নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

কামাল আতাতুর্ক: ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন ও স্বকীয়তা ধ্বংসকারী এক বিতর্কিত শাসক

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৪২

কামাল আতাতুর্ক: ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন ও স্বকীয়তা ধ্বংসকারী এক বিতর্কিত শাসক

তুরষ্কের বিখ্যাত আয়া সোফিয়া মসজিদের ছবিটি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক (১৮৮১-১৯৩৮) তুরস্কের ইতিহাসে এক প্রভাবশালী ও বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। তিনি তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং আধুনিক তুরস্কের স্থপতি হিসেবে পরিচিত। তবে তার নীতি ও কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। কেউ তাকে আধুনিকায়নের পথিকৃৎ হিসেবে দেখেন, আবার কেউ তাকে ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন ও তুর্কি স্বকীয়তা ধ্বংসকারী স্বৈরশাসক হিসেবে বিবেচনা করেন।

আতাতুর্কের পরিচয় ও তার আদর্শ

কামাল আতাতুর্কের জন্ম এক সামরিক পরিবারে হলেও, তার পরিচয় নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিছু সূত্র তাকে স্পেন থেকে বিতাড়িত ইহুদি বংশোদ্ভূত সাবাতাই সম্প্রদায়ের বলে দাবি করে। তার মা ছিলেন আলবেনীয় বংশোদ্ভূত। জাতিগতভাবে তিনি পুরোপুরি তুর্কি নন, তথাপি তিনি নিজেকে তুর্কি জাতির পিতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

তিনি ছিলেন একজন ফ্রী-মেসন এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি, যিনি অটোমান খিলাফত ধ্বংসে বড় ভূমিকা রাখেন। ইসলামী চিন্তাবিদ নাসিরুদ্দীন আলবানী তাকে ইসলাম ত্যাগকারী বা মুরতাদ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

তুরস্কে ইসলামের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি

কামাল আতাতুর্কের শাসনামলে তুরস্কের হাজার বছরের ইসলামী শিক্ষা, সংস্কৃতি ও তাহযীব-তামাদ্দুন ধ্বংস করা হয়। তার অপশাসনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল:

মসজিদ ও মাদ্রাসা বন্ধ ও ধ্বংস করা।

কুরআন পাঠ, শিক্ষা ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ করা।

আরবি লিপির পরিবর্তে ল্যাটিন লিপি প্রবর্তন।

ইসলামি পোশাক, বিশেষ করে হিজাব ও দাড়ি নিষিদ্ধ করা।

হাজার হাজার আলেমকে হত্যা, গুম ও কারাবন্দি করা।

আজানকে তুর্কি ভাষায় পরিবর্তন করা এবং ইসলামি রীতিনীতি কঠোরভাবে দমন করা।

তার এই পদক্ষেপের ফলে তুরস্কের হাজার বছরের ইসলামী ঐতিহ্য বিপর্যস্ত হয় এবং বহু ধর্মপ্রাণ মুসলিম দেশত্যাগে বাধ্য হন। কারাগারগুলো দ্বীনদার মুসলিমদের জন্য এক ভয়াবহ নির্যাতনকেন্দ্রে পরিণত হয়।

এমনকি, মুস্তফা কামাল আতাতুর্কের সভাপতিত্বে তুর্কি সরকার ১৯৩৪ সালে তুরষ্কের বিখ্যাত হাজিয়া সোফিয়া বা আয়া সোফিয়া মসজিদকে ইতিহাস সংরক্ষণের জন্য জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেয়, যেটি ১৪৫৩ থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্তু মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছিল। কিন্তু কামাল পাশার হাতে অপহৃত আয়া সোফিয়া মসজিদকে অবশেষে পুনরুদ্ধার করেন তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান। ২০২০ সালে তিনি এটিকে আবারও মসজিদ হিসেবে ঘোষণা করেন।

আধুনিকায়নের নামে ধর্মহীনতা প্রতিষ্ঠা

কামাল আতাতুর্ক নিজেকে আধুনিকতার প্রবক্তা হিসেবে তুলে ধরলেও তার নীতি ছিল পশ্চিমা সভ্যতা অনুকরণের মাধ্যমে তুরস্ককে সম্পূর্ণরূপে ইসলাম থেকে বিচ্ছিন্ন করা। তার শাসনামলে:

শরীয়াহ আইন বাতিল করে পাশ্চাত্য আইন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়।

ইসলামী পোশাকের পরিবর্তে পাশ্চাত্য পোশাক বাধ্যতামূলক করা হয়।

ধর্মীয় শিক্ষাকে নিষিদ্ধ করে ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়।

তুর্কি ভাষায় আজান বাধ্যতামূলক করা হয়, যা পরবর্তীতে ইসলামী আন্দোলনের মাধ্যমে বাতিল করা হয়।

আতাতুর্কের পরিণতি ও ইসলামের পুনরুত্থান

ইতিহাস সাক্ষী, আতাতুর্ক চেয়েছিলেন ইসলামের চিহ্ন তুরস্ক থেকে মুছে ফেলতে, কিন্তু তিনি সফল হতে পারেননি। সময়ের পরিক্রমায় তুরস্কে ইসলামের পুনর্জাগরণ ঘটে। আজ তুরস্কে পুনরায় মসজিদগুলোতে আজান ধ্বনিত হচ্ছে, কুরআনের শিক্ষা চালু হয়েছে এবং ইসলামী চেতনা নতুন করে প্রসারিত হচ্ছে।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন:

