাঁকে ফতোয়া দানের অনুমতি দেন, তবে তিনি ওস্তাদের সার্টিফিকেট নিয়ে ইমাম মালেক (রহ.)-এর দরবারে উপস্থিত হন। তিনি তাঁকে মুয়াত্তা শোনান এবং তাঁর কাছে ফিকহশাস্ত্র শিক্ষা করেন। উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে তিনি ইরাক, মিসর ইত্যাদি দেশ সফর করেন। ইরাকে গিয়ে তিনি ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এর নিকট ফিকহ হানাফি শিক্ষা করেন। এভাবে তিনি মালেকি ও হানাফি মাজহাবের নিয়ম-কানুন আয়ত্ত করে ত্রিমুখী জ্ঞানের অধিকারী হয়ে মক্কায় প্রত্যাবর্তন করেন এবং মক্কায় আগত মিসরীয়, স্পেনীয় ও আফ্রিকান আলেমদের সঙ্গেও ভাবের আদান-প্রদান করে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তিনি হানাফি, মালেকি ও মুহাদ্দিসদের মাজহাব মিলিয়ে মধ্যমপন্থী এক মাজহাব, তথা শাফেয়ি মাজহাব প্রবর্তন করেন। তিনি সে মতে গ্রন্থ রচনা করেন, লোকদের শিক্ষা দেন এবং এ মাজহাব অনুযায়ী ফতোয়া প্রদান করেন। তাঁর এ মাজহাবকে কাদিম বা পুরাতন মাজহাব বলা হয়। মিসরে গমন করার পর তাঁর ইরাকি ফিকহের কিছু পরিবর্তন করে নতুন মিসরি ফিকহ প্রবর্তন করেন এবং এ মতানুযায়ী গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর এ মাজহাবকে ‘মাজহাবে জাদীদ’ বা নতুন মাজহাব বলা হয়। ইমাম শাফেয়ি (রহ.) নিজেই তাঁর মাজহাব প্রচার করেন। তাঁর ছাত্ররাও লিখনীর মাধ্যমে দলে দলে প্রচারকার্যে যোগদান করেন। ফলে বিভিন্ন দেশে তাঁর মাজহাব ছড়িয়ে পড়ে। মিসরে তাঁর মাজহাব সবচেয়ে বেশি বিস্তার লাভ করে। ইমাম শাফেয়ি (রহ.) একজন শীর্ষস্থানীয় ফিকহ ও মুহাদ্দিস ছিলেন। তাঁর মধ্যে বহু গুণের সমাহার ছিল। তিনিই উসুলুল ফিকহশাস্ত্রের সংকলক। তিনি এ প্রসঙ্গে ‘আর-রিসালা’ নামক একটি গ্রন্থ রচনা করেন। ‘মিফতাহুস সায়াদা’র গ্রন্থকার বলেন, ইমাম শাফেয়ি (রহ.) সমগ্র বিশ্বের ইমাম এবং প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী। আল্লাহ তাআলা তাঁর মধ্যে এরূপ জ্ঞান-গর্ব একত্রে দান করেছেন, যা তাঁর পরে কোনো ইমামের মধ্যে একত্রিত করেননি।

ইমাম শাফেয়ি (রহ.) ছিলেন সর্ববিষয়ে যুগশ্রেষ্ঠ পণ্ডিত। হাদিসশাস্ত্রে তাঁর দক্ষতার জন্য ইরাকবাসী তাঁকে ‘নাসিরুল হাদিস’ তথা হাদিসের সহায়ক উপাধিতে ভূষিত করেন। তিনি হিজরি ২০৪ সনের রজব মাসের শেষ দিন ৯২০ খ্রি. মোতাবেক ২০ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মিসরের ফুসতাতে ইন্তেকাল করেন। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। জুমাবার আসরের পর তাঁকে মিসরের ফুসতাতে সমাহিত করা হয়।

হাফেজে হাদিস ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.)

