নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবিশ্বাস্য মেটাভার্স ও ডিপ ফেইক প্রযুক্তি: আশির্বাদ না অভিশাপ?

২১ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৫৮

ছবি : সংগৃহীত

অবিশ্বাস্য মেটাভার্স ও ডিপ ফেইক প্রযুক্তি: আশির্বাদ না অভিশাপ?

প্রথমেই আসি মেটাভার্স নিয়ে। আলোচনার শুরুতে জেনে নেয়া প্রয়োজন, মেটাভার্স কি?

মেটাভার্স অবিশ্বাস্য এমন এক প্রযুক্তি যা ভার্চুয়াল বিশ্বকে করে তুলবে বাস্তবের মতো। বৈজ্ঞানিক কল্প-কাহিনীর ওপর ভিত্তি করে নির্মিত সাই-ফাই মুভির মতো মনে হবে।

ভাবুন তো, বিশ্বের কোথাও কোনো কোম্পানি তাদের নতুন মডেলের একটি গাড়ি তৈরির পর সেটা অনলাইন বাজারে ছাড়লো আর ক্রেতা হিসেবে আপনি বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে গাড়িটি চালিয়ে দেখতে পারলেন!

অথবা, ঘরে বসে অনলাইন শপিং করার সময় একটি পোশাক পছন্দ হলো আপনার। আর ব্যস! ওই পোশাকের একটি ডিজিটাল সংস্করণ গায়ে দিয়ে দেখার পরই আপনি জামাটি কেনার জন্য অর্ডার দিলেন! কেমন মনে হচ্ছে বিষয়টাকে?

মেটাভার্সের এমন প্রযুক্তির উপস্থিতির ফলে অনলাইনের ভার্চুয়াল জগতকে মনে হবে সত্যিকারের বাস্তব পৃথিবীর মতো।

ছবি : সংগৃহীত

মেটাভার্সকে বলা হচ্ছে ইন্টারনেটের ভবিষ্যত

মেটাভার্সকে বলা হচ্ছে ইন্টারনেটের ভবিষ্যত। প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, মেটাভার্সের কারণে ইন্টারনেটের ভার্চুয়াল জগতকে মনে হবে বাস্তব জগতের মতো যেখানে মানুষের যোগাযোগ হবে বহুমাত্রিক। মেটাভার্স প্রযুক্তির মাধ্যমে আপনি কোন কিছু শুধু দেখতেই পাবেন বিষয়টা এতটুকুতে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং তাতে নিজেকে জড়িয়ে ফেলতেও সক্ষম হবেন। এটাকে অনেকটা থ্রি-ডি ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড এর সাথে কল্পনা করতে পারেন। স্ক্রিনে এখনকার বেশিরভাগ স্পেস হচ্ছে টু-ডি বা দ্বিমাত্রিক। কিন্তু মেটাভার্স জগতে আমাদের অভিজ্ঞতা হবে থ্রি-ডির মতো। টেলিফোনে কারো সঙ্গে কথা বললে মনে হবে সামনা-সামনি আলাপ হচ্ছে।

সাধারণ মানুষের কাছে মেটাভার্স প্রযুক্তিকে আপাতত ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা ভিআর-এর কোন সংস্করণ বলে মনে হতে পারে। কিন্তু আসলে এটি তার চেয়েও অনেক বেশি।

প্রযুক্তিবিদেরা জানিয়েছেন, ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সঙ্গে মেটাভার্সের তুলনা আজকের দিনের স্মার্টফোনের সঙ্গে আশির দশকের মোবাইল ফোনের তুলনা করার মতো।

বর্তমানে ভিআর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনলাইন গেমিং-এর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, কিন্তু মেটাভার্সের ব্যবহার হবে সকল বিষয়ে - অফিসের কাজ থেকে শুরু করে খেলা, কনসার্ট, সিনেমা, এমনকি বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়ার বেলাতেও।

অনেকে কল্পনা করছেন যে, এই মেটাভার্স প্রযুক্তিতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর নিজের একটি থ্রিডি অবতার বা চরিত্র থাকবে এবং এটিই অনলাইনে তার প্রতিনিধিত্ব করবে। অর্থাৎ এটি ঘুরে ফিরে বেড়াতে পারবে ও অন্যান্য চরিত্রের সঙ্গে নানা কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবে।