"তারা (কাফের-মুশরিকরা) চায় তাদের মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে, কিন্তু আল্লাহ তাঁর আলোকে সম্পূর্ণ করবেন, যদিও তারা তা অপছন্দ করে।" (সূরা আস-সাফ)

এককথায় বলতে গেলে, আধুনিক তুরস্কের জনক বলে পরিচিত, কামাল পাশা গোটা বিস্তীর্ন তুর্কী ভূখন্ডকে একটি বৃহত কারাগারে পরিনত করেছিলেন। জুলূম, অত্যাচার, অবিচার আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের এমন ঘোর কৃষ্ণ অমা রাত তুরস্কের আকাশ আগে কল্পনা করেনি! আর গোয়েবলসের এমন নজিরবিহীন তান্ডব তুরস্কের মাটি ইতিপূর্বে কখনও প্রত্যক্ষ করেনি!

কামাল পাশা! হায়রে কামাল পাশা!! এই কামাল পাশা সেই জালিম অত্যাচারী ব্যক্তিটির নাম, যিনি তুরস্কের মাটি থেকে মহান আল্লাহর নামের উচ্চকিত আওয়াজকে চির দিনের জন্য মিটিয়ে দিতে চেয়েছিলেন! আযানের মহিমাময় শব্দগুলোও তিনি সহ্য করেননি! এশিয়া ইউরোপ আর আফ্রিকা মহাদেশের মিলনস্থলে গর্ব আর গৌরবের মিনার মহান তুরস্ক সাম্রাজ্যের আকাশ বাতাস মুখরিত করে দিত যে আজান, তিনি তা বন্ধ করে দেন! একদা ইথারে ভেসে ভেসে যে আজানের মধুর সুরলহরী ছড়িয়ে পরতো তুরস্কের গোটা প্রান্তরে প্রান্তরে, তিনি তা স্তব্দ করে দেন। ইতিহাস বড়ই নির্মম, তুরষ্কে পাশা আজ বেঁচে নেই। কিন্তু, আবার আজানের সুমধুর ধ্বনি ফিরে এসেছে তুরস্কের আকাশে বাতাসে। পাষন্ড পাশার পাশা খেলার অবসান হয়েছে। আবার তুরস্কে ফিরে এসেছে ঐশি বানী আল কুরআন। কুরআনের তা'লীম তাআ'ল্লুমে মুখরিত আজ তুরষ্কের নগর প্রান্তর। সেখানে তৈরি হচ্ছে হাজারও হাফেজে কুরআন। তৈরি হচ্ছে কুরআনের হাজারো লাখো খাদেম। আলহামদুলিল্লাহ।

উপসংহার

আজ মুসলিম উম্মাহ বিশ্বজুড়ে অপমানিত, নিপীড়িত ও লাঞ্ছিত। এর মূল কারণ আমাদের দ্বীন থেকে দূরে সরে যাওয়া। আমরা যদি কুরআন ও সুন্নাহর দিকে ফিরে আসি, তাহলে আমাদের বিজয় নিশ্চিত। ইতিহাস সাক্ষী, যে জাতি কুরআনের আদর্শ গ্রহণ করেছে, তারা বিশ্ব নেতৃত্বে এসেছে। আর যে জাতি তা ছেড়ে দিয়েছে, তারা পতনের শিকার হয়েছে।

আল্লাহ আমাদের সঠিক পথের দিশা দিন এবং ইসলামের আলোতে আমাদের জীবন পরিচালিত করার তৌফিক দিন। আমীন।

তথ্যসূত্র

১. Mango, Andrew. Atatürk: The Biography of the Founder of Modern Turkey. Overlook Press, 1999.
২. Zürcher, Erik J. Turkey: A Modern History. I.B. Tauris, 2004.
৩. Kinzer, Stephen. Crescent and Star: Turkey Between Two Worlds. Farrar, Straus and Giroux, 2001.
৪. Ahmad, Feroz. The Making of Modern Turkey. Routledge, 1993.

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৭

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: দারুণ সমালোচনা।

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৫

নতুন নকিব বলেছেন:



দুঃখিত! তাকে নিয়ে লিখলে অনেক লেখা সম্ভব। তার অপকীর্তির ফিরিস্তি সুদীর্ঘ। সবকিছু লেখার সুযোগ নেই।

আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

২| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭

রাসেল বলেছেন: ভারতীয় দালালকে দেখছি না যে?

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১:৫৮

নতুন নকিব বলেছেন:



কাকে মিন করছেন ঠিক বুঝতে পারিনি। কারণ, ভাদা তো এখানে অনেকসংখ্যকই আছেন।

ধন্যবাদ।

৩| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১:১৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: তিনবার তুরস্কের বিভিন্ন অংশে বেড়াতে গিয়ে এর বহু নমুনা আমি দেখেছি।

অ. ট.ঃ সারাদিন ব্লগে লগড-ইন অবস্থায় থাকেন, কিন্তু মন্তব্যের উত্তর দেন না। বিষয়টা অগ্রহনযোগ্য। :)

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:৩৬

নতুন নকিব বলেছেন:



তিনবার তুরস্কের বিভিন্ন অংশে বেড়াতে গিয়ে এর বহু নমুনা আমি দেখেছি।

-অভিজ্ঞতার কিছু যদি আমাদের সাথে এই ব্লগে শেয়ার করেন তাহলে আমাদেরও জানার সুযোগ হবে।

