নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘুষের লেনদেন কবিরাহ গোনাহ বা মহাপাপ; ঘুষ আদান প্রদানের বিরুদ্ধে ইসলামের কঠোর সতর্কবাণী

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৪৯

ছবি: অন্তর্জাল।

ঘুষের লেনদেন কবিরাহ গোনাহ বা মহাপাপ; ঘুষ আদান প্রদানের বিরুদ্ধে ইসলামের কঠোর সতর্কবাণী

ঘুষ একটি জঘন্য অপরাধ। কিন্তু সমাজ-সংসারে কোথায় নেই এই মারাত্মক অপরাধ? ঘুষকে আজ আর ঘুষ বলা হয় না। হাদিয়া-তোহফা, উৎকোচ, বখশিশ, নজরানা, ইত্যাদি মুখরোচক নানান নাম দিয়ে এই সর্বসম্মত হারাম কাজটিকে জায়েজ বানানোর প্রচেষ্টা বহু পুরনো। হাল আমলে এইসব শব্দেরও আধুনিকায়ন হয়েছে। পরিবর্তিত নতুন শব্দ স্থান করে নিয়েছে এসবের জায়গায়। আমরা ইদানিংকালে 'স্পিড মানি' কথাটার সাথে কমবেশি পরিচিত। এই 'স্পিড মানি' জিনিষটা আসলে কি? এটা মূলতঃ ঘুষের সর্বশেষ আপডেটেড ব্যবহারিক প্রতিশব্দ। এই শব্দের মধ্যে কেমন যেন কাজের গতি ফেরানোর একটা প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হয়। যে কোন কাজ যাতে দ্রুততার সাথে সম্পন্ন হয় সে লক্ষ্যে প্রদত্ত মানি বা টাকাকে স্পিড মানি আখ্যায়িত করা যায় কি? কথা হচ্ছে, কাজে গতি সঞ্চারের জন্য টাকা দিতে হবে কেন? যার দায়িত্বে সংশ্লিষ্ট কাজ, সে কেন নিজের দায়িত্ব মনে করে যথাসময়ে কাজটি সম্পাদনে উদ্যোগী হবে না? সে কেন তার কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করতে তৎপর হবে না? তাকে টাকা দিয়ে তার ভেতরে কর্মস্পৃহা তৈরি করে দিতে হবে কেন? সে যে সংস্থা বা দপ্তরে কাজ করে, সেখান থেকে তাকে মাসশেষে বেতন ভাতাদি প্রদান করা হয় না? সে তা নিয়মিত ভোগ করে যাচ্ছে না? তাহলে তাকে কেন স্পিড বৃদ্ধির জন্য টাকা দিতে হবে? কেন সে হারাম অর্থের জন্য ওঁত পেতে থাকবে? কেন সে ফাইল আটকে রেখে অবৈধ টাকা অর্জনের জন্য মরিয়া হয়ে অন্যের পকেট কাটবে?

বস্তুত: বৈধভাবে আয়-রোজগার করা অন্যতম একটি ইবাদত। ঘুষ কিংবা উৎকোচ গ্রহণ করে অন্যায়ভাবে আয়-রোজগার করা বৈধ নয় বরং তা হারাম। আল্লাহ তাআলা অবৈধ পন্থায় উপার্জন করতে নিষেধ করেছেন। কেননা, ঘুষ বা উৎকোচ গ্রহণ করা সুদ, চুরি-ডাকাতি, জিনা-ব্যভিচারের মতো হারাম ও অবৈধ কাজ এবং যার চূড়ান্ত পরিণাম জাহান্নামের কঠিন শাস্তি।

একটি সুস্থ সমাজে ঘুষ থাকতে পারে না। কারণ, ঘুষ ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক এক ব্যাধি হিসেবে চিন্হিত হয়েছে। ঘুষের আদান-প্রদান তথা লেনদেন নিকৃষ্টতম অন্যায়। এ ব্যাধি ও নিকৃষ্ট পন্থা থেকে বিরত থাকার জন্য রয়েছে ইসলামের অকাট্য এবং স্পষ্ট নির্দেশনা। ঘুষ গ্রহণের মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে বলেন-

