নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবিঃ অন্তর্জাল।
সিজদাহ কি?
সিজদাহ বা সাজদাহ (سجدة) একটি আরবি শব্দ। একবচন এটি। বহুবচনে সুজূদ (سُجود) ব্যবহৃত হয়। সিজদাহ শব্দের আভিধানিক অর্থ- নত হওয়া, বিনয় প্রকাশ করা, আনুগত্য স্বীকার করা, নম্রতা ও বশ্যতা স্বীকার করা, আত্মসমর্পণ করা ইত্যাদি। শব্দটির আরও যেসব অর্থ পাওয়া যায়, তা হচ্ছে- মাথা নত করা, ইবাদাতের জন্য কপাল ও নাককে মাটিতে রাখা, কাকুতি মিনতি সহকারে মাথা নত করা। বস্তুতঃ ‘সিজদা’ এমন এক অনন্য, অদ্বিতীয় এবং অনির্বচনীয় সম্মাননা, যা শুধুমাত্র আল্লাহ তাআ'লারই প্রাপ্য। পবিত্র কুরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ তাআ'লা বলেন, وَاسْجُدُوا لِلَّهِ ‘তোমরা আল্লাহ উদ্দেশ্যে সিজদাহ কর’। -ফুছছিলাত, আয়াত ৩৭
পারিভাষিক অর্থে- সিজদাহ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী মুসলিমদের প্রার্থনা পদ্ধতি তথা, নামাজের অন্যতম এবং আবশ্যকীয় একটি অংশ। মাটিতে কপাল ও নাক স্পর্শ করে সিজদা করতে হয়। একইসাথে সিজদাবস্থায় উভয় পায়ের হাটু এবং উভয় হাতের পাতা বা তালু মাটিতে স্থাপন করতে হয়। সিজদাহ কিবলার দিকে, অর্থাৎ মক্কাতুল মুকাররমায় অবস্থিত পবিত্র বাইতুল্লাহ তথা, আল্লাহর ঘরের দিকে মুখ করে দিতে হয়।
সিজদাহ: প্রিয়তমের নৈকট্যপ্রাপ্তির সর্বোত্তম মাধ্যম
হ্যাঁ, সিজদাহ প্রিয়তম স্রষ্টা মহান রব্বুল আলামীন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার নৈকট্যপ্রাপ্তির সর্বোত্তম ও শ্রেষ্ঠতম মাধ্যম। তাকে পাওয়ার, তাঁর মুহাব্বত এবং ভালোবাসালাভের শ্রেষ্ঠতম উপকরণ সিজদাহ। সিজদায় অবনত হওয়া তাঁর সন্তোষ ও সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম কারণ।
দ্বীনের পথের আলোকপ্রাপ্ত প্রত্যেকেই নানাবিধ ইবাদত দ্বারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার সন্তোষ লাভের চেষ্টা করে থাকেন। বলা বাহুল্য, তন্মধ্যে সিজদার স্থান সর্বোর্ধ্বে। সিজদার সময় মানুষ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার সর্বাধিক নিকটবর্তী হতে সক্ষম হয় এবং এই সময়টিতে মানব হৃদয়ে আল্লাহভীতি, বিনয় ও নম্রতা বহুগুণে বেড়ে যায়। আসলে সিজদাহ মানুষকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার দাসত্বের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে দেয় এবং মানুষও তখন বিগলিত চিত্তে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার শরণাপন্ন হওয়ার সুযোগ লাভ করে থাকে।
প্রখ্যাত সাহাবি হযরত আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
أَقْرَبُ مَا يَكُونُ الْعَبْدُ مِنْ رَبِّهِ وَهُوَ سَاجِدٌ فَأَكْثِرُوا الدُّعَاءَ
‘বান্দা সিজদারত থাকাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার অধিক নিকটবর্তী হয়, অতএব, তোমরা তখন অধিক দু‘আ করতে থাক’। -সহিহ মুসলিম হা/৪৮২; মিশকাত হা/৮৯৪
স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা তাঁর প্রিয় নবী ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিশেষভাবে প্রত্যাদেশ করেন,
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَكُنْ مِنَ السَّاجِدِيْنَ، وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِيْنُ-
‘অতএব, আপনি আপনার প্রতিপালকের প্রশংসা বর্ণনা করুন এবং সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যান। আর আপনি আপনার প্রতিপালকের ইবাদত করুন, যতক্ষণ না মৃত্যু আপনার নিকট উপস্থিত হয়’। -সূরা আল হিজর, ১৫/৯৮-৯৯
গোটা সৃষ্টিজগতই সিজদায় অবনত হয় মহান মালিকের সামনেঃ
বস্তুতঃ ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় গোটা সৃষ্টিজগতই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লাকে সিজদা করে। পৃথিবীর সব কিছুই সিজদায় অবনত হয় মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার সামনে। কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে,
وَلِلّهِ يَسْجُدُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَظِلالُهُم بِالْغُدُوِّ وَالآصَالِ
আর আল্লাহকে সিজদা করে যা কিছু আছে নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে এবং তাদের ছায়াসমূহও (সিজদা করে) সকালে ও সন্ধ্যায়—ইচ্ছায় ও অনিচ্ছায়। -সুরা আর রা'দ, আয়াত : ১৫
অন্যত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আরো বলেন,
أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَسْجُدُ لَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَمَن فِي الْأَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُومُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُّ وَكَثِيرٌ مِّنَ النَّاسِ وَكَثِيرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ وَمَن يُهِنِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِن مُّكْرِمٍ إِنَّ اللَّهَ يَفْعَلُ مَا يَشَاء
তুমি কি দেখো না যে আল্লাহকে সিজদা করে যা কিছু আছে নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্ররাজি, পর্বতরাজি, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু ও বহু মানুষ। আর বহু মানুষ (যারা সিজদা করতে অস্বীকার করেছে) তাদের ওপর শাস্তি অবধারিত হয়েছে। বস্তুত আল্লাহ যাকে লাঞ্ছিত করেন তাকে সম্মানদাতা কেউ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ যা চান তা-ই করেন। -সুরা আল হজ, আয়াত : ১৮
শুধু নিম্নজগতে নয়, সিজদার এই নিয়ম এবং ধারাবাহিকতা রয়েছে ঊর্ধ্বজগত তথা ফেরেশতাদের জগতেও। সেখানে ফেরেশতাগণ মহান আল্লাহর উদ্দেশে সিজদায় নত হন। অসংখ্য অগণিত ফেরেশতার সেই সিজদার ধারাবাহিকতা অব্যাহতভাবে চলতে থাকে। অবিরাম চলতে থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত। পবিত্র কুরআনুল হাকিমে ইরশাদ হয়েছে,
أَوَ لَمْ يَرَوْاْ إِلَى مَا خَلَقَ اللّهُ مِن شَيْءٍ يَتَفَيَّأُ ظِلاَلُهُ عَنِ الْيَمِينِ وَالْشَّمَآئِلِ سُجَّدًا لِلّهِ وَهُمْ دَاخِرُونَ
তারা কি আল্লাহর সৃজিত বস্তু দেখে না, যার ছায়া আল্লাহর প্রতি বিনীতভাবে সেজদাবনত থেকে ডান ও বাম দিকে ঝুঁকে পড়ে। -সুরা আন নাহল, আয়াত : ৪৮
পবিত্র কুরআনুল হাকিমে অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,
وَلِلّهِ يَسْجُدُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ مِن دَآبَّةٍ وَالْمَلآئِكَةُ وَهُمْ لاَ يَسْتَكْبِرُونَ
আসমান ও জমিনে যত প্রাণী আছে, সবই আল্লাহকে সিজদা করে এবং ফেরেশতারাও। আর তারা অহংকার করে না। -সুরা আন নাহল, আয়াত : ৪৯
আল্লাহ তাআ'লা অন্যত্র বলেন,
وَالنَّجْمُ وَالشَّجَرُ يَسْجُدَانِ
এবং তারকা ও বৃক্ষরাজি সিজদারত আছে। -সূরা আর-রহমান ৫৫/৬
মানুষ ও জিনের মধ্যে যারা বিনয় ও আনুগত্যের সাথে আল্লাহকে সিজদা করে তারা বিশেষভাবে আল্লাহর সন্তোষ লাভ করে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা বলেন,
إِنَّمَا يُؤْمِنُ بِآيَاتِنَا الَّذِينَ إِذَا ذُكِّرُوا بِهَا خَرُّوْا سُجَّدًا وَسَبَّحُوْا بِحَمْدِ رَبِّهِمْ وَهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُوْنَ-
‘কেবল তারাই আমার নিদর্শনগুলো বিশ্বাস করে, যাদেরকে তা স্মরণ করিয়ে দিলে তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে ও তাদের প্রতিপালকের পবিত্র মহিমা কীর্তন করে এবং অহংকার করে না’। -সূরা আস সাজদাহ, ৩২/১৫
তিনি আরো ইরশাদ করেন,
أَمَّنْ هُوَ قَانِتٌ آنَاءَ اللَّيْلِ سَاجِدًا وَقَائِمًا يَحْذَرُ الْآخِرَةَ وَيَرْجُو رَحْمَةَ رَبِّهِ-
‘যে ব্যক্তি রাত্রিকালে সিজদায় কিংবা দাঁড়িয়ে আনুগত্য প্রকাশ করে, আখেরাতকে ভয় করে ও তার প্রতিপালকের অনুগ্রহ প্রত্যাশা করে (সে কি তার সমান, যে তা করে না)’? -সূরা আয যুমার, ৩৯/৯
সিজদার পরীক্ষা দুনিয়া ও আখিরাতেঃ
শুধু পৃথিবী এবং পৃথিবীর ভেতরকার সকল কিছুই নয়; নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের সমস্ত জীব ও জড় বস্তুও আল্লাহ তাআলার ইবাদতে মগ্ন-নিমগ্ন। প্রত্যেকেই সিজদায় অবনত হয় তাঁর সকাশে। কিন্তু মানুষ ও জিন ছাড়া কারো হিসাব হবে না এবং পরীক্ষাও হবে না। মানুষ ও জিন জাতির সিজদার এই পরীক্ষা দুনিয়া ও আখিরাতে উভয় জাহানেই হবে। একদল মানুষ দুনিয়ায় আল্লাহ তাআ'লাকে সিজদাহ করেন। নিয়মিত সিজদাহ করাকে তারা নিজেদের অভ্যাস এবং অত্যাবশ্যকীয় কাজের অন্তর্ভূক্ত করে নিয়ে থাকেন। পরকালে সিজদার পরীক্ষায়ও এরা সফল হবেন। উত্তীর্ণ হবেন। আল্লাহ তাআ'লার পদতলে সিজদাহ প্রদানের মাধ্যমে জয়যুক্ত হবেন। আল্লাহ তাআ'লার সান্নিধ্যে পৌঁছে পরম সুখে অনন্তকালের জান্নাতে বসবাস করবে। পক্ষান্তরে আরেক দল আল্লাহ তাআ'লাকে সিজদাহ করেন না। আল্লাহ তাআ'লার কাছে আত্মসমর্পণও করেন না। এদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ তাআ'লা বলেন,
فَمَا لَهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ
অতএব তাদের কী হলো যে তারা বিশ্বাস স্থাপন করে না। -সুরা আল ইনশিকাক, আয়াত : ২০
وَإِذَا قُرِئَ عَلَيْهِمُ الْقُرْآنُ لَا يَسْجُدُونَ
এবং যখন তাদের কাছে কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তারা সিজদা করে না। -সুরা আল ইনশিকাক, আয়াত : ২১