অ. ট.ঃ সারাদিন ব্লগে লগড-ইন অবস্থায় থাকেন, কিন্তু মন্তব্যের উত্তর দেন না। বিষয়টা অগ্রহনযোগ্য। :)

-আপনি কষ্ট পেয়েছেন বলে আন্তরিকভাবে দুঃখিত! তবে আমার বিশ্বাস, আপনি এটা নিশ্চয়ই জানেন যে, লগড-ইন থাকার অর্থ এই নয় যে, সারাক্ষণ ল্যাপটপ/ পিসির কাছে থাকার সুযোগ থাকে। কিংবা কমেন্ট করা/ কমেন্ট এর উত্তর প্রদানের মত অবস্থা সবসময় থাকে। এই যেমন ধরুন, আপনি যখন আপনার এই কমেন্টটি করছিলেন তখন আমি নামাজে ছিলাম। মূলতঃ বিভিন্ন কাজ কর্মের ফাঁকেই ব্লগে আসতে হয়।

শুভকামনাসহ অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৪| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:১৩

রাসেল বলেছেন: গাজী সাহেব

১৩ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



ও আচ্ছা! তিনি কি ব্লগে এখন একটিভ আছেন?

৫| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনি যদি লগ-ইন অবস্থায় থাকেন, আর দীর্ঘসময় উত্তর না দেন, তাহলে মন্তব্যকারী ভিন্ন বার্তা পায়। কাজেই ভালো হয়, দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত থাকলে লগ-আউট করা। আপনার বেশীরভাগ পোষ্টে মন্তব্যের ক্ষেত্রে মন্তব্য আর উত্তরের সময়ের পার্থক্য দেখলে আপনি নিজেই বিব্রত বোধ করবেন। এতো কথা যেহেতু বললাম, আপনাকে একটা উদাহরন দেয়া যাক। একেবারে মন্তব্য ইগনোর করার উদাহরন...........!!!!


এই বিষয়েও আপনার নিশ্চয়ই ব্যাখ্যা আছে, তবে মন্তব্যকারী নিশ্চিতভাবেই এটাকে অপমানজনক মনে করবে। কেউ কষ্ট করে মন্তব্য করলে উত্তর না দেয়াটা অসৌজন্যতা। আমার মনে আছে, এর পরে দীর্ঘদিন আমি আপনার পোষ্টে কোন মন্তব্যই করি নাই। এই ধরনের কাম যে করে, তার পোষ্টে আবার আমার যাওয়ার নজির খুব কমই আছে। আপনাকে পছন্দ করি বলেই আমাকে আবার আপনি দেখতে পেয়েছেন!!!! B-)

১৪ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:২০

নতুন নকিব বলেছেন:



কেউ কষ্ট করে তার মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার পোস্টে মন্তব্য করলে সেই মন্তব্যের উত্তর দেয়াকে আমি অবশ্যই সৌজন্যতা মনে করি। আমার ব্লগ জীবন (সামু) যে খুব মসৃন ছিল না আপনি নিশ্চয়ই তা অবগত। একটা সময় কাদিয়ানি ফিতনা মোকাবেলা করতে গিয়ে ভয়াবহ ন্যুড ফ্লাডিং (Nude Flooding)সহ দফায় দফায় প্রচুর আক্রমনের শিকার হতে হয়েছে। তা ছাড়াও মতাদর্শগত কারণেও বিভিন্ন সময় অনেকের চক্ষুশূল হয়েছি। যে কারণে ব্লগ ছেড়ে দিব দিব করেও আবার অনেকবার ফিরেও এসেছি।

মূলতঃ উপরে উল্লেখিত কারণগুলোসহ অন্যান্য আরও কিছু কারণে একটা সময় আমার সকল পোস্ট কমেন্ট মডারেশনের আওতায় নিতেও বাধ্য হয়েছিলাম। যা হোক, নানাবিধ কারণে আমার কোনো কোনো পোস্টে আপনার মত শ্রদ্ধাভাজন ব্লগারদের কমেন্টের উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়নি, সেজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। তবে এই ব্যাপারটি ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে ইগনোর করা বা গুরুত্বহীন মনে করে কিংবা অপমান করার উদ্দেশ্যে করা হয়নি। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে ভিন্ন কথা। বিশেষ কারও ক্ষেত্রে যদি এটা হয়েও থাকে হতে পারে, তবে আপনার ক্ষেত্রে কখনওই নয়। আপনি আমার কাছে সবসময়ই সম্মানের পাত্র।

আপনার এই মন্তব্যটির জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।

৬| ১৩ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:০২

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: নতুন নকিব ভাই, আপনার দেওয়া ইসলামী পোষ্ট, মন্তব্য অনেক জ্ঞান ও তথ্যসমৃদ্ধ। আপনার সাথে দ্বিমত করার খুবই কম সুযোগ থাকে। ইসলামী সম্পর্কে আপনার জ্ঞান পান্ডিত্যের পর্যায়ে পড়ে, এটলিষ্ট আপনার লেখা যুক্তি খন্ডন, বিশ্লেষণ পড়ে আমার কাছে তাই মনে হয়।