তাঁর নাম আহমদ, উপনাম আবু আবদুল্লাহ, উপাধি শায়খুল ইসলাম ও ইমামুস সুন্নাহ, বংশগত পরিচয় সায়বানি। পিতার নাম মুহাম্মদ, দাদার নাম হাম্বল। তিনি হিজরি ১৬৪ সনে রবিউল আউয়াল মাস মোতাবেক ৭৮০ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন। তিন বছর বয়সের সময় তাঁর পিতা মারা যান। তাঁর মাতা এতিম আহমদের লালন-পালনের ভার গ্রহণ করেন। মাতার তত্ত্বাবধানে তাঁর শৈশবকাল অতিবাহিত হয়। তাঁর মাতাই তাঁর শিক্ষা-দীক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি স্বীয় মাতার তত্ত্বাবধানে প্রথমে কোরআন মজিদ হিফজ করেন। সাত বছর বয়স থেকে তিনি হাদিস অধ্যয়ন শুরু করেন। তৎকালীন সময়ে বাগদাদ নগরী ছিল পৃথিবীর অন্যতম প্রসিদ্ধ নগরী। এ নগরী তখন বহু জ্ঞানী, গুণী, ফকিহ ও হাদিসশাস্ত্রবিদের পদচারণে মুখরিত ছিল। ফলে দ্বিনি জ্ঞান লাভ করা তাঁর জন্য খুবই সহজ ছিল। স্থানীয় বড় বড় আলেমের কাছে নানা বিষয়ে জ্ঞানলাভের পর উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে তিনি ইয়েমেন, কুফা, বসরা, মক্কা, মদিনা, সিরিয়া প্রভৃতি দেশে ভ্রমণ করেন। তিনি হাম্বলি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর ফিকহ অত্যন্ত সহজ ও সরল। তিনি প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ছিলেন। তাঁর বহু ছাত্র তাঁর মেধা ও স্মৃতিশক্তির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তাজকিরাতুল মুহাদ্দিসিন গ্রন্থে উল্লেখ করা হয় যে, তিনি মাত্র চার বছর বয়সে কোরআন মাজিদ হিফজ করেন। তাঁর প্রখ্যাত শিষ্য ইমাম আবু জুরইয়া বলেন, আমার শায়খদের মধ্যে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের চেয়ে বড় হাফিজে হাদিস আর কেউ নেই। তিনি একাধারে ফিকহ ও হাদিসশাস্ত্রের ইমাম ছিলেন। তিনি ছিলেন দুনিয়াবিমুখ, আল্লাহভীরু, পরহেজগার; মুত্তাকি এবং বড় আবেদ। দ্বিনের প্রতি ছিল তাঁর পূর্ণ বিশ্বাস। সত্যের ব্যাপারে ছিলেন আপসহীন। তিনি ছিলেন একজন দাতা ও অতিশয় বুদ্ধিমান। দ্বিনের হিফাজতের জন্য তিনি খলিফা মামুনের উত্তরসূরি কর্তৃক অনেক যাতনা সহ্য করেছেন। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.) ছিলেন একজন সুদক্ষ হাদিসবিশারদ। হাদিসের দোষ-গুণ বিচারশক্তি, বর্ণনাকারীদের নির্ভরযোগ্যতা, বিশ্বস্ততা ইত্যাদি ছিল তাঁর নখদর্পণে। তাঁর হাদিস সংকলনের প্রচেষ্টা ছিল শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত। একটি নির্ভরযোগ্য ও প্রামাণ্য হাদিস গ্রন্থ প্রস্তুতকল্পে তিনি অকল্পনীয় পরিশ্রম করেন। এ মর্মে তিনি প্রথমে বিভিন্ন সূত্রে সাড়ে সাত লক্ষাধিক হাদিসের এক বিশাল ভাণ্ডার সংগ্রহ করেন। অতঃপর দীর্ঘ সময় ব্যয় করে যথেষ্ট যাচাই-বাছাই করে একটি হাদিস গ্রন্থ রচনা করেন, যা মুসনাদে আহমদ নামে সুপরিচিত। তাঁর সম্পর্কে মনীষীরা বিভিন্ন প্রশংসামূলক উক্তি করেছেন। যেমন—ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলেন, আমি একদা বাগদাদ থেকে বের হয়েছি। কিন্তু ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের চেয়ে মুত্তাকি, পরহেজগার, বড় ফিকহবিদ এবং বড় আলেম প্রত্যক্ষ করিনি। হজরত ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ বলেন, ইমাম আহমদ এরূপ গুণের অধিকারী ছিলেন, যেসব গুণ আমি কারো মধ্যে দেখিনি; তিনি ছিলেন মুহাদ্দিস, হাফেজে হাদিস, শীর্ষস্থানীয় আলেম, পরহেজগার, দুনিয়াবিমুখ এবং বিবেকবান। হজরত ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহ (রহ.) বলেন, তিনি জমিনে আল্লাহ ও তাঁর বান্দার মাঝে হুজ্জত (দলিল) ছিলেন। হজরত আলী ইবনে মাদিনি (রহ.) বলেন, ইমাম আহমদ (রহ.) ইসলামের যে মর্যাদায় অবস্থান করেছেন, সে মর্যাদায় কেউ অবস্থান করতে পারেননি। তিনি ২৪১ হিজরির ১২ রবিউল আউয়াল, মোতাবেক ৮৫৫ খ্রিস্টাব্দের ৩১ জুলাই ৭৭ বছর বয়সে বাগদাদে ইন্তেকাল করেন।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৭