আল্লাহ তাআ'লাকে অস্বীকারকারী এই দল সিজদাহ না করার কারণে পরকালেও আল্লাহ তাআ'লার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে না। তারা সিজদাহ করতে সক্ষম হবে না। ফলে তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। এ বিষয়ে ইরশাদ হয়েছে,
يَوْمَ يُكْشَفُ عَن سَاقٍ وَيُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ
স্মরণ করো, যেদিন পায়ের গোছা উন্মোচিত করা হবে এবং তাদের সিজদাহ করার জন্য আহবান করা হবে, কিন্তু তারা তা করতে সক্ষম হবে না। -সুরা আল কলম, আয়াত : ৪২
خَاشِعَةً أَبْصَارُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ وَقَدْ كَانُوا يُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ وَهُمْ سَالِمُونَ
তাদের দৃষ্টি অবনত থাকবে, তারা লাঞ্ছনাগ্রস্ত হবে। অথচ যখন তারা সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল, তখন তাদের সিজদা করতে আহ্বান জানানো হয়েছিল। -সুরা আল কলম, আয়াত : ৪৩
فَذَرْنِي وَمَن يُكَذِّبُ بِهَذَا الْحَدِيثِ سَنَسْتَدْرِجُهُم مِّنْ حَيْثُ لَا يَعْلَمُونَ
অতএব যারা এই কালামকে মিথ্যা বলে, তাদের আমার হাতে ছেড়ে দিন, আমি এমন ধীরে ধীরে তাদের ধরব যে, তারা জানতে পারবে না। -সুরা আল কলম, আয়াত : ৪৪
পার্থিব জীবনে যারা আল্লাহ তাআ'লাকে সিজদাহ দিতে অভ্যস্ত নন; অলসতা কিংবা কার্পণ্য করে যারা সিজদাহ দেয়া থেকে বিরত থাকেন, তারা যে পরকালে, হাশরের বিভীষিকাময় সেই দিনটিতেও আল্লাহ তাআ'লার সামনে সিজদায় অবনত হতে সক্ষম হবেন না, তারা আপ্রাণ চেষ্টার পরেও সিজদাহ করতে পারবেন না- এ বিষয়টির পক্ষে বর্ণিত উপরোক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা হিসেবে বুখারি শরিফে দীর্ঘ একটি হাদিস রয়েছে। সে হাদিসের অংশবিশেষ উল্লেখ করছি,
فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ فَيَقُولُونَ أَنْتَ رَبُّنَا فَلاَ يُكَلِّمُهُ إِلاَّ الأَنْبِيَاءُ فَيَقُولُ هَلْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ آيَةٌ تَعْرِفُونَهُ فَيَقُولُونَ السَّاقُ فَيَكْشِفُ عَنْ سَاقِهِ فَيَسْجُدُ لَهُ كُلُّ مُؤْمِنٍ وَيَبْقَى مَنْ كَانَ يَسْجُدُ لِلَّهِ رِيَاءً وَسُمْعَةً فَيَذْهَبُ كَيْمَا يَسْجُدَ فَيَعُودُ ظَهْرُهُ طَبَقًا وَاحِدًا
কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ মানুষের উদ্দেশে বলবেন, আমি কি তোমাদের রব! সবাই বলবে, হ্যাঁ, আপনিই আমাদের রব। (সে সময়) নবীরা ছাড়া আর কেউ তাঁর সঙ্গে কথা বলবে না। আল্লাহ তাদের জিজ্ঞেস করবেন, তোমরা কি কেউ তার কোনো চিহ্ন জানো? তারা বলবে, পায়ের নলার তাজাল্লি। সেই সময় পায়ের নলা খুলে দেওয়া হবে। তখন সকল ঈমানদার ব্যক্তি সিজদায় পড়ে যাবেন। তবে যারা দুনিয়ায় প্রদর্শনীর জন্য আল্লাহকে সিজদাহ করতো তারা সিজদাহ করতে সক্ষম হবে না। তারা সে সময় সিজদা করতে চাইলে তাদের মেরুদণ্ডের হাড় শক্ত হয়ে একটি তক্তার মতো হয়ে যাবে (তাই তারা সিজদাহ করতে পারবে না)। -সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৪৩৯
জাহান্নামের আগুন সিজদার স্থান স্পর্শ করবে নাঃ
বস্তুতঃ আদম সন্তান নিজেদের কৃত পাপের কারণে জাহান্নামে যাবে। অতঃপর জাহান্নামের আগুন তার সর্বাঙ্গ ভক্ষণ করবে সিজদার স্থান ব্যতীত। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ এদের প্রতিও দয়া করবেন। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
আল্লাহ যখন জাহান্নামীদের কাউকে দয়া করতে চাইবেন, তখন ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিবেন ঐ লোকদের বের করার জন্য, যারা আল্লাহর ইবাদত করত। অনন্তর তাঁরা তাদেরকে বের করবেন। তাঁরা তাদেরকে সিজদার চিহ্নসমূহ দেখে চিনে নিবেন। আল্লাহ আগুনের উপর সিজদার চিহ্ন ভক্ষণ হারাম করে দিয়েছেন। এভাবে তাঁরা তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করবেন। -সহিহ বুখারী হা/৮০৬; মুসলিম হা/১৮২; মিশকাত হা/৫৫৮১
সিজদাহ স্রষ্টার নৈকট্যলাভের শ্রেষ্ঠতম মাধ্যমঃ
আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, বিশ্বনবি মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
وَحَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ، وَعَمْرُو بْنُ سَوَّادٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ غَزِيَّةَ، عَنْ سُمَىٍّ، مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا صَالِحٍ، ذَكْوَانَ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَقْرَبُ مَا يَكُونُ الْعَبْدُ مِنْ رَبِّهِ وَهُوَ سَاجِدٌ فَأَكْثِرُوا الدُّعَاءَ " .