আপনার পোষ্ট প্রসংগে বলি- কামাল আতাতুর্ক হয়তো ইসলাম বিদ্বেষী কিংবা পশ্চিমাদের এজেন্ট ছিলেন। কিন্তু আজকের বিশ্ব প্রেক্ষাপট শিক্ষা, প্রযুক্তি, সামরিকভাবে তুরস্কের শক্তিশালী অবস্থানে কিছুটা হলেও তার এই সংস্কারের অবদান আছে। কই মধ্যপ্রাচ্যের কোন মুসলিম দেশতো তেল নির্ভর অর্থনীতি থেকে বের বিজ্ঞান, গবেষণায়, শিক্ষায় তথ্যসমৃদ্ধ হয়ে বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে নী? আরব আমিরাতের দুবাই, কাতার, মালয়েশিয়া, মুসলিম দেশগুলোর বিশ্বে যে পরিচিত পেয়েছে, তারা কিন্তু কিছুটা ইসলামের সাথে কম্প্রোমাইজ করেই হয়েছে। আবার ভাইবেন না আমি ইসলামের রিফর্ম চাই? না রে ভাই!!!! ইসলাম তার নিজস্ব যায়গায় থাকবে কেয়ামত পর্যন্ত!

বুঝতে হবে বিশ্ব কারা চালাচ্ছে? তারা কি চায়? শিক্ষা, প্রযুক্তি, টেকনোলজি কাদের হাতে? যেসব লিডার এইসব বুঝতে পেরে, ধর্মকে পাশে রেখে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার মুসলিম সেই দেশগুলো এখন মর্যাদা নিয়ে নিজেকে বিশ্ব তুলে ধরেছে।

১৪ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:৪৪

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার হৃদ্যতাপূর্ণ অসাধারণ মন্তব্যটির জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে, যা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা প্রয়োজন। আমি চেষ্টা করবো আপনার প্রশ্ন ও বক্তব্যের আলোকে একটি গঠনমূলক উত্তর দিতে।

১. ইসলাম ও আধুনিকতা:

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যা শুধু আধ্যাত্মিকতা বা ইবাদতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং সামাজিক উন্নয়নের প্রতিও গুরুত্বারোপ করে। ইসলামের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মুসলিম সভ্যতা এক সময় জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়েছে। বাগদাদ, কর্ডোবা, দামেস্ক এবং কায়রোর মতো শহরগুলো ছিল জ্ঞান-বিজ্ঞানের কেন্দ্র। মুসলিম বিজ্ঞানী, দার্শনিক এবং চিকিৎসকরা যেমন ইবনে সিনা, আল-খাওয়ারিজমি, আল-রাজি, ইবনে রুশদ প্রমুখ তাদের অবদান রাখেন বিজ্ঞান, গণিত, চিকিৎসা এবং দর্শনের ক্ষেত্রে। ইসলাম কখনোই জ্ঞানার্জন বা প্রগতিকে বাধা দেয়নি; বরং কুরআন এবং হাদীসে জ্ঞানার্জনের প্রতি ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

কুরআনে বলা হয়েছে:

"বলো, যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান হতে পারে?" -সূরা যুমার, ৩৯:৯

এ আয়াতটি জ্ঞানার্জনের গুরুত্বকে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরে।

২. ইসলাম ও প্রযুক্তি:

ইসলাম প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের উন্নয়নের বিরোধী নয়। বরং ইসলাম মানুষকে প্রকৃতির নিদর্শনগুলো অধ্যয়ন করতে এবং সেগুলো থেকে উপকারী জ্ঞান আহরণ করতে উৎসাহিত করে। কুরআনে বলা হয়েছে:

"নিশ্চয়ই আসমান ও জমিনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের পরিবর্তনে, নৌকায় যা মানুষের উপকারে চলে, আল্লাহ আকাশ থেকে যে পানি বর্ষণ করেন এবং তা দ্বারা মৃত জমিনকে সজীব করেন, তাতে এবং প্রাণীজগতকে ছড়িয়ে দেন, বায়ুর পরিবর্তনে এবং মেঘমালায় যা আকাশ ও জমিনের মধ্যে আধিপত্য করে, তাতে নিদর্শন রয়েছে বুদ্ধিমান লোকদের জন্য।" -সূরা বাকারা, ২:১৬৪

এই আয়াতগুলো প্রকৃতি ও বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করতে উৎসাহিত করে। ইসলামের দৃষ্টিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি হলো আল্লাহর সৃষ্টিকে বুঝার এবং মানবকল্যাণে ব্যবহার করার মাধ্যম।

৩. ইসলাম ও অগ্রসরমানতা:

ইসলাম অগ্রসরমানতা এবং উন্নয়নের বিরোধী নয়। বরং ইসলাম মানুষকে সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন এবং উন্নয়নের প্রতি আহ্বান জানায়। ইসলামী সভ্যতার স্বর্ণযুগে মুসলিমরা বিজ্ঞান, চিকিৎসা, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা এবং স্থাপত্যে অসামান্য অবদান রেখেছিল। ইসলামের মূলনীতিগুলো যদি সঠিকভাবে অনুসরণ করা হয়, তবে তা আধুনিকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে। ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করলে তা অবশ্যই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধন করতে পারে।

৪. তুরস্ক ও কামাল আতাতুর্ক প্রসঙ্গ:

কামাল আতাতুর্কের সংস্কারগুলো নিয়ে মুসলিম বিশ্বে বিভিন্ন মতপার্থক্য রয়েছে। তিনি তুরস্ককে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য অনেক সংস্কার করেছিলেন, তবে তার কিছু পদক্ষেপ ইসলামী মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক ছিল। তুরস্কের আধুনিকায়নে তার অবদান থাকলেও, ইসলামী মূল্যবোধকে পাশ কাটিয়ে শুধুমাত্র পশ্চিমা মডেল অনুসরণ করা কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। ইসলামী মূল্যবোধের সাথে আধুনিকতার সমন্বয় সম্ভব, যেমনটি মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতারের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই দেশগুলো ইসলামী মূল্যবোধকে সংরক্ষণ করে আধুনিকতা এবং উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