﴿وَلَا تَأۡكُلُوٓاْ أَمۡوَٰلَكُم بَيۡنَكُم بِٱلۡبَٰطِلِ وَتُدۡلُواْ بِهَآ إِلَى ٱلۡحُكَّامِ لِتَأۡكُلُواْ فَرِيقٗا مِّنۡ أَمۡوَٰلِ ٱلنَّاسِ بِٱلۡإِثۡمِ وَأَنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ١٨٨﴾ [البقرة: ١٨٨]

‘তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না এবং মানুষের ধন-সম্পত্তির কিছু অংশ জেনে-বুঝে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে বিচারককে উৎকোচ দিও না।’ -সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৮

নৈতিক অধ:পতনের কারণ:

ঘুষ আদান-প্রদানের কারণে সমাজ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ও ধ্বংসাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়। কেননা, সমাজে ঘুষের প্রচলন মানুষের নীতি-নৈতিকতায় পচন ধরিয়ে দেয়। ন্যায়ানুবর্তিতা এবং সততাকে বিনষ্ট করে দেয়। অবৈধ ও অনৈতিক সব কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয় ঘুষের মাধ্যমে। ফলে মানুষের বিশ্বাস উঠে যায় এবং তা মানুষের বাড়াবাড়ির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলশ্রুতিতে সমাজে শুরু হয় নৈতিক অধ:পতন।

ঘুষের লেনদেনের ক্ষতি:

ঘুষ দেয়া-নেয়ায় রয়েছে অনেক ক্ষতি। ঘুষের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো- এর মাধ্যমে চরিত্রের নীচতা ও হীনতা কঠিনভাবে প্রকাশ পায়। ঘুষের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ইজ্জত ও সম্মান বলতে কিছুই থাকে না। এসব বিষয় প্রকাশ হয়ে পড়লে সমাজের কাছে প্রভাবশালী ব্যক্তিও হেয় হয়। আর পরকালের ক্ষতিতো আছেই।

হারাম ভক্ষনকারীর ইবাদত আল্লাহ তাআ'লার কাছে পৌঁছায় না:

যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে গোপনে কারও কাছে উৎকোচ বা ঘুষ গ্রহণ করে, সে ব্যক্তি কখনো কোথাও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। তার মন থাকে ছোট। তার বুকে সত্য কথা বলার সাহস অবশিষ্ট থাকে না। আর আল্লাহ তাআ'লার কাছে ঘুষের অর্থের কোনো মূল্য নেই। হারাম ভক্ষনকারীর ইবাদত আল্লাহ তাআ'লার কাছে পৌঁছায় না। তিনি এগুলো কবুল করেন না। হাদিসে এ সম্পর্কে স্পষ্ট সতর্ববাণী উচ্চারিত হয়েছে।

ঘুষের উপার্জন সন্দেহাতিতভাবে হারাম। আর এই হারাম অর্থের মাধ্যমে উপার্জিত রুজি রোজগারে অভ্যস্ত ব্যক্তির কোনো ইবাদত কবুল হয় না। ঘুষের অর্থে জাকাত, দান-সাদকাও কবুল হয় না। ঘুষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কোনো নেক কাজ এবং দোয়াও কবুল হয় না। এমকনি হজ ও ওমরাহ পালনও তার বৃথা। কারণ, এসবের কোনকিছুই তার থেকে কবুলযোগ্য নয়। ঘুষের সম্পদ রেখে মারা যাওয়া ব্যক্তির জন্য এ সম্পদই জাহান্নামের অন্যতম উপকরণে পরিণত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন-

‘তাদের অনেককেই আপনি দেখবেন পাপে, সীমালংঘনে ও অবৈধ ভক্ষণে তৎপর; তারা যা করে নিশ্চয় তা নিকৃষ্ট।’ -সুরা মায়েদা : আয়াত ৬২

ঘুষদাতা এবং গ্রহীতার ওপর অভিসম্পাত:

তাফসিরে ইবনে কাসিরের বর্ণনায় এসেছে- ঘুষের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি জালেম এবং আল্লাহর কাছে সে অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হবে। ঘুষের প্রতি নিন্দা এবং তা আদান-প্রদানকারীর ওপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন। হাদিসে এসেছে-

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুষদাতা এবং গ্রহীতার ওপর অভিসম্পাত করেছেন।’ -মুসনাদে আহমাদ

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু আরও বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘ঘুষ আদান-প্রদানকারী উভয়ে জাহান্নামে যাবে।’ -তাবরানি