বান্দা আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী হয়, যখন সিজদারত থাকে। অতএব তোমরা তখন অধিক দোয়া করতে থাকো। -মুসলিম, হাদিস : ৪৮২
অত্র হাদিস হতে শিক্ষণীয় কিছু বিষয়-
১। এই হাদিসটির দ্বারা প্রমাণ হয় যে, সিজদাহ মহান আল্লাহর বড় ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত এমন একটি ইবাদত, যে এই ইবাদতটির মাধ্যমে মুসলিম ব্যক্তি মহান আল্লাহর নৈকট্য, করুণা এবং অনুগ্রহ লাভ করে।
২। মুসলিম ব্যক্তির জন্য এটা প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা মোতাবেক বৈধ কর্ম যে, সে নফল বা ফরজ নামাজের মধ্যে তার প্রতিপালক মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দুআ করবে। তবে নামাজের মধ্যে সিজদার অবস্থায় দুআ করা সর্বোত্তম।
৩। মুসলিম ব্যক্তির জন্য এটি একটি উত্তম কাজ যে, সে পবিত্র কুরআন এবং নির্ভরযোগ্য হাদিসের মধ্যে যে সমস্ত দুআ উল্লিখিত হয়েছে, সেসব দুআ'র প্রতি যত্নবান হবে এবং সেই দুআ'গুলো মুখস্ত করবে। কেননা, সেগুলো তার জন্য, তার পরিবার-পরিজনের জন্য এবং তার সন্তানদের জন্য ইসলাম ধর্মের বিষয়ে এবং দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ লাভের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি উপকারী।
জান্নাতে নবীজীর সাহচর্য্যপ্রার্থী সাহাবীকে বেশি বেশি সিজদার জন্য বললেনঃ
حَدَّثَنَا الْحَكَمُ بْنُ مُوسَى أَبُو صَالِحٍ، حَدَّثَنَا هِقْلُ بْنُ زِيَادٍ، قَالَ سَمِعْتُ الأَوْزَاعِيَّ، قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ، حَدَّثَنِي رَبِيعَةُ بْنُ كَعْبٍ الأَسْلَمِيُّ، قَالَ كُنْتُ أَبِيتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَتَيْتُهُ بِوَضُوئِهِ وَحَاجَتِهِ فَقَالَ لِي " سَلْ " . فَقُلْتُ أَسْأَلُكَ مُرَافَقَتَكَ فِي الْجَنَّةِ . قَالَ " أَوَغَيْرَ ذَلِكَ " . قُلْتُ هُوَ ذَاكَ . قَالَ " فَأَعِنِّي عَلَى نَفْسِكَ بِكَثْرَةِ السُّجُودِ " .
রাবিআহ ইবনে কব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর সঙ্গে রাত যাপন করতাম। একদা আমি তাঁর অজু ও ইসতেঞ্জা করার জন্য পানি আনলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, তোমার কিছু চাওয়ার থাকলে চাইতে পারো। তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আপনার সঙ্গে জান্নাতে থাকতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ওটা ছাড়া আর কিছু চাও কি? আমি বললাম, এটাই চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাহলে বেশি বেশি সিজদার দ্বারা তুমি এই ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করো। -সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৮৯
রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার যে কোনো উম্মতকে কিয়ামতের দিন আমি চিনে নিতে পারব। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করেন, এত মানুষের মধ্যে আপনি তাদের কিভাবে চিনবেন? তিনি বলেন, তোমরা যদি কোনো আস্তাবলে প্রবেশ করো যেখানে নিছক কালো ঘোড়ার মধ্যে এমন সব ঘোড়াও থাকে, যেগুলোর হাত, পা ও মুখ ধবধবে সাদা, তবে কি তোমরা উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে পারবে না? সাহাবিরা বললেন, হ্যাঁ, পারব। তিনি বলেন, ওই দিন সিজদার কারণে আমার উম্মতের চেহারা সাদা ধবধবে হবে, আর অজুর কারণে হাত-পা উজ্জ্বল সাদা হবে। -মুসনাদে আহমাদ, সিলসিলা ছহীহাহ হাদিস : ২৮৩৬
মা‘দান ইবনে আবু ত্বালহা ইয়া‘মারী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর আযাদকৃত গোলাম ছাওবান রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হল। আমি বললাম, আপনি আমাকে এমন একটি আমলের সংবাদ দান করুন, যার উপর আমল করলে আল্লাহ আমাকে জান্নাতে দাখিল করবেন। কিংবা তিনি বললেন, আপনি আমাকে আল্লাহর একটি প্রিয়তম আমলের সংবাদ দিন। তিনি নীরব রইলেন। আমি আবার বললাম, তিনি এবারও কিছু বললেন না। অতঃপর আমি তৃতীয়বার জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, আমি এ সম্পর্কে রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, আল্লাহর উদ্দেশ্যে অধিক সিজদা কর। কেননা তুমি যখনই আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি সিজদা করবে, তখন এর দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা তোমার মর্যাদা এক ধাপ বাড়িয়ে দিবেন এবং তোমার একটি পাপ মোচন করে দিবেন। রাবী মা‘দান বলেন, আমি আবুদ দারদা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু -এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং তাঁকে একই প্রশ্ন করলাম, ছাওবান আমাকে যা বলেছেন, তিনিও আমাকে অনুরূপ বলেছেন’। -সহিহ মুসলিম, মিশকাত হা/৮৩৭