বিটপি বলেছেন: ইমাম আবু হানিফা সম্পর্কে আমার কিছু আপত্তিকর অবজার্ভেশন আছে। আশা করি জবাব দিয়ে আমাকে তুষ্ট করবেন।
১। কুরআন এবং হাদীসে হালাল হারামের সুস্পষ্ট বিধান থাকার পরেও তিনি কি খাওয়া যাবে, কি যাবেনা - এটা নির্ধারণ করার কে?
২। তিনি ওজুর পানির সাথে গুনাহ ঝরে যেতে দেখেছেন। তিনি কি কোথাও বর্ণনা করেছেন গুনাহ দেখতে কি রকম? কেবল তাই নয়, তিনি অজুর পানি নাপাক বলে ফতোয়া দিয়েছিলেন, যে ফতোয়া রাসূল (স) কখনও দেননি। তিনি নিজেকে কি মনে করতেন?
৩। তাঁকে খলীফা হারুনুর রশীদের দরবারে কাজী হিসেবে নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হলে তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। কেন? ইসলাম কি দায়িত্ব প্রত্যাখ্যান এলাউ করে?

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:১১

নতুন নকিব বলেছেন:



১। কুরআন এবং হাদীসে হালাল হারামের সুস্পষ্ট বিধান থাকার পরেও তিনি কি খাওয়া যাবে, কি যাবেনা - এটা নির্ধারণ করার কে?

-ইমাম আযম আবু হানীফা রহঃ ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ তাবেয়ী। তিনি একাধারে একজন হাদিস বিশারদ এবং উম্মতের শ্রেষ্ঠতম ফকীহগণের অন্যতম। হিদায়েত লাভের জন্য কুরআন হাদীছ মানা যেমন জরুরী তেমনি কুরআন হাদীছের ব্যাখ্যা হিসাবে সাহাবীগণের মতামত ও কর্ম, তাবেঈ ও তাবে তাবেয়ীগণের মতামত এবং দ্বীনের ইমাম ও উলামায়ে কেরামের মতামতের প্রতি লক্ষ্য রাখাও জরুরী। দীনের সহীহ ব্যাখ্যা, সমজ, বুঝ এবং রুচি প্রকৃতি রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সাহাবায়ে কেরাম তাবেয়ীন ও তাবে তাবেয়ীন হয়ে নিরবিচ্ছিন্ন সূত্র ও কর্মের শ্রোতধারার মাধ্যমে পরবর্তীদের নিকট পৌঁছেছে। কাজেই যারা সাহাবী, তাবেয়ী, তাবে তাবেয়ী ও আয়েম্মায়ে দীন এবং প্রাজ্ঞ উলামায়ে কেরামের ব্যাখ্যাকে উপেক্ষা করে কুরআন হাদীস বোঝার চেষ্টা করে তাদের গোমরাহী অনিবার্য। এই মূলনীতি লংঘন করার কারণে ইসলামের ইতিহাসে খারিজী, শিয়া, বাতিনীসহ নানাবিধ বাতিল ফেরকা জন্ম লাভ করে।