ঘুষ দুর্ভিক্ষের কারণ:

ঘুষ সমাজে এমন এক মারাত্মক কাজ, যার ফলে সমাজে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ে। হাদিসের বর্ণনা থেকেই তা সুস্পষ্ট। হাদিসে এসেছে-হযরত আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যখন কোনো জাতির মাঝে সুদের ব্যাপক প্রচলন হয়ে যায়; তখন তারা দুর্ভিক্ষে পতিত হয়। আর যখন তাদের মাঝে ঘুষের আধিক্য দেখা দেয়, তখন তারা শত্রুর ভয়ে ভীত হয়ে পড়ে।’ -মুসনাদে আহমাদ

ঘুষের কাজে সহযোগিতার কুফলঘুষের কাজে সহযোগিতাকারী দালালরাও অভিশপ্ত। ইসলামের দৃষ্টিতে ঘুষ আদান-প্রদানকারী যেভাবে অভিশপ্ত। ঠিক সেভাবে ঘুষ লেনদেনের দালালরাও অভিশপ্ত। হাদিসে এসেছে-

হযরত সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুষ আদান-প্রদানকারী এবং এর দালালদের সবার ওপর অভিশম্পাত করেছেন।’ -মুসনাদে আহমাদ

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু তো এই পর্যন্ত বলেছেন যে, বিচারকের জন্য কারও থেকে ঘুষ নিয়ে ফয়সালা করা কুফরীর সমতুল্য। আর সাধারণ মানুষের জন্য পরষ্পর ঘুষ লেনদেন করা হারাম অপবিত্র উপার্জন।’ -তাবরানি

বিচার-ফায়সালায় ঘুষ দাতা ও ঘুষ গ্রহীতা উভয়ের উপরে আল্লাহ তা‘আলা লা‘নত:

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন,

«لَعَنَ اللهُ الرَّاشِيَ وَالْمُرْتَشِيَ فِي الْحُكْمِ»

“বিচার-ফায়সালায় ঘুষ দাতা ও ঘুষ গ্রহীতা উভয়ের উপরে আল্লাহ তা‘আলা লা‘নত করেছেন”। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৯০১১; সহীহুল জামে‘, হাদীস নং ৫০৯৩

ঘুষ ও বর্তমান সমস্যাসঙ্কুল সময়ে করণীয়:

দেয়ালে পীঠ ঠেকে যাওয়ায় একান্ত নিরুপায় হয়ে কাউকে টাকা দিতে বাধ্য হওয়া আর হাসিমুখে ঘুষ দিয়ে অবৈধ স্বার্থ হাসিল করা এক কথা নয়। দু'টোর পার্থক্য বুঝতে পারাটাও কঠিন কিছু নয়। যদি ঘুষ প্রদান ব্যতীত নিজের পাওনা বা অধিকার কোন উপায়েই আদায় করা সম্ভব না হয় কিংবা ঘুষ না দিলে যুলুম-অত্যাচারের শিকার হতে হয় তবে ঐ অধিকার আদায় ও যুলুম অত্যাচার নিরোধ কল্পে ঘুষ দিলে ঘুষদাতা উক্ত শাস্তির আওতায় পড়বে না।

বর্তমানে ঘুষের বিস্তার রীতিমত উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এমনকি অনেক চাকুরের নিকট মূল বেতনের চেয়েও তা রীতিমত আয়ের এক বড় উৎস। অনেক অফিস ও কোম্পানী নানা নামে-উপনামের ছদ্মাবরণে ঘুষকে আয়ের বাহানা বানিয়ে নিয়েছে। অনেক কাজই এখন ঘুষ ছাড়া শুরু ও শেষ হয় না। এতে গরীব ও অসহায় মানুষ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি ঘুষের কারণে ভঙ্গ হয়ে যায়। ঘুষ না দিলে ভালো সার্ভিসের আশা করা বাতুলতা মাত্র। যে ঘুষ দিতে পারে না তার জন্য নিকৃষ্ট মানের সার্ভিস অপেক্ষা করে। হয়ত তাকে বারবার ঘুরানো হয়, নয়তো তার দরখাস্ত বা ফাইল একেবারে গায়েব করে দেওয়া হয়। আর যে ঘুষ দিতে পারে সে পরে এসেও ঘুষ দিতে অক্ষম ব্যক্তির নাকের ডগার উপর দিয়ে বহু আগেই কাজ সমাধা করে চলে যেতে সক্ষম হয়। অথচ ঘুষের কারণে যে অর্থ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পাওয়ার কথা ছিল তা তাদের হাতে না পৌঁছে বরং ঘুষখোর কর্মকর্তা-কর্মচারীর পকেটস্থ হয়।