৫. মুসলিম বিশ্বের বর্তমান অবস্থা:

মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশই প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষ করে তেলের উপর নির্ভরশীল। তবে সম্পদ থাকা সত্ত্বেও বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় পিছিয়ে থাকার কারণ হলো জ্ঞানার্জন এবং গবেষণায় যথেষ্ট বিনিয়োগের অভাব। ইসলাম জ্ঞানার্জনের প্রতি যে গুরুত্ব দিয়েছে, তা যদি মুসলিম দেশগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করে, তবে তারা অবশ্যই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধন করতে পারে।

৬. ইসলামের স্থায়ীত্ব:

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যা কেয়ামত পর্যন্ত অপরিবর্তনীয়। ইসলামের মূলনীতিগুলো সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় না, তবে ইসলামী বিধানগুলোকে যুগের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োগ করার জন্য ইজতিহাদ (জ্ঞানভিত্তিক গবেষণা) এর প্রয়োজন রয়েছে। ইসলামী স্কলারদের দায়িত্ব হলো যুগের চাহিদা অনুযায়ী ইসলামী বিধানগুলোর ব্যাখ্যা প্রদান করা, যাতে ইসলাম আধুনিক বিশ্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।

মূলকথা, ইসলাম আধুনিকতা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং শিক্ষার প্রতি সম্পূর্ণভাবে সমর্থনশীল। ইসলামের ইতিহাস প্রমাণ করে যে, মুসলিমরা যখন ইসলামী মূল্যবোধকে ধারণ করে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা করেছে, তখন তারা বিশ্বসভ্যতাকে নেতৃত্ব দিয়েছে। মুসলিম দেশগুলোর উচিত ইসলামী মূল্যবোধকে সংরক্ষণ করে আধুনিকতা এবং উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়া। ইসলাম কখনোই অগ্রগতির বিরোধী নয়; বরং এটি মানুষকে সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন এবং উন্নয়নের প্রতি আহ্বান জানায়। কিন্তু কামাল আতাতুর্ক ইসলামী আদর্শ, শিক্ষা, তাহযিব তামাদ্দুন সবকিছুকে একেবারে মুছে দিয়ে তুরস্কের আধুনিকায়ন করতে চেয়েছিলেন যা ছিল তার ভুল সিদ্ধান্ত। তিনি যে পথে হাটতে চেয়েছিলেন, তুর্কীরা পরবর্তীতে সে পথে হাটেনি। তিনি কুরআন পাঠ নিষিদ্ধ করেছিলেন, কুরআন সংরক্ষন করাকেও নিষিদ্ধ করেছিলেন। তিনি আযান দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তিনি দাড়ি রাখাকে আইন করে নিষিদ্ধ করেছিলেন। এসব ছিল তার অতি বাড়াবাড়ি। আধুনিকতাকে ধারণ করার ক্ষেত্রে এগুলোর কোনো ভূমিকা থাকার কথা নয়। কিন্তু তিনি এসব ভুল কাজই করেছিলেন। আর এসব অপকর্মের মাধ্যমে জনগণের বিতৃষ্ণা ছাড়া তিনি আর কিছুই অর্জন করতে পারেননি। শুধুমাত্র কুরআন রাখার অপরাধে তিনি অনেক আলেমকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়েছেন। চিন্তা করা যায়! কতটা ভয়াবহ বর্বরতায় ডুবেছিল দেশটি!

আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের সঠিক বুঝ দান করুন এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের মাধ্যমে মানবতার সেবা করার তাওফিক দিন। আমীন।

৭| ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১২:০০

রানার ব্লগ বলেছেন: :D

১৪ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:৪৫

নতুন নকিব বলেছেন:



:)

৮| ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:৩২

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম।

১৪ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:৪৮

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনাকেও আন্তরিক ধন্যবাদ। কিছু জ্ঞাত হওয়ার ক্ষেত্রে এই সামান্য পোস্ট যে আপনার কাজে লেগেছে এটা খুবই আনন্দের বিষয়। আপনার জ্ঞান আল্লাহ তাআ'লা আরও বৃদ্ধি করে দিন।

বস্তুতঃ নিঃসন্দেহে, শিক্ষা, প্রযুক্তি, এবং সামরিক শক্তিতে তুরস্কের উন্নতিতে কামাল আতাতুর্কের কিছু সংস্কার ভূমিকা রেখেছে। তবে, এটি করতে গিয়ে তিনি ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন ও ঐতিহ্যকে কঠোরভাবে দমন করেছেন, যা দীর্ঘমেয়াদে তুর্কি সমাজে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে।

যেসব মুসলিম দেশ ধর্মকে সম্পূর্ণ বাদ না দিয়ে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মনোযোগ দিয়েছে, তারাই আজ বিশ্বমঞ্চে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে। উদাহরণস্বরূপ, মালয়েশিয়া ও কাতার ধর্মীয় পরিচয় বজায় রেখেও উন্নতির পথে এগিয়েছে। ইসলাম তার নিজস্ব জায়গায় থাকবে, তবে বাস্তবতা ও বৈশ্বিক শক্তির গতিপথ বুঝে আমাদের এগোতে হবে।

সুতরাং, চ্যালেঞ্জ হলো—ধর্মীয় মূল্যবোধ অক্ষুণ্ণ রেখে শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনীতিতে শক্তিশালী হওয়া। ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা এটিই নির্দেশ করে, যা আমাদের ইতিহাসের স্বর্ণযুগেও প্রতিফলিত হয়েছে।

৯| ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: কি লিখলেন? কেন লিখলেন?