বলা যায়, এ প্রযুক্তিতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ‘শেয়ার্ড ভার্চুয়াল পরিবেশে’ প্রবেশ করা যাবে। অর্থাৎ এটি হবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিকে ব্যবহার করে তৈরি ডিজিটাল স্থান, যেখানে বাস্তব দুনিয়ার সাথে মিলিয়ে দেয়া হবে ডিজিটাল বিশ্বকে।

‘গুগল ম্যাপে যখন কোন রাস্তা দিয়ে যান, স্ট্রিট ভিউতে আপনি আশেপাশের গাড়ি-বাড়ি-দোকানপাট সব দেখতে পান। আমি চাইলে ঢাকায় বসে লন্ডনের রাস্তা দেখতে পারি। এ পর্যন্ত কিন্তু হয়ে গেছে। এটা মেটাভার্সের সূচনা পর্ব। এর পরে যেটা হবে তা হচ্ছে এসব জায়গায় থাকার যে অভিজ্ঞতা সেটা আমি সেখানে না থেকেও ফিল করতে পারবো,’ বলেন জাকারিয়া স্বপন।

কম্পিউটারের সামনে বসে না থেকে একটি ভিআর হেডসেট লাগিয়েই আপনি আপনার প্রিয় ওয়েবসাইটগুলোতে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। এছাড়া বন্ধুদের সঙ্গে সাক্ষাত, গানের কনসার্টে যাওয়া, শপিং থেকে শুরু করে মোটামুটি সবকিছুই করা যাবে এ নিয়মে।

ফেসবুক সম্প্রতি ১০ হাজার কর্মী নিয়োগের কথা ঘোষণা করেছে ইউরোপে এই মেটাভার্স প্রযুক্তি প্রসারের জন্য। এতে প্রচুর অর্থও বিনিয়োগ করছে তারা। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জন্য বানানো হচ্ছে অকুলাস হেডসেট যা প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোর সেটের তুলনায় দামে কম পড়বে।

মাইক্রোসফট, অ্যাপল, গুগল, রোব্লক্স ও ফোর্টনাইট নির্মাতা এপিক গেইমস কোম্পানিও মেটাভার্স তৈরিতে অংশ নিচ্ছে। তাদেরও এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ প্রচুর।

এপিক গেইমসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ফোর্টনাইটের এক ভার্চুয়াল কনসার্টে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী আরিয়ানা গ্রান্ড যাতে কয়েক লাখ মানুষ অংশ নেয়।

ছবি : সংগৃহীত

Metaverse-1 অপেক্ষা কতদূর!

গত কয়েক বছরে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির অনেক উন্নতি হয়েছে। কিছু হেডসেট তৈরি হয়েছে যা মানুষের চোখের সঙ্গে এমন চালাকি করতে পারে যে, আপনি যখন ভার্চুয়াল পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াবেন তখন মনে হবে সবকিছু থ্রিডি-তে দেখতে পাচ্ছেন।

প্রযুক্তিবিদেরা বলছেন, মেটাভার্স প্রযুক্তি তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। ইন্টারনেটের গতি আরো দ্রুত হওয়ার সাথে সাথে, বিশেষ করে ফাইভ-জি বাজারে আসার পরেই সব সমস্যার সমাধান ঘটবে।

‘১০ বছর আগে মেটাভার্স একটি ধারণার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে এটি অনেক দূর এগিয়ে গেছে।’

‘আমরা মেটাভার্সের প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। আগামী সাত/আট বছর পরে দেখবেন যে আমরা মেটাভার্সের জগতে প্রবেশ করে ফেলেছি,’ জানালেন তথ্য-প্রযুক্তিবিদ জাকারিয়া স্বপন।

সূত্র: বিবিসি, বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ও সংবাদ মাধ্যম।

এবার চলুন, কিছু কথা বলি ডিপ ফেইক প্রযুক্তি নিয়ে:

ছবি : সংগৃহীত

ডিপ ফেইক কি? আসলে ডিপ ফেইক নামটির মধ্যেই লুকিয়ে আছে এর কাজ। ডিপ শব্দের অর্থ গভীর এবং ফেইক শব্দের অর্থ নকল।আর দুটি শব্দের সম্মিলিত অর্থ অনেকটা এমন হয় যে কোনকিছুকে গভীরভাবে নকল করা বুঝায়। তাহলে নিশ্চয় মনে প্রশ্ন জাগছে যে, ডিপ ফেইক দিয়ে তাহলে কিসের নকল করা হয়? আপনি হয়তো ভেবেছেন যে এই নকল হয়ত স্বাক্ষর নকল করার কোনো বিষয় হতে পারে। কিন্তু ব্যাপারটা আসলে অন্যরকম। এই ডিপ ফেইক প্রযুক্তি মূলত: আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার উপর ভিত্তি করে বানানো। এটি দিয়ে প্রায় নিঁখুতভাবে অন্য কাউকে নকল করা যায়। মানে, ধরুণ, আপনি যদি কখনো কোনদিনও খুন বা অন্যকোন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ না করে থাকেন তাহলেও এই ডিপ ফেইক প্রযুক্তি দিয়ে আপনাকে অপরাধী হিসেবে প্রমাণ করার প্রায় নিঁখুত চেষ্টা করা যেতে পারে।

ডিপ ফেইক কিভাবে কাজ করে?

এইবার জেনে নেই যে এটি আসলে কিভাবে কাজ করে। অর্থাৎ, এই প্রযুক্তির কাজ করার পদ্ধতি কী? এই প্রযুক্তিতে দুইটা রোবট বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হয়। একটা রোবট আপনার বা যার নকল করা হবে তার কয়েক হাজার ছবি তুলে আর একটা সিমুলেটর তৈরি করে। আর এই সিমুলেটরে আপনি নিজের ইচ্ছা মত কাজ করাতে পারবেন। আর পরের রোবটটি শুধু যাচাই করবে যে আপনার নতুন ভিডিও বা ছবি আগেরটার চেহারার সাথে কতটুকু মিলছে। যদি অনেকটুকু মিলে যায় তবেই সেটি আউটপুট হিসেবে আপনার নতুন ভিডিও দিবে নাহলে বার বার চেষ্টা করেই যাবে। আর কন্ঠ নকল করার প্রযুক্তি তো আগেই বানানো হয়ে গেছে। তাই সহজেই এটি রাজনৈতিক ক্ষেত্র সহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করে বিভ্রান্ত করা সম্ভব।

নতুন উদ্বেগের কারণ এখন 'ডিপফেইক প্রযুক্তি':

দুনিয়াজুড়ে এখন নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই 'ডিপফেইক প্রযুক্তি', যা দিয়ে খুব সহজেই তৈরি করা যায় উন্নতমানের ফেইক বা নকল ভিডিও। যে কোনো ব্যক্তিকে যে কোনো ভিডিওচিত্রের চরিত্র করে তোলা যায় এ প্রযুক্তি দিয়ে।

ডিপফেইক প্রযুক্তির কারসাজি এখনও প্রায় ধরাছোঁয়ার বাইরে!

ফটোশপ প্রযুক্তির নকল ছবি শনাক্তের কাজ বর্তমানে সফলভাবে করা গেলেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারসাজিতে তৈরি ডিপফেইক ভিডিওর ক্ষেত্রে এখনও তা সম্ভব হয়নি। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ম্যাগাজিন 'এমআইটি টেকনোলজি রিভিউ' জানিয়েছে, সেখানকার প্রতিরক্ষা বিভাগ প্রথমবারের মতো ডিপফেইক শনাক্তের একটি সফটওয়্যার তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে। কিন্তু এর ব্যবহার বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনও প্রতিরক্ষা বিভাগেই সীমিত রয়েছে।

ডিপ ফেইকের খপ্পড়ে বেচারা ডোনাল্ড ট্রাম্পও!