এসব নানাবিধ কারণে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সবার বিরুদ্ধে বদ দো‘আ করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন,

«لَعْنَةُ اللَّهِ عَلَى الرَّاشِي وَالْمُرْتَشِي»

“ঘুষদাতা ও গ্রহীতা উভয়ের ওপর আল্লাহর লা‘নত”। -ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৩১৩; সহীহুল জামে‘, হাদীস নং ৫১১৪

শেষের কথা...

সুতরাং, মুমিন মুসলমানের উচিত, ঘুষ থেকে নিজেদের সর্বাবস্থায় বিরত রাখা। ঘুষের কাজে অন্যকে সহযোগিতা না করা। ঘুষের কাজে কারো পক্ষে দালালি না করা। এই মারাত্মক ব্যাধি ও ক্ষত থেকে বেঁচে থাকা একজন ঈমানদারের জন্য ঈমানের অনিবার্য ও অত্যাবশ্যকীয় দাবি।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের সকলকে ঘুষের কুফল ও খারাপ প্রচলন থেকে নিজেদের হেফাজত করার তাওফিক দান করুন। হালাল উপার্জন অল্প হলেও তার ওপর সন্তুষ্ট থেকে সত্যের উপরে অটল ও অবিচল থাকার শক্তি, সাহস এবং ক্ষমতা প্রদান করুন। আমিন।

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৫৫

নতুন বলেছেন: আপনার চারিদিকে ঘুষ, সুদ,ভ্যাজালে লিপ্ত মানুষগুলি দেখে আপনার কি মনে হয়? তারা কেন এমন অন্যায় করছে?

দেশের মুসলমানেরা এই কাজে বড় গুনাহ হয় জানে কিন্তু তবুও করছে কেন?

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার চারিদিকে ঘুষ, সুদ,ভ্যাজালে লিপ্ত মানুষগুলি দেখে আপনার কি মনে হয়? তারা কেন এমন অন্যায় করছে?

-সুদ, ঘুষ এবং ভ্যাজালে লিপ্ততার কারণগুলো খুঁজতে হবে আগে। এরপরে সেই কারণ নিবারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অভাবের কারণে যত মানুষ অন্যায়ে লিপ্ত হয়, আমার ধারণা, তারচেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ স্বভাবের দোষে এসব অপকর্মে লিপ্ত হয়। এসব বদ স্বভাব দূর করতে রাষ্ট্রীয় কঠোর আইনের সঠিক প্রয়োগ, ধর্মীয় অনুভূতি সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যে, এই জীবনই শেষ নয়, পরকালে অনন্ত এক জীবন সামনে অপেক্ষমান। সেখানে এই পার্থিব জীবনের সকল কৃতকর্মের হিসাব পুঙ্খানূপুঙ্খ দিতে হবে। মহান স্রষ্টার সামনে দাঁড়াতে হবে। তারপরে এখানকার ক্ষনস্থায়ী জীবনের কৃতকর্মের ফলাফল অনুযায়ী শান্তি অথবা শাস্তি দু'টোর একটা পেতে হবে।

দেশের মুসলমানেরা এই কাজে বড় গুনাহ হয় জানে কিন্তু তবুও করছে কেন?

-নামকাওয়াস্তে মুসলমান হয়ে লাভ কি? বিশ্বাস যদি এটা থাকেই যে, আল্লাহ তাআ'লা সর্বাবস্থায় আমার সবকিছু দেখছেন, তাহলে মানুষ এমন অন্যায় করে কিভাবে, আমার বুঝে আসে না। শয়তান অবশ্য লেগেই আছে মানুষের পেছনে। সে চায়, মানুষ অন্যায় করুক। অপরাধ করুক। বিপথে যাক। ধ্বংসের দিকে চলুক। পৃথিবীকে নরকে পরিণত করাই শয়তানের উদ্দেশ্য। মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে তাই তার এত সাধনা। শয়তানের ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে সুপথে চলা সহজ কাজ মোটেই নয়। এটা যারা করতে পারেন, তারা সত্যিকারের সফলকাম।

২| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি হালাল ঘুষ চালু করার জন্য নিয়ম কানুন বের করুন।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৩৯

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার কাজ তো, অধিকাংশ সময়েই ফাজলামো করে বেড়ানো। ঘুষকে ইসলাম ধর্ম স্পষ্টভাবে হারাম ঘোষনা করেছে। সেটা আবার হালাল হয় কি করে?

