![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ধর্ষকের কঠোর শাস্তির বিধান করতে সমস্যাটা কোথায়? ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।
ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ, যা শুধু ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে ধ্বংস করে না, সমাজের নৈতিক ভিত্তিকেও নষ্ট করে। বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনা দিন দিন বেড়ে চলেছে, কিন্তু এর প্রতিকার ও প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যেন এক অসম্ভব কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধর্ষন ও ধর্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান চাইলে সমস্যাটা কোথায়? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে আমরা সমাজের বিভিন্ন স্তরের জটিলতা ও দ্বন্দ্বের মুখোমুখি হই।
সুশীল সমাজের ধর্ষণের কঠোর শাস্তি বিরোধী অবস্থানঃ
সুশীল সমাজ বলতে আমরা সাধারণত শিক্ষিত, সচেতন ও প্রগতিশীল মানুষদের বুঝি, যারা সমাজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলেন এবং সমাধানের চেষ্টা করেন। কিন্তু ধর্ষণের মতো সংবেদনশীল ইস্যুতে অনেক সময় তাদের অবস্থান অস্পষ্ট বা দ্বিধাগ্রস্ত বলে মনে হয়। প্রশ্ন উঠেছে, কেন সুশীল সমাজের একটি অংশ ধর্ষণের কঠোর শাস্তির পক্ষে সোচ্চার নন?
১. আইনের দুর্বলতা ও প্রয়োগের অভাব: বাংলাদেশে ধর্ষণের শাস্তি সম্পর্কে আইন আছে, কিন্তু তার প্রয়োগে ঘাটতি রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ধর্ষকরা প্রভাবশালী হওয়ায় বা রাজনৈতিক প্রভাবে আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায়। সুশীল সমাজের একটি অংশ মনে করেন, শুধু কঠোর শাস্তির বিধান করলেই সমস্যার সমাধান হবে না, বরং আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
২. সামাজিক কুসংস্কার ও লজ্জার সংস্কৃতি: সমাজে এখনও ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুকে দোষারোপ করার মানসিকতা বিদ্যমান। অনেক সময় সুশীল সমাজের মানুষরাও এই লজ্জার সংস্কৃতির শিকার হন। তারা মনে করেন, ধর্ষণের শিকার ব্যক্তির পরিবার ও সমাজের সম্মান রক্ষার জন্য বিষয়টি চেপে যাওয়াই ভালো। এই মানসিকতা ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার পথে অন্তরায় সৃষ্টি করে।
৩. ধর্ষণের সংজ্ঞা ও প্রমাণের জটিলতা: আইনগতভাবে ধর্ষণের সংজ্ঞা ও প্রমাণ সংগ্রহ একটি জটিল প্রক্রিয়া। অনেক সময় সুশীল সমাজের মানুষরা এই জটিলতাকে কেন্দ্র করে ধর্ষণের শাস্তির বিষয়ে দ্বিধান্বিত হন। তারা মনে করেন, ভুল অভিযোগের কারণে নিরপরাধ ব্যক্তির জীবন নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ধর্ষণের পরিসংখ্যান ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটঃ
বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর হাজার হাজার নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। এর মধ্যে অনেক ঘটনাই মিডিয়ায় আসে না, কারণ সমাজের চাপ ও ভয়ে পরিবারগুলো নীরব থাকে।
১. শিশু ধর্ষণ: শিশু ধর্ষণের ঘটনা বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। অনেক ক্ষেত্রে শিশুরা পরিবারের সদস্য বা পরিচিত ব্যক্তির দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়। এই ধরনের ঘটনাগুলো প্রমাণ করা কঠিন, কারণ শিশুরা অনেক সময় ঘটনা বুঝতে পারে না বা ভয়ে কথা বলতে চায় না।
২. নারী নির্যাতন: নারীদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা শুধু ধর্ষণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। যৌন হয়রানি, শারীরিক নির্যাতন ও মানসিক অত্যাচারও এর অন্তর্ভুক্ত। অনেক ক্ষেত্রে নারীরা কর্মক্ষেত্রে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির শিকার হন, কিন্তু ভয় ও লজ্জায় তারা প্রতিবাদ করতে পারেন না।
ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয়ঃ
ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ প্রতিরোধে শুধু কঠোর শাস্তির বিধানই যথেষ্ট নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনও জরুরি।
১. আইনের সঠিক প্রয়োগ: ধর্ষণের শাস্তি নিশ্চিত করতে আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষক যেই হোক না কেন, তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত।
২. সামাজিক সচেতনতা: ধর্ষণের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে। নারী ও শিশুদের অধিকার সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করতে হবে। লজ্জার সংস্কৃতিকে ভেঙে ফেলে ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিকে সাহায্য করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।
৩. শিক্ষা ও নৈতিকতা: শিক্ষার মাধ্যমে নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে। ছোটবেলা থেকেই শিশুদের নারী ও শিশুদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা শেখানো উচিত।
৪. মিডিয়ার ভূমিকা: মিডিয়াকে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। ধর্ষণের ঘটনাগুলোকে উপযুক্ত গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করতে হবে এবং সমাজে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
শেষের কথাঃ
ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যাধি, যা শুধু আইন দিয়ে দূর করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা, নৈতিক শিক্ষা ও আইনের সঠিক প্রয়োগ। সুশীল সমাজকে এই ইস্যুতে আরও সোচ্চার হতে হবে এবং ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়াতে হবে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান নিশ্চিত করার পাশাপাশি সমাজের প্রতিটি স্তরে পরিবর্তন আনতে হবে। শুধু তখনই আমরা একটি নিরাপদ ও ন্যায়বান সমাজ গড়ে তুলতে পারব।
২| ১০ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৫৯
রাসেল বলেছেন: অপরাধের শাস্তি না দেবার উদ্দেশ্য হলো অপরাধীকে উৎসাহী করা। যদি বিচারিক প্রক্রিয়ার (বিচার ব্যবস্থায় গলদ, আইনের অপপ্রয়োগ) মাধ্যমে অপরাধীকে অপরাধ করতে উৎসাহিত করা হয়, তাহলে বিচার ব্যবস্থার সাথে জড়িতদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়া উচিত। আপনি ধার্মিক লোক, আশাকরি আপনিও জানেন শেষ বিচারে বিচারকদের শাস্তির ধরন কি হবে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিকতার নূন্যতম শিক্ষা নাই। সবশেষে বলি, যে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে, সে দেশের অবস্থা আমাদের প্রানের (!) বর্তমান বাংলাদেশের মতোই হবে। আমাদের দেশের দেশপ্রেমিক মহাজ্ঞানী মহাজনরা ইহা ভালো করেই জানে এর প্রতিকার আরো ভালো জানে এবং কেন এই জানার প্রয়োগ করে না তাও জানে।
৩| ১০ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:১৬
ভুয়া মফিজ বলেছেন: যে কোনও কিছু করতে গেলে স্ট্র্যাটেজিক থিঙ্কিংয়ের মূল বিষয় হয় সমস্যা সমাধানের জন্য দীর্ঘমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী আর স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা। আপনি যেসব বিষয় নিয়ে আলাপ করেছেন এগুলো বড় আলাপ আর এগুলোই সুশীলদের আলাপ; দীর্ঘমেয়াদী আর মধ্যমেয়াদী চিন্তাধারা.........যার বাস্তবায়ন কখনও হয় না অথবা এই সুশীলরাই তা চায় না। কারন তারা, আর তাদের ভাই-বেরাদার, পরিচিতজনরাই ধর্ষণ-বান্ধব আর ধর্ষকদের প্রোটেক্টকারী। এরাই ধর্ষককে ফোনকলের মাধ্যমে ছাড়ায়ে নিয়ে আসে কিংবা ছেড়ে দেয়ার জন্য তদবির করে।
সাধারন জনগন চায় স্বল্পমেয়াদী পদক্ষেপ, যা সমাজে তাৎক্ষণিক ইমপ্যাক্ট তৈরী করে। ধর্ষককে দুই সপ্তাহের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিচার করে দোষী প্রমাণীত হলে এলাকার স্টেডিয়ামে বা প্রধান মাঠে নিয়ে ঝুলায়ে দিতে হবে। তাহলেই এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই স্বল্পমেয়াদে একমাত্র সমাধান। তা না হলে কিছুদিন পর পরই একেকটা আলোচিত ধর্ষণ কান্ড হবে আর সুশীলরা সংবাদ সম্মেলন করে বড় বড় কথা বলবে। সাধারন জনগন রিয়েলি সিক অফ ইট!!!!
৪| ১০ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:২১
অগ্নিবাবা বলেছেন: সবই বুঝলাম, তবে ইসলামী আইনে ধর্ষন প্রমান করবেন কিভাবে? মেয়েদেরকে কি সর্বক্ষন চারজন পুরুষকে সাক্ষীকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে?
৫| ১০ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:২৭
নতুন বলেছেন: ধষিতা নারী সমাজের চোখে খুবই খারাপ মানুষ হয়ে যায়।
তাই বেশির ভাগ নারীই যদি শারিরিক ভাবে আহত না হয়, বা কেউ যেনে না ফেলে তবে সেই ধর্ষনের ঘটনা প্রকাশ করেনা।
আমার মনে হয় মোট ধর্ষনের ৯৫% ই রিপোট হয় না।
সমাজের দৃস্টি ভঙ্গি না বদলালে ধর্ষকেরা এই সুযোগ নেবেই। তারা জানে নারীরা মুখ খুলবেনা, অথবা দূবল পরিবারের মানুষ তার বিচার করতে পারবেনা।
এখনো সমাজে ধর্ষককে বাচাতে বাবা, মা , পরিবার, বন্ধুবান্ধব, ক্ষমতাশিল নেতারা, উকিল মক্কেলেরা সদা ততপর।
সেক্সঅফেন্ডারদের সহ অপরাধীরদের একটা ডাটাবেইজ করা উচিত, সেটা সবার একসেস থাকবে এবং চাকুরি বা ব্যাংক লোন বা বড় সরকারী বা বেসরকারী সুবিধা নিতে হলে তাদের স্কোর দেখা হবে এমনটা করা হলেও কিছু মানুষ বুঝতে পারবে একবার এই রকমের অপরাধ করে ফেললে সারা জীবন তার ঘানী টেনে বেড়াতে হবে। এখনতো সবাই সব লুকিয়ে ফেলতে পারে সহজেই।
৬| ১০ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৮
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: ধর্ষনের শিকাড় নারীরা যখন আদালতে বিচারের আশায় যায় তখন তাদের দ্বিতীয়বার অপমানীত হতে হয়। আমাদের বিচার ব্যবস্থার রিফর্ম প্রয়োজন।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: গত বিশ বছর ধরে এরকম কথাই শুনে আসছি।
তাতে ধর্ষন বন্ধ হয় নাই। বরং দিন দিন ধর্ষন বেড়েই চলেছে। এখন ভালো কথায় কাজ হবে না। যারা ধর্ষন করবে সাথে সাথে তাদের গ্রেফতার করে মেরে ফেলতে হবে। তাদের কোনো আইন আদালত দরকার নাই।
কথা ক্লিয়ার?