ঈমানদার ব্যক্তির জন্য সিজদার গুরুত্ব অপরিসীমঃ
ঈমানদার ব্যক্তির জন্য সিজদার গুরুত্ব অপরিসীম। মুমিন আল্লাহর পদতলে সিজদা করতে ও ক্ষমা প্রার্থনা করতে দ্বিধাবোধ করবে না। যেমন পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন,
وَظَنَّ دَاوُوْدُ أَنَّمَا فَتَنَّاهُ فَاسْتَغْفَرَ رَبَّهُ وَخَرَّ رَاكِعًا وَأَنَاب
‘দাঊদ বুঝতে পারল, আমি তাকে পরীক্ষা করলাম। তারপর সে তার প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল আর সিজদায় লুটিয়ে পড়ল এবং মুখ ফিরাল তাঁর দিকে’। -সূরা আছ ছোয়াদ ৩৮/২৪
অপর এক আয়াতে আল্লাহ বলেন,
قُلْ آمِنُوْا بِهِ أَوْ لَا تُؤْمِنُوا إِنَّ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ مِنْ قَبْلِهِ إِذَا يُتْلَى عَلَيْهِمْ يَخِرُّونَ لِلْأَذْقَانِ سُجَّدًا، وَيَقُولُونَ سُبْحَانَ رَبِّنَا إِنْ كَانَ وَعْدُ رَبِّنَا لَمَفْعُولًا، وَيَخِرُّونَ لِلْأَذْقَانِ يَبْكُونَ وَيَزِيدُهُمْ خُشُوعًا-
‘তুমি বলে দাও (হে অবিশ্বাসীগণ!), তোমরা কুরআনের প্রতি ঈমান আন বা না আন, যাদেরকে ইতিপূর্বে জ্ঞান দান করা হয়েছে (আহলে কিতাবের সৎ আলেমগণ), যখন তাদের উপর এটি পাঠ করা হয়, তখনই তারা সিজদায় লুটিয়ে পড়ে। আর তারা বলে, মহাপবিত্র আমাদের পালনকর্তা! আমাদের প্রতিপালকের প্রতিশ্রুতি অবশ্যই কার্যকরী হয়। আর তারা কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং তাদের বিনয়চিত্ততা আরও বৃদ্ধি পায়’। -সূরা বনী ইসরাঈল, ১৭/১০৭-১০৯
প্রকৃতপক্ষে সিজদার সময় দয়াশীল ও ক্ষমাশীল আল্লাহর কাছে দয়া-ক্ষমা, করুণা, অনুগ্রহ, রহমত, ভালোবাসা প্রভৃতি লাভ করার আশাও করা হয়। উপরে বর্ণিত আয়াতে দাঊদ আলাইহিস সালাম -এর ক্ষমা প্রার্থনা ও সিজদায় লুটিয়ে পড়া একটি তাৎপর্যময় উদাহরণ। তিনি একজন নবী হয়েও তাঁর পরীক্ষায় ভীত হয়ে পড়েছিলেন এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে সিজদায় লুটিয়ে পড়েছিলেন।
ফলাফল নির্ভর করে সিজদাকারীর অন্তরের স্বচ্ছতার উপরে। আর এর ফায়ছালাকারী একমাত্র আল্লাহ তা‘আলা। তিনি ব্যতীত এ বিষয়ে কারো কোন হাত নেই। সুতরাং আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হয়েই তাঁর প্রতি দৃঢ় আশা-ভরসা নিয়ে সিজদা ও প্রার্থনা করতে হবে।
অধিক সিজদাকারীদের চেহারায় ফুটে ওঠে বিশেষ উজ্জ্বলতাঃ
অধিক পরিমানে রুকু এবং সিজদা করা স্বয়ং প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামের অনন্য একটি গুণ, যার উল্লেখ পবিত্র কুরআনেও রয়েছে। আল্লাহ তাআ'লা ইরশাদ করেন-
مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاء عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاء بَيْنَهُمْ تَرَاهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا سِيمَاهُمْ فِي وُجُوهِهِم مِّنْ أَثَرِ السُّجُودِ
মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল। আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি তাদেরকে রুকু ও সিজদারত দেখবেন। তাদের মুখমন্ডলে রয়েছে সিজদার চিহ্ন। -সূরা: আল ফাতাহ, আয়াত : ২৯