৩| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: সরকারি অফিসে দেখেছি নামাজি মানুষকে ঘুষ খেতে।
সবচেয়ে বড় কথা এযুগে কেউ ১০০% ধর্ম মেনে চলে না।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৪৭

নতুন নকিব বলেছেন:



নামাজ আর ঘুষ দু'টো সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিষ। সত্যিকারের নামাজি ব্যক্তি কখনো ঘুষখোর হতে পারেন না। আপনি যাদের কথা বলেছেন, তারা কি আসলেই নামাজি ছিলেন? না কি, নামাজের কথা বলে অফিস টাইমে বাইরে গিয়ে তারা সময় কাটিয়ে আসতেন? ওদের কারও সাথে কখনো মসজিদে পাশাপাশি দাঁড়িয়েছেন? অর্থাৎ, সচক্ষে তাদের নামাজ প্রত্যক্ষ করেছেন?

সবচেয়ে বড় কথা এযুগে কেউ ১০০% ধর্ম মেনে চলে না।

-আপনার বড় কথাটার অর্থ দাঁড়ায়, এখন ধর্ম মেনে চলার দিন আর অবশিষ্ট নেই। উলটপালট করে দে মা, লুটেপুটে খাই টাইপের মানসিকতা যারা পোষন করেন, এই কথার প্রবক্তা তারাই, এটা ধরে নেয়া যেতে পারে কি?

৪| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৫৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ‌আমি ঘুষ খাই না।খাওয়অর সুযোগ নেই, সুযোগ থাকলেও হয়তো খেতাম না। তবে দরকারী এবং বৈধ কাজ সম্পন্ন করার জন্য ঘুষ দিতে হয়। কোনো উপায় নেই।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৩

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনি লোক ভালো, আলহামদুলিল্লাহ। নিজের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে, দরকারী এবং বৈধ কাজ সম্পন্ন করার জন্য নিতান্ত দায়ে পড়ে ঘুষ দিতে বাধ্য হলে সেটা অনিচ্ছাকৃত বিষয়। আর অনিচ্ছাকৃত এই ধরণের ক্ষেত্রগুলোতে নিরুপায় ব্যক্তিকে অপরাধী সাব্যস্ত করা যায় না। পোস্টেও বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৫| ১১ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:২২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ঘুষ দিতে বাধ্য করা হলে বিধান কি?

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৮

নতুন নকিব বলেছেন:



নিজের বৈধ অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে, দরকারী এবং বৈধ কাজ সম্পন্ন করার প্রয়োজনে নিতান্ত দায়ে পড়ে ঘুষ দিতে বাধ্য হলে সেটা অনিচ্ছাকৃত বিষয়। আর অনিচ্ছাকৃত এই ধরণের ক্ষেত্রগুলোতে নিরুপায় ব্যক্তিকে অপরাধী সাব্যস্ত করা যায় না। পোস্টেও সংক্ষিপ্তাকারে বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। তবে, এমন অবস্থা কোন সমাজে অব্যাহতভাবে চলতে থাকলে এবং তা ব্যাপকাকার ধারণ করলে সেই সমাজের সকলের উপরে দায়িত্ব হয়ে যায়, এই অবস্থার পরিবর্তন সাধনে সাধ্যমত সার্বিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা। তা করা না হলে অপরাধী নিরপরাধী নির্বিশেষে সমাজের সকলকেই অপরাধের ভাগী হতে হবে।