কুরআন কারীমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

فَإِنْ آمَنُوا بِمِثْلِ مَا آمَنْتُمْ بِهِ فَقَدِ اهْتَدَوْا وَإِنْ تَوَلَّوْا فَإِنَّمَا هُمْ فِي شِقَاقٍ

অতঃপর তারা যদি সে রকম ঈমান আনে যেমন তোমরা (সাহাবীরা) ঈমান এনেছ তবে তারা সঠিক পথ পেয়ে যাবে। আর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তারা মূলত শত্রুতায় লিপ্ত হয়ে পড়েছে। বাকারা:১৩৭

বুঝা গেল সাহাবায়ে কেরাম পরবর্তী সকলের ঈমান আমলের মাপকাঠি।

وَالسَّابِقُونَ الْأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُمْ بِإِحْسَانٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ

মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথমে ঈমান এনেছে এবং যারা নিষ্ঠার সাথে তাদের অনুসরণ করেছে আল্লাহ তাদের সকলের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তাঁরাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আল্লাহ তাদের জন্য এমন উদ্যানরাজি তৈরী করে রেখেছেন যার তলদেশে নহর বহমান। তাতে তারা সর্বদা থাকবে। এটাই মহা সাফল্য। তাওবা :১০০

يا ايها الذين امنوا اطيعوا الله واطيعوا الرسول واولى الامر منكم

হে মুমিনগণ, তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, তাঁর রাসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা ইখতেয়ারধারী (শাসক, আলেম, ফকীহ) তাদেরও। আলে ইমরান :৫৯

وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيرًا

যে কেউ রাসূলের বিরুদ্ধাচারণ করে তাদের কাছে সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং সকল মু‘মিনের অনুসৃত পথের (আলেমদের ইজমার) বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ওই দিকেই ফেরাব যেদিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান। সূরা নিসা:১১৫

হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে

إنه من يعش منكم فسيرى اختلافا كثيرا، فعليكم بسنتى وسنة الخلفاء الراشدين المهديين تمسكوا بها وعضوا عليها بالنواجذ، وإياكم ومحدثات الامور فإن كل محدثة بدعة وكل بدعة ضلالة.

মনে রেখো, আমার পরে তোমাদের যারা জীবিত থাকবে তারা বহু মতানৈক্য দেখতে পাবে। তখন আমার সুন্নত ও আমার হেদায়েতপ্রাপ্ত খলীফাগণের সুন্নতকে আকড়ে রাখবে। একে অবলম্বন করবে এবং মাড়ির দাঁত দিয়ে প্রাণপণ করে কামড়ে রাখবে। এবং তোমরা (ধর্মীয় বিষয়ের) নব আবিস্কৃত বিষয়াদি থেকে খুব সতর্কতার সাথে বেঁচে থাকবে। কেননা প্রতিটি নব আবিস্কৃত বিষয় বেদআত। আর প্রতিটি বেদআত হল গোমরাহী। সুনানে আবু দাউদ: ৪৬০৭ জামে তিরমিযী ২৬৭৬.

عن ابن عمر أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : (إن الله لا يجمع أمتى- أو قال أمة محمد – على ضلالة ، ويدالله على الجماعة ، ومن شذ شذ إلى النار) .

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ আমার উম্মতকে কিংবা বলেছেন মুহাম্মদ (সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উম্মতকে গোমরাহীর উপর ঐক্যবদ্ধ করবেন না। আল্লাহর হাত রয়েছে জামাআর উপর। যে বিচ্ছিন্ন হয় সে জাহান্নাম অভিমুখে বিচ্ছিন্ন হয়। জামে তিরমিযী:২৩০৫

হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত আছে-

تفترق أمتي على ثلاث وسبعين ملة كلهم في النار إلا ملة واحدة قالوا: من هي يا رسول الله؟ قال ما أنا عليه وأصحابي

অর্থাৎ ইমাম খুরাইবী রহ.বলেন, অজ্ঞ বা হিংসুক ছাড়া আর কেউ ইমাম আবু হানীফা সম্পর্কে কটুক্তি করবে না। তিনি আরো বলেন, মুসলমানদের ওপর ওয়াজিব তাদের নামাযে ইমাম আবু হানীফার জন্য দুআ করা। (ইমাম বুখারীর খাস উস্তাদ, মুহাদ্দেছ) মক্কী ইবনে ইবরাহীম বলেন, ইমাম আবু হানীফা তার যুগের সবচে বড় আলেম ছিলেন। মানাকিবুল ইমাম আবু হানীফা: ২৭ পৃ.