গত বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি নিয়ে তির্যক মন্তব্য করছেন। টুইটার এবং ফেসবুকে এটি লাখ লাখবার শেয়ার হয়। অসংখ্য মানুষ তাদের মন্তব্যে ট্রাম্পের সমালোচনা করতে থাকেন। কয়েকদিন পর ভিডিওটির আপলোডার নিজেই জানান, এটা ফেইক ভিডিও এবং নিছক মজা করার জন্যই ডিপফেইক প্রযুক্তির মাধ্যমে এটা তৈরি করা হয়েছে। অথচ কোনো পেশাদার মানুষের পক্ষেও অসংখ্যবার ভিডিওটি দেখে এটিকে নকল বলা সম্ভব নয়। অথচ সত্য হচ্ছে, অন্য একজনের কথা বলার দৃশ্য ধারণ করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং ডিপ লার্নিং প্রযুক্তির মাধ্যমে তা তৈরি করা হয়েছে। এ ধরনের শত শত ফেইক ভিডিও এখন ইউটিউব, ডেইলি মোশন, ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে।

ছবি : সংগৃহীত

ডিপ ফেইকের আরও কিছু আলোচিত ঘটনা:

কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ভুয়া খবর সম্পর্কে একটি পাবলিক সার্ভিস অ্যানাউন্সমেন্ট দিচ্ছেন এমন ভিডিও চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আসলে ওই ভিডিওতে চলচ্চিত্র নির্মাতা জর্ডান পিলের শরীরে ওবামার মুখ বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ওয়ান্ডার উইমেন অভিনেত্রী গ্যাল গাদতের ভুয়া ভিডিও রেডিটে প্রকাশ করা হয়।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করার পাশাপাশি ভয়ঙ্কর কিছু বিপদও বয়ে নিয়ে আসতে পারে!

তথ্যপ্রযুক্তি গবেষকরা অবশ্য আগে থেকেই বলে আসছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করার পাশাপাশি ভয়ঙ্কর কিছু বিপদও বয়ে নিয়ে আসতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিপফেইক ভিডিও তৈরি করা হয় মূলত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং ডিপ লার্নিং প্রযুক্তির সমন্বয়ে। এভাবে ফেইক ভিডিও তৈরির উপযোগী কয়েক ধরনের সফটওয়্যার এখন অনলাইনেও পাওয়া যাচ্ছে। ব্যক্তিগত সাধারণ মানের কম্পিউটারেও এগুলো সহজেই ব্যবহার করা যায়।

তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক খ্যাতনামা লেখক অস্কার স্কুয়টার্জ সম্প্রতি 'দ্য গার্ডিয়ানে' প্রকাশিত নিবন্ধে লিখেছেন, ডিপফেইক ভিডিও এতই ভয়ঙ্কর হতে পারে যে, তা যে কোনো মুহূর্তে যে কারও মৃত্যুর কারণও হতে পারে। কারণ, এসব ভিডিওতে একেবারেই আসলের মতো করে যে কারও ছবি ও কণ্ঠস্বর ব্যবহার করা যায়। ফলে এ ধরনের ভিডিও বানিয়ে কাউকে সামাজিকভাবে হেয় করে তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেওয়া কিংবা প্রতিহিংসার বশে তাকে বড় কোনো আইনি ঝামেলায় ফেলা যেতে পারে।

অস্কার স্কুয়টার্জ লিখেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি মানুষের জন্য এখন অপরিহার্য। কিন্তু প্রত্যেকটি প্রযুক্তি যেমন তার নিজের বিপরীতে কিছু বড় বিপদও নিয়ে এসেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। তথ্যপ্রযুক্তি হিসেবে ডিপফেইক এ পর্যন্ত ধেয়ে আসা সবচেয়ে বড় বিপদের নাম।

ডিপফেইক কি শনাক্ত করা সম্ভব?

আগে ছবির কারসাজি হতো ফটোশপে। তবে তা ধরতে মানুষের খুব বেশি সময় লাগেনি। কিন্তু ডিপফেইক ভিডিওর সফটওয়্যার মানুষের ছবি, কণ্ঠস্বর, অঙ্গভঙ্গি ও নড়াচড়া এত নিখুঁতভাবে করতে পারে যে, তা চট করে মিথ্যা বা ভুয়া প্রমাণ করা কঠিন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ম্যাগাজিন এমআইটি টেকনোলজি রিভিউর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ প্রথমবারের মতো একটি সফটওয়্যার টুলস তৈরি করতে পেরেছে, যেটি ভিডিওটি অন্য কারও ধারণ করা কি-না বা ভিডিওটি নিখুঁতভাবে অন্য কোনো চলমান চিত্রের ওপর বসানো হয়েছে কি-না তা শনাক্ত করতে পারবে। তবে এই সফটওয়্যারের ব্যবহার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগেই সীমিত রয়েছে এবং তা এখনও বাইরে কোথাও ব্যবহূত হয়নি।