জাজাকুমুল্লাহ।

৬| ১২ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১:২০

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: ধর্মে নিষিদ্ধ হওয়া সত্বেও আমাদের দেশে বিশাল অংশ দেদারসে ঘুষ খাচ্ছে, কোনো রকম অনুশোচনা ব্যতিরেকেই। সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক আমাদের রুটিরুজির ব্যবস্থার উপর কোনো আস্থা বা ঈমান এদের কারো বিন্দুমাত্র আছে বলে মনে হয় কি আপনার ? বিস্ময়কর ব্যাপার হলো আমি দেশে বেড়াতে গিয়ে মাত্র একবার একটি মসজিদে খুৎবায় হুজুরকে হারাম রুজির বিরুদ্ধে বলতে শুনেছি। অথচ নর্থ আমেরিকায় একাধিক মসজিদে ভিনদেশি হুজুরদের হারাম রুজি, অন্যায় কার্যের বিরুদ্ধে বলতে শুনি ! মনে হয় দেশে সবাই কিছু কিছু হারাম কার্যকে বৈধ হিসাবে ধর্মে কাস্টমাইজ করে ফেলেছে বা মেনে নিয়েছে।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১০

নতুন নকিব বলেছেন:



বিষয়টি নিয়ে আমিও মাঝে মাঝে ভাবি যে, এমন হওয়ার কারণ কি? আমার দেখা মতে, [অবশ্য কথাটা প্রসঙ্গক্রমে বলতে হচ্ছে, আমি দীর্ঘ বছর যাবত জুমুআর নামাজ পড়িয়ে আসছি বিধায় সাধারণত: অন্য ইমামের পেছনে জুমুআ আদায়ের সুযোগ তেমন হয়ে ওঠে না] অধিকাংশ মসজিদে সুদ এবং ঘুষের বিষয়ে আলোচনা থাকে না। কেন থাকে না, আমার জানা নেই। অবশ্য, এক ইমাম সাহেবকে দেখেছি, কয়েক বছর পূর্বে যিনি কি না এই বিষয়ে জুমুআর পূর্বে কথা বলায় তার মসজিদের সেক্রেটারীর সাথে তার মনোমালিন্যের ঘটনা ঘটে। সেক্রেটারী তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে চাকরিচ্যূত করতে চেষ্টা করেন। অবশ্য সেই ইমাম সাহেব সে যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিলেন। এখনও তিনি সেই মসজিদেই আছেন।

অবস্থা যা-ই হোক, হারামকে হারাম এবং হালালকে হালাল বলতে হবে। সত্য মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। তাতে চাকরি থাকুক অথবা, যাক। আমাদের ঈমান দুর্বল হয়ে গেছে। চাকরি বাকরির চিন্তায় সত্য কথা বলা থেকেও পিছপা হয়ে যাই। রিজিকের মালিক যে একমাত্র আল্লাহ তাআ'লা এই কথাটাও ভুলে যাই। আল্লাহ তাআ'লাকে বাদ দিয়ে ভয় করি মানুষকে। এ অবস্থা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।

আমেরিকার অবস্থা আর আমাদের এখানকার অবস্থা সম্ভবত: এক নয়। ওখানে বাকস্বাধীনতা বলতে যা বোঝায়, আমাদের এখানে কি সেরকম? আপনি নিশ্চয়ই আমার থেকে এসব বিষয়ে বেশি জ্ঞাত থাকার কথা।

মন্তব্যের জন্য অভিনন্দন।

৭| ১২ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৩০

নূর আলম হিরণ বলেছেন: কোরআনে আল্লাহ নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত, পর্দার কথা যতবার বলেছে তার চেয়ে বেশিবার বলেছে সৎকর্ম করতে।

১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



তারপরেও কি আমরা সেইভাবে তা পালন করে চলি? সৎকর্মের পরিধি অনেক বড়। একজন বিশ্বাসী ব্যক্তির প্রতিটি কাজই মূলত: একেকটি সৎকর্ম। এমনকি হাসিমুখে অন্যের সাথে বলা তার কথাবার্তাকেও হাদিসে সাদাকাহ আখ্যায়িত করা হয়েছে। সাদাকাহ নি:সন্দেহে সৎকর্ম। সর্বোপরি, অন্যের কল্যান কামনাই হওয়া উচিত আমাদের যাবতীয় কিছুর মূল প্রেরণা। ইসলাম ধর্মে এই প্রেরণাই দেয়া হয়েছে।

মন্তব্যে স্বাগত এবং পরিশেষে শুভেচ্ছা।

৮| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৩৫

জিকোব্লগ বলেছেন:

চাঁদগাজী বলেছেন: আপনি হালাল ঘুষ চালু করার জন্য নিয়ম কানুন বের করুন।
লেখক বলেছেন: আপনার কাজ তো, অধিকাংশ সময়েই ফাজলামো করে বেড়ানো। ঘুষকে ইসলাম ধর্ম স্পষ্টভাবে হারাম ঘোষনা করেছে। সেটা আবার হালাল হয় কি করে?