১৪ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:৪৯

নতুন নকিব বলেছেন:



বুঝতে হলে মাথায় কিছু থাকতে হয়। ও আচ্ছা, আপনি কি ডাক্তার দেখিয়েছিলেন?

১০| ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কামাল আতাতুরক একজন মুনাফেক। ইসলামের ক্ষতি করে সে পার্থিব উন্নতি ঘটিয়েছে। এতে ইসলামের ক্ষতি হয়েছে।

১৪ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:০৯

নতুন নকিব বলেছেন:



সত্য বলেছেন। ধন্যবাদ। তবে তার কারণে ইসলামের সাময়িক কিছু ক্ষতি হলেও ইসলাম ধর্মের সার্বজনিন মহাকালের মহাযাত্রায় তা তেমন কিছুই না। তুরস্কে আজ ইসলাম ধর্মেরই জয়জয়কার। কামাল আততায়ীরা উপেক্ষিত। নির্বাসিত।

১১| ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৫

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনার সাথে ব্লগে কি কি হয়েছে তার সবটাই আমি জানি। দেখেন, কাদিয়ানদের বিষয়ে আমিও ব্লগে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছি। একটা পোষ্টও দিয়েছিলাম.........কাদিয়ানীরা কি মুসলমান? একটা পোষ্ট মর্টেম!। আমাদের ধর্ম নিয়েও আমার স্ট্যান্ড খুবই রিজিড। কই, আমার উপরে তো আক্রমন হয় নাই, অথবা দুর্মুখেরা আক্রমন করার সাহস দেখায় নাই!!! আপনি বেশ নরম-সরম মানুষ। কার সাথে কিভাবে কি আচরণ করতে হবে, কাকে ভালো কথা আর কাকে লাঠিপেটা করতে হবে, সেই বিষয়ে আপনার অবস্থান যথেষ্ট না, অথবা নির্দিষ্ট করে বললে স্পেসিফিক না। সেইজন্যই কিছু ব্লগার আপনাকে পেয়ে বসেছিল। অবস্থার কিছুটা উন্নতি এখন লক্ষ্য করছি, যদিও তা আমার দৃষ্টিতে যথেষ্ট না। এখনও আপনার পোষ্টে কিছু উল্লুক-জাতীয় প্রাণীর আগমন ঘটে, আর আপনি তাদের হাদিসের বাণী শোনান!!! হাউ ফানি!!!! :P

আমি যেই স্ক্রীণশট দিয়েছি, তার ঠিক ৫দিন পরেই আপনি আরেকটা পোষ্ট দিয়েছিলেন। নতুন পোষ্ট দিলেন, কিন্তু আগের পোষ্টের বেশকিছু মন্তব্য এড়িয়ে গেলেন। বিষয়টা কেমন না? আপনি যদি মানসিকভাবে বিপর্যস্তই হবেন, তাহলে নতুন পোষ্ট তো দেয়ার ইচ্ছা থাকার কথা না। সব সময়ে নতুন পোষ্ট দিলে আগের পোষ্টের দিকেও নজর রাখার অনুরোধ রইলো।

আচ্ছা, বাদ দেন এইসব। কোন পোষ্টে প্রসঙ্গ বহির্ভূত কথা আমি শুধু যাদের পছন্দ করি, তাদের সাথেই বলি। সেইজন্যই আপনাকে কিছু কথা বললাম, আক্রমন করা আমার উদ্দেশ্য না। আপনাকে সম্ভবতঃ কিছুটা কড়া ভাষায় সমালোচনা করে ফেলেছি। মনে কষ্ট নিবেন না। :)

১৭ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:৫০

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার মন্তব্য ও পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ। গঠনমূলক সমালোচনাকে আমি সবসময় ইতিবাচকভাবেই গ্রহণ করি। ব্লগের পরিবেশ ও আলোচনার ধরন ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হয়—কেউ কঠোর ভাষায় জবাব দেন, কেউ যুক্তির মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করেন। আমি সবসময় যুক্তি ও সংযমের পথে থাকার চেষ্টা করেছি, তবে আপনার পর্যবেক্ষণ সম্পূর্ণ অমূলক বলছি না। কারণ, আমি যে কিছুটা বোকা, তা সঠিকভাবে আপনিই উপলব্ধি করতে পেরেছেন এবং আমাকে সতর্কও করলেন। ধন্যবাদ। :D

আপনার দেওয়া স্ক্রিনশট ও পরবর্তী পোস্টের প্রসঙ্গে বললে—সব সময় সব মন্তব্যের জবাব দেওয়া সম্ভব হয় না, বিশেষত যখন আলোচনা প্রসঙ্গের বাইরে চলে যায়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে এমনও হয় যে, একটি মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে আমাকে সময় নিয়ে বিষয়টি সম্মন্ধে স্টাডি করতে হয়। এটা ধর্মীয় গভীর জ্ঞানের বিষয়াদিতে কখনও কখনও করতে হয়। তবে আপনার পরামর্শ মাথায় রাখছি, যাতে ভবিষ্যতে আগের আলোচনাগুলোতেও যথাযথ দৃষ্টি দেওয়া যায়।