قال الخريبى : ما يقع فى أبى حنيفة الا جاهل او حاسد- ابو مسلم الكجى عن محمد بن سعد الكاتب عن الخريبى أنه قال: يجب على اهل الاسلام ان يدعوا الله لأبى حنيفة فى صلاتهم- وعن مكى بن ابراهيم قال: كان ابو حنيفة أعلم أهل زمانه.

অর্থাৎ ইমাম খুরাইবী রহ.বলেন, অজ্ঞ বা হিংসুক ছাড়া আর কেউ ইমাম আবু হানীফা সম্পর্কে কটুক্তি করবে না। তিনি আরো বলেন, মুসলমানদের ওপর ওয়াজিব তাদের নামাযে ইমাম আবু হানীফার জন্য দুআ করা। (ইমাম বুখারীর খাস উস্তাদ, মুহাদ্দেছ) মক্কী ইবনে ইবরাহীম বলেন, ইমাম আবু হানীফা তার যুগের সবচে বড় আলেম ছিলেন। মানাকিবুল ইমাম আবু হানীফা: ২৭ পৃ.

অতএব, ইমাম আবু হানিফা রহ. নিজের ব্যক্তিগত মতামতের ভিত্তিতে কোনকিছুকে হালাল কিংবা হারাম বলেননি। তিনি বরং কুরআন, হাদীস, ইজমা এবং কিয়াসের সমন্বয়ে এই সংক্রান্ত সকল বিধি-বিধান এবং মাসআলাগুলোকে একত্রে সন্নিবেশিত করে দিয়ে সহজ করেছেন যাতে পরবর্তী সকল কালের, সকল যুগের মানুষের তা বুঝতে সুবিধা হয়।

২। তিনি ওজুর পানির সাথে গুনাহ ঝরে যেতে দেখেছেন। তিনি কি কোথাও বর্ণনা করেছেন গুনাহ দেখতে কি রকম? কেবল তাই নয়, তিনি অজুর পানি নাপাক বলে ফতোয়া দিয়েছিলেন, যে ফতোয়া রাসূল (স) কখনও দেননি। তিনি নিজেকে কি মনে করতেন?

-ইমাম আবু হানীফা রহ. ওজুর পানির সাথে গুনাহ ঝরে যেতে দেখেছেন - এই বিষয়ে আমার কাছে কোন প্রমান নেই। তিনি কি এমন কথা তাঁর কোনো কিতাবে লিখেছেন? আপনার কাছে থেকে থাকলে দয়া করে জানাবেন।

৩। তাঁকে খলীফা হারুনুর রশীদের দরবারে কাজী হিসেবে নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হলে তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। কেন? ইসলাম কি দায়িত্ব প্রত্যাখ্যান এলাউ করে?

-ফিতনার আশঙ্কা থাকলে সুযোগ রয়েছে অন্যথায় নেই। শরিয়া আইন পরিপালনে অক্ষম রাষ্ট্রে অথবা জনগণের উপরে অত্যাচার, অবিচার ও অনাচার চাপিয়ে দেয়ায় অভ্যস্ত জালিম শাসকের সহযোগী হওয়ার হাত থেকে কেউ যদি নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টায় দায়িত্ব গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান, সেক্ষেত্রে এর একটি গ্রহণযোগ্যতা থাকতে পারে। বাকি ক্ষেত্রগুলোতে সাধারণ অবস্থায় উপযুক্ততার বিবেচনায় যোগ্য লোকের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে না। এই বিষয়টি আরও ভালোভাবে জানার চেষ্টা করছি। আরও অধিক গ্রহণযোগ্য কোন ফায়সালা আমার দৃষ্টিগোচর হলে আপনাকে জানানোর ইচ্ছে থাকলো।

জাজাকুমুল্লাহু খাইরান।

২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০৯

নতুন বলেছেন: চার মাযহাবে বিভক্ত হবার কারন কি?

