নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
স্বাগত হিজরি নববর্ষ ১৪৪৬
ছবি কৃতজ্ঞতা, অন্তর্জাল।
সময়ের কাটা ঘুরতে ঘুরতে আমরা পেরিয়ে এলাম আরেকটি বছর। শুরু হলো হিজরি নতুন বর্ষ ১৪৪৬। গতকাল সন্ধ্যায় মুহাররমের চাঁদ দেখা গেছে বাংলাদেশের আকাশে। ক্যালেন্ডারের হিসেব অনুযায়ী এ বছর ১০ মুহাররম অর্থাৎ, আশুরা হবে ১৭ জুলাই।
চলুন, নববর্ষের সূচনালগ্নে আমরা সুন্নাহর অনুসরণে পাঠ করে নিই চমৎকার অর্থবহ নির্ধারিত দোআটি-
اَللّٰهُمَّ أَدْخِلْهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ وَالْإِيْمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَالإِسْلَامِ وَجِوَارٍ مِنَ الشَّيْطَانِ وَرِضْوَانٍ مِنَ الرَّحْمٰنِ
Pronunciation:
আল্লাহুম্মা আদখিলহু আলাইনা বিল-আমনি ওয়াল-ঈমানি ওয়াস-সালামাতি ওয়াল-ইসলামি ওয়া জিওয়া-রিম মিনাশ-শাইতানী ওয়া রিদওয়ানিম মিনার-রাহমান
Translation:
হে আল্লাহ! আপনি আমাদের মাঝে এ মাস/ বছরের আগমন ঘটান- শান্তি, নিরাপত্তা, ঈমান এবং ইসলামের (উপর অবিচলতার) সাথে; এবং শয়তান থেকে সুরক্ষা ও দয়াময় আল্লাহর সন্তুষ্টির সাথে।
সাহাবায়ে কেরাম নতুন মাস বা নতুন বছর শুরুর এ দুআটি তেমন গুরুত্ব দিয়ে শিখতেন, যেভাবে কুরআনুল কারীম শিখতেন। -আল ইসাবাহ ফী তাময়ীযিস সাহাবাহ, ইবনে হাজার আসকালানী, খ. ৪, পৃ. ২১৮, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যা, বৈরুত, প্র. সংস্করণ ১৪১৫ হি.
নববর্ষে করণীয়ঃ
নতুন একটি বছরের আগমন ঘটা মানে জীবনের নির্ধারিত সময় থেকে একটি বছর হারিয়ে যাওয়া। নির্ধারিত হায়াত হতে একটি বছর কমে যাওয়া। আর জীবন থেকে একটি বছর চলে যাওয়া মানে মৃত্যুর কাছাকাছি আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। তাই নতুন বছরে মৃত্যুর স্মরণ এবং পরকালের প্রস্তুতি ভালোভাবে নেওয়ার প্রত্যয় নেয়াই হওয়া উচিত পরকালে বিশ্বাসী একজন মুমিনের সত্যিকারের কাজ। কারণ, আমাদের বয়স আসলে বাড়ছে না, বরং কমছে। নির্দিষ্ট আয়ু বছর বছর কমছে আর আমরা দিনদিন মৃত্যুর কাছাকাছি এগুচ্ছি। তাই নতুন বছরের প্রথম ও প্রধান কাজ হলো জীবনের হিসাব গুছিয়ে নেয়া। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা চূড়ান্ত হিসেব গ্রহণের আগে নিজের জীবনের হিসাব গুছিয়ে নিতে পারলেই জীবনের পরবর্তী ধাপগুলোতে ভালো কিছু করা সম্ভব। দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু একবার মিম্বরে দাঁড়িয়ে তার খুতবায় এক ঐতিহাসিক উক্তি উপস্থাপন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন,
"حاسبوا أنفسكم قبل أن تحاسبوا، وزنوا أعمالكم قبل أن توزن عليكم، وتزينوا للعرض الأكبر {يَوْمَئِذٍ تُعْرَضُونَ لا تَخْفَى مِنْكُمْ خَافِيَةٌ} [الحاقة:18]، وإنما يخف الحساب يوم القيامة على من حاسب نفسه في الدنيا
‘তোমাদের জবাবদিহি করার আগে নিজেদের হিসাব করে নাও, এবং তোমার কাজগুলোকে তোমার বিরুদ্ধে ওজন করার আগে ওজন কর, এবং সেই মহাবিচারের দিনে উপস্থাপন করার জন্য নিজেকে গুছিয়ে নাও, {সেই দিন একটি জিনিসও তোমাদের নিকট থেকে গোপন থাকবে না, সূরা আল-হাক্কাহ: 18}, তবে যে ব্যক্তি এই দুনিয়ায় নিজেকে দায়বদ্ধ করবে তার জন্য কিয়ামতের দিন হিসাব প্রদান করা সহজ হবে।'
মুহাররম/ আশুরার আমলঃ
কুরআনে বর্ণিত চারটি হারাম বা সম্মানিত মাসের মধ্যে মুহাররম অন্যতম। রমযানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে ১০ মুহাররম তথা আশুরার রোযা ফরজ ছিল। আশুরার রোজার ফলে পূর্বের এক বছরের গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন মর্মে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হাদীসের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ১০ মুহাররম এবং এর আগে বা পরে আরও একদিনসহ মোট ২ দিন রোজা রাখব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদেরকে উত্তম আমলগুলো অধিক পরিমানে করার তাওফিক দান করুন।
©somewhere in net ltd.