আমার ক্ষেত্রে আপনার দৃষ্টিকোণ থেকে মনে হতে পারে যে, আমি ব্লগিং কম বুঝি বা নরম-সরম স্বভাবের হওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এটি মূলত একটি পরিকল্পিত ডিজিটাল হামলার অংশ, যা নির্দিষ্ট কিছু ব্লগারকে টার্গেট করে করা হয়—এতে ব্যক্তির ভাষা বা মনোভাব একমাত্র কারণ নয়। বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন ব্লগার এই ধরনের স্প্যামিং, ট্রলিং বা ফ্লাডিংয়ের শিকার হয়েছেন, যার পেছনে উদ্দেশ্য ছিল ব্লগের পরিবেশ নষ্ট করা এবং ব্লগারদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করা।

এ ধরনের আক্রমণের কারণ অনেক হতে পারে—যেমন কোনো ব্লগারের মতাদর্শ কারও বিপরীত হওয়া, কারো জনপ্রিয়তা হিংসার কারণ হয়ে যাওয়া, অথবা নিছক মজা কিংবা বিশৃঙ্খলা তৈরির মানসিকতা। ফলে, এটি কেবল ব্যক্তিগত কোনো দুর্বলতার কারণে হয়েছে বলা ঠিক হবে না।

এখনকার বাস্তবতায়, যেহেতু এসব ডিজিটাল স্প্যামিং ও ট্রলিং নতুন কিছু নয়, তাই ব্লগারদের আরও সচেতন থাকতে হয় এবং যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মোকাবিলা করার মানসিক প্রস্তুতিও থাকা দরকার। ব্যক্তিগতভাবে আমি সবসময় যুক্তির মাধ্যমে আলোচনার চেষ্টা করেছি, তবে কিছু ক্ষেত্রে হয়তো কঠোর অবস্থান নেওয়াটাও দরকার ছিল। আপনার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ, এগুলো অবশ্যই ভাবনার বিষয়।

আলোচনা হোক যুক্তির ভিত্তিতে, আর মতপার্থক্য থাকুক সৌজন্যের গণ্ডির মধ্যেই। শুভকামনা রইল! :)

১২| ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:১৬

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: তুরস্কে কামাল পাশাকে এখনও জাতির জনক হিসেবে সর্বোচ্চ সম্মান করা হয়। এমনকি তথাকথিত ধার্মিক এরদোয়ানও কামাল আতার্তুকের নাম শুনলে দাঁড়িয়ে যান। বাংলাদেশেও কামালকে নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে তুরস্ক। ব্যাখ্যা কী? তারা কি বাংলাদেশের মানুষের চেয়ে কম ধার্মিক?

১৭ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:০০

নতুন নকিব বলেছেন:



আমি তুর্কিদের সাথে সরাসরি কাজ করেছি। ওদের নতুন প্রজন্মের অনেকেই কামাল পাশার মত মতলববাজ পশ্চিমা দালালকে দালাল ছাড়া অন্য কিছু মনে করেন না। অনেকটা আমাদের দেশের শেখ মুজিবের মত। আওয়ামী লীগ অন্যায় ও জবরদস্তিমূলকভাবে চাপিয়ে দিয়ে তাকে জাতির পিতা বানানোর চেষ্টা করেছিল। এখন জাতির পিতা কোথায় যাচ্ছে, আপনি নিশ্চয়ই দেখতে পাচ্ছেন। অন্যান্য প্রতিষ্ঠন থেকে এমনকি, টাকার নোট থেকেও মুজিবের ছবি সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

তবে এটা ঠিক, বিতর্কিত হলেও কামাল আতাতুর্ক তুরস্কের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, এবং সে দেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও পরিচয়ের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। তিনি বিতর্কিত হয়েছেন মূলতঃ ধর্মকে মুছে দেওয়ার প্রয়াস গ্রহণ করার কারণে। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি বিতর্কিত হলেও, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে তার কিছু সংস্কার আজও তুরস্কের রাষ্ট্রব্যবস্থায় প্রভাব রাখে। তাই, সরকারি ও কূটনৈতিক মহলে তাকে সম্মান জানানো একটি আনুষ্ঠানিকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এরদোয়ান ইসলামী ভাবধারার হলেও তিনি একজন কৌশলী রাজনীতিবিদ। রাষ্ট্রীয় ঐক্য ও জাতীয়তাবাদের স্বার্থে তিনি কামাল আতাতুর্ককে সম্মান দেখান, যদিও তার শাসনামলে আতাতুর্কের অনেক ধর্মবিরোধী নীতির বিপরীত সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটও কিছুটা একই রকম। রাজনৈতিক বাস্তবতা, ইতিহাসের ব্যাখ্যা ও ক্ষমতার হিসাব-নিকাশের কারণে অনেক কিছুই রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জনগণের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের মাধ্যমে ভিন্নমাত্রা পায়। ইতিহাসের সত্য কখনো চাপিয়ে দেওয়া যায় না, সময়ই শেষ পর্যন্ত তার প্রকৃত অবস্থান নির্ধারণ করে দেয়।

ধন্যবাদ।

১৩| ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:১৭

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: কামাল পাশা না থাকলে তুরস্ক দেশটাই থাকত না।

১৭ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:০৫

নতুন নকিব বলেছেন:



শেখ মুজিব না হলে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটাই থাকতো না, কিংবা, কামাল পাশা না হলে তুরস্ক থাকত না——এগুলো আবেগের কথা। আবেগ দিয়ে ইতিহাস নির্মিত হয় না। এসব কথা অতিরঞ্জিত ও একপাক্ষিক। ইতিহাস কখনো ব্যক্তির ইচ্ছায় থেমে থাকে না, বরং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে পরিবর্তিত হয়।

ওসমানীয় সাম্রাজ্যের পতন বিশ্ব রাজনীতির ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশ ছিল। কামাল আতাতুর্ক না থাকলেও, তুর্কিরা কোনো না কোনোভাবে তাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করত এবং নতুন নেতৃত্বের অধীনে একটি রাষ্ট্র গঠন করত। ইতিহাস বলে, সাম্রাজ্যের পতনের পর বিভিন্ন উপনিবেশ ও অঞ্চল নিজেদের রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেছে, এবং তুরস্কও এর ব্যতিক্রম হতো না।

তবে এটাও সত্য যে, কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্ব ও সামরিক দক্ষতা তুর্কি প্রজাতন্ত্রের জন্মকে ত্বরান্বিত করেছে এবং একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু তার ধর্মবিরোধী ও স্বৈরাচারী নীতিগুলো এখনও তুরস্কের জনগণের দৃষ্টিতে প্রশ্নবিদ্ধ। তাই, ইতিহাস বিশ্লেষণে আবেগ নয়, বাস্তবতা ও তথ্য-প্রমাণকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

ধন্যবাদ।

১৪| ১৭ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:২৮

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: কামাল আতাতুর্ক না থাকলেও, তুর্কিরা কোনো না কোনোভাবে তাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করত এবং নতুন নেতৃত্বের অধীনে একটি রাষ্ট্র গঠন করত। কীভাবে করত? ফেরেশতারা এসে করে দিত? শেখ মুজিবে জ্বলুনি জামায়াতিদের। কারণ তাঁর কারণে তাদের পেয়ারা পাকিস্তান ভেঙেছে, যদিও ভুট্টো-ইয়াহিয়াদের দায় বেশি ছিল। শেখ মুজিবকে জাতির পিতা মানতে রাজাকারের শাবকদের সমস্যা হবেই। তাদের জাতির পিতা তো জিন্নাহ। শেখ মুজিব সুন্নি এবং প্র্যাকটিসিং মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও তাদের প্রিয় হতে পারেনি, নিজেরা সুন্নি হলেও প্রিয় শুয়োরখেকো জিন্নাহ, যিনি আবার শিয়া ছিলেন। কত কিউট ব্যাপার।

১৭ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৩৬

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার মন্তব্যের উত্তর দিতে গিয়ে প্রথমেই বলি—আক্রমণাত্মক ভাষা দিয়ে ইতিহাস বদলে দেওয়া যায় না। ব্যক্তিগত বিদ্বেষ ও গালিগালাজ ইতিহাসের বিশ্লেষণের জায়গা হতে পারে না।

প্রথমত, কামাল আতাতুর্ক না থাকলে তুরস্কের অস্তিত্বই থাকত না—এটি একটি অতিসরলীকৃত ধারণা। ইতিহাসে কোনো ব্যক্তি অপরিহার্য নয়, বরং পরিস্থিতির চাপে বিকল্প নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। সালাহ উদ্দিন আইউবি না থাকলে কি জেরুজালেম আর মুসলিমদের হাতে আসত না? কিংবা মাহাথির মোহাম্মদ না থাকলে মালয়েশিয়া কি উন্নত হতো না? ইতিহাসের গতিপথ নির্ধারণ করে জনগণের সংগ্রাম ও কৌশলী নেতৃত্ব, কোনো একক ব্যক্তি নয়।

দ্বিতীয়ত, শেখ মুজিবের বিরোধিতা করতে গিয়ে ব্যক্তিগত বিদ্বেষ ও অযৌক্তিক তুলনা টানা একধরনের মানসিক সংকীর্ণতার পরিচয়। শেখ মুজিবকে জাতির পিতা মানা বা না মানা একান্তই রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়, কিন্তু ইতিহাস অস্বীকার করে কোনো লাভ নেই। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে—এটি বাস্তবতা। ভুট্টো-ইয়াহিয়া রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করেছে বলেই মুজিবের ভূমিকা ম্লান হয়ে যায় না।

তৃতীয়ত, জিন্নাহকে নিয়ে অনেকে মিথ তৈরি করেছে, যেমন তাঁর শিয়া হওয়া বা ইসলামবিরোধী জীবনযাপন। তবে তাঁর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ছিল প্রশ্নাতীত। তিনি পাকিস্তান সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু সে দেশ টিকিয়ে রাখার মতো নেতৃত্ব দিতে পারেননি। আর জামায়াতিদের জন্য তিনি আদর্শ নেতা হতে পারেন, কারণ তারা সবসময় ক্ষমতার লেজ ধরে টিকে থাকার নীতিতে বিশ্বাসী।

শেষ কথা, যুক্তি দিয়ে বিতর্ক করুন, বিদ্বেষ দিয়ে নয়। ব্যক্তিগত আক্রমণ বা অযৌক্তিক তুলনা করে ইতিহাসের সত্যকে আড়াল করা যায় না। ইতিহাসকে ইতিহাসের মতো থাকতে দিন, ব্যক্তি-প্রীতি বা বিদ্বেষ দিয়ে নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.