কোন কিছু যত বেশি ভাগ করবেন তত বেশি খারাপ হবে।

কেন সবাই রাসুল সা: এর মাজহাবে রইলো না? কেন তারা ৪ ইমামের অনুসারী হয়ে গেলো?

এখন আরো অনেক বিভক্ত এসেছে ইসলামে।

কিছুদিন আগে একটা ভিডিও দেখলাম বাংলাদেশে হিজবুত তেহারি না কি নামে এক লোক নামাজের ট্রেনিং দিতেছেন। মনে হচ্ছিলো যুদ্ধের কৌসল শিখাচ্ছিলো। :|

ঐ নামেজে জিহাদী জজবা আসবে কিন্তু ধ্যানের মতন নিজের মনে ডুবে গিয়ে সৃস্টিকতার কাছে হাজির হয়ে নামাজ হবেনা।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:১১

নতুন নকিব বলেছেন:



চার মাযহাবে বিভক্ত হবার কারন কি?

কোন কিছু যত বেশি ভাগ করবেন তত বেশি খারাপ হবে।

কেন সবাই রাসুল সা: এর মাজহাবে রইলো না? কেন তারা ৪ ইমামের অনুসারী হয়ে গেলো?

এখন আরো অনেক বিভক্ত এসেছে ইসলামে।


-এই বিষয়ে কিছু লেখা রয়েছে আমার। ইচ্ছে হলে দয়া করে ঘুরে আসতে পারেন লেখাগুলোয়-

মাযহাব কি? মাযহাব কেন মানবো এবং কোনটি মানবো? -পর্ব-১

মাযহাব কি? মাযহাব কেন মানবো এবং কোনটি মানবো? -পর্ব-২

কিছুদিন আগে একটা ভিডিও দেখলাম বাংলাদেশে হিজবুত তেহারি না কি নামে এক লোক নামাজের ট্রেনিং দিতেছেন। মনে হচ্ছিলো যুদ্ধের কৌসল শিখাচ্ছিলো। :|

-এরা আপদমস্তক বিভ্রান্তিতে নিপতিত। ফায়দা লুটে নিতে ধর্মকে ব্যবহার করছে। এদের কাজকর্ম এবং কথাবার্তার সাথে ইসলাম ধর্মের আদৌ কোন সম্পর্ক আছে বলে মনে হয় না।

ধন্যবাদ।

৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



দেওয়ানবাগী কি এখনো ইমামে পরিণত হয়নি?

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:১৪

নতুন নকিব বলেছেন:



কিছু দিন আগে শুনেছিলাম যে, সে না কি মারা গিয়েছে। আপনি বলছেন, তার ইমামে পরিণত হওয়ার কথা! বুঝতেছি না, আপনার কথাবার্তা! মানুষ কি মৃত্যুর পরেও ইমাম হয় না কি?

ধন্যবাদ।

৪| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৫৯

রানার ব্লগ বলেছেন: নবী মুহাম্মাদ মৃত্যুর আগে বলে গিয়েছেন তার শেষ ভাষণে, তোমাদের জন্য আমি কোরান রেখে গেলাম তোমার এটা মেনে চলো।

মাজহাব মানা কি জরুরী?

নবী মুহাম্মাদের সময় কিছু সাহাবা তার কথা লিপিবদ্ধ করেছিলো, তিনি একদিন দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তোমরা কি লেখ তখন তারা উত্তর দিয়েছিলো আপনার মুখ নিঃসৃত বানী। নবী মুহাম্মাদ তৎক্ষণাৎ তা বন্ধ করতে বলেন এবং সেই সব লেখা বিনষ্ট করে দিতে বলেন তিনি তার সাহাবাদের কে সাবধান করে বলেন তোমরা আমার কোন বানী লিপিবদ্ধ কর না, যদি করতেই হয় কোরআন লিপিবদ্ধ করো।