অস্কার স্কুয়টার্জ তার নিবন্ধের উপসংহারে যে কথা বলেছেন, সে কথাকেই অনুসরণ করে বলা যায়, সম্ভাবনার জায়গাটি হচ্ছে, এখন পর্যন্ত প্রযুক্তি মানুষের নিয়ন্ত্রণেই আছে। প্রযুক্তির বিপজ্জনক অংশটি যদি মানুষের হাতে হয়, তাহলে এর প্রতিকারও মানুষই করবে। অতএব, আশা করা যায়, ডিপফেইক ভিডিও শনাক্তের প্রযুক্তিও তৈরি হবে অচিরেই।

ছবি : সংগৃহীত

তাহলে আপাতত: ডিপ ফেইকের হাত থেকে বাঁচার উপায়?

যত দিন কার্যকর প্রযুক্তি সাধারণের কাছে না পৌঁছে তত দিন ডিপফেইক ভিডিও কোনটি বুঝতে নিচের বিষয়গুলো খেয়াল করতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

১. ভিডিওর মুখভঙ্গি এবং নড়াচড়া দেখা। ভিডিওতে আলোর কম্পন বা ঝিলিক বা ফ্ল্যাশ দেখা।

২. চেহারা বা মুখের দিকটায় অস্পষ্টতা খেয়াল করা, অস্বাভাবিক বা অপ্রাসঙ্গিক ছায়া বা আলো, অস্বাভাবিক ও অপ্রয়োজনীয় নড়াচড়া বিশেষ করে মুখ, চোয়াল ও ভ্রুতে, ত্বকের রং এবং শরীরের গড়নে অসামঞ্জস্য দেখা, কথার সঙ্গে মুখের, ঠোঁটের নড়াচড়ায় না মেলা।

৩. ভিডিওকে ধীরগতিতে অথবা থামিয়ে থামিয়ে কয়েকবার দেখা। প্রতিটি ফ্রেম ধরে ধরে দেখতে হবে।

৪. ভিডিওটি কাদের ধারণ করা? কারা ওয়েবে প্রকাশ করেছে? কোন ওয়েব মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে? এটা শেয়ার করা হয়েছে কার কার সঙ্গে, একই ব্যক্তি কি বারবার শেয়ার করেছে, নাকি অনেকে ইত্যাদি বিষয়ে কোনো না কোনো অসংগতি হয়তো চোখে পড়বে।

৫. জনপ্রিয় ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অন্য ভিডিওর সঙ্গে মুখভঙ্গি মেলানো।

তথ্যসূত্র: বিবিসি, বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ও সংবাদ মাধ্যম।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:১৯

নতুন বলেছেন: ডিপফেইক কি শনাক্ত করা সম্ভব?

আগে ছবির কারসাজি হতো ফটোশপে। তবে তা ধরতে মানুষের খুব বেশি সময় লাগেনি। কিন্তু ডিপফেইক ভিডিওর সফটওয়্যার মানুষের ছবি, কণ্ঠস্বর, অঙ্গভঙ্গি ও নড়াচড়া এত নিখুঁতভাবে করতে পারে যে, তা চট করে মিথ্যা বা ভুয়া প্রমাণ করা কঠিন।


প্রথম যখন ফোটশপে এডিট করা হতো সেটা নিয়েও মানুষ আলোচনা করেছে সমস্যা সৃস্টিকরেছে।

কিছুদিন পরে এই ডিপফেইক ও ভুয়া প্রমান করা সহজ হবে। তাই এটা এতো চিন্তার কিছু না। :-B

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৩৬

নতুন নকিব বলেছেন:



যাক, চিন্তার কিছু না থাকলেই ভালো। তবে আমার মনে হয় বিষয়টা এতটা সহজ হবে না।

শুভকামনা।

২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:১৯

সাসুম বলেছেন: যদি বলা হয়- নিউক্লিয়ার বোমা এবং নিউক্লিয়ার এনার্জি- আশীর্বাদ না অভিশাপ, জিনিষ টা যেমন খাপছাড়া শোনাবে তেমনি মেটাভার্স এবং ডীপফেইক - আশীর্বাদ না অভিশাপ এমনি খাপছাড়া শোনায়।