- যথাযথ উত্তর। ফাজলামি করার জন্য ইসলাম বিদ্বেষীরা যা মনে হয় তাই বলে।

মডুর কাছে থেকে সুবিধা পাওয়ার জন্য এদেরকেই আবার শ্যেণদৃষ্টি - বাজপাখীর
মত তীক্ষ্ণদৃষ্টির একজন অসামান্য ব্লগার বলে আরেকজন পোস্ট দেয়।

মডুকে বায়াস করার জন্য কতই না চেষ্টা ! এরাই আবার ঘুষ নিয়ে ইসলামের সাথে
ফাজলামি করে।

১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৩

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

চাঁদগাজী ভাই আমার প্রিয় লোক। তার সাথে ঝগড়া বিবাদ করলেও সময়মত আবার আমরা কিন্তু ঠিকই মিলে যাই। তিনিও রাগ ধরে রাখেন না। তবে, ইসলাম ধর্মের বিবিধ বিষয়ে মন্তব্য করতে তার আরও সহনশীল এবং দায়িত্ববান হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।

শুভকামনা জানবেন।

৯| ১৪ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৫৫

নতুন বলেছেন: লেখক বলেছেন: আপনার চারিদিকে ঘুষ, সুদ,ভ্যাজালে লিপ্ত মানুষগুলি দেখে আপনার কি মনে হয়? তারা কেন এমন অন্যায় করছে?
-সুদ, ঘুষ এবং ভ্যাজালে লিপ্ততার কারণগুলো খুঁজতে হবে আগে। এরপরে সেই কারণ নিবারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অভাবের কারণে যত মানুষ অন্যায়ে লিপ্ত হয়, আমার ধারণা, তারচেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ স্বভাবের দোষে এসব অপকর্মে লিপ্ত হয়। এসব বদ স্বভাব দূর করতে রাষ্ট্রীয় কঠোর আইনের সঠিক প্রয়োগ, ধর্মীয় অনুভূতি সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যে, এই জীবনই শেষ নয়, পরকালে অনন্ত এক জীবন সামনে অপেক্ষমান। সেখানে এই পার্থিব জীবনের সকল কৃতকর্মের হিসাব পুঙ্খানূপুঙ্খ দিতে হবে। মহান স্রষ্টার সামনে দাঁড়াতে হবে। তারপরে এখানকার ক্ষনস্থায়ী জীবনের কৃতকর্মের ফলাফল অনুযায়ী শান্তি অথবা শাস্তি দু'টোর একটা পেতে হবে।
দেশের মুসলমানেরা এই কাজে বড় গুনাহ হয় জানে কিন্তু তবুও করছে কেন?

-নামকাওয়াস্তে মুসলমান হয়ে লাভ কি? বিশ্বাস যদি এটা থাকেই যে, আল্লাহ তাআ'লা সর্বাবস্থায় আমার সবকিছু দেখছেন, তাহলে মানুষ এমন অন্যায় করে কিভাবে, আমার বুঝে আসে না। শয়তান অবশ্য লেগেই আছে মানুষের পেছনে। সে চায়, মানুষ অন্যায় করুক। অপরাধ করুক। বিপথে যাক। ধ্বংসের দিকে চলুক। পৃথিবীকে নরকে পরিণত করাই শয়তানের উদ্দেশ্য। মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে তাই তার এত সাধনা। শয়তানের ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে সুপথে চলা সহজ কাজ মোটেই নয়। এটা যারা করতে পারেন, তারা সত্যিকারের সফলকাম।


আপনার জবাব ঠিক আছে।

কিন্তু কেন মানুষ নামে ধর্ম পালন করছে?
কেন বর্তমানের সমাজে ধর্মভয়ে মানুষ অন্যায় কাজ হতে বিরত থাকছে না?
মানুষ জানে এই সব না করলে অনন্তকাল দোজখে থাকতে হবে। কিন্তু তবুও কেন এই সব করছে?

১৫ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৩

নতুন নকিব বলেছেন:



ধন্যবাদ ভাই।

শুভকামনা।

১০| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:০৬

নতুন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.