*** নবী যা মানা করে দিয়েছেন তা হাদিস আকারে প্রকাশ করে কি নবী প্রতি অসন্মান প্রদর্শন করা হলো না ?

***বর্তমানে এই হাদিসের বানী নিয়ে যে হারে গালাগাল ও ভন্ডামী হচ্ছে তা কি নবীর প্রতি একধরনের অসৌজন্যতা প্রদর্শ নয় কি ?

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:০৮

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার প্রশ্নটা খুবই সুন্দর এবং নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়টি পুরোপুরি উপলব্ধিতে আনতে হলে, অর্থাৎ, হাদিস লিপিবদ্ধকরণের প্রয়োজনীয়তা ও এর বৈধতা এবং হাদিসের বিশাল ভান্ডার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যে ধারাবাহিক সতর্কতা ও যোগসূত্রতা রক্ষা করা হয়েছে, সেসবই পর্যায়ক্রমে জানা জরুরি। এ জন্য সংক্ষিপ্ত আলোচনায় এর উত্তর দেয়া কঠিন। সঙ্গত কারণে এই বিষয়ক আমার পূর্ববর্তী কিছু লেখার লিঙ্ক এখানে যুক্ত করে দিচ্ছি। সময় সুযোগ হলে সেগুলো দেখার অনুরোধ থাকলো-

হাদিস সংকলনের ইতিহাস, পর্ব-০১

হাদিস সংকলনের ইতিহাস, পর্ব-০২

হাদিস সংকলনের ইতিহাস, পর্ব-০৩

আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। শুভকামনাসহ।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৩১

নতুন নকিব বলেছেন:



নবী যা মানা করে দিয়েছেন তা হাদিস আকারে প্রকাশ করে কি নবী প্রতি অসন্মান প্রদর্শন করা হলো না ?

-এর বিপরীতে হাদিস চর্চাকারীদের জন্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে নিম্নোক্ত দু’আ করেছেন সেটাও জানা প্রয়োজন। নয় কি? চলুন, দেখে নিই তিনি হাদিস চর্চাকারীদের জন্য কি দু'আ করেছেন।

হাদিস চর্চাকারীর জন্য মহানবীর দুআঃ

হাদিস চর্চাকারীর জন্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিম্নোক্ত দু’আ করেছেনঃ

'আল্লাহ সেই ব্যাক্তিকে সজীব ও আলোকোজ্জ্বল করে রাখুন, যে আমার কথা শুনে স্মৃতিতে ধরে রাখল, তাঁর পূর্ণ হিফাযত করল এবং এমন লোকের কাছে পৌঁছে দিল, যে তা শুনতে পায়নি।' -তিরমিযী, ২য় খণ্ড, পৃ ৯০

মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবদুল কায়েস গোত্রের প্রতিনিধি দলকে প্রয়োজনীয় উপদেশ দান করে বললেনঃ 'এই কথাগুলো তোমরা পুরোপুরি স্মরণ রাখবে এবং যারা তোমাদের পেছনে রয়েছে তাঁদের কাছেও পৌঁছে দেবে।' -সহিহ বুখারী

তিনি সাহাবীগণকে সম্বোধন করে বলেছেনঃ 'আজ তোমরা (আমার নিকট দীনের কথা) শুনেছ, তোমাদের নিকট থেকেও (তা) শুনা হবে।' -মুসতাদরাক হাকিম, ১ খ, পৃ ৯৫

তিনি আরও বলেনঃ 'আমার পরে লোকেরা তোমাদের নিকট হাদিস শুনতে চাবে। তাঁরা এই উদ্দেশ্যে তোমাদের নিকট এলে তাঁদের প্রতি সদয় হয়ো এবং তাঁদের নিকট হাদিস বর্ণনা করো।' -মুসনাদ আহমদ

তিনি অন্যত্র বলেছেনঃ 'আমার নিকট থেকে একটি বাক্য হলেও তা অন্যের কাছে পৌঁছে দাও।' -সহিহ বুখারী

৮ম হিজরীতে মক্কা বিজয়ের পরের দিন এবং ১০ম হিজরীতে বিদায় হজ্জের ভাষণে মহানবী (সঃ) বলেনঃ 'উপস্থিত লোকেরা যেন অনুপস্থিতদের নিকট আমার কথাগুলো পৌঁছে দেয়।' -সহিহ বুখারী

ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.