আয়াতোক্ত سِيمَاهُمْ فِي وُجُوهِهِم مِّنْ أَثَرِ السُّجُودِ দ্বারা বুঝানো হয়েছে, নামাজ তাঁদের জীবনের এমন ব্রত হয়ে গেছে যে, নামাজ ও সিজদার বিশেষ চিহ্ণ তাঁদের মুখমন্ডলে উদ্ভাসিত হয়। এখানে সিজদার চিহ্ণ বলে সেই নূরের আভা বুঝানো হয়েছে, যা দাসত্ব এবং বিনয় ও নম্রতার প্রভাবে প্রত্যেক ইবাদতকারীর মুখমন্ডলে প্রত্যক্ষ করা হয়। কপালে সিজদার কালো দাগকে বুঝানো হয়নি। বিশেষতঃ তাহাজ্জুদ নামাজের ফলে উপরোক্ত চিহ্ণ খুব বেশি ফুটে ওঠে। ইবনে মাজার এক বর্ণনায় প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- যে ব্যক্তি রাতে বেশি নামাজ পড়ে, দিনের বেলায় তার চেহারা সুন্দর আলোকোজ্জ্বল দৃষ্টিগোচর হয়। হযরত হাসান বসরী রহ. বলেন, এর অর্থ নামাজীদের মুখমন্ডলে সই নূর, যা কিয়ামতের দিন প্রকাশ পাবে। -তাফসীরে জালালাইন, ইসলামিয়া কুতুবখানা, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃষ্ঠা-১৩৬
আদম সন্তানের সিজদাহ দর্শনে শয়তানের ক্রন্দনঃ
আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আদম সন্তান যখন সিজদার আয়াত পাঠ করে, অতঃপর সিজদা করে, শয়তান তখন সরে গিয়ে কেঁদে কেঁদে বলে হায়! তাকে সিজদা করতে বলা হয়েছে, অতঃপর সে সিজদা করেছে, তার জন্য জান্নাত। আর আমাকে সিজদার আদেশ করা হয়েছে, অতঃপর আমি অবাধ্য হয়েছি। তাই আমার জন্য জাহান্নাম ধার্য হ’ল’। -সহিহ মুসলিম, ইবনু মাজাহ, আহমাদ, মিশকাত হা/৮৩৫
চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে সিজদার বিস্ময়কর উপকারিতাঃ
বলা বাহুল্য, নামাজ মুসলিম জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বিধায় একজন মুসলিম কিছুতেই এবং কোনো অবস্থাতেই নামাজকে এড়িয়ে যেতে পারেন না। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের প্রথমটি ঈমান। আর ঈমানের পরে দ্বিতীয়টিই হচ্ছে নামাজ। এ কারণে, ঈমান গ্রহণের পরে নামাজের অবস্থানই সর্বাগ্রে। পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে-
إِنَّ الصَّلاَةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَّوْقُوتًا
নিশ্চয়ই নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করা মুমিনদের ওপর ফরজ। -সূরা: আন নিসা, আয়াত : ১০৩
এ কথা বলা আবশ্যক যে, নামাজের পার্থিব উপকারিতা অনুসন্ধান করা কোনো মুসলিমেরই কাম্য হওয়া উচিত নয়। মহান প্রতিপালকের আদেশ নিঃশর্তভাবে মেনে নামাজ আদায় করাই মুমিন মুসলিমের ঐকান্তিক দায়িত্ব। কিন্তু নামাজ আদায়ের মাধ্যমে একজন বিশ্বাসী ব্যক্তি মহান প্রতিপালক নির্দেশিত অবশ্য পালনীয় একটি আদেশ পালনের মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টিলাভের পাশাপাশি পার্থিব শারীরিক ও অন্যবিধ যেসব ফায়দা এবং উপকারিতা লাভে ধন্য হয়ে থাকেন, সেগুলো জানার চেষ্টা করেছেন আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের অনুসন্ধিৎসু ব্যক্তিবর্গ। তাদের দীর্ঘ গবেষনা এবং পর্যবেক্ষনে উঠে এসেছে যে, মুসলিম জীবনের অত্যাবশ্যকীয় অনুসঙ্গ এই নামাজের ফায়দা, ফজিলত ও উপকারিতা শুধু পরকালীন জীবনের সাথেই সম্পর্কিত নয়; ইহকালেও এর রয়েছে অভাবনীয় এবং অসাধারণ অনেক উপকারিতা। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষণায় উঠে এসেছে- মানবদেহের জন্য এর অচিন্ত্যনীয় কিছু উপকারিতার কথা। নামাজের রুকনগুলোর প্রতিটিতেই মানবদেহের জন্য যে আলাদা আলাদা উপকারিতা রয়েছে সে কথা আজ বিজ্ঞানের আলোকে প্রমানিত এবং সুপ্রতিষ্ঠিত। যেহেতু সিজদাহ নিয়ে অত্র নিবন্ধ সে কারণে, নামাজের সিজদায় মানবদেহের বৈজ্ঞানিক উপকারিতা নিয়েই এখানে আলোকপাত করার চেষ্টা থাকবে ইনশাআল্লাহ।
আমেরিকান চিকিৎসা বিজ্ঞানীর গবেষনায় সিজদার অসাধারণ উপকারিতাঃ
আমেরিকার অন্যতম সিটি ওয়াশিংটন ডিসির একজন চিকিৎসক মুসলিম সমাজে নামাজের এত গুরুত্বের কারণ অন্বেষণ করতে গিয়ে অভিনব তত্ত্ব এবং তথ্যাদি আবিষ্কার করতে সক্ষম হন। তার গবেষণায় উঠে আসা ফলাফল সম্মন্ধে তিনি বলেন, মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে হার্ট, যা অনবরত সারা শরীরে ব্লাড সার্কুলেশন বা রক্ত সঞ্চালনের কাজটি নিরবে করে যেতে থাকে। এটি মূলতঃ পাম্প করার মাধ্যমে রক্ত সারা শরীরে ছড়িয়ে দিয়ে রক্তের প্রবাহ চালু রাখে। হার্টের কাজ হচ্ছে, প্রতিনিয়ত সারা শরীর থেকে পাম্পিং করে রক্ত টেনে হার্টে নিয়ে আসা এবং আবার একই পদ্ধতিতে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে দেয়া। লক্ষনীয় বিষয় হচ্ছে, মানবদেহে হার্টের অবস্থান থেকে বেশি অংশই হার্টের নিচের দিকে হওয়ায় বুক, পেট, কোমর ও পায়ের দিকে খুব সহজেই রক্তের প্রবাহ সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক হলেও উপরের দিক, অর্থাৎ মাথর দিকটি উপরে থাকে বলে মুখমন্ডলসহ মাথার দিকটিতে রক্তের প্রবাহ তুলনামূলক কষ্টকর এবং কঠিন হয়ে থাকে। এর প্রমান হিসেবে দেখা যায়, কখনো কখনো খুব বেশি সময় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকলে শরীরের নিম্নাংশে অতিরিক্ত রক্তপ্রবাহের কারণে অসুবিধারও সৃষ্টি হয়। আরো লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, মানুষ সাধারণত দাঁড়িয়ে, বসে বা শুয়ে থেকে সময় অতিবাহিত করে থাকে। এর মধ্যে শোয়ার সময় সারা শরীর হার্টের সমান্তরাল পজিশনে এলেও মাথার দিক তখনো হার্ট থেকে নিচে অবস্থান করে না। কিন্তু একজন মুসলিম যখন নামাজ আদায় করেন তখন তিনি প্রতিবার সিজদা করার সময় তাঁর দেহের উর্ধ্বাংশ তথা, মাথাসহ উপরের অংশ হার্টের নিচে অবস্থান করে থাকে। আর ঠিক ওই সময়টায় হার্ট মানবদেহের আরেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ মাথা তথা, মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত প্রবাহিত করে থাকে।
প্রিয় পাঠক! আমরা যাঁরা নামাজ আদায়ে অভ্যস্ত, তাঁরা একটু খেয়াল করলে অনুভব করতে সক্ষম হবো যে, সিজদাহ করার সময় মাঝে মাঝে আমাদের মাথা সামান্য গরম এবং ভারী অনুভূত হয়। আর সাধারণতঃ সিজদায় খুব বেশি সময় অবস্থান করা হয় না বিধায় অধিক পরিমাণে রক্তপ্রবাহের চাপও খুব বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয় না। যার ফলে মস্তিষ্কে রক্তের মাত্রাতিরিক্ত চাপ সৃষ্টির অবস্থা হওয়ারও আশঙ্কা তেমন থাকে না। এভাবে একজন নামাজি ব্যক্তি প্রতি ওয়াক্ত নামাজে অনেকবার করে এবং প্রতি দিন কমপক্ষে অন্তত পাঁচবার যখন দেহের এই ব্যায়ামটুকু নিয়মিতভাবে করে যান, তখন তিনি স্বাভাবিকভাবেই অন্য আরো অনেকের তুলনায় অনেকাংশে সুস্থতা অনুভব করবেন- এটা খুবই স্বাভাবিক এবং বিশ্বাসযোগ্য একটি প্রক্রিয়া। একই সাথে সঠিকভাবে মস্তিষ্কসহ পুরো মুখমন্ডলে পরিমিত পরিমান রক্ত প্রবাহ অব্যাহত থাকায় তাঁর দৃষ্টি ও শ্রবণশক্তিসহ স্মরণশক্তিরও উন্নয়ন ঘটে। এই উন্নয়নের হার নামাজে অনভ্যস্তদের তুলনায় সিজদায় অভ্যস্তদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি বলে উল্লেখ করা হয় রিপোর্টে।
নামাজি ব্যক্তির চেহারায় অন্যদের তুলনায় বেশি লাবণ্য পরিলক্ষিত হয়। তার কারণ সিজদা করার সময় মুখের প্রতিটি শিরায় যথেষ্ট পরিমাণে রক্তের প্রবাহ সৃষ্টি হয়। যার অভাবে যাঁরা নামাজ আদায় করেন না- তাঁদের চেহারায় এক ধরনের কালচে আভা দৃষ্টিগোচর হয়ে থাকে।
এ ছাড়া সিজদার সময় নিতম্ব, হাঁটু, টাখনু ও কনুইয়ের ওপর ঝোঁকানো (Flexion) হয়ে থাকে। যখন নলা ও রানের পেছনের পেশি, কোমর ও উদরের পেশি চেপে যায়, তখন কাঁধের জোড়ার পেশিগুলোতে এর বাইরের দিক থেকে টান লাগে। এর সঙ্গে সঙ্গে মাথার পেছনের অঙ্গগুলোও চেপে যায়। এর সবগুলোই শরীরতত্ত্ববিদ্যার ভাষায় দেহের জন্য খুবই উপকারী বলে প্রমাণিত।
মহিলা নামাজিগণ সিজদাহ করার সময় জড়োসড়ো হয়ে সিজদাহ করে থাকেন। এ সময় তারা তাঁদের বুক হাঁটুর সঙ্গে মিলিয়ে রাখেন। যেটি শরীরতত্ত্ববিদদের ভাষায়- গর্ভাশয়ের সর্বোত্তম একটি ব্যায়াম এবং চিকিৎসা।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, একই বিষয়ে নামাজের শারীরিক উপকারিতার নিয়ে Physical benefits of (Salah) prayer - Strengthen the faith & fitness নামে গবেষনামূলক একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল আইন হাসপাতালের পুনর্বাসন এবং শারীরিক মেডিসিন ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফিজিওথেরাপিস্ট গজল কামরান।
এই বিষয়ে আরও একাধিক গবেষনার অনলাইন লিঙ্ক এখানে যুক্ত করে দেয়া সঙ্গত মনে করছি, যাতে অনুসন্ধানী ব্যক্তি মাত্রই উত্থিত যে কোনো প্রশ্নের উত্তর পেতে পারেন সহজেই-
Benefits of Prayer as a Physical Activity
Muslim Prayer- A New Form of Physical Activity: A Narrative Review Dr Nabeela Nazish1 , Dr Nidhi Kalra2 1Assistant Professor, Dr. B .R. Ambedkar Medical College, Bengaluru, Pincode-560043 2Assistant professor, BCIP, New Delhi.