মেটাভার্স এর জগত শুরু হয়েছে সেদিন থেকেই যেদিন থেকে প্রথম টেলিফোন আবিস্কার হল। এরপর প্রযুক্তির কল্যানে ইন্টারনেট জুম মিটিং পেরিয়ে আমরা এখন মেটার জগতে। আগের দিকে মানুষ ম্যাগাজিনে খবর পড়ত এবং লাইভ স্ট্রিমিং এ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যানে সভ্যতা আগাবেই।

মেটাতে যেটা হবে সেটা হল- আমাদের কে আরো ভার্চুয়াল রিয়ালিটিতে বেঁধে ফেলবে এবং আমাদের আরো বেশি করে স্ক্রিনে আবদ্ধ করে ফেলবে।

তবে একটা বিষয় হল- হিউমান টাচ একটা বড় জিনিষ, সো এই যায়গাটা আস্তে আস্তে কমে আসবে। বাট বিবর্তন একটা ক্রমাগত হয়ে চলা জিনিষ সো এটাকে এড়ীয়ে চলার উপায় নেই। আজ হোক আর কাল হোক আমাদের পুরাতন ধ্যান ধারনা ও সিস্টেম কে রিপ্লেস করবে নতুন সব আবিস্কার। মেটাভার্স ও এক সময় আমাদের বর্তমান হিউমান টাচ কে রিপ্লেস করছে। এক জুম মিটিং পুরা আমাদের দুনিয়ার ফিজিকাল মিটিং আর সেমিনার এর ধারনা চেঞ্জ করে ফেলছে।
সো, আজ হোক আর কাল হোক আমাদের কে মেটাতেই যেতে হবে। পরিবর্তন এর সাথে সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। আদিকালের ধ্যান ধারনা আকড়ে ধরে বসে থাকলে আমরাই পিছিয়ে থাকব, বাকি সবাই এগিয়ে যাবে সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে।
এবার আসি ডীপ ফেইকের অপব্যবহার। এটা জাস্ট আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্ট আর মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির ইউজ অন্যায় এর জন্য। ঠিক যেমন- ছুড়িকে কেউ যদি মাছ মাংস কাটার জন্য ইউজ না করে মানুষ খুনের জন্য ইউজ করে কিংবা নিউক্লিয়ার এনার্জি কে শক্তি উতপাদনের জন্য ইউজ না করে বোমা বানানোর কাজে ইউজ করা।

এখানেই আমাদের শিক্ষা, মানবতা ও মনুষ্যত্ব বোধের ব্যপার টা চলে আসে। আমাদের কাছে পাওয়ার আছে ক্ষমতা আছে, টাকা আছে প্রযুক্তি আছে- আমরা সেটাকে কল্যানের কাজে ইউজ করব নাকি ধ্বংসের কাজে ইউজ করব একান্তই আমাদের ব্যাপার।

সো মেটাভার্স হোক আর আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স এর ডীপ ফেইক হোক- প্রুযুক্তির উথানে ভীত হবার কারন নেই, আমাদের এক্টাই করার আছে, নিজেদের কে সচেতন করে তোলা এবং ক্ষতিকর দিকে না গিয়ে সৃষ্টির দিকে যাওয়া।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



চমৎকার বলেছেন। ধন্যবাদ।

শুভকামনাসহ।

৩| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৫২

জুল ভার্ন বলেছেন: মেটাভার্স এবং ডীপফেইক - সম্পর্কে ব্লগার @সাসুম চমৎকার ব্যাখ্যা দিয়েছেন

২৩ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৩৮

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, অশেষ ধন্যবাদ আপনাকেও।

শুভকামনাসহ।

৪| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৩

এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: @নতুন, ডিপফেইক প্রমাণ করা সহজ হবে, এটি আপনি ভুল বললেন। ডিপফেইক তৈরি হয় সূক্ষ্ম ধরণের জটিল অ্যালগরিদমের মাধ্যমে, তা একসময় ততোধিক সূক্ষ্ম অ্যালগরিদমের মাধ্যমে এক পর্যায়ে ধরা অসম্ভব না হলেও, ব্যাপারটি সহজ নয় মোটেও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.