A review of the literature on the health benefits of Salat (Islamic prayer) Majed Chamsi-Pasha, SBIM1 , Hassan Chamsi-Pasha, FACC2 1 Department of Medicine, GNP Hospital, Jeddah, Saudi Arabia, 2 Department of Cardiology, King Fahd Armed Forces Hospital, Jeddah, Saudi Arabia
Physical Benefits of Salah
Benefits of Prayer as a Physical Activity Osman İMAMOĞLU Ondokuz Mayıs University, Faculty of Sports Science Yaşar Doğu, Samsun, TURKEY
Efficacy of prayer
[link|https://www.parhlo.com/x-reasons-that-prove-praying-5-times-a-day/?__cf_chl_captcha_tk__=4b5c9b2c57d0a066b42c98e9e86aad9edec3d444-1616322652-0-Aah9lK_qRgUvPywXkOD1hr846DUGhAZvbOzdkO
নামাজ বান্দা ও তার প্রভুর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমঃ
নামাজ হুকুমের দিক থেকে অন্যান্য ফরজ ইবাদতের মত একটি ফরজ ইবাদত হলেও এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এর মাধ্যমে বান্দা ও তার প্রভুর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ সৃষ্টি হয়। নামাজ প্রতিপালকের সান্নিধ্যলাভের অন্যতম মাধ্যম।
নামাজ মানুষকে অশ্লীল এবং গর্হিত কাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখে। বস্তুতঃ একাগ্রচিত্তে নামাজ আদায়কারী একজন মানুষ ব্যক্তি, সামাজিক কিংবা রাজনৈতিক কোনো পরিসরেই কোনো খারাপ কাজের সঙ্গে কোনোভাবে সম্পৃক্ত হতে পারেন না। কারণ, তিনি দৈনিক কম করে হলেও পাঁচবার মুখোমুখি হন তার প্রিয়তম রবের। একান্ত আরাধনায় নত হন তাঁর সামনে। বিনীত অন্তরে প্রার্থনায় বিগলিত হন মালিকের সামনে। নিজেকে, নিজের আমিত্ব, অহমিকা, দম্ভ- সবকিছুকে ভেঙ্গে চূড়ে চুরমার করে দিয়ে সিজদায় লুটিয়ে পড়েন মালিকের পদপ্রান্তে। এ কারণে তার মধ্যে সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করে 'একটু পরেই মহান রবের সঙ্গে কথোপকথনের মধুময় মুহূর্তের ভিন্নধর্মী স্বাদ এবং উপলব্ধির অনন্য একটি অনুভূতি'। নামাজের গুরুত্ব বুঝার জন্য এতটুকু বিষয় জেনে নেয়াই যথেষ্ট যে, আল কুরআনে অন্ততঃ ৮২ টি স্থানে নামাজের উল্লেখ করা হয়েছে। হাদিস এবং সীরাতের কিতাবগুলোতে স্পষ্ট বর্ণনা এসেছে, রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনের শেষ আদেশও ছিল এই নামাজ। তিনি অসুস্থাবস্থায় তাঁর জীবনের শেষ সময়েও বলেছিলেন- 'আচ্ছলাত! আচ্ছলাত! ওয়ামা- মালাকাত আইমানুকুম!' অর্থাৎ, সাবধান! সতর্ক থেকো নামাজের ব্যাপারে! যত্নবান হও নামাজ এবং তোমাদের অধিনস্তদের বিষয়ে!
পরিশেষে...
অসংখ্য এবং অগণিত শুকরিয়া সেই মহান দয়ালু রবের, যিনি নামাজের মত এমন তুলনাবিহীন, অসাধারণ এবং অনিন্দ্য সুন্দর আমলকে আমাদের নিত্য দিনের অবশ্য পালনীয় আমল তথা, ইবাদত হিসেবে প্রদান করে আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনকে সুচারুরূপে সাজিয়ে নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। প্রতি দিন, প্রতিনিয়ত সিজদায় তাঁর কুদরতি পায়ে মাথা ঠেকাবার তাওফিক আমাদেরকে দিয়েছেন।
০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৩১
নতুন নকিব বলেছেন:
এটা সত্যিই দুঃখজনক। এই মানসিকতার পরিবর্তন অবশ্যই হওয়া প্রয়োজন। একমাত্র সচেতনতাই এই পথ থেকে মানুষকে ফেরাতে পারে।
লাইকসহ মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা। শুভকামনা জানবেন।
২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: বাংলাদেশের বিভিন্ন মাঝারে আমি বহু মানুষকে সেজদা দিতে দেখেছি।
০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৩৯
নতুন নকিব বলেছেন:
প্রকৃতপক্ষে সিজদাহ কেবলমাত্র আল্লাহ তাআ'লার উদ্দেশ্যেই হওয়া উচিত। তিনি ব্যতিত আর কারও সামনে সিজদায় মস্তকাবনত করার সুযোগ নেই।
শুভকামনা জানবেন।
৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৫৯
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
কোন ভিন্ন কারণে কিংবা অন্য উদ্দেশ্য কারো কাছে শুধু শুধু মাথা নত করলেই সিজদা হিসাবে
গন্য হবেনা, যতক্ষন পর্যন্ত না সেখানে পুর্ণ আনুগত্য প্রকাশের মনোভাব না থাকে সে সাথে
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى 'সুবহানা রাব্বিয়াল আলা তথা আমি আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি
মর্মে প্রসংসামুলক কথামালা বলা হবে । উল্লেখ্য নামাজে সিজদায় গিয়ে আমাদেরকে মনে মনে
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى সুবহানা রাব্বিয়াল আলা তথা প্রসংসামুলক কথা মালা বলতে হয় ।
যতার্থই বলেছেন সহি সিজদার উপকারিতা অনেক, ভুল জায়গায় অন্যজনে সিজদা করা হলে
সেটা শিরক হিসাবে গন্য হবে ।
শুভেচ্ছা রইল
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:২২
নতুন নকিব বলেছেন:
প্রিয় ভাই,
শুভকামনা জানবেন। আপনার উপস্থিতি ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা। ব্লগে আপনাকে না দেখলে মাঝেমাঝে চিন্তিত হই। তখন মনে হতে থাকে, আপনার সাথে যোগাযোগ করার বিকল্প কোন ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো। খোঁজ খবর নিতে পারতাম। বিশেষ করে করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত আপনাকে যতবার একটু বেশি সময় ধরে অনুপস্থিত পেয়েছি, ততবারই চিন্তাযুক্ত হয়েছি। যা হোক, আল্লাহ তাআ'লার কাছে প্রার্থনা, তিনি আপনাকে সুস্থাবস্থায় রাখুন, কুশলে রাখুন এবং দীর্ঘায়ু করুন। ফি আমানিল্লাহ।
৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: শয়তান আদমকে সিজদা করলে বেঁচে যেত।
১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:২৫
নতুন নকিব বলেছেন:
জ্বি, শয়তান আল্লাহ তাআ'লার হুকুম মেনে আদম আলাইহিস সালামকে সিজদা করলে আশা করা যায়, নিশ্চয় বেঁচে যেত।
জাজাকুমুল্লাহ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:০৭
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে সিজদাহ করা যায়না দিন দিন অনেক মুসলিম একথাটা ভুলেই যাচ্ছে তাই সকর্ত করা ও হওয়া প্রয়োজন। +++++